প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৪১ (২)

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৪১ (২)
আদ্রিতা নিশি

সকাল নয়টা বেজে পনেরো মিনিট। সারহান পরিপাটি পোশাক পড়ে লিভিং রুমে এসে দাঁড়িয়েছে। অপেক্ষা করছে আবিরের জন্য। আজ প্রেস ব্রিফিং আছে তাই দ্রুত বাড়ি থেকে বেরুচ্ছে। সকালে চৌধুরী বাড়ির সকলে একসাথে খাবার খেলেও সারহান খায়নি। ইসমা বেগম খাবার খেতে ডাকলেও সরাসরি না করে দিয়েছে। ইরফানের সাথে মনমালিন্য হওয়ার পর থেকে চিন্তিত সে। সে বুঝতে পারছে ইরফান এতো সহজে অরিত্রিকার পিছু ছাড়বে না। হয়তো বড় কোনো হাঙ্গামা করবে। এর মাঝে ধুপধাপ পা ফেলে দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসলো আবির। নিঃশব্দে এসে দাঁড়াল সারহানের পাশে।মুখটা করলার মতো হয়ে আছে। কাজে যাওয়ার আগে বিয়ে করা বউকে একটু চু*মু খেতে চেয়েছিল। কিন্তু কপালে সেসব তো নেই। ওষ্ঠযুগল বউয়ের নরম গালে ছোঁয়াবে তখনই বউ নামক জল্লাদ মহিলা গ্লাসের পানি ছুড়ে দেয় মুখে। বিয়ে করেও শান্তি নেই। এই দুঃখে আজ থেকে সে বউবিহীন থাকার জন্য বনবাসে যাবে। ভুলেও এ বাড়িতে পা রাখবে না।

“ কী হয়েছে তোর? মুখ ফুলিয়ে রেখেছিস কেনো? ”
সারহানের কন্ঠস্বর কর্ণকুহরে প্রবেশ করতেই আবিরের ধ্যান ভাঙে। মুখ ভার করে অভিযোগের স্বরে বলে ;
“ তোর বোন একটা জল্লাদ রমনী। একটা চু*মু খেতে চেয়েছিলাম আর সে আমার মুখে পানি ছুঁড়ে মা*রল। ”
সারহানের চক্ষুদ্বয় সংকুচিত হয়ে এলো। মুখ কিছুটা কুঁচকে গেল। বিরক্ত নিয়ে বলল ;
“ বউয়ের ভাইকে এসব বলতে লজ্জা লাগছে না? ভুলে যাস না আমি অরিনের বড় ভাই হই। ”
“ তাতে কী? তোর বোন আমার হকের দফারফা করছে। স্বামী হয়ে এসব আমি সহ্য করতে পারবো না। অরিনকে ভালো হতে বল নয়তো আমি বনবাসে যাবো। ”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“ শ্লা চুপ কর। তোদের হাসবেন্ড ওয়াইফের চক্করে আমায় কেন টানছিস? আমি পারবনা কিছু বলতে। ”
সারহান এদিক-ওদিক সতর্ক দৃষ্টিতে তাকিয়ে চাপা স্বরে কিছু বলল। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে গম্ভীর, সংযত কন্ঠস্বর।আবির পাশে দাঁড়িয়ে হতাশ ভঙ্গিতে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল।মনে হলো, নিজের প্রতি করুণা জন্মালো কিছুটা। বিরবির করে বলল“
“বিয়ে করেও যেন সিঙ্গেল! এর চেয়ে না হয় সিঙ্গেলই থাকতাম।”
মনেমনে ক্ষোভে ফুঁসতে লাগল আবির।কপাল বোধহয় খারাপ ছিল। তাই বউ হয়ে এলো অরিন নামক চঞ্চলা এক ধূর্ত রমণী।হঠাৎ কিছু টের পেয়ে করিডোরের দিকে তাকাল সে। দেখল অরিন দাঁড়িয়ে মুখ টিপে হাসছে তার দিকে তাকিয়ে।রাগে গা জ্বলে উঠল আবিরের।
চোখ রক্তবর্ণ ধারণ করল। কপাল ভাঁজে ভরে উঠল।এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল যেন চোখ দিয়েই আগুনে জ্বালিয়ে ভস্ম করে দেবে।কিন্তু অরিন? সে তো এসব দেখে আরও আনন্দিত।চোখে দুষ্টুমি ছড়িয়ে হঠাৎ ফ্লায়িং কিস ছুঁড়ে দিল আবিরের দিকে।তারপর ভেংচি কেটে দৌড়ে পালাল নিজের ঘরে।আবির দাঁড়িয়ে রইল স্তব্ধ হয়ে।চোখ বড় বড়, মুখ হা হয়ে গেল চরম বিস্ময়ে।

