পারমিতা পর্ব ১৫
Nabila Ahmed
প্লেনে বসে আছে মিতা আর অরিয়ন। সকাল ৬ টার ফ্লাইটে আগে দুবাই যাবে এরপর সেখান থেকে ফান্সের জন্য রওয়ানা হবে। ফার্স্টক্লাস ফ্লাইটে নিজেদের কেবিনে বসে থাকা অরিয়ন আর মিতাকে সব কিছু বুঝিয়ে দিয়ে যায় এয়ার হোস্টেজ।
কিছুক্ষণের মধ্যে প্লেন ছাড়তেই মিতা নিজের জায়গায় নড়েচড়ে বসে। অরিয়ন মোবাইলে প্রোজেক্টের সব কিছু বাকিদের বুঝিয়ে দিচ্ছে একটু পর পর।
মোবাইলে কথা বলা শেষ করে মিতার দিকে আড় চোখে তাকাতেই দেখতে পায় মিতা কেমন যেন করছে। মিতার বসে থাকা অস্বাভাবিক লাগছে,মুখ একদম শুকিয়ে আছে, দু হাত দিয়ে শক্ত করে সিট ধরে রেখেছে। এক প্রকার খিচ মেরেই বসে আছে। প্লেন আকাশে স্বাভাবিক ভাবে নিজের গতিতে চলতে শুরু করে দিয়েছে এতোক্ষণে। মিতার থেকে চোখ সরিয়ে নিজের কাজে মন দেয় অরিয়ন। মিতার প্রতি রাগটা এখনো কমেনি বলেই ইগনোর করে গেলো অরিয়ন। কিন্তু নিজের রাগ যেন বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারলো না অরিয়ন। আবারও আড় চোখে মিতার দিকে তাকাতেই বুঝতে পারে মিতা একপ্রকার দম বন্ধ করেই বসে আছে। অবশেষে নিজের রাগ বিসর্জন দিয়ে সিটবেল্ট খুলে নেয় অরিয়ন।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
–কি হয়েছে তোর?
নিজের সিট বেল্ট খুলে মিতার সামনে গিয়ে কিছুটা নিচু হয়ে জিজ্ঞেস করে অরিয়ন।
মিতা কোনো কথা বললো না। এক নজরে অরিয়নের দিকে তাকিয়ে রইল।
–কি হয়েছে কথা বল! কি ওয়াশরুমে যাবি?
মিতার চেহারায় অস্বস্তির উপস্থিতি টের পেয়ে চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করে অরিয়ন।
মিতা মাথা নাড়িয়ে না বলে।
–তাহলে?
অরিয়নের কথা শেষ হওয়ার আগেই মিতার পেটে যা ছিলো সব গিয়ে পড়ে অরিয়নের কাপড়ের উপর। হুট করে বমি করে দেয় মিতা। অরিয়ন আহাম্মকের মতো মিতার দিকে তাকিয়ে রইল। এরকম কিছু হতে পারে তা কল্পনার বাইরে ছিলো অরিয়নের।
–সরি, সরি, সরি।
ভয়ে অরিয়নের শার্ট থেকে বমি মুছে ফেলতে নিজের হাত এগিয়ে দিতেই হাত ধরে ফেলে অরিয়ন।
–মোশন সিকনেস। সব সময় এরকম হয় আমার।
ভয়ে ভয়ে বলে মিতা।
–বমির ঔষধ খেয়ে আসিস নি?
প্রশ্ন করে অরিয়ন।
–খেয়ে এসেছি, তাও এরকম হয়। প্রচন্ড মাথা ঘুরাচ্ছে আর বমি বমি লাগছে।
মাথা নিচু করে জবাব দেয় মিতা।
অরিয়ন আর কোনো কথা না বলে কেবিন থেকে বেড়িয়ে পড়ে। মিতা নিজের সিটে শুয়ে একটু মনটা অন্যদিকে নেওয়ার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণ পর কেবিনে প্রবেশ করে অরিয়ন। বমি পরিষ্কার করে এসেছে, শার্টের বেশি অংশই ভিজে আছে পানি দিয়ে পরিষ্কার করার কারণে। মিতা চোখ বন্ধ করে এটা সেটা ভাবতে ব্যস্ত,যদি কোনো মতে অস্থিরতা একটু কমে।
–চল।
বলে অরিয়ন।
–কোথায়?
