প্রণয়ের অন্তিমক্ষণ পর্ব ৩৯

প্রণয়ের অন্তিমক্ষণ পর্ব ৩৯
অনন্যা

আজকের আবহাওয়াটা কেমন মেঘাচ্ছন্ন।আকাশের আজ বড্ড মন খারাপ হয়তো।সূয্যিমামা মেঘের পাছে মুখ লুকিয়েছে।শাহরিয়ার পরিবার আবহাওয়ার অবস্থা দেখে বড্ড চিন্তিত হলেন।হঠাৎ আবহাওয়ার বদলটা প্রত্যেককেই চিন্তায় ফেলে দিয়েছে।আহান শাহরিয়ার বললেন
-‘আবহাওয়া তো সুবিধার না।দারুণ একটা ঝড় আসবে বলে মনে হচ্ছে।
সাজ্জাদ শাহরিয়ার বললেন
-‘কি আর করার ভাইজান! যা হবার হবে।এখন তো আর কিছু করা যাবে না।
-‘তাও ঠিক।আমরা আগে আগেই রওনা দিয়ে দিব বরং।
-‘আচ্ছা ভাইজান।
আহান শাহরিয়ার আর সাজ্জাদ শাহরিয়ারের কথার মাঝেই আহনাফ আর রাফি উপস্থিত হলো।সাজ্জাদ শাহরিয়ার রাফিকে দেখে মুখটা কুচকালেন যেন বড্ড বিরক্ত হয়েছেন তিনি রাফিকে দেখে।

-‘ বাবা আমি ভার্সিটি যাচ্ছি।
আহান শাহরিয়ার কপাল কুচকালেন।
-‘বুঝলাম না।
আহনাফ আবার বললো
-‘ভার্সিটি যাচ্ছি।
-‘আজকে কেন?
আহনাফ বিরক্ত হলো বড্ড।রাফি বললো
-‘আজকে ভাইয়ের এক্সাম।ইয়ার ফাইনাল..
আহান শাহরিয়ার আকাশ থেকে পড়লেন।
-‘কিহ!!! আজকে এক্সাম!! তুমি কি মজা করছো আমার সাথে?
আহনাফ বললো
-‘নাটক করো না তো।লেইট হয়ে যাচ্ছে আমার।
আহান শাহরিয়ার ক্ষেপলেন ছেলের এমন সাধারণ মনোভাব দেখে।
-‘এই ছেলে! তোমার আজ এক্সাম আছে সেটা তুমি আগে জানাওনি কেন?
আহনাফ একটা হাই দিয়ে বললো
-‘আমি তো নিজেই ভুলে গিয়েছিলাম।সকালে আরিফ কল করে বললো আজ এক্সাম।
আহান শাহরিয়ার হা হয়ে গেলেন।
-‘তারা আগে কেন জানালো না?
রাফি বললো

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

-‘আসলে আংকেল তারাও জানতো না।আরিফ ভাইয়ের বউ নিধি ভাবির ভোরবেলা ফজরের নামাজ পড়ার পর মনে পড়েছে।তখন তিনি আরিফ ভাইকে জানান আর আরিফ ভাই সবাইকে।
আহান শাহরিয়ার হাবার মতো তাকিয়ে রইলেন।সাজ্জাদ শাহরিয়ার বললেন
-‘সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে একেই বলে।আহনাফ কত ভালো স্টুডেন্ট ছিল। আর আজ! সে জানেই না যে তার এক্সাম আজকে! এদের সঙ্গ ছাড়ো আহনাফ।রাহুলের থেকেও তো কিছু শিখতে পারো।
-‘খুন করতে বলছেন নাকি রে”প করতে বলছেন?
সাজ্জাদ শাহরিয়ার চমকে আহনাফের দিকে তাকালেন।আহান শাহরিয়ার চোখ রাঙালেন। আহনাফ পরোয়া করলো না।সে কিঞ্চিত হাসলো।তখন’ই সেখানে রাহুল চোখ ডলতে ডলতে উপস্থিত হলো।আহনাফ তাকে দেখে বললো
-‘হ্যাপি ডাউনলোড ডে ভাই।
রাহুল হেসে বললো

