ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ৪৭
মাহিরা ইসলাম মাহী
“মা তুমি তো জানো আমি মেয়ে মানুষ নিজ বাইকে উঠাই না।”
“ একটা থাপ্পড় দিয়ে সব দাঁত ফেলে দেব ছেলে। তারপর বাপের কাছে গিয়ে নতুন করে দাঁত লাগাস।যাহ।বেয়াদব। “
নীবিড় হতভম্ব দৃষ্টিতে মায়ের পানে চেয়ে।
কি দাঁড়ালো ব্যাপারটা? জুতো মেরে গরু দান তাই না?
মা কি আসলেই তাকে জুতো মারলো?
আশ্চর্য কি সব ভাবছে সে।ছিহ।
ছেলেকে শাসিয়ে বাসন্তী দাঁড়িয়ে নেই।গাড়িতে উঠে পরেছে সে।ইতোমধ্যে গাড়ি ছেড়ে ওও দিয়েছে।
নাওমী দুহাত বুকে গুঁজে মিটিমিটি হাসছে।
নীবিড় রাগে কটমট করতে করতে দিলো এক ঝারি,
“এভাবে সং সেঁজে দাঁড়িয়ে আছো কার অপেক্ষায়? প্রেমিক আসবে তোমার? তাহলে থাকো এখানে সারা রাত দাঁড়িয়ে। অসভ্য মেয়ে মানুষ।“
“ ঠিকআছে থাকলাম দাঁড়িয়ে। প্রেমিক আসুক অপেক্ষা করি বুঝলেন । আমি অসভ্য হলে আপনি অসভ্যের মাস্টার।”
“ সাটআপ।বেশি কথা বলে বেয়াদব মেয়ে মানুষ।”
নীবিড় বিরক্ত মুখে বাইকে চেপে বসে।
দু মিনিট অপেক্ষা করে সে নাওমী কে পেছনে উঠতে না দেখে প্রচন্ড গতিতে বাইক ছুটিয়ে চলে গেল।
নাওমী বিরবির করে নীবিড়ের উদ্দেশ্যে ভয়ংকর কতগুলো গালি ছুঁড়লো।
“ অভদ্র মহিষের বাচ্চা। সে নাহয় একটু বলেছেই তাই বলে এভাবে একা একটা মেয়ে ফেলে চলে যাবে? কি আশ্চর্য! পুনরায় একবার সাধতে তো পারতো নাকি?তাহলে সে ঠিকই উঠে যেত নাকি?
ঠিকআছে সেও দাঁড়িয়ে থাকবে।
বাসন্তী আন্টি বাড়ি ফিরে যখন দেখবে নাওমী নেই তখন পান্ডা বুঝবে মজা।হুহ।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
নাওমী অপেক্ষা করতে হলো না নীবিড় যে বেগে বাইক ছুটিয়ে গিয়েছিল দুমিনিটের মাঝে পুনরায় নাওমীর সামনে এসে হাজির হলো।
নাওমীর মুখে অদৃশ্য হাসি ফুটলো।
দেখতে পেল না নীবিড় তা।
“ কি হলো এখনো সংয়ের মতো দাঁড়িয়ে আছো কেন নাউডুবা চশমিশ? উঠতে বলেছি তোমায়।!
“ ওও বললেন বুঝি? শুনতে পাইনি ঠিক আরেকবার বলবেন প্লিজ?”
“ যাস্ট সাটআপ।”
নীবিড় গরম চোখে চাইতেই নাওমী আর কথা বাড়ালো না।ফটাফট উঠে বসলো বাইকের পেছনে।নাই মামার চাইতে কানা মামা ভালো বাবা।
নীবিড় বাইক স্টার্ট দিলো।
ধমক দিয়ে বলল,
“ ধরে বসো চশমিশ। পরে গেলে শেষে তোমার কারণে মায়ের কাছে আমার দাঁত গুলো খোয়া যাবে।”
নাওমী যখন নিঃশব্দে নীবিড়ের কাঁধে হাত রাখলো তার মনে হলো প্রচন্ড গতিতে তার বুকে কেউ ধাক্কা মারলো।
কানের পাশে বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ।
নীবিড় চোখ বন্ধ করে নিলো সঙ্গে সঙ্গে।
হৃদয়টা হঠাৎ এত উথাল-পাতাল করছে কেন কে জানে।
নীবিড়ের হঠাৎ কি হলো কে জানে।চট করে সে নাওমী কে বলল,
“ নামো।নামো মেয়ে।এখুনি নামো।”
“ কেন? কি হলো আবার।”
নাওমী অবাক কন্ঠে সুধায়।
“ নামতে বলেছি তোমায় কথা কানে যায় না চশমিশ?”
