পারমিতা পর্ব ২৩

পারমিতা পর্ব ২৩
Nabila Ahmed

ঘুমন্ত মিতার ঘুম হালকা হয় আবছা আবছা কারো কন্ঠ শুনে। কে বা কি বলছে ঘুমের ঘোরে কিছু বুঝতে পারছে না মিতা। একটু পর পর একেক জনের আসার কারণে ভালো মতো ঘুম ও হচ্ছে না মিতার। কাঁচা ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ায় প্রচন্ড মাথা ধরেছে মিতার। গোংরাতে গোংরাতে মাথায় হাত দেয় মিতা। চোখ খুলে কোথা থেকে শব্দ আসছে তার উৎস খুজতে থাকে।
–আর কিছু কি লাগবে স্যার?
শায়লাকে কথা বলতে দেখে মিতা।
–না।
অরিয়নের জবাব আসে।
শায়লার জন্য অরিয়নকে দেখতে পারছে না মিতা। মিতা আর অরিয়নের মাঝ বরাবর দাঁড়িয়ে আছে শায়লা। মাথা ধরে একটু উঠে বসে মিতা। উঠে বসতেই কেমন যেন পরিচিত পরিচিত একটা গন্ধ আসতে লাগলো মিতার নাকে। কোথা থেকে আসছে তা বুঝতে পারছে না মিতা।

অরিয়নের জবাব শুনে শায়লা রুম থেকে বের হয়ে যায়। সামনেই কাউচে বসে আছে অরিয়ন। হাতে কাপ। হয়তো চা বা কফি খাচ্ছে। কিন্তু অবাক হয় অরিয়নের পাশে থাকা সাদা রং এর গ্যালন দেখে। নীল রং এর কিছু দেখা যাচ্ছে এর মধ্যে। বুঝতে আর বাকি রইল না পরিচিত গন্ধটা আসলে কেরো*সিনের গন্ধ। তাড়াতাড়ি করে ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখতে পায় ৮:৫৬ বাজে।
–তুমি এখানে?
প্রশ্ন করে মিতা।
মিতার প্রশ্ন শুনে মিতার দিকে তাকায় অরিয়ন। এতোক্ষণ চা বা কফি খেতেই ব্যস্ত ছিলো অরিয়ন।
–অপেক্ষা করছি।
কাপে চুমুক দিতে দিতে বলে অরিয়ন।
–কিসের?
আবারও বলে মিতা।
— ৯ টা বাজার।
জবাব দেয় অরিয়ন।
–সিরিয়াসলি? আর ঐ গ্যালনে কি?
হাত দিয়ে গ্যালন দেখিয়ে বলে মিতা।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

–সেটাই যেটার গন্ধ পাচ্ছিস।
কাপ টেবিলে রেখে মোবাইল হাতে নেয় অরিয়ন।
–কেরো*সিন কেনো এনেছো?
নিজের শরীর থেকে চাদরটা সরাতে সরাতে বলে মিতা।
–গোসল করবো তাই, তুই করবি?
বাঁকা হাসি দিয়ে বলে অরিয়ন।
মিতা আর কিছু বলার আগেই অরিয়ন কাউচ থেকে উঠে দাঁড়ায়। হাতের মোবাইল কাউচে রেখে পাশ থেকেই কেরো*সিনের গ্যালন হাতে তুলে নেয়। গ্যালনের ঢাকনা খোলা শুরু করে অরিয়ন।
–কি করছো তুমি?
বিছানা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বলে মিতা।
অরিয়ন মিতার কথার কোনো উত্তর দিলো না। ঢাকনা খুলতে দেখেই ঘড়ির দিকে আবারও তাকায় মিতা। ৮:৫৯ বাজে। ঢাকনা খুলে গ্যালন হাতে দাঁড়িয়ে রইল অরিয়ন।

