তোর নেশা পর্ব ৩
তুষার আহমেদ কাব্য
—ও বাসায় আছে,ঘুমাচ্ছে হয়তো(নিরব)
— ওর জ্বর আপনি আমাকে আগে বলেননি কেন?(নিধি)
— সরি
— চলুন আমরা যাবো
— এখন?
—- হ্যাঁ চলুন
নিধি জোর করে মাইশা কে নিয়ে কাব্য আর নিরবের বাসায় চলে আসে।
নিরব আগে ভেতরে চলে যায়। তারপর নিধি আর মাইশা ভেতরে চলে আসে।
কাব্য ঘুমিয়ে আছে। নিধি আর মাইশা চেয়ারে বসে।
— আপনারা বসুন আমি এক্ষুনি আসছি(নিরব)
নিরব রান্নাঘরে চলে যায় , তখনই নিধির কল আসে,মা কল দিয়েছে। মায়ের সাথে কথা বলতে গিয়ে খেয়াল করে কাব্য ঘুমিয়ে,তাই বারান্দায় গিয়ে কথা বলতে থাকে।
মাইশা চুপ করে বসে আছে। হঠাৎ খেয়াল করে জানালা দিয়ে ঠান্ডা বাতাস আসছে। তাতে কাব্য কেমন কুকড়ে যাচ্ছে। মাইশা প্রথমে কেয়ার না করলেও পরে উঠে দাঁড়ায়। কাথা টা টেনে কাব্যে গায়ে দিতে গিয়েই মেঝে পেছল খেয়ে কাব্যের গায়ের উপর পড়ে। ঠিক কাব্যের মুখ বরাবর। মাইশা ড্যাবড্যাব করে কাব্যের দিকে তাকিয়ে দেখে কাব্য এখনো ঘুমিয়ে আছে। হঠাৎ নিরবের আসার শব্দ শুনে উঠে নিজের জায়গায় বসে মাইশা।
নিরব চা আর বিস্কিট নিয়ে এসেছে
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
—সরি আসলে ব্যাচেলর বাসা,তেমন কিছু রাখিনা। নিচের দোকান টাও বন্ধ (নিরব)
—It’s ok😄 চা আপনি বানিয়েছেন? (মাইশা)
— না এটা কাব্য বানিয়েছে
— উনার তো জ্বর
— হুম তাও সকালে উঠে চা আর নাস্তা বানিয়ে রেখেছে
—আপনি?
— আমি কাজে চলে গিয়েছিলাম
—ওহ
নিধি ভেতরে এসে কাব্যের কপালে হাত রাখে
—সকাল্ব কত ছিলো জ্বর?(নিধি)
—১০৩ (নিরব)
—কমে গেছে,ঘুমাতে দেন
— হুম
— তাহলে আজ আমরা আসি(মাইশা)
—- আর হ্যাঁ দুঃখিত ওর জন্য কাব্যের এই অবস্থা 😔(নিধি)
— না না ঠিক আছে (নিরব)
নিধি আর মাইশা বিদায় নেয়।
রাত ৮ টায় কাব্যের ঘুম ভেঙে যায়। উঠে দেখে নিরব মোবাইল টিপছে।
—কে এসেছিলো?(কাব্য)
— তুই কিভাবে জানলি কেউ এসেছে? (নিরব)
— বেলি ফুলের পারফিউম কে মেখেছে?(কাব্য)
–মাইশা
— সে আবার কে?
— রাগি মেয়েটা
— ও এই বাসায় কেন
—নিধি আর ও তোকে দেখতে এসেছিলো।
— আর তুই নিয়ে এলি?
— হ্যাঁ তো?
