প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ১১
Zannat Xhowdury
তোকে বলা যাবেনা ?তুই ছোট মানুষ নিচে গিয়ে চুপচাপ খেতে বস আমরা আসছি ।
আচ্ছা নির্ণয় ভাই বলেন তো আমার সাথে আপনার কি শত্রুতা কোন ফেরে আপনি সবসময় এমন করেন আমার সাথে ।
তুই আমার জাত শত্রু এভার যা তো !
দেখলে ভাইজান উনি ..
কথা শেষ করার আগেই রিয়ানে রাম ধমকে থেমে গেলো রোজা
থামবি তোরা দা – কুমড়োর মতো লেগে থাকিস দুজনে । রোজা বুড়ি নিজে গিয়ে খাবার খা রিধিমা অপেক্ষা করছে । আজকে ভার্সিটির প্রথম দিন লেট যেন না হয় ।
তুমি আমাকে নিয়ে যাবে তো ভাইজান ।
কথাটা বলেই রিয়ানের মুখ পানে তাকালো রোজা সাথে নির্ণয় কেও আড় চোখে পর্যবেক্ষণ করলো !
নির্ণয় দাত কিরমিড় করে তাকিয়ে আছে রিয়ানের দিকে । রিয়ান বেশ বুঝতে পাড়লো সে বড় ফেসেছে দুজনের মাঝে । একবার নির্ণয়ে রাগি মুখ আর একবার রোজার দিকে তাকাচ্ছে সে ।
কি হলো ভাইজান বলো ? যাবে তো নিয়ে । আমি কিন্তু তোমার সাথেই যাবো, নাহলে আজি ফোন করে বাসায় বলবো আমাকে বাংলাদেশ ব্যাক নিয়ে যেতে ।
আআ আসলে রোজা হয়েছে কি আমি আর তৃধা একটু কাছে বেরোবো তুই আজ ভাইয়ের সাথে ভাই যা আমি বরং অন্য দিন তোকে নিয়ে যাবো ।
কিন্তু ?
অনলি ৫ মিনিট এর মধেই তোকে খাবার টেবিলে চাই আমি রোজ । নাহলে এবার বিনা টিকিটে বাংলাদেশ পাঠাবো তোকে ।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কথা শেষ করেই বড় বড় পা ফেলে রুম ছেড়ে বেরিয়ে গেলো নির্ণয় ।
দেখলে তো ভাইজান নির্ণয় ভাই কেমন ধমকে গেলো আমাকে । আমি বাংলাদেশ যাবো ভাইজান এই অসভ্য লোকের কাছে থাকবো না । তুমি আমকে বাংলাদেশ দিয়ে এসো ।
২মিনিট এখানেই শেষ রোজ । বাকি সময় নষ্ট না করে জলদি যা নাহলে ভাই দুজনের গর্দান নিবে ।
ভাইজান তুমি ও ।
অসহায় মুখে তাকালো রিয়ান বোনের পানে । রোজা দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস টেনে বেড়ি পড়লো রুম থেকে ।
খাবার টেবিলে বসে আছে নির্ণয় । রিধিমা প্লেটে খাবার সার্ভ করছে। দ্রুত কদমে দৌড়ে এসে নির্ণয় পাশে চেয়ার টেনে বসলো রোজা তার পিছনে এলো রিয়ান আর তৃধা । রোজা কে আসতে দেখে বাঁকা হাসলো নির্ণয় । টেবিল থেকে একটা প্লেট উঠিয়ে নিতেই তা টেনে সরিয়ে নিলো নির্ণয়।
একি নির্ণয় ভাই এখন কি খাবার খেতেও দিবেন না।
খেতে দিবো না কখন বললাম ;
তাহলে প্লেট নিয়ে নিলেন কেনো ?
আমার হাতে খাবার খাবি তুই ।
কেনো আমার হাতে কি ঠাডা পরেছে ? যে আপনার হাতে খাবো ।
বাংলাদেশে তো ঠিকি রিয়ানের হাতে খেতি এখন আমার হাতে খেলে সমস্যা কই তোর ?
