প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ১১
আদ্রিতা নিশি
রাত পেরিয়ে সকাল হয়েছে ধরনীতে। কিঞ্চিৎ শীতল হাওয়ায় পরিবেশে অসম্ভব শীত অনুভব হচ্ছে। ফেব্রুয়ারীর শুরু হলেও শীতের প্রকোপ অন্যবারের তুলনায় অনেক বেশী। সূর্যের দেখা মিলেছে কিছুক্ষণ আগে। অরিত্রিকা অরিন ছাঁদের দোলনায় বসে সানন্দে দোল খাচ্ছে। অরিন কলেজে গেল মাত্র। সে এখন অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ভার্সিটিতে এডমিশন দিলেও ভাগ্যের উত্থানে কোথাও চান্স হয়নি। তাই রাজশাহী কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছিল। আজমল সাহেব সাথী বেগমকে নিয়ে স্থানীয় হসপিটালে গিয়েছেন। দুদিন ধরে সাথী বেগমের প্রেশার বেড়ে আছে। সেই কারণে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ দরকার।
ইশরা মুখ ভার করে তাকিয়ে আছে অরিত্রিকার দিকে। অরিত্রিকা ইশরাকে সকাল থেকে পাত্তা দিচ্ছেনা। মূলত গতকাল রাতে তার ক্রাইম পার্টনারের জব থেকে রিজাইন করেছে তাই। সে ইশরার এমন মলিন চেহারা দেখেও না,দেখার ভাণ করে এক মনে ফোন টিপে চলেছে। সে ভেবেছে আজ কোনো কথা বলবে না সে।
“ অরিত্রিকা চশমার সাথে কথা বল। মন খারাপ করে থাকিস না। তুই জানিস তো, সারহান ভাইকে আমি যমের মতো ভয় পাই। ”
ইশরার করুন স্বর শ্রবণ হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখালো না অরিত্রিকা। দৃষ্টি ফোন স্কিনে নিবন্ধ করে অনড় ভঙ্গিতে বসে রইল যেন এসব কথায় তার কিছু যায় আসে না। ইশরা হতাশ হয়ে গেল। কাঁদো কাঁদো মুখে বলল;
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“ তুই যদি কথা না বলিস আমি কিন্তু চলে যাব। ”
অরিত্রিকা নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বলল;
“ যা। ”
“ সত্যি চলে যাব কিন্তু। ”
“ সত্যি চলে যা। ”
অরিত্রিকার গমগমে কন্ঠস্বর। ইশরা উঠে দাঁড়ায়। মন বেজার করে ছাঁদের কার্ণিশ ঘেষে দাঁড়ায়। একপলক অরিত্রিকার দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়। মলিন মুখশ্রীতে তাকায় সামনের রাস্তার দিকে। যানবাহন, মানুষের ভীড়ে ব্যস্ত রাস্তাঘাট। সবাই জীবনের তাগিদে ছুটছে কর্মস্থলে। শীতল হাওয়ায় ছুঁয়ে যাচ্ছে তার শরীর।
ইশরা ব্যস্ত শহুরে রাস্তায় তাকিয়ে বলল;
“ চল আজকে পদ্মাগার্ডেনে যাই। ”
অরিত্রিকা গমগমে কন্ঠে বলল ;
“ তোর সাথে কোথাও যাবো না। ”
ইশরা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। অরিত্রিকার মন ভালো করবে কীভাবে ভাবতে শুরু করে। এর মাঝে ইশরার ফোন স্ব শব্দে বেজে উঠে। ভাবনাচিন্তা অসমাপ্ত রেখে সে চপল পায়ে এগিয়ে দোলনার ওপর রাখা ফোনটা হাতে নেয়। নাম্বার আর নাম দেখে দ্রুত কল রিসিভ করে বলে ;
“ আসসালামু আলাইকুম। ”
ওপর পাশ হতে উত্তর আসে;
“ ওয়ালাইকুম আসসালাম।”
“ কিছু বলবি সাদাত? ”
