প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৩৪ (২)
Zannat Xhowdury
মিষ্টি এক সুভাষ আসছে রোজার নাকের কাছে বারবার শুকছে সেই সুভাষ। ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে নির্ণয়। এক পা এক পা করে নির্ণয়ের দিকে এগিয়ে যায় রোজা। ধীরে ধীরে একদম নির্ণয়ের কাছে চলে আসে। পড়নে সাদা রঙের শার্টের সাথে রেড ইনার খুব বাজে এক কম্বিনেশন নির্ণয় ভ্রু কুঁচকে নেয়। ইতোমধ্যে রোজা একদম নির্ণয়ের কাছে , মনে হচ্ছে এক সেন্টিমিটার দুরত্ব বুঝি অবশিষ্ট নেই
রোজা দৃষ্টিতে গিলে নিচ্ছে নির্ণয় কে। চোখ চোখে অজানা এক আকর্ষণ।তার দৃষ্টি নির্ণয়ের চোখেই আবদ্ধ, আস্তে আস্তে সে নিজের দুহাতে রাখে নির্ণয়ের কাঁধে ! নির্ণয় দুষ্টু হাসে এক ঝটকায় একদম নিজের সাথে মিশিয়ে নেয় রোজাকে। তার হাত এখন রোজার ধনুকের ন্যায় বাকানো কোমড়ে। রোজা এক দৃষ্টিতেতে তাকিয়ে নির্ণয়ের চোখে।
নির্ণয়ের হাত , রোজার পড়নের শার্ট উচিয়ে প্রবেশ করে রোজা নগ্ন কোমড়ে। কেঁপে ওঠে রোজা চোখ কিছুটা খিচে নেয় ।ধীরে ধীরে এলোমেলো ছোঁয়া অনুভব করে নিজের শরীরের। নির্ণয় ঠোঁট গলিয়ে উপচে পড়ে শয়তানি হাসি। হঠাৎ থেমে যায় হাত। হালকা কিছুটা ঝুঁকে আসে রোজার মুখের কাছে । চোখের উপর ফুঁ দিতেই ধোপ করে চোখ খুলে রোজা।
—কি চাই ?
নির্ণয়ের করা প্রশ্নে হতভম্ব রোজা। তার কি চাই সে যেন নিজেই জানে সে শুধু চাইছে নির্ণয় তার কাছে থাকুক। কোনো প্রকার ওয়ার্নিং ছাড়াই দ্রুত নির্ণয়েয় ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে নিয়ে। অনুভব করতে থাকে ভালোবাসা।
সময় গড়াচ্ছে, দুজনেই যেন অস্থিরতা চমর সীমান্তে , হঠাৎ দরজায় ঠক ঠক শব্দ।ছিটকে দূরে সরে যায় রোজা, নির্ণয় বাঁকা হাসে। নিজের শরীরের একবার চোখ বুলিয়ে ন্যায় , তারপর ডান হাতে চুলগুলো বেক ব্রাশ করে এগিয়ে যায় দরজার দিকে
রিসোর্ট থেকে খাবার পাঠানো হয়েছে … এক মেয়ে সার্ভেন্ট এসেছে। নির্ণয় দরজা খুলে তাকে দেখেই ভেতরে আসার পারমিশন দেয়।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এদিক ওদিক চোখ বুলিয়ে ঘরে ঢুকছে মেয়েটি সামনে দাঁড়ানো রোজা ব্যাপারটা অতি সন্দেহ নেয় না সে। মেয়েটি পড়নে রিসোর্টের বরাদ্দ কৃত ড্রেস চোখে এক সাদা চশমা মুখে মাস্ক পড়া। ঘরের ভিতরে ডুকে আড় চোখে বার বার দেখছে রোজার অবস্থান। রুমে নীরবতা ঠাসা। শুধু থালা-বাসনের শব্দ।
মেয়েটি নিঃশব্দে খাবার সাজাতে থাকে টেবিলে। যেন প্রতিটি চালচলন অভ্যস্ত, কিন্তু তাতেও এক ধরনের অস্বস্তিকর নির্ভুলতা।
নির্ণয় এসে ডিভানের এক কোণে বসে। শার্টের বোতাম বন্ধ না করে আরাম করে হেলান দেয়। সাদা আলোয় তার চোখদুটি যেন ঝলসে ওঠে। রোজার দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়িয়ে ইশারা করে কাছে আসার।
রোজা একটু ইতস্তত করে। মেয়েটির দিকে একবার তাকায়, তারপর ধীর পায়ে এগিয়ে আসে। নির্ণয়ের পাশে এসে বসে।
নির্ণয় হেসে বলে,
— “চোখ মুখ শুকায়ে গেছে । আগে খেয়ে নে। তারপর…”
কথা অসমাপ্ত রেখে, একটু বাঁকা হাসি ঠোঁটে রেখে সে একবার রোজার মুখের দিকে তাকায়।রোজা কুণ্ঠিতভাবে ট্রের দিকে তাকায়।মেয়েটি তখনও খাবার সাজিয়ে যাচ্ছে।
হঠাৎ…
গরম এক স্যুপের বাটি মেয়েটির হাত থেকে ঠিক যেন রোজার দিকেই একটু বেশি ঝুঁকে পড়ে যেতেই গরম স্যুপ উল্টে পড়ে রোজার ডান হাতে।
— “আহহ !
