প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৬

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৬
Zannat Xhowdury

রোজ পাখি ,
ভয় পেয়ে বেডের কাছ থেকে উঠে দাঁড়াতেই রোজা ঘাড়ের উপর কারো গরম নিঃশ্বাস অনুভব করলো ভয় যেন আরো জেকে ধরলো তাকে ।
কে ,
কে আআআ আপনি , এখানে কিভাবে এলেন ।
এবার পিছনে থেকে যেনো কেউ শক্ত করে রোজাকে তার বুকের সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নিচ্ছে । যার ফলে রোজার পিঠ গিয়ে ঠেকলো তার বুকে ।
কে আ আ আপনি কথা বলুন । আমার ভ ভ ভয় করছে।

ভয় পা আমাকে , আমি চাই তুই যেন ভয় পাইস আমাকে । তোর জিবনে শুধু আমার অস্তিত্ব থাকবে আমার আধিপত্য চলবে তোর জিবনে ,তুই আমার ব্লাক রোজ । কথাগুলো বলেই রোজাকে নিজের সাথে আরো শক্ত করে চেপে ধরলো । ব্যথায় রোজা কুকড়ে উঠলো । নিজেকে ছাড়ানোর জন্য ছটফট করতে শুরু করলো ।
উফ এতো ছটফট করছিস কেন ? শান্ত হয়ে থাক বলছি।
ছা ছা ছাড়ুন আমাকে ।
হুস শব্দ করে না পাখি ।
কথাটা বলেই রোজার ঘাড়ে নিজের ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো , রোজা এবার আবেশে নিজের চোখ বন্ধ করে নিলো এই প্রথম কোনো পুরুষ তাকে ছুঁয়েছে । চোখ খুলতেই কারো উপস্থিতি টের পেলো না , সাথে সাথেই লাইট অন হয়ে গেলো।
কে ছিলো , কথা টা ভাবতেই দৌড়ে রুমে বাহিরে চলে এলো রোজা । তবে সন্দেহজনক কিছুই পেলো না ‌ । আবার নিজের ঘরে ফিরে এলো

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

বিশাল শহর বার্লিন। ইউরোপে লন্ডনের পরে সবচেয়ে বড় শহর বার্লিন। আর গুরুত্বের দিক দিয়ে বার্লিন এখন লন্ডনকেও ছাপিয়ে গেছে। প্যারিস, রোম বা লন্ডনের মতো জঁমকালো না হলেও বার্লিনের ইতিহাসও বেশ বর্ণিল। আর গত শতাব্দীর হিসাব ধরলে বার্লিনের মত ঘটনাবহুল শহর পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই। বার্লিনের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১২ শ’ শতাব্দীতে বাণিজ্যপথ হিসেবে। ১৪১৭ সালে বার্লিন পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের প্রদেশ, ব্রান্ডেনবুর্গের রাজধানী হয়। এরপর বার্লিন বিভিন্ন সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল।
চমৎকার প্রশস্ত রাস্তায় ব্লাক মার্সিডিজে ড্রাইভ করছে অর্ণব তার পাশে বসে আছে এক তরুণী । অর্ণব কিছু দরকারি কাজে এসেছিলো একদিকে তখনি তার গাড়ির সামনে এসে পড়ে মেয়েটি ,, এখন তাকে নিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করছে সে
বেশ কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর অপূর্ব জিজ্ঞেস করলো
এই মেয়ে এই নাম কি তোমার ?

আর ছেলেগুলো কারা ছিলো ।
অপূর্বের কথায় কিছুটা চমকে তাকালো মেয়েটি তার দিকে ।
জ্বি আমাকে বলছেন ।
আশেপাশে যখন আর কেউ নেই তখন তোমাকেই বলছি ।
নাম কি তোমার ?
জ্বি নীলিমা ।
ছেলেগুলো কে চিনো তুমি ।
জ্বি না ।
কোথায় থাকো তুমি , এড্রেস বলো তোমাকেই পৌঁছে দিয়ে আবার যেতে হবে আমাকে ।
মেয়েটাকে চুপ থাকতে দেখে অপূর্ব আবারো বললো
কি হলো বলো তোমার এড্রেস ।
সামানের রেস্টুরেন্টের সামনে আমাকে নামিয়ে দেন ।

