দিগন্তবেলার প্রেমান্দোলন পর্ব ৩১

দিগন্তবেলার প্রেমান্দোলন পর্ব ৩১
আফরোজা আশা

সারাটা রাস্তা রাগে ফোঁসফোঁস করতে করতে দিগন্তের বাড়িতে এসেছে রায়হান। ওকে কিভাবে ফেলে রেখে চলে এলো! আজ এর একটা হেস্তনেস্ত করে তবেই ফিরবে। রাগে মেজাজ প্রচণ্ড খারাপ হয়ে আছে। জোর কদমে দিগন্তের রুমের উদ্দেশ্যে হাঁটছে আর বিড়বিড়াচ্ছে,
‘ ওর জন্য কতক্ষন খাটলাম। আমাকে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে এলো। শালা; নেমোখারাম! এজন্যই তোর এখনো বিয়ে হয় না বেটা। হেহ! আমি মানুষ ভালো, তাই আমার বিয়েও হয়ে গিয়েছে।’

সিঁড়ি বেয়ে তীব্র রাগে তেতে উপরের দিকে যাচ্ছে রায়হান। হঠাৎ করেই বাঁ দিক থেকে ঘুরে আসা একজনের সঙ্গে প্রবল বেগে ধাক্কা খেলো। রায়হান নিজেকে সামলিয়ে হাত বাড়িয়ে অপরজনকে ধরে পড়া থেকে বাঁচালো। আরেকটু হলে নিচে পড়ে কোমড়ের হাঁড়গোঁড় ভাঙতো। সামনের ব্যক্তির দিকে তাকাতেই মুখোমুখি হলো এক অপরিচিত মুখের সাথে। চোখজোড়া খিঁচে বন্ধ করে রেখেছে। মুখজুড়ে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট। পাতলা গোলাপি অধরজোড়া মৃদ্যু কাঁপছে। মেয়েটার এক ঝলকেই হুট করে রায়হানের মেজাজের আগুন নিভে গেল। গভীর চাহনিতে নজর বুলালো সামনের রুপসী রমণীর সারা মুখাবয়বে। আপনমনে আওড়ালো, ‘ মাশ-আল্লাহ।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

অনেকক্ষন হয়ে যাবার পরও ব্যাথা পেল না মাইশা। যেভাবে ধাক্কা খেলো ভেবেই নিয়েছিল আজ প্রতিবন্ধীর খাতায় নাম উঠে যাবে। কিন্তু এখনো কোনো কিছু উপলব্ধি করতে না পেরে পিটপিট করে খিঁচিয়ে রাখা আঁখিজোড়া খুলল। চোখ মেলে তাকাতেই চোখাচোখি হলো স্বল্প দেখা এক পুরুষের সাথে। লোকটার সম্পূর্ণ দৃষ্টি ওর দিকেই নিবদ্ধ। কিছুপলের জন্য মাইশাও খেই হারিয়ে ফেললো সে চাহনিতে। একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকলো লোকটার চোখের দিকে। দুজনের দৃষ্টি বিনিময় হলো ক্ষণকালের জন্য। রায়হানের সম্মোহিত চাহনী দেখে ধক করে উঠল মাইশার বক্ষপিঞ্জর। সহসা ছিটকে দূরে সরতেরতে চাইলো কিন্তু পারলো না। রায়হানের দুহাত ওর কোমড় ধরে রেখেছে। মাইশার নড়াচড়ায় ধ্যান ভাঙ্গলো রায়হানের। নিজের হাতের অবস্থান টের পেয়ে সরিয়ে নিল তখনি। ছাড়া পেয়ে মাইশাও তীর বেগে রায়হানের থেকে কয়েক কদমের দূরত্ব বাড়ালো।

