নে আদরে জড়িয়ে মন পর্ব ১৪
সিনথিয়া
“সম্মানিত যাত্রীবৃন্দ, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের অ্যামট্রাক ট্রেনটি পেন স্টেশন থেকে শিকাগো ইউনিয়ন স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে; তাই প্লাটফর্ম নম্বর দশ থেকে যাত্রীদের ট্রেনে ওঠার জন্য অনুরোধ করা হলো!”
পশ্চিমা ভাষায় ঘোষণাটি শোনা মাত্রই হুলুস্থুল বাঁধলো প্লাটফর্মে। ট্রেনের সামনে ভীর বাড়লো। সেই ভীর ঠেলে শ্যাম পুরুষের আর আরশি অবধি এসে পৌঁছানো হলো না। চোখের পলকে হারিয়ে গেলো প্রিয় মুখটা। কার্ডবোর্ডের তৈরি কাপে দু’হাতে দু’টো ক্যারামেল ম্যাকিয়াটো নিয়ে দাঁড়ানো রেজা দীর্ঘশ্বাস ফেললো মন খারাপের।
পরপর আনত মুখ বাঁকা হেসে ভাবলো,
“এখন কথা বলার সু্যোগ হাতছাড়া হলো তো কি হয়েছে, আর যাই হোক এতোগুলো ঘন্টা তোমার পাশে বসার মতো সুযোগ হাত ছাড়া করবো না আমি!”
লাল-সাদা রঙের মিশেলে ঝকঝকে একটি ট্রেন। সব স্টুডেন্টদের সাথে আরশিও উঠলো সেটায়। কিন্তু পরিপাটি ফ্লোরে পা রাখতেই হুট করে হাতের ব্যাগটা চলে গেলো অন্য কারোর দখলে।
চোর ভেবে ধক করে উঠলো আরশির বুক। চকিত সেদিকে তাকাতেই কিশোরীর নজর আঁটকালো ফোল্ড করা শার্টের হাতায়। ভীত মুখখানা সটান হলো সহসাই।
লাগেজ রাখার জায়গায় ব্যাগটা রেখে আরশির দিকে দৃষ্টি ফেরালো শেহজাদ। দাম্ভিক অবয়বটি কানের কাছে ঝুঁকে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“সকালের মতো আপনার পার্সোনাল মইটা সার্ভিস দিতে পারছে না বলে মন খারাপ করবেন না মিসেস চার্লি চ্যাপলিন! সার্ভিস না দিতে পারলেও ব্যাগ কিন্তু ঠিকই উঠিয়ে দিয়েছি! ”
মইয়ের ব্যাপারটা প্রথমে আরশির মাথার উপর দিয়ে গেলেও আচানক অন্তপটে ভাসলো শেহজাদের ওর কোমর জড়িয়ে ধরার মূহুর্ত। রক্তজবারা মিছিল বের করলো কপোলজুড়ে। লজ্জাটুকু মুখে আসন গড়ার আগেই টুপ করে ঢোক গিললো ও। চোখ বড় বড় করে জিজ্ঞেস করলো,
“আমি-আমি মিসেস চার্লি চ্যাপলিন? আপনি আমার হাইট নিয়ে খোঁটা দিলেন? তাহলে আপনি নিজে কত ইঞ্চি শুনি?”
ততক্ষণে শেহজাদের ডাক পড়েছে প্রফেসরদের মাঝে। তাদের জন্য প্রিমিয়াম ক্লাসের সিটের ব্যবস্থা করেছেন প্রিন্সিপাল। আর স্টুডেন্টদের জন্য নরমাল ক্লাস।
সেদিকটায় একবার তাকিয়ে ফের আরশির দিকে চাইলো ব্যস্ত চোখ দুটো। গিরির মতো গভীর কন্ঠ খাদে নামলো মূহুর্তেই। আশপাশ পরখ করে বললো,
“আমি কত ইঞ্চি সেটা জানার মতো লম্বা হওনি তুমি। আগে লম্বা হও তারপর বলছি!”
