প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ২৮ (৪)
Zannat Xhowdury
প্রায় শেষ প্রহর , নীড় কুঞ্জে দোতলার একদম শেষ মাথার কোনে সবচেয়ে বড় ঘরটাই রাখা হয়েছিল নির্ণয়ের জন্য । এখনো তাই
ঘরের দেওয়ালে যেন পুরো কালোতে ঢাকা অদ্ভুত এক রং ,
পুরো ঘর যেন আঁধারে ঢাকা কোনো আলোর ছায়া নেই বিছানা চাদর থেকে শুরু করে ফার্নিচার সব কালোতে মোড়ানো ।
ঘুমের ঘোরে হাতরে বিছানায় কিছু একটা খুঁজছে নির্ণয় । তবে কাঙ্ক্ষিত জিনিস না পেয়ে ধপ করে উঠে বসে সে । এক হাতে বেশ শক্ত করে টেনে ধরে মাথার চুল । মন অস্থির , বেকুল বিছানা ছেড়ে নেমে দাঁড়ায় সে বেড সাইডে রাখা পানির গ্লাস থেকে এক চুমুকে শেষ করে পুরো পানি
হঠাৎ দ্রুত বেড়িয়ে যায় পায়ে ঘর ছেড়ে । হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে গিয়ে দাঁড়ায়, ঠিক রিধিমার ঘর দরজার কাছে । কানে বাজে হৃদয়ের তীব্র স্পন্দন , হাতটা কেঁপে উঠছে দরজার কড়া স্পর্শ করতে গিয়ে।
দরজা ভাজানো ছিলো, হালকা ঠেলা দিলেই তা কড়কড় শব্দ খুলে যায়। নির্ণয় ধীরে ধীরে পা বাড়িয়ে রুমের ভেতর ঢুকে পড়ে।
রুমের ডিম লাইটের নীলাভ আলোয় রিধিমার পাশে ঘুমন্ত রোজার অবয়ব যেন এক মায়াবী স্বপ্নের মতো ভাসছে সামনে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আজো টিশার্টটা স্বাভাবিকের চেয়ে একটু উপরে উঠেছে, উন্মুক্ত পেটের কিছু অংশ দৃশ্যমান , ওই স্পর্শকাতর ত্বকের ওপরেই নির্ণয়ের চোখ আটকে যায় অচেতনভাবে। তবে আজ সে স্থানে রিধিমার হাত , বুকের ভেতর একটা অজানা জোরালো রাগ জেগে ওঠে, যেন সে কোনো অদৃশ্য শত্রুর হাতে আহত হয়েছিল।
কিছু সময় দাঁড়িয়ে এক পা এক পা করে বেডের কাছে এগিয়ে যায় নির্ণয়। হাতটা কেঁপে উঠছে, মনের ভেতরে অস্থিরতার এক ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
বেডের পাশে দাঁড়িয়ে নির্ণয়ের চোখ বন্ধ হয়ে আসে, যেন কিছু মুহূর্তের জন্য সে হারাতে চায় নিজেকে, স্বেচ্ছায় ক্ষতবিক্ষত হতে চায় ।
নির্ণয়ের গলা শুকিয়ে আসছে , নিঃশ্বাস ঘন হয়ে উঠছে , শুকনো ঠোঁট জোড়া জিহ্ব দিয়ে বার বার ভিজিয়ে নিচ্ছে সে এই ছোট্ট মুখটাই যেন একমাত্র উপায় যেটা তার বেঁচে থাকার শীতলতার আস্থা।
ঘুমন্ত রোজার মুখের দিকে তাকিয়ে নির্ণয় নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করে। রোজার মৃদু শ্বাস-প্রশ্বাসের সুরে যেন তার অস্থির হৃদয় কিছুটা হলেও থেমে যায়। মনটা পায় সামান্য আরাম যেমন কোনো ঝড়ের পরে মিলেমিশে আসে অন্ধকাঈরের মধ্যে এক ক্ষণস্থায়ী শান্তি।
