প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৩৬ (২)

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৩৬ (২)
Zannat Xhowdury

বিকেলের আলো পেরিয়ে সন্ধ্যার আগমনী ঘটে অন্দরমহলে চারপাশটা আলো সজ্জিত হয়েছে চারপাশে ঘিরে বসে রয়েছে বেশ নামিদামি লোকজন ইব্রাহিম তালুকদার পাশেই এক আসনে বসে মদের বোতল হাতে বকবক করছে..
ঠিক তার পাশেই হ্যাংলা পাতলা এক লোক বসা পড়নে সুট, টাই বয়স কত‌ই বা হবে এই খুব ত্রিশ -বত্রিশ! ওয়াইনের গ্লাসে এক চুমুক দিয়ে ইব্রাহিম তালুকদারের উদ্দেশ্যে বলে!
– আজকের আসরের টুইস্ট কোথায় তালুকদার সাহেব ?

মুচকি হাসে ইব্রাহিম তালুকদার কপালে কিছুটা ভাজ করে তাকায় উপরের ঘরের দিকে ঠিক তার পর মূহুর্তে আবার সামনের দিকে তাকিয়ে হ্যাংলা পাতলা লোকটির উদ্দেশ্যে বলে
– আরে ধৈর্য ধরুন সাহেব ধৈর্য ধরেন। শুনেছি ধৈর্যের ফল নাকি মিষ্টি হয় তো আজকে আপনাদের জন্য মিষ্টি অপেক্ষা করছে সেই করা এক জিনিস
ঠোঁট গলিয়ে শয়তানি এক হাসি খেলে যায় হেংলা পাতলা লোকটির মুখে! ইব্রাহিম তালুকদার আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় এগিয়ে যান সিঁড়ির দিকে,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

দোতালার ঘরে রোজাকে সাজানো হচ্ছে বাহারি সাজে। সাথে গাঁ ভর্তি গহনা ঠিক যেন বাইজি ঘরের কোন বাইজিকে সাজানো হচ্ছে পড়ানো হয়েছে সাদা রঙের এক চুড়িদার।
জারা বেশ যত্ন নিয়ে সাজাচ্ছে রোজাকে। রোজা যেন ও বাধ্য মেয়ের মতো ফুটিয়ে তুলছে নিজেকে। লম্বা চুলগুলো বেনুনিতে গেঁধে দেওয়া হয়েছে।
পুরো ঘর জুড়ে এক মিষ্টি গন্ধ মিশে আছে। রোজার সামনে বেশ বড় এক ড্রেসিং টেবিলে ফুটে উঠেছে তার মুখের প্রতিফলন, কেমন যেন অপরিচিত লাগছে।। সোনালি রঙের ঝুমকা কানে দুলছে, কপালের মাঝখানে ছোট এক টিপ।
গলায় বসানো হয়েছে ভারী পাথরের নেকলেস, যা তার বুক ঢেকে রেখেছে প্রায়। হাত ভরা চুড়ির শব্দ টুংটাং করে উঠছে সামান্য নড়াচড়াতেই। কোমরের কাছে বেঁধে দেওয়া হয়েছে চওড়া সোনালি কোমরবন্ধ, যা তার শরীরকে আরো বেঁধে ফেলেছে গোপন শৃঙ্খলের মতো।

পায়ে জড়ানো হয়েছে ঘুঙুর, সামান্য নড়তেই যেন গোপন সুরে বেজে ওঠে তা। রোজার কাধের উপর হালকা কিছুটা ঝুঁকে চুলের বেণিতে লাল ও সাদা গাঁদা-গোলাপের গুচ্ছ গুঁজে দেয় জারা।
রূপ যেনো ধরছে না মেয়েটার… এ যেনো সাক্ষাৎ এক পরির দেখা মিলেছে। সাদা চুড়িদারের ভাঁজে, গহনার ঝিলিক, চোখের কাজলের গভীরে যেন এক অদ্ভুত জ্যোতি লুকিয়ে আছে। জারা থেমে গেছে—তার হাতে থাকা চিরুনি মাঝ আকাশে থেমে, চোখ শুধু রোজার মুখে আটকে।
সাজানো শেষ হতেই কয়েক মুহূর্ত ঘরটা যেন নিস্তব্ধ হয়ে যায়। শুধু দূরে কোথাও ঘুঙুরের ক্ষীণ শব্দ ভেসে আসছে। জারা ধীরে ধীরে রোজার চারপাশ ঘুরে দাঁড়ায়, যেন প্রতিটি দিক থেকে তার এই অপরূপ রূপ ধরে রাখতে চায় চোখে।