রায়হানের তীক্ষ্ণ গভীর নজর এখনো মাইশাতে আটকে। মাইশার এলোমেলো পলক ঝাপটানো চোখের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা আন্দাজ করল। অতঃপর ঠান্ডা গলায় জিজ্ঞেস করল,
‘ তুমি মাইশা? ’
অপ্রস্তুত হলো মাইশা। লোকটা তো বলেছিল ওর মুখ দেখতে চায় না। কিন্তু হুট করে কোথা থেকে চলে এলো আর ওর সাথেই ধাক্কা খেতে হলো! ওড়নার কোণা বড় করে টেনে এনে মাথায় ভালোভাবে চাপিয়ে দিল মাইশা। মিনমিনে স্বরে বলল,
‘ জ..জ্বি। ’
রায়হান গম্ভীর গলায় বলল, ‘ দেখে হাঁটতে পারো না। এখনি তো পড়ে যেতে। ’
মাইশা শুষ্ক ঠোঁট জোড়া ভিজিয়ে বলল,
‘ আমি দেখেই হাঁটছিলাম। আপনি হুট করে এসে ধাক্কা লাগিয়েছেন। ’
ভ্রুঁর মাঝে ভাজ পড়ল রায়হানের। মাইশা বাড়ানো দূরত্বটুকু কমিয়ে ওর সামনাসামনি এলো। ওর দিকে একটু ঝুঁকে ধীর কণ্ঠে বলল,

‘ কয়েকবার দেখা হয়েছে আমাদের তবে কখনো তোমার মুখোদর্শন হয়নি। তুমি যেমন মিষ্টি দেখতে, তোমার কণ্ঠস্বরেও সেরকম মিষ্টতা আছে। ইওর ম্যান উইল বি দ্যা লাকিয়ার ওয়ান।’
বলে সোজা হয়ে সামনের দিকে পা বাড়ালো রায়হান। মাইশা এক জায়গায় ঠায় দাঁড়িয়ে। চোখ বেয়ে একটা ফোঁটা অশ্রুবিন্দু গড়িয়ে পড়ল।
রুমে এসে দরজা চাপিয়ে দিয়ে মাথার ওড়নাটা ফেলে দিল মাইশা। সোজা গিয়ে দাঁড়ালো ড্রেসিং টেবিলের সামনে। নিজ চেহারার প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে থাকল কিয়ৎক্ষন। পায়ের উপর পা তুলে বেডসাইডে হেলান দিয়ে বসে আছে দিশা। চালাতে থাকা ফোন থেকে চোখ সরিয়ে মাইশার দিকে তাকালো। মাইশা নিজেকে দেখতে দেখতে দিশাকে বলল,

‘ দিশা! আমি কেমন দেখতে? ’
পূর্বের অবস্থা ছেড়ে একটা বালিশ কোলে নিয়ে পা মুড়িয়ে বসল দিশা। চটপটে গলায় বলল,
‘ সে আর বলতে! আমি যদি ছেলে হতাম কতদিনে তোমাকে নিয়ে ফুউরর করে উড়াল দিতাম সুন্দরী। ইসস! কি সুন্দর ঝাক্কাস একটা মেয়ে আমার সামনে…’
‘ আমার সাথেও ফ্লার্ট করছো? ’
মুখের কথা ছেড়ে মেকি হাসলো দিশা। মাইশা দুগালে হাত রেখে হালকা স্বরে বলল,
‘ আমি নাকি দেখতে মিষ্টি? এটা আবার কেমন প্রশংসা করলো লোকটা? ’
দিশা বুঝল না মাইশার কথা। ভ্রুঁ নাচিয়ে জিজ্ঞেস করল,
‘ কি বললে? ’
মাইশা গাল থেকে হাত নামিয়ে দিশা কাছে এলো। ওর ফোনের দিকে উঁকি দিয়ে বলল,
‘ কিছু না। তুমি খুঁজে পেলে? ’