একটা তীব্র চিৎকার করে উঠে রোজা। চমকে ওঠে নির্ণয়।
মুহূর্তেই লাফিয়ে উঠে পড়ে সে। আতঙ্কিত চোখে রোজার হাতটা ধরে দেখে —তপ্ত তরল বেয়ে বেয়ে পড়ছে ওর কব্জি দিয়ে।
চামড়া লাল হয়ে উঠছে মুহূর্তেই।
রোজ!
মাস্কের আড়ালে এক কুটিল হাসি ফুটে ওঠে মেয়েটির মুখে।যার বহিঃপ্রকাশ তার চোখ।সেই হাসি যেন এড়িয়ে যেতে পারেনা রোজার গোয়েন্দা চোখ নির্ণয় ক্ষিপ্ত চোখে তাকায় সার্ভেন্ট
মেয়েটির নির্ণয়ের চোখ রক্ত লাল হয়ে ওঠে
— “স্যরি স্যার… আমি জানি না কিভাবে
নির্ণয় চোখ কুঁচকে তাকায় তার দিকে।
— কি জানিস না? হাতে শক্তি নেই, একটা বাটিও ধরতে পারিস না ঠিক করে?
রোজা তখন শ্বাস নিচ্ছে কষ্টে। কপালে ঘাম জমে উঠেছে। নির্ণয় দ্রুত সামনে থাকা পানির গ্লাস হতে পানি ঢালে রোজার
একটু হিমশীতল বাতাস যেন ছায়ার মতো ঢুকে পড়ে রুমে।
স্যার আমি মেডিসিন
—গেট আউট ,
স্যার
—কি বললাম বুঝোনি
কথা বাড়ায় না মেয়েটি ধীরে ধীরে দরজার দিকে হাঁটতে শুরু করে।তবে তার যাওয়ার দিকে কড়া চোখে তাকিয়ে থাকে রোজা।
মেয়েটি বেড়োতেই নিজের ফোন খুঁজে বের করে নির্ণয়। স্ক্রিনে স্ক্রোল করে রিয়ানের নাম্বার খুজে বের করে কল ঢুকায় সে
কয়েক সেকেন্ডের অপেক্ষা রিসিভ হয় কলটি !
জলদি আমার রুমে আয়…
অপরপাশে কল থাকা রিয়ানে উত্তর আশা না করেই কল ডিসকানেক্ট করে নির্ণয়। ফুঁ দিতে থাকে রোজার হাতে
—ভীষণ জ্বলছে পাখি ?
নির্ণয়ে করা প্রশ্নে ধ্যান ভাঙ্গে রোজা , এত সময়ের ঘটা পুরো হিসাব কষতে বসেছিলো সে।
‘এতো ছোট এক ব্যাপারে অহেতুক অস্থির হয়ে উঠেছেন আপনি প্লিজ শান্ত হন মেডিসিন পড়লেই ঠিক হবে
— বেশি বড় হয়ে গিয়েছিস নাহ।
বড় হয়েছি বলেই তোহ বিয়ে হয়েছে ছোট থাকলে কী হয় বলেন ?
— বেয়াদব মেয়ে স্বামীর মুখের মুখে তর্ক।
একটু করলে ক্ষতি কোথায় ?
দুজনর কথা কাটাকাটির মাঝেই দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকে রিয়ান ব্যস্ত ভঙ্গিতে বলে ..
—ভাই !
