তোমার মুগ্ধতায় পর্ব ২৭
অহনা আক্তার
থমথমে পরিবেশ। আল্ট্রার রিপোর্ট হাতে নিয়ে ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে আছে ফারিশ । সকালেই মুসকানকে নিয়ে হসপিটালে গিয়েছিল সে। ওখান থেকে ডক্টরের কথা শুনে আর রিপোর্ট দেখে এখনো ঘোর কাটাতে পারছে না। বাড়িতে এতোক্ষণে সবাই খবর পেয়ে গেছে। হসপিটালে থাকতেই জিন্নাত বাড়িতে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছে। মুসকান টু মান্থের প্রেগন্যান্ট এটাতো ফারিশ আগেই অনুমান করেছিল। কিন্তু যখন জানতে পারলো মুসকানের গর্ভে টুইনস বেবি তখন থেকে তার মাথা চক্কর দিচ্ছে । ওইটুকু পেটে দু’দুটো বাচ্চা…!!
মুসকান কে পাশে নিয়ে সোফায় চুপচাপ বসেছিল তাজমহল। দাদি হওয়ার খুশি আর টেনশন দুটোই বিদ্যমান উনার মাঝে । ছেলেকে নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকতে দেখে ঠেস মেরে বললেন,
— কে যেন বলেছিল মুসকান বাচ্চা মেয়ে? বাচ্চাটাকে বুঝেশুনে রাখতে পারলোনা কেন তাহলে?
মায়ের ঠেস শুনেও কিছু বলল না ফারিশ। নির্বিকার ভঙ্গিতে রিপোর্ট গুলোর উপর চোখ বুলাতে লাগল।
জহির তালুকদার বুকের উপর হাত ভাজ করে ছেলের সামনে এসে দাঁড়ান। গলার স্বর অত্যাধিক কঠোর করে বলেন,
— রিপোর্ট গুলো বারবার দেখলেই কি যা লেখা আছে তা চেঞ্জ হয়ে যাবে? বিবেক নেই তোমার? এতটুকু মেয়েটা? ওর কি বাচ্চা সামলানোর বয়স হয়েছে?
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
— আমারতো বাবা হওয়ার বয়স হয়েছে।
রিপোর্ট গুলোর দিকে তাকিয়েই বাবার উদ্দেশ্যে কথাটা বলল ফারিশ। ছেলের কথায় থতমত খেয়ে যান জহির। তেতে উঠে বলেন, এক চ*ড় দিব অ’সভ্য ছেলে! নি’র্লজ্জের মতো বলছে বাবা হওয়ার বয়স হয়েছে! তোমার বউয়ের বয়স যে কম তুমি জানো না?
— আশ্চর্য আপনি আমাকে এভাবে ধমকাচ্ছেন কেন? আপনার নাতি নাতনিদের আসার তাড়া বেশি ছিল তাই অসময়ে চলে এসেছে। এখানে আমার কি করার? কই আমাকে মাথায় উঠিয়ে নাচবেন এতো জলদি দাদা হওয়ার সুযোগ করে দিলাম তা না করে ধমকা ধমকি করছেন!