রোজার ঠোঁট সামান্য কাঁপছে, শ্বাস ধীরে উঠানামা করছে চোখ ভয়ংকর রকমের শীতল, বসা হতে উঠে দাড়ায় সে।
কিছুটা পিছিয়ে গিয়ে দাঁড়ায় জারা …
রোজা হালকা ঝুকে যায় তার উপর চোখে চোখ রেখে বলে ..
– সাজ মনে ধরেছে তো তোর ?
ভরকে যায় যায় জারা কেন জানিনা রোজ কে সে একদম বুঝে উঠতে পারে না। জারার বুকের ভেতর কেমন অদ্ভুত শিরশিরে অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে।
দরজার টোকা পড়ছে .. সকলের মনোযোগ ক্ষুণ্ন হয়! জারা এগিয়ে গিয়ে দরজা খোলে ! ইব্রাহিম তালুকদার এসেছে
-বাবা তুমি …?
নেশা না চড়লেও কেমন দুলছে ইব্রাহিম তালুকদার! বেক্কল এক হাসি দিয়ে তাকায় জারা দিকে ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায় বলে

-হেই মাই গার্ল , রাতের অতিথি কে জলদি নিচে পাঠাও!
নাক সিঁটকায় জারা ইব্রাহিম তালুকদারের মুখ হতে ভেসে আসছে মদের গন্ধে।দূর হতে পুরো কাহিনী দেখছে কোন এক কারণে জারাকে তার ভীষণ মনে ধরছে। এখন আপতত এই চিন্তা সে মাথা থেকে সরিয়ে নিজেকে বাঁচানো চিন্তায় মশগুল সে।
– তুমি যাও আমি আসছি ওকে নিয়ে।
জারার কথায় কুটিল হাসে ইব্রাহিম তালুকদার। কোনো প্রকার কথা না বলে যায় সে। নিচ হতে মিউজিকের শব্দ কানে আসছে, এদিকে রোজা গুনগুনিয়ে সূর মেলাচ্ছে সেই গানে। আয়নায় একবার পরখ করে নেয় নিজের সাজসজ্জা.. জারা এগিয়ে আসে হাত টেনে নিজের মুখোমুখি দাড় করায় রোজাকে
– তোমার ভয় করছে না ?
ফিক করে ঠোঁটে গলিয়ে কিছুটা মুসকি হাসে রোজা। সহসাই হাত রাখে জারার কাধে দরজার দিকে যেতে যেতে বলে ..

– ভুলে যেও না আমি তোমার শত্রু, শত্রু প্রতি এত মায়া থাকা ঠিক নয়। তবে ভুল কিছু ও নয় ..
রোজা হাত নামিয়ে দিয়ে তাচ্ছিল্যের এক হাসি হাসে জারা। ভঙ্গুর হৃদয় আর ব্যথাতুর মন নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে রোজার চোখে। অজান্তেই কাঁপা কাঁপা গলায় বলতে থাকে
– আজ যদি আমার ভালোবাসা তোমায় না চাইতো , তবে বিশ্বাস করো আমি তোমায় কখনোই এই নরপিশাচ দের মাঝে ছেড়ে দিতাম না । আমি তাকে ভীষণ ভালোবাসি আর সে তোমাকে ভালোবাসে।
মুসকি হেসে আরো কিছুটি কাছে এসে আবারো জারার কাঁধে হাত রাখে রোজা.. বেশ শান্ত কন্ঠে বলে বলে।
– চলো তবে ?
ছলছল চোখে রোজার দিকে তাকিয়ে আবারো দৃষ্টি ঘুড়িয়ে নেয় বিনা বাক্য হাটা ধরে বাহিরের পানে…

আসর যেন ধীরে ধীরে তুঙ্গে উঠেছে। লাল নীল আলোয় সাজানো প্রশস্ত ঘর জুড়ে ছড়িয়ে আছে এক ধরনের উষ্ণ অথচ গোপন উল্লাস। কোণের দিকে বসে থাকা বড় বড় ব্যবসায়ীদের মুখে লালচে আভা—
কেউ ধোঁয়ার কুণ্ডলী ছেড়ে ভাবলেশহীন চোখে মেয়েদের দিকে তাকিয়ে আছে, আবার কেউ হাতে ঝকঝকে গ্লাস নিয়ে ধীরে ধীরে ওয়াইন চুমুক দিচ্ছে। মাঝখানে গালিচা বিছানো ফাঁকা জায়গায় কয়েকজন মেয়ে পায়ে ঘুঙুর বেঁধে তালে তালে নাচছে, ঘরের হালকা ধূপ-অ্যালকোহলের মিশ্র গন্ধের সাথে সেই ঘুঙুরের ঝঙ্কার মিলেমিশে এক অদ্ভুত মোহময় আবহ তৈরি করেছে। একপাশে দু’একজন মেয়ে সোহাগী হাসিতে অতিথিদের কানে কানে কিছু বলছে, আর অন্যপাশে গানের সুরে দুলছে পর্দা।