রিয়ানের গলা পেতেই তার দিকে তাকায় নির্ণয় রোজা। রোজার হাত তখনো রাখা নির্ণয়ের হাতে।
—নিড সাম মেডিসিন রিয়ান।
কি হয়েছে কা…
বাকি কথা বলার আগেই রোজার হাতের দিকে চোখ যায় রিয়ানে মূহুর্তে যেন লাল হয় দুটো চোখ। দ্রুত পায়ে এসে বসে রোজা পাশে
—বোনু কি হয়েছে হাতে ।
রিয়ানের বলা কথা রোজার কানে ঢুকেছে কি ঢুকে নি কে জানে সে যেন নিজ ভাবনায় মগ্ন।রিয়ান বেশি ঘাটায় না তাকে। নির্ণয় দিকে প্রশ্ন চাহনিতে তাকিয়ে থাকে
—দেখ ভাই ওভাবে তাকিয়ে লাভ নেই আমি শুধু তোর বোনকে আদর করি। এসব আমি করিনি সার্ভেন্ট ভুলে গরম স্যুপ ফেলেছে
রিয়ান দৃষ্টি নামিয়ে হাতে থাকা ফোন দিয়ে কাউকে কল করে মেডিসিন আনতে বলে
কিছু সময় পর মেডিসিনের ব্যাগ হাতে রুমে ঢোকে রিধিমা। চুপচাপ, থেমে যায় দরজার কাছে। ভিতরের আবহাওয়া গম্ভীর—ঘন কালো মেঘ জমে আছে যেন চারপাশে।
রিয়ান মাথা ঘুরিয়ে তাকায়। একবার চোখাচোখি হয় রিধিমার সঙ্গে, তারপর সে ইশারায় ব্যাগটা এগিয়ে দিতে বলে।
রিধিমা এগিয়ে এসে ব্যাগটা রিয়ানের হাতে দেয়, কিন্তু চোখ সরায় না রোজার হাত থেকে।
এতটা জ্বলে গেছে! কিভাবে হলো এটা?
—তুইও এখন তদন্তে নামলি বুঝি?
শুষ্ক ঢোক গিলে রিধিমা সেকি তদন্তের জন্য কথাটা বলেছে নাকি সেতো শুধু জানতে চেয়েছে
ইয়ে মানে ভাই ,
থাক মানে না করে ব্যাগটা দে। রিয়ানের কথায় তার দিকে তাকায় রিধিমা হাত বাড়িয়ে এগিয়ে দেয় মেডিসিন ব্যাগটি
রিয়ান চুপচাপ বসে রোজার হাতটা ধরে ওষুধ মাখাতে থাকে। খুব ধীরে, খুব যত্নে। যেন কোথাও ভেঙে না যায়
মেডিসিন লাগানো শেষ হতেই, রিয়ান ধীরে ধীরে রোজার হাতে ব্যান্ডেজ জড়িয়ে দেয়। নির্ণয় পুরো সময়টাতে নিশ্চুপ।
রোজার পাশে বসে থাকে রিয়ান ব্যান্ডেজ শেষ করে। নির্ণয়ের দিকে তাকায়
—খাবার তো ঠান্ডা হয়েছে…
তবে কেউ কোনো উত্তর করার আগেই দ্রুত রিধিমা বলে ওঠে
—আ আমি আবারো খাবার আনতে বলছি তোমরা একটু বসো
কোনো মতে কথা শেষ করেই বিদায় নেয় রিধিমা। সে পালিয়ে গেলো নাকি থাকতে চাইলো না এইটা কেউ তেমন ভাবলো না
বেশ অনেকটা সময় শান্ত থাকে পরিবেশ নির্ণয় ফোন ঘাটছে। রিয়ান বেশ কিছু সময় ধরেই হাতে তালা চুলকে চলছে! নিজের ভিতর কেমন উসখুশ করছে। রোজা খেয়াল করে ব্যাপারটা। নিরবতা ভেঙ্গে বলে ফেলে
—ভাইজান কিছু বলবে।
সহসাই চমকে ওঠে রিয়ান গলা পরিষ্কার করে নেয় কাশি দিয়ে। নির্ণয় মনোযোগ ব্যঘাত ঘটে আড়চোখে রিয়ানের অবস্থা দেখে ডান ভ্রু উচিয়ে তাকায় তার দিকে।
বলছিলাম কি ভাই আমি বিয়ে করবো।
নির্ণয় যেন শুনেও না শুনার ভান ধরে ডিভেনে আরামে হেলান দেয়। এদিকে তন্দ্রা খেয়ে বসেছে রোজা কানে ঠিক শুনেছে কিনা ভাবছে। মুখ টা হা হয়ছ গিয়েছে।রিয়ান নির্ণয়ের গা ছাড়া ভাবে আবারো বলে
ভাই আমি বিয়ে করবো …
—কিহ! কিছু বললি?