চোখ খুলে অরিয়নের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে মিতা।
–ফ্রেশ হতে।
–আমি হাটতে পারবো বলে মনে হচ্ছে না, মাথা প্রচুর ঘু..
মিতার কথা শেষ হওয়ার আগেই মিতাকে নিজের কোলে তুলে নেয় অরিয়ন।
–কি করছো তুমি?
হঠাৎ করে কোলে তুলে নেওয়াতে অবাক হয়ে বলে মিতা।
–তোর শরীর থেকে দুর্গন্ধ আসছে,পরিষ্কার না করলে এখানে বসা যাবে না।
মিতাকে নিয়ে হাটতে হাটতে বলে অরিয়ন।
অরিয়নের এহেন কথায় লজ্জা পেয়ে যায় মিতা। মনে মনে নিজের এরকম হওয়াকে বকতে থাকে। অরিয়নের সামনে এরকম করাতে এখন অরিয়ন কি ভাববে তা ভাবতে ভাবতেই নিজের মাথা অরিয়নের কাধের উপর রাখে মিতা।
মিতাকে কোলে নিয়ে ওয়াশরুমে এসে এক কর্ণারে দাঁড় করায় মিতাকে। নিজের একহাত দিয়ে মিতার কোমর শক্ত করে ধরে যাতে পড়ে না যায়,অন্যহাত দিয়ে ট্যাপ ছেড়ে পানি নিয়ে মিতার মুখের কাছে নিয়ে যায় অরিয়ন। “আচ্ছা অরিয়নের কি উচিৎ না এসব থেকে দূরে থাকার?” ভাবতে ভাবতেই মুখে পানি তুলে নেয় মিতা। কুলি করা শেষ হলে অরিয়ন হাতে আবারও পানি নিয়ে মিতার মুখ মুছে দেয়। নিজের দু হাত দিয়ে মিতার হাত ধরে হাত ধুয়িয়ে দেয়। মিতা এক নজরে মুগ্ধতার মোহজালে নিজেকে বার বার পেচিয়ে নিচ্ছে।
“এজন্যই কি তোমাকে আপু ভালোবেসেছিলো? এতো কেয়ার করলে কি কেউ ভালো না বেসে থাকতে পারবে? আমার জন্য এতোটা করতে পারলে যাকে ভালোবাসো তার জন্য কতটা করতে পারো তুমি? তা কি দেখার সৌভাগ্য কখনো হবে আমার? আমি কি তোমার মনে ঐরকম জায়গা করতে কখনো সফল হবো? ” অরিয়নের দিকে এক নজরে তাকিয়ে থেকে ভাবতে থাকে মিতা।
মিতাকে একবার ভালো করে দেখে নেয় অরিয়ন। ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয়েছে কি না তা চেক করে নেয়। যথেষ্ট মনে হলে আবারও কোলে তুলে নেয় মিতাকে। কেবিনে এসে মিতাকে শুয়িয়ে দেয় নিজের সিটে। নিজের সিটে অরিয়ন বসতে বসতেই তাকায় মিতার দিকে। অযথা কোনো আশা দিতে চায়নি বলেই দুর্গন্ধ আসছে কথাটা বলেছে অরিয়ন। ইদানীং মিতার চোখের দিকে তাকালে অরিয়নের এক প্রকার অস্বস্তি অনুভব হয়। এই চোখে শুধু ভালোবাসা আর ভালোবাসা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পায় না অরিয়ন। ঠিক তেমনটাই যেমনটা একটা সময় অরিয়নের চোখে আফরিনের জন্য ভালোবাসা প্রকাশ পেতো।