তো এখনো তো ভাইজান আছেই খেলে ওনার হাতে খাবো আপনার হাতে না । আপনি স…… কথা শেষ করার আগেই মুখে খাবার পুরে দিলো নির্ণয় ।
জেদ না করে জলদি শেষ কর । ভার্সিটির জন্য লেট হচ্ছে ।
মাছ বেছে দেন আগে, মাছ না খেয়ে যাবো না ।
পাশে থেকে বাটিতে বাছা মাছ এগিয়ে দিলো রিধিমা । নির্ণয় বাটি থেকে মাছ নিয়ে ভাতের সাথে খাইয়ে দিতে লাগলো ।
রোজাকে খাইয়ে মুখ মুছিয়ে দিলো নির্ণয় । তারপর টেবিল থেকে উঠে যেতে যেতে বললো আমি বাইরে ওয়েট করছি কাম ফাস্ট।
রোজা মুখ বাঁকিয়ে বিদায় নিলো সকলের কাছে । আজ ভার্সিটির প্রথম দিন । তাই একটুও ঝগড় করতে চায়না সে নির্ণয়ের সাথে ।
ড্রাইভিং সিটে ড্রাইভ করছে নির্ণয় পাশেই বসা রোজা যার দৃষ্টি এখন বাহিরের তুষার পাত দেখতে মহা ব্যাস্ত । নির্ণয় যেন তাতেই ভীষণ বিরক্ত লাগলো । ধুম করে কাচ তুলে দিতে রেগে বোম হয়ে গেলো রোজা।
আপনার কি আমার সুখ সহ্য হয় না নির্ণয় ভাই ?
তোর এমন কেন মনে হলো !
আমি শান্তিতে থাকতে চাইলেই আপনি হানা দেন !
আবার দূরে যেতে চাইলে কাছে নেন। আপনার কি মনে হয় আমার কোনো ফিলিংস নেই।আপনি কেন এমন বলেন তো
নির্ণয় মুসকি হাসলো । রাগে এই মেয়ের হিতাহিত জ্ঞান লোপ পেয়েছে ।
তোর কি মনে হয় না তুই আমাকে নিয়ে একটু বেশি ভাবিস ?
ফা** ক ওফ নির্ণয় ভাই ।
সিরিয়াসলি রোজ ! আমাকে সামলাতে পারবি !
এবার বেশ লজ্জা পড়লো রোজা , লজ্জাই গাল দুটো লালা বর্ণ ধারণ করেছে । নির্ণয় সেদিকে তাকিয়ে বেশ উচ্চস্বরে হেসে উঠলো ।
ইসস কি সুন্দর সে হাসি ছেলেরা হাসলে বুঝি এতো সুন্দর লাগে ! অজান্তেই ভালো লাগা খেলে গেলো অষ্টাদশীর মনে।ফুটে উঠলো সুপ্ত ভালোলাগা!
বেশ কিছুক্ষণ পর ভার্সিটির সামনে এসে থামলো রোজাদের গাড়ি । গাড়ি পার্কিং করে রোজাকে নিয়ে ভার্সিটির গেটে পা রাখতেই একদল ছেলেমেয়ে এসে নীড় নীড় বলে ঘিড়ে ধরলো তাদের । নির্ণয় শক্ত করে রোজা হাত চেপে ধরলো পর মূহুর্তে দুজন কালো পোশাক পরিহিত লোক এসে ছেলেমেয়েদের সাইডে সড়িয়ে নির্ণয়দের যাওয়ার জায়গা করে দিলো । এত ক্ষণের ঘটা সকল ঘটনা যেন রোজার মাথা উপর দিয়ে উড়ে গাছের ডালে গিয়ে বসেছে । নির্ণয় কে কিছু বলার আগেই সে বলে উঠলো ।
তোর মোটা মাথায় এত চাপ দিয়ে ফাটানোর কোনো দরকার নেই ।
রোজা এবারো কিছু বুঝলো কি না কে জানে । নির্ণয়ের হাতের বাঁধনে তার হাত থাকায় তাল মিলিয়ে হেটে চলেছে নির্ণয়ের সাথে
হঠাৎ কিছু বুঝে ওঠার আগেই কই থেকে এক মেয়ে এসে জড়িয়ে ধরলো নির্ণয় কে রোজা যেন চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম ।
নিজের বুকের উপর কারো অস্তিত্ব বুঝতে পেরেই চোয়াল শক্ত হয়ে এলো নির্ণয়ের ।
ওহ নীড় বেবি আই মিস ইউ !