ওইতো এক পাশে বসা… এক মাঝবয়সী লোক কাওয়ালি ধরছে তার গান যেন পুরো আসরের এক চমক।
জারা দ্রুত হাতে টেনে নিয়ে আসছে রোজাকে ,তার হাতে শক্ত করে ধরা রোজার কব্জি, উপরতলার ঘর থেকে নিচে নামার প্রতিটি ধাপে রোজার পায়ের ঘুঙ্গরের হালকা শব্দ বেজে উঠছে, যা মিলেমিশে যাচ্ছে আসরের ভেতরের গানের তালে।
হঠাৎই কাওয়ালির তালে চলা গানের স্রোত থেমে গেল। মাত্রই সুরে ডুবে যাচ্ছিলেন ইব্রাহিম তালুকদার—ওয়াইনের গ্লাসে আঙুল ঘুরাতে ঘুরাতে চোখ বুজে সুরের ওঠানামা মাপছিলেন। গান থামতেই যেন ভেতরে এক অস্বস্তি এসে চেপে বসল, ঠোঁটের কোণে অল্প বিরক্তির রেখা স্পষ্ট হয়ে উঠল।

ঠিক তখনই চোখ গেল সিঁড়ির দিকে। লাল-নীল বাতির ছায়া মেখে ধীরে ধীরে রোজাকে টেনে নিচে নিয়ে আসছে জারা রোজার সাজটা আজ অদ্ভুতভাবে চমকে দেওয়ার মতো—সাদা চুড়িদার গলায় সোনালি গয়না, চোখে ঘন কাজল, ঠোঁটে এক রক্তিম আভা। যেন আলো আর ছায়ার মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা এক লাস্যময়ী নারী
ইব্রাহিমের চোখ কয়েক মুহূর্ত স্থির রইল তাদের ওপর। তারপর ঠোঁটের কোণে টেনে আনলেন কুটিল এক হাসি ,
ঘরে উপস্থিত কয়েকজন অতিথিও সেই দিকে তাকিয়ে আছে—কেউ চাপা ফিসফিস করছে, কেউ মাপছে রোজাকে তাদের চোখের দৃষ্টিতে। ইব্রাহিম তালুকদার ধীরে ধীরে গ্লাসটা ঠোঁটে তুললেন, চোখ কিন্তু সিঁড়ি ছেড়ে গেল না একবারের জন্যও।

আসরের গুঞ্জন যেন এক মুহূর্তে থমকে গেল । জারা রোজাকে এনে দাঁড় করাল ঘরের মাঝখানে। লাল-নীল আলোয় রোজার মুখটা যেন এক অদ্ভুত আভায় ঝলসে উঠছে এদিকে। চারপাশের চোখগুলো ক্ষুধার্ত শিকারির মতো তাকিয়ে আছে তার দিকে।
ঢুলু ঢুলু পায়ে এগিয়ে এল ইব্রাহিম তালুকদার। হাতে এখনও অর্ধেক ভরা গ্লাস, ঠোঁটে মদে ভেজা হালকা হাসি। রোজার সামনে এসে দাঁড়াতেই ঘরের ভেতর যেন এক ধরনের নীরবতা নেমে এল। ইব্রাহিম ধীরে ধীরে হাত বাড়িয়ে রোজার লম্বা আঙুল বুলিয়ে , ফিসফিসিয়ে বলে
– এসেছো তবে ।
বাপের বয়সি এক লোকের মুখ থেকে এমন বাজে, কুরুচিপূর্ণ প্রশংসা শুনেও রোজার মুখে ভাঙন নেই। ঠোঁটে তার সেই চিরচেনা বাকা হাসি সাথে তাচ্ছিল্যের সুতীক্ষ্ণ ধার।
হঠাৎই রোজার ডান হাতের বাহু শক্ত করে চেপে ধরলেন ইব্রাহিম তালুকদার, নির্দয় এক ভঙ্গিতে রোজার শরীরটা কিছুটা ঘুরিয়ে দিলেন। পায়ের ভারসাম্য মুহূর্তেই নষ্ট হয়ে গেল—সে হোঁচট খেয়ে ধপ করে পড়ে গেল চকচকে ফ্লোরে সে।
মাতাল কণ্ঠে হাত উঁচিয়ে, ঠোঁটে কুটিল তাচ্ছিল্য মেখে ইব্রাহিম তালুকদার বলে

—”নাচো… আজ এই আসরের প্রধান আকর্ষণ তুমি… তোমার রূপ।”
ঘরের এক কোণে কেউ মদের গ্লাস ঠোকাঠুকি করল, আর চারপাশে নীরব বিদ্রূপের ঢেউ বয়ে গেল। একটুও নড়চড় নেই রোজার চোখ দুটো তীব্র শীতল।
হঠাৎ করে আবার বেজে উঠল কাওয়ালি। তবলার প্রথম আঘাতে যেন রোজার শরীরের ভেতর জমে থাকা সমস্ত আগুন ছড়িয়ে পড়ল। কাওয়ালির তালে তুলতেই নাচিয়ে তোলে পা সাথে সাথে পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে ঘুঙুর বেজে ওঠার শব্দ, । লাল-নীল আলোয় তার চোখে ঝলসে উঠল অদ্ভুত এক দীপ্তি।