ছেলের কথা শুনে বেক্কল বনে গেল জহির। কি সুন্দর সব দোষ উনার নাতি নাতনিদের উপর চালিয়ে দিল! এমন ব’জ্জা’ত ছেলে যেন আর কারো না হয়।
ঘরের সকলে এতোক্ষণ অসহায় ভাবে তাকিয়ে বাবা ছেলের তর্কাতর্কি দেখছিল। বিরক্ত হয়ে তাজমহল বলল,
— তোমরা থামবে! কি শুরু করেছো? ফারিশ যাও মুসকানকে নিয়ে ঘরে যাও। ওর এখন রেস্টের প্রয়োজন। আর আপনি,,,জলদি আব্বাজান কে একটা ফোন করেন না। ওদের খবরটা জানাতে হবে তো। গ্রামে মিষ্টি পাঠানোর ব্যবস্থা করেন শিগগির। আমি যাই আমার আম্মাজানকে খবরটা দিয়ে আসি। উনি যে কি খুশি হবেন। উচ্ছ্বাসিত হয়ে কথা গুলো বলে নিজের ঘরের দিকে ছুটলেন তাজমহল। নাতি নাতনি আসতে চলেছে সেই খুশিতে আত্মহারা হয়ে পরেছেন তিনি।
ফাইজা ফুপিমণি হওয়ার খুশিতে পুরো ঘর জুড়ে লাফাচ্ছে। এই জিন্নাতকে জড়িয়ে ধরছে এই মুসকান কে জড়িয়ে ধরছে। উৎকণ্ঠিত স্বরে চেচিয়ে বলছে,
— ইয়াহু! আমি খালামণি ফুপিমণি দু’টোই হতে যাচ্ছি। বাবা তুমি কি হতে যাচ্ছ? দাদাভাই নাকি
নানাভাই? (জহিরের হাত ঝেড়ে)
ফাইজার খুশিতে জহির তালুকদারও হাসলেন। মুখ থেকে গম্ভীরতা একেবারেই গায়েব করে মেয়ের খুশিতে তাল মেলালেন,
— আমার বৃদ্ধ বয়সে খেলার সঙ্গী এসে পরছে। আমরা দু’টো দোলনা আনব। আমার দাদু/দিদিভাইদের জন্য সবকিছু ডাবল ডাবল আনবো। আমারতো এখন থেকেই দাদু দাদু সুখ অনুভব হচ্ছে।
মুসকান নিচ থেকে মাথা তুলতে পারছে না লজ্জায়। সবাইকে এতো উচ্ছ্বাসিত দেখে তার মন উষ্ণতায় ভেসে যাচ্ছে। ফারিশ মুসকানের দিকে নিজের একহাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
— ঘরে চলুন মেডাম। আপনার সবকিছু এখন থেকে ডাবল ডাবল হয়ে গেছে। ডাবল বেবি, ডাবল যত্ন, ডাবল খাওয়া, ডাবল বিশ্রাম, ডাবল ভালোবাসা এভরিথিং…
দুইমাস পরের কথা। মুসকানের অসুস্থতা বেড়েছে। খাওয়া দাওয়ায় আরো অরুচি হয়েছে। পেট কিছুটা ফুলেছে। প্রথম দিকে ব’মি না হলেও এখন ব’মি করে বেহাল দশা। যাই খাচ্ছে তাই উগড়ে দিচ্ছে। কোনো কিছু খেলে সেটা পেট থেকে না বের হওয়া পর্যন্ত শান্তি মিলছে না। বউয়ের অবস্থা দেখে চিন্তিত ফারিশ। প্রেগন্যান্ট হলে একটা মেয়েকে এতো কিছু সাফার করতে হয় মুসকানকে না দেখলে বুঝতেোই না কখনো। বড্ড অসহায় লাগে ফারিশের মুসকানকে এমন কষ্ট পেতে দেখে। মেয়েটা সারারাত ঘুমাতে পারে না। দিনরাত চব্বিশ ঘন্টাই কেমন হাসফাস করে। জোর করে কিছু খাওয়ালেও পেটে রাখতে পারেনা।
কিছুক্ষণ আগে মুসকান কে নিয়ে চেকআপ করিয়ে ফিরেছে ফারিশ। বাচ্চারা সুস্থ আছে কিন্তু ডক্টর কড়াকড়ি ভাবে বলে দিয়েছে মুসকানের খাওয়া-দাওয়ায় আরো সচেতন হওয়া প্রয়োজন। এই বয়সে প্রেগন্যান্সি তাও আবার টুইনস বেবি মা ও সন্তানের জন্য যেটা খুবই রিস্কি। তাই অলওয়েজ সাবধানতা অবলম্বন করে চলতে হবে। পুষ্টিকর খাবার আর নিয়মিত চেকআপ মাস্ট বি করতে হবে। ফারিশ ডক্টরের বলা প্রতিটি উপদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে যাচ্ছে। মুসকানের যত্নে কোনো কমতি রাখছে না সে। ইদানীং বেশির ভাগ সময় বড়িতেই থাকছে ফারিশ। মুসকান পছন্দ করে বলে দিনের অনেকটা সময় তার সাথে ব্যয় করে।