অর্ণব আর কথা না বাড়িয়ে তাকে নামিয়ে দিলো ।
নীলিমা গাড়ি থেকে নেমে চলে যেতে নিয়েও অবার ঘুরে এসে অপূর্বের জানালার কাচে নক করলো । অপূর্ব তাকে দেখে কাঁচ নামালো
কিছু বলবে ।
না মানে আসলে
বলো কি বলবে
” ধন্যবাদ “আমাকে সাহায্য করার জন্য ।
কথাটা শেষ করে অপূর্বকে কিছু না বলার সুযোগ দিয়েই রেস্টুরেন্টের ভিতর চলে গেলো নীলিমা ।
অপূর্ব নীলিমার যাওয়ার পানে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে । সেও গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চলে গেলো ।

কিছুক্ষণ আগেই বাসায় এসেছে রিধিমা , আয়ান তাকে বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে গেছে । বাড়িতে এসে জিনিস পত্র রেখে সাওয়ারে গিয়েছিল সে । বের হতেই দেখলো তার আদরের বোন গাল ফুলিয়ে বেডের উপর বসে আছে ।
কি হয়েছে আমার পাখির শুনি ,
কে ধরছে , কে মেরেছে , কে দিয়েছে বোকা ।
মিষ্টি হেসে কথা গুলো রোজার পাশে বসলো রিধিমা ।
বোন কে ধরতে গেলেই
একদম ধরবে না আমায় , জার্মানিতে আসার পর সবাই বিজি হয়ে গিয়েছো তাইনা । আমাকে রেখে একা একা বাহিরে যাও ।

রিধিমা বুঝলো বোনের রাগ হয়েছে ।
তাই সে রোজার মুখ সামনে হাঁটু ভাঁজ করে বসে কান ধরে বললো
আচ্ছা বাবা সরি আমার ভুল হয়েছে আর এমন হবেনা। আমি ভাবলাম জার্নি করে এসেছিস ক্লান্ত তাই তোকে রেখে‌ গিয়েছিলাম ।
ভয় পেয়েছিলি ।
রোজা এবার বাচ্চাদের মতো ঠোঁট ফুলিয়ে বললো পেয়েছিলাম একটু ।
এখন বলো কি এনেছো আমার জন্য ?
আগে উঠতে দিবি তো তাহলেই না দিব ।
রিধিমা উঠে গিয়ে ব্যাগ থেকে একটা সুন্দর গাউন বের করে দিলো ।
Wow আপু এইটা তো খুব সুন্দর , আমার খুব পছন্দ হয়েছে তুমি দাঁড়াও আমি এখনি এইটা পড়ে আসছি , বলেই রোজা চেন্স করেতে চলে গেলো ।
রিধিমা বোনের পাগলামি দেখে মুসকি হেসে আবারো বেডে গিয়ে বসলো ।
৫মিনিট পড়
চেন্স করে আসলো রোজা , দেখতো আপুনি কেমন লাগছে আমায় ।
কি আয় তো এইদিকে দেখি । বলেই বোনের দিকে হাত বাড়ালো রিধিমা । পুরোই প্রিন্সস লাগছে আমার পাখি কে বলে বোনের কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো রিধিমা ।

তুমি থাকো আমি ভাইয়াকে দেখিয়ে আসি দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো রোজা । উদ্দেশ্যে ভাইয়ার রুমে
এইদিকে পেছন থেকে রিধিমা বললো সাবধানে যা পরে যাবি । রোজা কি আর তার কথা শুনে , সে তো এক ছুটে থামলো একটা রুমের সামনে । রুমে ডুকে তার ভাইকে না দেখে মন খারাপ হলো তার , রুম থেকে বেড় হয়ে দরজার পাশে দাঁড়িয়ে খেয়াল করলো বাম পাশে ঘরগুলোতে । কি অন্ধকার , ওখানে কি কেউ থাকে না । হঠাৎ তার মাথায় এলো নির্ণয়ের কথা , ওই লোক যে বলেছিলো এই বাড়ি তার ,তবে কি ওইদিকে ওই লোক থাকে ।নাকি ওখানে কেউ থাকেনা , কি আছে ওই দিকটায় ।
কৌতুহল বসতো বাম দিকের ঘর গুলো দিকে এগিয়ে গেল রোজা ।

বাম পাশের ঘরগুলো কাছে আসতেই দেখলো একটা ঘরের দরজা হালকা খোলা । রোজ মনকে শক্ত করে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিলো । মনে হচ্ছে সে যুদ্ধ জয় করতে যাচ্ছে।
ধীর পায়ে দরজা ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করছে রোজা । অন্ধকারে কিছুই চোখে পড়লো না
কিছুটা এগিয়ে গিয়ে সামনে খেয়াল করতেই লাল এক জোড়া চোখের দেখা পেলো , কি ভয়ংকর চোখ জোড়া ।
রোজা থমকে গেলো ।

