তোর নেশা পর্ব ৪

তোর নেশা পর্ব ৪
তুষার আহমেদ কাব্য

গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে মাইশা,পাশে কাব্য বসা। মাইশার পরিবার তাদের মাইশার বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে।
মাইশা কিছু বলতেও পারছে না। কাব্য নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
অন্যদিকে
বাসায় নিরব জানালার পাশে বসে ভাবছে কি হয়ে গেলো।
নিধি সোফায় বসে কান্না করছে।

— আচ্ছা আপনি কান্না থামান,যা হবার হয়ে গেছে। (নিরব)
— আমি এটা মানি না!(নিধি)
— না মানলে কি আর করার
নিধির মনে প্রচন্ড রাগ জমে আছে, মাথায় ঘুরছে প্রতিশোধ এর আগুন।
—আচ্ছা আমি যাই(নিরব)
— আমাকে বিয়ে করবেন(নিধি)
— কিহ/
— হুম
—কিন্তু…
—আমি জিজ্ঞেস করিনি,চুপচাপ বসুন

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

নিরব ধমক খেয়ে বসে পড়ে। নিধি কাজিকে কল দেয়। কাজি মাত্রই গেলো,কি আর করার আবার আসতে হলো,আর এলো নিধি আর নিরব এর কিছু বন্ধু।
অন্যদিকে
বাড়ি পৌঁছাতেই বাড়ির সবাই জিজ্ঞেস করতেই থাকে হুট করেই বিয়ে কেন?
মাইশার বাবা সবাই কে এক কথায় চুপ করার যে ছেলে তিনি পছন্দ করেছেন। সবাই নতুন জামাই কে ঘিরে ধরে। নাম কি?কি করে? বাসা কোথায় এসব জিজ্ঞেস শুরু হয়। কিন্তু মাইশার বাবা বলে ওদের রুমে নিয়ে যেতে।
কাব্য আর মাইশা কে রুমে নিয়ে যায়
রুমে গিয়ে কাব্য বিছানায় বসে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে

— বিছানা থেকে সরেন,দামি বিছানা দেখলেই বসতে মন চায়?(মাইশা)
মাইশার মুখে এই কথা টা শুনে কাব্য একটু অবাকই হয়। উনি অহংকারী?
কাব্য উঠে দাঁড়ায়। তখনই মাইশার বাবা আসে
— তোমাকে আমি মেনে নিয়েছি তা ভাবার প্রয়োজন নেই, নিজের সম্মান রাখতেই তোমাদের বিয়ে দিতে হলো। ক্ষমা কখনো করতে পারবো না(কাব্যকে বলেন তিনি)
কাব্য কিছু বলল না
— বাবা আসলে…(মাইশা)
— জামাই কে জামা দে, চেঞ্জ করে দুজনে খেতে আয়।
মাইশা চুপ করে যায়।
মাইশা ব্যাগ থেকে কাব্যের জন্য পাঞ্জাবি পায়জামা বের করে। আসার সময় সব কিনেই এনেছে তারা।
কাব্য ফ্রেশ হতে চলে যায়। কাব্য ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে মাইশা তার আগেউ চেঞ্জ করে ফেলেছে। শাড়িতে মেয়েটাকে দারুন লাগে। স্পেশালি কালো শাড়ি।

— শুনুন..(মাইশা)
— এই বিয়েটা একটা নাটক, যত সম্ভব আমরা আলাদা হয়ে যাবো(কাব্য)
— হুম
মাইশা কাব্য খেতে চলে যায়।
— তা বাবা তোমার পরিবারে কে কে আছে?(মাইশার মা)
— আম্মু আব্বু ২বোন আর আমি(কাব্য)
— মাইশার সাথে পরিচয় কিভাবে?(মাইশার ভাবি)
—রেস্টুরেন্টে ওর গায়ে পানি ফেলে দিয়েছিলাম(মাইশা)
সবাই হেসে উঠে। কাব্য চুপ করে খেতে থাকে।
খাবার শেষ করে মাইশার বাবা মা উঠে যায়