“কি চালু রমণী গো। এ তো বউ না, পাগল বানানোর মেশিন।”তার অবস্থা যেন “হৃদয় পুড়ে ছাই আর সেই ছাইয়েই অরিন পুনরায় আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। ”
“ বউকে দেখা হলে চল। ”
সারহান বিরক্ত স্বরে কথাটা বলতেই মুহূর্তে আবির সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। অপরাধীর মতো মুখচোখ লাল করে মাথা চুলকে আশেপাশে তাকায় যেনো কেউ না দেখে ফেলে তার ‘বউ-প্রেমিক’ মুড।তারপর তড়িঘড়ি করে পা চালিয়ে সোজা বাহিরের দিকে রওনা হয়।
সারহান ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে বুঝতে পারে আবির লজ্জা পেয়েছে।তার ভ্রু কুঁচকে উঠে বিস্ময়ে।
“বিয়ের পর ছেলেরাও এমন লাজুক হয়ে যায় নাকি?”এক ধরনের অদ্ভুত অভিজ্ঞতা মনে হলো তার জন্য।একসময়ের দুরন্ত আবির আজ বউয়ের একটা চাহনিতে অদ্ভুত আচরণ করছে এ যেন এক অবিশ্বাস্য রূপান্তর।সে প্যান্টের পকেট থেকে ফোন বের করে ইনানকে বার্তা পাঠাতে পাঠাতে ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় সদর দরজার দিকে।চোখেমুখে চিন্তিত ভাব স্পষ্ট।কোনো কিছু যেন তার ভাবনার গহীনে ঘুরপাক খাচ্ছে।

“ সারহান, খাবার না খেয়ে কোথায় যাচ্ছিস?”
তানিয়া বেগম কড়া কন্ঠে পেছন থেকে বলে উঠলেন। বোঝা যাচ্ছে রেগে আছেন তিনি। ছেলের এমন অদ্ভুত ব্যবহার মোটেও মেনে নিতে পারছেন না। বড় ছেলে মোটেও এমন একরোখা মনোভাবের ছিল না। কিন্তু রাজনীতিতে জরিয়ে ছেলেটা একদম বিগড়ে গেছে। বাড়িতে একটু স্থির হয়ে বাড়িতে থাকে না।
সারহান মায়ের কথা শুনে থেমে যায়। পুনরায় পিছে ফিরে তানিয়া বেগমের সামনে দাঁড়ায়। ব্যতিব্যস্ত ভঙ্গিতে বলল ;
“ প্রেস ব্রিফিং আছে সেখানে যেতে হবে। এখন খাবার খাওয়ার টাইম নেই। ”
তানিয়া বেগম রাগ দেখিয়ে বললেন ;

