প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৫
Zannat Xhowdury
কারো কথায় পিছনে ঘুরে তাকালো রিয়ান আর রোজা ।
জানিস তো রিয়ান তোর বোনটা বড্ড বাচাল এই মেয়ে কে যে আমি কিভাবে সামলাবো এখন থেকেই ভাবতে হবে ।
রিয়ান নির্ণয়ে কথা শুনে মুচকি হাসতে গিয়েও বোনের রাগি মুখে দিকে তাকিয়ে আর হাসলো না ।
এই আপনি কি বললে আমি বাচাল ?
আপনি বাচাল আপনার বউ বাচাল , আপনা শালা – শালি , সব বাচাল সাথে আপনার চৌদ্দ গুষ্টি বাচাল ।
কথাগুলো বলেই হাফ ছাড়লো রোজা । রোজার শুনে রিয়ানের মুখ অটোমেটিক হা হয়ে গিয়েছে
কথার ফোড়ন কেটে নির্ণয় বললো absolutely right ।একদম ঠিক বলেছো সব । বলেই ঠোঁটে বাঁকা করে হাসলো
রিয়ান জেনো আবারো বড় একটা শক খেলো । এইটা কি আদেও নির্ণয় চৌধুরী নাকি সন্দেহ হচ্ছে তার । যাকে সবাই ভয় পায় , যার নখের ডগায় সব সময় রাগ থাকে সে অনায়াসে এতগুলো কথা সহ্য করে আবার হাসছেও।
রোজা আরো কিছু বলতে যাবে তার আগেই রিয়ান রোজা কে ধমক দিয়ে বললো
রোজ কি হচ্ছে কি থাম এবার তোরা ।
আমাকেই কেন বলছো ,ওনাকে কেন কিছু বলছো না তুমি ।
রিয়ান পড়লো বড় মসিবতে কারণ নীড় কে কিছু বলার সাহস তার নেই। দেখা যাবে তার শোধ নিতে পিছনে কুকুর লাগিয়ে দিবে ।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
,ঠিক তো রিয়ান তুই শুধু রোজ কে বকছিস আমাকেও বকা দে একটু শুনি তোর বোকা ।
না মানে ভাইয়া । রিয়ান কি বলবে ভেবে না পেয়ে রোজা কে বললো রোজা তুই ওকে চিনিস পরিচয় হয়েছে তোদের
আমি চিনতে চাইনা এই বাজে লোকটাকে থাকো তুমি আমি গেলাম ।
কথা বলেই রোজা গটগট করে সিঁড়ি দিয়ে নিজের বরাদ্দকৃত রুমে গেলো ।আর ওর যাওয়ার দিকে নীরবে তাকিয়ে রইল নীড় আর রিয়ান চোখ।
হঠাৎ নিরবতা ভেঙ্গে নির্ণয় বলে উঠলো । আমার ব্লাক রোজ, রিয়ান যে মরিচের থেকেও তোর বোনের ঝাল বেশি।
নির্ণয়ের কথা শুনে মুচকি হাসলো রিয়ান , তারপর বলতে শুরু করলো
ও শুধু হাত পায়ে বড়ো হয়েছে ভাই , মাথায় বুদ্ধি নেই , মুখে খালি কথার ফুলঝুরি ।
গাড়ি ড্রাইভ করছে আয়ান তার পাশে বসে আছে রিধিমা । হঠাৎ আয়ান গাড়িতে গান প্লে করলো
এই পথ যদি না শেষ হয়
তবে কেমন হতো তুমি বলতো ।
যদিও পৃথিবীটা স্বপ্নের দেশ হয়
তবে কেমন হতো তুমি বলতো।
রিধিমার দিকে তার চোখ পড়তেই আয়ান খেয়াল করলো রিধিমা জানালার বাহিরে মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে আছে ।
তার চুল গুলো বাতাসে উড়ছে ,মহো লাগানো দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো আয়ান । নিজেকে সামলে আবার ড্রাইভিং এ মন দিলো ।
ওহে মায়াবতী তোমার নেশা ধরেছে আমাকে ।
অস্পষ্ট কথাগুলো কানে আসতেই জানালা থেকে চোখ সরিয়ে ড্রাইভিং সিটের দিকে ঘুরে তাকালো রিধিমা
কিছু বললেন আপনি ?