সুরের ওঠানামার সাথে সাথে সে ধীরে ধীরে উঠে দাড়ায়। একটু একটু একটু করে এগিয়ে আসে আসরের মাঝ বরাবর , ইব্রাহিম তালুকদার তখনও আসরের মাঝেই দাঁড়ানো।রোজা একেবারে ইব্রাহিম তালুকদারের সামনে। চারপাশের চোখগুলো শিকারি উল্লাসে ভরে উঠছে, এদিকে রোজা মত্ত তার শিকারি ফাঁদ পাততে।
সে হালকা ঘুরে চারপাশে এক চক্কর দিল, বাতাসে ঘুরে উঠল তার লম্বা চুলের সুগন্ধ। তারপর ঝুঁকে এসে ইব্রাহিমের কানের কাছে ঠোঁট ছুঁইয়ে ফিসফিস করে বলল—

—”যে নারী যত বেশি রূপবতী, সেই নারী ঠিক ততটাই বিষাক্ত… এক ছোবলে মৃত্যু নিশ্চিত… প্রস্তুতি নিন।”
ধীরে ধীরে তীব্র হতে থাকে কাওয়ালির সুর রোজা হাত-পা দুলিয়ে নৃত্য করতে থাকে ।তালে তালে বেজে চলেছে ঘুঙর অপর পাশে নেশায় ডুবে যাচ্ছে বড় বড় ব্যবসায়ীরা স্যুট, টাই থাকলেও। নির্ঘাত এক একটা জানোয়ারের থেকেও কম কিছু নয়। ঘেন্না হচ্ছে রোজার তবে নিজেকে বাঁচাতে শান্ত থাকতে হবে তাকে..
থেমে যায় তবলার সুর বৃদ্ধা চেঁচিয়ে ওঠে প্রখর হতে থাকে কাওয়ালি, ধীরে ধীরে সুরের তালে আবারো মেতে ওঠে আসর । বৃদ্ধার কণ্ঠে যেন এক ধরনের কুমন্ত্রণা—সুরের ঢেউ গিয়ে লাগছে দেওয়ালে, ফের ফিরে আসছে মানুষের বুকের ভেতর।

রোজা দ্বিতীয় বারের নাচের তাল তুলতেই ঘুঙুরের ঝঙ্কার মিলল তবলার আঘাতে। তার চলন দৃঢ়, অথচ মোহময়—প্রতিটি পদক্ষেপ যেন সুরের গায়ে আঙুল বুলিয়ে দিচ্ছে। একে একে ঘরের কোণ থেকে থেমে থাকা অন্য মেয়েরাও এগিয়ে এল, রোজার চারপাশে অর্ধচক্র তৈরি করে তালে তালে নাচতে শুরু করল। লাল-নীল আলোয় ঘূর্ণি খাওয়া চুড়িদার, ঝকমকে গয়নার ঝলক, আর নাচের সাথে তাল মিলিয়ে ভেসে আসা চাপা হাসির শব্দ মিশে গেল কাওয়ালির গানে।

এদিকে ব্যবসায়ীরা মদের গ্লাস হাতে একে একে তলিয়ে যেতে লাগল নেশার সমুদ্রে। কারও চোখ আধো-বন্ধ, কারও হাত গ্লাসে স্থির, ঠোঁটের কোণে মাতাল হাসি ঝুলে আছে। টেবিলের ওপর বরফ গলে পানি হয়ে পড়ছে, কেউ খেয়ালও করছে না। মদের গন্ধ এত ভারী হয়ে উঠল যে ধূপের গন্ধও যেন ঢেকে গেল।
রোজার চোখ জোড়া ধীরে ধীরে লাল হতে থাকে , নিক্ষুত চোখে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে ঘরের প্রতিটি কোণা —তার পায়ের তাল, দেহের বাঁক, আর মুখের অভিব্যক্তি সবই যেন এক হিসাবি ছন্দে বাঁধা। চারপাশে মদের ধোঁয়া আর মাতাল উল্লাসে ঢেকে যাওয়া আসরে, সে নাচের ভিতর লুকিয়ে রাখছে এক অদৃশ্য বার্তা

