নিষিদ্ধ শব্দের দিনলিপি পর্ব ৩
ঝিলিক মল্লিক
আজ সোমবার।
কনকনে হাড় কাঁপানো শীতের মধ্যে চাদর জড়িয়ে নিত্যদিনের মতো মাথায় হিজাব ওড়না পেঁচিয়ে রিকশায় চড়ে কোচিং-এর দিকে যাচ্ছে রিদি। ভোর সাড়ে ছয়টা। কোচিং শুরু হবে সাতটায়। শীতকাল আসা মাত্র-ই ইকবাল আঙ্কেল কোচিং-এর সিডিউল পরিবর্তন করে দিয়েছেন ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারের স্টুডেন্টদের জন্য। আর কিছুদিন পর থেকেই টেস্ট এক্সাম শুরু হবে। এখন ওদের পড়ার চাপ ভীষণ। শীতের সকালে বই সামনে নিয়ে পড়ার বিষয়টা খুবই উত্তম মনে হয়, ইকবাল জম্মাদারের। তার মতে, শীতের ভোরে উঠে বই পড়লে ব্রেনে রক্ত চলাচল সচল হয় বেশি এবং ব্রেন কার্যকরী থাকে। খুব সহজেই জ্ঞান আহরণ করার উপযুক্ত সময় এটা।
আজ শুরুতেই আজম স্যারের ক্লাস। আজম স্যার খুব স্ট্রিক্ট। এখানে ইংরেজি পড়ানোর জন্য বিখ্যাত হলেও অন্যান্য সাবজেক্টগুলোও কমবেশি পড়ানো হয়। যে যার পছন্দমতো সাবজেক্ট পড়তে পারবে স্যারের সাথে আলাপ করে। রিদি ইংরেজি ব্যতীত আইসিটি ও রসায়ন ক্লাসও করে। আজম স্যার নেন আইসিটি ক্লাস। ভীষণ কড়া তিনি। সামান্য ভুলেরও শাস্তি দেন। তার মতে, স্টুডেন্টদের শাস্তির ওপরে রাখলেই তারা জীবনে উন্নতি করতে পারবে।
যদিও রিদি এই নীতিতে বিশ্বাস করে না। তবে চুপ থাকে৷ বিরোধ করে না৷ অবশ্য বিরোধ করার মতো মেয়ে সে নয়। কারো সাথে ঝামেলা নেই তেমন। যেচে করতেও চায় না কখনো। নিতান্তই শান্তিপ্রিয় মানুষ সে।
কোচিং এখনো পাঁচ মিনিটের দূরত্বে। পথিমধ্যে রিদি দেখতে পেল রিকশার সামনে দিয়ে সজীব হেঁটে যাচ্ছে। রিদি ওকে দেখে ডাক দিয়ে বললো,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“সজীব, ভাই উঠে বসতে পারো।”
সজীব প্রথমে মাথা নাড়ালো বারকয়েক। ভদ্রতাসূচক না করে দেওয়ার চেষ্টা করলো। কিন্তু রিদির জোরাজুরিতে রিকশায় উঠে বসলো। সজীবের হাতের লেকচার শিটটার দিকে ইশারা করে রিদি বললো,
“তুমি এটা কবে কিনলে?”
“এইতো গতদিন। তুমি তো সেদিন কোচিং-এ আসলে না। টগর স্যার কিনতে বলেছিলেন সবাইকে। বোর্ড এক্সামের জন্য এটা জরুরি।”
“আমি তো জানতাম না এ বিষয়ে। গ্রুপেও মেসেজ চেক করা হয়নি। দেখি আজ বাড়ি ফিরে আব্বুকে বলবো কিনে দিতে।”
রিদি সামনের পথে তাকালো৷ কুয়াশা এখনো কাটেনি। চশমার গ্লাসের ওপর কুয়াশা জমে চশমাকে ঘোলাটে করে তুলেছে। ব্যাগ হতে টিস্যু বের করে চশমা মুছে নিলো রিদি। সজীব ওর দিকেই তাকিয়ে ছিল। এবার কিছুটা অন্যরকম সুরে বললো,
“গতকাল কাজটা কী তুমি করেছিলে রিদি?”