লজ্জা নয়, আরশির ফর্সা কান লালচে হলো আক্রোশে। সেখান দিয়ে লাভার মতো ধোঁয়া বের করেই উধাও হলো মানুষটা।
শেহজাদের হেঁয়ালি কথাগুলোও ঢাকা পড়লো আরশির রাগের তোপে। মুখ ফুলে ছোটখাটো বেলুন হতেই অভিমান ক্ষণে ক্ষণে আওড়ালো,
“নিজে যে ট্রাফিক লাইটের মতো একটু পরপর রঙ বদলায়! সে-বেলায় কিছু না!
আর আমি একটু সাইজে ছোট বলে একেবারে মিসেস চার্লি চ্যাপলিন বানিয়ে দিলো?”
তবে এই দুঃখ মেনে নিতে খুব একটা বেগ পেতো হলো না কিশোরীর। ভাগ্য ভালো যে চার্লি আসলেই ওর পছন্দের একটা ক্যারেক্টার। ম্যাসেঞ্জার-ইন্সটাগ্রাম সব জায়গার প্রোফাইল পিকচারেও এই লোকের ছবি দেয়া।
আর হাইট তো চাইলেও এখন আর পাঁচ ফুটের বেশি বানাতে পারবে না ও।
এসব ভাবতে ভাবতেই তীরের মতো মাথায় এসে বিঁধলো অন্য প্রশ্ন।
“আমার এতসব পার্সোনাল বিষয়, জাম্বুবানটা জেনে যাচ্ছে কি করে?”
জারার ক্লান্তি নেই। সকাল থেকে ছুটে ছুটে এটা-ওটা করছে। লাইব্রেরি তো আছেই, সাথে ফ্রিল্যান্সিং সাইডেও একটা একাউন্ট খুলে ফেলেছে গ্রাফিক ডিজাইনিংয়ের কাজ করবে বলে।
সকালে কোনো রকম একটু খেয়ে ডাইনিং টেবিলে বসেই ল্যাপটপে ডিজাইন করা শুরু করেছে মেয়েটা। খানিক বাদেই পাশে চেয়ার টেনে বসলো আয়ান।
মুখ কালো করে তাকালো জারার দিকে।
লাইব্রেরি থেকে ছুটি পেয়েছে, ক্যাম্পিং এ যাওয়া ক্যান্সেল করেছে; কোথায় একটু আয়ানের সাথে বসে গল্প করবে! বর হিসেবে না হোক! বয়ফ্রেন্ড হিসেবে না হোক! বন্ধু হিসেবে না হোক! অন্তত একই ফ্ল্যাটের প্রতিবেশী হিসেবে প্রতিবেশীর থেকে এটুকু কি চাইতে পারে না আয়ান?
জারার দিকে তাকিয়ে লম্বা শ্বাস ফেললো অফিসার। সেই দীর্ঘশ্বাস একঝাক মন খারাপ নিয়ে লুটিয়ে পড়লো মেঝেতে। পড়াশুনোর ফাঁকে মেয়েটাকে এতোকিছু করতে দেখে পারছে না শুধু বলতে,
“তুমি বসে বসে শুধু একবার হুকুম করেই দেখো না বাটারফ্লাই! তোমার পায়ের সামনে আমি আমার জানটাও এনে হাজির করে দেবো!”
কিন্তু অবাধ্য মুখ ফসকে কথাটা বের হওয়ার আর ফুরসত পেলো না আজ। তারআগেই ল্যাপটপে হাত চালাতে চালাতে জারা প্রশ্ন ছুড়লো,
“কিছু চিন্তা করছেন বুঝি?”
ভাবনায় অনাকাঙ্ক্ষিত বিচ্ছেদ, ফুটে উঠলো আয়ানের পুরুষালী গভীর কন্ঠেও। জড়ানো স্বর থেমে থেমে আওড়ালো,
“হু! হ্যাঁ! না ভাবছিলাম অনেকদিন বিরিয়ানি খাইনি। আজ খেলে কেমন হয় বলো তো?”
