পারমিতা পর্ব ৪৩
Nabila Ahmed
–তবে তোর মা বাবাকে হারিয়েছিস সে জন্য নয়, আমার মতো একজনের সাথে তোর বিয়ে হয়েছে তাই।
কথাটা বলেই দু কদমে মিতার সামনে গিয়ে দাঁড়ায় অরিয়ন।
মিতা ভ্রু কুঁচকে অরিয়নের দিকে তাকিয়ে রইল। অরিয়নের কথার অর্থ খোজার চেষ্টা করছে।
–কেন এমনটা মনে হলো তোমার?
অরিয়নকে পাশ কাটিয়ে সোফায় গিয়ে বসতে বসতে বলে মিতা।
–কারণ তুই চাইলেও আমি তোকে যেতে দিবো না।
মিতার দিকে ঘুরে বলে অরিয়ন।
–চাচ্চু কী বললো?
প্রশ্ন করে মিতা।
–তুই ডিভোর্স এর কথা জানিয়েছিস সেটা।
বলে অরিয়ন।
–আর তুমি কী বললে?
–বললাম আমি তোকে ছাড়বো না। যাই হয়ে যাক।
–কারণ কী?
সোফা থেকে উঠে অরিয়নের দিকে এগিয়ে গিয়ে প্রশ্ন করে মিতা।
–কারণ তুই আমার ওয়াইফ। তুই আমার। কারণ তুই বলেছিস তুই আমাকে ভালোবাসিস।
বিচলিত ভাবে বলতে থাকে অরিয়ন।
অরিয়নের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মিতা নিজের হাত বাড়িয়ে দিয়ে অরিয়নের বুকের বাম পাশে রাখে।
–তোমার হার্টবিট বেড়ে গেছে।
অরিয়নের দিকে তাকিয়ে চোখে চোখ রেখে বলে মিতা।
অরিয়ন নিজের হাত বাড়িয়ে মিতার হাত স্পর্শ করে। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মিতার দিকে।
–তোর জন্য।
জবাব দেয় অরিয়ন।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
রাগান্বিত হাবিব চৌধুরী দ্রুত হেটে সরাসরি চলে যান নিজের স্টাডি রুমে। ড্রয়ার থেকে ফোন বের করেই কাউকে কল দেয়।
–স্টাডি রুমে আয়।
বলে হাবিব চৌধুরী।
কল কেটে কারও জন্য অপেক্ষা করতে থাকে হাবিব চৌধুরী। চোখে মুখে রাগ প্রকাশ পাচ্ছে। প্রতিনিয়ত ধৈর্য্য হারা হয়ে যাচ্ছেন। একটু পরেউ স্টাডি রুমের দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে ওয়াহিদ চৌধুরী।
–কী হয়েছে ভাইয়া?
চিন্তিত ওয়াহিদ চৌধুরী বলে। টেবিলের সামনে রাখা চেয়ার টেনে বসে ওয়াহিদ চৌধুরী।
–কী বললো ও?
প্রশ্ন করে হাবিব চৌধুরী।
–মিতা?
বলে ওয়াহিদ চৌধুরী।
–হ্যাঁ।
–বললো ডিভোর্স চায়।
বলে ওয়াহিদ চৌধুরী।
–আর তুই কী বললি?
রাগান্বিত হাবিব চৌধুরী প্রশ্ন করে।
ওয়াহিদ চৌধুরী কোনো উত্তর দিলো না। মাথা নিচু করে চুপ করে রইল।
–কি হলো বল, কি বললি তুই?
চেঁচিয়ে উঠে হাবিব চৌধুরী।
–তাই যা একজন বাবার বলার উচিৎ।
জবাব দেয় ওয়াহিদ চৌধুরী।
–আর ইউ ফা*কিং সিরিয়াস ওয়াহিদ?
চেয়ার থেকে উঠে বলে হাবিব চৌধুরী।
–সব কিছু জানার পরও তুই এই কথা বলছিস? তুই কী চাস আমাদের প্ল্যানটা ভেস্তে যাক?
