তোমার মুগ্ধতায় পর্ব ৩৫
অহনা আক্তার
তিনদিন যেতেই রিশাদ আর অপেক্ষা করতে না পেরে জিন্নাতকে নিয়ে হাজির হলো মামার বাসায়। এবার একটু আলাদা ভাব সাব নিয়েই এসেছে। মামু ওরফে না হওয়া শশুর কে পটাতে পারলেই নাইন্টি পার্সেন্ট সলিউশন হয়ে যাবে। জিন্নাত কোনো কালেই এখন ছেলেকে নিয়ে ভাইয়ের বাড়িতে উপস্থিত হতে চাইছিল না। কিন্তু তার ব*দমাশ ছেলে কি করে যেন তাকে ভুলিয়ে বালিয়ে নিয়ে এসেছে। আতঙ্কে এখনো ঢিপঢিপ করছে জিন্নাতের ভিতর টা।
যখন জানতে পেরেছে তার একমাত্র গুনধর ছেলে তার ভাইজি কে পছন্দ করে তখন থেকে তার ফুসফুস, লিভার, কিডনি সব কাঁপতে শুরু করেছে। শক খেয়ে চার ঘন্টা শুধু বিছানার উপরই বসেছিল। বেছে বেছে তার ভাইজিদেরই কেন পছন্দ করতে হবে এই ছেলের? দেশে কি আর মেয়ে নেই!
বেশ কয়েকদিন ধরে ফাইজার জন্য ছেলের পা’গলামো, ছ’ট’ফ’টানো দেখে জিন্নাত ভাইয়ের বাড়িতে আসতে রাজি হয়। আসার সময় পুরো রাস্তা ছেলেকে শাসিয়ে শাসিয়ে এসেছে। যদি কোনো গন্ডগোল করে তো উনাকে আর খোঁজে পাবে না । রিতাকেও সাথে নিয়ে এসেছে জিন্নাত। ছেলে, মেয়েকে নিয়ে ভাইয়ের বাড়িতে প্রবেশ করতেই তাজমহল ছুটে আসেন। তাদের সোফায় বসতে দিয়ে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেন। সকাল সকাল রিশাদকে নিজের শশুর বাড়িতে ড্যাসিং লুকে দেখে খুব বড়সড় এক ধা*ক্কা খেল মুসকান। তার স্বামী এখনো রুমে ঘুমাচ্ছে। আজ শুক্রবার। এইজন্য জহির তালুকদারও বাড়িতে। কি হবে গড নওস..
জিন্নাতের ডাকে তার কাছে এগিয়ে গেল মুসকান। রিশাদ আরাম করে সোফায় বসে সাইডে ফাইডে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। মূলত ফাইজাকে খুঁজছে সে। মুসকান সোফার কাছটায় আসতেই রিশাদ ভাবলেশহীন ভঙ্গিতে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
— তোর ননদ কোথায়?
মুসকানের চোখ বড় করে তাকাল। জিন্নাত আর রিতা কাশতে শুরু করল। জিন্নাত দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলল,
— রিশাদ..
রিশাদ ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে মুসকানের দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচাল। মানে কোথায়? মুসকান চোখ বাঁকিয়ে একবার রান্নাঘরে শাশুড়ি কে দেখে নিল। তোতলিয়ে বলল,
— ঘু..ঘুমাচ্ছে।
রিশাদ হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে বলল,
— এতো বেলা হয়ে গেছে এখনো ঘুমাচ্ছে! কোন রুমে ঘুমাচ্ছে দেখিয়ে দে তো…
মুসকান বিস্ফোরিত নয়নে তাকালো। জিন্নাত থতমত খেয়ে বলল,
— ফাইজা তো ঘুমাচ্ছে বলল। শুনিস নি তুই?
রিশাদ কিছু বলার আগেই তাজমহল সেখানে চায়ের ট্রে নিয়ে নিয়ে হাজির হলো। তাজমহল কে দেখে রিশাদ বাদে বাকি তিন জনই দাঁত কেলিয়ে হাসল। জিন্নাত একটা কাপ তুলে নিতে নিতে বলল,
— ভাইজান কোথায় বড় ভাবি?