রিধিমার প্রশ্নে আয়ান বাঁকা হেসে বললো
আপনার চুল গুলো বড্ড জ্বালাচ্ছে মিস।
এভাবে জ্বালালে না জানি কখন না জানি কি হয় ।
বরকে গেল রিধিমা , মানে
উত্তর দিলো না আয়ান।
রিধিমা এবার খেয়াল করলো তার চুল গুলো বাতাসের কারণে বার বার আয়ানের মুখে লাগছে রিধিমা কিছুটা লজ্জা পেলেও নিজেকে স্বাভাবিক করে চুল গুলো হাত খোঁপা করে নিলো ।
তা মিস চৌধুরী রিয়ান আপনার কি হয় আপনার ।
I mean কেমন কাজিন আপনারা ।
আমি তার বড়আব্বুর মেয়ে ।
তারমানে এ্যান’সির বোন।
কে এ্যানসি ?
জার্মানির বার্লিন শহরে ফাঁকা রাস্তায় একা হাঁটছে এক তরুণী ।চোখে কোণে জমছে অভিমানের জল , গভীর চিন্তায় মগ্ন সে । কেন তার জিবনটা এমন হলো , কেন সে আজ সবকিছুর থেকে বঞ্চিত । ভাবছে তারো তো একটি সুন্দর জীবন হয় পারতো,একটি পরিবার হতে পারতো ।
Wow ! what a beautiful lady .
কারো কথা কানে আসতেই সামনে খেয়াল করলো মেয়েটি কতগুলো অর্ধ মাতাল ছেলে তার দিকে তাকিয়ে আছে , অদ্ভুত তাদের চাহনি, মুখে বিশ্রি হাসি ।
মেয়েটি কি করবে ভেবে না পেয়ে সে উল্টো ঘুরে দৌড়াতে শুরু করতেই পেছনের ছেলেগুলো তার পিছু নিতে শুরু করলো ।
Hey beautiful lady just stop .
Don’t Run .
মেয়েটি প্রাণপণ দৌড়ে চলছে , তার পিছিয়ে ছেলেগুলোও দৌড়ে চলছে , কিছু দূর যেতেই রাস্তায় পড়ে থাকা কংক্রিটে বেঁধে পড়ে গেলো রাস্তায় , পিছনে থাকা ছেলে গুলো তার কাছে এসে থেমে গেলো , পড়ে গিয়ে কিছুটা ব্যাথা পেয়েছে মেয়েটি হাতের কি অংশের চামড়া ওঠে গিয়েছে, তবে সেদিকে খেয়াল নেই তার । সে ভয়ে পরে থাকা অবস্থায় পায়ের সাহায্যে পেছনে যেতে লাগলো । এতে ছেলে গুলো এগিয়ে আসতে লাগলো
Leave me, Please leave me .Somebody please help me. Help .
মেয়েটির কথা শুনে ছেলেগুলো একজন আরেকজনের মুখের দিকে তাকিয়ে একজোটে উচ্চস্বরে হেসে উঠলো , মনে হলো তারা কোন মজার কৌতুক শুনেছে। হাসি থামিয়ে
তাদের মনে একজন বললো
Hey lady don’t shout baby . . No one is here to help you. Better come on let’s enjoy something, you support us. Come on baby .