“ আমাকে কাজ দেখাতে আসবি না আব্বা। সকালে তোর ফুপি ডাকার পরেও কেনো খেতে আসিস নি। ”
“ ক্ষিধে নেই তাই খেতে আসিনি। প্রেস ব্রিফিং আছে আমার। আসছি আমি। ”
“ শুধু কাজ আর কাজ। বয়স দেখেছিস নিজের? আঠাশ পেরিয়ে যাচ্ছে। এবার অন্তত বিয়েটা কর। ”
“ আবার বিয়ের কথা কেনো টানছো মা? ”
“ তোকে বাড়িতে আটকে রাখার জন্য হলেও তোকে বিয়ে দেয়া দরকার। ”
“ বাড়িতে বসে থাকলে আমার কাজ কে করবে? ”
সারহান দুহাত বুকের নিচাংশে গুঁজে ভ্রুযুগল কুঁচকে স্বাভাবিক ভাবে জিজ্ঞেস করে। তানিয়া বেগম ছেলের মুখে কাজের কথা শুনে রেগে গেলেন। গমগমে কন্ঠে বললেন ;
“ তোর কাজ রসাতলে যাক। আজ রাতে বাড়ির সকলে মিলে বসবো তোর মেয়ে দেখা নিয়ে। আগামীকাল থেকে পাত্রী খুঁজবো। ”
সারহান গম্ভীর কণ্ঠে বলল ;
“ এসবের দরকার নেই। ”
“ কেনো দরকার নেই? ”
“ মা, আমার মনে হয় ভাই কাউকে পছন্দ করে আর সেই মেয়েকেই বিয়ে করবে। ”
তানিয়া বেগম এবং সারহানের কথোপকথনের মাঝে সাদাত কোথাও থেকে ছুটে এসে এতোদিন পেটে গোপন রাখা ফর্মুলা উগ্রে দিলো। সারহান চোখ পাকিয়ে তাকাল সাদাতের দিকে। সাদাত তা দেখে মায়ের পেছনে গিয়ে লুকালো। তানিয়া বেগম বিস্মিত হয়ে বড় ছেলের দিকে তাকালেন। বিস্ময় ভাব নিয়ে বললেন ;

“ আব্বা তুই কাউকে পছন্দ করিস? ”
সারহান স্বভাবসিদ্ধ কন্ঠে বলল ;
“ মা সাদাতের কথা বিশ্বাস করো না। ”
সাদাত ত্যাছড়া কন্ঠে বলল ;
“ মা তুমি একদম ভাইয়ের কথা বিশ্বাস করবে না। ভার্সিটিতে পড়াশোনা শেষ করা দামড়া রাজনীতিবিদের ছয় সাত বছরে কোনো মেয়ে পছন্দ হয়নি বা পছন্দের মেয়ে নেই এটা বিশ্বাস করা মানে আম গাছে কলা ঝুলছে এটা বিশ্বাস করার সমান।”
সারহান চোয়াল শক্ত করে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি স্থির করল সাদাতের মুখপানে। সাদাত সেই চাহনি উপেক্ষা করে ডেভিল মার্কা হাসল। তানিয়া বেগমের মনে বড় ছেলেকে নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হলো। তিনি কিছুক্ষণ মৌন রইলেন। অতঃপর সরাসরি জিজ্ঞেস করলেন ;

“ মেয়েটা কে সারহান? ”
সারহান মায়ের দিকে তাকিয়ে নির্লিপ্ত কন্ঠে বলল ;
“ কোন মেয়ে? ”
“ যে মেয়েকে পছন্দ করিস বাড়ির ঠিকানা বল দ্রুত। আমি আর তোর বাবা আজই মেয়েকে দেখতে যাব। ”
“ এসবের দরকার নেই মা। ”
“ দরকার আছে। আমি বুড়ো হয়ে যাচ্ছি। কখন ম*রে যাই তার ঠিক নেই। ম*রার আগে নাতী নাতনীর মুখ দেখতে চাই। ”
তানিয়া বেগম গমগমে কন্ঠে বললেন। সারহান কেশে উঠল। বিয়ের কোনো খবর নেই সরাসরি নাতী নাতনীর মুখ দেখার ইচ্ছা পোষণ করছে তার আম্মাজান?যদি বলে মেয়েটা আর কেউ নয় অরিত্রিকা তখন কী হবে? নিশ্চিত হার্ট এটাক করবে। সারহান হতাশার শ্বাস ফেলে বলল ;