— এটা ব্যাচেলর বাসা,মানুষ কি মনে করবে
— রাখ তো
কাব্যের হাত লাগে কিছু একটা, তাকিয়ে দেখে একটা ঘড়ি।মেয়েদের ঘড়ি।
— এটা আবার কার?(কাব্য)
—আরে এটা তো মাইশার(নিরব)
—নে ধর দিয়ে দিবি কাল।
কাব্য উঠবে তখনই
— গাছে পানি দিয়েছি,তোর পেজ – কাব্যের গল্প সম্ভার – তুষার আহমেদ কাব্য আর কাব্যের নিল ডাইরি তে পোস্ট দিয়েছি,রাতের খাবার রান্না শেষ আর এখন তুই চুপ করে শুয়ে থাক।(নিরব)
—আ…(
— আন্টি কে বলেছি আমি, উনিই বলেছে তোকে বিছানা থেকে উঠতে না দিতে
কাব্য আর কিছু বলে না।
পরেরদিন সকালে কাব্যকে ঘুম থেকে উঠিয়্ব দেয় নিরব।।
কাব্যের চোখ পুরোপুরি খোলেনি
— মামা আমাকে আজ জলদি বের হতে হবে আর ফিরতে দেরী হবে,তুই একটু ওর ঘড়ি টা দিয়ে আসিস,ঠিকানা তোর ফোনে দিয়ে দিয়েছি।
কাব্য হ্যাঁ না বলার সুযোগ পায়না।নিরব বেরিয়ে যায়। কাব্য তাকিয়ে থাকে।
সকাল ১১ টায় কাব্য রেডি হয়ে বের হয়। ঘড়িটা তো বিকেলেও দিতে পারতো। ওহ না বিকেলে তো কিছু কাজ আছে।
রিক্সায় উঠে রওনা হয় কাব্য।
মাইশা আর নিধির বাসার সামনে এসে কাব্য নামে। দরজায় টোকা দিতেই দেখলো দরজা লাগানো না।
আজব তো! দরজা না লাগিয়ে ২টা মেয়ে বাসায় থাকে? কাব্য ভেতরে ঢোকে।
তখনই গোসল শেষ করে বাইরে বের হয় মাইশা
—আপনি?(মাইশা)
— জ্বি আপনার ঘড়ি ফেলে এসেছিলেন আর এটা দিতেই…(কাব্য)
—- শুধু ঘড়ি দিতেই? তাহলে লক ভেঙে ফেললেন কেন?
—what?
— ভেতরে এলেন কিভাবে?
—দরজা খোলা ছিলো
— নিধি আবার দরজা খুলেই চলে গেছে… উফ
— যাই হোক নিন আপনার ঘড়ি
কাব্য মাইশার হাতে ঘড়ি দেয়। মাইশা ঘুরে হাটা শুরু করবে তখনই পা পড়ে মেঝেতে থাকা তেলে।
মাইশা নিজেকে সামলাতে গিয়ে সামনের পরিবর্তে পেছনে কাব্যের গায়ে পড়ে আর কাব্য সহ গিয়ে পড়ে সোফায়। মাইশার চুল খুলে যায় আর চল কাব্যের গায়ে পড়ে।
কাব্য অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখে কেউ এতো টা সুন্দর আর কিউট হতে পারে? ভেজা চুলে কেমন একটা নেশার মতো পরিবেশ তৈরি করেছে।
কতক্ষন এমন ছিলো তারা জানা নেই কারো
হঠাৎ…
—- মাইশা!!!!
ধমক খেয়ে সামনের দিকে তাকায় মাইসা,তার পুরো পরিবার দাঁড়িয়ে আছে। আজ তার পুরো পরিবার আসার কথা ছিলো সে ভুলেই গিয়েছিলো। মাইশার মা আর ভাবিরা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আর তার বাবা রাগি চোখে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে
মাইশা ঝট করে উঠে দাঁড়ায়।
—- বাবা তোমরা যা ভাবছো তা…(মাইশা)
বলার আগেই বাবা ইশারায় তাকে থামিয়ে দেয়
তারপর মাইশার ভাইদের দিকে তাকায়
—আমি জানিনা ছেলেটা কে আর কি করে,কিন্তু তোমাদের বোন যা করেছে তা লোক জানাজানি হলে আমার সম্মান থাকবে না,,যাও ওদের বিয়ের ব্যাবস্থা করো(বাবা)
— কিন্তু… (মাইশা)
বলার আগেই আবার তার বাবা থামিয়ে দেয়,,আর বাবার মুখের উপর কিছু বলতেও পারবে না।
অন্যদিকে
নিরব বাসায় ফিরছে, হঠাৎ দেখল নিধি অপর দিক থেকে নিধি আসছে
তোর নেশা পর্ব ২
— আরে আপনি? (নিধি)
— আপনি এখানে? কাব্য যায়নি আপনার বাসায়?(নিরব)
— আমি তো সকালেই চলে এসেছি বাইরে,বাসায় তো মাইশা
—oh no এর মানে কাব্য আর মাইশা… যুদ্ধ লাগবে
নিরব আর নিধি দ্রুত রিক্সায় উঠে রওনা হয়
বাসায় দ্রুত ঢুকতেই নিরব আর নিধিরর চোখ বড় হয়ে যায়
বিয়ে হয়ে গেছে কাব্য-মাইশা….