— তা প্রেম শুরু কিভাবে?(মাইশার ভাবী)
— আরে তুমি তো জানোই শাড়িতে আমাকে কেমন লাগে, ব্যাস কালো শাড়ি তে দেখেই …
— তবে ওকে কিন্তু বাচ্চা বাচ্চা লাগে
— হ্যাঁ ওতো পিচ্চিই
শুনে কাব্য মাইশার দিকে তাকায়, তারপর উঠে চলে যায়। মাইশা খাবার শেষ করে রুমে এসে দেখে কাব্য বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে
— রাগ দেখিয়ে চলে এলেন যে? আপনি তো পিচ্চিই (মাইশা)
— হুম(কাব্য)
— আপনি বিছানায় ঘুমান, আমি সোফায় ঘুমাচ্ছি
— প্রয়োজন নেই,আমি সোফায় ঘুমাতে পারি
—পারবেন?
—অভ্যাস আছে
— তাও ঠিক
—-হুম
কাব্য সোফায় শুয়ে পড়ে। মাইশা বিছানায় হেলান দিয়ে বসে বই হাত নেয়

— তা আমার বাসা কেমন লাগলো?(মাইশা)
— ভালো(কাব্য)
— এদের সাথে আমাদের ২ মাস একসাথেই থাকতে হবে,কারন এরা ২মাসের আগে আমাদের কিছুতেই ছাড়বে না। আপুর বিয়ের সময় ও এমন হয়েছে, তাই ২মাস পর আমরা শহরে ফিরেই ডিভোর্স এর আপিল করবো
— হুম
— আচ্ছা ঘুমান
— নিধি আপনার কি হয়?
— মামাতো বোন
— আমি তো জানি বন্ধু
— হ্যাঁ,তবে সেটা বাইরে,ঘরে আমরা বোন। সেটা সবাইকে জানাই না
—কেন?
— এমনি
— এই জনই দুজনের মাঝে মিল
—হুম।

মাইশা বই পড়াতে মন দেয় আর কাব্য ঘুমিয়ে পড়ে।
কাব্য ঘুমিয়ে যাবার পর মাইশা বই রাখে,হেসে দেয়। এই ছেলেকে পেতে এতো কিছু করতে হলো।
মাইশা রুম থেকে বেরিয়ে আসে। বাবা বাইরে
— ধন্যবাদ আমার সুইট বাবা(মাইশা)
—কিন্তু এভাবে জোর করে বিয়ে কি ঠিক?(বাবা)
— বাবা ও খুব রাগি আর ও ভালোবাসায় বিশ্বাস করে না। ওকে তো আমি ১ বছর ধরে চিনি,আগে ফেসবুকে তারপর একদিন দেখাই হয়ে গেলো। ভালোবাসি! কিন্তু আমার ভয় নিধি কে নিয়ে।ও কি আদৌ কাব্যকে চায়? ওর ছেলেমানুষী কোনো বিপদ ডেকে আনবে না তো?..
— চিন্তা করিস না,সব ঠিক হয়ে যাবে।ওকে নিচে শুতে দিলি কেন?
— বাবা আগেই যদি প্রেম দেখাই তাহলে বুঝেই যাবে এসব আমি করছি,এই ২মাসের মধ্যেই ও আমাকে ভালোবাসবে।
— যা এখন ঘুমা
— হুম
রুমে এসে বিছানায় শুয়ে পড়ে মাইশা।

তোর নেশা পর্ব ৩

ফেসবুকে ভালো লাগা কখন যে ভালোবাসা হয়ে গেলো সে টেরই পায়নি।তারপর দেখা হয় সেদিন রেস্টুরেন্টে। নিধিকে যদি বলে দিতো সে কাব্যকে ভালোবাসে তাহলে সে ঢোল পিটিয়ে দিতো। তাই এতো কিছুর আয়োজন করতে হলো,ইচ্ছে করেই ঘড়ি রেখে আসতে হলো। নিরবের অফিসের বসের সাথে মিটিং সেট করে নিরব কে ব্যস্ত করে দেয়া,নিধিকে জলদি বের করা,দরজা খোলা রাখা।
ভাবতে ভাবতে ঘুম জড়িয়ে আসে দু চোখে….

তোর নেশা পর্ব ৫

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here