না চাইলেও তুমি শুধু আমারই পর্ব ২৩
মাইশা জান্নাত নূরা
রাত প্রায় ১১টা….
শহরের শীতল বাতাসটা ঠান্ডা ঠান্ডা অনুভব দিচ্ছে। রাস্তার মাঝদিয়ে খুঁটির সাথে বাঁধিয়ে রাখা লাইট গুলোর কৃত্রিম হলদেটে আলো এসে পড়ছে সারফারাজের গাড়ির গায়ে। হাসপাতাল থেকে বের হয়ে পার্টির একটা জরুরি কাজে যেতে হয়েছিলো ওকে। পার্টির লোকজন অপেক্ষা করছিলো আগে থেকেই। কাজ শেষ হলে খান বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করেছে সারফারাজ।
খান ভিলার মূল ফটক পেরিয়ে নিজ গাড়ি নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো সারফারাজ। পার্কিং সাইডে গাড়িটা রেখে সোজা খান বাড়ির ভেতরে চলে এলো সারফারাজ। পুরো বাড়ি জুড়ে নিরবতা বিরাজ করছে। সকল সদস্যরা হয়তো ঘুমিয়ে গিয়েছেন ইতিমধ্যেই। সারফারাজ ড্রয়িংরুমে আসতেই ওর পা জোড়া থেমে গেলো।
সোফার উপর জড়োসড়ো হয়ে ঘুমিয়ে আছে পিহু। ড্রয়িংরুমের মৃদু আলোয় ওর মুখটা একেবারে শিশুর মতো শান্ত লাগছে। ঘুমন্ত অবস্থায়ও পিহু মুখজুড়ে অন্যরকম মায়া ছড়িয়ে আছে। নাকের ডগায় কিছু অবাধ্য চুল এসে পড়েছে। ঠোঁটদুটো সামান্য ফাঁক হয়ে আছে। বুকটা নিঃশ্বাসের তালে হালকা ভাবে উঠানামা করছে।
সারফারাজ ওর পায়ের আওয়াজ একেবারেই কমিয়ে পিহু কাছে এগিয়ে এলো। দু’হাত পাজামার পকেটে ঢুকিয়ে কিছুক্ষণ নিরবে তাকিয়ে রইলো পিহুর দিকে। তারপর সারফারাজ নিজের বুকের বামপাশে হাত রেখে ফিসফিস করে বললো….
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
—“এই মেয়েটা আমাকে মে*রেই ফেলবে। ঘুমিয়েও কোনো মানুষকে এতো মায়াবী লাগতে পারে, ভাবা যায়! উফহহহহ!”
দু’চোখ জুড়ে একরাশ কোমলতা ফুটে উঠলো সারফারাজের। তারপর নিচু হয়ে দুই বাহু বাড়িয়ে খুব যত্নে, নিঃশব্দে পিহুকে পাঁজাকোলে তুলে নিলো সারফারাজ। পিহু গভীর ঘুমে ডুবে আছে। তবুও ঘুমের ঘোরেই পিহু সারফারাজের পান্জাবির কলার ধরে ফেললো এক হাতে। আর ওর অপর হাতটা গিয়ে ঠেকলো সারফারাজের বুকের উপর।
সারফারাজের ঠোঁটে মৃদু হাসির রেখা ফুটে উঠলো। হালকা মাথা নাড়িয়ে সারফারাজ ফিসফিস করে বললো…..
