তোমার মুগ্ধতায় পর্ব ৩

তোমার মুগ্ধতায় পর্ব ৩
অহনা আক্তার

কাঁপা কাঁপা হাতে কাবিন নামায় সাক্ষর করল মুসকান। মুখ দিয়ে কবুল বলে মায়ের বুকে কান্নায় ভেঙে পড়ল। আটকাতে পারেনি কেউ বিয়েটা। এরশাদ তালুকদারের উপর কেউ কথা বলতে পারেনি। ফারিশ বলতে গেলে তার বাবা তাকে থামিয়ে দেয়। ম’রে যাবার হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে ফারিশও বিয়েটা করে নেয়। বিয়ে সম্পুর্ন হতেই রেগে মেগে সেখান থেকে বেড়িয়ে যায় ফারিশ। তার বাপ দাদুদের এই ট্রিপিকাল মেন্টালিটি সে আর মানতে পারছে না।
” আব্বাজান কি পাগল হয়ে গেছে নাকি!’ জাহিদ ম’রেছে কয়দিন হয়েছে? উনি মুসকানের বিয়ে পড়িয়ে দিলেন! ‘ ম’রা বাড়িতে কে বিয়ে পড়ায়? গ্রামের মানুষ চারদিক থেকে কতোকথা বলছে জানো?! হাটে গিয়েছিলাম আমি !! লোকজনের কথায় মাথা নুইয়ে বাড়ি ফিরে এসেছি। সবাই বলাবলি করছে, ছেলের শোকে তোমার বাবার মাথা গেছে। তাইতো ম’রা বাড়িতে নাতনির বিয়ে দিয়েছে। কেউকেউ তো বলছে বাবা নেই দেখে ‘ছোট্ট মেয়েটাকে বিয়ে দিয়ে বোঝ কমাচ্ছে?”
কথাগুলো চড়া গলায় বলে থামলেন মোকলেস শেখ।
জিন্নাত বলল,

— তো আমি কি করবো? তুমি আমাকে কেন বলছো? তোমাদের সকলের সামনেই তো আব্বাজান মুসকানের বিয়েটা দিয়েছেন তখন আটকাতে পারোনি!
— কারো কথা শুনে তোমার আব্বাজান? শুধুতো পারে নিজের হুকুম অন্যের ওপর চাপিয়ে দিতে। কত ইচ্ছে ছিলো জহির ভাইজানকে বলে আমাদের রিতার সাথে ফারিশের বিয়েটা পাকা করবো। জহির ভাইজানের যত সম্পদ তা তো ফারিশেরই। আর ফারিশ যা ইনকাম করে তোমার মেয়ে সারাজীবন শুয়ে বসে খেয়েও ফুরাতো না। রাজরানি হতো রাজরানি। রাজাও পেতো সাথে রাজ্যও। আমার সব প্ল্যানে তোমার আব্বাজান জল ঢেলে দিয়েছে। শুধু তোমার আব্বাজানকে বলছি কেন, তুমিও তো সমান দোষি! বারবার বলেছিলাম জহির ভাইজানের সাথে কথা বলো আমাদের রিতার ব্যাপারে। বলোনি তুমি! এতোদিনে আমার ব্যবসারও উন্নতি হয়ে যেত তাহলে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

— বাদ দাও এইবার! আল্লাহর ওয়াস্তে বন্ধ করো! আর কতো লোভ করবে তুমি?’ লোভ করতে করতে তো পেট টাকে এমন ঢোল বানিয়েছো। তোমার এই লোভের জন্যই আজ কিছু পেলে না। ভালো হয়েছে আব্বাজান ফারিশের বিয়ে মুসকানের সাথে দিয়েছে। আমি খুশি হয়েছি। নাহলে আমার মেয়েটার জীবন নরগ বানিয়ে দিতে তুমি টাকা চেয়ে চেয়ে। ঠিক যেভাবে আমার জীবন টাকে বানিয়েছো। আমার বাপ ভাই তো কম সাহায্য করেনি তোমায়। ব্যবসার কথা বলে বলে কতোকতো টাকা খসিয়েছো ওদের থেকে। শেষমেশ আমার ছোট ভাই জাহিদকে ঠকিয়ে খামারের এতোবড় একটা লোকসান করেছো। একমাত্র তোমার জন্য আমার ভাই চিন্তা করে বুকে ব্যাথা উঠিয়েছে। তুমি দায়ী আমার ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য। তুমি! কথাগুলো বলে মুখে আঁচল চেপে কেঁদে দিল জিন্নাত।
মোকলেস দ্রুত এসে জিন্নাতের মুখ চেপে ধরল,,