বেশ রাগ লাগে রিয়ানের একে তো কেউ তাকে নিয়ে ভাবেনা সে তো বড় হয়েছে নাকি।তার বউ প্রয়োজন লাজ লজ্জার মাথা খেয়ে নিজে বলতে এসেছে তাও ভাই পাত্তা পাচ্ছে না।
আমি বিয়ে করবো!
— রাতে রোমান্টিক মুভি দেখলে তো বিয়ের ইচ্ছা জাগবেই। তা পাত্রী কে।
নির্ণয়ের টোন কাটা কথা বেশ গায়ে লাগে রিয়ানেরমুখ কালো করে সে উত্তর করে
– রোমান্স সকলের জাগে , তবে প্রকাশে জায়গা সকলের থাকে না।
—তা তোর চাই বুঝি!
নির্ণয় কথায় এবার বেশ বিরক্ত হয় রিয়ান ভাই কি মজা মারছে। চোখ মুখ খিচে বলে ..
আমার বউ চাই ?
এইদিকে দুজনের কথপোকথনের রোজার চোখ দুটো মার্বেল হয়েছে কান দুটো আঙ্গুল দিয়ে একবার চুলকে নিয়ে রিয়ানে দিক তাকিয়ে বলে
—ভাইজান তুমি বিয়ে করবে ?
– তোরা কি আমাকে সারাজীবন সিঙ্গেল হয়ে মরতে বলছিস আমার কি বংশ বৃদ্ধি হবে না।
—যাহহ বাবা ওইটা কখন বললাম। ভাবি টা কে শুনি।
রোজার করা প্রশ্নে শুষ্ক ঢোক গিলে রিয়ান। নির্ণয় গা ছাড়া ভাব। এমন ভাব যেন সে কিছুই শুনছে না
—তৃধা।
-কিহ্ বলছো ভাইজান ?
—আমি তৃধা বিয়ে করবো।
রোজা একবার নির্ণয়ের দিকে তো একবার রিয়ানের দিকে তাকায়। নির্ণয় নিশ্চুপ দেখে রিয়ান কিছু বলতে যাবে তার আগেই তাকে থামিয়ে দেয় রোজা। দুজনেই বসা তবে বেশ কিছুটা দুরত্ব দু’জনের মাঝে। রোজা এগিয়ে গিয়ে হাত রাখে নির্ণয়ে হাতে
একটু নরম স্বরে বলে
—বলছিলাম কি আপনি কি রাজি না বিয়েতে না মানে ভাইজান তৃধা আপু কে
-রাজি না কখন বলছি ?
নির্ণয়ের উত্তরে বেশ খুশি হয় রোজা খুশিতে গদগদ হয়ে সহসাই প্রশ্ন ছুড়ে
—তাহলে কবে বিয়ে হচ্ছে ভাইজানেরর।
নির্ণয় আড়চোখে রিয়ানের দিকে একবার তাকিয়ে দৃষ্টি দেয় রোজা হাসি হাসি মুখের দিকে। ডান হাতে ছুয়ে দে রোজার গাল হাস্কি স্বরে বলে
‘ ঢাকা ফিরেই একসাথে তিন জোড়া বিয়ে হবে।
বিয়ান চমকিত হয় তিন জোড়া বিয়ে কার কার হবে ভেবেই মাথা চুলকায়। রোজার ফিসফিসিয়ে হিসাব মেলাতে চায়।
-তিন জোড়া কে ভাই ?