—“আমার ছোট্ট বউটা এখন অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাচ্ছে আস্তে আস্তে।”
নিজের বুকের সাথে লেপ্টে থাকা পিহুকে নিয়ে ধীরে ধীরে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে লাগলো সারফারাজ। কিয়ৎক্ষণ পর নিজের রুমে প্রবেশ করে স্বযত্নে পিহুকে বিছানায় শুইয়ে দিলো সারফারাজ। একচুল পরিমাণও যেনো কষ্ট না পায় পিহু, ঘুমটা যেনো ভে*ঙে না যায় সেইদিকে পুরো খেয়াল রেখেই পিহুর মাথার নিচে বালিশটা ঠিক করে দিলো সারফারাজ। অতঃপর পিহুর পায়ের কাছে রাখা কম্বলটা টেনে ওর শরীরের উপর বিছিয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ নিরবে দাঁড়িয়ে রইলো ওর পাশে সারফারাজ। মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে রইলো পিহুর মুখশ্রী পানে।
অতঃপর সারফারাজ আলমারি খুলে একটা নেভি-ব্লু টি-শার্ট আর অফ হোয়াইট ট্রাউজার বের করলো। পোশাকদুটো হাতে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে। কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে বের হলো। চুলগুলো সামান্য ভেজা ও অগোছালো হওয়ায় তাতে হাত বুলিয়ে হালকা গোছালো করলো সারফারাজ। তারপর নিঃশব্দে নিচে নেমে এলো সে।
রান্নাঘরে প্রবেশ করে ফ্রিজ খুলতেই দেখলো কয়েকটা বক্সে খাবার রাখা রয়েছে। খাবারগুলো অনেকক্ষণ আগেই রাখার কারণে ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে পুরোপুরি। সারফারাজ পরিমাণমতো খাবার বের করে আলাদা আলাদা বটিতে নিলো। আজ একটু ভাড়ি খাবারই রান্না হয়েছে। তাই সে পোলাও, রোস্ট, সালাদ আর সাথে সামান্য মিষ্টান্ন নিয়েছে। ওভেনে পোলাও আর রোস্ট গরম করে সুন্দরভাবে প্লেটে সাজিয়ে নিলো। সারফারাজ হাসিমুখে বললো….
—“বউয়ের জন্য নিজের হাতে প্রথম কোনো ঘরোয়া কাজ করলাম। শান্তি শান্তি লাগছে মনের ভিতরটাতে।”
এই বলে সারফারাজ ট্রে-টা হাতে নিয়ে নিঃশব্দে উপরে উঠে এলো। রুমে ঢুকতেই পিহুকে আগের মতোই ঘুমন্ত অবস্থায় দেখলো সে। খাবারের ট্রে-টা বেডসাইড টেবিলের উপর রেখে বিছানার কিনারায় বসে পিহুর কপালের চুলগুলো আলতো ভাবে সরিয়ে ওর কপালে গভীরভাবে একটা চুমু খেলো সারফারাজ।
ঠিক সেই মুহূর্তেই পিহুর ঘুম ভেঙে গেলো। পিহু চোখ মেলে তাকাতেই সারফারাজকে নিজের পাশে হাসিমুখে বসে থাকতে দেখে চমকে উঠে বসে বললো…..
—“আপনি! আপনি এসে গিয়েছেন? আমি তো নিচে সোফায় বসে ছিলাম! রুমে আসলাম কখন…!”
সারফারাজ কিছু বললো না শুধু মৃদু হাসলো। পিহু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বুঝে ফেললো আসল ব্যাপারটা। সে হয়তো সারফারাজের আসার অপেক্ষায় থাকতে থাকতে ড্রয়িংরুমের সোফাতেই ঘুমিয়ে পড়েছিলো। আর সারফারাজ এসে ওকে ঘরে এনে শুইয়ে দিয়েছে।
পরপরই লজ্জায় পিহুর শ্যমরঙা গাল দু’টো টুকটুকে লাল হয়ে গেলো। পিহু মুখ নুইয়ে নিয়ে নরম কণ্ঠে বললো….
—“আপনি বসুন, আমি আপনার জন্য খাবারগুলো গরম করে নিয়ে আসছি।”
পিহু বিছানা থেকে নামার জন্য উদ্দ্যত হলে সারফারাজ পিহুর হাতটা ধরে বললো….
—“সেটার আর দরকার নেই প্রিটিহার্ট। ঐ দিকে দেখো…!”
সারফারাজ ইশারায় পাশেই বেডসাইড টেবিলের উপর রাখা খাবারের ট্রেটা দেখালো পিহুকে। গরম খাবারের ধোঁয়া এখনো উঠছে হালকা হালকা।
পিহু বিস্ময়ে বড় বড় চোখে সারফারাজের দিকে তাকিয়ে বললো…..