–কি শুরু করেছো তুমি? এসবের মানে কি?
অরিয়নের দিকে এগিয়ে গিয়ে বলে মিতা।
–এখনো শুরু করিনি, তবে এখন করবো।
কথাটা বলেই কেরো*সিন ঢালতে শুরু করে অরিয়িন।
–অরিয়ন ভাইয়া, কি করছো তুমি?
মিতার ডাক শুনে দাঁতে দাঁত চেপে রইল অরিয়ন। আরও দ্রুত কেরো*সিন ঢালতে থাকে কাউচ আর টেবিলের উপর।
–অরিয়ন।
চেচিয়ে উঠে মিতা।
অরিয়নের উদ্দেশ্য দেখে মনে হচ্ছে না যা করছে তা বন্ধ করবে। তাতে যেন আরও বেশি মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো মিতার।
মিতার ডাক শুনতেই কেরো*সিন ঢালা বন্ধ করে অরিয়ন। মিতার দিকে ঘুরে দাঁড়ায়।

–আমার রুমে যা, পরী।
পকেট থেকে লাইটার বের করতে করতে বলে অরিয়ন।
লাইটার ধরিয়ে মিতার দিকে তাকিয়ে রইল অরিয়ন। অপেক্ষা করছে মিতার অবাধ্য হওয়ার। অরিয়নের কথা শুনে যেন গায়ের রক্ত কিলবিল করতে লাগলো মিতার। দাঁতে দাঁত চেপে খুড়িয়ে খুড়িয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায় মিতা। ফুঁ দিয়ে লাইটার অফ করতেই যেন হাসি ফুঁটে উঠলো অরিয়নের ঠোঁটে।

অরিয়নের রুমের দরজা খুলে ভিতরে আসতেই যেন মন বিষন্ন হয়ে আসলো মিতার। খাটের উপর বসে রুমটা ভালো করে দেখছে মিতা। যেমনটা দেখে গিয়েছিলো ঠিক তেমনটাই আছে। নীলের রাজ্য মনে হচ্ছে ঘরটা। সামনেই টানানো আফরিনের ছবিটা যেন আগের থেকে বেশি চকচক করছে। ছবিটার দিকে তাকাতেই যেন বুক ফেটে যাচ্ছে মিতার। এই রুম, এই ছবি সব কিছু যেন কাঁটা হয়ে বিধতে লাগলো মিতার শরীরে।
নিজের ভালোবাসার মানুষের সাথে কাউকে সহ্য করা যায় না। হোক সে তার ভালোবাসার মানুষ।
এমন নয় মিতা হুট করেই আফরিনকে অপছন্দ বা হিংসা করছে। তাও যেন বুকের মধ্যে হওয়া যন্ত্রণা কমাতে পারছে না মিতা। দরজা খুলে রুমে প্রবেশ করে অরিয়ন। দু হাতে বড় বড় দুটো ব্যাগ। এক পাশে ব্যাগ দুটো রেখেই সরাসরি চলে যায় মিতার সামনে। খাটের বাইরে থাকা মিতার পা দুটো ধরে উপরে তুলে দেয় অরিয়ন।

–কি করছো তুমি?
হুট করে মিতার পা ধরাতে প্রশ্ন করে মিতা।
অরিয়ন কোনো কথা না বলেই শুয়িয়ে দেয় মিতাকে। বেড সাইডের টেবিলের ড্রয়ার থেকে মলম বের করে বসে পড়ে মিতার পায়ের কাছে।মিতার আর বুঝতে বাকি রইল না কি করতে চাচ্ছে অরিয়ন। মলম নিয়ে মিতার পায়ে লাগাতে লাগলো অরিয়ন। হাটার সময় মিতা যে খুড়িয়ে খুড়িয়ে এসেছে তা ঠিকি দেখতে পেয়েছিলো অরিয়ন। মলম লাগাতে ব্যস্ত অরিয়নের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল মিতা। অরিয়ন এমন কিছুও করতে পারে তা যেন বিশ্বাস হচ্ছে না মিতার। নিজের অজান্তেই মিতার চোখ চলে যায় আফরিনের ছবিটার দিকে। পরক্ষণেই মন খারাপ হয়ে যায় মিতার। “তুই ও কি এই অরিয়নের প্রেমে পড়েছিলি?” মনে মনে ভাবে মিতা।
অরিয়ন চোখ তুলে মিতার দিকে তাকাতেই দেখতে পায় মিতা তাকিয়ে আছে আফরিনের ছবিটার দিকে। নিজেও তাকায় আফরিনের ছবিটার দিকে।

