নিষিদ্ধ অনুভূতি পর্ব ৯+১০
আহমেদ হৃদ
সকাল সকাল হৈ হুল্লোড়ে মেতেছে আহমেদ সাহেবের পুরো বাড়ি। চারপাশ রমরম আজ। দো’তলা বাড়িটায় চেনা-অচেনা কতো লোকজন! ছোটছোট ছেলে-মেয়েরা বাড়িটা মাথায় তুলেছে। ব্যাস্ত হয়ে এদিক-সেদিক ছুটছেন মহুয়া বেগম। আত্মীয়-স্বজনদের এসে-সেটা এগিয়ে দিচ্ছেন তিনি। আহমেদ সাহেব অফিসের কলিগদের সাথে খোশগল্পে মগ্ন। এতো সব কিছুর মাঝে আরু বিরক্ত! বিরক্ত হওয়ার কারন-ও একাধিক। গুনে শেষ করা যাবে না। তন্মধ্যে প্রধান দুটি কারন; প্রথমত, বাড়িটাকে আরুর বাড়ি বলে মনে হচ্ছে না।
শিশুপার্কে-ও এতো শিশু আরু দেখেনি কখনো। দ্বিতীয়ত, সকাল সকাল আরুর সাধের ঘুমের দফারফা করা হয়েছে। আরুর কিছু কাজিন মিলে আরুকে টেনে তুলেছে। এ পর্যন্ত তবুও ঠিক ছিলো। ঘুম থেকে উঠিয়েই এনে বসিয়েছে সাজাতে। এই এতো আত্মীয়’র মাঝে গুটি কয়েকজন’কে বাদে কাউকেই আরু চেনে না। চিনবে কিভাবে? এদের তো কস্মিনকালেও দেখেনি সে। একে একে আসছে, আর বলছে; আমি তোমার অমুক হই, তমুক হই। সাথে আরও কতশত লজ্জাজনক কথা! আরু তো মোটেও এগুলো সহ্য করতে পারছে না। কথাটা এমন; না পারছে সইতে, না পারছে পালাতে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আরু একপলক আয়নার দিকে তাকালো। এহ্ হে! কি বিশ্রীভাবে সাজানো হচ্ছে তাকে। আচ্ছা, আজ কি আরুর বিয়ে নাকি? এতো সাজানোর কি আছে? এরপর আরুর চোখ পড়লো বিছানাতে। বিরাটকার কয়েকটি প্যাকেট পড়ে সেখানে। এখন এগুলোতে কি আছে কে জানে! মুখে প্রসাধনী দেয়া শেষ করে বিছানায় গিয়ে বসলো তোফা। আরুর সাথে জবরদস্তি করে সে ক্লান্ত। অতুশি, ইরু, নিরব তিনজনে বসে বিছানায়। ড্যাবড্যাব করে তারা বিরক্ত আরুকে দেখছে। মুখে কুলুপ এাঁটা তাদের। অতুশি আর ইরু আরুর ফুফাতো বোন। তোফা আরুর মামাতো বোন। নিরব পাশের বাড়ির আন্টির ছেলে। ঘরের এক কোনে বসে সোনিয়া। মুখ কেমন ফ্যাকাশে। তাকে দেখে মনে হচ্ছে, “তার জীবনটাই লস!” রাহিল বরাবরের মতোই চিত হয়ে শুয়ে সোফায়। মনোযোগ দিয়ে ফোন ঘাটছে। পাশে আরও দুজন ছেলে। ওরা আজ নিরব দর্শক। কথা বলবেনা পণ করেছে। আরু মাঝেমাঝেই বিরক্ত চোখে দেখছে ওদের। ওদের নিরবতা আরুর ভালোলাগে না। তবে কখনো বলেনি আরু। নিরবতা’র পরেই শুরু হবে চিল্লাচিল্লি। এইতো সোনিয়া, সে কিছুক্ষণ পর কাছে আসবে। একে একে অভিযোগ তুলে ধরবে। তারপর বকবক চলবে..
কথা শুরু করলো তোফা। আরুকে বললো,
‘আরু, ব্যাগে লেহেঙ্গা আছে। পড়ে নে। নাকি এটাও আমাদের’কেই…’
তোফাকে মাঝপথে থামিয়ে বলে উঠলো সোনিয়া,’ও পারবে না ওটা পড়তে। তুমি যাও আপু। এখনো তো তোমাদের ও রেডি হওয়া বাকি। আমি পড়িয়ে দিচ্ছি ওকে।’
তোফা যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো। সোনিয়া ঠিক বলেছে। এই মেয়েকে সাজাতেই বেলা কাভার। এখনো তো তারা কেউ-ই সাজা শুরু করেনি। তোফা রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। অথচ, রুমে ঠায় বসে অতুশি, ইরু, নিরব। সোনিয়া ভ্রু কুঁচকে ওদের দিকে তাকালো। বললো,
‘তোমাদের কি যাওয়ার জন্য নিমন্ত্রণ দিতে হবে?’