— উনি তো একটু আগে মাত্র বের হলো। বাড়ির সাইডে ফাইডেই আছে হয়তো। এসে পড়বে জলদিই।
— আর ফারিশ?
— ওহ ওতো ঘুমাচ্ছে। ডাক দিব?
জিন্নাত ঝড়ের বেগে নিষেধ করল,
— না, না ভাবি। ডাকার একদম প্রয়োজন নেই। আমরাতো একটু পড়েই চলে যাব।
রিশাদ বোম ব্লাস্টের মতো বলল,
— না দেখেই…
চা মুখে নিয়েই বিষম খেল জিন্নাত। তাজমহল হকচকিয়ে গেল। রিতা আর মুসকান জিন্নাতের পিঠে মালিশ করতে করতে বলল,
— একটু সাবধানে খাবে তো।
রিতা কথা কাটাতে জোরপূর্বক হেসে বলল,
— ভাইয়া বলতে চাইছিল বাড়ির সবাইকে না দেখেই চলে যাবে?
তাজমহল বলল ,
— তাইতো। তোমরা সবে মাত্র এলে। একটু বিশ্রামও নাও নি আর এখনি চলে যাবে ? রিতা তো কোন ছোট বেলায় এখানে এসেছিল। আর আসেনি। না বেড়িয়ে আমি কিছুতেই যেতে দেবো না তোমাদের।
জিন্নাত শান্ত স্বরে বলল,
— জানেন ইতো ভাবি। বড় ভাইজান আর ফারিশ রিশাদকে পছন্দ করে না। ওকে দেখে যদি রাগারাগি করে?
তাজমহল হেসে বলল,
— আরে ধুরর। ওরাতো তোমার জন্যই রিশাদের উপর রেগে ছিল। এখন তুমি রিশাদকে ক্ষমা করে দিলে ওরা আর রেগে কি করবে? তখন পরিস্থিতি অন্যরকম ছিলো। আমার মনে হয় না তোমার ভাইজান রাগবেন। বরণ রিতা কে দেখে আরও খুশিই হবেন।
রিশাদের আর মহিলাদের মাঝে বসে থাকতে ইচ্ছে করছে না। তার চোখ দুটো ছটফট করছে ফাইজাকে দেখার জন্য। সে সোফা থেকে দাঁড়িয়ে নির্বিঘ্নে বলল,
— আমি একটু আপনাদের ছাঁদে যেতে চাই মামি। অনুমতি পাবো কি?
তাজমহল অমায়িক একটা হাসি দিয়ে বলল,
— কেন পাবে না। তোমার মামুর বাসা। যেখানে ইচ্ছে সেখানেই যেতে পারো। ওইতো ওইদিকটায় ছাঁদের সিঁড়ি। যাও..
রিশাদ চুলে আঙুল চালিয়ে সিঁড়ি বেয়ে দ্বিতীয় তলায় উঠে গেল। ছাদে যাওয়ার পথেই ফাইজার ঘর পরে। যেই ঘরটার জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ফাইজা তার সাথে কথা বলতো। অনুমান করে সেই ঘরেই ঢুকে যায় রিশাদ। তাজমহল খেয়াল না করলেও রিতা আর মুসকান ঠিক খেয়াল করেছে। তাজমহল তখন জিন্নাতের সাথে কথা বলায় ব্যস্ত। যার জন্য জিন্নাতও খেয়াল করেনি। মুসকান অসহায়ের মতো একবার উপরের দিকে তো আরেকবার রিতার দিকে তাকাচ্ছে । রিতারও সেম অবস্থা। তার ভাই এতোটা রেকলেস।
জিন্নাতের সাথে কথার একপর্যায়ে তাজমহল বলল,
— তোমরা বসো আমি গিয়ে ফাইজাকে ডেকে আসি। এতোবেলা হয়ে গেছে প্রধানমন্ত্রী এখনো পরে পরে ঘুমাচ্ছে! এতটুকু বলে তাজমহল ফাইজার রুমের উদ্দেশ্যে পা বাড়াতে যাবে তার আগেই রিতা আর মুসকান সহসা চিল্লিয়ে উঠল,
” নাআআআআ ”
দুজনের চিল্লান শুনে তাজমহল থতমত খেয়ে তাদের দিকে তাকাল। জিন্নাত ভ্রু কুঁচকে বলল,
— চিল্লান দিলি কেন দুটো?