নাওমী গোমরা মুখ করে নেমে দাঁড়ায়।
“ উঠো।”
“ মানে টা কি? ব্যাটারি চালিত পুতুল পেয়েছেন নাকি? একবার বলবেন উঠতে, একবার বলবেন নামতে,আবার বলবেন উঠতে।ফাজলামো পেয়েছেন নাকি? আশ্চর্য।”
“ দু পা দুদিক দিয়ে বসো, পেছনে বাইক ধরো।খবরদার আমায় একফোঁটা ছুবে না নাউডুবা চশমিশ। তোমায় খুন করে ফেলব।”
নাওমী প্রচন্ড বিরক্তি নিয়ে দু পা দুদিক দিয়ে উঠে বসলো।
লুকিং গ্লাসে নীবিড়ের বিরক্তিকর মুখশ্রীর দিকে চেয়ে নাওমী দুষ্টু হাসলো।
নিষেধ সত্ত্বেও ফট করে সে নিজ দু হাত দিয়ে নীবিড়ে কাঁধ শক্ত করে ধরলো।
নীবিড় চিৎকার করে উঠলো।
“ চশমিশ তোমায় আমি… উফফ।”
নীবিড়ে মনে হলো এই প্রাণঘাতিক ছোঁয়ায় তার প্রাণটাই এবারে বেরিয়ে যাবে।
“ হাতটা সরাওওওও।”
উফফ আস্তে, চিৎকারে মনে হচ্ছে পান্ডাটা এবারে তার কানের তালাই ফাটিয়ে দেবে।
নাওমী ভেঙচি কেটে হাত সরিয়ে নিলো
নীবিড় হাফ ছেড়ে বাঁচলো।
“ হুহ।এমন ভাব করছেন যেন মানুষ নয় আস্ত পাগলা ঘোড়াকে আপনার ঘাড়ে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে আশ্চর্য মানুষ।”
নীবিড় বিরবির করে বলল,
“ তুমি তার চাইতে কম কিছু নও নাউডুবা চশমিশ। বরং তার চাইতেও অধিক পাগলা।”
নীবিড় বাইক স্টার্ট দিলো পুনরায়।
মাঝ রাস্তায় নাওমী নড়াচড়া করতে লাগলো অধিক পরিমাণে।
নীবিড় দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“ কি সমস্যা। মহারানী এভাবে বানরের মতন মোচড়ামুচড়ি করছে কি জন্য অভয় দিলে জানতে পারি কি?”
“তো মোচড়ামুচড়ি করবো না বলছেন? না করে উপায় আছে নাকি? কি ঘোড়ার ডিমের একখান বাইক যে কিনেছেন। পেছনে এত উঁচু কেন? মনে হচ্ছে এই আমি পরে গেলাম নিচের দিকে।আগেকার বাইক গুলো কি সুন্দর ছিলো জানেন? “
“ না তা জানবো কেমন করে বলো? আমি তো সদ্য জন্মানো শিশু নাউডুবা চশমিশ জানো না বুঝি? “
“ তা ঠিক বলেছেন শিশুর চাইতে আপনার জ্ঞান বুদ্ধি বেশিদূর আগাতে পারেনি অবশ্য। জানেন সেসব বাইক গুলোর সামনে পেছনে সমান সমান।চালাতে কিরকম ফটফট শব্দ হতো।আহাঃ শুনতেই ভালো লাগলো আর এখনকার বাইকগুলো দেখুন মনে হচ্ছে মিশরের পিরামিড। উপর থেকে নিচে ঢেউ খেলানো।
মানুষের বুদ্ধি জ্ঞানের যে কতটা অধঃপতন হচ্ছে কি বলবো আর।”
“ এটা এখানকার স্টাইল। ইডিয়েট।”
“ আরে রাখুন তো আপনার স্টাইল। বসতে না পারলে ওমন স্টাইলের গুল্লি মারি আমি।পেছন থেকে কি অদ্ভুত দেখা যায় জানেন?