তিনজন একে-অপরের দিকে চাওয়া-চাওয়ি করলো। এরপর তাকালো রাহিলদের দিকে। ইরু বললো,
‘ভাইয়াগুলো যাবে না?’
খুক করে কেঁশে উঠলো রাহিল। পিচ্চি হলে হবে কি? পেশ পাঁকা! সোনিয়ার দিকে তাকাতেই সোনিয়া বেড়িয়ে যেতে ইশারা করলো। রাহিল সোফা ছাড়লো। এরপর ধীর গতিতে বেড়িয়ে গেলো একে একে সবাই। রাহিলের পিছুপিছু লাইন দিয়ে বেড়িয়ে গেলো অতুশি, ইরু আর নিরব। সোনিয়া যেন এটার’ই অপেক্ষায়। দ্রুত গিয়ে দরজা আঁটকে দিলো সোনিয়া। এরপর হনহনিয়ে এসে বসলো আরুর কাছে। শ্বাস আঁটকে জিজ্ঞেস করলো,
‘দুলাভাইয়ের সাথে কি হয়েছে তোর জান?’
আরু সোনিয়ার কথায় ভ্রু বাঁকিয়ে তাকায়। এই মেয়ে এইসব জানলো কিভাবে? আরু জিজ্ঞেস করে,
‘তুই কিভাবে জানিস?’
দরজা বন্ধ থাকা সত্ত্বেও; সোনিয়া বিচক্ষণ দৃষ্টিতে পুরো রুমে চোখ বোলালো। এরপর ধীর গলায় বললো,’দুলাভাই সকালে আসছিলো। ওইযে প্যাকেটগুলো, ওগুলো আমার হাতে দুলাভাই দিয়েছে। বলেছে তোকে পরিয়ে দিতে।’
‘কি বলিস? উনি বাড়িতে এসেছিলো?’ চমকানো কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো আরু।
‘রুদ্র ভাইয়া আসেনি। আমায় দিয়েছে, তোকে দিতে।’
আরু তাকালো প্যাকেট’টার দিকে। সোনিয়া আবারো নিভু গলায় জিজ্ঞেস করলো,’তানিয়া আসবে না জান?’
‘জানিনা। ফোন ধরছে না।’ চিন্তিত শোনালো আরুর কন্ঠ। সোনিয়া দীর্ঘশ্বাস ফেললো। আবারো তাড়া দিয়ে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে। সোনিয়া যেতেই, আরু ছুটে গেলো প্যাকেট’টার কাছে। প্যাকেট খুলে দেখলো বেশ ভারি কাজ করা লেগেঙ্গা। আরু লেহেঙ্গা মেলে ধরতেই লাল কাগজে ছোট্ট একটি চিরকুট মেঝেতে পড়লো। আরু তুললো, খুলে দেখো শুধু দু’লাইনে লেখা,”কি করেছি জানিনা। তবুও সরি।”
পরপর চারটি মাইক্রো গিয়ে থামলো রুদ্র’দের অট্রালিকা বাড়িটার সামনে। ঘামে জর্জরীত হয়ে গেটের সামনে দাড়িয়ে রুদ্র। ইরহাম আজাদ থাকতে চেয়েছিলেন, রুদ্র দেয়নি। তার দাড়ানোর একমাত্র কারন আরু। কাল থেকে একটাও মেসেজের রিপ্লাই দেয়নি উড়নচণ্ডী। শেষে কি-না ব্লক করে দিলো? তাও রুদ্রকে? মেয়েটা এখনো বাচ্চা। কিছু না বুঝে চিল্লানো স্বভাব। মুখে বলে ভালোবাসে না, আর ভালোই যখন বাসেনা, তার আবার অভিমান কিসের?
গাড়ি থেকে একে একে সবাই নামছে।
রুদ্র রাশভারি গলায় আপ্যায়ন করছে সবাইকে। তার অস্থির দৃষ্টি খুঁজছে আরুকে। প্রথম গাড়িতে বড়ো’রা সবাই। সকলে নামার পর, শেষে নামলো আরু। রুদ্র গেঁটের সামনে দাড়িয়ে। আরুর দিকে দৃষ্টি যেতেই ক্রুদ্ধ মন শান্ত হলো রুদ্র’র। ভীষণ মায়াবি লাগছে আরুকে আজ। আরু চোখ তুলে একপলক তাকালো। চোখাচোখি হতেই চোখ সরিয়ে নিলো আরু। রুদ্র তাকিয়েই। আরু সিদ্ধান্ত নিয়েছে,সে কথা বলবে না। জিজ্ঞেস অব্ধি করবে না কিছু। আরু বুঝে গেছে, লেহেঙ্গা পাঠানোর মাঝেও গোপন থ্রেট রয়েছে লোকটার। অতি চালাক বলেই তো আরু ধরতে পেরেছে ব্যাপারটা। রুদ্র প্যাকেট’টা পাঠিয়ে ভালো করে বুঝিয়ে দিয়েছে, বিয়েটা হবে’ই! অতএব অমত, দ্বিমতে কোন কাজ হবে না।
আরু তোফার পিছনে গিয়ে দাড়ালো। এসি থেকে বের হতেই গরম খামচে ধরেছে। তার উপর যা রোদ! আরুর পাশে গিয়ে দাড়ালো সোনিয়া। সবাই এগিয়ে গেলো। সৌজন্যে হেঁসে রুদ্রকে জিজ্ঞেস করলো তোফা,
‘কেমন আছেন ভাইয়া?’