দিশা মুখ লটকিয়ে বলল, ‘ পেয়েছি। ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দিয়েছি। এক্সেপ্ট না করলে মান-সম্মান শেষ আমার। ’
তারপর আবার ফোন মাইশার সামনে ধরে উৎফুল্ল গলায় বলল,
‘ ডিপিটা দেখো। জোস না। পোলাটা হ্যান্ডসাম। আমার ভালো লাগছে। সাথে গানের গলাটাও ওয়াও। ধরো আমরা প্রেম করলাম বা বিয়ে হয়ে গেল। তারপর খালি রোমান্টিক রোমান্টিক গান গাইবে আর ইসস! ধ্যাত; লজ্জা পাই! আর ক্রাশ খাবো না। এইটাই ফাইনাল। ’ বলে লজ্জা পাওয়ার ভান ধরল দিশা।
মাইশা হেসে দিল ওর ফেস এক্সপ্রেশন দেখে। দিশার হাত থেকে ফোন নিয়ে নামটাতে চোখ বুলালো। ফাহাদ দেওয়ান। প্রোফাইল লক করা। দেখা শেষে ফোনটা দিশার হাতে দিতে দিতে বলল,
‘ আগে এক্সেপ্ট করুক। তারপর লজ্জা পেয়ে উল্টে পড়ে থাকিও। তোমার আবার যে মুখের বুলি। দেখা গেল; তুমি লজ্জা না পেয়ে, সে লজ্জা পাচ্ছে। ’

মাইশার কথা শুনে দিশা ফিক করে হেসে দিল। তারপর হাসি থামিয়ে বলল,
‘ নাহ! এরকম হতে দেওয়া যাবে না। আজ থেকে ফ্লার্টবাজি কমিয়ে দিলাম। ’
মাইশা হাসলো দিশার কথা শুনে। তাতক্ষনাৎ আবার দিশার ফোনের স্ক্রিনে ইশারা করে বলে উঠল,
‘ পাশের ডিপির ছেলেটাকে দেখো। সুন্দর আছে। ’
চোখজোড়া মুহূর্তেই চকচক করে উঠল দিশার। মুখে বড় হাসি ঝুলিয়ে তড়িঘড়ি ঘাড় নামিয়ে ফোনের দিকে তাকাতে তাকাতে বলল,
‘ থামো, থামো! একটু খাতির জমিয়ে আসি। ’
পরক্ষনে ফোনের ব্লাক স্ক্রিনের দিকে নজর পৌঁছাতেই হাসি মুখ চুপসে গেল। সরু চোখে মাইশার দিকে তাকিয়ে বলল,
‘ এটা ঠিক না। তুমি এভাবে বোকা বানালে! ’
মাইশা খিলখিলিয়ে হেসে উঠল। মুখ ভোঁতা করে কিছুক্ষন চুপ থেকে দিশাও জোরে হেসে দিল। দুই রমনীর হাসিতে মেতে উঠল পুরো রুমটা।

সন্ধ্যা পেরিয়ে রাতের প্রথম ভাগের আগমন ঘটেছে। টং ঘরে দুমছে আড্ডা চলছে সবার। দোকানদার একের পর এক চা বানাচ্ছে আর তার বারো বছর বয়সী ছেলেটা সেগুলো আড্ডার মাঝে দিয়ে আসছে। দিগন্ত, রায়হান পুরো দলবল নিয়ে টং ঘর জম-জমাট করে রেখেছে। সাদা ধূলোর মাঝে ক্যারমের লাল গুটিটাকে হাতের মাঝে রাখা বড় গুটিটা দিয়ে নিশানা করে ছুড়ে মারলো দিগন্ত। লাল রাঙা গোলাকার গুটিটা বড় সাইজের গুটির ধাক্কায় পড়ে গেল গর্তে। তা দেখে আঙুলের মাঝে রাখা ধোয়া ওঠা সিগারেটে টান দিল। রতন চায়ে চুমুক দিয়ে বলল,
‘ দুইদিন থেকে ওই দল খুব শান্ত হয়ে আছে ভাই। কোথাও কোনো ঝামেলা করে নি এখনো। ’
রায়হান খেলায় মনযোগ রেখে জিজ্ঞেস করল,
‘ টং ঘরের এদিকেও আসে নি কেউ? ’