— চুপ* একদম চুপপ*। খবরদার তোর ভাইয়ের মৃত্যুর ব্লেম আমার ওপর দিয়েছিস তো! যা বলেছি তা তো করতে পারিস নি পারিস শুধু ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদতে। দুটো কাজ দিয়েছি একটাতো ঠিকঠাক করতে পারতি। মুসকানের বিয়েটা অন্তত আমার ছেলে রিশাদের সাথে দেওয়ার ব্যবস্থা করতি। তাহলে আর এইদিন দেখতে হতো না। জাহিদের সব সম্পত্তিও হাতিয়ে নিতে পারতাম মুসকানের মাধ্যমে।
জিন্নাত শরীরের জোরে স্বামীর হাত মুখ থেকে ছুটিয়ে ফেলে। চিল্লিয়ে বলে ,,

— ছিঃ। ঘে*ন্না হয় আমার তোমার ওপর ঘে*ন্না! মুসকানের মতো এমন নিষ্পাপ একটা মেয়ের জীবন ধ্বংস করার কথা চিন্তা করতে বুক কাঁপে না তোমার? শ*য়*তা*ন লোক !! তোমার ছেলে রিশাদ পুরো তোমার কার্বন কপি। ম*দ, নে*শাদ্রব্য, নিয়ে দিন শুরু হয় ওর। তোমার ছেলের মতো নে/শা/খো/রে/র সাথে মুসকানের বিয়ে দিয়ে আমার ফুলের মতো ভাতিজির জীবন নষ্ট করবো না আমি। তুমি আমাকে মে’রে ফেললেও না। আর আমার আব্বাজান তোমার ছেলেকে দু’চোখে দেখতে পারেনা। নাতনির সাথে বিয়ে দিবেতো দূরে থাক! লোভে পাপ পাপে মৃত্যু! অন্যের সম্পত্তির উপর লোভ করা বন্ধ করো এবার।
মোকলেস আবার শরীরের শক্তি দিয়ে জিন্নাতের হাত মুচড়ে ধরে। ক্ষিপ্ত কণ্ঠে বলে,

— মুখ দিয়ে খই ফুটেছে দেখছি! বাবার বাড়ি এসে গলার জোর বেড়েছে! বাড়ি যাই একবার তোমার মুখে কি করে লাগাম দিতে হয় আমিও জানি।
জিন্নাত হাত মোচড়াতে মোচড়াতে বলে,
— ওটাই তো পারো শুধু কা*পুরুষের মতো স্ত্রীর গায়ে হাত তুলতে। আর আমার বাপ ভাইদের থেকে কিভাবে টাকা হাতানো যায় সেটার ফন্দি আটতে। তুমি আর তোমার ছেলে মিলে আমার জীবনটাকে জা’হান্নাম বানিয়ে দিয়েছো। তোমাদের কৃর্তিকলাপের কথা যদি আব্বাজান আর ভাইদের বলিনা ওরা দুমিনিটও চিন্তা করবে না তোমাদের জেলে দিতে!
মোকলেস গর্জন ছেড়ে বলল,
–” বাবা ভাইয়ের হুমকি দিচ্ছিস আমাকে তুই…?”
” ফুপিমণি, ফুপিমণি।” দরজার বাহির থেকে ডাক ভেসে আসছে। রাতুল ডাকছে। রাতুলের গলা শুনে জিন্নাত আর মোকলেস দুজনেই স্বাভাবিক হয়। রাতুল উচ্চ স্বরে বলে,
— বড় চাচ্চুরা মুসকান আপুকে নিয়ে ঢাকা চলে যাচ্ছে। তোমাদের সকলে খোঁজছে। যেতে বলেছে। জলদি আসো।
জিন্নাত ঝাড়া মেরে মোকলেসের হাত ছাড়িয়ে দরজার দিকে হাঁটা ধরে।

উঠানের সামনে কালো রঙের একটা বড় প্রাইভেট কার দাঁড় করানো। গাড়ির আসেপাশে মানুষ ভার্তি। সবাই মুসকানকে বিদায় জানাতে এসেছে। সাদামাটা ভাবেই স্বামীর বাড়ি যাচ্ছে মুসকান। দাদুকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে সে। কিছুতেই তাদের ছেড়ে যেতে রাজি হচ্ছেনা। এরশাদ তালুকদার অনেক বুঝিয়ে নাতনিকে গাড়িতে ওঠান। জহিরের উদ্দেশ্যে বলেন,
— আমার নাতনির যেন কোনো অযত্ন না হয় তোমার বাড়ি। ওকে তোমার মেয়ে ফাইজার মতো দেখবে। ওর সম্পুর্ন খেয়াল রাখবে।
জহির তার আব্বাজানের হাতে চুমু খেয়ে বলেন,
— আমরা আমার মুসকান মায়ের সম্পুর্ন খেয়াল রাখবো আব্বাজান। আপনি ওকে নিয়ে চিন্তা করবেন না।
ফারিশ চোখমুখ কুচকে দাড়িয়ে আছে। এরশাদ তালুকদার সেই দিকে এগিয়ে যান। ফারিশের কাঁধে হাত রেখে বলেন,