“ হ্যা। দশ মিনিট সময় দিলাম তুই রেডি হয়ে চাচার বাড়ির সামনে দাঁড়া আমি আসছি তোকে নিতে। ”
“ হঠাৎ এতো তাড়া কেন? ”
“ টমেটো তোর ভাই ঢাকা থেকে এসেছে গতকাল রাতে। ইরফান ভাই অর্ডার দিল তার ছোট বোন টমেটোকে যেন দ্রুত তার সামনে হাজির করি। সেই কার্য উদ্ধার করতে আসছি এখন। ”
ইশরা রেগে গেল বেশ। রাগান্বিত কন্ঠে বলল;
“ একদম আমাকে টমেটো বলবি না সাদুর বাচ্চা। ”
অপর পাশ হতে সাদাত হো হো করে হেসে উঠল ;
“ টমেটোকে টমেটো বলব না তাহলে কী বলব গোল আলু? ”
“ একদম উল্টাপাল্টা বকবি না। ”
“ ওকে আর কিছু বললাম না। দ্রুত রেডি হয়ে নে আমি আসছি। ”
“ ওকে আয়।”
“ বাই টমেটো।”
সাদাত কল কেটে দিল। ইশরা রাগ ক্ষোভে ফুঁসে উঠল। ফোন কান থেকে নামিয়ে সজোরে চেপে ধরল। তিরিক্ষি মেজাজে অরিত্রিকাকে বলল;
“ আমি চলে গেলাম। তুই থাক তোর বা*লের রাগ নিয়ে। ”
ইশরা কথাটা বলে ধপাধপ পা ফেলে নিচে চলে গেল। অরিত্রিকা হতভম্ব হয়ে দেখল। হঠাৎ হলো কি এই মেয়ের। তার রাগ ভাঙানো বাদ দিয়ে উল্টো রাগ দেখিয়ে চলে গেল। অরিত্রিকা দোলনা থেকে নেমে দাঁড়াল দ্রুত। তড়িঘড়ি করে ছুটলো ইশরার পেছনে।
সাদাত বাইকের সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে বেশ ভাব নিয়ে। এক কানে ফোন গুঁজে হাস্যরত অবস্থায় কথা বলছে। মাঝে মাঝে কৃষ্ণ বর্ণের চুলগুলো একহাতে ঠেলে পেছনে দিচ্ছে। মুখাবয়বে ফুটে উঠেছে প্রাণবন্ত আমোদিত ভাব। তীক্ষ্ণ কালচে চোখ জোড়া অস্বাভাবিক আকর্ষণীয়। ভ্রু যুগল বাঁকিয়ে অনবরত কথা বলে চলেছে। সদ্য খোঁচা খোঁচা দাড়িতে সুদর্শন লাগছে। পরনে ব্ল্যাক শার্ট এবং জিন্সের প্যান্ট। পায়ে ব্যান্ডেড জুতা। বুকপকেটে ঝুলছে কালো চশমা। বয়সের তুলনায় শরীরের গড়ন শক্তপোক্ত এবং সুঠাম দেহী। তবে মুখে ছোটদের মতো ভাব রয়েছে। কে বলবে নিষ্পাপ চেহারার পেছনে আস্ত একটা বদমাশ লুকিয়ে আছে। সাদাতের কথার মাঝে ইশরা এসে হাজির হলো। কাঁধে ঝুলিয়ে রাখা সাইড ব্যাগটি খামচে ধরে সরু চাহনিতে তাকাল। সাদাত ইশরাকে অদ্ভুত চাহনিতে তাকিয়ে থাকতে দেখে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে গেল। ফোনের ওপর পাশের মানুষটাকে ধীর কন্ঠে বলল;
“ আচ্ছা জান ভালো থেকো। বাড়ি গিয়ে তোমার সাথে কথা বলবো। বাই জান উম্মাহ। ”
সাদাতের এহেন কথায় ইশরার মুখ কুঁচকে গেল। বিরক্তিভাব নিয়ে তাকাল সামনে দন্ডায়মান মানুষটির দিকে। কী দিনকাল আসল এখন! সামনে যে কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে তা খেয়াল করেও গার্লফ্রেন্ডকে জান বলা হচ্ছে। নির্লজ্জ ছেলে কোথাকার! বিরবির করে বকতে লাগল।
সাদাত কল কেটে ফোন প্যান্টের পকেটে রাখে। সরু দৃষ্টিতে তাকিয়ে ভ্রু যুগল বাঁকিয়ে জিজ্ঞেস করে ;
“ কী হয়েছে তোর? মুখ বেলুনের মতো ফুলিয়ে রেখেছিস কেন? ”
ইশরা উল্টো সন্দেহবাতিক কন্ঠে শুধায় ;
“ এটা কয়েক নম্বর গার্লফ্রেন্ড তোর?”
