না চাইলেও তুমি শুধু আমারই পর্ব ২১
মাইশা জান্নাত নূরা
সারফারাজকে নীরার সাথে এমন ব্যবহার করতে দেখে পিহু অনেক অবাক হয়ে গিয়েছে। খান বাড়িতে আসার পর থেকে সারফারাজকে সে ভিন্ন রূপেই দেখেছে। অত্যন্ত বিনয়ী, পরিবারের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধাশীল এবং আন্তরিক ভালোবাসায় ভরা একজন মানুষ সারফারাজ। অথচ একটু আগেই নীরার মুখের সামনে দরজাটা শব্দে বন্ধ করে দেওয়ায় পিহুর মনে হলো যেনো এই সারফারাজ ওর পরিচিত সেই সারফারাজ নয়। আকস্মিক ঐ ঘটনায় পিহুও কেঁপে উঠেছিলো।
বিছানার ধারে গিয়ে সারফারাজ মাথা নত করে বসে পড়লো। পিহু ধীরে ধীরে ওর দিকে এগিয়ে এলো। গলা শুকিয়ে আসছিলো পিহুর। তবুও সাহস সঞ্চার করে বললো….
—”কি হলো হঠাৎ আপনার? বাইরে ওনার সাথে…!”
কথা শেষ হবার আগেই সারফারাজ পিহুর দু’হাত শক্ত করে ধরে নিজের দু’পায়ের মাঝে টেনে নিলো ওকে। এরপর পিহুর কোমর জড়িয়ে ওর বুকের সাথে নিজের মাথা চেপে রাখলো। সারফারাজের আকস্মিক এমন কাজে পিহুর প্রাণ যেনো বের হয়ে আসার জোগাড় হলো। শিরদাঁড়া বেয়ে শীতল হাওয়া বয়ে গেলো মুহূর্তেই। শুকনো ঠোঁটজোড়া ভিজিয়ে নেওয়ার জন্য জিহ্বার অগ্রভাগ বুলিয়ে নিলো পিহু। সারফারাজ চোখ বন্ধ করে গভীরভাবে শ্বাস নিচ্ছিলো, আবার ছাড়ছিলো।
পিহু নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে ধীর স্বরে বললো…..
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
—”এই এমপি সাহেব! বলুন না কী হয়েছে আপনার? কোথায় কষ্ট হচ্ছে? দয়া করে বলুন।”
সারফারাজ কিছুক্ষণ চুপ থেকে তারপর গভীর কণ্ঠে বললো….
—”আমাদের তিন ভাইয়ের চোখের মণি ছিলো নীরা। ছোট থেকে ওর আঠারো বছর বয়স পর্যন্ত ওকে অগাধ স্নেহ-ভালোবাসায় আগলে রেখেছিলাম আমরা। ওর প্রতিটি চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করেছি আমরা। কিন্তু সেই নীরাই হঠাৎ আমাদের থেকে দূরে সরে গেলো। টানা দুই বছর কোনো যোগাযোগ রাখে নি নীরা আমাদের সাথে। ফোন দিলে রিসিভ করতো না। মেসেজের রিপ্লাই করে নি। দেখা করা তো দূরের বিষয়। কেবল চাচা-চাচীর সাথে সীমিত সময়ের জন্য কথা বলতো। ওর এই নির্লিপ্ততা আমাদের ভালোবাসাকে ধীরে ধীরে অভিমানে, আর সেই অভিমানকে আজ তীব্র রাগে পরিণত করেছে। এ রাগ সহজে কমবে না পিহু। এতো তাড়াতাড়ি ক্ষমাও করতে পারবো না আমি ওকে।”
পিহু শব্দ করে একবার দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললো। তারপর মৃদু কণ্ঠে বললো…..
—”আমি জানি না নীরা কেনো আপনাদের থেকে আড়াল করে রেখেছিলো নিজেকে। কিন্তু আমার মনে হয় না কোনো তুচ্ছ কারণে সে আপনাদের সাথে এমনটা করেছে। হয়তো ওর সাথে এমন কিছু ঘটেছে যা আপনাদের দৃষ্টির বাইরে রয়ে গিয়েছে এখনও। আপনি নীরা বড় ভাই। অন্তত আপনার উচিত ওর সাথে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলা। সবকিছু শোনার চেষ্টা করা। কারণটা না জেনে এভাবে রাগ করে থাকাটা ঠিক হবে না। কখনো কখনো আমাদের ভুলের কারণেই পর আফসোস করতে হয় এটা ভেবে যে, কেনো আগে খোঁজ নিলাম না!”