-‘ধন্যবাদ।
আহান শাহরিয়ারও উইশ করলেন।রাফিও বাদ গেল না।রাহুল সবাইকে ধন্যবাদ জানালো।আহনাফ বললো
-‘আমি আসি।আমার লেইট হয়ে যাচ্ছে।
-‘কোথায় যাচ্ছিস?
আহনাফ বললো
-‘এক্সামের সাথে পরোকিয়া করতে।
কথাটা বলেই সে রাফিকে নিয়ে চলে গেল গাড়ির কাছে।উঠে পড়লো গাড়িতে।রাহুল হতবাক।আহান শাহরিয়ারের দিকে তাকাতেই তিনি বললেন
-‘হতোচ্ছোরার এক্সাম আজকে।শুক্রবার বিয়ের ডেইট ঠিক করলেই ভালো হতো।ধুরর!
আহান শাহরিয়ারও চলে গেলেন।রাহুল তাকিয়ে রইলো শুধু।সাজ্জাদ শাহরিয়ার বললেন
-‘সাবধানে থেকো একটু।আহনাফ তোমার সম্পর্কে অনেককিছুই জানে।
-‘মানে?
-‘সাবধানে থাকতে বলেছি সাবধানে থাকবে।এতো কথা বলো না।
সাজ্জাদ শাহরিয়ারও চলে গেলেন।রাহুল কপাল কুচকায়।

-‘সুহাসিনী!
হঠাৎ আয়ানের স্বর শুনে কুহু পেছন ঘুরে তাকায়।সে নিজের রুমে বসে রাইফা,নিধি আরকিছু মেয়েদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিল।আয়ানকে দেখে বলে
-‘এসো ভাইয়া..
আয়ান ভেতরে আসে।এরপর বললো
-‘একটু কথা ছিল…
বাকিরা বুঝতে পেরে বেরিয়ে যায়।কুহু একটু ঠিকঠাক হয়ে বসে।আয়ান তার পাশে বসলো।এরপর বললো
-‘তো..ফিলিংস কেমন? বিয়ে করে তো চলে যাবি আজ।
কুহু একটু হাসে।এরপর বলে
-‘আবার আসবো তো।
আয়ান একটা শুকনো ঢোক গিললো।
-‘আমার কি হবে?
কুহু নিরব রইলো কিছুক্ষণ।এরপর বললো
-‘আমি আগেই বলে…

-‘আচ্ছা থাক।আমি একটা কথা জানাতে চাই আজ তোকে।কথাটা শোনার পর হয়তো তুই আমাকে ঘৃণা করবি।কিন্তু আমি চাই তোকে সত্যটা জানাতে।
কুহু কপাল কুচকালো।আয়ানকে ঘৃণা করবে সে! এমন কি কথা বলবে আয়ান? মনে হাজারো প্রশ্ন ঘোরপাক খাচ্ছে তার।আয়ান একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো
-‘তুই ধ’র্ষি’তা না।ঐদিন তোর সাথে খারাপ কিছু হয়নি।
কুহু যেন আকাশ থেকে পড়লো।ভেতরের ধুকপুকানি বেড়ে যাচ্ছে ক্রমে ক্রমে।একটা শুকনো ঢোক গিলে সে বললো
-‘মানে?
আয়ান জিহ্ব দিয়ে ঠোঁট ভেজায়।এরপর বলে

-‘আমি তোকে নিয়ে ভয়ে থাকতাম সবসময়।মা বলেছিল এসএসসির পর ভালো সম্বন্ধ পেলে তোকে বিয়ে দিবে।খুব চিন্তায় ছিলাম সেটা নিয়ে।কারণ মা তোর সাথে আমার বিয়ে কিছুতেই দিবে না।কাজিনদের মাঝে বিয়ে ব্যাপারটা আমাদের বংশে নিষেধ।তাই আমি অন্য উপায় খুঁজতে থাকি।এরপর তোর সাথে এমন একটা ঘটনা ঘটে।আমার মাথায় তখন একটা বুদ্ধি আসে।আমি একটা মিথ্যা রিপোর্ট তৈরি করাই।সবাই সেটাই বিশ্বাস করে।কিন্তু তোর সাথে তেমনকিছুই হয়নি।তুই ভয় পেয়েছিলি অনেক।এতোটুকুই।তুই পবিত্র সুহাসিনী…আ’আমি নিজের স্বার্থে তোকে সবার সামনে অপবিত্র প্রমাণ করেছি।আমি আসলেই খারাপ।তুই আহনাফের সাথেই সুখী হবি।আহনাফ’ই তোর জন্য সঠিক।আমি যোগ্য নই আসলে তোর।জানি এখন তুই আমাকে ঘৃণা করবি।কিন্তু কথাটা তোকে জানানো জরুরি ছিল।তাই…
-‘আপনি এখন আসতে পারেন ভাইয়া।
আয়ান থামে।কুহুর চোখ ছলছল করছে।আয়ান কিছু বলতে নিয়েও বললো না।উঠে দাঁড়ালো সে।একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো

-‘পারলে ক্ষমা করে দিস।
কথাটা বলেই সে চলে গেল।বাকিদের ভেতরে যেতে মানা করলো।কুহুর এখন একটু স্পেস দরকার।
সকাল গড়িয়ে দুপুর।রোদেলা আর কুহুকে সাজানো শেষ হয়েছে কেবল।দুজন সেইম লেহেঙ্গা পড়েছে।শুধু রংটা ভিন্ন।রোদেলা খয়েরি রঙের ভারি কাজের একটা লেহেঙ্গা পড়েছে।আর কুহু পার্পেল কালারের লেহেঙ্গা পড়েছে।একটা সেন্টারে বিয়ে পড়ানো হবে তাদের।কুহু আর রোদেলা পার্লার থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠে বসে।তারা বসতেই ড্রাইভার গাড়ির ইঞ্জিন চালু করে।রোদেলা বললো
-‘যা মেকাপ করেছে রে ভাই! সারারাত মেকাপ উঠাতেই লাগবে বলে মনে হচ্ছে।
কুহু বললো

-‘আর চুলে যে জট লাগিয়েছে! সেটার কথা বল…
-‘আমরা শেষ ভাই।সারারাত বসে বসে আজ এগুলোই করতে হবে।
-‘তো তুই কি অন্যকিছু করতে চেয়েছিলি নাকি?
কুহুর কথা শুনে রোদেলা লাজুক হেসে বললো
-‘যা বেডি! আমি আবার কি করবো?
কুহু বললো
-‘তোর কাজিনটা ভালো না রে।তুই জেনে শুনে কেন যে…হতাশ করলি আমাকে তুই।
রোদেলা কিছু বললো না।চুপ রইলো।আচ্ছা..রাহুল তো তাকে সত্যিই ভালোবাসে।সে যখন জানবে যে রোদেলার বিয়ে হয়ে গেছে অলরেডি তখন কি হবে? যা হওয়ার হোক।রাহুলেরও বুঝার দরকার আছে যে ভালোবেসে না পেলে কেমন লাগে।কষ্ট পেলে পাক।কুহু কি পায়নি কষ্ট! রোদেলার ভাবনার মাঝেই তার ফোনটা শব্দ করে বেজে উঠে।ফোনে “মদনা” নামটা জ্বলজ্বল করছে।রোদেলা অকারণেই হেসে ফেলে।কুহুর দিকে তাকায় সে।মেয়েটা প্রাইভেট কারে চড়তে পারে না।ব/মি আসে।তাই চোখ বন্ধ করে রেখেছে।রোদেলা কল রিসিভ করে।

-‘হ্যালো!
-‘এই চোরনি! কোথায় তুমি?
-‘আপনার বউ চো..
রোদেলা থেমে গেল।রাফি মিটমিট করে হেসে বলে
-‘বলো বলো…
-‘কল কেন করছেন?
-‘মিস ইউ বউ…
রোদেলার ভেতরটা কেমন করে উঠলো।কি দরকার বউ বলার? রোদেলা বললো
-‘ঢং করবেন না একদম।
-‘কেন বউ?
-‘উফ! বউ বউ করবেন না একদম।
-‘আচ্ছা বউ।
-‘চুপপ..

রাফি হো হো করে হেসে ফেলে।এরপর কেমন একটা স্বরে বলে
-‘দিনে তুমি বলবে ‘চুপ’ আর রাতে আমি..ওয়াওও।
রোদেলার কান গরম হয়ে গেল কথাটার গভীরতা বুঝতে পেরে।সাথে সাথে কল কেটে দিল মেয়েটা।রাফি তা দেখে হো হো করে হাসতে লাগলো।এদিকে রোদেলার অবস্থা কাহিল।এতকিছু সে ভাবেনি এখনো।মদনা এতদূর চলে গেছে! রোদেলা একটা শুকনো ঢোক গিললো।