ঢাকা ফিরেই সব হবে আপাতত এখন আসতে পারিস। কালকে সকালে রেডি থাকিস বেড়োতে হবে।
রিয়ান দাঁত কটমটিয়ে উঠে। রোজা রিয়ানের দিকে তাকিয়ে কিছুটা জোড় পূর্বক হাসতে চেষ্টা করে।রিয়ান কথা না বাড়িয়ে উঠে গটগটিয়ে বেড়িয়ে যায়।
রিয়ান বেরিয়ে যেতেই রুমের দরজা লক করে দেয় নির্ণয়। এগিয়ে এসে কোলে তুলে নেয় রোজাকে পোড়া হাতে বেশ কষ্টে নির্ণয়ের গলা আঁকড়ে ধরে রোজা । ধীরে ধীরে একদম বেডের কাছে এসেই রোজাকে কোল থেকে নামিয়ে দেয় সে।
রোজাকে বিছানায় নামিয়ে দিতেই তার গলার কাছটা কেঁপে ওঠে। নিঃশ্বাস ভারী। শার্টে প্রথম বোতাম খোলা থাকা কিছু বুকের মসৃণ রেখা উঁকি দেয়। নির্ণয় নিঃশ্বাস কিছু টা রোজার মুখে পড়ে চোখ বুজে, ঠোঁট কামড়ে ধরে রোজা। যেন সমস্ত শরীর জ্বলছে তার
নির্ণয় ধীরে ধীরে তার পাশে এসে বসে। এক হাত দিয়ে চুল সরিয়ে দেয় রোজার কপাল থেকে, অন্য হাতে তার কোমরের কাছে ছুঁয়ে থাকে নির্ণয় চোখে মাদকতাই ধীরে ধীরে ঝুকে মুখ ডুবায় রোজার চুল। বারংবার কেঁপে উঠছে রোজা
— “এত কাঁপতেছিস কেন?”
নির্ণয়ের গলা নেমে আসে ,কন্ঠ বেশ ভারী সাথে ভীষণ কোমল রোজা চোখ মেলে তাকায়। নির্ণয় তখনো তাতেই ডুবে রয়েছে।
-আপনার প্রতিটি ছোঁয়া ভীষণ পোড়ায়।
নির্ণয়ের চোখ জ্বলতে থাকে। সে ধীরে ধীরে চুল ছেড়ে নেমে আসে রোজার গলার কাছে। গলার ভাঁজে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয়।আবারো চোখ বুঝে নেয় রোজা। একহাতে খামচে ধরে নির্ণয় গায়ে থাকা শার্ট
নির্ণয় মুখ তুলে রোজার গলা ছেড়ে ঠিক একদম কানের কাছে এসে ফিসফিসিয়ে বলে ….
—পাখি … You need protection.
রোজা আরো শক্ত করে জড়িয়ে নেয় নির্ণয় কে এক চুল পরিমান দূরত্ব নেই দুজনের মাঝে রোজা কোমলকন্ঠ বলে
– I want our future, I want your share.
নির্ণয় কিছুটা সরে আসে রোজার থেকে , ভরকে যায় রোজা। নির্ণয় বিছানা ছেড়ে উঠতে নিলেই হাত টেনে ধরে রোজা।
-কো কোথায় যাচ্ছেন ?
—তুই এখনো ভীষণ ছোট , এখনি এইসব কে মাথায় ঢুকিয়েছে তোর?
-আমি অত বড় হতে চাইনা আমার বাবু চাই মানে চাই ?
নির্ণয় তাকায় রোজার চোখে , চেহারায় চিন্তার ভাজ। কেন জানিনা ভীষণ ভয় লাগছে তার
-অলরেডি তোর ছুটিটা প্রায় শেষের দিক। সময় দেখতে দেখতে চলে যাবে।। পরবর্তী বেবি জব দুটো ….
নির্ণয়ের বাকি কথাই শেষ করার আগেই থামিয়ে দেয় রোজা। দু হাতে নির্ণয়ে হাত চেপে মাথা রাখে তাতে
” আপনি আছেন তোহ। পারবেন না আমাদের প্রটেক্ট করতে
-Are you sure you want a baby?