সারফারাজ মুখ তুলে গভীরভাবে তাকালো পিহুর চোখের দিকে। পিহু স্পষ্ট দেখলো ওর চোখের ভেতরে গোপন সেই ব্য*থা*র ছাপ ফুটে আছে। সারফারাজ ভারী কণ্ঠে বললো…..
—”যদি কোনো সমস্যাই থাকতো, তবে অন্তত আমাকে নীরা বলতে পারতো। সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলাম আমরা ওকে।”
পিহু দৃঢ় গলায় বললো….
—”মানছি, আপনারা ওকে অগাধ ভালোবাসা দিয়েছিলেন। স্বাধীনভাবে চলাফেরাতে বাঁধা প্রয়োগ করেন নি। তবুও নীরার এমন করার পেছনে কোনো না কোনো কারণ আছেই এমপি সাহেব। তাই রাগকে কিছুটা দূরে সরিয়ে রেখে একবার চেষ্টা করুন। হয়তো সত্যটা জানার পর আপনাদেরই আফসোস হবে!”
পিহুর কথা শেষ হতেই সারফারাজ ওকে নিজের থেকে সরিয়ে দিলো। কিছুটা দূরে ঠেলে দিয়ে গম্ভীর স্বরে বললো….
—”তুমি তাহলে নীরার সাফাই গাইতে এসেছো!”
পিহু কিছু বলার আগেই সারফারাজ হাত তুলে ওকে থামিয়ে দিয়ে বললো…
—”আর কিছু বলো না। আমি চাই না আমার কোনো কথায় বা ব্যবহারে তুমি কষ্ট পাও।”
এ কথা বলে সারফারাজ উঠে সোজা ওয়াশরুমে চলে গেলো। পিহু নিরুত্তর দাঁড়িয়ে থেকে একবার দীর্ঘশ্বাস ফেললো। মনে মনে বললো….
—”ভিতরে ভিতরে ভে*ঙে পড়ছে মানুষটা। তবুও বাইরে থেকে ভা*ঙনের চিহ্নটুকু প্রকাশ করতে দিচ্ছে না। আপনি না চাইলেও এবার যা করার আমাকেই করতে হবে এমপি সাহেব।”
কিছুক্ষণ পর উপরের রুমের দরজা জোড়শব্দে বন্ধ হওয়ার আওয়াজ ভেসে এলো। নির্ঝর আর ইলমা দু’জনেই একে অপরের দিকে তাকালো। অতঃপর সিঁড়ির দিকে তাকাতেই দেখলো তেজ নিচে আসছে।
এবার অবশ্য শরীরে একটি কালো টি-শার্ট আর ধূসর রংয়ের ট্রাউজার পড়েছে সে। বেশ ফুরফুরে মেজাজ নিয়েই চুলে হাত বুলাতে বুলাতে নিচে নামছে তেজ। নিচে পৌঁছাতেই তেজ গম্ভীর ভঙ্গিতে বললো…
—”একটু আগে তো তোয়ালে পরা অবস্থায় দেখে লজ্জায় চিৎকার করছিলেন। এখন যে মুখ থেকে হাত সরিয়ে আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছেন একেবারে নি*র্ল*জ্জা সেজে? নারী জাতির মনস্তত্ত্ব আসলেই আজও আমার কাছে রহস্যই থেকে গেলো!”
ইলমা ভ্রু কুঁচকে বললো…..
—”যেই লোক দিনের আলোয় খালি গায়ে, কেবল একটা তোয়ালে নিম্নাংশে পেঁচিয়ে পুরো বাড়িতে হেঁটে বেড়ায় তাকে দেখে লজ্জা পেলে লজ্জারাও লজ্জায় মূর্ছা যাবে। আর তখন আমার চিৎকার শুনে ধ*পাস করে সিঁড়িতে আপনি বসে গিয়েছিলেন তাহলে লজ্জাটা আসলে কে পেয়েছিলো? আমি নাকি আপনি?”
তেজ ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে বললো—
—”বাহ্, জবাবের ধরণ তো দেখি খা*সা। এভাবে মুখে মুখে জবাব দেওয়ার সাহস কে দিয়েছে আপনাকে? নির্ঝর?”
নির্ঝর দুই হাত তুলে আত্মসমর্পণের ভঙ্গিতে বললো…
—”না ভাই, আমি কিন্তু কিছুই করি নি। আমি বরং এ মুহূর্তে চাই তোমাদের দু’জনের ঝগড়া থেকে দূরে থাকতে।”
তেজ মেঝের দিকে তাকিয়ে হালকা হাঁটাহাঁটি করতে করতে বললো….
