প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৭

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৭
আদ্রিতা নিশি

ডাইনিং রুমের পরিবেশ নিরব এবং স্তব্ধ হয়ে আছে । চারপাশে বিরাজ করছে গভীর নিস্তব্ধতার শাসন। কারো মুখে কোনো শব্দ নেই, সবার চোখেমুখে এক ধরনের জড়তা। মনে হচ্ছে সবাই একসাথে কোনো দুঃসহ বাস্তবতাকে উপলব্ধি করার চেষ্টায় নিমগ্ন। হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনাটি বজ্রপাতের মতো আঘাত করেছে তাদের সত্তায়।সাদাত মায়ের পাশে নীরব ভঙ্গিতে বসে আছে মাথায় দুই হাত চেপে ধরে। তার চেহারায় হতবুদ্ধি ভাব। মাথার ভেতর চিন্তার ঝড় বইছে। ইশরা একপাশে মুখ ফুলিয়ে বসে আছে। তার চেহারা অভিমান আর বিস্ময়ে আচ্ছন্ন। তার মনে কোনোভাবেই আসল ঘটনার পূর্ণ রূপটা স্পষ্ট হয়ে উঠছে না। অরিত্রিকার ঠোঁটে হাসির রেখা ফুটে উঠেছে ।

তার চোখ সিঁড়ির দিকে নিবদ্ধ। সে অপেক্ষা করছে সেই সময়ের জন্য যখন তানিয়া বেগমের রোষের তীব্র ঝাঁজ সারহানের উপর ঝরে পড়বে। সেই দৃশ্য দেখার মধুর প্রতীক্ষায় তার চোখে আনন্দের জোয়ার বইছে । সারহান ভাই যে এমন এক ছুপা রুস্তম হতে পারেন তা তার কল্পনারও বাইরে ছিল। অরিত্রিকার দৃষ্টি ঘুরিয়ে বাড়ির সদর দরজার দিকে তাকায়। তার চোখে গভীর প্রতীক্ষার ছাপ। সে অপেক্ষা করছে আরশাদ সাহেব ও আজমল সাহেবের আগমনের।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সবার প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলো সারহান। তার মুখাবয়ব যেন কঠিন শিলাখণ্ড।যেখানে বিরক্তির রেখা স্পষ্টভাবে খোদিত। কপালে চিন্তার ভাঁজ আর তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে প্রতিফলিত দৃঢ়তার অভিজ্ঞান। তার চলার ভঙ্গিমা ভারি।তার পিছু পিছু কাঁচুমাচু মুখে নেমে এলো অরিন। তার চেহারায় এক অদ্ভুত লজ্জা আর সংশয়ের মিশ্রণ। সে তাড়াহুড়ো করে পা চালিয়ে অরিত্রিকার পাশে গিয়ে দাঁড়াল।অরিত্রিকার ঠোঁটে এখনও সেই বিদ্রুপমাখা হাসির আভাস কিন্তু চোখে দৃষ্টির শাণ আরও প্রখর হয়ে উঠেছে।
তানিয়া বেগম থমথমে গলায় বলে উঠল ;
“ এসব আমি কি শুনছি সারহান। ”
সারহান দাম্ভিক ভঙ্গিতে এগিয়ে আসে। সাদাতের পাশে বসে আরাম করে। ভ্রু যুগল কুঁচকে আগ্রহী হয়ে জিজ্ঞেস করে ;