এতো দিন কোথায় ছিলে তুমি ?
এক ঝটকায় নিজের বুক থেক সরিয়ে দিতেই তাল সামতে না পেড়ে মাটিতে আছড়ে পড়লো মেয়েটি । তা দেখে ফিক করে হেসে দিলো রোজা !
রোজা কে হাসতে দেখে ভীষণ রেগে গেলো মেয়েটি পড়া থেকে উঠে দাঁড়িয়ে রাগে রি রি করতে করতে নির্ণয়ের উদ্দেশ্য বললো
আমায় ফেললে কেন বেব । কত ব্যাথা পেয়েছি জানো ? আর এই মেয়ে টা কে ?
সি ইজ মাই হার্ট । সো ওকে সম্মান দিয়ে কথা বলো জারা ।
ও তোমার হার্ট হলে আমি কি নীড় ?
ইউ জাস্ট মাই ফ্রেন্ড ! কতবার বলতে হবে তোকে, আর সবসময় এইভাবে গায়ে পড়িস কেন তুই ।
এই প্রোস্টিটিউটার জন্যই তুমি তাহলে আমাকে ইগনোর করছো দু টাকার মেয়ে ওকে তো আমি
বলেই থাপ্পড় মারতে উদয় জাড়া ! তা দেখে চোখ মুখ খিচে নিলো রোজা তবে বেশ কিছক্ষণ পড়েও ব্যাথা অনুভব না হওয়ায় চোখ খুললো সে আর তাতেই যেন বেশ বড় শক খেলো সে ! মাটিতে পড়ে আছে জাড়া ঠোঁটে এক কোন কেটে রক্ত ঝড়ছে তার ।
তোর সাহস হয় কিভাবে ওকে মারার জন্য হাত তুলার । ওর তোলোর মতো শরীরে তোর নোংড়া হাত লেগে নোংরা করার মতো সাহস এর পর যদি দেখিয়ছিস আজকে থাপ্পড় মেরেছি এর পর জানে মেরে দিবো মাইন্ড ইট জানে মেরে দিব ।
রোজার হাত শক্ত করে ধরেই সামনে এগিয়ে গেলো নির্ণয় । পেছনে ফেলে গেলো রাগে প্রতিহিংসায় জ্বলতে থাকা এক জোড়া চোখ।
রোজাকে ক্লাস দিয়ে বেড়িয়ে গেছে নির্ণয় । তবে ক্লাসে বিন্দু পরিমাণ মনোযোগ নেই রোজার । তার মাথায় ঘুরছে নির্ণয় বলা তখনকার কথাগুলো ।
“সি ইজ মাই হার্ট ” তার নির্ণয় ভাই তাকে হার্ট বলেছে ভাবনার মাঝেই হঠাৎ নির্ণয় কে অনুভব করছে সে !
আমার রোজ পাখির কি হয়েছে হুম ।
রোজা হঠাৎ জড়িয়ে ধরলো তাকে নির্ণয় ও মুসকি হেসে আগলে নিলো তাকে
ও নির্ণয় ভাই এক আকাশ পরিমাণ ভালোবাসুন না আমায়।
আমার মতো সূন্দরী অষ্টাদশী কি আপনার চোখে পড়ে না ।
আমার এই ফিগার কি আপনার মনে ধরে না ।
আমার এই গোলাপি ঠোঁট কি আপনার মন শিহরিত করে না।
তবে কেন আপনার সব কিছু আমাকে আপনার কাছে টানে
কেন আপনি আশেপাশে থাকলে তলপেটে প্রজাপতি উড়ে ।
কেন নিজেকে আপনার বাহুতে আবধ্য করতে ইচ্ছে হয় ।
জানেন আমি না সিনেমায় দেখেছি
হিরো হিরোইনের গোলাপি ঠোঁটের প্রেমের পড়ে।
লম্বা চুলের প্রেমের পড়ে ।
আর আপনি প্রেমে পড়বেন কিভাবে
আমার দিকে তাকানোর তো সময় নেই আপনার ।
প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ১০
আপনি এতো নিরামিষ কেন বলুন তো।
আপনি কি আমার হবেন নির্ণয় ভাই ।
কি এমন হবে বলুন তো
বিধাতা আপনাকে আমার করে দিলে ।