-‘এক্সাম কেমন হলো তোমার?
আহনাফ তৈরি হয়ে নিজেকে আয়নায় দেখছিল ঠিক তখন আহান শাহরিয়ার কথাটা বলে।আহনাফ বিরক্ত হলো বড্ড।
-‘কেমন হবে…যেমন হওয়ার তেমন’ই হয়েছে।
-‘কিছু তো পড়োই নি…ফেইল করবে নিশ্চিত।
আহনাফ পারফিউম দিতে দিতে বললো
-‘ফেইল করলে ভার্সিটিই উড়িয়ে দিব আমি।ভার্সিটির চিহ্ন’ই রাখবো না।
আহান শাহরিয়ার বললেন
-‘তোমার বাপের ভার্সিটি ওটা?
-‘তোমার বাপেরও তো না।তাহলে উড়িয়ে দিতে প্রব্লেম কোথায়?
আহান শাহরিয়ার ফোঁস করে শ্বাস ছাড়লেন।এই ছেলের সাথে কথা বলাও বৃথা। ভদ্রলোক আজকে কালো রঙের একটা স্যুট পড়েছেন।ক্লিন সেভের আহান শাহরিয়ারকে আহনাফের বাবা কম ভাই মনে হচ্ছে।আহনাফ বাবাকে একবার পরখ করে বললো
-‘মা আজ নির্ঘাত তোমাকে গালি দিচ্ছে।কত মেয়ের যে আজ আবার মন ভাঙবে আল্লাহ!
আহান শাহরিয়ার হেসে বললেন
-‘ ছেলের বিয়ে বলে কথা! একটু হ্যান্ডসাম না লাগলে কি চলে!
আহনাফ হাসলো।

-‘ইস্ক ভি তু হে.. পেয়ার ভি তু হে…তু হি.
রাহুল গুণগুণ করে গাইছিল।হঠাৎ তার গানের মাঝেই পরের অংশটুকু কেউ গেয়ে উঠলো।
-‘মেরি মোহাব্বাত হে..সাসো মে তেরি…বাকিটুকু প্রাকটিকাললি করি?
রাহুল ভড়কে পেছনে তাকায়।চোয়াল ঝুলে পড়ে তার।স্লিভলেস একটা টপস্ পড়া যা হাঁটুর উপর পর্যন্ত ঠেকেছে।ফর্সা পা দুটো উন্মুক্ত। মেয়েটাকে সে চিনে কিন্তু..কিন্তু নামটা মনে পড়ছে না।
-‘হাই রেনান বেইবি!!
রাহুল মনে করার চেষ্টা করতেই তার নামটা মনে পড়ে গেল।
-‘জেসিকা!!
জেসিকা দৌঁড়ে এসে রাহুলকে জড়িয়ে ধরলো।রাহুল কিছু বলার আগেই মেয়েটা তার ওষ্ঠ আকড়ে ধরে।রাহুল ভড়কে গেল।তাকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিল সে।
-‘হোয়াট দ্যা…তুমি কি করলে এটা,ইডিয়েট?
জেসিকা বললো

-‘এটা কি নতুন নাকি? আর কত কিছুই তো হয়েছে আমা..
-‘চুপপপ…এখানে কি করছো তুমি?
জেসিকা এগিয়ে এসে রাহুলের গলা ধরতে নিলে রাহুল ওকে সরিয়ে দেয়।
-‘সরো…ধরবে না আমাকে।আজ আমার বিয়ে।
-‘ওহ হ্যাঁ…এই তুমি বিয়ে করছো মানে? তুমি তো আমাকে কথা দিয়েছিলে…
রাহুল কথাটা শুনে হাসলো।এরপর বললো
-‘তোমার মতো মেয়েকে বিয়ে করবে এই রাহুল শাহরিয়ার!! হাহাহা!! হাসালে…
হঠাৎ তখন একটা শব্দ হলো।জেসিকা বললো
-‘হাহাহা পা’দা’লে…..