“ কি শুনেছো? ”
“ শুনলাম তুমি নাকি গোপনে বিয়ে করেছ?”
হঠাৎ করে আজগুবি কিছু কথা শোনার পর সারহানের মুখাবয়ব পরিবর্তিত হয়ে গেল। তার চিন্তা এক মুহূর্তেই ঘুরে গেল। সে আন্দাজ করল নিশ্চয়ই সাদাত এসে এসব অবাস্তব কাহিনী সাজিয়ে বলেছে। ভেবেই তার মেজাজ আরও খারাপ হয়ে গেল। নিজের বাড়িতে এইসব গাধাগুলোর উপস্থিতি কেন তা তার মাথায় ঢুকতে চায় না। সামান্য কিছু ঘটলেও তারা সেটা বড় করে দেখার অভ্যাস এখনো ত্যাগ করতে পারেনি।
সারহান বাঁকা দৃষ্টিতে সাদাতের দিকে তাকাল। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে। সেই দৃষ্টি কঠোর প্রখর আর অজানা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।সে এক হাতে সাদা তের কান চেপে মলে দিল। সাদাত তখনই দুহাতে কান চেপে ধরে মৃদু চিৎকার করে উঠল। কানের জীবন বাঁচানোর জন্য সে তৎপর হয়ে উঠল যেন সারা দুনিয়ার সমস্যা সন্নিবেশিত হয়ে তার কানে এসে পড়েছে।

“ এসব কথা নিশ্চয়ই বদমাশটা বলেছে। ভালো করে কিছু না বুঝে শুনে উল্টা পাল্টা কথা তোমাদের কাছে এসে বলেছে আর তোমরা সেটার সুত্র ধরে আমায় সন্দেহ করছো। আমার এতোটাই খারাপ সময় আসেনি যে লুকিয়ে বিয়ে করব, তারপর বউ লুকাবো আবার লুকিয়ে বাচ্চা পয়দা করব। ”
সারহান রাশভারি কন্ঠে বলল। সাদাতের অবস্থায় তার বেহাল অবস্থা। ব্যথায় একটু পর পর ব্যাঙের মতো লাফিয়ে উঠছে। চোখ মুখ খিঁচে কাঁদো কাঁদো মুখে বলে উঠল;
“ ভাই কান ছেড়ে দাও। কানে লাগছে। ”
সারহান কুটিল হেসে বলল;
“আর কোনোদিন বেশী বুঝে লাফালাফি করবি?”
“ আর কোনোদিন হবে না। ”
“ গুড। ”

সারহান কান ছেড়ে দিতেই সাদাতকে আর পায় কে। সে সোফা থেকে এক লাফ দিয়ে উঠে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে গেল। একহাতে গান ডলতে ডলতে মুখ গোমড়া করে বলল;
“ এই ভাবে কেউ কান ধরে? আর একটু হলে আমার এতো সাধের কান ছিঁড়ে যেত। তখন আমার কি হতো? বিয়ে করতে গেলে বলত জামাইয়ের কান কাটা। ”
“ তাই নাকি। ”
“ হ্যা ভাই। আর একটু হলে তোমার জন্য আমার বিয়ের ফুল ঝরে যাচ্ছিল। ”
“ বিয়ের শখ জাগছে? চল তোকে বিয়ে করিয়ে নিয়ে আসি। ”
সারহানের শান্তস্বরের হুমকিতে সাদাত দবগে গেল। সে ঠোঁটে আঙ্গুল গুঁজে চুপচাপ সিঁড়ির ওপর বসল। এতোক্ষণে উপস্থিত সকলে বুঝল আসলে কোথায় গলদ ছিল। তানিয়া বেগম যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। আর একটু হলে টেনশনে তার পেশার বেড়ে যাচ্ছিল। সাথী বেগম মৃদু হেসে বললেন ;
“ আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল সারহান এমনটা কোনোদিন করবে না। ছোট থেকে দেখেছি তাই বিশ্বাসের জায়গাটা বেশ পাকাপোক্ত। আব্বা বিয়ে করলে বলো আমরা দেখেশুনে লক্ষী মন্ত মেয়ে খুঁজে দিব।”