ওয়াহিদ চৌধুরীর দিকে এগিয়ে গিয়ে বলে হাবিব চৌধুরী।
–ওর জন্য মায়া হচ্ছিলো ভাইয়া।
নিম্নস্বরে বলে ওয়াহিদ চৌধুরী।
–এই মায়া কোনো কাজেই আসবে না। তোর মতো বেকুব আমি আর দেখিনি।এই জন্য জীবনে কোনো কিছু করতে পারিস নি তুই।
হাবিব চৌধুরীর কথা শুনতেই অবাক হয় ওয়াহিদ চৌধুরী। নিজের ভাই থেকে এভাবে কথা শুনবে ভাবতে পারেনি কখনো।
–কাল সকালেই সবার প্রথমে ওর সাথে কথা বলবি। জানাবি ওর মাথা থেকে এই ভূত সরাতে।
কথাটা বলে একটু বড় করে শ্বাস ফেলে হাবিব চৌধুরী।
–আর তা না হলে ওকে ম*রতে হবে।
কঠোর ভাবে বলে হাবিব চৌধুরী।
ওয়াহিদ চৌধুরী কিছু বললো না। মাথা নিচু করে নিচের দিকে তাকিয়ে রইল।
–এখন যেতে পারিস।
বলে হাবিব চৌধুরী।
উঠে দাঁড়ায় ওয়াহিদ চৌধুরী। চলে যেতে নেয়।
–দাঁড়া।
বলে হাবিব চৌধুরী।
হাবিব চৌধুরীর কথা শুনে ফিরে তাকায় ওয়াহিদ চৌধুরী।
–যা বলেছি তা যদি নিজে না পারিস, তাহলে মায়াকে দিয়ে করা। দু চারটা মায়ার কথা বললে মায়া গলে যাবে। বাকিটা ও করে দিবে।
বলে হাবিব চৌধুরী।
হাবিব চৌধুরীর কথা শেষ হতেই রুম থেকে বেরিয়ে যায় ওয়াহিদ চৌধুরী।
–তোর জন্য।
জবাব দেয় অরিয়ন।
–আমার জন্য?
প্রশ্ন করে মিতা।
মাথা নাড়িয়ে জবাব দেয় অরিয়ন।
–আফরিন আপুর প্রতি তোমার অনুভূতির কী হলো?
তাকিয়ে থাকা অবস্থায় প্রশ্ন করে মিতা।
–জানিনা।
মিতার চোখে চোখ রেখে সাথে সাথেই জবাব দেয় অরিয়ন।
–ভালোবাসো না আপুকে?
কথাটা বলেই হাত সরিয়ে নিতে গেলেই অরিয়ন নিজের হাত দিয়ে শক্ত করে মিতার হাত ধরে রাখে।
— না।
জবাব দেয় অরিয়ন।
অরিয়নের উত্তর শুনে অবাক হয় মিতা। হাত আবারও সরিয়ে নিতে চাইলেই অরিয়ন শক্ত করে হাত ধরে রাখে। মিতাকে টেনে নিজের আরও কাছে নিয়ে আসে। নিজের মাথা নিচু করে মিতার মুখ বরাবর এনে তাকিয়ে থাকে মিতার দিকে।
–তোর কপালটা খারাপ কেন জানিস?
হাত ধরা অবস্থায় বলে অরিয়ন।
মিতা কিছু বললো না। অরিয়নের দিকে তাকিয়ে রইল।
–কারণ আমার মনে হচ্ছে আমি তোর জন্য কিছু ফিল করছি। ভয়ানক কিছু। যেই অনুভূতি আমাকে বার বার হিংস্র করে দেয়। তোকে আমার কাছে আটকে রাখার জন্য। তোকে আমার করে রাখার জন্য। তোকে প্রতিনিয়ত গ্রাস করে নেওয়ার জন্য।
কথাগুলো অরিয়নের মুখে যেন মাখনের মতো মনে হচ্ছে।
অন্যদিকে মিতা কি বলবে বুঝতে পারছে না। অরিয়নের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।
–আমার মনে হচ্ছে আমি তোকে ভালোবাসতে শুরু করেছি।
মিতার আরও কাছে গিয়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে অরিয়ন।
–কিন্তু এই ভালোবাসা একদম আলাদা, লাভ।
মিতার নাকের সাথে নিজের নাক স্পর্শ করাতেই চোখ বন্ধ করে মিতা।
–এই ভালোবাসা টক্সিক। এতোই টক্সিক যে তুই চলে যাওয়ার কথা বললে তোকে মে*রে ফেলতে ইচ্ছে করে আমার। তোকে অন্য কারো সাথে ভাবলেই মাথায় খু*ন চাপে। হিংস্র জানোয়ারের মতো হয়ে যাই আমি।
অরিয়ন প্রতিনিয়ত জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। মিতার এতোটা কাছে থেকেও নিজেকে কীভাবে কন্ট্রোল করে রেখেছে তা শুধু অরিয়ন নিজেই ভালো জানে। প্রতি সেকেন্ডে ইচ্ছে করছে মিতার ঠোঁট কামড়ে ধরতে।
–আমি তো এরকম ছিলাম না। তুই আমাকে কেমন বানিয়ে দিলি। একবার বিচ্ছেদের যন্ত্রণা আমি সহ্য করতে পেরেছি কিন্তু এবার…. এবার আর পারবো না।
মিতার ঠোঁটের সাথে অরিয়নের ঠোঁট আলতো করে স্পর্শ হয়।
–তোর রিয়ন যে তোকে ভালোবেসে ফেলেছে, লাভ।
নিম্নস্বরে বলে অরিয়ন।
অরিয়নের কথা শুনে মিতার হার্ট যেন বিদ্যুতের গতিতে লাফাচ্ছে। বন্ধ করা চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়তে শুরু করেছে।
