পারমিতা পর্ব ৪১
Nabila Ahmed
চৌধুরী মেনশন এর সামনে এসে দাঁড়ায় কালো রঙের গাড়িটা। মেইন দরজা আজ অন্যদিনের মতো বন্ধ নয়, মনে হচ্ছে কারো অপেক্ষায় খোলা রেখেছে। বিবর্ণ চেহারার মিতা গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। কাঁধের ব্যাগটা গাড়ির সিটেই পড়ে আছে। বাড়িতে ঢুকতেই দু চারটা কাজের লোক ছাড়া আর কাউকে দেখতে পায় না মিতা। ডাইনিং টেবিলের চেয়ার টেনে বসে মোবাইল দেখছে শায়লা।
–শায়লা আপু?
ধীরে ডাক দেয় মিতা।
হঠাৎ করে মিতার ডাক শুনে চমকে উঠে শায়লা। নিজের বুকের উপর থুথু দেয় ভয় কমানোর উদ্দেশ্যে।
–হ্যাঁ, মিতা। বল।
তাড়াতাড়ি করে মিতার সামনে এসে বলে শায়লা।
–সবাই কোথায়?
কাউকে দেখতে না পেয়ে প্রশ্ন করে মিতা।
–উপরে, অরিয়ন স্যারের রুমে।
জবাব দেয় শায়লা।
মিতা আর কোনো কথা বাড়ালো না। সিড়ি বেয়ে উঠতে শুরু করলো। অরিয়নের রুমের দরজা আগে থেকেই খোলা। উঁকি দিতেই দেখতে পায় সকলেই রুমে বসে আছে। অরিয়ন বিছানায় অন্যদিকে মুখ করে শুয়ে আছে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
–মা।
মায়া চৌধুরীকে ডাক দিয়ে রুমের ভেতরে প্রবেশ করে মিতা।
সকলের দৃষ্টি যায় মিতার দিকে। বিছনায় শুয়ে থাকা অরিয়ন যেন মিতার কন্ঠ শুনে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো, তাও মুখ ঘুরিয়ে মিতার দিকে তাকালো না।
–এসেছিস তুই?
মিতার দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলে মায়া চৌধুরী।
অরিয়নের পাশে বসে থাকা আনিকা চৌধুরীর মুখটা রাগে লাল হয়ে আছে। মিতার দিকে আড় চোখে তাকায় একটু পর পর।
–কী হয়েছে?
প্রশ্ন করে মিতা।
–অরিয়ন সকাল থেকে খাবার খাচ্ছে না। ঔষধ ও খায় নি।
জবাব দেয় মায়া চৌধুরী।
–কেন?
প্রশ্ন করে মিতা।
মায়া চৌধুরী এর কোনো জবাব দিলো না। কিছু বলতে যাবে তখনি পেছন থেকে মায়া চৌধুরীর কাঁধে হাত রাখে আফরিন। চোখের ইশারায় কিছু বোঝায় মায়া চৌধুরীকে।
মায়া চৌধুরী নিজের জায়গা থেকে সরে গিয়ে দাঁড়ায় আনিকা চৌধুরীর সামনে। নিজের সামনে মায়া চৌধুরীকে দাঁড়াতে দেখে ভ্রু কুঁচকে কিছু বোঝায় চেষ্টা করে আনিকা চৌধুরী ।
-ও মাই গড।
দাঁতে দাঁত চেপে কথাটা বলেই উঠে দাঁড়ায় আনিকা চৌধুরী। রুম থেকে বেরিয়ে যায়। আনিকা চৌধুরীর পেছন পেছন মায়া চৌধুরী ও বেরিয়ে যায়।
আফরিন মিতার দিকে তাকিয়ে আলতো করে এক হাসি দিলো। মিতাও বিনিময়ে হাসি ফিরিয়ে দেয়। মাথা ঘুরিয়ে নার্সের দিকে তাকায় আফরিন।
–ট্রে টা এখানে রেখে দিন।
নার্সকে বলে আফরিন।
আফরিনের কথা শুনে নার্স টি টেবিলের উপর ট্রে রেখে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। নার্সের পেছন পেছন আফরিনও বেরিয়ে আসে।
পুরো রুমে এখন শুধু মাত্র অরিয়ন আর মিতা। দরজা লাগানোর শব্দ শুনতেই মাথা ঘুরিয়ে মিতার দিকে তাকায় অরিয়ন। এক দৃষ্টিতে মিতার দিকে তাকিয়ে রইল অরিয়ন। মিতাকে দেখে রাগ হচ্ছে, আবার ইচ্ছে করছে দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরতে। এমন কেন হয়ে গেল অরিয়ন বুঝতে পারছে না।
বিছানায় শুয়ে থাকা অরিয়নের চেহারা শুকিয়ে গেছে একদম। চোখমুখ থেকে উজ্জ্বলতা সরে গেছে। এই মানুষটা কী করেনি মিতার জন্য? আর বিনিময়ে মিতা তাকে শুধু দূরে সরিয়েই দিচ্ছে। আচ্ছা দূরে সরিয়ে দিয়ে কী সব পরিবর্তন করা যায়?