লোকেশন আবারো ট্র্যাক করেছে নির্ণয়। জিপিএসের শেষ সিগন্যাল দেখিয়েছে এই রাজকীয়, পুরনো দিনের গৌরবময় বাড়িটাকে। বেশ কিছুক্ষণ আগে থেকেই তার গাড়ি এসে থেমে আছে বাড়ির সামনে—তবে দরজা খোলেনি। ভিতরের আলো-আঁধারির ফাঁক গুনে, চারপাশে ছায়ার নড়াচড়া মাপছে। কিছু সময় বাদেই ধীরে ধীরে নিজেকে মুখোশের আড়ালে ঢেকে নেয় সে। কালো কাপড়ে মুখের অর্ধেক ঢাকা, চোখে কেবল এক স্থির, শিকারি দৃষ্টি।
এদিকে রেহানও এসে পৌঁছেছে তবে কিন্তু কিছুটা পরে। আজ তাদের দু’জনেরই গন্তব্য একই, তবু তারা একসাথে নয়। একে অপরের উপস্থিতি নিয়েও যেন বেশ বিরক্ত
অপর দিকে ইব্রাহিম তালুকদার আজ নিজেকে সঁপে দিয়েছে এক মত্ত ধ্বংসের খেলায়। যে খেলায় বহু বছর আগে হারিয়েছিল পাঁচজনের প্রাণ। আজ আর দুই পুরুষের মধ্যে প্রকাশ্য ঝগড়া নেই, কিন্তু শত্রুতা কি কোনোদিন আসলেই শেষ হয়?

নির্ণয় ধীর পায়ে নেমে দাঁড়ায় গাড়ি হতে , অন্ধকারের মধ্যে নিজেকে মিলিয়ে নেয় । রেহান ও তার কয়েক মুহূর্ত পরেই বের হল গাড়ির ভেতর থেকে তার গাড়ির হলুদ আলোতে দুজনেই ঠিক মুখোমুখি যেন পাশাপাশি দাঁড়ানো বাঘ আর সিংহ—দু’জনেরই চোখে একই তীক্ষ্ণ দৃষ্টি, শিকারি স্থিরতা। তবে যতই হোক, রাজত্ব কিন্তু সিংহের। ক্ষমতার ওজন, গর্জনের প্রতিধ্বনি—সব তার দিকেই ঝুঁকে থাকে।

এক মেয়ের জন্যই পাগল হয়ে গেছে এই দুই প্রাণ। রক্তে, অহংকারে, আর দখলদারিতে জড়িয়ে গেছে তাদের জীবন। ভালোবাসা? সে শব্দ এখানে তুচ্ছ—কারণ যেটুকু আছে, তার ভেতরে নেই কোমলতা; আছে কেবল অধিকার আর দখলের যুদ্ধ। দুজনের কারোই নেই কোনো কমতি—একজন বন্য আগুনের মতো, অন্যজন বরফঢাকা বিষের মতো।
রিয়ান কিছুটা এগিয়ে এসে হাত রাখল নির্ণয়ের কাঁধে। চোখে ঠান্ডা কৌতূহল, সামনে দাঁড়ানো রেহানকে সে কিছুক্ষণ নিরবে মেপে নিলো।কোনো কিছু‌ই যেন রেহানের চোখের আড়াল হয় না , সে এক পা এগিয়ে এসে গাড়ির ধারে হেলান দেয়
ফোঁস করে এক নিঃশ্বাস ছাড়ে নির্ণয়। রাগে গজগজ করছে সে
বাঁকা হাসে রেহান কিছুটা নাটকীয় ভঙ্গিতে বলে

—“গন্তব্য যখন এক… শিকারও যখন একজন… নিশানা তো একটাই, তবে কি আমাদের এক হয়ে কাজ করাটাই শ্রেয় নয়?”
রেহানের দিকে তেড়ে যেতে নেই নির্ণয় এ প্রস্তাব যেন একদম মেনে নিতে পারছে না সে। তবে মাঝপথে বাধা হয় রিয়ানের হাত
—“ভাই, কি করছো?”
নির্ণয়ের বুক ওঠানামা করছে দ্রুত শ্বাসে। চোখ এখনো রেহানের দিকে স্থির
—“মাথা ঠান্ডা করো। ও ঠিক কথাই বলেছে। ভিতরের রোজ কি অবস্থায় আছে… আমাদের কারো জানা নেই।”
বাঁকা হাসি খেলল রেহানের ঠোঁটে। গলায় হালকা কর্কশতা মিশিয়ে সে বলল,
— বোঝাও শালাবাবু, বোঝাও… ভেতরে কিন্তু আমার জান পাখি রয়েছে। তার বিন্দু পরিমাণ ক্ষতি চাই না আমি। বুঝাও তোমার ভাইকে…