—“আপনি! আপনি গরম করেছেন খাবারগুলো? আপনি রান্নার কাজেও হাত লাগান নাকি?”
সারফারাজ ওর ঠোঁট আলতোভাবে কাঁ*মড়ে ধরে হেসে বললো…
—“না, এবারই প্রথম। কিন্তু ভাবো তো, আমার বউ আমার জন্য এতো রাত পর্যন্ত জেগে থাকলো। আমি কি পারতাম ওর জন্য এতোটুকুও না করে থাকতে? কেমন স্বামী হতাম আমি যদি বাহির থেকে এসে ঘুমন্ত বউকে জাগিয়ে দিয়ে বলতাম, যাও খাবার গরম করে এনে দাও?”
পিহু মৃদু হেসে বললো….
—“আপনি সত্যিই অন্যরকম একজন মানুষ, এমপি সাহেব।”
সারফারাজ পিহুকে নিজের দিকে কিছুটা টেনে এনে ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বললো……
—“শুধু তোমার জন্যই অন্যরকম হয়েছি, প্রিটিহার্ট।”
অতঃপর সারফারাজ খাবারের ট্রে – টা নিজের কোলের উপর নিয়ে নিজের হাতেই খাবার মাখাতে মাখাতে বললো….
—“আজ আমি তোমাকে খাইয়ে দিবো। আমার বউয়ের জন্য নিজের হাতে প্রথমবার এমনটা করতেই পারি।”
পিহু কিছুটা সংকোচ নিয়ে বললো…..
—“আপনি আগে খান…!”
—“না, আজ আমার আদেশ তোমায় মানতেই হবে। আগে আমিই তোমাকে খাওয়াবো।”
পিহু আর না করতে পারলো না। সারফারাজ হাসিমুখে পিহুকে একবার খাইয়ে দিয়ে মৃদু গলায় বললো…..
—“এখন তোমার পালা। এবার তুমি আমায় খাইয়ে দাও বউ।”
পিহু লজ্জায় মাথা নামিয়ে নিলো। পরপরই প্লেট থেকে অল্প নিজের খাবার নিয়ে সারফারাজকে খাইয়ে দিলো। হাত সামান্য কাঁপছিলো ওর।সারফারাজ দুষ্টুমি ভরা কন্ঠে বললো….
—“এতো ভয়ে ভয়ে খাওয়াচ্ছো কেনো? আমি কাঁ*মড়াবো না তো।”
পিহু লজ্জায় কেঁপে উঠলো। অতঃপর বললো….
—“চুপ করুন, কেউ শুনে ফেলবে।”
—“তাহলে একটু নিচু স্বরে বলছি বাকি কথা!”
পিহুর ঠোটে ফুটে আছে লজ্জা মাখা হাসির রেখা।
দু’জনেই ধীরে ধীরে খাওয়া শেষ করলো। এরপর সারফারাজ ট্রেটা পাশে সরিয়ে রেখে বললো….
—“জানো বউ! এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলো আমার কাছে অনেক দামি। তোমার হাসি, তোমার লজ্জা, তোমার মুখশ্রী জুড়ে থাকা এই অসম্ভব মায়া! সবকিছুই আমার কাছে অনেক মূল্যবান।”
পিহু লজ্জায় কিছু বলতে পারলো না। পিহুর এই হাসিতেই সারফারাজের পুরো দিনের ক্লান্তি যেনো একমুহূর্তেই দূর হয়ে গেলো।
রাত এখন গভীর। চারদিকের পরিবেশ নিস্তব্ধ। বাংলো বাড়ির ভেতরে বেচারা নির্ঝর ওর রুমের বিছানায় হেলান দিয়ে শুয়ে আছে অনেকসময় হলো। কিন্তু ঘুমের কোনো নাম গন্ধও পাচ্ছে না সে। একপাশ হয়ে শুতে গেলে কোমরে টান ধরছে আবার চিৎ হয়ে শুলে মনে হচ্ছে কোমরের হাড় কেউ ভেতর থেকে টেনে আলাদা করে ফেলছে। নির্ঝর মুখশ্রী হালকা বি*কৃত করে দাঁতে দাঁত পিষে বিড়বিরিয়ে বললো….