আরুর থেকে চোখ সরিয়ে নিলো রুদ্র। হেঁসে বললো,’আলহামদুলিল্লাহ।’
রুদ্র’র সাথে তোফাকে কথা বলতে দেখে তোফার পিছু ছাড়লো আরু। এবারে লুকালো সোনিয়ার পিছে। রুদ্র’র রাগ হলো। এভাবে পালাবার কি আছে? রুদ্র ডাকতে চাইল; পিছনে আহমেদ সাহেবকে দেখে রুদ্র ডাকলো না। পালাক এখন! কতক্ষন পালাবে? হোক না একবার বিয়ে! এই জ্বালানোর শোধ নেবে রুদ্র। হারে হারে বুঝিয়ে দেবে রুদ্র কি জিনিস!
আরুকে বাড়ির ভেতরে নিয়েই বসিয়ে দেয়া হলো বিরাট মঞ্চের দৈত্যাকার আসনখানায়। পাশাপাশি দুটো আসন। দিনের বেলাতেও চোখ ঝলসানো আয়োজনে আরু ভিরমি খেলো। শুধু কি আরু? ভিরমি খেয়েছে পুরো আহমেদ পরিবার। সামান্য এনগেজমেন্ট পার্টি এতো বড় সাজিয়েছে; আরুর মনে হচ্ছে বাপ-দাদার সমস্ত সম্পত্তি ঢেলে খরচ করেছে লোকটা। কৃত্রিম লতাপাতা, ফুল, আলোয় ঝলমল করছে চারপাশ। আরু যখন চারপাশ অবাক হয়ে দেখছে, হুট করে চোখ পড়লো তানিয়ার উপর। কোমর বেঁধে সবাইকে বুঝিয়ে দিচ্ছে এটা-ওটা। কিন্তু, এলো কখন এই মেয়ে? একটু দূরে সোনিয়াকে দেখতেই আরু ডাকলো সোনিয়াকে। সোনিয়া এলো, বিরক্ত কন্ঠে বললো,
‘কি হলো তোর? কতো সুন্দর সুন্দর ব্যাডা মানুষ আসছে! কয়েকটা তো এখনিই পিছু নিয়েছে আমার। যে-ই নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাতে যাবো.. তোর তো বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। তানিয়াও নাগর পেয়ে গেছে; তাহলে আমায় জ্বালাচ্ছিস কেন তুই?’
একনাগাড়ে সোনিয়ার কথা শুনে আরু বিরক্ত হলো। ‘ক’ তে কোলকাতা বোঝা জন্মগত স্বভাব সোনিয়ার। তানিয়ার দিকে হাত উঁচিয়ে বললো আরু,’ওই দেখ।’
আরুর ইসারা করা দিকে তাকাতেই সোনিয়া চমকে উঠলো। বিস্ফোরিত নয়নে তাকিয়ে রইলো কিয়ৎক্ষন। এরপর একছুটে গেল তানিয়ার কাছে। বাহু খিঁচে নিয়ে নিজের দিকে ফেরালো সোনিয়া। অবাক গলায় বললো,’কখন এলি তুই?’
মুখ কাচুমাচু করে তাকালো তানিয়া। সোনিয়াকে দেখতেই আহ্লাদে জড়িয়ে নিলো। গলা শুকিয়ে কাঠ তানিয়ার। একফোঁটা পানি অব্ধি খাওয়ার সুযোগ হয়নি তার। জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিলো। কন্ঠ খাদে নামিয়ে শুকনো গলায় বললো,
‘সকাল ছয়টায় জান।’
আকাশ থেকে পড়লো যেন সোনিয়া। গলা ছাড়িয়ে বললো,
‘বলিস কি? এতো সকালে কি জন্যে এসেছিস?’
তানিয়া চারিদিকে সচেতন চোখ বোলালো। আকস্মিক সোনিয়ার হাতদুটো ধরে আকাতিভরা কন্ঠে বললো,
‘আমায় বাঁচা জানু। প্রেমের সখ মিটে গেছে। কিছু একটা বলে নিয়ে যা আমায়।’
সোনিয়া কিছুই বুঝলো না। বললো,’কি বলিস এইগুলা? কেন?’