রতন মাথা নাড়িয়ে না বলল। দিগন্ত হাতের সিগারেটটা ফেলে পা দিয়ে পিষে ধরলো। কিছু বলার আগেই বাহির থেকে চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ কানে ঠেকলো। ভ্রুঁ বাঁকিয়ে রতনকে বলল বাহিরে কি হয়েছে তা দেখতে। তখনি দলের একটা ছেলে দৌঁড়ে এসে বলল,
‘ ভাই; ফাহাদের দলের ছেলেরা রাস্তায় ভাংচুড় করতেছে। বাইরে আমাদের দলের যাকে পাচ্ছে তাকেই বেধরক পিটাচ্ছে। ’
দিগন্ত বাঁকা হাসলো। একটা চেয়ার টেনে মাঝ বরাবর রেখে সেখানে পায়ের উপর পা তুলে আয়েসী ভঙ্গিতে বসল। দলের ছেলেগুলো বাইরে যেতে চাইলে হাতের ইশারায় থামিয়ে দিল তাদের। চেয়ার মাথা হেলিয়ে রেখে বলল,
‘ রাস্তা ক্লিয়ার কর। আস্তে দে ওদের। ’
ছেলেগুলা তাই করল। কিছুক্ষন পর ফাহাদের ছেলেরা ভেতরে আসলো। সাথে ফাহাদও এলো। ভেতরের পরিবেশ এতো শান্ত দেখে ভ্রুঁ গোটালো। দুহাত পকেটে গুজে সটান হয়ে দাঁড়িয়ে বলল,
‘ ভয় পেয়ে লেজ গুটিয়ে নিলি? ’

দিগন্ত ঘাড় বাঁকিয়ে ওর দিকে তাকালো। তাচ্ছিল্যভরা গলায় বলল,
‘ ভয়? জঙ্গলের বাঘ তোর মতো চুনোপুটি শেয়ালকে দেখে ভয় পাবে? শেয়াল নিজেকে বাঘ ভাবলে যা হয়! ’
একপাশের ঠোঁট প্রসারিত হলো ফাহাদের। পরক্ষনেই হাতে থাকা রাবারেট শক্ত বলটা দিগন্তের মুখ বরাবর ছুড়ে মারলো সবেগে। এক হাত উঠিয়ে খপ করে ধরে ফেলল সেটা দিগন্ত। বলটা চোখের সামনে এনে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে দেখতে বলল,
‘ আহা! এতো মাথা গরম কেনো? আমার এলাকায় এসেছিস। একটু বস, চা-পানি খা। তারপর.. ’
‘ ফালতু কথা ছেড়ে জায়গা ফাঁকা কর। ’
‘ তোরা চলে গেলেই জায়গা ফাঁকা হয়ে যাবে। ’
দাঁতে দাঁত চাপলো ফাহাদ। অগ্নিদৃষ্টিতে দিগন্তের দিকে চেয়ে হুংকার ছুড়লো,
‘ টং ঘর ছেড়ে নিজের এলাকায় গিয়ে দাদাগিরি কর। এটা আমার। ’
‘ সবকিছুকে বাপের সম্পত্তি মনে করিস? ’

থামলো না আর ফাহাদ। দিগন্তের কাছে এসে হাত মুঠো করে ওর মুখ বরাবর ঘুষি মারলো। মুখে লাগার আগেই ফাহাদের হাত ধরল দিগন্ত। চেয়ার ছেড়ে উঠে এক লাথ মারলো তাতে। ছিটকে দূরে গিয়ে পড়ল সেটা। রায়হান একটা বড় শ্বাস ফেলে বলল,
‘ দুজনের কেউই সুবিধার না। ’
ফাহাদের হাত ঝটকা মেরে সরিয়ে গর্জে উঠল দিগন্ত,
‘ হাত ভেঙ্গে হাঁটুতে ঝুলিয়ে দেই। শালা, কথাবার্তা নাই। আসে হাতাহাতি শুরু করেছিস। ’
ফাহাদ ফুঁসে উঠে বলল,
‘ লাস্ট বার বলছি, চলে যা এখান থেকে। ’