মনে হয় কাকের উপর ময়ূর ঝুঁকে নাচছে।”
নীবিড় দাঁতে দাঁত চাপে।
বাড়ির সামনে পৌঁছাতেই নীবিড় যখন ব্রেক কষলো নাওমী হালকা ঝুঁকে গেল নীবিড়ের দিকে।
সে অনুভব করবো নাওমী বক্ষমাঝার হালকা করে ছুঁয়ে গেল তার পিঠ বেয়ে।
ইশশ কি সাংঘাতিক ব্যাপার-স্যাপার।
নীবিড়ের মনে হলো নাউডুবা চশমিশের কথাগুলোই ঠিকআছে। এসব বাইক তার জন্য অভিশাপ। পুরোনো মডেলগুলোই ঠিকআছে।
মানুষের জ্ঞান বুদ্ধি আসলেই রসাতলে যাচ্ছে দিন দিন।
সে কালই এই বাইক বুড়িগঙ্গায় পেলে পুরোনো মডেল ঘরে তুলবে।
এতকিছু ঘটে গেল, তার মাঝে দিয়ে যে এত ঝড়, তূফান, ঘূর্ণিঝড় সব বয়ে গেল অথচ নাউডুবা চশমিশ কিচ্ছুটি টের পেলনা? সারারাস্তা তার পাশাপাশি বসে থেকেও নয়?
কেন বুঝলো না? কেন?
গাড়িতে সাদাফ সুযোগ পেয়ে নিস্তব্ধতার কোমর জাপ্টে ধরলো।
নিস্তব্ধতা এমন চোখ গরম করে চাইলো যে সাদাফ সঙ্গে সঙ্গে হাত গুটিয়ে নিলো।
আহহ,এভাবে বুঝি তাকায় কেউ? সাদাফের ছোট প্রাণপাখিটা যে খাঁচা ছাড়া হবে।
নীরু কি তা জানে না? জামাই অকালে মৃত্যু বরণ করলে সে যে বিধবা হবে সেই খেয়াল কি যুবতী রমণী রাখে?
রাখে না তো।
রাখলে এভাবে চোখ গরম দিতে পারতোই না।
বরং আদর করে বুকের খাঁচায় ঢুকিয়ে নিতো।
কাছ ছাড়া করতোই না।
যেদিন সে অন্য জায়গায় দুষ্টু করবে তখন নীরু বুঝে ক্ষণ। কি ধন সে হারিয়েছে।
সেদিন যুবতী চাইলেও সে ধরা দেবে না। উহু মোটেও দেবে না।
অদিতি বিছানায় শুয়ে হাসফাস করছে। চোখে ঘুম ধরা দিচ্ছে না কিছুতেই অথচ বিয়ের আগে কেমন ঘুমের ঠ্যালায় চোখেই দেখতে পাচ্ছিলো না প্রায়।
দিনরাত কেটেছে তার ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে আর কেঁদে কেঁদে।
নিজের উপর নিজে বিরক্ত হয়ে অদিতি উঠে বসলো।ওয়াশরুমে ঢুকে চোখে মুখে পানি দিলো।এরপর কিচেনে গেল।
এককাপ কফি হাতে বেলকনিতে এসে দাঁড়ালো।
কপির মগে চুমুক দিয়ে আবেশে চোখ বুঝলো।এই তো এখন ভালো লাগছে।
কেমন মৃদু মন্দ সমীরণ বৈছে চারিপাশে।
ভালো লাগছে।
অদিতির ফোন বাজে।
জাওয়াদের নম্বর খানা দেখে তার ঠোঁটে হাসি ফুটে।
ফোন রিসিভ করে সে চুপ করে থাকে।
ওপাশ থেকে দুষ্টু ভরাট কন্ঠ ভেসে আসে,
“ কি করছিলেন মাই লাভ?”