‘ওইযে, তুই ওনার গাড়ির কাঁচ ভেঙেছিলি না? ওইটার প্রতিশোধ নিচ্ছে চাকরির নামে। ভোরবেলা কল করে নিয়ে এসে কাজ করাচ্ছে। ও’সব সেক্রেটারি-ফেক্রেটারি চাকরি ফেলা। বাঁচা আমায় জান!’
সোনিয়া মন দিয়ে শুনলো সবটা। সোনিয়ার মন চাইছে গলা ছেড়ে হাঁসতে। নিজেকে দমালো সোনিয়া। আফসোস নিয়ে বললো,’তোর নাগর কই?’
‘এতোক্ষণ তো এখানেই ছিলো। কোথায় গেলো জানিনা।’
‘থাকলে বলতাম আরও কাজ করাতে। মন দিয়ে কাজ কর। মরে-টরে গেলে দাওয়াত দিতে বলিস তোর আব্বুকে।’
তানিয়া কটমটে চোখে তাকালো। সোনিয়া পাত্তা না দিয়ে চলে গেলো। কই, চাকরি পেলো; তাকে তো বললো না!
‘অসভ্য!’ বলে পিছু ফিরতেই সজোরে ঠাক্কা খেলো তানিয়া। একেই মুডের এগারোটা বেজে আছে, তার উপর উটকো ঝামেলা। গরম চোখে তাকাতেই আরও শুকিয়ে গেলো গলা তানিয়ার। সামনে অভ্র দাড়িয়ে। চোখ ছোটছোট করে তাকিয়ে আছে তার দিকে।
‘গল্প করতে বলেছি আমি আপনাকে?’
ঠান্ডা গলা অভ্র’র। তানিয়া উত্তর দিলো না। অভ্র আবারো বলে উঠলো,’আন্সার মি।’
‘জ্বি না।’ কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো তানিয়া।
‘তাহলে গল্প কেন করছিলেন? কত কাজ বাকি এখনো! যান কাজ করুন।’
তানিয়া নিশ্চুপ হয়ে পাশ কাটাতে গেলেই অভ্র ডেকে উঠলো,’শুনুন।’
তানিয়া দাড়ালো। না ফিরেই বললো,’হু?’
‘একটু পর কাপল ড্যান্সের এনাউন্সমেন্ট করবেন। গট ইট?’
তানিয়া মুখ ভেঙালো। অভ্রকে তানিয়া যেমন ভেবেছিলো, এক্কেবারে বিপরীত রকমের লোকটা। এখন শুধু তার সাথে মেজাজ দেখানোই মুখ্য কাজ অভ্রর। কই তানিয়া ভেবেছিলো, এই গম্ভীর লোকটাকে কত কত ভালোবাসবে। লোকটা চুপচাপ তানিয়ার চোটপাট সহ্য করবে! আর হলো কি? এখন পায়ে পা তুলে ঝগড়া করাই যেন মেইন কাজ লোকটার!
তানিয়াকে চুপ দেখে চেঁচিয়ে উঠলো অভ্র, ‘তানিয়া…’
‘জ্বি? হ্যা, হ্যা। করে দেবো।’
ফাঁকা আসনে রুদ্র বসতেই, আরু গুটিয়ে গেলো। সে দেখেনি পুরোপুরি। তবে, ঠাহর করতে পেরেছে তার পাশে বসেছে রুদ্র। চারিদিক হুট করে অন্ধকার হয়ে গেলো। একজনকে কেন্দ্র করে জ্বলে উঠলো আলোর গোলাকৃতি রশ্মি। তানিয়া উল্লাসী স্বরে বললো,
‘Assalamu Alaikum. good afternoon. You all know the occasion of today’s event. Two main people are already present among us. Today, how about a couple dance at this auspicious time? Very good indeed? Yes! In a moment we are going to start this dance. But let the main two, Aru-Rudro, begin..’
বলেই থামলো তানিয়া। চোখ কপালে আরুর। এই মেয়েকে এইসব কে বলতে বললো? সে আর রুদ্র; তাও কাপল ড্যান্স? এ-ও সম্ভব? আরু শুকনো ডোগ গিলে মাথা নত করে ফেললো। রুদ্র তাকিয়েই রইলো আরুর দিকে। মেয়েটা তাকে পো’ড়াতে কত ভালোবাসে! হাহ্!