রিদি চমকে উঠলো সজীবের কথায়। ঘাড় ঘুরিয়ে ওর দিকে তাকালো। বিস্ময়সূচক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ সজীবের দিকে তাকিয়ে থেকে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো। ওর নিরবতা দেখে সজীব সতর্ক সুরে বলে উঠলো,
“আমি কিন্তু জানি, কাজটা তোমার নয়। ফ্রেন্ডদের বাঁচাতে এরকম করেছো। আমি ভাবছি, কথাটা আরবিন স্যারকে বলে দেবো। তুমি কী বলো?”
রিদি এবার ভ্রু কুঁচকে তাকালো সজীবের দিকে। বিস্মিত কন্ঠে জিজ্ঞাসা করলো,
“কী আশ্চর্য! তুমি স্যারকে এই বিষয় নিয়ে আবার বলবে কেন? ঘটনা তো গতকালই চলে গেছে!”
“নাহলে তুমি তো স্যারের চোখে আজীবন একটা নেতিবাচক অবস্থানে থেকে যাবে।”
সজীবের কথা বলার মাঝখানে ততক্ষণে বিশাল চারতলা বিল্ডিংয়ের সামনে এসে থেমেছে রিকশা। রিদি রিকশা থেকে নেমে ভাড়া চুকিয়ে দিলো। সজীব দেওয়ার জন্য জোরাজোরি করছিল। কিন্তু রিদি তাতে রাজি হলো না। যাওয়ার সময়ে রিদি বললো,
“আমাকে নিয়ে তোমার ভাবতে হবে না সজীব। আমি বুঝে নেবো আমার দিকটা। এসব ভাবনা বাদ দিয়ে তুমি বরং এক কাজ করো৷ আগে উঠে কোচিং-এ চলে যাও৷ আমি ধীরেসুস্থে আসছি।”
সজীবের আর কোনো কথা বলার মুখ নেই। চুপচাপ সিঁড়ি বেয়ে দ্রুত ওপরে চলে গেল ও। সজীব যাওয়ার পরে রিদি কচ্ছপের গতিতে ধীরেসুস্থে উঠতে লাগলো সিঁড়ি বেয়ে।
একতলার সিঁড়ি শেষ করে দোতলার সিঁড়ির ধাপে উঠতেই একটা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হলো রিদি৷ আরবিন স্যার কালচে পোড় খাওয়া ঠোঁটের ভাঁজে জ্বলন্ত সিগারেট রেখে ফু দিয়ে উড়াতে উড়াতে নিচে নামছেন। তাকে দেখে মনে হচ্ছে, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কোনো সিগারেটখোর। যে দৈনিক চারবেলা করে উঠতে-বসতে সিগারেট খায়। এমনকি ঘুমাতে গেলেও, আর ঘুম থেকে ওঠার পরেও। নাহলে এই সাতসকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই কার সিগারেট খাওয়ার শখ হয়!