তার চোখে এক অদ্ভুত শীতল দৃষ্টি—যেন কথার আড়ালে ছুরি লুকানো। চারপাশের বাতাস ভারী হয়ে এলো, রিয়ানের বুকের ভেতর কেমন ঠাণ্ডা কাঁপুনি নামতে লাগল।
হঠাৎ কালো কাপড়ে মোড়া এক অচেনা অবয়ব দেখা মিলে বাড়ির প্রবেশদ্বারের কাছে। সে দিকে তাকিয়েই নির্ণয় থমকে যায়। তার দৃষ্টি মুহূর্তেই কঠিন হয়ে ওঠে, ঠোঁটের কোণে সতর্কতার ছাপ। ইশারায় সে রিয়ানকে দরজার দিকে তাকাতে বলে। রিয়ানও থেমে যায়, শরীরের সব পেশি টান টান হয়ে ওঠে। মুহূর্তে রিয়ান–রেহানের চোখের ভাষায় যোগাযোগ হয়ে যায়—নীরব, তীক্ষ্ণ, প্রস্তুত। পারি, যেন বোঝা না যায় ওই কালো কাপড়ের মানুষটা শত্রু, নাকি দূত।

ধীরে ধীরে ছায়া মানব প্রবেশ করতে থাকে বাড়ির ভিতরে নির্ণয় মাথার টুপি টেনে ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় সেদিকে প্রবেশ তারে তেমন পাহারা নেই ভিতরে হয়তো কোন বিপদ ওত পেতে রয়েছে রেহান ও পড়ে নেয় মাস্ক একটু একটু করে এগিয়ে যায় বাড়ির দিকে
বেশ শান্ত নীরবে এগিয়ে চলেছে তিনজন ।এদিকে গাড়ির ভেতরে বসা। নির্ণয়ের কানে ব্লুটুথ ইয়ারফোন থাকায় গাড়িতে বসেই নির্দেশনা দিচ্ছে সে‌। সেই নির্দেশনা মোতাবেক এগিয়ে চলেছে তিনজন। আজ যেন শত্রু বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তিনজনের পদক্ষেপ সমানতালে চলছে কিছুদূর এগোতেই কানে ভেসে আসে কাওয়ালীর সুর হয়তো বাড়ির উপর তলা থেকে আসছে না হলে নিচতলা বেশ ভাবায় তিনজনকে কোথাও কোন গার্ড নেই এর মানে কি? ভেতরে প্রবেশ করে তিনজন।
ছায়াটা কোথায় যেন হাড়িয়ে গিয়েছে। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো বিনা বাধাই অন্দরমহলে প্রবেশ করেছে তারা চারপাশে বেশ বড় বড় ব্যবসায়ীর ভীড় জমেছে তাদের মাঝখানে নাচ করছে কয়েকজন মেয়ে । একদিকে বাবার পাশেই মদের গ্লাস হাতে বসে রয়েছে জারারা এই মেয়েকে এখানে দেখে যেন এই মুহূর্তে মাথায় খুন চেপে যায় রেহানের ।

হঠাৎ গুলি শব্দে চারপাশ কেমন স্তব্ধ হয়ে যায় ব্যবসায়ীরা সবাই যে যার যার মত নিজেকে গুটিয়ে নেয়। একেকজন পুরো মাতাল হয়ে গিয়েছে কিন্তু জান বাঁচাতে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছে নাচনেওয়ালি মেয়েরা থেমে যায়। একি আশেপাশে কোথাও নেই রোজা
এইতো কিছু সময় আগে ও নেশায় মাতাল হয়েছিলেন ইব্রাহিম তালুকদার তবে , হঠাৎ নিজেকে সামলে তোলে। এই মোক্ষম সময়ের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ায় জারা। মুখোশের আড়ালে থাকা তিন ব্যক্তিকে চিনতে বেশ কষ্ট হয় মেয়েটার। তবে ইব্রাহিম তালুকদার একটুও চিনতে ভুল করে না কে তারা ? হাসি হাসি মুখে এগিয়ে আসে নির্ণয়ের কাছে বেশ উচ্ছ্বসিত গলায় উঠিয়ে বলে

-ওয়েলকাম, ওয়েলকাম মিস্টার চৌধুরী ওয়েলকাম এই সময়ের অপেক্ষায় ছিলাম এত বছর!
শক্ত হতে থাকে নির্ণয়ের হাতের পিসি গুলো। কেমন ফুলে উঠেছে মুষ্টিবদ্ধ করে নিয়েছে হাত। নাচের আসর ভেঙ্গে গিয়েছে অনেক সময় একে একে চলে গিয়েছে সবাই। জারা ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে দাঁড়ায় বাবার পাশে। ইব্রাহিম তালুকদার হাত বাড়িয়ে জড়িয়ে নেয় মেয়েকে
– তো মিস্টার চৌধুরী এভাবে চোরের মত লুকিয়ে বুঝি প্রাণ ভোমরা বাঁচাতে এসেছেন।
এক টানে নিজের মুখোস খুলে ফেলে নির্ণয় দ্রুত গিয়ে চেপে ধরে ইব্রাহিম তালুকদারের পাঞ্জাবির কলার…
-কুত্তার বাচ্চা আমার রোজ ক‌ই ??
ফিক করে হেসে ওঠে ইব্রাহিম তালুকদার .. যেন কোনো মজার কৌতুক শুনেছে সে ! আলগা হয় নির্ণয়ের হাত .. নির্ণয় কে কিছু টা ধাক্কা দিয়ে পিছনে সরাতেই ব্যালেন্স হারায় সে পড়তে নেয় সে তবে তার আগেই দুহতে আগলে নেয় রেহান।