হুট কারো কেউ হাত ধরতেই চমকে উঠলো আরু। সজোড়ে টান পড়তে’ই আরু উঠে দাড়ালো। রুদ্র তাকে টেনে নিয়ে গেলো স্টেজের নিচে। হাতের আঙ্গুলের ফাঁকে হাত গুজে পূর্ণ দৃষ্টি মেলে তাকালো আরুর দিকে। আরু বিমুঢ়! গোলাকার আলোর রশ্মি এখন তাদের উপর। সকলের দৃষ্টিও! আরু লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিলো। রুদ্র ছোঁয়ায় অন্তস্থঃ ধুকপুক করে আরুর। এইতো এখন করছে! হৃদপিণ্ড লাফাচ্ছে দ্রুত গতিতে। লোকটা বোঝে না, তার সামনে গেলেই সমস্ত রাগ উধাও হয়ে যায় আরুর। বোঝেনা, ভেতরটা থরথর করে কাঁপে?
Tasabbur ke haseen lamhein, tera ehsaas karte hain,
Tera jaab jikre atehe, to milne ke tadaptehe..
Suno acchcha nehi hota kisikon eysee tadpana
Mohabbat mein koyen ashiuq kyun baan jatahein dewana…
লাউড মিউজিকে বেজে উঠলো গানটি। গান শুরু হতেই একে একে সবাই চলে এলো। চারিদিকে নানা রঙের মৃদু আলোয় ছড়িয়ে গেলো। ক্লান্ত দুপুর হয়ে উঠলো রোমাঞ্চকর। জোড়ায় জোড়ায় ছেঁয়ে গেলো পূর্বের প্রতিটি কোনা। কপোত-কপোতীরা একে অপরের সাথে নাঁচেতে মেতে উঠলো। রুদ্র হুট করে কোমরে হাত রাখলো আরুর। এসির ঠান্ডা বাতাসের সাথে রুদ্র’র ছোঁয়ায় অন্তরাত্মা কেঁপে উঠলো আরুর। পায়ের তলায় ভূমিকম্প অনুভব করলো সে। রুদ্র এবার এক ঝটকায় আরুকে বুকে টেনে নিলো। রুদ্র’র গরম শরীরের স্পর্শে সারা শরীর শিউরে উঠলো; অজানা, অচেনা অনুভূতিতে মুইয়ে গেলো আরুর দেহ। ভারছাড়া আরুকে গানের তালে নাঁচাতে ব্যাস্ত হয়ে উঠলো রুদ্র।
ইতিমধ্যে অনুষ্ঠান জমে উঠেছে। সকলে নাচে মগ্ন। তানিয়া এনাউন্স করে ওয়েটারের থেকে সফট্ ড্রিংকস নিয়ে গলা ভেজালো। শান্তিতে ছেঁয়ে গেলো তানিয়ার ভেতর। এতক্ষনে যেন মুক্তি পেলো সে। এককোনে চুপচাপ গিয়ে দাড়িয়ে নাচ দেখতে লাগলো। অবশ্য চোখ বারবার খুঁজছে অভ্র’কে। তানিয়া মনেপ্রাণে চাইছে আর যেন দেখা না হয়। দেখা হলেই তো কাজে লাগিয়ে দেবে আবার। এখন খেয়েদেয়ে বাড়ি পালাতে পারলেই যেন তানিয়া বাঁচে!
কিন্তু তানিয়ার এই ধারনা, সুখটুকু বেশিক্ষণ টিকলো না। সুঠাম দেহের অধিকারি কেউ একজন এসে দাড়ালো তার সামনে। তানিয়া ভ্রু কুঁচকে ফেললো। চারপাশে কি জায়গা নেই? নাকি নাচ তার চোখে দেখা যাচ্ছে? আশ্চর্য! লাউড স্পিকারে গান বাজায় চেঁচিয়ে উঠলো তানিয়া,
‘ওই মিয়া, সামনে এসে খাম্বার মতো খাঁড়ায় আছেন ক্যান? সাইড দেন, নাচ দেখবো।’
লোকটি সরলো না। আগের মতোই চুপচাপ দাড়িয়ে। নাচের স্থানটুকু বাদে পুরো রুম অন্ধকার। লোকটার মতলব কি? তানিয়া মুখ দেখতে পারলো না চেষ্টা করেও। অতঃপর বিরক্ত গলায় বলে উঠলো,
‘মেয়ে দেখলেই কি পটাতে মন চায়? এভাবে সামনে দাড়িয়ে আছেন কেন? আজ আপনাদের মতো ছেলেদের জন্য’ই মেয়েরা সুরক্ষিত নয়।’
লোকটা এবার তানিয়ার আরও কাছে এগিয়ে এলো। ভয়ে জরসর হয়ে দাড়ালো তানিয়া। এগিয়ে আসছে কেন এই লোক? আটকানো গলায় বললো,’ক্ কি ক্ করছেন?’
‘ইন্ডাইরেক্টলি আপনি কি আমায় রে’পিস্ট বললেন, তানিয়া?’