একদিকে যেমন মিতার চোখ দেখলে অস্বস্তি লাগে অরিয়নের ঠিক তেমনই মিতার শরীরে দেওয়া অরিয়নের দাগগুলোর দিকে তাকাতেই যেন এক অজানা সেটিসফেকশন অনুভব করে অরিয়ন। মিতার উপর এক অজানা অধিকার অনুভব করে। এই জিনিসটাই ভয় পেয়ে আসছে অরিয়ন, অরিয়ন আর আগের মতো নেই তা ভালোই বুঝতে পারছে অরিয়ন। এই অরিয়নের মধ্যে ভালোবাসা নিয়ে নেই কোনো কোমলতা বা বিশ্বাস। নিজের এই এলোমেলো জীবনে মিতাকে জড়াতে চায় না অরিয়ন। নিজের পরীর জীবনটা নষ্ট করতে চায় না অরিয়ন আর তার জন্য যদি মিতার মন ভাঙ্গতে হয়, তাহলে তাই করবে।
সিটে শুয়ে থাকা মিতার অস্থিরতা যেন ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এর আগে যতোবার বিদেশ গিয়েছে মিতা ততোবারই মায়া চৌধুরীকে জড়িয়ে ধরে রেখেছিলো আর মায়া চৌধুরীও মিতাকে এটা সেটা বলে ভুলিয়ে রাখতো। মিতার কি হলো জানেনা, শুধু জানে একটু পরেই সিট থেকে নেমে অরিয়নের সামনে এসে দাঁড়ায়। নিজের সামনে কারো টের পেয়ে চোখ খুলে তাকায় অরিয়ন। সামনেই দাঁড়িয়ে আছে আধ-মরা মিতা।
–আই এম সো সরি,অরিয়ন ভাইয়া।
মিতা কথাটা বলেই অরিয়নের কোলে উঠে বসে।
নিজের হাত দিয়ে অরিয়নের গলা জড়িয়ে ধরে আবারও নিজের মাথা মিশিয়ে দেয় অরিয়নের বুকের সাথে। নিজের জায়গায় স্তব্ধ হয়ে থাকা অরিয়ন কতক্ষণ এভাবে রইল জানেনা, শুধু জানে একটু পরেই অরিয়নের হাত ধীরে ধীরে জড়িয়ে ধরে মিতাকে। “আমার কি উচিৎ পরীকে সরিয়ে দেওয়া?” মনে মনে ভাবে অরিয়ন। নিজের মনকে শক্ত করে মিতাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য মিতার দিকে তাকাতেই যেন মিতার মুখটা দেখে মায়া হতে লাগল অরিয়নের। বমি করার কারণে মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না, একদম ভেঙ্গে পরেছে মিতা।
–কিছু বলো বা জিজ্ঞেস করো যাতে আমার ব্রেনটা অন্যদিকে ডাইভার্ট হয় অন্যদিকে।
চোখ বন্ধ করা অবস্থায় বলে মিতা।
মিতা চোখ বন্ধ করে রাখলেও অরিয়নের চোখ এক মিনিটের জন্যও মিতার থেকে সরছে না।
–প্রতিবার মা এটা সেটা বলে আমার মন অন্য দিকে ব্যস্ত করে দেয়, তাই বেশি সমস্যা হয় না।
আবারও বলে মিতা।
–তুই ডাক্তার হতে চাস কেনো?
হঠাৎ করে প্রশ্ন করে অরিয়ন।
অরিয়নের প্রশ্ন শুনে চোখ খুলে মিতা, অরিয়নের গলা জড়িয়ে ধরা হাতটা যেন আগের থেকে একটু শক্ত হলো।
–তোমার জন্য..