ধীর পায়ে হেটে গিয়ে বিছানার পাশে বসে মিতা। অনেক কিছু বলতে আর জিজ্ঞেস করতে মন চাচ্ছে মিতার। একই সাথে চুপ হয়ে যেতে ইচ্ছে করছে। কবির রহমান যা বললো তা কি সত্যি? সত্যি কী আফরিনের হারিয়ে যাওয়াটা সাজানো ছিলো? সত্যি কী অরিয়নের সাথে মিতার বিয়েটা প্লান করা ছিলো? সব কিছু কী অরিয়ন জানতো? কথাগুলো মনের মধ্যে ঘুরঘুর করছে মিতার।
মিতা বিছানায় বসতেই চোখে চোখ পরে অরিয়নের সাথে। অরিয়ন ও চোখ সরাচ্ছে না এক মিনিটের জন্যও। শোয়া থেকে উঠে বসে অরিয়ন। নিমিষেই নিজের মাথা রাখে মিতার কাঁধে। ডান হাত দিয়ে মিতার কোমর শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। যেন ছেড়ে দিলেই পালিয়ে যাবে মিতা। হঠাৎ করে এভাবে মিতার কাছাকাছি চলে আসাতে অবাক হয় মিতা, হয়তো কিছুটা অপ্রস্তুতও। চোখের কোণে পানি জমতে শুরু করেছে মিতার। ইচ্ছা করছে দু হাত দিয়ে অরিয়নকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে। কিন্তু মিতা হাত বাড়ালো না। শক্ত করে হাত মুঠ করে রাখলো।
–তুই বলেছিলি, তুই আমাকে ভালোবাসিস।
মিতার কাঁধে মাথা রাখা অবস্থায় বলে উঠে অরিয়ন।
–তুই বলেছিলি, তুই আমাকে কখনো ছেড়ে যাবি না।
আবারও বলে অরিয়ন।
–খাবার খেয়ে ঔষধগুলো খেয়ে নেও।
নিজেকে সামলে নিয়ে শান্ত গলায় বলার চেষ্টা করে মিতা।
–কিন্তু তুই আমাকে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছিস, আমাকে প্রতিনিয়ত ইগনোর করে যাচ্ছিস।
বলে অরিয়ন। অরিয়নের কথায় যেন পাহাড় সমান অভিমান প্রকাশ পাচ্ছে।
–ঔষধ না খেলে শরীর খা…
–আহ..