সারহান নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে মাথা দুলালো শুধু। অরিত্রিকা মুখ বাঁকাল মায়ের কথা শুনে। এ্যা আসছে কোন আব্বাজান তার জন্য চোদ্দগুষ্টি ধরে মেয়ে খোঁজার মিশনে লাগতে হবে। নিজের মেয়েরা যে বিয়ের উপযোগী হয়ে যাচ্ছে সেদিকে তো খেয়াল নেই। এসব পড়াশোনা আর করতে ইচ্ছে হয় না তার। মন চায় একটা হ্যান্ডসাম ছেলেকে পটিয়ে বিয়ে করে বিদেশে সেটেল্ড হতে। তারপর সেখানকার সব জায়গায় ঘুরবে, ছবি তুলবে। এটাই তো লাইফ। এই স্বপ্ন কোন জীবনে পূরণ হবে কে জানে। মুখটা কেমন নিশপিশ করছে। মনে হচ্ছে কোনো কথা গলা হতে বের হতে চাইছে।
“ মা সারহান ভাইয়ের জন্য মেয়ে না খুঁজে তোমার মেয়েদের জন্য ছেলে খোঁজো। চোখের সামনে দুটো মেয়ে বিয়ের উপযোগী নেচে গেয়ে বেড়াচ্ছে সেদিকে একটু খেয়াল রাখো।”

সাথী বেগম তীব্র রাগ ও অসন্তোষের সাথে মেয়ের দিকে চোখ গরম করে তাকালেন। তার দৃষ্টি ছিল একান্তই কঠোর। এই মেয়ে কখনোই বুঝবে না কোথায়, কখন এবং কীভাবে কথা বলা উচিত। অরিত্রিকা হয়তো এই জন্মে সুবুদ্ধি লাভ করবে না। যেখানে সেখানে বেফাঁস কথাবার্তা বলে ফেলে।অরিত্রিকা তার মায়ের রাগান্বিত দৃষ্টি দেখার পরেও একেবারে নির্লিপ্ত ও অপ্রভাবিত বোধ করছে। “ডোন্ট কেয়ার” মনোভাব নিয়ে সে বসে আছে। তার কাছে চারপাশের সব কিছু তুচ্ছ এবং অস্বীকারযোগ্য। তার মুখাবয়বে কোনো অনুশোচনা বা সঙ্কোচের ছাপ নেই।ইশরা মুখে হাত চাপা দিয়ে ফিকফিক করে হেসে ওঠে।অরিন এই সব কিছু দেখে বিভ্রান্ত হয়ে একদিকে বোনের দিকে তাকাচ্ছে আরেকদিকে মায়ের দিকে। তার চোখে দ্বিধা এবং অস্বস্তি প্রকাশ পাচ্ছে। সে বুঝে উঠতে পারছে না এই পরিবেশে তার প্রতিক্রিয়া কী হবে।

তানিয়া বেগম হেসে বললেন ;
“ কেমন ছেলে চাস? ”
অরিত্রিকা নিজের দলে একজন পেয়ে গদগদ ভাব নিয়ে বলল ;
“ শান্ত, ভদ্র, হ্যান্ডসাম এমন কোয়ালিটি অবশ্যই থাকতে হবে। আর মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট কথা হলো আমি যেহেতু ঘুরতে ভালোবাসি, বাহিরের দেশে ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছে আছে তাই ছেলেকে অবশ্যই ভ্রমণ প্রেমী হতে হবে। তারপর বাহিরের দেশে যেন একবারে সেটেল্ড হওয়া লাগবে। ”
তানিয়া বেগম অরিত্রিকার বাচ্চাসুলভ কথায় একটু হাসলেন। সারহান এতোক্ষণ চুপচাপ কথা শুনছিল। এবার বাঁকা হেসে বলল;
“ এমন একটা ছেলে আমার হাতে আছে বুঝলি। তুই যা বললি তাতে একদম খাপে খাপ মিলে যাবে। কিন্তু সমস্যা হলো ওই ছেলে তোর মতো তাড়ছ্যাড়া। ”
অরিত্রিকা কটমট করে তাকায়। ঝাড়ি মেরে বলে ;
“ আপনি তারছ্যাড়া, আপনার চৌদ্দ গুষ্টির তারছ্যাড়া।”
“ চৌদ্দগুষ্টির মধ্যে তুই একজন। ”