— আজ তুমি আমার প্রতি নারাজ আমি বুঝতে পারছি। কিন্তু একদিন তুমি ঠিকই বুঝবে যে আমি কি দিয়েছি তোমায়। আমার নাতনি আমার খুব শখের। আশাকরি ওর কোনো অবহেলা করবে না।
ফারিশ এড়িয়ে চলে গেলো। ডিরেক্ট গিয়ে গাড়িতে বসে পরলো। এতো শখের হলে নাতনি কে এখন বিয়ে দিয়েছে কেন! ঘরে সাজিয়ে রাখতো। অন্তত তাঁর জীবন টা তো বেঁচে যেত।
রাহিলা তাজমহলের হাত ধরে কাঁদছে। বারবার অনুরোধের স্বরে বলছে,
— আমার মেয়েটার খেয়াল রাখবেন ভাবি। ওহ কোনো দিনও আমাদের ছেড়ে কোথাও থাকেনি। অচেনা জায়গায় নিজেকে মানাতে সময় লাগবে, ভয় পাবে, কান্নাকাটি করবে, ছোটতো! আপনি সামলিয়ে নিয়েন।
তাজমহল আবাশ দেন। সে মুসকানের খেয়াল রাখবে। তবুও মেয়ের জন্য কাঁদছে রাহিলা। স্বামী হারিয়ে এখন একমাত্র মেয়েটাকেও বিদায় দিয়ে দিচ্ছে কি করে থাকবেন ওনি। শিল্পী আর জিন্নাত রাহিলাকে সামলাচ্ছে। রাহিলার কান্না দেখে মোকলেস তিতগুটে স্বরে বলল,

— এতো কান্নার কি আছে রাহিলা। মেয়ে যখন এতো ছোটো বিদায় করছো কেন? শশুরকে বলে বিয়েটা আটকাতে পারোনি। আর ভাবি আপনাকেও বলি (তাজমহলকে উদ্দেশ্য করে) — আমার মেয়ে রিতাকে কি আপনাদের চোখে পরেনি। সেতো মুসকানের থেকে বেশ অনেকটাই বড়। সংসারের কাজকর্মও ভালো পারে। মুসকান কি বুঝে সংসারের। আপনি একটা বাচ্চা মেয়েকে কি করে ছেলের বউ হিসেবে মেনে নিয়েছেন!
— সেটা নিয়ে তোমার চিন্তা না করলেও চলবে মোকলেস। মুসকান এতোটাও ছোট নয়। ওকে আমি ঠিকই শিখিয়ে পড়িয়ে নিবো। তাছাড়া সে আমার ফাইজার মতো। ফাইজা আমার কাছে যতটা প্রিয় মুসকানও ততটাই প্রিয় হয়ে থাকবে এখন থেকে । আর তোমার মেয়ে রিতার জন্য আমার ফারিশ কেন আরো ভালোভালো ছেলে পাবে। দশটা দেখে একটা বেছে নিও তখন।
রাহিলা কৃতজ্ঞতার চোখে তাকায় তাজমহলের দিকে। জিন্নাত লজ্জায় চোখ মেলাতে পারছেনা কারো সাথে। এখন বড় ভাবিকে এইসব কথা বলার কোনো মানে হয়। আর কত নিচে নামবে লোকটা। বেশ হয়েছে ভাবি মুখের ওপর বলে দিয়েছে।
শিল্পীও মুখ লটকায়। মোকলেসের স্বভাব কেমন এটা জানতে এই বাড়ির কারোই বাকি নেই আর।

গাড়িতে বসে তাজমহলের কাঁধে মাথা রেখে চোখ বুঝে আছে মুসকান। কাঁদতে কাঁদতে মাথা ব্যাথা করছে তার। সামনের সিটে বসে জহির রাগি গলায় ছেলেকে ধমকাচ্ছেন,
— দিন দিন বড্ড বি’য়াদব হয়ে যাচ্ছ তুমি! আব্বাজান তখন নম্র ভাবে কথা বলছিলেন তোমার সাথে। তাকে এড়িয়ে চলে এলে কোন সাহসে?
ফারিশের কানে যেন কিছুই ঢুকেনি। সে এক দৃষ্টিতে সামনে তাকিয়ে ড্রাইভ করে যাচ্ছে। ছেলেকে নিজের কথায় পাত্তা দিতে না দেখে আরো ক্ষেপে গেলেন জহির তালুকদার। চিল্লিয়ে স্ত্রীকে বলতে লাগলেন,
— দেখেছো তুমি? কতোটা ব/জ্জা/ত হয়ে গেছে তোমার ছেলে? আমার কথা কানেই তুলছে না !!
তাজমহল বিরক্তিকর সুরে বলেন,