—”তাহলে খান বংশের নিষ্পাপ বাচ্চা নির্ঝর খান, এতো ভদ্রলোক তুমি। তবুও তোমার পাশে এই মেয়েকে কেনো বসিয়ে রেখেছো শুনি! পরিবারের সবাই এ বিষয়ে জেনে গেলে কী হবে ভেবে দেখেছো?”
নির্ঝর লম্বা নিঃশ্বাস ছেড়ে বললো….
—”তেজ ভাই, তোমাকে সবটা খুলে বলা দরকার।”
তেজ বললো….
—”এই না না, এই মেয়ের সামনে অন্তত খুলিস না সব।”
নির্ঝর তেজের কথায় হা হয়ে গেলো। ইলমা চোখ ছোট ছোট করে বিরবিরিয়ে বললো….
—”অ*ভদ্র, ম্যনার*লে*স লোক কোথাকার।”
তেজ বললো….
—”ও আচ্ছা তুই পুরো ঘটনা খোলাসা করে বলার কথা বলছিলি! আমি ভাবলাম কি না কি খুলবি!”
নির্ঝর বললো….
—”ভাই প্লিজ থেমে যাও তুমি। আমার মান-সম্মানের কয়েক ফ্লেভারে ফালুদা বানানো হয়ে গিয়েছে অলরেডি। এখন আর নতুন ফ্লেভারে কিছু তৈরি হোক তা চাইছি না।”
তেজ প্রতিত্তুরে কেবল মাথা দুলালো। নির্ঝর বললো….
—”ওনার নাম ইলমা। উনি এখন আমাদের গেস্ট হিসেবে আছেন এখানে। একটা ভিষণ রকম খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন উনি সেখান থেকে নিজেকে বাঁচাতেই এখানে আছেন গতরাত থেকে। তাই আমার সাথে উনাকে জড়িয়ে কোনো বাজে ধারণা করো না তুমি প্লিজ। আর আমি যাস্ট উনাকে সাহায্য করার চেষ্টা করছি। তুমি চুপচাপ বসো তারপর পুরো ঘটনা শুনো।”
তেজ কিছুক্ষণ নির্ঝরের চোখে তাকিয়ে রইলো। তারপর হেসে সোফার অন্য পাশে গিয়ে ধপ করে বসে বললো…
—”আচ্ছা, তোর কথা আমি আপাতত বিশ্বাস করছি। তবে একটা কথা বলে দিই নির্ঝর। এই মেয়ে কিন্তু কোনো সাধারণ মেয়ে না। বুঝে-শুনে প্রশ্রয় দিস। নয়তো পরে দেখা গেলো তোর জীবনে শুধু গোলযোগই আনছে একের পর এক।”
ইলমা তীব্র স্বরে বললো….
—”আপনার মতো মানুষের সাথে যার দেখা হবে তার জীবনেই শুরু হবে আসল গোলযোগ। তাই নিজের মতো সবাইকে ভাবাটা বন্ধ করুন।”
তেজ মুখ বাঁকিয়ে বললো…
—”ওফফ! এক দেখাতেই আপনি যেমন আমায় চিনে নিয়েছেন আমিও আপনাকে চিনে নিলাম। কি মিল আমাদের মধ্যে ভাবা যায়!”
—”আমি আপনার মতো না মি.তেজ খান। আমি সম্পূর্ণই আপনার বিপরীতধর্মী একজন মানুষ। তাই অহেতুক আপনার সাথে কথা বলার কোনো ইচ্ছে আমার হচ্ছে না।”
—”বেশ তো, আমার সঙ্গে কথা না বাড়ানোটাই আপনার জন্য মঙ্গল। কারণ আমার সঙ্গে বেশি কথা বললে আপনাকে খুব বা*জে ভাবে হারতে হবে তা আপনাকে ক্লিয়ারলিই জানিয়ে দিলাম।”
ইলমা তেজের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে উত্তর দিলো….
—”আপনার মতো মানুষের কাছে আমায় হারতে হবে না। বরং আপনাকেই আমার কাছে গো হারা হারতে হবে জন্য দয়া হলো আপনার উপর।”
এবার নির্ঝর ওর হাত দু*টো একসাথে করে চেপে ধরে বললো….
—”থামো প্লিজ, তোমরা দু’জনে মিলে আমার মাথা খারাপ করে দিচ্ছো!”