—“শা*লার কপাল আমার! চতুর্দিক দিয়েই ফুঁ*টো! সকালে ভেবেছিলাম, ব্যথাটা তুচ্ছ। একটু বিশ্রাম নিলেই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এখন বুঝতেছি, এই রাতটা আমার জন্য আস্তে আস্তে ‘ট*র্চার নাইট’ এ পরিণত হতে শুরু হয়েছে।”
নির্ঝর অতিকষ্টে ব্যথা সহ্য করে ধীরে ডানপাশ ফিরে শোয়ার চেষ্টা করলো। কিন্তু মাঝপথেই হাল ছেড়ে দিলো। মাথার পাশে রাখা বালিশটা কোলের উপর নিয়ে বললো….
—“খাবার খাওয়ার পর অতিকষ্টে ওয়াশরুম গেলাম ভাবলাম একবারে ১/২ এর কাজ সেরেই শুয়ে পড়ি। না না, তখন তো বের হওয়া যেতো না এদের। তখন বের হলে আমায় জ্বা*লা দিবে কিভাবে?”
ব্যথার য*ন্ত্র*ণায় ফুল দমে এ.সি চলা সত্ত্বেও ঘামে ভিজে গিয়েছে নির্ঝরের কপাল, গলা, বুক ও পিঠ।
নির্ঝর আবারও বললো….
—“তখনই যদি ইলমার কথা শুনে ডাক্তারের কাছে যেতাম! এক্স-রে করালে বোঝা যেতো কোমরের হালটা কেমন। এখন বুঝতেছি, মানুষের ছোট ছোট ব্যথাও কখনো হেলা-ফেলা করা উচিত না। এই ব্যথা এখন আমার জানটাই নিয়ে নিবে মনে হচ্ছে!”
এই বলে একবার দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়লো নির্ঝর। তারপর হতাশ গলায় বললো….
—“ওফফ! এখন যদি কেউ আমাকে ওয়াশরুমে নিয়ে যেতো! তেজ ভাইকে ডাকবো নাকি? না না, ওকে ডাকলে নি*র্ঘা*ত আমার ইজ্জতের দফা-রফা বানিয়ে ফেলবে। উফহহহ, আমার কোমর!”
শেষ কথাটা কিছুটা গোঙানির স্বরেই বললো নির্ঝর।
পরপরই ওয়াশরুমে যাওয়ার প্রয়োজন পাল্লা দিয়ে আরো বেড়ে যাওয়ায় নির্ঝর আর উপায় না পেয়ে তেজের নাম্বারে কল করলো। তেজের ঘুম অনেক গাঢ়। ১-২ বারের কলে ভা*ঙে না। তাই তো পরপর কয়েকবার নির্ঝর তেজকে কল দেওয়ার পর ওপাশ থেকে তেজ কল রিসিভ করে ঘুম কাতুরে কন্ঠে বললো….
—”কি রে শা*লা এই রাতে আমাকে কেন কল করতেছিস?”
নির্ঝর অসহায় কন্ঠে বললো….
—”ভাই খুব জোর পেয়েছে?”
তেজ দাঁতে দাঁত চেপে বললো…..