— আপনি আমাকে বলছেন কেন? ছেলেকি আমার একার নাকি আপনার নয়?
ব্যাস শুরু হয়ে গেলো দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি।
ফাইজা কাপালে হাত চেপে বলল,
— ‘মা, আবার শুরু হয়ে গেল ভাইয়াকে নিয়ে তোমাদের মধ্যে ঝগড়া। এবারতো থামো মুসকান অসুস্থ। মাথা ব্যাথা করছে বেচারির।
ফাইজার গলা শুনে ফারিশ একবার সামনে থাকা মিররে মুসকানের সূক্ষ্ম মুখশ্রীর দিকে তাকায়। চোখ বুঝে কি নিস্তেজ ভাবে পরে আছে মেয়েটা তার মায়ের কাঁধে। তাজমহল একহাতে মুসকানকে ধরে রেখে জহিরের সাথে ঝগড়া করছে,,

— ‘ আমি ঝগড়া করি আমি! ‘ তোদের বাবাকে কিছু বলতে পারিস না…..
— “এনাফ”
গম্ভীর কণ্ঠস্বরে চিল্লিয়ে ওঠে ফারিশ,,
— আর একটা সাউন্ড হলে আমি এক্ষুনি তোমাদের গাড়িতে রেখে একা একা বাড়ি চলে যাব!’
থেমে গেলেন তাজমহল। সাথে জহির তালুকদারও। ফাইজা মিটিমিটি হাসছে । তার বাবা-ময়ের ঝগড়া শুরুও হবে তার ভাইকে নিয়ে আবার শেষও হবে তার ভাইকে নিয়েই।

বাড়ির অনেকটা কাছাকাছি আসতেই ফাইজা চিল্লিয়ে উঠল,
— ভাইয়া গাড়ি থামাও মুসকান ব*মি করছে।
দ্রুত বেগে ব্রেক কষে ফারিশ। সামনে থেকে পানির বোতল টা এগিয়ে দেয় তার মায়ের কাছে। মুসকান কে নিয়ে বাইরে বেড়িয়ে আসে ফাইজা আর তাজমহল। গাড়ি থেকে বের হতেই গড়গড়িয়ে ব’মি করে দিল মুসকান। তাজমহল মুসকানের পিঠে, মাথায়, হাত বুলিয়ে বলল,
— বেশি খারাপ লাগছে মা? টক জাতীয় কিছু খাবে?
মুসকান কথা বলতে নিলে আবার পেট গুলিয়ে আসে। পরপর তিনবার ব*মি করে জান ছেড়ে দেয় সে।
জহির এগিয়ে এসে বলেন,
— আর বেশিক্ষন লাগবে না মা। আমরা বাসার কাছাকাছি চলে এসেছি। বাড়িতে গিয়ে রেস্ট নিলে ঠিক হয়ে যাবে।
মুসকান কাঁপা স্বরে খুব ধীর ভাবে বলল,
— আমি এই গাড়িতে করে আর যেতে পারবো না বড়চাচ্চু। গাড়ির গন্ধে আমার ব’মি আসে।
ফারিশ তিক্ত কণ্ঠে বলল,
— মানে! গাড়িতে যাবেনা তো কিসে যাবে? বাড়িতো সামনেই আর পনেরো/বিশ মিনিটের মতো লাগবে এভাবেই আসো।
জহির ছেলেকে চোখ রাঙান,

— এভাবে কথা বলছো কেন ওর সাথে? ওহ গাড়িতে যেতে চাইছে না তো যাবে না।
ফারিশের বিরক্তি সুর,
— বলেনতো হেলিকপ্টার এনে দেই এখন আপনার ভাতিজির জন্য, ডিজগাস্টিং!
— হেলিকপ্টার লাগবে না। আপাতত একটা রিকশা ডেকে দাও আমি আর মুসকান রিকশা করে বাড়িতে চলে যাই। তুমি তোমার মা বোনকে নিয়ে আসো।
তাজমহল বলেন,

তোমার মুগ্ধতায় পর্ব ২

— হ্যা এটাই ঠিক হবে।
ফারিশের আর কি করার সে রিকশা ডেকে তার বাবা আর মুসকানকে রিকশায় তুলে দিল।
গাড়িতে বসে মা আর বোনকে নিয়ে রওনা হলো বাড়ির উদ্দেশ্যে। এই মেয়ের জন্য তাকে আর কি কি করতে হয় আল্লাহ জানে…

তোমার মুগ্ধতায় পর্ব ৪