জবাব দেয় মিতা।
“তোমার জন্য” সামান্য দুটি বাংলা শব্দ। কিন্তু এই সামান্য শব্দ দুটো শুনেই যেন অরিয়নের বুক ধুকধুক করে উঠতে শুরু করেছে।
–মনে পড়ে সেদিনের কথা? যেদিন মা-বাবা এক্সিডেন্টে মারা গেলো?
অরিয়নের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে মিতা। মিতার দিকে দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অরিয়ন। মিতার কথাটা শুনতেই নিজের হাত দিয়ে মিতাকে যেন আরও একটু শক্ত করে ধরলো অরিয়ন।
এক্সিডেন্টের দিন
মিতা – বয়স ৫। অরিয়ন – বয়স ১৬।
হাসপালের এক রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে কৈশর বয়সের অরিয়ন। চোখ মুখ শক্ত করে রেখেছে যেন যেকোনো মুহুর্তে চোখ দিয়ে পানি পড়তে শুরু করবে। অরিয়নের কনিষ্ঠ আঙ্গুল ধরে দাঁড়িয়ে আছে ৫ বছরের ছোট্ট মিতা।
রুমের ভেতর থেকে কান্নার শব্দ আসছে, আবার মাঝে মধ্যে সবার রাগারাগি শোনা যাচ্ছে।
–মা কোথায় অনিয়ন?
অরিয়নের আঙ্গুল ঝাকিয়ে প্রশ্ন করে ছোট্ট মিতা।
মিতার কথা শুনে মিতার দিকে তাকায় অরিয়ন। একটু হাসি দেওয়ার চেষ্টা করে কোলে তুলে নেয় মিতাকে।
–মা বাবা অনেক দূরে বেড়াতে গেছে পরী।
বলে অরিয়ন।
–কখন আসবে?
–আর আসবে না।
আনমনে বলে ফেলে অরিয়ন।
–কেনো?
কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলে মিতা।
–কারণ যেই ডাক্তার নিয়ে আসবে সে এখানে নেই।
মিতার দিকে মায়ার নজরে তাকিয়ে বলে অরিয়ন।
–ডাক্তার থাকলে কি তারা ফিরে আসতো?
প্রশ্ন করে অবুঝ মিতা।
–হ্যাঁ।
মিতার মাথায় হাত দিয়ে বলে অরিয়ন।
–আচ্ছা।
বর্তমান
ঐদিন যদি ডাক্তারের কথাটা অরিয়ন না বলতো তাহলে হয়তো ছোট্ট মিতার মাথায় কথাটা এভাবে গেঁথে থাকতো না। সেদিনের পর থেকে যতোবার মা বাবার এক্সিডেন্টের কথা শুনেছে মিতা ততোবার শুধু ডাক্তার হওয়ার কথাই ভেবেছে। অরিয়ন নিজের হাত দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো মিতাকে। মিতাও নিজের মাথা এলিয়ে দিয়েছে অরিয়নের বুকে।
–কলেজ কেমন যাচ্ছে?