সাদাতের দৃষ্টি গাঢ় হলো। ভ্রুক্ষেপহীন ভাবে অবলীলায় জানাল;
“ দশ নাম্বার। ”
ইশরার মাথা চক্কর দিয়ে উঠল। এই ছেলের এতোগুলো গার্লফ্রেন্ড! সে স্তম্ভিত নয়নে তাকায় সাদাতের দিকে। সাদাত সেই চাহনি উপেক্ষা করে ড্যামকেয়ার ভাব নিয়ে বাইকে উঠে পড়ে। গম্ভীর কণ্ঠে বলে;
“ দ্রুত বাইকে উঠ। ”
ইশরা মুখ বাঁকিয়ে বাইকে উঠে পড়ে। সাদাত বাইক স্টার্ট দিয়ে বলল ;
“ আমাকে ধরে বস। নয়ত দেখা যাবে পেছন থেকে ঠাস করে মাঝ রাস্তায় পড়ে গেছিস। ”
ইশরা ঝামটি মেরে বলল ;
“ পড়ব না। ”
সাদাত ঠোঁট বাঁকা করে ফিচেল হাসি দেয়। তারপর হঠাৎ করেই বাইকের অ্যাক্সেল টেনে স্পিড বাড়িয়ে দেয়। বাতাস চুল এলোমেলো করে দিচ্ছে চারপাশের দৃশ্য যেন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে গতির তীব্রতায়।ইশরার বুক দুরুদুরু করছে। ভয় যেন হৃৎপিণ্ডটাকে মুঠো করে ধরে রেখেছে। মনে হচ্ছে, এখনই যদি পড়ে যায় তাহলে আর রক্ষা নেই!স্পিড আরও বাড়ছে। ইশরা দিশেহারা হয়ে দু’হাতে সাদাতের শুভ্র শার্ট শক্ত করে চেপে ধরে। ভয় আর উৎকণ্ঠায় তার পুরো শরীর কাঁপছে।
সে সাদাতের কাঁধের কাছে মুখ এনে ভয়ার্ত কণ্ঠে ফিসফিস করে বলল,
“সাদাত, বাইকের স্পিড কমা! আমার ভীষণ ভয় করছে।”
সাদাত শব্দ করে হেসে বলল;
“ এই তোর সাহস!”
সাদাতের দৃষ্টি ব্যস্ত রাস্তার দিকে।চোখে তীক্ষ্ণ মনোযোগ। ইশরা একটু মাথা উঁচিয়ে তাকায়। বাইকের মিররে চোখ যায় তার। সেখানে স্পষ্ট দেখতে পায় সাদাতের ওষ্ঠকোণে চোরাগোপ্তা হাসির রেখা খেলে যাচ্ছে!এতক্ষণ ধরে তার ভয়, আতঙ্ক সবকিছুই ছিল সাদাতের জন্য নিছক উপভোগের বিষয়! এটা বুঝতে পেরে ইশরার মেজাজ মুহূর্তেই সপ্তমে চড়ে বসে। রাগে গরম হয়ে উঠে এক হাতে দুম করে কিল বসিয়ে দেয় সাদাতের পিঠে।সাদাত আকস্মিক আঘাতে সামান্য কেঁপে উঠে, সাথে সঙ্গে এক মৃদু আর্তনাদ বেরিয়ে আসে তার মুখ থেকে। “উফ্! ইশরা!”