“এই ছবিটা ও তুলতে চাইছিলো না, আমি জোর করে তুলেছিলাম” হুট করে বলে উঠে অরিয়ন।
অরিয়নের কথা শুনে অরিয়নের দিকে তাকায় মিতা। ক্ষণিকের মধ্যে যেন নিজের সব শেষ হয়ে গেলো মিতার। আফরিনের ছবিটার দিকে তাকিয়ে আছে অরিয়ন। চোখেমুখে ফুঁটে উঠেছে ভালোবাসা আর কোমলতা। মিতার জন্য যা কখনো দেখেনি মিতা। ভালো নাই বাসুক, তাই বলে কি একটু স্নেহ আর মায়ার দৃষ্টিতেও তাকাতে পারেনা অরিয়ন? ইদানিং কেনো এতো রুড ব্যবহার করে অরিয়ন তা যেন মাথায় ঢুকছে না মিতা।
“বোকামেয়ে, ও তোকে বিয়ে করতে চায়নি, তোর সাথে থাকতে চায়নি,তাহলে তোর সাথে কেনো ভালো ব্যবহার করবে?” মনে মনে ভাবতে ভাবতেই চোখ ভিজে আসে মিতার। নিজের পা সরিয়ে নেয় মিতা। অরিয়নের হাত থেকে মিতার পা সরে যেতেই মিতার দিকে তাকায় অরিয়ন। মিতা অন্যপাশ হয়ে শুয়ে আছে। নিজেকে যতোটা পারছে গুটি মেরে রেখেছে যেন অরিয়নের সাথে টাচ না হয়। মিতার মুখটা দেখতে পেলো না অরিয়ন। মিতার শরীরে চাদর টেনে দেয় অরিয়ন। নিজে চলে যায় মিতার প্রয়োজনীয় বাকি জিনিসপত্র আনতে।

–পরী? পরী?
ঘুম ঘুম চোখে কারো ডাক শুনতেই ঘুম ভাঙ্গে মিতার।
মিটমিট করে চোখ খুলতেই সামনে দেখতে পায় অরিয়নকে। সামনে বসে থাকা অরিয়নের চুল ভেজা, মুখে ফুটে আছে মিষ্টি এক হাসি। পরণের কাপড় ও পরিবর্তন করা। উঠে বসতে নিতেই অরিয়ন এগিয়ে গিয়ে মিতাকে ধরে বসতে সাহায্য করে। জানালার দিকে তাকাতেই দেখতে পায় সকাল হয়ে গেছে। গতকাল ঘুমানোর পর সারারাতে আর ঘুম ভাঙ্গেনি মিতার।
–সকাল ৯ টা বাজে। সকালের ঔষধ খাবি কখন? ঔষধ না খেলে কি ভালো হবি?
মিতার শরীর থেকে চাদর সরিয়ে মিতার পায়ে হাত দেয় অরিয়ন।
–ব্যাথা করছে আর?
চিন্তিত সুরে পায়ে টিপ দিয়ে জিজ্ঞেস করে অরিয়ন।

–অল্প অল্প।
অবাক হয়ে জবাব দেয় মিতা। হঠাৎ করে অরিয়নের এই রূপ যেন হজম করতে পারছে না মিতা।
–আবার মলম মালিশ করে দিলেই হবে। দেখবি আর ব্যাথা করবে না।
বলে অরিয়ন।
–যা,তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নে। খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে। খাবার খেয়ে ঔষধ খেতে হবে।
আবারও বলে অরিয়ন।
অরিয়নের কথা শুনে কিছুক্ষণ অরিয়নের দিকে তাকিয়ে থাকে মিতা। দু জন দু জনের দিকে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ। মিতা চোখ সরিয়ে নিতেই অরিয়ন ও চোখ সরিয়ে নেয় অন্যদিকে। ধীরে ধীরে বিছানা থেকে উঠে ওয়াশরুমে যায় মিতা।

