না চাইলেও তুমি শুধু আমারই পর্ব ২৫ (২)

না চাইলেও তুমি শুধু আমারই পর্ব ২৫ (২)
মাইশা জান্নাত নূরা

নীরা বললো…
—”ভাবীপু! এবার আমাদের বাড়ি ফেরা উচিত। অনেকক্ষণ হলো বেড়িয়েছি আমরা।”
পিহু বললো…
—”হুম, ঠিক বলেছো নীরা।”
এই বলে পিহু তেজ আর নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে হালকা হেসে আবারও বললো….
—”তাহলে ঐ কথাই রইলো তোমাদের সাথে! আগামীকাল সকাল সকাল বাড়িতে চলে আসবে দু’জনেই। তিন ভাইয়ের মধ্যকার যা বোঝাপড়া তা এবার সামনা-সামনি হোক।”
তেজ আর নির্ঝর একসাথে মাথা নাড়লো। অতঃপর পিহু ও নীরা একসাথে বাংলোর ভিতর থেকে বেড়িয়ে বাহিরে দাঁড় করিয়ে রাখা গাড়িতে উঠে বসলো। উদ্দেশ্য খান ভিলায় ফেরা।
তেজ নির্ঝরের কাঁধের উপর হাত রেখে ভাবুক স্বরে বললো….

—”নিজ্ঝরিয়া, সব ঝামেলার ভিরে একটা বিষয় নিয়ে ভাবার সুযোগ-ই হয়ে উঠে নি আমার কাল থেকে জানিস!”
নির্ঝর ওর ভ্রুযুগল হালকা কুঁচকে নিয়ে বললো….
—”কি বিষয়?”
—”এতোকাল ধরে ছদ্মবেশে ঘুরছি আমি সারফারাজ ভাই তা ঘুনাক্ষরেও টের পেলো না কিন্তু কাল কিভাবে সবটা জানতে পারলো? হুট করেই তো তার জেনে উঠার কথা নয়।”
তেজের কথায় এবার নির্ঝরের মাঝে বিষয়টা নিয়ে ভাবনার সৃষ্টি হলো। পরক্ষণেই তেজ নির্ঝরের কাঁধ থেকে হাত সরিয়ে বললো….

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

—”ওয়েট ওয়েট। এই জিনিসটাও তো আমার মাথা থেকে বেড়িয়ে গিয়েছিলো যে, লাস্ট টাইম ঐ নিশার সাথে যখন আমার সাক্ষাৎ হলো তখন সে আমার দিকে ওপেনলি ব্লা*ক মেইল বাক্য ছুঁ*ড়ে মে*রে*ছিলো! বলেছিলো, আমি যদি অন্য মেয়েদের সঙ্গ ছেড়ে ওকে বিয়ে করার জন্য রাজী না হই তাহলে ও আমার সব সত্য আমার পরিবারের সবার সামনে খোলাসা করে দিবে।”
তেজ থামলো কিয়ৎক্ষণের জন্য। নির্ঝর তেজের দিকে তাকিয়ে আছে। তেজের একটা হাত ওর কোমরের একপার্শে ধরা, আর আরেকটা হাত কপালে ঠেকানো। তেজ বললো….
—”আমি তো নিশাকে ভালো কি মন্দ কিছুই বলি নি বিয়ের বিষয়ে ! তারমানে কি নিশাই তলে তলে এসব করে আমাকে ফাঁ*সিয়ে দিয়েছে?”
নির্ঝর বললো….