সারহানের তীক্ষ্ণ ও তিক্ত কথায় অরিত্রিকার মধ্যে তীব্র রাগের সৃষ্টি হলো। তার মনে হচ্ছিল এই মানুষটার মাথা ফাটিয়ে দেয়াই উচিত কিন্তু অতি কষ্টে সে ভাবনা দমিয়ে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করল।অরিত্রিকা মনে মনে সিদ্ধান্ত নিল মাথা ঠান্ডা করে ভাবতে হবে কেননা শুধুমাত্র উত্তেজনায় কিছু করার মধ্যে কখনো সমাধান নেই। তার একমাত্র লক্ষ্য ছিল সারহানকে এমনভাবে শায়েস্তা করা। যাতে সে পরবর্তীতে আর কোনোদিন তার সামনে এমন কথা বলার সাহস না পায়। মনে মনে নানা পরিকল্পনা করতে লাগল।
তানিয়া বেগম বললেন ;
“ হয়েছে দুজন চুপ কর।”
সারহান ব্যস্ত ভঙ্গিতে হাতে থাকা ঘড়িতে সময় দেখে নিল। সাথী বেগমকে উদ্দেশ্য করে বলল;
“ চাচী আজ বিকেলে ফাইরুজের ড্রেসিং করার কথা। ”
“ এই দেখো, আমি তো ভুলে গিয়েছিলাম। তোমার চাচা অরিত্রিকাকে নিয়ে হসপিটালে যেতে চেয়েছিলেন বিকেলে কিন্তু উনার কোনো খবর নেই।”

“ অনেকদিন পর চাচা আর বাবা একসাথে হয়েছেন। দুই ভাই নিশ্চয়ই গল্পে মশগুল। ”
“ তা ঠিক। আমি এই ঢিংগি মেয়েকে নিয়ে আর পারি না। এতো বড় কাহিনী ঘটিয়ে এসে দিব্যি চ্যাটাং চ্যাটাং করে মিথ্যা বলেছে। এখন হসপিটালে দৌড়াদৌড়ি করতে হচ্ছে। “
অরিত্রিকা সাথী বেগমের কথা শুনে নাক ফুলাতে লাগল। মুখ গোমরা করে মাথা নিচু করে রইল। সাথী বেগম সবসময় তাকে কথা শোনায়। কারো সামনে আর মানসম্মান রাখল না। সারহান তা অবলোকন করে বলল;
“ চাচি যা হওয়ার হয়ে গেছে। সেই ঘটনায় ফাইরুজের কোনো দোষ ছিল না। ”
“ থাক ওর হয়ে আর কথা বলো না। ”
“ চাচার যেহেতু আসতে লেট হবে আমি অরিত্রিকাকে নিয়ে হসপিটালে যাচ্ছি। ”
সারহানের শান্ত স্বর। সাথী বেগম শুনে মৌন রইলেন। ভাবছেন কি বলবে। অরিত্রিকা হতবাক হয়ে একরাশ বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে সারহানের দিকে। সে ভাবছে সূর্য আজ দিক ভুল করল নাকি। আজ হঠাৎ করে হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছে। নিশ্চয়ই কোনো বদ মতলব আছে। হসপিটাল থেকে আসার সময় যদি মাঝ রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে আসে তখন কি হবে। এই যন্ত্রমানবকে বিশ্বাস করা যায় না যা ইচ্ছে তাই করতে পারে।
সাথী বেগম বললেন ;

“ ঠিক আছে নিয়ে যাও। ”
অরিত্রিকা মুখ ভার করে সারহানের দিকে তাকায়। সারহান স্বাভাবিক ভাবে তার দিকে তাকিয়ে আছে। সে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে থমথমে গলায় বলে ;
“ আমি ইশরাকে আমার সাথে নিয়ে যাব। সাদাত তুই যাবি?”
শেষোক্ত কথাটি সাদাতকে উদ্দেশ্য করে বলল। সাদাত দু পাশে মাথা নাড়িয়ে তড়িঘড়ি করে বলল ;
“ আজ আর যেচে বাঘের মুখো হবো না। তুই যা বইন।”
অরিত্রিকা তিরিক্ষি মেজাজ নিয়ে ধপাধপ চলল তার রুমের দিকে। সে ভেবে পায় না আবার এই বদমানুষটা তার শান্তির জীবনে অশান্তি লাগাতে এসেছে।