অরিয়ন খাটের উপর নিজের হাতে খাবারের ট্রে নিয়ে অপেক্ষা করছে মিতার। মিতাকে বের হতে দেখেই আলতো করে এক হাসি দেয় অরিয়ন। মিতাও আলতো এক হাসি ফিরিয়ে দেয়। অরিয়নের পাশে বসে ট্রে হাতে নিতে চাইলেই ট্রে সরিয়ে নেয় অরিয়ন।
–কি?
বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করে মিতা।
অরিয়ন কোনো উত্তর না দিয়ে ট্রে বিছানায় রেখে আবারও মিতার পা ধরে খাটের উপর তুলে দেয়। এরপর ট্রে হাতে আরও এগিয়ে যায় মিতার দিকে।

চামচ নিয়ে স্যুপ তুলে ধরে মিতার মুখের কাছে। মিতার যেন বিশ্বাস হচ্ছে না অরিয়ন এভাবে কেয়ার করছে মিতার। ” তবে কি তুমিও কিছু ফিল করছো আমার জন্য?” মনে মনে ভাবে মিতা। কথাটা ভাবতেই যেন মনে মনে খুশি হলো মিতা। অরিয়ন মনোযোগ দিয়ে মিতাকে স্যুপ খায়িয়ে দিচ্ছে। স্যুপ খেতে খেতেই মিতার চোখ যায় আফরিনের ছবিটার দিকে। “আফরিন” যার জায়গা কোনোদিন নিতে পারবে না মিতা। “আচ্ছা যদি কোনোদিন আফরিন ফিরে আসে তাহলে?” কথাটা ভাবতেই যেন দম বন্ধ হয়ে আসছে মিতার।
“ধোকা দেওয়ার পরও যদি অরিয়নকে আফরিনকে ভালোবাসতে পারে,তাহলে কি আফরিন ফিরে আসলেও মেনে নিবে অরিয়ন? আমাদের বিয়ে হয়েছে তাও?” কথাগুলো ভাবতেই যেন খাবার আর গলা দিয়ে নামছে না মিতার। বমি, বমি লাগছে মিতার।
–কি হয়েছে?
চামচ হাতে অপেক্ষা করতে থাকা অরিয়ন প্রশ্ন করে মিতাকে। অরিয়নের ডাক শুনতেই ধ্যান কাটে মিতার। স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে অরিয়নের দিকে তাকায়।
–কিছুনা।

আলতো এক হাসি দেওয়ার চেষ্টা করতে করতে বলে মিতা।
–ডাক্তার বলেছে আর ২/৩ দিন রেস্ট করলেই আবার কলেজ যেতে পারবি তুই।
ঔষধ খুলে মিতার হাতে দিয়ে বলে অরিয়ন।
–আর আমার রুম?
প্রশ্ন করে মিতা।
মিতার কথা শুনে স্থির হয়ে রইল অরিয়ন।
–আমার রুমে কখন থেকে ফিরতে প…
–এখানে কি সমস্যা?
মিতার কথা শেষ হওয়ার আগেই বলে অরিয়ন।
–মানে?
–মানে এখানে থাকলে কি সমস্যা? ঐ রুমে কি আছে? ঐ রুমে এমন কি আছে যা তুই এখানে পাচ্ছিস না বা করতে পারছিস না?
সন্দেহের নজরে মিতার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে অরিয়ন।

–তেমন কোনো কারণ ন…
–কারণটা কি আরিয়ান?
দাঁতে দাঁত চেপে প্রশ্ন করে অরিয়ন।
–কিহ?
আরিয়ান কোথা থেকে আসলো এই কথায় বুঝতে না পেরে অবাক হয়ে প্রশ্ন করে মিতা।
–আরিয়ানের রুম তোর রুমের কাছাকাছি সেটাই কি কারণ?
মিতার দিকে তাকিয়ে রাগান্বিত কন্ঠে বলে অরিয়ন।
–না, তেমন কিছুই না।
সাথে সাথে জবাব দেয় মিতা।
মিতার উত্তর শুনে কিছুটা রাগ কমে অরিয়নের।
–তাহলে এখানে থাকতে চাচ্ছিস না কেনো?
মিতার চুল কানের পেছনে গুজে দিতে দিতে বলে অরিয়ন।
–এমনিতেই।
জবাব দেয় মিতা।