“ মা মেয়েটার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। ”
তানিয়া বেগম অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালেন ছেলের দিকে। বিরক্ত হয়ে বললেন ;
“ বিয়ে ঠিক হয়েছে তো কী হয়েছে? মেয়েটা তোকে পছন্দ করে, ভালোবাসে? ”
সারহান সাবলীলভাবে বলল ;
“ নিভৃতসুধা আমাকে ভালোবাসে। ”
“ তাহলে চুপ করে বাড়িতে বসে শোক পালন করছিস কেনো হতচ্ছাড়া? মেয়েটাকে তুলে নিয়ে আয় এ বাড়িতে। ”
“ মা হয়ে ছেলেকে মেয়ে তুলে আনার জন্য আইডিয়া দিচ্ছো? ”
সারহান হতভম্ব হয়ে গেল। সাদাত উচ্চস্বরে হেসে উঠল। যেমন ছেলে তার তেমন মা। মা রকড ছেলে শকড। তানিয়া বেগম ঝামটা মে*রে বললেন ;
“ দশদিনের মধ্যে আমার পুত্রবধূ চাই। যদি না এনে দিতে পারিস আমি কিন্তু তোর নানার বাড়ি চলে যাব বলে দিলাম। ”
উক্ত কথাটি শেষ করে তানিয়া বেগম ধপাধপ পা ফেলে প্রস্থান করলেন সেখান থেকে। সাদাত হাসি থামিয়ে কোনো মতো বলল ;

“ ভাই সময় কিন্তু দশদিন। ”
সারহান মায়ের ব্ল্যাকমেইল করার ধরণ দেখে স্তম্ভিত। এ বয়সে ছেলের বউয়ের জন্য ছেলেকে ধমকি ধামকি দিচ্ছে? সব দোষ সাদাতের। সাদাত যদি না বলতো তাহলে এমন কিছু হতো না। সে শক্ত হাতে ধম করে সাদাতের পিঠে কিল বসিয়ে দিল। সাদাত ব্যথায় লাফিয়ে উঠল। এক লাফে সরে গেল অনেকটা দূরে। মুখ কুঁচকে বলল ;
“ তুমি আমায় মা*রলে? কোনো ব্যাপার না। আজ আমি মাকে বলে দেবো তুমি অরিত্রিকাকে ভালোবাসো। ”
এতটুকু বলেই সাদাত ছুট লাগালো মায়ের পেছনে। সারহানের মেজাজ গরম হয়ে গেল। সকাল থেকে নানা টেনশনে ঝড় বয়ে যাচ্ছে তার ওপর দিয়ে। এখন আবার নতুন টেনশন হাজির। সে এক মুহুর্ত দেরী করল না। বিরক্ত হয়ে দ্রুত পায়ে লিভিং রুম থেকে বেড়িয়ে গেল।

“ প্রিয়তে রাখি আপনাকে আমার কল্প পুরুষ। দূর থেকে ভালোবাসলেন। হঠাৎ কাছে আসলেন। মনের গহীনে লুকায়িত অনুভূতি প্রকাশ করলেন। এক চঞ্চলা মানবীকে মুগ্ধ করলেন। আপনার প্রণয়ে বিমোহিত করলেন। প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে দাঁড় করালেন। ভালোবাসতে শেখালেন। আপনাকে চিনতে শেখালেন। হয়তো আমার প্রণয়ানুভূতি আপনার ন্যায় দৃঢ় নয়। তবুও দোদুল্যমান অনুভূতি নিয়েই আপনাকে ভালোবাসি। ”
অরিত্রিকা ছাদের এককোণে দোলনায় বসে বসে আছে। সকালের মিষ্টি রোদ ছুঁয়ে যাচ্ছে তাকে। অদূর অম্বরে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে। ওষ্ঠ কোণে বিরাজ করছে মিষ্টি হাসি। আনমনে মৃদু হেসে সারহানকে ভেবে চলেছে সে। থেমে থেমে বিরবির করে নিজমনে বলে চলেছে মনের ভেতরে চলমান ভাবনা। একাকী বসে নিজের অনুভূতির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে। তার কোলে গুটিসুটি মে*রে শুয়ে আছে লেভি। আয়েশ করে চুপচাপ ঘুমিয়ে আছে সেথায়।