মিতার কথা শেষ হওয়ার আগেই মিতার কাঁধে কামড় দেয় অরিয়ন। ব্যাথায় শব্দ করে উঠে মিতা। অরিয়ন নিজের মনে কথা বলার চেষ্টা করছে আর মিতা? মিতা কোনো ভাবে কথা ঘুরানোর চেষ্টা করছে তা বুঝতে পারতেই রাগ উঠে যায় অরিয়নের। ফলে কামড় বসিয়ে দেয় মিতার কাঁধে।
অরিয়নের কামড়ের হিংস্রতা যেন বেড়েই যাচ্ছে। মনে হচ্ছে সব রাগগুলো মিতার উপর ছাড়ছে অরিয়ন। ব্যাথা সহ্য করতে না পেরে নিজের দু হাত দিয়ে অরিয়নের দু বাহু ধরে পেছনের দিকে ঠেলতে থাকে মিতা।
–অরিয়ন ভাইয়া, ব্যাথা পাচ্ছি আমি।
কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলে মিতা।
মিতার ভাইয়া ডাক শুনে যেন আরও রাগ উঠে গেলো অরিয়নের। একে তো অরিয়ন জড়িয়ে ধরলেও মিতা অরিয়নকে জড়িয়ে ধরেনি, কথাগুলো ইগনোর করছিলো তার উপর ভাইয়া বলা শুরু করেছে আবার।
–তোকে কতবার বলেছি ভাইয়া না ডাকতে।
মিতার কাঁধ থেকে মাথা সরিয়ে মিতার দিকে কঠোর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে অরিয়ন।
মিতার দৃষ্টি অরিয়নের দিকে থাকলেও মিতা নিজের হাত দিয়ে কাঁধে কামড়ের জায়গা ঘোসতে ব্যস্ত, তাতে যদি ব্যাথাটা একটু কমে।
–তুমি খাবার খেয়ে ঔষধ খেয়ে নেও।
অরিয়নের প্রশ্ন ইগনোর করে আবারও বলে মিতা।
–তুই কথা বলবি না আমার সাথে?
দাঁতে দাঁত চেপে ধরে বলে অরিয়ন।
–আগে খাবার খাও,এরপর।
বলে মিতা।
–আন।
রাগান্বিত অরিয়ন বলে।
মিতা বিছানা থেকে উঠে গিয়ে টি টেবিল থেকে খাবারের ট্রে হাতে করে নিয়ে আসে। বেডের উপর ট্রে রাখতেই স্যুপের বাটি হাতে তুলে নেয় অরিয়ন। চামচ দিয়ে স্যুপ নিয়েই মিতার মুখের কাছে ধরে আগে। মিতা অরিয়নের দিকে তাকিয়ে রইল।
–আমি খেয়ে এসেছি বন্ধুদের সাথে। তুমি খাও।
জবাব দেয় মিতা।
–খাবি নাকি ছুড়ে সব ফেলে দিবো?
গম্ভীর কণ্ঠে বলে অরিয়ন।
মিতা আর কিছু না বলে স্যুপ মুখে নেয়। পরের বার স্যুপ মুখে দেয় অরিয়ন। যত দ্রুত সম্ভব স্যুপ শেষ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে অরিয়ন। মাঝে মাঝেই স্যুপ মিতার মুখে তুলে দিচ্ছে আর মিতাও কোনো ঝামেলা না করার জন্য খেয়ে নিচ্ছে। স্যুপের বাটি ট্রে তে রাখতেই মিতা ঔষধ হাতে তুলে দেয় অরিয়নের। অরিয়নও চুপচাপ ঔষধ খেয়ে নেয়।