–তুই চলে গেলে আমি পাগল হয়ে যাব। আমি তোকে নিয়ে ভালো থাকতে চাই। আমাকে একটা সুযোগ দে প্লিজ।
অনুরোধের সুরে বলে অরিয়ন।
–আমি জানি আফরিন ফিরে এসেছে। আমি এটাও জানি, ওকে দেখলে তোর কষ্ট হয়। কিন্তু ও এখন শুধুই আমার অতীত। ও আমার জীবনে এখন আর নেই। বিশ্বাস কর আমাকে প্লিজ।
আবারও বলে অরিয়ন।
অরিয়নের কথা শুনে চোখ খুলে তাকায় মিতা। অরিয়নের চোখ এখনো বন্ধ। মিতার ঠোঁটের সাথে অরিয়নের ঠোঁট স্পর্শ হতেই বার বার নিজের ঠোঁট কামড়ে ধরে একটু করে সরে আসে মিতার ঠোঁট থেকে। মনে হচ্ছে নিজেকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে।
–চোখ খুলো।
কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে মিতা।
মিতার কথা শুনতেই সাথে সাথে চোখ খুলে অরিয়ন। অরিয়নের চোখে কিছু খুজার চেষ্টা করে মিতা। হয়তো মিথ্যে? কি পেলো জানেনা। শুধু জানে একটু পরেই মিতার চোখ থেকে গড়িয়ে পানি পড়তে থাকে।
–প্লিজ প্লিজ প্লিজ লাভ, প্লিজ কান্না করিস না। তোর চোখের পানি আমার সহ্য হয় না।
নিজের দু হাত দিয়ে মিতার গাল ধরে তাতে চুমু খেতে খেতে বলে অরিয়ন। মিতা নিজের হাত দিয়ে অরিয়নের দু হাত জড়িয়ে ধরে।
–আই লাভ ইউ পরী, আই লাভ ইউ সো সো সো মাচ।
কথাটা বলতেই যেন ক্ষণিকের জন্য অরিয়নের চোখে পানি দেখলো মিতা।
–আই লাভ ইউ টু রিয়ন।
অরিয়নের গলা জড়িয়ে ধরে বলে মিতা।
–তুই আমাকে ছেড়ে যাবি না তো?
ভয়ে ভয়ে বলে অরিয়ন।
–না।
জবাব দেয় মিতা।
মিতার জবাব শুনতেই হাসি ফুটে অরিয়নের মুখে। চোখ থেকে গড়িয়ে এক ফোঁটা পানি পরে।
–তুমি কাঁদছো?
অবাক হয়ে বলে মিতা।
–না তো। আমি আজ অনেক খুশি, অনেক বেশি। তুই জানিস না কী দিয়েছিস তুই আমাকে।
মিতাকে জড়িয়ে ধরে বলে অরিয়ন। মিতাও অরিয়নকে জড়িয়ে ধরে।
–আই লাভ ইউ সো মাচ, লাভ। সো মাচ।
হাসিখুশি অরিয়ন আবারও বলে উঠে।
মিতার মুখেও হাসি ফুঁটে উঠেছে। অরিয়নকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে। ইচ্ছে করছে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে কিন্তু বুকে যদি ব্যাথা পায় তাই আর শক্ত করে ধরলো না।
অরিয়ন মিতাকে জড়িয়ে ধরা থেকে একটু সরে এসেই ঝাপিয়ে পড়ে মিতার ঠোঁটের উপর।
হঠাৎ করে চুমু দেওয়াতে একটু অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে মিতা কিন্তু পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নেয়। মিতার ঠোঁট স্পর্শ করতেই যেন প্রাণ ফিরে ফেলো অরিয়ন। চুষতে থাকা মিতার ঠোঁটে কামড়ে ধরতেও সময় লাগে না।
মিতা অরিয়নের চুমুর সারা দেয় আলতো করে। নিজের হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে অরিয়নের গলা। চুমু খেতে থাকা অরিয়ন নিজের হাত দিয়ে মিতার খোঁপা একটানে খুলে ফেলে। খোঁপা খুলতেই নিজের হাত দিয়ে মিতার গলা থেকে টান দিয়ে ওড়না ফেলে দেয় অরিয়ন।
–অয়েট।
অরিয়নের থেকে একটু সরে এসে বলে মিতা।
–না। নিজেকে দূরে দূরে রেখে অনেক শাস্তি দিয়েছিস আমাকে।
আবারও মিতার ঠোঁটে চুমু খেতে খেতে বলে অরিয়ন।
–আজ তোকে শাস্তি দিবো আমি।
দুষ্টামির হাসি দিয়ে কথাটা বলেই নিজের হাত দিয়ে মিতার কোমর জড়িয়ে ধরে মাটি থেকে উপরে তুলে নিয়ে সোজা হাটতে থাকে বিছানার দিকে।
–আরে ওয়েট। ওয়েট, তুমি অসুস্থ।
বলে মিতা।
অরিয়ন মিতাকে বিছানায় বসায়।
–কথা শুনো, এমনিতেই অসুস্থ তুমি তার মধ্যে…
–কোনো অসুস্থ না। সুস্থ আমি। দেখছিস না হাটাচলা সব করতে পারছি।
–তুমি..