– পাখিকে খাঁচায় পুড়ছি, হিংস্র পশুর খাদ্য বানাতে সিংহের মুখে ফেলেছি।
অগ্নি চোখে ইব্রাহিম তালুকদারের দিকে তাকায় রেহান ইতোমধ্যে নিজেকে সামলে নিয়েছে নির্ণয়। তেতে ওঠে রেহান
– আমার ফুলে বিন্দু পরিমাণ টার্চ লাগলে তোর আর তোর মেয়ের কলিজা শেয়াল কুকুরে খাদ্যে হবে।
হো হো করে পুরো ঘর কাপিয়ে হেসে উঠে ইব্রাহিম তালুকদার। জারা বেশ ভয় পেয়েছে। ইব্রাহিম তালুকদার হাত দিয়ে নাক মুছে এক পা এক পা করে এগিয়ে আসেন রেহান আর নির্ণয়ের কাছে..
কন্ঠে এক ব্যাঙ্গার্থ নিয়ে হিসহিসিয়ে বলেন
– দুই রাজার এক প্রাণ ভোমরা…. বাহ ! দেখতে ভালোই লাগে।
ভালোবাসা তাইনা নষ্টার জন্য ভালোবাসা।
মাত্র‌ই দরজা দিয়ে অন্দরমহলে প্রবেশ করছিলো প্রেম। রোজার নামে বলা অশ্লীল কথাতে মস্তিষ্কের নিউরন গুলো ছুটোছুটি করছে তার। দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে চেঁচিয়ে বলে
– তোর ওই নোংরা মুখে আর একবার মেহরিনের নামে নোংরা কথা বললে তোর টেনে ছিড়বো শুয়োর।
একে একে সকলের নজর তখন প্রেমের উপর ইব্রাহিম তালুকদার আর চোখে একবার পর্যবেক্ষণ করে নেন প্রেম ।বেশ হাসি হাসি কন্ঠে বলেন।

– আরে অফিসার তুমিও এসে গিয়েছো তা তোমারো প্রাণ ভোমরা বুঝি যোগ আছে ওই মেয়ে। কি কান্ড বলো ? এক ফুল তিন মালি তা সার্ভিস কেমন ,আমার ভীষণ জানতে ইচ্ছে করছে।
সকলের মনোযোগ যখন .. প্রেমে আবদ্ধ রেহান বেশ চতুর বুদ্ধিতে এগিয়ে গিয়ে ছুড়ি ধরে জারার গলায়! সহসাই চেঁচিয়ে ওঠে জারা …
– বাবা !
এত সময়ের হাসি হাসি মুখটা কেমন পানসে হয়ে যায় ইব্রাহিম তালুকদারের ..
ঠিক সেই সময়ে উচ্চ শব্দে হেসে ওঠে রেহান.. এদিকে জারার চোখে মহোনিয়তা দুচোখ ভরে দেখছে তার প্রিয় মানুষের হাসি। আচ্ছা এতো বছর তবে কেন হাসি নি মানুষ টা। এই হাসি দেখলে হয়তো আরো আগেই মারা পড়তো মেয়েটা। অথচ তার ভালোবাসার মানুষ কিনা আজ তার গলায় ছুরি ধরছে

– মেহের কোথায় ?
আবারো উচ্চ শব্দে হেসে ওঠে ইব্রাহিম তালুকদার .. হয়তো এখানে কোনো সিনেমা শুটিং চলছে …
-তা তোমরা কি ভেবেছো এই পরের মেয়ের গলায় ছুরি ধরলে আমি বুঝি আমার পাখির খোঁজ দিবো!
চোখ জোড়া ছলছল করে ওঠে জারা পরের মেয়ে বলতে কি বুঝাতে চেয়েছেন ইব্রাহিম তালুকদার। কাঁপা কাঁপা গলায় বলে

– পরেরে মেয়ে … এসব কি বলছো বাবা !
হাসি থামিয়ে কঠিন চোখে জারার দিকে তাকায় ইব্রাহিম তালুকদার কাঠ কাঠ কন্ঠে বলে .. তুই আমার মেয়ে না তোকে adopt করেছিলাম আমার ছেলেকে তো কত আগেই এই দুই জানোয়ার ছিড়ে খেয়েছে। তোকে দিয়ে আমার কার্য সম্পূর্ণ করবো তাই তোকে রেহানকে নজরে রাখতে পাঠিয়েছিলাম। আর এদিকে ছোট সিংহের কাছে পাঠিয়ে ছিলাম আমারি বোনের ছেলেকে …. ঠিক সে মুহূর্তে পড়নে গেঞ্জি আর কালো ট্রাউজার পড়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে থাকে অপূর্ব।
অপূর্ব..