“ অরিত্রিকা। ”
পুরুষালি চেনা স্বরে অরিত্রিকার ভাবনার ছেদ ঘটল। চকিত নয়নে তাকাল সামনের দিকটায়। সামনে দন্ডায়মান মানুষটিকে দেখে হাসার ভাণ করল সে। ইরফান দাঁড়িয়ে আছে গম্ভীরমুখে। চক্ষুদ্বয় অস্বাভাবিক লাল। মানুষটাকে দেখে কেমন যেন স্বাভাবিক মনে হলো না। সৌজন্য বজায় রাখতে শুধালো ;
“ কিছু বলবেন ইরফান ভাই? ”

ইরফান নড়েচড়ে উঠল। কিছুটা এগিয়ে আসল অরিত্রিকার দিকে। প্রাণোচ্ছল, হাস্যরত মেয়েটিকে দেখে মন শান্ত হয়ে গেল। তার ভালোবাসার মানুষের ছোট্ট কথাও মন ভালো করতে সক্ষম। হঠাৎ নিগূঢ় অন্ধকারে মন ডুবে গেল। সারহান এবং অরিত্রিকার কিছু মুহুর্ত চক্ষুপটে ভেসে উঠল। মুহুর্তেই মন বিষিয়ে গেল। ক্ষণিকের ভালোলাগা কর্পূরের ন্যায় মিলিয়ে গেল কোথাও। মন ডেকে বলল, সারহান অরিত্রিকাকে ভালোবাসে আর অরিত্রিকা সারহানকে ভালোবাসে।” ইরফান সকাল থেকে নিজেকে শান্ত রাখতে পারছে না। কেন যেন মনে হচ্ছে সারহান হয়তো মিথ্যা বলছে। অরিত্রিকা সারহানকে ভালোবাসে তা মিথ্যা। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে অরিত্রিকাকে তার মনের কথা বলবে আজ আর জিজ্ঞেস করবে সারহানের সাথে তার কী সম্পর্ক।

“ বলার অনেক কিছু আছে অরিত্রিকা কিন্তু আপাতত সেসব নিয়ে কথা বলার ইচ্ছে আমার নেই। এই মুহুর্তে তোর মুখ থেকে শুধু একটা প্রশ্নের উত্তর জানতে চাই।”
ইরফান নিজের অশান্ত মনকে উপেক্ষা করে বলল কথাটা। অরিত্রিকার কপাল কুঁচকে গেল। ইরফান ভাই হঠাৎ কীসের প্রশ্নের উত্তর জানার কথা বলছে? চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল ;
“ কী প্রশ্ন? ”
ইরফান মলিন হাসল ;
“ বলবো একটু ধৈর্য ধর। প্রশ্নটা করার আগে তোকে কিছু বলতে চাই। ”
“ কী বলতে চান বলুন। ”

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৪১

অরিত্রিকা স্বাভাবিক ভাবে বলল। অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে লাগল ইরফান কি বলবে শোনার জন্য। কোনো সিরিয়াস বিষয় নাকি। অনেকক্ষণ পেরিয়ে গেলেও ইরফানের কোনো নড়চড় দেখল না। কেমন যেন থম মেরে দাঁড়িয়ে আছে। অরিত্রিকা অধৈর্য হলো। পুনরায় বলল ;
“ কী বলতে চান ফটাফট বলে ফেলুন। ”
ইরফান শ্বাস টেনে নিলো। সাহস সঞ্চার করে দ্রুততার সহিত বলল ;
“ আই লাভ ইউ অরিত্রিকা। ”

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৪২