ঠোঁট টিপে ল্যাপটপ বন্ধ করলো মেয়েটা। মুখখানা এমন বানালো যেনো বিরিয়ানি ওর সবচাইতে অপছন্দের খাবার। আয়ান ঘাবড়ালো। এই রে, আবার বলে বসবে না তো,
“আপনি একাই খান আপনার বিরিয়ানি!”
কিন্তু ও যে, জারার সাথে লাঞ্চ করবে বলে ঠিক করে রেখেছে! সেটার কি হবে এবার?
তখনই মানুষটাকে অবাক করে দিলো ঐ পাতলা ওষ্ঠপুট। একান-ওকান জুড়ে হেসে বললো,
“আজকের বিরিয়ানিটা আমি রান্না করি? আপনি না হয় টেস্ট করেই বলবেন কেমন হয়েছে খেতে?”
জারার ঐ সমুদ্রের মতো চোখের উপচে পড়া আবদার নাকচ করার ক্ষমতা আছে নাকি অফিসারের? তবুও চিন্তা হলো ওর। বিরিয়ানি রান্না তো অনেক ঝামেলার। জারা পারবে একা? কষ্ট হবে না এসব করতে গিয়ে?
কন্ঠ সেই উদ্বেগটুকু না লুকিয়েই বলে উঠলো,
“আমি কাটা-কুটি করে দেই তাহলে?”
জারার এক কথা,
“আজকের রান্না আমি করবো মানে আমিই করবো! শুধু একটু কাটাকুটি করেও তো বিরিয়ানি ভালো হলে সব ক্রেডিট আপনি নিয়ে যাবেন!”
আয়ান বসা থেকে সটাং দাঁড়িয়ে গেলো মেয়েটার কথায়। গলার চামড়া চিমটি দিয়ে ধরে বললো,
“এই দেখো গলা ছুয়ে বলছি, একটুও ক্রেডিট নেবো না!”
এবারটায় মুখ চেপে ধরেও হাসি থামাতে পারলো না জারা। কিশোরীর খিলখিল শব্দে সরব হলো আয়ানের অলিন্দের প্রতিটি প্রকোষ্ঠ। হেম চোখের তারায় গান শোনালো মেয়েটার প্রতি এক সিন্ধু সমান ভালোবাসা।
“আচ্ছা বেশ! করবেন না হয় রান্নায় হেল্প। কিন্তু তার আগে গোসল করে একটু ফ্রেশ তো হয়ে আসুন! কাল যে বরফের মধ্যে ওভাবে গড়াগড়ি খেলেন তারপর কি একবারও গোসল করেছিলেন?
ছিঃ ছিঃ আপনার মতো বিদেশি বাঁদরের থেকে এটা আশা করা যায়? দেশি বাঁদর হলে তা-ও একটা কথা ছিল!”
পুরো কথাখানা খেয়াল না করেই বাধ্য ছেলের মতো মাথা কাত করলো আয়ান। ফের হেসে ফেললো জারা। সেই দমফাটা হাসি স্বপ্নের মতো দেখে গেলো এক বিমুগ্ধ তরুণ!
নরমাল ক্লাসে খানিকটা পিছনের দিকে মোটে তিনটা সিট ফাঁকা। এক সাইডে দুটো পাশাপাশি আর অন্য সাইডে একটা। আরশি আর সময় নষ্ট করলো না। দ্রুত গিয়ে বসলো জানালার পাশের সিটটাতে ৷ যদিও কাচ তোলার অনুমতি নেই, থাকলে ঠিকই তুলে ফেলতো ও।
ওর পাশের সিটটা এখনো খালি। আরশির সেদিকে তাকিয়ে মন খারাপ হলো ভীষণ। জারা আসতে পারলে তো এখানে বসতো! কত-শত গল্প করতো ওরা। ক্লাসের ফাঁকে তো সেভাবে কথা বলারই সময় পাওয়া যায় না।
আচ্ছা একটা ভিডিও কল দিলে কেমন হয় জারাকে? আসেনি তো কি হয়েছে, দেখতে তো পারবে!