—”এই বেডা আমি কি তোর বউ হই নাকি? এই রাতে তোর যা পেয়েছে তা আমাকে দিয়ে পূরণ করানোর মতলব এঁটেছিস! ছি*হ্।”
—”আরে বা*ল তুমি তোমার ন*ষ্টা মাইন্ড আপাতত সাইডে রাখো তো। আমার খুব জোর হি*সু পেয়েছে। এই কোমর ব্যথার জন্য একলা ওয়াশরুম পর্যন্ত যেতে পারছি না। তুমি যদি এখন এখন এসে আমায় সাহায্য না করো তাহলে আমাকে বিছানাতেই কাজ সারতে হবে।”
—”এই ছি*হ্। দাঁড়া শা*লা। আসতেছি আমি। ২টা মিনিট যেমনে পারিস চেপে ধরে রাখ। এই বয়সে বিছানায় কাজ সারলে যেটুকু ইজ্জত তোর আছে তাও থাকবে না।”
এই বলে তেজ কল কেটে দ্রুত বিছানা থেকে নেমে নির্ঝরের রুমের দিকে দৌড় লাগালো। নির্ঝরের রুমে প্রবেশ করতেই দেখলো নির্ঝর কম্বল দিয়ে নিজের অর্ধশরীর পেঁচিয়ে কাচু-মাচু হয়ে বিছানায় কোনো রকমে বসে আছে। তেজ ভ্রু কুঁচকে বিছানার কাছে এসে বললো…..
—”আয়। ওয়াশরুম যাবি বলে!”
নির্ঝর কোনো সাড়াশব্দ করলো না। পরক্ষনেই তেজের নাকে একটা বা*জে স্মেইল এসে বারি খেলো। তেজ একহাতে নিজের নাক চেপে ধরে বললো…..
—”ছি ছি ছি ছিহ্ নিজ্ঝরিয়া ছিহ্! শেষমেষ এই বয়সে এসে তুই কিনা বিছানায় কাজ সেরে ফেললি?”
নির্ঝরের মুখ আরো কাচু-মাচু হয়ে গেলো। অসহায় কন্ঠে বললো….
—”ভাই, আর মজা নিও না। নিজের এই অবস্থা দেখে ইচ্ছে তো করছে কঁচুর গাছের সাথে ঝুলে যেতে। আমায় দয়াকরে ওয়াশরুম পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করো। আমি আর এভাবে থাকতে পারছি না।”
তেজ হো হো করে হেসে উঠে বললো….
—”দাঁড়া আগে হেসে নেই তারপর তোর গতি করছি।”
এই বলে তেজ মেঝের উপর বসে স্বশব্দে হাসতে শুরু করলো। তেজের হাসির শব্দ নির্ঝরের সর্ব শরীরে গরম তেলের মতো এসে লাগছে আর অদৃশ্য ফো*স*কা তৈরি করছে যেনো। নির্ঝর ভ্যা ভ্যা করে কেঁদেই ফেললো এবার। তেজ অনেক কষ্টে হাসি থামিয়ে নিচ থেকে উঠে নির্ঝরের কাছে এসে বললো….
—”ওলে বাবা লে, কাঁদে না। বাবু তা।”
নির্ঝর ছলছল চোখে তেজের দিকে তাকিয়ে আছে। এরপর তেজ নির্ঝরকে ধরে অতি সাবধানে ওয়াশরুমে নিয়ে গেলো। নির্ঝরকে ভালো ভাবে পরিষ্কার করিয়ে অন্য পোশাক পড়িয়ে দিয়ে রুমে এনে ইজি চেয়ারে বসিয়ে দিলো। এরপর সার্ভেন্টকে ডেকে নির্ঝরের বিছানার তোশক, চাদর সব পরিবর্তন করিয়ে নিয়েছে তেজ। অতঃপর তেজকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে দাঁত বের করে হেসে বললো…..
না চাইলেও তুমি শুধু আমারই পর্ব ২২ (৪)
—”এবার ঘুমানোর চেষ্টা কর। আর কাল তোর জন্য প্যমপাস আনার ব্যবস্থা করবো। ওটা পরে ঘুমাবি।”
নির্ঝর ঠোঁট উল্টে তাকালো তেজের দিকে। তেজ হাসতে হাসতে নির্ঝরের রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। নির্ঝর বিরবিরিয়ে বললো…..
—”ভাগ্যিস এই কে*লে*ঙ্কা*রি ইলমা জেগে থাকতে হয় নি। নয়তো আর এই মুখ কারোর সামনে দেখাতে পারতাম না৷”