মুসকান কোথাও ঘুরতে যেতে চাইলে তাকে নিয়ে যায়।
দুপুরের খাওয়া শেষে শাশুড়ির সাথে তার রুমে বসে গল্প করছিল মুসকান। জিন্নাত তার বাবার বাড়ি চলেগেছে আরো একমাস আগেই। স্বামীর বাড়িতে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও স্বামীর তাকে নেওয়ার প্রতি কোনো আগ্রহ না দেখে আর গেলো না। তাজমহলের সাথে গল্প করতে করতে কখন যে মুসকান ঘুমিয়ে পরে বুঝতেই পারে নি। তাজমহলও ছেলের বউয়ের মাথায় বিলি কেটে দিতে দিতে নিজের চোখ লেগে যায়। ফারিশ দুপুরের পর বাড়িতে এসে মুসকানের খোঁজে মায়ের ঘরে ঢুকতেই একটা মুগ্ধকর দৃশ্যে দেখে তার চোখ জুড়িয়ে যায়। তার মা আর বউ একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে। আহ কি মনোরম দৃশ্য। মন, চোখ জুড়ে শান্তির হাওয়া খেলা করছে ফারিশের। নিঃশব্দে দুজনের গায়ে কাঁথা দিয়ে দরজা ভিড়িয়ে বেরিয়ে আসে সে। রুমের বাইরে দাঁড়াতেই তার বাবা জহির কে এদিকটায় আসতে দেখে। বাবাকে দেখে দাঁড়িয়ে থাকে ফারিশ। কাছে আসতেই প্রশ্ন করে,
— দুপুরে খেতে এসেছেন?
জহির মাথা নাড়ান। ফারিশ বলে, ‘ চলেন আজ বাবা ছেলে একসাথে খাবো।’
— দাঁড়াও তোমার মাকে ডাকি বেড়ে দিতে হবে তো!
— একদিনের জন্য নাহয় আমারাই বেড়ে খেলাম। ওরা ঘুমাচ্ছে।
— কারা ফাইজা আর তোমার মা?
— না মা আর মুসকান।
জহির খুশি হন। সাথে সাথে বলেন,
— চলো চলো আমরাই নিয়ে খেতে পারি চলো।
বাবার তাড়াহুড়োতে স্মিত হাসে ফারিশ।
প্রায় ঘন্টা খানেক যাবৎ বাড়ির বাইরে ফাইজা। বেশ কয়েক মাস ধরে মুসকান ফাইজা কে খেয়াল করছে। ফাইজা যে কারো সাথে রিলেশন করছে এটা সে একশো পার্সেন্ট শিয়র। কিন্তু কার সাথে? মেয়েটার মাঝে কি একটুও ভয় ডর নেই! ওর ভাই জানতে পারলে যে কি অবস্থা করবে এটা কি ফাইজা বুঝতে পারছে না! নাহ আজকে যে করে হোক ফাইজার সাথে কথা বলতে হবে। সে কার সাথে রিলেশন করে জিজ্ঞেস করতে হবে। প্রতিদিন কার সাথে এতো কথা বলে মেয়েটা। এভাবে চলতে থাকলেতো লেখাপড়ায় বড়ো ক্ষতি হয়ে যাবে। তাছাড়াও এখনকার ছেলেগুলো একদমই ভালো নয়। নানা ভাবে মেয়েদের সাথে প্রতারণা করে। তাদের ঠকায়। কিছুদিন আগে মুসকানের এক বান্ধবী বাজে ভাবে একটা ছেলের প্রতারণার শিকার হয়েছে। ছেলেটি মেয়েটির সাথে খুব ঘনিষ্ঠ হওয়ার পর তাকে ছেড়ে দিয়েছে। মেয়েটির সাথে ঘনিষ্ঠ সব ছবি পুরো এলাকায় ছড়িয়ে দিয়েছে। এইসব কিছুই মুসকানের এক বান্ধবী তাকে ফোনে বলেছে। ফাইজা যদি ওইরকমই কোনো বা*জে ছেলের পাল্লায় পরে তখন!