নীরা ওর রুমে ঢুকে দরজা হালকা ভিড়িয়ে বিছানায় এসে বসলো। এতোক্ষণ নিঃশব্দে কান্নারা ওর দু’চোখ বেয়ে ঝরে পড়লেও এবার সব বাঁধ ভে*ঙে গেলো। হুহু করে কেঁদে উঠলো নীরা। দুই হাতের তালু দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছে। চোখের জলেরা ভিজিয়ে দিচ্ছে ওর গলায় পেঁচানো ওড়নাটাকে।
ঠিক তখনই ওর রুমের দরজায় টোকা পড়লো। চমকে উঠে নীরা তাড়াহুড়ো করে চোখ মুছলো ঠিকই। কিন্তু কান্নার দাগ পুরোপুরি মুছে ফেলতে পারলো না সে। দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করলো পিহু। পিহুর দিকে তাকিয়ে খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে নীরা বললো….
—”আ-আপনি কে?”
হালকা হাসি দিয়ে পিহু উত্তর দিলো…
—”আমি পিহু। তোমার বড় ভাবী।”
পরপরই নীরা উল্টোপিঠ হয়ে ওড়নাটা দিয়ে নিজের মুখটা হালকাভাবে মুছে নিয়ে বিছানা থেকে নেমে জোরপূর্বক হাসার চেষ্টা করে পিহুর দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বললো….
—”ওওও! আপনিই তাহলে আমার বড় ভাবী! আজই আমাদের প্রথম দেখা হলো তো তাই চিনতে পারি নি।”
নীরা পিহুর দুই হাত ধরে টেনে বিছানায় এনে বসালো ওকে। তারপর বললো….
—”আমি সত্যিই খুব খুশি হয়েছি আপনাকে দেখে!”
পিহু নীরার প্রাণোচ্ছলতা ভাব দ্বারা নিজের ভেতরের কষ্টকে ঢাকার বৃ*থা চেষ্টা করতে দেখে কোমল স্বরে বললো…..
—”নীরা, আমি জানি তুমি ওনার ওমন কথায় ও আচারণে কষ্ট পেয়েছো। আসলে তোমার বড় ভাইয়া তখন নিজের রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। কিন্তু জানো! ওনার এই রাগ আসলে অভিমানের রাগ। তোমাকে অনেক ভালোবাসেন উনি। তাই হঠাৎ ওনার থেকে তুমি নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছিলে জন্য ভিষণ ক*ষ্ট পেয়েছেন।”
নীরা কিয়ৎক্ষণ চুপ করে রইলো। অতঃপর শব্দ করে একবার নিঃশ্বাস ফেলে বললো…..
—”ভাবী, আমি জানি বড় ভাইয়া একটু গরম মেজাজের মানুষ। তবে আমি পারবো ভাইয়ার সব রাগ-অভিমান ভাঙাতে। আমাকে যে পারতেই হবে।আর আপনি চিন্তা করবেন না এসব নিয়ে।”
পিহু নীরার হাতের উপর আলতো করে ওর হাত রেখে বললো….
—”না নীরা, আমি চাই না তুমি একা এই কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করো। তোমার পাশে আমিও থাকতে চাই। তাই তুমি আমাকে ভাবী নয়, বোন ভেবো।”
নীরার চোখ চকচক করে উঠলো। সে বললো….
—”সত্যি ভাবী? মানে, বোন ভাবতে পারবো?”
পিহু মাথা নেড়ে হেসে বললো….
—”হ্যাঁ।”
নীরা খিলখিল করে হেসে উঠে বললো….
—”তাহলে আজ থেকে আপনাকে আমি ‘পিহু আপু’ বলে ডাকবো। যেদিন থেকে মা শুনেছে আপনার সাথে বড় ভাইয়ার বিয়ের কথা চলছে! যখনই মায়ের সাথে কথা হতো আপনাকে নিয়ে শত রকমের প্রশংসা করতো। তাই আপনাকে না দেখলেও আপনার সম্পর্কে মোটামুটি সবই জানা হয়ে গিয়েছে আমার।”
পিহু হেসে বললো….
—”আপনি বলে সম্বোধন না করে তুমি বলে সম্বোধন করতে পারো তুমি আমায় নীরা। আপনি শব্দটা দূরের মনে হয় আর তুমি শব্দটা আপন আপন অনুভূতি জাগায়।”
না চাইলেও তুমি শুধু আমারই পর্ব ২০
নীরা মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো। পিহু আরো কিছুসময় নীরার কাছে কথা বললো। পিহু বুঝতে পারলো নীরা অনেক সহজ-সরল মাইন্ডের। খুব সহজেই নতুন কারোর সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। পিহুর মনেও অনেক প্রশ্ন জমে আছে নীরাকে নিয়ে। এমন মিষ্টি মেয়েটার হঠাৎ কি হয়েছিলো যার জন্য সে দু’ বছরের জন্য নিজেকে নিজের প্রিয়জনদের থেকে আড়াল করে রেখেছিলো…?