আরবিন স্যার রিদিকে দেখে থমকে দাঁড়ালেন। রিদির চোখ-মুখে তীক্ষ্ম দৃষ্টি বিচরণ করলেন। তারপরই চোখ রাখলেন রিদির চশমার ওপরে।
এই মুহুর্তে এমন পরিস্থিতিকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলার দু’টি কারণ খুঁজে পেল রিদি। এক, সে আশা করেনি আরবিন স্যারের সাথে এভাবে মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয়ে যাবে আবার। ক্লাসে আসলে অনেক স্টুডেন্টের মধ্যে চোখে পরতো কম। কিন্তু এই সাক্ষাৎটা সম্পূর্ণ-ই প্রত্যাশার বাইরে। দুই, আরবিন স্যারকে নিতান্তই ভদ্র-সভ্য আর গোছানো একজন পুরুষ হিসেবে জানে সবাই। যদিও শিক্ষকতার বাইরে তাকে ভালো করে জানা হয়নি কারোই। তারপরও কোনো শিক্ষার্থী-ই তার এই খোর-রূপের সাথে পরিচিত নয়। কেমন যেন বখাটে বখাটে ভাব, এলোমেলো স্বভাব। চুলগুলো পজিশনে নেই। মোটেও সেই সদাসর্বদার পরিপাটি ভাবটা নেই। মনে হলো, ঘুম থেকে উঠে কোনোরকম ফ্রেশ হয়েই সিগারেট গিলতে গিলতে বেরিয়ে পড়েছে। দিনদুনিয়া কোনোকিছুরই খেয়াল নেই যেন।
মনে মনে কথাগুলো ভেবে ভীষণ আড়ষ্ট হলো রিদি। এই এক গভীরতম সমস্যা ওর। যেকোনো কিছুতেই অত্যাধিক আড়ষ্ট হয়ে পড়ে। কেউ অন্যায় করলেও লজ্জায় আড়ষ্ট হয় ও। টেলিভিশনে রোমান্টিক মুভি চলাকালীন হিরো-হিরোইন চুমু খেলে যতটা না তাদের লজ্জা লাগে, তার চেয়ে অধিক বেশি লজ্জা লাগে রিদির।
এই যেমন এখন আরবিন স্যার ওর সামনে নির্লিপ্তভাবে এখনো পর্যন্ত সিগারেটটা ঠোঁটে চেপে ধরে আছেন; ছাত্রীর সামনে শিক্ষক সিগারেট চেপে ঠোঁটে — অথচ তার নূন্যতম আড়ষ্টতাবোধ নেই! এই কথাটা ভেবে ভীষণ অস্বস্তি বোধ হচ্ছে রিদির। তখনই আরবিন স্যার বলে উঠলেন,
“তুমি, আজ এতো সকালে যে?”
“আজম স্যারের ক্লাস আছে। স্যারের ক্লাসে গতদিন দেরি করে আসায় ঝাড়ি খেয়েছিলাম। এজন্য আজ তাড়াতাড়ি আসলাম।”
“এতো সকালে দু-একজন ছেলে ছাড়া কোনো মেয়ে আসে না। ওপরে দেখলাম, সজীব এসেছে। তুমি ওখানে যেও না।”
“কেন স্যার?”
“গাধীর মতো প্রশ্ন করো না রিদি। বাচ্চা খুকি নও তুমি। এতো খোলামেলাভাবে বুঝিয়ে বলতে পারবো না। সেরকম সম্পর্কও নয় আমাদের। এটা একটা কোচিং সেন্টার। শীতকালের ভোরবেলা। কুয়াশা এখনো পুরোপুরি কাটেনি। ম্যাক্সিমাম মানুষ এখনো ঘুমে কাদা হয়ে আছে। সেখানে ওই ভেতরের বদ্ধ ক্লাসরুমে যেয়ে একটা ছেলের সাথে আধাঘন্টার মতো বসে থাকা কতোটা সমীচীন মনে করছো তুমি? ক্যান ইউ রিয়েলাইজ দিস?”
রিদি মাথা নুইয়ে ফেললো। তারপর বললো,
“কিন্তু স্যার, সজীবের সাথে তো আমি রিকশায় এসেছি কোচিং পর্যন্ত। এতে তো কোনো অসুবিধা হয়নি।”
রিদি একপ্রকার মনের ওপর জোর দিয়েই কথাটা বললো। এমনভাবে বললো, যেন বেয়াদবি না হয়ে যায়। কারণ, শিক্ষকের কথার ওপরে কথা বলা বেয়াদবির শামিল। তবুও রিদি যথেষ্ট নরম গলায় বললেও আরবিন স্যার ঠিকই গম্ভীর স্বরে বলে উঠলেন,
“বেয়াদবি করছো আমার সাথে?”