—”কিন্তু তেজ ভাই, নিশা তো বলেছিলো সে তোমাকে ভালোবাসে। তাহলে ভালোবাসার মানুষটির ক্ষতি সে কি সত্যিই করতে পারবে?”
—”নিশার মধ্যে আমার জন্য কোনো ভালোবাসা-টালোবাসা নেই রে নিজ্ঝরিয়া। যা আছে তা কেবল আমার থেকে রিফিউজ পেয়ে পেয়ে অপ*মানিত হয়ে তার বদলা সরূপ আমার সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ার একটা নোং*রা জেদ।”
—”এই নিশাটার একটা উপযুক্ত শিক্ষা হওয়া জরুরী।”
—”হুম, খুব হালকা ভাবে নিয়েছিলাম একে আমি। কিন্তু নাহ। এবার একে এমন ভাবে শা*য়ে*স্তা করবো আমি যে শুধু আমিই কেনো আর কোনো ছেলের সঙ্গে বিয়ে করার শখ ওর জন্মের মতো ঘুঁ*চে যাবে।”
—”ছেলের সঙ্গে বিয়ের শখ ঘুঁ*চে গেলে কোনো মেয়ের সঙ্গে বিয়ে করে নিবে তাহলে।”
এই বলে নির্ঝর হোহো করে হেসে উঠলো। তেজ বললো…
—”ষ্যা ষ্যা ষ্যা*হ। ভাবতেই শরীর গুলিয়ে আসছে আমার।”

খানিকক্ষণ আগেই খান ভিলায় পিহু আর নীরা ফিরেছে। সন্ধ্যার পর ড্রয়িংরুমে বড়রা সবাই বসে চা-নাস্তা করেন। কেবল তাদের উপযুক্ত বয়সের সন্তানরাই এই সময় বাড়িতে থাকেন না ৯০ ভাগ দিনই। ফ্রেশ হয়ে নীরা ও পিহু দু’জনেই ড্রয়িংরুমে এসে বড়দের সাথে বসেছে তাদের আড্ডায় অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে। পিহুর শ্বাশুড়ি মা তাহমিনা খান শান্ত স্বরে বললেন….
—”তোমরা দু’জনে মিলে কোথায় গিয়েছিলে?”
পিহু একবার নীরার দিকে তাকালো। পরপরই তাহমিনার দিকে তাকিয়ে অনাথ আশ্রমে যাওয়ার কথা ও সেখানে করা কাজের কথা বললো পিহু। পিহুর কথা শুনে উপস্থিত সকলের মুখেই হাসি ফুটে উঠলো। শিউলি পিহুর থুঁতনি স্পর্শ করে নিজের ঠোঁটে সেই হাত ছুঁয়ালেন। আতুশীও দূর থেকেই দু’হাত বাড়িয়ে নজর কাটানোর মতো করলেন। পিহুর দাদা শ্বশুর মোস্তফা খান বললেন….

—”পিহু দিদিভাই, তোমার এই কাজে আমার ভিষণ গর্ববোধ হচ্ছে। সবসময় এমনই থেকো দিদিভাই। অসহায়, অবলাদের নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য-সহযোগীতা করলে আল্লাহ তায়ালা রিজিকে বরকত দান করেন।”
পিহু স্মিত হেসে বললো….
—”দোয়া করবেন দাদুভাই।”
মোস্তফা খান হাসিমুখে নিজের ডান হাতটা একটু উঠিয়ে বুঝালেন, ‘দোয়া ও ভালোবাসা সবসময় আছে তোমাদের সবার জন্য।’

ইলমার ডিউটি টাইম শেষ হবে রোজ রাত ৮টায়। কিন্তু আজ ওর কাজের ১ম দিন হওয়ায় তেজের বন্ধু ‘জাকির’ যার বদৌলতে ইলমা এই কফিশপে কাজ পেয়েছে সে ওকে ৭টা বাজার আগেই যেতে বলে দিয়েছে। ইলমা বাসার ভিতর প্রবেশ করতেই ওর চোখ প্রথমেই পড়লো পাশের ঘরের সেই মেয়েটার রুমের দিকে। দরজার নিচটা একটু ফাঁকা হওয়ায় ভিতরে যে লাইট জ্বলছে তা বাহির থেকে ইলমা দেখতে পারছে। ইলমা বিরবিরিয়ে বললো….
—”মেয়েটা আজ এতো তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরেছে! যাক গে, আমার কি এতে।”
এই বলে ইলমা নিজের রুমের দরজার সামনে এসে দাঁড়াতেই দেখলো সেখানে থাকা দু’ধাপের সিঁড়ির উপর ওর কালকে ঐ পাশের ঘরের মেয়েটাকে খেতে দেওয়া প্লেটটা সহ তার উপর একটা বক্স বাটি রাখা। ইলমার ভ্রু-যুগল কিন্ঞ্চিত কুঁচকে এলো। পরক্ষণেই দরজার তালা খুলে ইলমা প্লেটটা উঠিয়ে নিয়ে রুমের ভিতরে চলে এলো। টেবিলের উপর প্লেটটা রেখে আগে ফ্রেশ হয়ে বাহিরের পোশাক পরিবর্তন করে রুমের পোশাক পড়ে নিলো ইলমা। অতঃপর সেই প্লেটটার উপর থেকে বক্স বাটিটা উঠাতেই সেখানে একটা চিরকুট দেখতে পেলো ইলমা। চিরকুটের ভাঁজ খুলে পড়তে শুরু করলো….