ফাইজার রুমের দরজার সামনে এসে নক করল মুসকান। একবার নয় পরপর কয়েকবার। কিন্তু কোনো সারাশব্দ না পেয়ে এবার রুমেই ঢুকে গেল সে। পুরো রুম জুরে চোখ বুলিয়েও ফাইজাকে খোঁজে পেল না মুসকান। রাত বাজে পনে বারোটা। এই রাতের বেলায় ফাইজা নিজের ঘর ছেড়ে কোথায় যাবে ?! চারপাশে তীক্ষ্ণ নজর বুলিয়ে জানালার পাশে এসে দাঁড়ায় মুসকান। ফাইজার জানালা দিয়ে বাড়ির পেছন দিকটা পুরো দেখা যায়। সেখানে দাড়িয়ে নিচের দিকে তাকাতেই যা দেখল এক মুহূর্তের জন্য পুরো পৃথিবীটা ঘুরে গেল তার। ফাইজা আর রিশাদ ভাইয়া একে অপরকে জড়িয়ে ধরে তাও আবার এই রাতে !!
কপালে ঘাম জমতে শুরু করেছে মুসকানের। গলা শুকিয়ে কাঠ। ফাইজা আর কারো নয় রি..রিশাদ ভাইয়ার সাথে..!! মস্তিষ্ক চলা বন্ধ হয়ে গেছে যেন। ধপ করে ফাইজার খাটে বসে হিসেব মিলাতে লাগল মুসকান । এইজন্যই ফাইজার কাছে রিতা আর রিশাদ ভাইয়ার সব খবর থাকতো। এইজন্যই ফাইজা ফুপিমণির কাছে বারবার রিশাদ ভাইয়ার সুনাম করতো। এইজন্যই ফুপিমণি কে বাড়িতে যাওয়ার জন্য এতো জোর করতো। এইজন্যই ফুপিমণির কাছে রিশাদ ভাইয়ার ছোটবেলার গল্প শুনতে চাইতো। মজার ছলেতো মাঝেমধ্যে ফুপিমণি কে তার শাশুড়ি হওয়ার কথাও বলে ফেলেছে।
বিশ মিনিট ধরে ফাইজার রুমে বসে এইসবই চিন্তা করে যাচ্ছে মুসকান। ফাইজার ডাকে মুসকানের স্তম্ভিত ফেরে,,
— তুমি এভাবে এখানে বসে কি ভাবছো ভাবি?
মুসকান চোখ তুলে তাকায় ফাইজার দিকে। কোনো ভনিতা ছাড়াই প্রশ্ন ছুড়ে,
— রিশাদ ভাইয়ার সাথে তোমার কি সম্পর্ক ফাইজা?
ফাইজা আঁতকে উঠে। বিস্ফোরিত নয়নে তাকায় মুসকানের দিকে। মুসকান আবার বলল,
— রাত বারোটা বাজে তুমি রিশাদ ভাইয়ার বাহুবন্ধনে কি করো ফাইজা?
ফাইজার গলা কাঁপছে। ঠোঁট নাড়াচ্ছে অথচ কিছু বলতে পারছে না। মুসকান ওঠে দাঁড়ায়। ঝাঁঝাল স্বরে বলে,
— রিশাদ ভাইয়া কেমন ছেলে এটা কি তুমি জানো না? তোমার ভাই জানতে পারলে কি হবে ধারণা করতে পারছো?
ভাইয়ের কথা শুনে গলা শুকিয়ে আসে ফাইজার। ক্ষীণ আওয়াজে বলে,
— আমি রিশাদকে ভালোবাসি। ভাইয়া জানলেও আমার কোনো যায় আসে না।
— ফাইজা! (চেচিয়ে উঠে মুসকান) রিশাদ ভাইয়া কতোটা বা*জে ছেলে তুমি জানো না ??
ফাইজাও এবার উল্টো চেঁচায়,
— একদম রিশাদকে বা*জে ছেলে বলবে না। আর তুমি কে আমাকে বাঁধা দেয়ার? কয়েকদিন হয়েছে এই বাড়িতে এসেছো একেবারে নিজেকে রাণী ভাবতে শুরু করেছো! আমার লাইফে ইন্টারফেয়ার করার অধিকার কে দিয়েছে তোমায়? বেড়িয়ে যাও আমার ঘর থেকে..
মুসকানের চোখ ছলছল করে উঠে ,,
— এটা তুমি কি রকম ব্যবহার করছো আমার সাথে ফাইজা? তুমিতো এমন ছিলে না!