রিদি দ্রুতগতিতে দু’পাশে মাথা নাড়িয়ে চঞ্চল কন্ঠে বলে,
“না স্যার! স্যরি স্যার৷ আর করবো না।”
“তর্ক করবে না কখনো। আমি পছন্দ করি না।”
রিদি আর কোনো কথা বললো না৷ স্যারের দিকে তাকালোও না। আরবিন স্যার পুনরায় বলে উঠলেন,
“আমি সামনের টংয়ের দোকানে যাচ্ছি চা খেতে। গেলে আসতে পারো। বাইরে কিছুটা সময় থেকে সাতটার দিকে যখন সবাই আসবে, তখন কোচিং-এ যেয়ে বোসো।”
রিদি অপ্রস্তুত হলো। আরবিন বুঝলেন, কিছু একটা অসুবিধা হচ্ছে ওর৷ তাই আবারও বললেন,
“কী সমস্যা?”
“স্যার আপনি সিগারেট খাচ্ছেন তো। আমি সিগারেটের গন্ধ আর ধোঁয়া একদম সহ্য করতে পারি না। অসহ্য উৎকট লাগে। নিঃশ্বাস আঁটকে আসে।”
কথাটা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই হাতের আঙুলের ফাঁকে থাকা আধপোড়া সিগারেটটা ফ্লোরে ফেলে পায়ের রাবারের স্যান্ডেলের নিচে পিষতে পিষতে আরবিন বললেন,
“ব্র্যান্ডের দামী সিগারেট বুঝলে। পুরোটা শেষ না করে ফেলে দিলে পয়সা উসুল হয় না। তবে আজ তোমার জন্য ফেলে দিলাম। ছাত্রীর চেয়ে তো আর সিগারেট বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়!”
আরবিন স্যার আগে আগে নামতে লাগলেন। রিদি তার পেছনে পেছনে। নামতে নামতে রিদি বিরবির করে বললো,
“কি কিপ্টেমি রে বাবা! আবার বলেন, ছাত্রীর চেয়ে সিগারেট নাকি গুরুত্বপূর্ণ নয়। এতোক্ষণ পরে মনে হলো কথাটা!”
মনের কথা মনেই রেখে দিলো রিদি৷ প্রকাশ করলো না। অবশ্য তা সে করতেও চায়না। এমন অনেক কথাই আছে, যা আজীবন তার মনে থেকে গেছে। কখনো কন্ঠনালী পেরিয়ে জিহ্বার আগায় এসে পৌঁছায়নি।
আরবিন স্যারের মধ্যে কি যেন একটা ব্যাপার আছে! একটা পরিপূর্ণ অভিভাবক ধাঁচের। যিনি প্রতিমুহূর্তে শেখাতে আগ্রহী। জীবন নিয়ে তার খুব সচেতনতা। যখনই সুযোগ পান, স্টুডেন্টদের কিছু না কিছু শেখান। আর এই দিকটা রিদির ভীষণ পছন্দের। তার স্নেহসুলভ আচরণ; আরবিন স্যারের আকর্ষণ করার এক অমোঘ ক্ষমতা রয়েছে। যা আর সবার মধ্যে নেই।
নামতে নামতে হঠাৎ হোঁচট খেয়ে সিঁড়ির ধাপে পরে গেল রিদি। আরবিন স্যার সামনেই ছিলেন। পেছনে ঘুরে তাকালেন তিনি। শীতের সকালে পায়ে মোচড়টা ভালোই খেয়েছে রিদি। ব্যাথাও পেয়েছে বেশ। উঠে দাঁড়ানোর অবস্থায় নেই ও। আরবিন কিছুক্ষণ হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে থেকে তারপর বললেন,
“রিদি, ধীরেসুস্থে উঠে দাঁড়াও নিজে।”
পরে গিয়ে যতোটা না বেশি ব্যাথা পেয়েছে রিদি, তারচেয়ে বেশি যেন আঘাত পেল আরবিন স্যারের কথায়।
আচ্ছা স্যার কী পারতো না রিদিকে হাত ধরে টেনে তুলতে? ও যে ওঠার অবস্থায় নেই, এতটুকু কী উনি বুঝতে পারেননি? নাকি বুঝেও না বোঝার ভান করলেন? হাত ধরে টেনে তুললে কী সমাজ তাদের ওপর কলঙ্ক লাগাতো? উত্তর আসে, মোটেও নয়। তবু স্যার কেন এতোটা কঠিন হচ্ছেন রিদির প্রতি? নাকি চিরকুট দেওয়ার বিষয়টা নিয়ে ক্ষোভ এখনও যায়নি? মনে পুষে রেখেছেন!