আরো কিছুক্ষন কথা কাটাকাটি চলল দিগন্ত-ফাহাদের। রাগারাগি একপর্যায়ে মারামারিতে রূপ নিল। সবাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। মাঝখানে দুইজনের প্রচন্ড মারামারি চলছে। কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি না। দিগন্ত ফাহাদকে মারছে, ফাহাদও দিগন্তকে মারছে। নাক-মুখ ফেটে র’ক্তাত্ত হয়েছে দুজনে। তবুও মারামারি চলছেই।
শেষ পর্যায়ে ফাহাদ কোমড়ের পেছন থেকে রিভোলবার এনে দিগন্তের সামনে ধরলো। থামলো দিগন্ত! ওর দিকে তাক করা বন্দু দেখে ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসলো। আঙ্গুল ফেটে ঝরঝর করে র’ক্ত ঝড়ছে। হাত ঝাড়তে ঝাড়তে বলল,
‘ শালা! গায়ের জোর শেষ। নাকি আমার হাতের মার সহ্য করতে পারছিলি না। ছিহ! দুটো লাগতেই কুপোকাত। কা-পুরুষের মতো হাতে বন্দুক নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ছি। থুউউ! ’

বলে র’ক্তমিশ্রিত একদলা থু থু মাটিতে ফেললো।
ফাহাদ তড়িৎ বেগে দিগন্তের কাছে এসে বন্দুক ওর থুতনির নিচে ধরলো। নাক-মুখের জায়গায় জায়গায় থে’তলে গিয়েছে ফাহাদের। ঠোঁটের কোণ ফেটে গিয়েছে। সে অবস্থাতেই ফুঁসতে ফুঁসতে বলল,
‘ গায়ের জোর আমার শেষ হয় নি। বল! তুই ভয় পাচ্ছিস। ’
উচ্চস্বরে হাসলো দিগন্ত। ফাহাদ বন্দুকটা আরো জোরে চেপে ধরলো ওর থুতনীতে। হাসি থামিয়ে দিগন্ত ত্যাড়ছা গলায় বলল,

‘ তোর মতো শেয়ালকে দিগন্ত তালুকদার গুণেও দেখে না। দম থাকলে মেরে দেখা। ’
রক্তচক্ষু নিয়ে বন্দুক সরিয়ে নিল ফাহাদ। সেটা দেখে আবারো হাসলো দিগন্ত।
‘ কমিশনার বাপের বন্দুক তুলে এনে আমাকে ফাপড় দেখাচ্ছিস। শালা! ইতর। ’
পরপরই আবারো বলল, ‘ থাক! দুদিনের জন্য টং ঘর তোদের ভিক্ষা দিয়ে গেলাম। আমার কাজ শেষে নিজেদের রাস্তা মেপে নিবি। কাজ বেশি গুরুত্বপূর্ণ না হলে তোকে তোর জায়গা দেখিয়ে দিতাম। ’

দিগন্তবেলার প্রেমান্দোলন পর্ব ৩০

হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে সবার আদর-যত্নে বেশ সময় কাটছে বেলার। মায়ের হাতে পেট পুরে খেয়ে জম্পেশ ঘুম দিয়েছে। দিগন্তের সাথে দেখা হওয়ার পর থেকে ওর মন ভালো। ঘুমতেও ভালো লাগছে। বৃষ্টি থাকতে চেয়েছিল ওর সাথে কিন্তু বেলার জেদের কাছে পারে নি। ও একাই ঘুমাবে। রাত প্রায় একটা বাজছে। রহমানের চোখে ঘুম নেই। আমেনা কিছু বলতে চেয়েছিল কিন্তু মন-মেজাজ ভালো নেই দেখে পরে শুনবে বলে চলে এসেছে। বেলার রুমের কাছে এসে দরজা একটু ফাঁক করে ঘুমন্ত মেয়েকে দেখলো। দরজা ভালো করে চাপিয়ে বাইরে বের হয়ে বাগানের দিকে আসলো।
আঁধারের মাঝে নিস্তব্ধ পরিবেশের মাঝে দাঁড়িয়ে সময় নিয়ে গভীর চিন্তা ভাবনা করলো। অতঃপর ফোনে কাঙ্ক্ষিত নাম্বার বের করে কল লাগিয়ে দিল।

দিগন্তবেলার প্রেমান্দোলন পর্ব ৩২