এই একটি কথায় শিরদাঁড়া সোজা হয়ে গেলো তানিয়ার। এই ঠান্ডা কন্ঠ তানিয়ার চেনা। শুধু চেনাই নয়! এই কন্ঠ, মানুষটার থেকেই তো পালানোর এতো চেষ্টা তানিয়ার। তার উপর যা বললো তানিয়া; এবার কি হবে আল্লাহ’ই ভালো জানে। ইশশ্! একটু ভালো করে দেখলে কি হতো? এখন? কি হবে? তানিয়া ভয় পেলো; পিছিয়ে যেতে নিলেই শক্ত করে তানিয়ার হাত ধরলো অভ্র। হাতের গ্লাস’টা কাঁপতে লাগলো থরথর করে। অভ্র তানিয়া হাত টেনে গ্লাসটা নিয়ে নিলো। পাশের টেবিলে রেখে আচমকা টেনে নিয়ে গেলো ড্যান্স ফ্লোরে। আঙ্গুলের ফাকে আঙ্গুল রেখে আরও এগিয়ে এলো অভ্র। তানিয়া আকাশ থেকে পড়লো।
সে কি দুনিয়ায় আছে? নাকি স্বপ্ন এগুলো? অভ্র তার সাথে নাঁচবে? কেন? আর এটা সত্যিই সম্ভব? অভ্র তো তানিয়াকে সহ্য করতে পারে না! তাহলে? নিজের প্রশ্নগুলোর উত্তর তানিয়া পেলো না। মৃদু আলোয় ঝাপসা লাগছে সবটা তানিয়ার। দিন-দুনিয়ার সমস্ত জড়তা ঘিরছে তানিয়াকে। অস্ফুট আলোতে অভ্র’র ফরসা মুখখানা-ও ঝাপসা লাগছে। অন্যরকম লাগছে। গম্ভীর্যের ছিটে ফোঁটা ও নেই এখন সেই মুখে। অভ্র নাচ শুরু করলো। প্রতিটি স্টেপ খাপে খাপ করছে সে। কিন্তু তাল মেলাতে পারছে না তানিয়া। বুক দুরুদুরু করছে। অভ্র’র এই অচরণে আরও ভয়ে সেঁটে যাচ্ছে তানিয়া। মনেমনে ভীষন ভাবে চাইছে এটা স্বপ্ন হোক। মিথ্যে হোক! কিন্ত ঘটনা সত্যি। সত্যিই অভ্র’র এতোটা কাছাকাছি সে। মনে হচ্ছে ভয়াবহ ঘোরে আঁটকে গেছে তানিয়া। অভ্র আরও এগিয়ে এলো। তার ভারি নিঃশ্বাসের শব্দ বুকে তোলপাড় শুরু হলো তানিয়ার। মাথা নুইয়ে নিলো তানিয়া।
‘এমন করছেন কেন?’ কন্ঠ কেমন শোনালো অভ্র’র।
তানিয়া নিজেকে সামলে নিলো। উত্তর দিলো ধীরে সুস্থে,
‘সেটা তো আমারো প্রশ্ন!’
‘মানে?’
‘আপনি আমার সাথে নাচছেন কেন?’
‘নাচবো না বলছেন?’
‘আপনি তো আমায় সহ্য করতে পারেন না। তাই বললাম।’
অভ্র আড়ালে হাঁসলো। বললো,
‘এতিমের মতো দূরে দাড়িয়ে ছিলেন। তাই মায়া হলো।আসলে কি বলুন তো? আপনার তো ধারের কাছে কোন ছেলে ঘেঁষবে না। যে গুন্ডী মহিলা! তাই ভাবলাম আপনাকে একটু হেল্প করি। দয়ার শরীর তো! তাই আপনার পার্টনার হয়ে একটু সহায্য করলাম।’
অভ্র’র কথায় রাগে কিড়মিড় করে তাকালো তানিয়া। এতোক্ষণের লজ্জা, জড়তায় আরতি ঘটলো! এখন স্পষ্ট অভ্র’র মুখ দেখলো সে। বাঁকা হেঁসে তাকিয়ে তার দিকে। তানিয়া গুন্ডী? তাহলে নিজে কি? তানিয়া চিবিয়ে চিবিয়ে বললো,
‘কি বললেন আপনি? আমি গুন্ডী মহিলা? তাহলে আপনি কি? আমি গুন্ডী হলে আপনি সন্ত্রা`সী! ডাকাত!’
‘সন্ত্রা;সী! ডাকাত! কি চুরি করেছি আমি আপনার?’
‘মন।’
মুখ ফসকে বলে উঠলো তানিয়া। এরপর মাথা নত জিভ কাটলো। উফফ! কি বলে ফেললো সে? শুনে ফেললো কি? আর তাছাড়া, এমন প্রশ্ন করলে তানিয়া উত্তর-ই বা কি দেবে? অভ্র তো আসলেই চোর! মন চুরি করেছে। কিন্তু কথাটা মুখ থেকে বেড়িয়েছে ভূল সময়ে। যদি শুনে ফেলে,সব ঘেটে যাবে। তানিয়া চোখ বুজে নিলো। কিছু বলার আগেই অভ্র’র প্রশ্ন,
‘কি বললেন?’