পরপরই ওভারকোটের পকেট হাতড়ে ফোন বের করলো ও। ম্যাসেঞ্জারে ভিডিও কল দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো, রিসিভ হওয়ার জন্য।
এদিকে মাত্র গোসল সেরেছে আয়ান। স্বচ্ছ পানির ফোঁটা চুইয়ে পড়ছে কালো চুল বেয়ে। শুধু কোমর থেকে হাটু অবধি একটা তোয়ালে জড়ানো তার। আর বাকি শরীর উদোম।
এক বার এ হাতের মাসল তো আরেকবার অন্য হাতের মাসল দেখতে দেখতে বের হলো সে ওয়াশরুম থেকে। পেটানো শরীর নিয়ে গর্ব তার চোখে-মুখে। তখনই ওর বেডাসাইড টেবিলের উপর থেকে তারস্বরে বেজে উঠলো জারার ফোনটা। বেখেয়ালে রেখে গেছে হয়তো!
আয়ানের ঠোঁটে হাসি ফুটলো অমনি। কেমন একটা জামাই জামাই ফিল হচ্ছে না ওর? বউ রান্না করছে আর সে বউয়ের ফোন রিসিভ করে তার সামনে নিয়ে যাবে। বলবে, “জান দেখো তো কে ফোন করেছে!”
এসব ভেবেই লজ্জায় কুটিকুটি অফিসার। নাচতে নাচতে হেঁটে আসলো টেবিল অবধি। কিন্তু ফোন হাতে নিয়েই তার সমস্ত হাসি গায়েব। স্ক্রিনে বড় বড় করে ভাসছে চার্লি চ্যাপলিনের ছবি। সাথে নামের জায়গায় দুটো ইংরেজি অক্ষর; বি এফ। তারপাশে আবার ভালোবাসার ইমোজি।
আয়ানের বুকের ভিতরটা শুকিয়ে মরুভূমি হলো সহসাই। প্রবঞ্চনার শিকার হওয়া মনের মতো হুহু করে উঠলো সেটা। ‘বি এফ’ মানে তো বয়ফ্রেন্ড! সাথে আবার রেড লাভ। তারউপর ভিডিও কল? কিন্তু বি এফ তো হতে চেয়েছিল ও। সেখানে এই চ্যাপা শুটকি আবার কোত্থেকে আসলো?
মানুষটা আবেগে ভেঙে পড়তে গিয়েও শক্ত হলো সহসা। মাসল কি আর এমনি এমনি বানিয়েছে? অমন একশো টা চার্লি চ্যাপলিন দিয়ে সকালে ব্রেকফাস্ট করে সে। এতো সহজ না তার বাটারফ্লাইকে তার থেকে নিয়ে যাওয়া!
চোখ-মুখে পুলিশি ভাব এনে ফোনটা রিসিভ করলো আয়ান। ফ্রন্ট ক্যামেরা রাখলো হাতের মাসলের উপর। আজ এই চার্লির গুষ্টির তুষ্টি যদি না বানিয়েছে ও-
কিন্তু! ফোন রিসিভ হতেই অপর পাশে ভেসে উঠলো একটা মেয়ে মুখ। ঘাবড়ে গেলো মানুষটা। তাড়াহুড়োয় কল কাটতে গিয়ে মেঝেতে পড়ে গেলো ফোনখানা।
শব্দ শুনে দৌঁড়ে আসলো জারাও। একবার ফোন আর আরেকবার আয়ানের চেহারার তাকাতেই চোখ সড়িয়ে নিলো সে। অন্যদিকে ঘুরে জিজ্ঞেস করলো,
“ফো-ফোনটা পড়ে গেলো কি করে?”
আমতা আমতা করলো অফিসার। কি বলবে সে? “তোমার বান্ধবীকে ছেলে ভেবে হিংসেয় মাসল দেখিয়েছি আবার মোবাইলও ভেঙেছি?”
এতো কিছুর পরেও জারা যা-ও একটু নরম হয়েছিল। এসব শুনলে আবার রণমুর্তি ধারণ করবে না ও?
“আ-আসলে ‘বি এফ’ নামে কেউ একজন ফোন করেছিল তোমাকে। কেঁটে যাবে ভেবে রিসিভ করতে গিয়ে ফোনটা পড়ে গেছে হাত থেকে!”