মিতা কিভাবে অরিয়নকে বোঝাবে যে এই রুমে দম বন্ধ হয়ে আসছে মিতার। প্রতি মিনিটে মনে হচ্ছে অন্য কারো জায়গায় নিজের সংসার সাজানোর চেষ্টা করছে মিতা। এই রুমের সব কিছু যেন বার বার মনে করিয়ে দিচ্ছে ” এই রুম আফরিনের, অরিয়নের মন আফরিনের,অরিয়ন আফরিনের”।
–এখানেই থাকতে হবে তোকে।
অরিয়নের কথা শুনে ঘোর কাটে মিতার। মিতার কাছাকাছি আসা অরিয়ন এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মিতার দিকে। কানের পাশে থাকা হাত নিজে নিজেই চলে আসে মিতার ঠোঁটের কাছে। হাতের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে মিতার নিচের ঠোঁট স্পর্শ করে অরিয়ন। নিজের ঠোঁট মিতার ঠোঁটের কাছাকাছি নিতেই মুখ সরিয়ে নেয় মিতা।
অরিয়ন দ্রুত সরে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ায়।
–আমি অফিস যাচ্ছি, টাইম মতো খাবার আর ঔষধ খেয়ে নিস।
মিতার দিকে না তাকিয়েই বলে অরিয়ন।
–হুম।
সায় মিলায় মিতা।
অরিয়ন আর কোনো কথা না বলে একবার আড় চোখে মিতার দিকে তাকিয়েই রুম থেকে বেরিয়ে যায়।

বিকাল ৪ টা।
রুমে বসে মোবাইকে গেমস খেলছে মিতা। একা একা যেন নিজের সময় ই কাটে না মিতার। যদিও একটু আগে বন্ধুদের সবার সাথে ভিডিও কলে কথা বলেছে মিতা। আগামীকাল সবাই আসবে মিতাকে দেখতে। মায়া চৌধুরী দুপুরে মিতাকে খাবার আর ঔষধ খায়িয়ে গেছে। একটা মানুষ আর কতক্ষণ ঘুমাতে পারবে তা মিতা জানেনা। এতো ঘুমাতে ঘুমাতে এখন আর ঘুমের ছিটেফোঁটাও নেই মিতার চোখে। তাই তো সময় কাটাতে গেম খেলছে মিতা।
–মিতা?
দরজায় কড়া নাড়ার সাথে সাথে শায়লার কণ্ঠ শুনতে পায় মিতা।
–জি শায়লা আপু?
বিছানা থেকেই চেচিয়ে বলে শায়লা।
–ঘুমিয়ে না থাকলে রুমে আসছি।
অনুমতি চেয়ে বলে শায়লা।
–ঘুমাইনি আপু, আসতে পারো।
জবাব দেয় মিতা।
মিতা জবাব দিতেই দরজা খুলে ভিতরে আসে শায়লা। দরজার সামনে দাঁড়ায় শায়লা।

–ওড়না নিয়ে নেও, দু জন লোক আসছে রুমে।
–ওকে।
শায়লার কথা শুনে মোবাইল রেখে গায়ে ওড়না নেয় মিতা। আবারও মোবাইল নিয়ে গেম খেলতে ব্যস্ত হয়ে পরে।
–আপনারা আসতে পারেন।
শায়লা বলে।
একটু পরেই দুজন লোক রুমে প্রবেশ করে। মিতা সেদিকে নজর না দিয়ে গেম খেলতে ব্যস্ত হয়ে পরে। গেম খেলতে খেলতে বোর হয়ে যাচ্ছে মিতা, মোবাইল রাখতে নিলেই বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে থাকে লোক দুটোর দিকে। তাড়াতাড়ি করে বিছানা থেকে নেমে আসে মিতা। দু কদমে চলে যায় শায়লার কাছে।
–কি করছেন আপনারা?
হঠাৎ করে চেচিয়ে উঠাতে লাফিয়ে উঠে শায়লা।

পারমিতা পর্ব ২২

–শায়লা আপু, তুমি কি পাগল হয়ে গেছো? অরিয়ন ভাইয়া জানতে পারলে খুব রাগ করবে। আফরিন আপুর ছবিতে হাত দেওয়ার সাহস কোথা থেকে পেলে তোমরা!
রাগ করে বলে মিতা।
–অরিয়ন স্যারের নির্দেশ।
জবাব দেয় শায়লা।

পারমিতা পর্ব ২৪