পিছন হতে ফিসফিস কন্ঠে বেশ দুই একবার নামটা বিড়বিড় করে রিয়ান মূহুর্তেই মাথায় আসে তৃধা আর রিধিমার কথা…
ব্রো…
বাকি কথা বলার আগেই মাঝ পথে তাকে থামিয়ে দেয় ইব্রাহিম তালুকদার। কি ভাবছো তোমার ব‌উ আর বোন …
আবারো হো হো করে হেসে ওঠে ইব্রাহিম তালুকদার অপূর্ব এগিয়ে এসে দাড়ায় ইব্রাহিম তালুকদারের পাশাপাশি ইতোমধ্যে তৃধা আর রিধিমা কে নিয়ে আসে বেশ কয়েকজন গার্ড। মুখে টেপ লাগনো দুজনের
কিছুটা ঝুঁকে ফিসফিসে ওঠে ইব্রাহিম তালুকদার মনে পড়ে সেই দিনের কথা …
অতিত….
বেশ বহু বছরের এক অতিত যা বদলে দিয়েছে … এক পরিবারের সাথে এক ছেলের সম্পর্ক। ভঙ্গুর হয়েছে দুটো ছেলের বন্ধুত্ব।

বছরের পর বছর পেরিয়ে গেছে তবুও অতিত যেনো এখনো পেছন ছাড়ে নি …
নির্ণয় , রেহান বয়স দুজনের অল্প। রোজা যেহেতু পরিবারের সকলের ছোট সেই মোতাবেক আদুরটাও সবচেয়ে বেশি। সকলে চোখে মনির হ‌ওয়া সাথে দুই পুরুষের প্রাণ। কাহিনী সঞ্চার হয় … নির্ণয়ের বিয়ের পর … সেবার রোজাকে বাগান থেকে ফুল তুলে দিয়েই রেহান নিয়ে গিয়েছিল চৌধুরী বাড়ির উত্তরের সেই বকুল গাছের দিকে। গাছের নিচে পুরো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ফুল রোজার ছোট ছোট হাতে তুলে দিবে বলেই প্লানিং ছিলো রেহানের … বড় বিল্ডিং মাঝে দিকটায় বেশ ফাকা।তবে উত্তর এক ধারে তালুকদারের গুদাম ঘর। ইয়া বড় এক বিল্ডিং পেড়িয়ে ঠিক গুদাম ঘরে কাছে আসতেই কেমন ভয়ে ছিটিয়ে যেতে লাগলো ছোট রোজা।
বার বার বলছিলো … এইটা কোন জায়গা আমি যাবোনা। রেহান শুনবার পাত্র নয়। হঠাৎ রোজার কান্নার তুর বেড়ে যায় রেহান বেশ শান্ত করতে চাইছে মেয়েটা। তবে এ মেয়ে যেন চুপ হবার নয়। মাত্র‌ই রোজাকে কোলে তুলতে নিয়েছিল রেহান। এমন সময় তার হাত আটকে দেয় ইমন ….

ইমন তালুকদার বয়সে রেহান নির্ণয়ের বেশ বড়। ছোট রোজা গুয়ে গিয়ে বার বার খামছে ধরে রেহানে শার্ট। ইমন বেশ জোরে এক ধাক্কা দেয় রেহানের .. কিছুটা পিছিয়ে যায় সে। তাকে কে পেঁচিয়ে থাকা রোজা গিয়ে ছিটকে পড়ে মাটিতে মাথাটা বেশ কেটে যায় তার রেহান এগোতে গেলেই .. ইমনে সাথে থাকা তার বন্ধু আটকে দেয় তাকে। তখনো মাটিতে বসে ফুঁপিয়ে কাঁদছে রোজা… ইমন এগিয়ে এসে চেপে ধরে রোজার গাল। ফর্সা গালে চাপ পড়তেই মূহুর্তে লাল বর্ণের হতে থাকে তার। বেশ লম্বাটে এক চুমু খায় রোজার ঠোঁটে । ইমনে বয়স তখন কত‌ই বা হবে খুব জোর ১৫..

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৩৬

১৫ বছরের এক ছেলে কিনা ৫বছরের এক বাচ্চা মেয়েকে মোলেস্ট করছে। ইমনের ৪বন্ধুর হাত থেকে ছুটতে পারছে না রেহান। উচ্চস্বরে বেশ হাসির রোল পড়ে যায়।
ছেলেগুলো খুব বিশ্রী ভাবে হেসে … রোজার কান্নায় যেন ফাঁকা স্থান ফেটে পড়ে। ….. বেশ ঝাড়া দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয় রেহান …. ছুটে গিয়ে বসে পড়ে রোজার কাছে। কান্না করে লাল হয়ে উঠেছে মেয়েটা

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৩৭