‘ক্ কিছু না।’
‘গুন্ডী মহিলা!’
‘খারাপ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু!’
অভ্র আরও এগিয়ে গেলো। তানিয়া ঘাবড়ে গেলো। অভ্র তানিয়ার কানের কাছে এসে ফিসফিসে বলে উঠলো,
‘যা হচ্ছে হতে দিন। রাগ না দেখিয়ে নাচটা ঠিকঠাক করুন।’
অভ্র’র এই দু’লাইন কথাটাতেই তানিয়ার রাগে ফিকে পড়তে বাধ্য। শুকনো ডোগ গিলে একটু সামলে নিলো নিজেকে তানিয়া। স্বয়নে-স্বপনে তো এমন স্বপ্ন’ই রাত-বিরেতে ঘুমোতে দেয়না তানিয়াকে। তাহলে আজ কি হলো? কাছে এসে এমন লাগছে কেন তানিয়ার? হুট করে অভ্র’র এরূপ আচরণ-ই কি তার কারন?!
‘আপনি আমায় এভয়েড করছেন কেন,মিস অরোনিতা?’
আরু থেমে গেলো। রুদ্র’র নেশালো কন্ঠে থমকে গেলো আরুর শ্বাস। লোকটা আজ আরুকে মেরে ফেলেই খ্যান্ত হবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আরু নিশ্চুপ। এই নিশ্চুপ’তাই আগুনে ঘি ডালার কাজ করলো। রুদ্র সবার সামনেই আরুকে পাজকোলা করে তুলে নিলো। আরু চমকালো; আচমকা রুদ্র এমন করায় রুদ্র’র পাঞ্জাবীর গলা খিঁচে নিলো। আরু লজ্জায় লাল! সবাই কি তাদের দেখছে? এই সামান্য আলোতে সবার চোখে কি আটকাবে এই দৃশ্য?
রুদ্র আরুকে কোলে করে নির্জন একটি ঘরে নিয়ে গেলো। চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। আরও সেঁটে রইলো আরু রুদ্র’র বুকে। রুদ্র’র তপ্ত শ্বাস আঁছড়ে পড়ছে আরুর মুখশ্রীতে। সে শ্বাসে স্পষ্ট, রুদ্র রেগে! ঝড় আসার আগ মুহুর্তের নিরবতা বিরাজ রুমজুড়ে। বুক টিপটিপ করছে আরুর। নিজের নিঃশ্বাসের শব্দ নিজের’ই কানে বাজছে। রুদ্র আরুকে নামালো। পাশে থাকা কিছু একটাতে সজোরে আঘাত করে চেঁচিয়ে উঠলো,
‘আন্সার মি আরু!’
আরু চোখদুটি খিঁচে বন্ধ করে নিলো। গলা শুকিয়ে আসছে। একফোঁটা পানির জন্য তৃষ্ণায় কাতর হয়ে উঠলো আরু গলা। কি ভয়ংকর কন্ঠ রুদ্র’র! হৃদপিণ্ড ট্রেনের গতিতে ছুটছে যেন আরুর। মুখে রা নেই। রুদ্র এবারে দিকসারা হয়ে গেলো। চারিদিকে উন্মাদ হয়ে চাওয়া-চাওয়ি করে হাঁটু মুড়িয়ে বসলো আরুর সামনে। মাত্র কয়েক ইঞ্চির দূরত্ব তাদের মাঝে। চেয়াল খিঁচে আরুকে বললো,
‘এই মেয়ে এই? প্রবলেম কি তোমার? নিজেকে কি মনে করো তুমি?’
আরু ভয় পেলেও চুপ করে রইলো। রুদ্র দাঁতে দাঁত চেপে বিরবির করলো,’ড্যাম ইট!’
এর’ই মাঝে গান থেমে গেছে। চারিদিকে করতালির শব্দ। এবার? নিশ্চয়ই এখন তাদের খুঁজবে সবাই? আরু রুদ্র’র দিকে তাকালো একপলক। চেয়াল শক্ত করে তার দিকে তাকিয়ে লোকটা। এখানে থাকা যাবে না আর। দরজার বাইরে থেকে মৃদু আলো আসছে। রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো আরু। আরু যেতেই রুদ্র ও বেরোলো তড়িৎ গতিতে। পিছু ডাকলো চিৎকার করে,’আরু!’