রোজা ঠোঁট ঠোঁট রাখে নির্ণয়ের প্রশ্রয় দেয় তার প্রিয় মানুষটিকে
ধীরে ধীরে সময় গড়াতে থাকে দুটি হৃদয় একছ অপরের পরিপূরক হয়ে ঊঠতে ব্যস্ত
রোজার গাঁয়ে শার্টের বোতাম এক এক করে খুলে ফেলে নির্ণয় সাথে নিজের গায়ের কাপড় টাও । আলো-আঁধারির খেলায় তার শরীর যেন ভাসছে চাঁদের জোয়ারে। নির্ণয়ের চোখ তৃষ্ণার্ত, গভীর, তৃষ্ণার্ত সে ধীরে ধীরে রোজার ওপর ঝুঁকে আসে।
-Be ready জান।
নির্ণয়ের ঠোঁট একে একে ছুঁতে থাকে রোজার সর্বাঙ্গে
প্রতিটি ছোঁয়া যেন একটি কবিতার ছন্দ,প্রতিটি স্পর্শ একেকটি উন্মাদ স্তবক।
রোজার শরীর কাঁপছে বুকে স্পন্দন অতি মাত্রায় বিট করছে।নির্ণয় নিজের কাছে মত্ত সে সুখ খুজতে ব্যস্ত
তার আঙুল একটানা রোজার কোমরের নিচে চলে যায়। অন্য হাত বুকের কাছে। ঠোঁট নামে… তারপর পুরোপুরি
রোজার নিঃশ্বাস ভারি ওঠে এক ঘন কামনায়। নির্ণয় ঢুকে পড়ে ওর ভেতরে দু’জনে যেন মিলন সাগরের সাথি
রোজা হাঁপাচ্ছে, চোখের কোনায় হালকা পানি । চলতি সময়
নির্ণয় ক্রমশ ছন্দ বাড়ায়। চাদরটা কুঁচকে যায়।
রোজার নখ ঢুকে যায় নির্ণয়ের পিঠে। কামড় দেয় তার কাঁধে।
ঘরের বাতাস ভারী, শরীর ঠাসা, জানালার বাহিরে পালিয়ে যায় সমস্ত লজ্জা।, দুই দেহের উত্তাপে তারা একসঙ্গে ভেসে ওঠে সেই চূড়ান্ত শিখরে যেট ষ কান্না, হাসির মিলন তিথি
ঘরের নিঃশ্বাস ভারী উন্মাদ দুটো মানুষ হঠাৎ থেমে যয় নির্ণয় ধীর হয়ে যায় সব। নিঃশ্বাস আঁটকে রেখেছে এই মেয়ে আর কিছু সময় গেলে নিশ্চয়ই জ্ঞান হারাবে। দাঁতে দাঁত খিচে নির্ণয়
—একি বউ তুমি কি জ্ঞান হারানোর ফন্দি এঁটেছো মনে?
ভরকে যায় রোজা , রাগীব চোখে তাকায় নির্ণয়ের দিকে। রোজা তাকাতেই চোখ টিপে দেয় নির্ণয় রাগে কটমটিয়ে ওঠে রোজা
– ষাঁড়ের মত এক মানুষ অবলা এক মেয়েকে নির্যাতন করছেন লজ্জা করেনা?
বেশ শক খায় নির্ণয় বউরে আদর করতে নিয়েও বেশ বিপদে পড়েছে বেচারা। মুহূর্তেই ছোট বাচ্চাদের মতো কাঁদো কাঁদো ফেস বানিয়ে বলে
—এমা এসব কি বলছো বউ ?
আদর করছি আদর ,নির্যাতন বলে না সোনা।
চোখ দুটো বন্ধ করে নেয় রোজা মনে মনে একশত গালি ছুড়ে মারে নির্ণয়ের দিকে রোজার মুখের ভঙ্গিতে বেশ মজা পায় নির্ণয়
—এই বউউউ সেন্সর হারলে চলবে না! আদর নিতে হবে বউ আদর।
লজ্জা ইয়ারফোনের তার হয়ে লতাপাতার মতো পেঁচিয়ে নিচ্ছে রোজারে এক তো শরীরের উপর আটমনি এক চালের বস্তা রয়েছে তার উপর আরো রশিকতা
—একটা মানুষ কি করে এতো অসভ্য হয় ! আপনাকে না দেখলে জানতাম না
-কেন বউ সভ্য মানুষ বুঝি কাপড় পড়েই কাজ সারে।
কপালে চাপড়াতে থাকে রোজা কোন পাগলের পাল্লায় এসে পড়েছে সে ভেবে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে তার। ক্ষিপ্ত বাঘিনী মতো বলে
প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৩৪
—এই নামুন তো আপনি আমার উপর থেকে আমি অন্য কথাও থেকে বাবু কিনে আনবো ।
“উহু ওটা হচ্ছেনা প্রসেসিং শেষ না করে তো নামা যাবে না বউ।
কথাগুলো বলেই আবারো নিজের একান্ত কাজে লিপ্ত হয় দুজনে।
হাপিয়ে উঠেছে দুজন সময় কত গড়িয়েছে জানা নেই ক্লান্ত হয়ে অবশেষে রোজা গায়েই নিজের ভর ছেড়ে দেয় নির্ণয়।