রিতা তার মাকে খোঁচা মেরে ফিসফিসিয়ে বলল,
— ভাইয়া ফাইজার ঘরে।
জিন্নাত আঁতকে উঠল। করুন চোখে মেয়ের দিকে তাকিয়ে বলল,
— এই ছেলে আমায় বাঁচতে দিবে না!
মুসকান শাশুড়ির কাছে গিয়ে বোকা হেসে বলল,
— আপনি যাবেন কেন শুধু শুধু কষ্ট করে। আমি যাচ্ছি। আমি গিয়ে ডেকে আনছি। আপনি রান্নাঘরে যান। ফুপিমণিরা এসেছে ওদের জন্য নাস্তা বানাতে হবেনা। উনারা তো চলে যাবে বলছে।
রিতা মুসকানের সাথে সুরমিলিয়ে বলল,
— হ্যা, হ্যা মামি। আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে যাব। যাওয়ার আগে আপনার হাতের রান্না টেস্ট করে দেখতে চাই। জলদি রেডি করেন।
জিন্নাত সোফা থেকে ঝেড়ে জুড়ে উঠে বলল,
— হ্যা বড় ভাবি। আসুন আমি আপনাকে সাহায্য করছি। বড় ভাইজান ওতো এখনি এসে পরবে।
রিতার কথায় তাজমহল খুশি হলো। প্রফুল্ল স্বরে বলল,
— আচ্ছা তোমরা বিশ্রাম নাও আমি এক্ষুনি রান্না বসাচ্ছি । মুসকান রিতাকে আগে গেস্ট রুমে নিয়ে যাও। তারপরে ফাইজাকে ডেকে তুলো। ফারিশকেও ডেকো। ছেলেটা রাতে কিছু খায়নি।
মুসকান যেন হাফ ছেঁড়ে বাঁচল উফফফ।
সারারাত হাসফাস করে সকালের দিকে ঘুমিয়েছে ফাইজা। তাই এখনো ঘুম ভাঙেনি। সচারাচর দরজা খোলাই থাকে ফাইজার। মুসকান বা তাজমহল ফজরের নামাজের জন্য ডাকতে আসে। কখনো কখনো তার বাবা আর ফারিশও আসে রাতে বাড়ি ফেরার পর তাকে চকলেট বা অন্যকিছু দিতে। সেই হিসেবে আজও ফাইজার রুমের দরজা খোলা। শুধু একটু ভিড়িয়ে দেওয়া। রিশাদ দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকতেই একটা মিষ্টি সুভাস তার নাকে এসে ঠেকল। রুম অন্ধকার বানিয়ে গায়ে কাঁথা টেনে গুটিসুটি মেরে ঘুমাচ্ছে ফাইজা। রিশাদ পা টিপে ঘুমন্ত ফাইজার কাছে এসে দাঁড়াল। পড়ার টেবিল থেকে চেয়ারটা টেনে নিঃশব্দে ফাইজার মুখোমুখি বসল। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল,
— বাহ্! আমার ঘুম হা’রাম করে নিজে কি সুন্দর আরাম করে ঘুমাচ্ছে। ইচ্ছে করছে,,,
রিশাদ ডানে বামে তাকিয়ে পানি ভর্তি গ্লাস দেখতে পেল। সে হালকা একটু পানি হাতের তালুতে নিয়ে ফাইজার মুখ বরাবর ছুড়ে মারল। ধরফরিয়ে উঠলো ফাইজা। ভয়ে চিল্লিয়ে বলল,
— কে? কেএএএ?
— তোমার ভবিষ্যৎ জামাই।
রিশাদকে দেখে বড় ধরনের একটা শকড খেল ফাইজা। বালিশের পাশ থেকে দ্রুত ওড়নাটা টেনে নিয়ে গায়ে জড়িয়ে বলল,
— তু..তুমিইই! তুমি এখানে কি করছো?