❝গতকাল শরীর ভিষণ খারাপ লাগছিলো আমার তাই রান্না করতে পারি নি। আপনার দেওয়া খাবার টুকু খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ হয়েছিলো আমার। আজ বাসায় তাড়াতাড়ি ফিরতে পেরেছিলাম। আর শরীরটাও এখন মোটামুটি ভালো। তাই রান্না করলাম ২জনের জন্যই। আপনার মতো ওতো গুণী নই আমি। রান্নার স্বাদ খাওয়ার উপযুক্ত এই যা। পরিশেষে ধন্যবাদ আপনাকে আপু।❞
চিরকুটটা পরেই ইলমার ঠোঁটে হালকা হাসির রেখা ফুটে উঠলো। ইলমা বললো….
—”যতোটা থমথমে ভেবেছিলাম ততোটা নয়। ভালোই আছে।”
এই বলে ইলমা বক্স বাটির ঢাকনা খুলতেই দেখলো ভেতরে আলু ভাজি, একটা হাফ বয়েল ডিম, ডাল আর ভাত রাখা। ইলমা খাবারগুলো প্লেটে বেরে নিতে নিতে বললো…..

—”খুব জোর খিদেও পেয়েছে। সারাদিনের কাজের পর এসে রান্না করতে হবে ভেবেই আরো ক্লান্ত লাগছিলো আমার। এখন রেডিমেট খাবার দেখে মন-শরীর দুই-ই ফুরফুরে হয়ে গেলো। খেয়ে নেই চটজলদি।”
অতঃপর ইলমা বিছানায় পা ভাঁজ করে বসে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে প্রথম লোকমা মুখে নিলো। পর পর কয়েক লোকমা খাওয়া হলে বললো…..
—”হুম, স্বাদ তো দারুন।”
ইলমা তৃপ্তি করে সবটুকু খাবার শেষ করলো। গ্লাসে থাকা পানিটুকু পান করে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে বললো…..
—”আহহহ্, পেট শান্তি তো দুনিয়া শান্তি। যাই গিয়ে মেয়েটাকে তার বাটিটা দিয়ে আসি। এই সুযোগে যদি মেয়েটার পরিচয়টা জানা হয় মন্দ হবে না বিষয়টা।”
এই বলে ইলমা বাটিটা পরিষ্কার করে তা নিয়ে নিজের রুম থেকে বের হলো।

খান বাড়ির সবার কথোপকথনের মাঝেই আতুশি পিঁয়াজি আর সিঙ্গারা বানিয়ে আনলেন। তখুনি নীরার ফোন বেজে উঠলো। ফোন স্ক্রিনের দিকে তাকাতেই নীরার চোখ-মুখ কিছুটা শক্ত হয়ে এলো। তৎক্ষণাৎ নীরা সোফা ছেড়ে উঠে নিজের রুমের দিকে হাঁটা ধরলো। পিছন থেকে আতুশি নীরাকে ডাকলেন….
—”নীরা মা! তোর পছন্দের গরুর কলিজা দিয়ে সিঙ্গারা বানিয়েছিলাম। খেয়ে যা..!”
নীরা পিছন ফিরেও তাকালো না, আতুশির ডাকে সারা দেওয়া তো দূর। আতুশির মুখটা কিছুটা মলিন হয়ে এলো। পিহু বসা থেকে উঠে আতুশির হাত থেকে সিঙ্গারা আর পিঁয়াজির ট্রে-টা নিয়ে টি-টেবিলের উপর রাখতে রাখতে বললো….