কথাগুলো বলেই আবারো হাসতে শুরু করলো তারা , ওদের মধ্যে একটি ছেলে এসে ক্রমশই মেয়েটির কাছে এগিয়ে যাচ্ছে মেয়েটি নিজের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে । এক পর্যায়ে ছেলেটি মেয়েটির কাছে এসে দাঁড়াতে থমকে যায় মেয়েটি । ছেলেটি মেয়েটির কাছে আসতে শুরু করে এক পর্যায়ে তার গলার স্কার্ফে হাত দিতে মেয়ে টি সেটিকে শক্ত করে টেনে ধরে , সামনে থাকা ছেলেটিকে জোরে ধাক্কা দিতে ছেলেটি কিছু দুরের পড়ে যায় । দাঁড়িয়ে থাকা ছেলে গুলো এসে ছেলেটিকে ধরে ।মেয়েটি আবার দৌড়াতে শুরু করে . মেয়েটি দৌড়াতে দেখে ছেলেটি উঠে আবারো পিছু নিতে থাকে । দৌড়াতে দৌড়াতে এক পর্যায়ে একটি গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে সেখানে পড়ে সে।
What the . Where did come this f****king problem . I’m almost late.
কথা গুলো বলে গাড়ি থেকে নামলো এক যুবক. দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে দেখলো তার গাড়ির সামনে একটা মেয়ে পড়ে আছে ।
Oh god এখনি এইটা হওয়ার ছিলো । বলেই মেয়েটিকে ডাকতে শুরু করলো
‘ Hey girl ‘Get up . Can you hear me ?
যুবকটি এবার মেয়েটি পাশে বসে মেয়েটিকে নিজের দিকে ঘুরালো , দ্রুত নাকের কাছে হাত দিয়ে দেখলো নিঃশ্বাস পড়ছে কিনা । নিঃশ্বাস পড়ছে তবে জ্ঞান নেই ।
ছেলেটি খেয়াল করলো মেয়েটি বেশ সুন্দরী , হালকা ফর্সা গায়ের রঙ, চুল গুলো কাঁধ ছাড়িয়ে পিঠ পর্যন্ত , জিন্সে সাথে লং টপস্ পড়েছে , তার উপর ডেনিম পড়েছে ,গলায় স্কার্ফ । কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে দ্রুত উঠে গাড়ি থেকে পানির বোতল আনলো যুবকটি , এনে মেয়েটির চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে জ্ঞান ফিরানো চেষ্টা করলো , মেয়েটির
চোখ খুলতেই যুবক যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো
Are you o…. কথা সম্পূর্ণ করা আগেই মেয়েটি তাকে জড়িয়ে ধরলো এতে কিছুটা ভরকে গেল যুবকটি
Please save me please . আমাকে বাঁচান ওরা আর কিছু বলতে পারলো না মেয়েটি। ইতোমধ্যে হেঁচকি উঠে গেছে তার । পিছনে আঙ্গুল ইশারা করলো কিছু । যুবকটি তাকাতে খেয়াল করলো কতগুলো ছেলে দৌড়ে আসছে তাদের দিকে।
যুবকটি সামনে খেয়াল রেখেই মেয়েটিকে উঠে গাড়িতে উঠতে বললো , দুজনেই দৌড়ে গাড়িতূ গিয়ে বসলো.
গাল ফুলিয়ে বেডে উপর বসে আছে রোজা ।
কেউ ভালোবাসে না কেউ না , কারো সাথে আমি কথা বলবো না কেউ ভালো……. হঠাৎ করেই রুমের লাইট বন্ধ হয়ে গেছো রোজা ভয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো ,, ভয়ে ভয়ে স্বরে ডাকতে শুরু করলো ভাইয়া ……… কই তুমি
কই তুমি আমার ভয়
কিছুর উপস্থিত অনুভব করতেই চমকে উঠলো রোজা অন্ধকারে কিছুই দেখতে পাচ্ছে না সে । তবুও চোখ জোড়া দিয়ে খুজছে সে হঠাৎ একটা মিষ্টি গন্ধ এলো তার
প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৪
নাকে ।গন্ধ টা আস্তে আস্তে গাঢ় হয় শুরু করলো , চোখ বন্ধ করে ঘ্রান নিতে শুরু করলো রোজা
রোজ পাখি , কন্ঠটা ভেসে আসতেই ভয় আরো জেকে বসলো রোজার মনে । চোখ খুলতেই কারো গরম নিঃশ্বাস পড়ছে তার চোখে মুখে ।
কে আআআছো
রোজ পাখি
আবার সেই ডাক