রোজার শান্ত মুখাবয়ব যেন এক মায়াবী পরী, যার উপস্থিতি নির্ণয়ের ভেতরকার অন্ধকারকে একটু ম্লান করে দেয়। সে বুঝতে পারে,তার অস্থিরতা মাঝে রোজার নীরব ভালোবাসাই হয়তো তার একমাত্র আশ্রয়। এই মেয়েটার রূপ… যেন কোনো অভিশপ্ত মায়া। নির্ণয় ধরে রাখতে পারছে না নিজেকে রোজার ঘুমন্ত মুখের দিকে চেয়ে তার বুকের ভেতর জ্বলে ওঠে দহন অবদমন আর আকাঙ্ক্ষার দোলাচল।
কোনো এক ঘোড়ে ঠোঁট একটু একটু করে এগিয়ে আসে রোজার মুখের দিকে. ঠিক যেন একটা নিষিদ্ধ স্পর্শের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে নির্ণয়। স্পর্শ করতে চায়, খুব করে চায় ছুঁয়ে দিতে
হাত কাঁপছে, পিঠে ঘাম গড়িয়ে পড়ছে। শরীর ঘামে ভিজে গেছে মন ছটফট করছে
এক পলক রোজার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে শান্ত, গভীর ঘুমে ডুবে থাকা তার মহারানী আর তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে এক অস্থির পুরুষ, যার ভেতরে চলছে প্রনয়ের অস্থিরতা ফোস করে এক নিঃশ্বাস ফেলে উল্টো ঘুরে যায় সে ।
নিঃশ্বাস ভারি হয়ে আসে নির্ণয়ের , বুকের ভিতর যেন জ্বলছে কিছু। রোজার পাশে ঝুঁকে বালিশের গা ঘেঁষে রাখা এসির রিমোটটা তুলে নেয় সে। রিমোটের পাওয়ার বাটনে চাপ দেয়।
পাওয়ার কিছুটা বাড়িয়ে আবারো রাখে যথা স্থানে ।
এসির পাওয়ার বাড়ানো মাত্রই ঘরের তাপমাত্রা দ্রুত নামতে থাকে।
অতি শীতের ছোঁয়ায় রোজার শরীরটা ধীরে ধীরে সেঁটে আসে চাদরের ভেতরে। ঠান্ডা তীব্রতায় তিরতির করে কাঁপতে থাকে রোজার ঠোট দুটি ।
আজ কোনো মতোই যেন নিজেকে দমাতে পাড়ে না নির্ণয় , রোজার কাঁপতে থাকা ঠোট জোড়ায় কাঁপা কাঁপা ছুঁইয়ে দেয় বৃদ্ধা আঙুল
মুহূর্তে যেন শরীর ঝাঁকিয়ে ওঠে তার। একটা শিহরণ, একটা অস্পষ্ট গুঞ্জন বুকের ভেতর বেজে ওঠে।
আবারো সেই চেনা স্ট্রবেরি লিপজেলের মিষ্টি সুবাস।এবার যেন আর মাথা কাজ করছে না তার । মাথার ভেতর সব চিন্তা, সব বাধা, সব নীতিবোধ যেন মুহূর্তে মিলিয়ে যায় এক তীব্র উত্তাপের মধ্যে।
রোজার কাঁপতে থাকা গোলাপি ঠোট জোড়া যেন বারবার আহ্বান জানাচ্ছে তাকে
দিক শূন্য , বুকের ধিপধিপ শব্দে অতিমাত্রায় বেড়ে চলেছে
শরীরটা ঝিমঝিম করছে, বুকের ভেতরে তোলপাড় আর মস্তিষ্ক যেন হ্যাং ধরছে ।
উপায়ান্তর না পেয়ে… ধীরে ধীরে ঝুঁকে পড়ে রোজার দিকে, আচমকাই ঘুমন্ত শরীরটা পাঁজাকোলা করে তুলে পা বাড়ায় নিজের ঘরের দিকে
ঘরে প্রবেশ করতেই বুকে ধরে রাখা ঘুমন্ত রোজার নিঃশ্বাস মৃদু কাঁপে নির্ণয়ের কাঁধে।