প্রশ্ন করে অরিয়ন।
মিতা কোনো উত্তর দিলো না।
মিতার উত্তর আসতে না দেখে মিতার দিকে তাকায় অরিয়ন, ক্লান্তির কারণে ঘুমিয়ে পড়েছে মিতা। অরিয়ন আর কোনো কথা না বলে নিজের সিটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে রইল।
দীর্ঘ ১৬ ঘন্টা জার্নি করার পড় ফ্রান্সের হোটেলে এসে পৌঁছেছে অরিয়ন আর মিতা। যেখানে ক্রমাগত মোশন সিকনেসের কারণে মিতার প্রায় মরা মরা অবস্থা সেখানে অরিয়নের মরা মরা অবস্থা মিতাকে কোলে রাখতে রাখতে।
–আমি যদি জানতাম বাবা এতোদূর প্ল্যান করবে তাহলে প্রোজেক্ট গোল্লায় গেলেও আসতাম না।
মিতাকে বিছানায় শুয়িয়ে দিতে দিতে বলে অরিয়ন।
মিতাকে বিছানায় শুয়িয়ে দিতেই যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লো মিতা। বড় বড় করে শ্বাস নিয়ে যতোটুকু সম্ভব অক্সিজেন নেওয়ার চেষ্টা করলো। অরিয়ন আর কোনো কথা না বলেই বিছানার অন্যপাশে গিয়ে শুয়ে একটু রেস্ট নেওয়ার চেষ্টা করে।
সূর্যের আলো চোখে পড়তেই মিটমিট করে চোখ খুলে মিতা। গতকাল রাতে এতোটাই ক্লান্ত ছিলো যে, কখন ঘুমিয়ে পড়েছে তা মনেও নেই মিতার। জাগন্ত মিতা নিজের ঘাড়ে কারো নিঃশ্বাস নেওয়া অনুভব করতেই আত্নকে উঠে কোথা থেকে আসছে তাকাতেই দেখতে পায়, ঘুমন্ত অরিয়নের মুখ গুজে আছে মিতার ঘাড়ে। নিজে একটু সরে এসে তাকিয়ে থাকে অরিয়নের দিকে।
সামনে ঘুমিয়ে থাকা অরিয়নকে এতো কাছ থেকে বুঝ হওয়ার আর কখনো দেখেনি মিতা। অরিয়নের ডান পাশের চোখের নিচে ছোট একটা লাল তিল রয়েছে যা আজ প্রথম দেখলো মিতা। চোখের পাপড়িগুলো চোখের নিচ স্পর্শ করছে।
অরিয়নকে দেখতে থাকা মিতার চোখ যায় অরিয়নের ঠোঁটের দিকে। এই ঠোঁটে মিতা শেষ প্রকৃত হাসি দেখতে পেয়েছিলো বিয়ের দিন সন্ধ্যায়, এরপর যেন সব কিছু বদলে গেলো।
নিজের ঘোরের মধ্যে বিদ্যামান মিতার হাত যেন নিজে থেকেই এগিয়ে গেলো অরিয়নের ঠোঁট স্পর্শ করতে।
অরিয়নের ঠোঁট স্পর্শ করতে যাবে তখনি চোখ খুলে তাকায় অরিয়ন। শক্ত করে ধরে ফেলে অরিয়নের দিকে থাকা হাতটি। গতকাল যতোটা কোমলতা দেখতে পেয়েছিলো মিতা আজ যেন তার ছিটেফোঁটাও নেই অরিয়নের চোখে।
ক্ষণিকের মধ্যে মিতাকে ঘুড়িয়ে দিয়ে উপুর করে শুয়িয়ে দিয় অরিয়ন। মিতার ধরে রাখা হাত ঘুরিয়ে নিয়ে আসে মিতার পিঠের উপর। নিজের শক্তি দিয়ে মোচড় দিয়ে ধরে মিতার হাত।
–আহ…
হাত মোচড় দেওয়াই ব্যাথায় শব্দ করে উঠে মিতা।
–নিজের লিমিটের মধ্যে থাকবি।
মিতার হাত শক্ত করে ধরে রাখা অবস্থায় নিজের মুখ মিতার কানের কাছে নিয়ে বলে অরিয়ন।
ব্যাথায় মিতার চোখে পানি জমতে শুরু করেছে।
পারমিতা পর্ব ১৪
–গতকাল যা হয়েছে তাতে ভেবে নিস না তোর জন্য আমার মনে কিছু তৈরি হয়েছে। তোকে দেখে করুণা হচ্ছিলো বলেই এগিয়ে গিয়েছিলাম, তোর জায়গায় অন্যকেউ হলেও তাই করতাম।
কথাটা বলেই ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় মিতার হাত।
বিছানা থেকে উঠে ওয়াশরুমে চলে যায় অরিয়ন।
বিছানায় উপুর হয়ে পড়ে থাকা মিতার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পানি পড়ছে অনবরত।