—”তুমি বসো ছোট চাচী। আমি নীরার জন্য সিঙ্গারা আর পিঁয়াজি আলাদা বাটিতে করে নিয়ে যাচ্ছি ওর রুমে।”
পিহুর কথায় আতুশি হালকা হাসলেন। পিহু রান্নাঘরে চলে গেলো বাটি আনার জন্য। আতুশি শিউলির পাশে বসতে বসতে বললেন….
—”হুট করে কি যে হয়ে যায় মেয়েটার, বুঝি না আমি।”
শিউলি বললেন…
—”মেয়ে বড় হয়েছে ছোট। এখন ওর একটা প্রাইভেসি দরকার। সবকথা কি আর বড়দের সাথে শেয়ার করতে পারবে ওরা! এসব নিয়ে মন খারাপ করিস না তো। ছাড় এসব।”
আতুশি মাথা নাড়লেন কেবল। পিহু বাটি এনে তাতে কয়েটা পিঁয়াজি আর সিঙ্গারা নিয়ে নীরার রুমের দিকে হাঁটা ধরলো।

ইলমা মেয়েটার রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দরজায় কড়া নাড়লো। কয়েকবার কড়ার নাড়ার পর মেয়েটা দরজা খুলে দিলো। শান্ত দৃষ্টি নিয়ে মেয়েটা ইলমার দিকে তাকিয়ে আছে। ইলমা মনে মনে বললো…..
—”না, এখান থেকে বাটিটা দিলে যদি আবার কালকের মতো মুখের উপর দরজা লাগিয়ে দেয় মেয়েটা! তখন তো আর কথা বলা হবে না। পাশাপাশি এক বাসায় থাকছি অপরিচিতদের মতো বিষয়টা ভালো দেখাচ্ছে না মোটেও। তাই এই মেয়ের পরিচয় না জানতে পারা পর্যন্ত আমার শান্তি হবে না।”
ইলমা হাসিমুখে বললো….
—”আমাকে ভিতরে আসতে বলবে না? আব তুমি করেই বলছি। আমার থেকে ছোট হবে তুমি তাই।”
মেয়েটা দরজা থেকে সরে দাঁড়িয়ে বললো….

—”আসুন ভিতরে।”
ইলমা দেড়ি না করে ভিতরে প্রবেশ করলো। পুরো রুমটাতে একবার চোখ বুলালো সে। রুমের ভিতরে বিশেষ কিছুই নেই। একটা সিংগেল খাট, একটা কাঠের আলনা, আর দেওয়া দেওয়ালে টাঙানো মাঝারি আকারের একটা আয়না রয়েছে। মেঝের উপর একপার্শে একচুলা বিশিষ্ট একটা গ্যসের চুলা ও সিলিন্ডার রাখা। পাশেই একটা ছোট টেবিলের উপর কিছু হাড়ি-পাতিল-প্লেট-বাটি ইত্যাদি রান্নার কাজের লাগতে পারে এমন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখা রয়েছে। খাটের পাশে দেওয়ালের সাথে পেরেক লাগিয়ে একটা রশি টাঙানো রয়েছে। যেখানে কিছু কাপড় নাড়ানো অবস্থায় আছে। রুমের লাইটটারও তেজ খুব কম। কোনোরকমে অন্ধকার ভাবটা কাটিয়েছে এই যা। আর মাথার উপর একটা সেলিং ফ্যন ঘুরছে সীমিত গতিতে।
ইলমা বললো….

—”কতোদিন হলো থাকছো এখানে তুমি?”
মেয়েটা বললো….
—”এই মাসেই উঠেছি।”
—”চাকরি করো তুমি?”
—”হুম।”
—”কিসের চাকরি?”
—”গার্মেন্টসে সেলাইয়ের কাজ।”
ইলমা অবাক হলো। ওর কৌতুহল আরো বেড়ে গেলো। এতো কম বয়সী একটা মেয়ের হঠাৎ কি প্রয়োজন পড়লো যে শহরে এসে গার্মেন্টস এর মতো একটা সেকশনে চাকরি নেওয়ার, বাহিরে থাকার! ইলমা একবার ঢোক গি*লে বললো…..