ফাইজার যেন মুসকানের কথা কানেই ঢুকলো না। সে চুপচাপ বুকে হাত ভাজ করে রাগী মোড নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মুসকান চোখের পানি মুছে। স্পষ্ট স্বরে বলে,
— আমি রিশাদ ভাইয়ের মতো একটা ছেলের সাথে কিছুতেই তোমাকে সম্পর্ক রাখতে দিবো না। উনি ভালো ছেলে না। তোমার জীবনটাকে ন’ষ্ট করে দিবে। আমি এখনই বড়চাচি কে গিয়ে সব বলে দিব।
ফাইজা চমকে উঠে। মুসাকনের বাহু চেপে ধরে তাকে বাঁধা দেয়,
— তুমি কিছুই বলবে না মা কে।
–‘ আমি বলবো ‘ এটা বলে মুসকান ফাইজার হাত ছাড়িয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে সিঁড়ির কাছে চলে আসে।
ফাইজা ছুটে এসে মুসকানের হাত শক্ত করে চেপে ধরে,
— আমি তোমাকে নিষেধ করছি ভাবি!
মুসকান ফাইজার হাত থেকে জোর করে নিজের হাত ছুটানোর চেষ্টা করে। এদিকে ফাইজা ভয়ে আছে। যদি মা জেনে যায় তাহলে ভাইয়া আর বাবা জানতে বেশি সময় লাগবে না। আর যদি ওরা জানতে পারে তাহলে ওর অবস্থা শেষ..
ফাইজা অনেকটা ভয়ের মাঝেই মুসকানের হাত ধরে টানাটানি করছে। মুসকানকে কিছুতেই নিচে যেতে দিচ্ছে না। তাকে অনবরত বাঁধা দিয়ে যাচ্ছে । এদিকে মুসকানও ফাইজার হাত থেকে ছোটার জন্য জবরদস্তি করে যাচ্ছে। টানাটানির এক পর্যায়ে ফাইজার হাত থেকে মুসকানের হাত ফসকে যায়। তাল সামলাতে না পেরে সিঁড়ি থেকে কয়েক পা পিছিয়ে যায় মুসকান। পরে যাবে ঠিক সেই মুহূর্তে পেছন থেকে দুটো শক্ত হাত তাকে আগলে ধরে। ভাইকে দেখে কলিজা শুকিয়ে যায় ফাইজার। মুসকান যে ফারিশের কতটা অংশ জুড়ে এটা জানতে এই বাড়ির এখন কারোরই বাকি নেই। ফারিশের ভিতরটা এখনো কাঁপছে। কিছুক্ষণ আগে কি ঘটতে যাচ্ছিল এটা ভেবেই তার আত্মা বেড়িয়ে আসতে চাইছে। মুসকানের সারা শরীরে কম্পন। সময় মতো ফারিশ তাকে আগলে না ধরলে কি হয়ে যেতো !!!!
ফাইজা মাথা নিচু করে ভয়ে ভয়ে ভাইকে বলে,
— স..সরি ভা….’ ঠা*সসসসস
বাকিটুকু বলার আগেই ফাইজার গালে কষিয়ে থা’প্প’ড় মা’রল ফারিশ। সাথে সাথে কেঁদে দিল ফাইজা।
ফারিশ ধমকিয়ে বলল,
— পা’গল হয়ে গেছিস? সেন্স নেই কোনো? তোর ভাবি প্রেগন্যান্ট তুই জানিস না? আমি সময় মতো না আসলে কি হতে যাচ্ছিল কোনো ধারণা আছে?
চেচামেচির শব্দ শুনে ঘর থেকে ছুটে বেড়িয়ে আসে জহির, তাজমহল। তাজমহল আতঙ্কিত হয়ে জিজ্ঞেস করে,
— কি হয়েছে?
তোমার মুগ্ধতায় পর্ব ২৬
থা’প্প’ড় খেয়ে ফাইজা হেচকি তুলে কাঁদছে। কান্নার জন্য কথাও বলতে পারছে না। মুসকান ভীতু স্বরে বলল,
— ও..ওর কোনো দোষ নেই। আমিই…
ফারিশ রক্তচক্ষু নিয়ে তাকায় মুসকানের দিকে। হুংকার ছেড়ে বলে,
— তোমাকে তো পরে দেখছি…