বাইক সামলে নিতে নিয়েই সে অবাক দৃষ্টিতে তাকায় মেয়েটার দিকে। ইশরার মুখ রাগে টকটকে লাল, চোখ দুটো জ্বলজ্বল করছে। মনে হচ্ছে, সুযোগ পেলে সে আরও ক’টা কিল বসিয়ে দিত!
সারহান পার্টি অফিসে বসে আছে ক্লান্ত ভঙ্গিতে। শরীর কেমন মেজমেজ করছে। সকাল থেকে তিনটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিং করেছে সে। এসবের মাঝে মেহমুদ রঈস এবং হৈমীর বিষয় নিয়ে বেশ চিন্তিত। আজকে অনেক প্রেশার গেছে তার ওপর দিয়ে। সারহান কিছুক্ষণ আগে আবিরকে পাঠিয়েছে মেহমুদ রঈসের খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য। আপাতত হৈমীর কোনো চিন্তা তার মস্তিষ্কে নেই। বাচ্চাটাকে সারহান রাতেই তার ফ্রেন্ড মনের কাছে দেখভালের জন্য রেখে এসেছে। সারহান অধৈর্য্যের সহিত শার্টের ওপরের বাটন খুলে ফেলল। চোখ বন্ধ করে গা এলিয়ে দিল আরামদায়ক চেয়ারটায়। এই শীতের দুপুরেও এসি চলছে অফিসের রুমটায়। কেমন যেন নিস্তব্ধ সেই পরিবেশ। রুমের বাহিরে গার্ডেরা পাহারা দিচ্ছে।
নিস্তব্ধতার জোয়ার ভাঙ্গল সারহানের ফোনের কর্কশ রিংটোনের শব্দে। সারহানের বিরক্তিতে চোখ মুখ কুঁচকে এলো। বিরক্তির সহিত সামনে থাকা টেবিলটায় চোখ বন্ধ করে ফোনটা খোঁজার প্রয়াস চালাল। ফোনটা টেবিলে পেল। ফোনটা রিসিভ করে কানে চেপে ধরতেই অপর পাশ হতে মেয়েলি রিনরিনে কন্ঠস্বর ভেসে এলো ;
“ এমপি সাহেব, কেমন আছেন? ”
সারহানের কপালে বেশ কয়েকটা ভাজ পড়ল। স্বাভাবিক ভ্রুযুগল কুঁচকে গেল। ভরাট কন্ঠে বলল;
“ আমাকে আবার জ্বালাতন করছো মেয়ে? ”
মেয়েটি হাসল বোধহয় ;
“ জ্বালাতন কোথায় করলাম! আপনার মতো ব্যস্ত মানুষের একটু খোঁজ খবর নিচ্ছি।”
“ কন্ঠস্বর শুনে মনে হচ্ছে ছোট বাচ্চা। এই মেয়ে তোমার বয়স কতো? ”
সারহান ধমকে বলল। মেয়েটি একটু রাগ দেখিয়ে বলল ;
“ আমি মোটেও বাচ্চা নই এমপি সাহেব। আমার বয়স উনিশ বছর। ”
সারহান চোখ মেলে সিলিংয়ের দিকে তাকায়। ওষ্ঠ কামড়ে গম্ভীর কণ্ঠে শুধায় ;
“ আমার বয়স কতো জানো?”
“ হ্যা জানি। মাত্র আটাশ। ”
“ হু! মাত্র।”
“ জানেন এখনকার দিনে ত্রিশ বছর অনেক মেয়েদের কাছে কিছুই না। তারা তো সুগার ডেডিকে বিয়ে করে বিন্দাস সময় কাটাচ্ছে। ”
“ তুমিও সুগারডেডিকে বিয়ে করে নাও মেয়ে। আমাকে ডিস্টার্ব করা বন্ধ করে দাও। ”
সারহান শক্ত গলায় বলে। অরিত্রিকা কিছুক্ষণ মৌন থেকে জিজ্ঞেস করে ;
“ দুপুরে খেয়েছেন? ”
সারহানের কাটকাট জবাব ;
“ তোমাকে বলতে বাধ্য নই মেয়ে।”
“ আপনার কথাগুলো কীসের মতো জানেন?”
“ কীসের মতো?”