ঘরে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে টাইগার আওয়াজ করতে শুরু করলো । রোজা এবার ভীষণ ভয়ে পেয়ে উল্টো দিকে ঘুরে দৌড় দিতে গিয়ে শক্ত কিছুর সাথে ধাক্কা খেয়ে মেঝেতে পড়লো ।
ওরে আমার কোমর রে , গেলো রে , আপু রে ক‌ই তুই , ভাইয়া , বলেই কোমর ধরে কাঁদতে লাগলো রোজা । তখনি রুমের লাইট জ্বলে উঠলো ।
এই ঘরে কেন এসেছিস তুই । কি দরকার তোর এখানে , রাগে রি রি করতে করতে কথা গুলো বললো নির্ণয় । হাঁটতে পারিস না দৌড়ানোর খুব শখ তাইনা ।

ঘড়ির কাঁটা ৫টি ছুঁই ছুঁই , রিয়ান নিজের কাজে একটু বেড়িয়ে ছিলো কাল থেকে তাকে আবার ভার্সিটি যেতে হবে। কিছুটা সামনে যেতেই দেখলো বাইকের উপর বসে তৃধা স্মোক করছে ।
সাদা টিশার্ট , স্টাইলিশ জিন্স সাথে লেদারের জ্যাকেট পড়া , চুল গুলো ব্রাউন কালার । চেহারায় পুরো মাফিয়া মাফিয়া একটা ভাব আছে , রিয়ান একমনে কিছুক্ষণ তাকিয়ে র‌ইলো বাইকের দিকে ।
রিয়ান যখন প্রথম জার্মানি আসে ইয়ারপোট থেকে যখন নীড়ের ডুপ্লেক্স বাড়ির উদ্দেশ্যে গাড়িতে যাচ্ছিলো তখন সে দেখছিলো রাস্তায় কতগুলো ছেলেকে ইচ্ছে মতো পিটাচ্ছে তৃধা প্রথম দেখায় কি ক্রাস টাই না খেয়েছিলো রিয়ান ।
তার কিছু দিন পর হঠাৎ “নীড় রঞ্জনে ” দেখা মিললো তার তবে সাথে ছিলো অর্ণব আর আয়ান ।
ভাবনা থেকে বেড়িয়ে এসে রিয়ান তৃধার দিকে এগিয়ে যেতে যেতে বললো
আরে ডার্লিং তুমি এখানে ।

কি করো ।
নাচতেছি নাচবি ।
কিন্তু তুই তো বিড়ি খাচ্ছিস ।
What বিড়ি ।
আহারে বাচ্চা মেয়ে বুঝেনা আসো কলা কিনে দেই । হাতের টা ফেলো দাও বাবু বলে হাতের সিগারেটা নিতে গেলো রিয়ান
সর মাদার***।
এই তুই মেয়ে না ছেলে হুম এতো তেজ কেন তোর ।
তেজ না দেখায় তো একটু ভালোবাসতে পারিস ।
তোরে ভালোবাসার জন্য তো সো কোল্ড প্রেমিকা আছে তার কাছে যা । এইভাবে রাস্তায় ভালোবাসা ভিক্ষা না করে ।
সর চোখের সামনে থেকে ।
তুই আবার আমার গার্লফ্রেন্ড ক‌ই পাইলি ভাই ।
তুই জানিস আমি কিভাবে বলবো ।
লে খিচুড়ি ।

আমার গার্লফ্রেন্ড তো তুই ‌ আয় ব‌উ আমারে একটু আদর কর ।
বলেই রিয়ান তৃধা দিকে যেতে নিলেই তৃধা হাতের সিগারেট ফেলে বাইকে বসা অবস্থা রিয়ানের মুখে ঘুসি মারে, রিয়ান মুখে হাত দিয়ে অসহায় ভাবে তাকালো তৃধার দিকে ।
এইটা কি করলি তুই 🤬
আদর খাবি বলে আদর দিলাম
রিয়ান কিছু বলবে তার আগে রিয়ানের নাম্বারে কল এলো
পকেট থেকে ফোন হাতে নিয়ে দেখলো নির্ণয় কল করেছে।
হ্যা ভাই বলো ।

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৫

অপর পাশ থেকে কি বললো শুনা গেলো না ।
ওকে ভাই ।
চল যেতে হবে । ব্রো কল দিয়েছে ।
নীড় ।
হুম

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৭