–কোনো তুমি না। আজ কোনো বাধাই মানবো না আমি।
কথাটা বলেই মিতার গলায় চুমু খায় অরিয়ন।
–থ্যাংক ইউ। আমাদের সম্পর্ককে একটা সুযোগ দিয়েছিস তাই।
মিতার কপালে চুমু খেয়ে বলে অরিয়ন।
–তোমাকেও ধন্যবাদ।
বলে মিতা।
বিছানায় বসে আছে আনিকা চৌধুরী। ভোরের আলো চারিপাশে দেখা যাচ্ছে। বিছানার এক কোণেই শুয়ে আছে হাবিব চৌধুরী। আজ আনিকা চৌধুরীর হাতে ছোট অহনার ছবি। হাবিব চৌধুরী ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় লুকিয়ে লুকিয়ে আলমারি থেকে বের করে নিয়েছে আনিকা চৌধুরী।
ছোট্ট অহনার ছবিতে হাত বুলাতেই বুক ফেটে কান্না আসছে আনিকা চৌধুরী। চোখের পানি ছবির ফ্রেমটার উপর পড়তে শুরু করেছে। ঘুমন্ত হাবিব চৌধুরী পাশ ফিরতেই লক্ষ্য করে আনিকা চৌধুরী বসে আছে। তিনি যে কান্না করছেন তা মাঝে মধ্যে শরীর নড়তে দেখে বুঝতে পারছেন হাবিব চৌধুরী।
–আনিকা।
ডাক দেয় হাবিব চৌধুরী।
আনিকা চৌধুরী কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না। রোবটের মতো বসে রইল।
–অহনার ছবি আবারও বের করেছো তুমি?
শোয়া থেকে উঠে বসতে বসতে বলে হাবিব চৌধুরী।
–ঐ মেয়েটা মরে গেলে কী এমন ক্ষতি হতো? কেন আমার অহনাকে মরতে হলো হাবিব?
কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলে আনিকা চৌধুরী।
–এভাবে বলো না আনিকা।
হতাশার কন্ঠে বলে হাবিব চৌধুরী।
–ঐ মেয়েটার জন্য আমার অহনাকেও দেখতে দেও নি তোমরা।
অভিমানের সুরে বলে আনিকা চৌধুরী।
–তুমি ভালোই জানো কারণ টা মিতা না, আনিকা। অহনার ছবি দেখলেই তুমি পাগলামি শুরু করে দেও। তাই ডাক্তার নিজেই বলেছে সরিয়ে রাখতে।
আনিকা চৌধুরীর কাঁধে হাত দিয়ে বলে হাবিব চৌধুরী।
–সব তোমাদের সাজানো নাটক। সব। ঐ মেয়েকে বাঁচানোর একটা পন্থা। কী এমন আছে যার জন্য এতো মূল্য ওর জীবনের, হ্যাঁ? নাকি সবটাই টাকার জন্য, হাবিব?
চেঁচিয়ে উঠে আনিকা চৌধুরী।
পারমিতা পর্ব ৪২
–খবরদার আনিকা। মুখ সামলে কথা বলবে।
বিছানা থেকে উঠে চেঁচিয়ে উঠে হাবিব চৌধুরী।
আনিকা চৌধুরী আর কিছু বললো না। অহনার ছবি নিয়েই কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।