কিছুটা এগিয়ে গিয়ে কালো চাদরে ঢাকা বিছানায় সযত্নে রোজাকে শুইয়ে দেয় নির্ণয় কম্ফোটার তুলে দেয় কোমরের উপর। আঙুল দিয়ে একবার গুছিয়ে দেয় উড়ে আসা চুলগুলো।
শীতল হাওয়া ঘরের নিস্তব্ধতাকে আরেক ধাপে গভীর করে তোলে।
নির্ণয়ের চোখ তখনও স্তব্ধ রোজার মুখে। ঘুমন্ত মুখের নিষ্কলুষতা, ত্বকে জোনাকির আলোর মতো হলুদ ঝিলিক সবকিছু মিলেমিশে নির্ণয়ের ভিতর তোলপাড় তোলে।
এসির পাওয়ার হালকা বাড়িয়ে সে নিজেও শুয়ে পড়ে রোজার পাশে দুজনের মাঝে খুব সামান্য ফাঁকা। তবু সেই ফাঁকাটুকুই বজ্রের মতো ভারী। নির্ণয় চোখ বন্ধ করে শান্ত করতে চায় নিজেকে ঘুমোতে চায়
ঘুম আসে না, রোজার নিঃশ্বাসের সুর আর শরীরের উষ্ণতা
তাকে নিঃশব্দে পোড়াতে থাকে ভিতর থেকে।
একটা দীর্ঘ মুহূর্তের নীরবতা পার করে যেন নির্ণয় আর পারছে না নিজেকে আটকাতে। অস্পষ্ট আলো, ঠান্ডা ঘর, আর শরীরের খুব কাছে থাকা রোজা সব মিলিয়ে আজ সে দূর্বল।
একদম সামলাতে পাড়ে না নিজেকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে মুখ গুজে রোজা কোমল ঘাড়ে উষ্ণ ত্বকের ঘ্রাণ, শুকে নেই নিঃশ্বাসের সাথে ।
ঘন ঘন নিঃশ্বাস ছাঢড়ে রোজার ঘাড়ে, চোখ বন্ধ
নির্ণয়ের ঠোঁট ছোট ছোট চুমুতে ভড়িয়ে দেয় রোজার ঘাড় , গলা।
মেয়েলি স্পর্শে বারংবার কেঁপে ওঠে রোজার শরীর। কম্ফোটারের নিচে তার বুক আর পেটের মাঝামাঝি টানটান উত্তেজনায় হালকা শিহরণ ছড়িয়ে পড়ে। ঘুম যেন ধীরে ধীরে আলগা হয়ে আসছে—
ভ্রু কুঁচকে ওঠে, ঠোঁটে মৃদু কম্পন, নিঃশ্বাস বদলায় ছন্দে।
নিঃশ্বাস গরম হয়ে উঠছে নির্ণের , বুক ওঠানামা করছে দ্রুত গতিতে নেশাগ্রস্তের মতো এলোমেলো সে
চমকপদ ভাবে দ্রুত চোখ মেলে রোজা!
“নি… নির্ণয় ভাই… প্লিজ… কন্ট্রোল ।
– এভাবে মাঝ রাস্তায় এসে কন্ট্রোল বলে মারতে চাইছিস?
I feel sick নির্ণয় ভাই ..!!
আমি এনার্জি দিচ্ছি .. প্লিজ ইনজয় জান
It’s আসল পুরুষ !
But ! Running day by day ।
Yes babe … আমি কন্ট্রোললেস রোজ প্লিজ জান একবার ।
কথা শেষ রোজা কে ছুতে নিলে আবারো ছিটকে সরে যায় রোজা। যেন কোন বাঘ তাকে শিকারী করছে ।
What happened এমন ছিটকে সরছিস কেন ? আজকে প্রথম নয় নিশ্চয়ই ?
আ আমার … Blooding হচ্ছে !
প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ২৮ (৩)
ফোস করে এক নিঃশ্বাস ছাড়ে নির্ণয় । এক হাতে খামচে ধরে নিজের চুল। ছোট করে রোজার কপালে এক চুমু একে বিছানা ছেড়ে নেমে দাঁড়ায় সে
পেইন কিলার নিয়েছিস ?
মাথা ঝাঁকিয়ে উত্তর দেয় রোজা !
বালিশের নিচ থেকে সিগারেটের প্যাকেট হাতে রুমে দুলতে থাকা অশান্ত রকিং চেয়ারে গিয়ে বসে নির্ণয় ।