রিশাদ দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলল,
— জামাই আদর খেতে এসেছি জান। খাওয়াবে না?
ফাইজা হন্তদন্ত হয়ে বিছানা থেকে নেমে লাইট ওন করল। মশকরা শোনার সময় নেই এখন। কেউ দেখতে পেলে ক্যালেঙ্কারি হয়ে যাবে। সে দরজার কাছে গিয়ে উঁকি ঝুঁকি মারতেই রিশাদ তার বাহু ধরে টান দিয়ে নিজের বুকে এনে ফেলল। ফাইজা ভীতু চোখে রিশাদের চোখে চোখ রাখতেই রিশাদ হিংস্র কণ্ঠে বলল,
— আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করেছো কেন তুমি?
ফাইজা কাঁপা স্বরে বলল,
— ফো..ফোন নেই।
— তোমারটা নেই বাকি সবারটা তো আছে। একবার কথা বলে জানাতে পারতে?
— তেমন সুযোগ হয়ে উঠেনি…
রিশাদ ফাইজাকে আর একটু শক্ত করে চেপে ধরে বুকের সাথে মিশিয়ে বলল,
— ছয়দিন হতে চলল তুমি আমার সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ করো না, কথা বলো না! ডু ইউ হেভ এনি আইডিয়া- আমার বুকের ভেতর কি চলছে?
ফাইজার নিঃশ্বাস ঘন হয়ে গেল। রিশাদের এতো কাছে এসে তার দম বন্ধ হয়ে আসছে। হাত-পা অবশ হয়ে যাচ্ছে…
ফারিশ ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে মুসকানকে ডাকছে। মুসকান তখন রিতার সাথে গেস্ট রুমে ছিলো। ফারিশের গলা শুনে দ্রুত বের হয়ে উপরে যেতে নিয়ে দেখে ফারিশ ফাইজার ঘরের দিকে যাচ্ছে। মুসকানের মাথা সাথে সাথে ভনভন করে উঠল। ফারিশ কে থামাতে জলদি গিয়ে তার সামনে দাঁড়াল। ফারিশ তখন ফাইজার দরজার অতি নিকটে চলে এসেছে। মুসকান পুরো দরজা আগলে দাঁড়িয়ে দাঁত কেলিয়ে বলল,
— আপনি এখানে কি করছেন? ঘুম থেকে কখন উঠেছেন? ফ্রেশ হয়েছেন? ব্রেকফাস্ট করবেন না?
একসাথে মুসকানের এতো প্রশ্ন শুনে ফারিশের ভ্রু কুঁচকে গেল। সে শান্ত স্বরে বলল,
— এভাবে দরজা আগলে দাঁড়িয়ে আছো কেন?
মুসকান আমতাআমতা করে বলল,
— ক..কই, কই দরজা আগলে দাঁড়িয়ে আছি। আমি কি এতোটাই মোটা হয়ে গেছি যে আপনি এই দরজা দিয়ে ঢুকতে পারবেন না?
দরজার বাইরে থেকে ভাই,ভবির গলা শুনে ফাইজার অস্তিত্ব কেঁপে উঠল। সে দ্রুত রিশাদের বাঁধন থেকে ছুটে ছটফট শুরু করল। আতঙ্কে বুক কাঁপছে। উপস্থিত বুদ্ধি কাজ করছে না। রিশাদকে যদি ভাইয়া তার রুমে দেখে তাহলে তান্ডব বইয়ে দিবে। ফাইজার অস্থিরতা দেখে রিশাদ ধমক দিল,
— এমন করছো কেন?
ফাইজা ক্ষেপে তাকাল,
— আমাকে ধমক দেওয়ার সময় এখন ?? ভাইয়া দরজার বাইরে। তোমাকে আমার রুমে দেখলে কি হবে ধারণা করতে পারছো?
রিশাদ ভাবলেশহীন কণ্ঠে বলল,
— কি আর হবে। ধরে বিয়ে পরিয়ে দিবে। চলো রো’মাঞ্চ শুরু করি। তোমার হি’টলার ভাই তা দেখে আরো তড়বড় করে বিয়েটা দিয়ে দিবে।
এদিকে ফারিশ মুসকান কে ধমকাচ্ছে,
— সরো সামনে থেকে। আমাকে ভিতরে যেতে দাও। পুরো দরজা আটকে দাঁড়িয়ে আছো আবার বলছ মোটা হয়ে গেছ।
মুসকান দুঃখী স্বরে বলল,
— আপনি আমাকে মোটা বলছেন?