আরু না চাইতেও থেমে গেলো। থামার কারন অজানা আরুর। এই ডাকে আরুর পা আপনা-আপনি থেমে যায়। ভয় হয়; ভেতর কাঁপে! রুদ্র সামনে এসে দাড়ালো। অগোছালো লাগছে রুদ্র’কে। চোখ-মুখ বির্বর্ণ। চুলগুলো এলোমেলো; যেন হাত দিয়ে বরংবার টানা হয়েছে ওগুলোকে। চোখের সাদা অংশ রক্তিমরঙায় ছেঁয়ে। রুদ্র শরীরের ভর ছেড়ে নরম কন্ঠে শুধায়,
‘এভাবে চুপ থেকোনা। কষ্ট হয়! ভেতরটা কাল থেকে জ্বলে-পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। তোমায় উড়নচণ্ডী হিসেবেই মানায় আরু। এমন চুপচাপ আরুকে আমার ভালোলাগে না। কি করেছি আমি? বলবে তো!’
‘ঠাকাচ্ছেন।’
কথাটা তিরের মতো বিধলো রুদ্র’র বুকে। অস্থির চিত্তে জিজ্ঞেস করলো,
‘কাকে?’
‘নাটক করছেন? কাল যা দেখেছি তা তো মিথ্যে নয়। মেয়েটা আপনার যে খুব কাছের, তা তো যে কেউ দেখলেই বুঝবে। আর সবথেকে বড়ো কথা, আমিতো এসেছি; হচ্ছে তো এনগেজমেন্ট! ঠিক বিয়েটাও হয়ে যাবে। চিন্তা করবেন না। যেতে দিন।’
রুদ্র চোখ বুজে নিলো। হাত মুঠো করে জোরে জোরে শ্বাস টানলো। শান্ত গলায় বললো,
‘তুমি ভুল বুঝছো।’
‘ভূল? মেয়েটার শরীরে ওড়না ছিলো না। আর ওভাবে..ছিহ্!’
‘ছিহ্’ শব্দটিতে রাগের বাধ ভাঙলো রুদ্র’র। ভেসে উঠলো কপালের নীল রগগুলি। এক ঝটকায় আরুকে টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো রুদ্র। আরুর মাথায় হাত রেখে নিজেকে শান্ত করার ব্যার্থ চেষ্টা চালালো কিছুক্ষণ। না, কমছে না তবু। আরু তাকে ‘ছিহ্’ বলেছে! এতে তো স্পষ্ট, আরু তাকে ঘৃনা করে। ঘৃনা, হ্যা ঘৃনা করে! কথাটা ভাবলেই শরীরে আগুন জ্বলে উঠছে রুদ্র’র। কপালের শিরাগুলো জ্বলছে।
আরু ছোটাছুটি করছে। রুদ্র’র থেকে পালাবার তিব্র চেষ্টা। রুদ্র যেন আরও তেজ নিয়ে জড়িয়ে নিচ্ছে আরুকে। ছেড়ে দিলেই যদি পালিয়ে যায়?’ আরু কি বললো? সে বিয়ে করবে! না চাইতেও করবে। কিন্তু এতে তো ভালোবাসা থাকবে না! থাকবে না রুদ্র’র প্রতি কোন অনুভূতি! তবে, এ বিয়ের মানে কি? রুদ্র আহত হলো; কোমল কন্ঠে বললো,
‘আমায় এভাবে ভূল বুঝো না উড়নচণ্ডী। আমার সহ্য হয়না।’
‘ছাড়ুন আমায়।’
রুদ্র ছেড়ে দিলো। রুদ্র ছাড়তেই, আরু ছুটে পালিয়ে গেলো সেখান থেকে। ভেতরে যেতেই দেখলো অলরেডি সবাই খোঁজাখুঁজি শুরু করে দিয়েছে তাদের। হুট করে বর-বউ হওয়া হওয়ায় কেউ কেউ লজ্জাজনক কথা শোনাচ্ছে৷ আরু যেতেই জুঁই বলে উঠলো,
‘ওইতো ভাবী।’
জুঁইয়ের কথায় সবাই আরুর দিকে তাকালো। মহুয়া এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন,
‘কই গেছিলি? রুদ্র কই?’
আরু নিশ্চুপ। কি বলবে এবারে?
‘কি রে, কই ছিলি জিগায় তো তর মায়ে। জামাই বাবাজি কই?’ বললেন আনোয়ারা। সম্পর্কে আরুর মামী।
‘মিস অরোনিতা বলছিলেন বাড়িটা ঘুরে দেখবেন। তাই..’
নিষিদ্ধ অনুভূতি পর্ব ৭+৮
রুদ্র কথায় তাকালো সবাই তার দিকে। ইলিমা এগিয়ে গেলেন ছেলের কাছে। রাগান্বিত স্বরে কিছু বলে আংটি ধরিয়ে দিলেন। আরুর হাতেও আংটি দিলেন আহমেদ সাহেব। রুদ্র এগিয়ে এলো। আরুর হাত তুলে পরিয়ে দিলো আংটি। চারিদিক করতালির আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠলো!