“ করলার রসের মতো বিদঘুটে তেঁতো।”
বলেই অরিত্রিকা ফিকফিক করে হেসে দিল। সারহানের চোয়াল শক্ত হয়ে উঠল। সে পুনরায় চক্ষুদ্বয় বন্ধ করে ক্রোধ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করল। ফের মেয়েলি কন্ঠস্বর ভেসে এলো ;
“ আপনার করলার মতো তেঁতো জবান মিষ্টি হবে কীভাবে জানেন? বউয়ের দু – চারটা মিষ্টি ঠোঁটের চু*মু খেলে। ”
সারহান এ কথা শুনে ফিচেল হাসে;
“ আমার না হওয়া বিবিজান? ”
অরিত্রিকা অস্ফুটস্বরে জবাব দেয় ;
“ হু?”
“তোমার ছোট্ট শরীর কি আমার চু*ম্বনের তীব্রতা সহ্য করতে পারবে, মেয়ে? হয়তো এক মুহূর্তের ওষ্ঠের স্পর্শেই তুমি সংজ্ঞাহীন হয়ে যাবে ।”
সারহান ওষ্ঠ কামড়ে ফিচেল হাসে। এসব কথা তার ধাঁচে নেই।কিন্তু এই মেয়েকে একটু শায়েস্তা করতে দুই একটা কথা বলা যেন অনিবার্য হয়ে পড়েছে। সে বিস্মিত অচেনা মেয়েটার সাহস দেখে। ভাবা যায়, একটা সাধারণ মেয়ে হয়ে একজন এমপিকে কল করে ডিস্টার্ব করার দুঃসাহস দেখিয়েছে। তবে কন্ঠটা তার অপরিচিত হলেও পরিচিত মনে হয় মাঝে মাঝে। অরিত্রিকা কিয়ৎকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বসে রইল। ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইল ফোনের স্কিনে। এসব কি বলছে সারহান ভাই চু*মু ছিহ ভাবতেই লজ্জায় লাল হয়ে গেল। দুগাল গরম হয়ে গেল। হাসফাস করে উঠল। নিচু স্বরে বলল;
“ এসব আপনি কি বলছেন এমপি সাহেব। একটা অচেনা মেয়েকে এসব কিসমিসের কথা বলছেন লজ্জা করছে না?”
সারহান ভরাট কন্ঠ সাবলীল ভাষায় বলে;
“লজ্জা পেলে কী করে হবে? ছেলেরা যদি লজ্জা করত, তাহলে দুনিয়ায় ‘বাবা’ ডাকটাই শোনা যেত না! আর হ্যাঁ, কিসমিসের প্রসঙ্গ কিন্তু তুমি নিজেই তুলেছো প্রথম!”
অরিত্রিকা নাক ধরে মুখ কুঁচকে বলে ;
“ আপনি অসভ্য এমপি সাহেব। ”
“ না হওয়া বিবিজানের কাছে একটু অসভ্য হওয়া যায়। ”
“ আমার খেয়েদেয়ে কাজ নেই আপনাকে বিয়ে করতে যাব। ওসব বিবিজান বলা বাদ দিন। ”
“ ভয় পেয়ে গেলে?”
“ কিসের ভয়?”
“ আমার চু*মুর ধকল সইতে পারবে না তাই।”
“ চুপ করুন সারহা.. এমপি সাহেব। ”
সারহান দাঁতে দাঁত চেপে কাঠিন্যতা এঁটে বলে ;
প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ১০
“তুমি একটা বাচ্চা মেয়ে হয়ে আমার সঙ্গে লাগতে এসো না, নয়তো পরবর্তীতে এর ফল ভুগতে হবে। এখন তোমার হরলিক্স খাওয়ার সময়, প্রেম-পিরিতির নয়। আর যদি আবারও কল করে বিরক্ত করো, আই সুয়্যার তোমাকে খুঁজে বের করে কানের ওপর দুই-চারটা থাপ্পড় দিয়ে বেয়াদব থেকে মানুষ বানিয়ে দেব!”
শেষোক্ত ঠান্ডা হুমকিতে অরিত্রিকি চমকে উঠে দ্রুত কল কেটে দেয়।