—”তোমার বাবা-মা কোথায়?”
মেয়েটা ইলমার উপর থেকে নজর সরিয়ে নিলো। অন্যপাশ ঘুরে বললো…..
—”আমার বাবা-মা নেই। আমি এতিম।”
‘এতিম’ শব্দটা শোনামাত্র ইলমার বুকের ভিতরটা কেমন যেনো করে উঠলো। ইলমা ঠোঁট কাঁ*ম*ড়ে বললো…..
—”এর আগে কোথায় ছিলে?”
—”গ্রামে।”
—”গ্রামে! সেখানে কে আছেন তোমার?”
—”যারা ছিলেন তারা এই পৃথিবীতে আর নেই বিধায়-ই আমি শহরে চলে এসেছি।”
ইলমা খেয়াল করলো শেষ কথাটা বলতে গিয়ে মেয়েটার কন্ঠ অন্যরকম শুনালো। মেয়েটা কাঁদছে কি? ইলমা ওর জিহ্বার অগ্রাংশ দিয়ে ঠোঁট হালকা ভিজিয়ে বললো….
—”তোমার নামটা জানতে পারি কি?”
মেয়েটা স্পষ্ট স্বরে বললো…..
—”অনু।”

নীরার রুমের দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়ে যেই না পিহু নক করতে নিবে ওমনি সময় ভিতর থেকে নীরার কথা বলার শব্দ হালকা শুনতে পেরে সে থেমে গেলো। নীরা কাউকে বলছে…..
—”ওর সব দায়িত্ব আমি আপনার উপর দিয়েই বাংলাদেশে চলে এসেছিলাম। তাহলে এখন আপনি কিভাবে বলতে পারছেন ওকে আমার নিয়ে আসতে! কি সমস্যা করছে ও আপনাদের?”
ওপর পার্শের কথা স্বাভাবিক ভাবেই শুনতে পারছে না পিহু। মনে মনে বললো….
—”নীরা কার সাথে এভাবে কথা বলছে? আর কার দায়িত্ব কাকে দিয়ে এসেছে ও!”
নীরা আবারও বললো…..

—”আমি এখন কোনো কিছুই শুনতে রাজি না মিস.ইজাবেল। আমার দিকটাও আপনার বুঝতে হবে। আমি হাতে গোণা কয়েকদিন হলো এসেছি বাংলাদেশে। এই মূহূর্তেই কি আমার পক্ষে সম্ভব আবারও কানাডা ব্যক করা! আপনি আমাকে শুরুতেই কেনো বলেন নি আপনি ওর দায়িত্ব নিতে পারবেন না! তাহলে আমি আসার আগেই ওর অন্য ব্যবস্থা করে আসতে পারতাম!”
নীরা থামলো কিয়ৎক্ষণের জন্য। তারপর আবারও বললো….

না চাইলেও তুমি শুধু আমারই পর্ব ২৫

—”আপনি বাধ্য এই দায়িত্ব ততোদিন পর্যন্ত বয়ে বেড়াতে যতোদিন না আমি আবারও কানাডা ফিরছি এবং আপনার কাছে গিয়ে ওকে আবারও নিচ্ছি। এর জন্য আপনি যথেষ্ট পেমেন্ট পাচ্ছেন।”
এবারে নীরার কন্ঠস্বর আরো রুক্ষ শুনালো। পরক্ষণেই নীরা যা বললো তা শোনার পর পিহুর হাত থেকে কাঁচের বাটিটা নিচে পরে গেলো। সঙ্গে সঙ্গে তা কয়েক টুকরোতে ভে*ঙে চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গেলো। পিহু ওর মুখের উপর একহাত রাখলো। ওর দু’চোখ স্বাভাবিক এর তুলনায় বড় হয়ে গিয়েছে।

না চাইলেও তুমি শুধু আমারই পর্ব ২৫ (৩)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here