অরিয়নের ঔষধ খাওয়া শেষ হলে মিতা ট্রে নিয়ে আবারও টি টেবিলের উপর রেখে আসে। ফিরে এসে আবারও বসে অরিয়নের সামনে। অরিয়নের নজর গিয়ে আটকায় মিতার গলার কাছে কাঁধের অংশে। অরিয়নের দাঁতের ছাপ এখনো বসে আছে। নিজের অজান্তেই অরিয়নের হাত গিয়ে স্পর্শ করে কামড় দেওয়া জায়গা। আলতো করে এগিয়ে যায় মিতার দিকে। অরিয়নের এগিয়ে আসা বুঝতে পেরেই সরে যেতে নেয় মিতা কিন্তু তার আগেই নিজের হাত দিয়ে শক্ত করে মিতাকে ধরে বসিয়ে রাখে অরিয়ন। আলতো করে চুমু দেয় কামড় দেওয়া জায়গায়। অরিয়নের ঠোঁট কাঁধে স্পর্শ করতেই চোখ বন্ধ করে নেয় মিতা। মিতার হার্টবিট যেন বেড়ে যাচ্ছে৷ অন্যদিকে, অরিয়ন একের পর এক চুমু দিয়েই যাচ্ছে কাঁদে। একটু পরেই ঠোঁট গিয়ে স্পর্শ করে মিতার গলাকে।
অরিয়ন নিজের হাত দিয়ে মিতার কোমর আমারও জড়িয়ে ধরে৷ যতোটা সম্ভব টেনে নিজের আরও কাছাকাছি আনার চেষ্টা করছে। মিতার শরীরের সাথে অরিয়নের শরীর স্পর্শ হতে শুরু করেছে। অরিয়নে ঠোঁট থেকে কোমলতা যেন ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। প্রতি মিনিটে আরও ডেস্পারেট হয়ে পড়ছে অরিয়ন।
–তুমি অসুস্থ।
অরিয়নের বাহু ধরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে করতে বলে মিতা। অরিয়নের উদ্দেশ্য কী তা ভালোই বুঝতে পারছে মিতা।
–আই নো, আই নো, আই নো।
মিতার গলায় বড় বড় শ্বাস নিয়ে নিজেকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করতে করতে বলে অরিয়ন।
–কী করেছিস তুই আমার সাথে? কেন তোকে বার বার কাছে পেতে ইচ্ছে করে? কেন তোর দূরে যাওয়া আমাকে এতো যন্ত্রণা দেয়? কেন সবার অবহেলা সহ্য করতে পারলেও তোর অবহেলা সহ্য করতে পারছি না আমি? কেন তুই দূরে চলে যেতে চাইলেই তোকে কষ্ট দিতে মন চায় আমার? কেন?
মিতার নাকের সাথে নিজের নাক ঘষতে ঘষতে বলে অরিয়ন।
–কেন আমার সামনে আমার ৬ বছরের ভালোবাসা আফরিন থাকতেও ওর দিকে তাকাতে পারিনা আমি? কেন আমার নজর সব জায়গায় শুধু তোকেই খুজে?
মিতার গালে আলতো করে চুমু দিতে দিতে বলে অরিয়ন।
অরিয়নের কথা শুনে বুক ফেটে কান্না আসছে মিতার। এতো কথার কোনোই মূল্য নেই। কারণ অরিয়নের মন এখনো আফরিনের। মিতা তো এই সম্পর্ককে একটা সুযোগ দিতে চেয়েছিলো এটা ভেবে যে, একদিন হয়তো অরিয়নের মনটাও মিতার হয়ে যাবে। কিন্তু এখন? এখন সেই আশাটুকুও মিতার মধ্যে নেই। অরিয়নের এই অবসেশন কেটে গেলে এতো পাগলামোও কেটে যাবে তখন? তখন কী নিয়ে বাঁচবে মিতা? অরিয়নের চোখে অন্য কারো জন্য ভালোবাসা দেখেও ওর সাথে সংসার যে মিতা কখনো করতে পারবে না। কথাগুলো ভাবতে ভাবতেই চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়তে থাকে মিতার।
–আফরিন?
আফরিনের দিকে তাকিয়ে বলে মায়া চৌধুরী।
–জ্বি মা?