সারহান গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে। চোখে কালো চশমা, মুখে গাম্ভীর্য ভাব। ভ্রু যুগল বাঁকিয়ে তীক্ষ্ণ চোখজোড়া সদর দরজায় নিবদ্ধ করে রেখেছে। বিরক্ত লাগছে বটে। এদিক ওদিক তাকিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে। মেয়ে মানুষ মানে সবসময় লেট করবে। সারহানের থেকে কিছুটা দুরে আরেকটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। সেখানে তিনজন দেহরক্ষী সতর্কতার সহিত নজর বুলাচ্ছে।
অরিত্রিকা আর ইশরা বাড়ি থেকে বের হলো হাসতে হাসতে। অরিত্রিকার পরনে নেভি ব্লু কুর্তি, চুলগুলো খোলা তবে ক্লিপ লাগিয়ে রেখেছে, হালকা সাজে যেন মোহনীয় লাগছে। দুজন গল্পে বেশ মশগুল। আশেপাশে কি হচ্ছে তাদের কোনো খেয়াল নেই। গাড়ির কাছে আসতেই অরিত্রিকা হোঁচট খেল। ধম করে পড়ল সারহানের সামনে। পায়ে আঘাত লাগায় অবর্ণনীয় ব্যথায় আর্তনাদ করে উঠল।

সারহান হঠাৎ শব্দ পেয়ে সামনে তাকাল। তার চোখে প্রথমে কিছুটা অবাক ভাব এল কিন্তু দ্রুতই সে তার মনোভাব পরিবর্তন করে। বিরক্ততে মুখ কুঁচকে আসে। অরিত্রিকা মাটিতে পড়ে গেছে এবং তার শরীরের দিকে তাকিয়ে সে তৎক্ষণাৎ দ্রুততার সহিত এগিয়ে গিয়ে অরিত্রিকার বাহু ধরে তাকে উঠিয়ে ফেলল।কপাল কুঁচকেধমক দিয়ে বলল,
“চোখ কোথায় থাকে তোর, ইডিয়েট?”
অরিত্রিকা ব্যথা ভুলে দৃষ্টিনত করে বিরস মুখে উত্তর দেয়;
“ চোখ চোখের জায়গায় থাকে। আপনি এমন উদ্ভট প্রশ্ন করেন কেন? ”
“ তুই আসলে একটা ষ্টুপিড। ”
সারহান দাঁতে দাঁত চেপে বলে। অরিত্রিকা খেয়াল করে সারহান তার দুবাহু ধরে আছে। সে অপ্রস্তুত হয়। মিনমিন করে বলে ;

“ সারহান ভাই ছাড়ুন।”
সারহানের হাত আলগা হয়ে আসে। সে অরিত্রিকাকে ছেড়ে দেয়। তার চোখে বিরাজ করছে কঠোরতা, কিন্তু সে কোন প্রতিবাদ করল না। রাশভারী কণ্ঠে কোনো সমঝোতা বা অনুভূতি প্রকাশের কোনো ইচ্ছা নেই।সে শুধু বলল,
“দুজন গাড়িতে ওঠ।”

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৬

সারহান কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাল না, তার মুখাবয়বে কোনো পরিবর্তন এল না। সে আর সময় নষ্ট না করে, দ্রুত গাড়ির দরজা খুলে সামনে বসে গেল। তার অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা বাহ্যিকভাবে একদমই প্রকাশ করার ইচ্ছে নেই। অরিত্রিকা মলিন মুখে তাকায় সারহানের দিকে। সে ভেবে পায় না সারহান ভাই তাকে কেন এতো বকে। অসহ্যকর মানুষ একটা। অরিত্রিকা সেসব ভাবনা বাদ দিয়ে জামায় লেগে থাকা ময়লা ঝেড়ে গাড়িতে বসে পরে। বেচারা ইশরা হতাশ হয়ে বসে অরিত্রিকার পাশে। এই দুজন একসাথে হলে ফাইট লাগবেই। এর মাঝে গাড়ি স্টার্ট দিল।

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৮