অদিতি ফিসফিস করে বলল,
“ আকাশ দেখছিলাম জাওয়াদ। দেখবেন আমার সঙ্গে? “
“ উমম দেখায়ই যায় মন্দ নহে। সঙ্গী করবেন আমায়।”
“ হু।”
“ তবে আসুন সঙ্গীর সঙ্গে একটুখানি গল্প করেন।”
অদিতির মন খারাপ হয়ে যায় মুহুর্তে ই
সে মনের কথাটা এবারে আর চেপে রাখতে সক্ষম হলো না ফট করে বলেই বসলো।
“ আজকে থেকে গেলেই পারতেন জাওয়াদ।আমরা দু’জন বেলকনিতে বসে কফি ভাগ করে খেতে খেতে গল্প করতে পারতাম।”
জাওয়াদ হাসলো।
“ এই যে এখন কি গল্প করছিনা মাই লাভ?”
অদিতি আদুরে স্বরে বলল,
“ উহু এই গল্প তো সেই গল্প নয়।”
“আচ্ছা তবে কেমন গল্প শুনি।”
“ এই যে আপনি তো মাইল কের মাইল দূরে আছেন।এই কথায় আপনার চোখে চোখ রাখতে পারছি না যে।হাতে হাত ছুঁইয়ে দিতে পারছিনা যে।”
“ এভাবে বলতে আমি সত্যি টিকতে পারবো না মাই লাভ।ছুটে চলে আসবো কিন্তু। “
“ এই নাআআ।”
জাওয়াদ ঠোঁট কামড়ে হাসলো।ফিসফিস করে বলল,
“ আজ থাকলে যে নিজেকে কন্ট্রোল করা বড্ড দায় হয়ে পরতো লিটল বার্ড।
আপনি যে আমার ভার বহন করতে সক্ষম হতেন না।আপনাকে আর একটু বিগ হতে হবে মাই লাভ।”
অদিতির চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হলো,
“ কে বলে পারতাম না।আপনি নিজ ভার দিয়ে তো দেখতেন। আপনার লিটল বার্ড আপনার জন্য সব সহ্য করতে রাজী আছে।সব।এক বুক সমান দুঃখ ও সে বুকে পুষতে রাজী।এক সমুদ্র সমান মিষ্টি সুখ ও সে গ্রহণ করতে রাজী বুঝলেন।”
বলা হলো না।মনের কথা তার মনেই গেঁথে রইলো।
লজ্জা রাঙা হয় তার দুই তনু।
এত্ত এত্ত দুষ্টু তার প্রফেসর মহাশয় কে জানতো। ইশশ।
অদিতি পারেনা ফোন রেখে ছুটে পালিয়ে যেতে।
কিন্তু ফোন যে রাখতেও ইচ্ছে করছেনা।দুষ্টু কথা হলে কি হবে শুনতে ভালো লাগছে তার।
প্রিয় মানুষটার, দুষ্টু মিষ্টি, তেঁতো সকল বাক্যগুলো শুনতেই বুঝি এত মধূর লাগে?
কেন লাগে? কে জানে। হয়তো এটাই ওপরওয়ালার সৃষ্টি এক অদ্ভুত মেলবন্ধন।
নতুন কপোত-কপোতী দু’জনার দুষ্টু-মিষ্টি, মধূর কথা চলতে থাকে সারারাত।
কথা বলতে বলতে অদিতি দোলনায় গিয়ে বসে।
একটা সময় ভোরের দিকে ফোন কানে চেপেই সে ঘুমের দেশে পাড়ি জমায়।
এপাশে ভারী নিঃশ্বাসের আনাগোনা হতেই জাওয়াদ মুচকি হাসে।
তার লিটল বার্ড অবশেষে ঘুমিয়ে পড়েছে।
বোকা পাখি তার।পিচ্চি বোকা পাখি।
নিস্তব্ধতা আর সাদাফ কে সোজা ওসমান ভিলায় নিয়ে আসা হলো।
সুজন-আশা, কাশফি ও এসেছে সঙ্গে।
কথা হলো সপ্তাহ খানেক পর ধুমধাম করে বাড়ির বউকে ঘরে তুলবে আশা।
নিজের বিয়ে ধুমধাম করে না হলে কি হয়েছে। বাপের মতো ছেলে খাইষ্টা হলে কি হবে।শ্বাশুড়ি মা তো আর খাইষ্টা নয়।নীরু মা কে সে ধুমধাম করেই ঘরে তুলবে।