বলে আফরিন।
–আমি….আমি আর তোর…তোর বাবা ভাবছিলাম।
কথাগুলো একটু বলে থামে মায়া চৌধুরী। মনে হচ্ছে এখনো দ্বিধায় আছে পরবর্তী কথাটা বলবে কী না তা নিয়ে।
–বলে ফেলো মা।
মায়া চৌধুরীর দ্বিধাবোধ বুঝতে পেরে বলে আফরিন।
–আমরা ভাবছিলাম তুই ও যদি মুভ অন করিস এই আর কি।
বলে ফেলে মায়া চৌধুরী।
–কোনো তাড়াহুড়ো নেই। সময় নিয়ে আস্তেধীরে। একটা ভালো ছেলের খোজ পেয়েছিলো তোর বাবা।
আবারও বলে মায়া চৌধুরী। চোখে মুখে একটু ভয় কাজ করছে, আফরিন যদি ভুল বুঝে তাই।
নিজেদের রুমে কথা বলছে আফরিন আর মায়া চৌধুরী। অরিয়নের রুম থেকে বেরিয়েই আফরিনের সাথে কথা আছে বলে আফরিনকে নিয়ে গেস্ট রুমে আসে মায়া চৌধুরী।
মায়া চৌধুরীর কথা শুনে প্রথমে অবাক হয় আফরিন। মুভ অন? কী থেকে মুভ অন করবে আফরিন? আফনান থেকে? নাকি নিজের জঘন্য অতীত থেকে? কোনোদিন আফনানকে ভুলে গেলেও নিজের অতীত যে কখনো ভুলতে পারবে না আফরিন। এই অতীত যেনেও কী কোনো ছেলে কাউকে বিয়ে করতে রাজী হবে? হবে না। আর যে হবে সে শুধু মাত্রই আফরিনের বাবার টাকার জন্য হবে। বিয়ে করতে আমরা যে সব সময় পবিত্র মানুষটাই খুজি। আর আফরিন যে পবিত্র নেই তা আফরিন ভালোই জানে।
–আমি এখনো এসবের জন্য রেডি না,মা।
জবাব দেয় আফরিন।
–মানুষ রেডি হয় না,আফরিন। চেষ্টা করতে হয়। অতীত আঁকড়ে ধরলে কষ্ট ছাড়া কিছুই পাবি না। অরিয়ন এখন অনেকটা পথ এগিয়ে গেছে। যেখান থেকে ওর ফিরে আসা অসম্ভব।
মাথা নিচু করে বলে মায়া চৌধুরী।
–আমি আফনানের আশা করছি না, মা। আফনান আমার কাছে ফিরে আসতে চাইলেও আমি আফনানকে মেনে নিতাম না। ও আমার ছোট বোনের স্বামী, মা। কীভাবে ওকে মেনে নিবো? মিতার সাথে আমি কোনোদিন চোখাচোখি করতে পারবো না। মিতার চোখে অরিয়নের জন্য যেই সম্মান দেখতে পারতাম তার সাথে তো এখন অরিয়নের জন্য অফুরন্ত ভালোবাসাও দেখতে পাই।
কথাগুলো বলতেই চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে আফরিনের।
–বড় বোন হিসেবে ওর থেকে সেই সুখ কীভাবে কেড়ে নিবো আমি, মা? কীভাবে?
কথাগুলো বলতেই আফরিনকে জড়িয়ে ধরে মায়া চৌধুরী। নিজেও কান্না করতে থাকে।
–আই এম সো প্রাউড অফ ইউ, আফরিন। সো সো মাচ।
আফরিনের পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে মায়া চৌধুরী।
পারমিতা পর্ব ৪০
মিতার চোখের পানি অরিয়নের ঠোঁট স্পর্শ করতেই অরিয়ন চোখ খুলে তাকায় মিতার দিকে। মিতার চোখ এখনও বন্ধ। মিতাকে এই অবস্থায় দেখে অরিয়নের অস্থিরতা বেড়ে যাচ্ছে। মিতাকে তো এভাবে দেখতে চায় না অরিয়ন। নিজের ঠোঁট দিয়ে চুমু দিয়ে গড়িয়ে পড়া পানি মুখে নেয় অরিয়ন। নিজের ডান হাত দিয়ে মিতার মাথায় পিছনে হাত বুলিয়ে দিয়ে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করে।
–আমাকে এভাবে দূরে সরিয়ে দিস না। তুই জানিস না আমি কী করে বসবো তাহলে,পরী। আমি নিজেও জানিনা আমি কী করবো, শুধু জানি তোকে আমার চা….
–আই ওয়ান্ট ডিভোর্স।
চোখ বন্ধ অবস্থায় বলে মিতা।