ডাহা মিথ্যে কথা! কিন্তু পিঠ বাঁচানোর জন্য এরচেয়ে ভালো অযুহাত খুঁজে পেলো না মানুষটা।
“ও আরশি ফোন করেছিল তারমানে। ওর নিক-নেম বি এফ আই মিন ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ দিয়ে সেভ করে রেখেছি। আসলে আর কারোর সাথে তেমন মিশি না তো! বলতে গেলে ঘুরে-ফিরে ঐ একজনই বান্ধবী আমার!”
আয়ানের মনে হলো মাথা ঠুকে মরে যেতে। যা করেছে তাতে জারার ঐ একজন বান্ধবীও আর থাকলে হয়!
কিন্তু পরক্ষনেই আরশি নামটা কেমন চেনা চেনা লাগলো ওর কাছে! মনে পড়লো ওর বন্ধুর বউয়ের নামও তো আরশি! জারার বান্ধবী আর শেহজাদের ওয়াইফ একই মেয়ে নয় তো?
ওপর পাশে কল রিসিভ হতেই পাশে এসে দাঁড়ালো রেজা। সে দিকে ফিরে তাকানোয় আয়ানের মাসল-টাসল আর দেখেনি আরশি।
বন্ধু নয়, ক্লাসমেট হিসেবে যতটুকু সৌজন্যবোধ রেজার প্রাপ্য ততটুকু দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলো পশ্চিমা ভাষায়,
“রেজা! ভালো আছেন আপনি?”
“ভালো নেই! কিন্তু যদি পাশে বসতে দাও তাহলে ভালো থাকতে পারি!”
মোটেই না। এই ছেলের হাবভাব এমনিতেই আরশি খুব বেশি সুবিধার মনে হয় না। আগে বুঝতে পারেনি, তবে এখন মনে হচ্ছে লোকটা কেমন আগ-বাড়িয়ে গায়ে পড়া স্বভাবের।
কিন্তু মুখের ওপর না করবে কিভাবে? জারা আসলে তো তা-ও বলতে পারতো যে, জারা বসবে এখানে!
তাগাদা দেখালো রেজা। পশ্চিমা ভাষায় আবার বললো,
“জারা যে আসবে না, সেটা আমি জানি। সুতরাং কোনো অযুহাত দিয়ে লাভ নেই। সকালে মেসেজে কথা হয়েছে ওর সাথে আমার!”
অপ্রস্তুতে হাসলো কিশোরী। অস্বস্তি হচ্ছে ভীষণ। কিন্তু কি আশ্চর্য! এই অস্বস্তি তো শেহজাদের বেলায় হয় না! ঐ মানুষটার পাশে তো ঘুমোলো রাতে। কই একটুও তো খারাপ লাগেনি। আরো কি এক অজানা প্রশান্তিতে ঘুম ভেঙেছে সকালে। অথচ এখন?
লোকটা আর ওর উত্তরের অপেক্ষায় নেই। এগিয়ে আসলো আরশির পাশের বসার জন্য। তক্ষুনি পিছন থেকে কেউ একজন শক্ত হাতে থাবা বসালো রেজার বাহুতে। ঘুরে তাকালো সে। হঠাৎ করে শেহজাদকে দেখে ভড়কে গেলো কিছুটা।
মানুষটার থমথমে মুখের গড়ন আর দাপুটে অবয়ব ঝাঁকি দিয়ে কাঁপুনি তুললো ওর হাঁটুতে। কম্পিত কন্ঠ বিদেশি ভাষায় আওড়ালো,
নে আদরে জড়িয়ে মন পর্ব ১৩
“প্রফেসর আপনি? কিছু বলবেন?”
শেহজাদের হিমশীতল স্বর। দাঁতে দাঁত পিষে বললো,
“আর এক-পা-ও এগোলে পা ভেঙে হাতে ধরিয়ে দেবো তোর! তখন আর আমার বউয়ের পাশে নয়, ডিরেক্ট যমদূতের পাশে গিয়ে বসতে হবে তোকে!”