সে জানে বিয়ে নিয়ে প্রত্যেক মেয়েরই একটা আলাদা স্বপ্ন থাকে।বউ সাজবে।বাড়ি ভর্তি আত্মীয় স্বজনে থইথই করবে।আহাঃ তবেই না আসল বিয়ের মজা।
এভাবে লুকিয়ে চুরিয়ে নিরামিষ বিয়ে আবার বিয়ে হলো নাকি।হুহ।
আশা খুশিতে গদগদ হয়ে নিজের গলার সোনার চেনটা নিস্তব্ধতার গলায় পরিয়ে দিলো।
নিস্তব্ধতা শক্ত করে আশা কে জরিয়ে ধরলো।
“ থ্যাংকিউ চাচু মা।”
“ সে কিরে থ্যাংকিউ বলছিস কেন রে।আমি তো জানি বর পেয়ে খুশি না হলে কি হয়েছে, আমার মতো একটা লক্ষ্মী মন্ত শ্বাশুড়ী মা পেয়ে তুই বিরাট খুশি।”
নিস্তব্ধতা হাসলো। ফিসফিস করে বলল,
“ একদম ঠিক ধরেছ চাচু মা।”
সবাইকে ছাঁড়িয়ে নিস্তব্ধতা নিজ রুমের দিকে পা বাড়ায়।
সাদাফ তখনো কাচুমাচু ভঙ্গিতে সোফায় বসে।
নিস্তব্ধ আর আশা অগ্নি দৃষ্টিতে তাঁদের পান্ডার পানে চেয়ে।
নিস্তব্ধ’র অগ্নি চোখের ভাষা যেন নিঃশব্দে বলছে,
“এখনো বসে বসে কি ভোর হওয়ার অপেক্ষা করছো জামাই বাবা? তবে কিন্তু বিরাট ভুল করেছ।আমার বেলায় নাহয় আমি নিজে নির্লিপ্ত ছিলাম সঙ্গে তোমার আন্টিও।এবারে নাহয় আমার মেয়ে নির্লিপ্ত।তুমি তো নও।একটা মেয়ে মানুষ সামলাতে পারবে না পুরুষ মানুষ হয়ে? কি আশ্চর্য।কেমন পুরুষ মানুষ তবে? মেরুদন্ড শক্ত করতে হবে তোমার জামাই বাবা।বউকে এভাবে ভয় পেলে চলবে নাকি।তুমি জানো তোমার আন্টি ঘাড় ত্যাড়ামি করেছিলো বলে কি করেছিলাম? সোজা কাঁধে তুলে নিয়ে গিয়েছিলান আর তুমি?শেষে আমার জামাই হয়ে কিনা এই অবস্থা? ছিঃ,ছিঃ ছিহ।মান সম্মান সব ডুবালে দেখি।
শুনো ছেলে কথা না শুনলে বউয়ের গালে ঠাস করে চর বসিয়ে দেবে।নয়তো ফট করে দুটো চুমু খেয়ে নেবে।বউয়ের সঙ্গে যা খুশি তাই করবে কেউ তো তোমায় বাঁধা দিচ্ছে না বাবা, তবে এত জড়তা এখনো কিসের তোমার।দোহায় এবারে একটা হিল্লে করে আমাদের নতুন সদস্যের মুখ দেখাও জামাইবাবা।”
আশা গরম চোখ যেন নিঃশব্দে বলছে,
“বউমার পেছনে পেছন যারে হতভাগা।এখনো বসে বসে দেখছিস কি? যা দে দৌঁড়।”
সাদাফ অসহায় চোখে তার পাশে বসা আদ্রিতের পানে চাইলো।
ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ৪৬
“ ব্রো…?”
আদ্রিত সাদাফের পায়ে এক লাত্থি মেরে তাকে নিচে ফেলে দিলো।
“ বসে বসে দেখছিস কি বাসর ঘরে যা ইডিয়েট।”
সাদাফ আর এক মুহুর্ত দাঁড়ায় না।
এক লাফে উঠে দৌঁড়ে যায় নিস্তব্ধতার পিছু পিছু।
নিস্তব্ধতা মাত্রই দরজা লাগাতে যাবে ঠাস করে।তার আগে সাদাফ গিয়ে নিজ সর্বশক্তি দিয়ে দরজা ঠেলে ধরে।
নিস্তব্ধতা চোখ বড় বড় করে চায়।
এরপর….