রাহুল নাক চেপে বললো
-‘কি ধরনের অসভ্যতামি এগুলো?
জেসিকা বললো
-‘এগুলো আটকে রাখতে নেই।জানো না?
রাহুল কিছু বলতে নিলে জেসিকা বললো
-‘কোনো কথা না।তুমি আমার ছিলে আর আমার’ই থাকবে।
রাহুল বললো
-‘বাড়াবাড়ি করবে না একদম।
-‘কি করবে?
জেসিকা এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করলো।রাহুল গুজে রাখা রিভালবারটা বের করে বললো
-‘মেরে দিব…

জেসিকা বলে উঠলো
-‘আমার বাবা কিন্তু পুলিশ।
-‘তো?
-‘তোমাকে জেলে দিবে।
রাহুল হাসলো।হঠাৎ তখন…
-‘রেনানন..
আরেকটা মেয়ে ছুটে এসে তাকে জড়িয়ে ধরলো।রাহুল হতভম্ব।এসব কোথা থেকে আসছে? এরপর আরেকটা মেয়ে রেনান বলে ভেতরে আসে।পরপর পাঁচজন আসে এভাবে।রাহুল ধপ করে ফ্লোরে পড়ে যায়।রিভালবার কখন যে পড়ে গেছে! সবাই রেনান রেনান করছে।রেনান বিরক্ত হয়ে চেঁচিয়ে উঠলো
-‘চুপপপ….
কেউ তো থামলো না বরং এরপর আর একগাদা মেয়ে প্রবেশ করলো রুমে রেনান বলে চেঁচিয়ে।সবাই হুমড়ি খেয়ে রেনানের উপর পড়তে নিলে রেনান চেঁচিয়ে উঠে
-‘নাআআআআআআআ..

বিধিবাম! সবাই তার উপর পড়ে।রাহুলের হাড়গুলো ভাঙলো বোধহয়।চেঁচামেচির শব্দ শুনে অনেকেই চলে এসেছে এদিকে।আহনাফ,রাফি,আহান শাহরিয়ার,সাজ্জাদ শাহরিয়ার,অখিল শাহরিয়ার..বাড়ির দুই গিন্নি তাছাড়া বাহিরের লোক..সবাই এতো মেয়ের চিপায় পড়ে থাকা রাহুলকে দেখতেই পেল না।শুধু মেয়ে আর মেয়ে।যখন জানবে এরা সব রাহুলের গার্লফ্রেন্ড তখন কি হবে? আহনাফ আর রাফি হা হয়ে দেখছে।এত মেয়ে যে হবে সেটা বুঝতে পারেনি তারা।রোদেলা এত মেয়ের সাথে কনটাক্ট করেছে! হঠাৎ হৈচৈ এর শব্দে ভড়কে গিয়ে সবাই পেছন ফিরে তাকায়।বিশ-ত্রিশ জনের মতো মেয়ে দৌঁড়ে এদিকেই আসছে।সাজ্জাদ শাহরিয়ার তা দেখে বলে উঠলেন
-‘ওরে বাবাগোওও!!

সবাই সাইডে সরে যেতেই মেয়েগুলো রেনান বলে ঝাঁপিয়ে পড়লো।এরপর রাহুলের একটা চিৎকার!
“আল্লাহহহহহহ!!”
আহনাফের চক্ষু চড়কগাছ।রাফি বললো
-‘এর গার্লফ্রেন্ডের সংখ্যা তো আমার মাথার চুলের থেকেও বেশি, ভাই।এরে এমপি পদে দাঁড় করিয়ে দিন ভাই।
আহনাফ হা হয়ে দেখছে সব।নিরুত্তর সে।আহান শাহরিয়ার বললেন
-‘রাহুলের জোর আছে বলতে হবে।

প্রণয়ের অন্তিমক্ষণ পর্ব ৩৮

অখিল শাহরিয়ার আর সাজ্জাদ শাহরিয়ার ভড়কে তাকালেন ভদ্রলোকের দিকে।আহান শাহরিয়ার এদিক ওদিক দেখতে লাগলো যেন সে কিছুই বলেনি।আদিত আর আরিফ এসে উপস্থিত হলো তখন।আগে থেকেই বোধহয় অবগত ছিল তারা এই ব্যাপারে।তাই ঘটনা বুঝতে বেশি বেগ পোহাতে হয় না তাদের।আদিত বললো
-‘এরজন্য’ই বোধহয় আমি এতদিন সিঙ্গেল ছিলাম।
আহনাফ ফিক করে হেসে ফেলে।হঠাৎ তখন আরো মেয়ে আসতে দেখে মানুষজন দৌঁড়াতে থাকে।কারণ তাদের কারো হাতে ছিল ঝাঁড়ু কারো হাতে স্যান্ডেল কেউ আবার চাপাতি নিয়ে আসছে।যে যার মতো দৌঁড়াচ্ছে।

প্রণয়ের অন্তিমক্ষণ পর্ব ৪০

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here