ফারিশ বিরক্ত হলো,
— আরে আশ্চর্য তো! আমি কখন তোমায় মোটা বললাম। ফাইজার কোচিং টিচার কল দিচ্ছে। ওর সাথে কথা বলবে…
মুসকান নাক মুখ ফুসিয়ে বিড়বিড় করছে,
— এই কোচিং টিচার কল দেয়ার আর সময় পেল নাহ !
ফাইজা চারপাশে চোখ ঘুরিয়ে অস্থির হয়ে রিশাদকে লুকানোর জায়গা খুঁজছে। ‘ এই তুমি জানালা দিয়ে লাফ দাও।’
রিশাদ চোখ কপালে তুলে বলল,
— হোয়াট !!
ফাইজা নিজের মাথায় নিজে চা’পড় মা’রল,,
— ধুর কি বলছি। আচ্ছা তুমি খাটের নিচে ঢুকো।
রিশাদ আগের থেকে তিনগুন বিস্ময় নিয়ে বলল,
— আর ইউ মেড? আমি ঢুকবো খাটের নিচে ???’
— আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে বাথরুমে যাও।
— কখনোই না। আমার ১ নাম্বার, ২ নাম্বার কোনোটাই পায়নি। সো আমি বাথরুমে যাব না।
ফাইজার জিদ্দে নিজের চুল ছিঁড়তে ইচ্ছে করছে,
— ওহহহহ গডডডড! এখন ১ নাম্বার, ২ নাম্বার না পেলেও যেতে হবে তোমায়। ভাইয়া এক্ষুনি রুমে ঢুকে যাবে। ভাবি বেশিক্ষণ আটকে রাখতে পারবে না।
রিশাদ ভ্রুক্ষেপহীন ভঙ্গিতে জবাব দিল,
— আটকাতে বলেছে কে? আসতে দাও তোমার ভাই কে। আমি ওকে ভয় পাই না।
ফাইজা রিশাদকে ঠেলতে ঠেলতে বাথরুমের দিকে নিয়ে গিয়ে বলল,
— প্লিজজজ, এই রিকুয়েষ্ট টা রাখো। আমার বাথরুম একদম নিট এন্ড ক্লিন।
রিশাদ আর কিছু বলার আগেই ফাইজা তাকে বাথরুমে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে ছিটকিনি লাগিয়ে দিল। রিশাদ চিল্লাচ্ছে, ” ফাইজা ”
ফাইজা অনুরোধের স্বরে বলল,
— প্লিজজজজ শব্দ করো না। মাত্র পাঁচ মিনিট। ভাইয়া চলে গেলেই লক খোলে দিব।
রিশাদ আর শব্দ করল না। কমোডের ঢাকনা লাগিয়ে সেটার উপর বসে ফুসফুস করতে লাগল।
তোমার মুগ্ধতায় পর্ব ৩৪
মুসকানকে সরিয়ে ফাইজার রুমে ঢুকে পড়ল ফারিশ। ফাইজা কপালের ঘামটুকু মুছে দুর্বোধ্য হেসে বলল,
— আরে ভাইয়া তুমি! কিছু বলবে?
মুসকান ফারিশের পিছন থেকে উঁকিঝুঁকি মেরে ফাইজাকে ইশারা করছে, ‘ রিশাদ কোথায়?’
ফাইজাও চোখ টেরা করে মুসকানকে বাথরুমের দিকে দেখিয়ে দিল। ফাইজার ইশারা বুঝতে পেরে মুসকান গাল ভরে হাসতে নিয়েও থেমে গেল। দু’জনের এমন অস্বাভাবিক আচরণ দেখে ফারিশ খেঁকিয়ে উঠল,
— হোয়াট হেপেন্ড?
ফাইজা দ্রুত জবাব দিল,
— কি..কিছু না। কিছুনা ভাইয়া…..