রিদির দৃষ্টির ভাষা যেন মনের কথা প্রকাশ করলো। আরবিন স্যার ওর চোখের দিকে তাকিয়েই বুঝে গেলেন, ওর মন কি বলছে। তিনি কাটখোট্টা গলায় বললেন,
“শোনো রিদি, এসব তো ছোটোখাটো ব্যাপার। জীবনে এমন অনেক পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে, যা তোমার নিজেকেই সামলাতে হবে। কেউ এগিয়ে আসবে না তোমাকে সাহায্য করতে। না তোমার আব্বা-আম্মা, আর না তো শিক্ষকরা৷ অবশ্যই সেরকম পরিস্থিতি না-ও থাকতে পারে। এজন্য পরনির্ভরশীলতা ছাড়তে হবে তোমাকে। যতবার পরে যাবে, ততবার নিজেই নিজের ঢাল আর সহযোগী হয়ে উঠে দাঁড়াবে। এভাবে ধীরে ধীরে তুমি আত্মনির্ভরশীল হতে শিখবে। কিন্তু এখন থেকে যদি তোমার মাঝে সেই প্রচেষ্টা না আসে, তবে পরবর্তীতে ভোগান্তি কিন্তু তোমাকেই পোহাতে হবে। তোমার হাত চাইলে আমি ধরতে পারতাম। টেনে উঠাতে পারতাম। কিন্তু একবার এই অভ্যাস করিয়ে ছাড়লে, পরবর্তীতে বারবার তুমি আমার হাত; এমনকি অনেকের হাত-ই আঁকড়ে ধরতে চাইবে। যা তোমার জন্য ক্ষতিকর। যখন আমরা থাকবো না, তখন কী করবে?”
রিদি নিশ্চল, নিরব দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো আরবিন স্যারের দিকে। তিনি একনাগাড়ে বলেই চলেছেন। রিদি শুধু শুনে যাচ্ছে। আস্তে আস্তে ঠোঁট চেপে ধরলো ও। চোখ বুঁজে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে নিজেকে শান্ত করে পুনরায় স্যারের মুখের দিকে তাকালো। গুরুগম্ভীর, অভিভাবক-সমতুল্য ওই মুখে কোনো মিথ্যা আশ্বাসবাণী নেই। বরং রয়েছে, দুনিয়ার জঘন্যতম সত্যি। যা মেনে নিতে সবারই কষ্ট হয়। সত্যিই তো! রিদি অন্যের ওপর নির্ভরশীল বেশি। আরবিন স্যার শেষ যে কথাটা বললেন,
নিষিদ্ধ শব্দের দিনলিপি পর্ব ২
“আমার কথাগুলো শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই বাস্তব। রিয়্যালিটি মেনে নাও তুমি। একদিন আমি বা আমরা হয়তো-বা থাকবো না তোমার সাথে।”
রিদি আর কিছু শুনলো না। ওর কানে একটাই কথা বাজতে লাগলো,
“একদিন আমি বা আমরা থাকবো না তোমার সাথে!”