প্রনয়ের প্রথম পুরুষ শেষ পর্ব
Zannat Xhowdury
হাসপাতালের করিডোরে বসে হাতের নখ টুকছে নির্ণয়। কি হয়েছে বুঝতে বুঝতেই সময় কেটে গিয়েছে অনেকটা। রোজাকে চেকআপে নিয়ে গেছে অনেক সময় এখনও কোনো খবর আসার নাম গন্ধ নেই।
দূরে দাঁড়িয়ে হাতে হাত ঘুষছে রিয়ান। বেচারা টেনশনে থাকলেই এমন টা প্রায়ই কর। কেবিন হতে বেড়িয়ে আসে এক মহিলা ডাক্তার ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে দাড়ায় নির্ণয় কাছে।
নির্ণয় কাধ ঘুড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করে ডাক্তারের উপস্থিত।
– মিস্টার চৌধুরী-
নির্ণয় দ্রুত সোজা হয়ে ডাক্তারের মুখোমুখি হয়ে ব্যস্ত স্বরে বলে –
-ডাঃ আমার ওয়াইফ ।
আগে মিষ্টির ব্যবস্থা করুন তারপর নাহয় …
ডাক্তারের বাকি কথা শেষ করার আগেই এগিয়ে আসে রিয়ান রাগান্বিত কন্ঠে বলে ,
-আমার বোন অসুস্থ আপনি মিষ্টি খুঁজছেন , মানবতা আজ কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে ডাক্তার। রোগি অসুস্থ হলে আপনারা মিষ্টি খুজেন।
ভরকে যায় ডাক্তার নাজমীন – তবুও মুখে হাসি টেনে বলে ,
হাইপার হবেন না , আপনি মামা হতে চলেছেন এইরকম এক খুশির খবর কি মিষ্টি ছাড়া বিতরণ করা যায়।
স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো কড়িডোড় নির্ণয় থমকে গিয়েছে। বাতাসে আজ অন্যরকম এক প্রশান্তি। রিয়ান শুষ্ক ঢোক গিলে আবারো বলে –
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
-কিহ ? কি বলছেন ডাক্তার চৌধুরী বাড়ির জুনিয়র আসবে। ইয়া আল্লাহ , এত খুশি কই রাখবো।
রিয়ান এগিয়ে এসে ডাক্তার নাজমীন কে এক পাক চরকি ঘুড়িয়ে নির্ণয় কাছে যায়। নির্ণয় তখন থ মেরে আছে।
-ভাই ভাই জুনিয়র আসছে । ভাই !
হ্যাঁ ” ভ্রম থেকে বেড়িয়ে আসে নির্ণয়। শান্ত কন্ঠে বলে” আর ইউ সিওর ডাক্তার?
ডাক্তার নাজমীন মুসকি বলে
আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলেছি তবে কিছু টেস্ট করানো হয়েছে রিপোর্ট আসলেই সব ক্লিয়ার হবে। আশা করছি পজেটিভ আসবে।
নির্ণয় চোখ ছলছল করছে ,গলা ধরে আসছে। মুখের কথাগুলো যেন কেউ আটকে দিয়েছে। রিয়ান হাত রাখে নির্ণয়ে কাঁধে , নির্ণয় একবার মুখ তুলে তাকিয়ে দেখে তাকে। কাঁপা কাঁপা গলায় বলে
– আ আমার অস্তিত্ব আসবে , আ আমার জুনিয়র।
রিয়ান মাথা ঝাঁকিয়ে সায় জানায় , ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে ফিক করে হেসে দেয় সে , সাথে শয়তানি স্বরে বলে – এইবার আমার দল ভারি।
– আপনারা চাইলে রোগির কাছে যেতে পারেন ,
নির্ণয় এক মূহুর্ত দেরি করে না। ছুটে যায় রোজার কাছে , কেবিনে দরজার প্রবেশ করতেই নজরে প্রবেশ করতেই। ভাড়ি লেহেঙ্গা ভরে নাক মুখ কুঁচকে নিয়েছে রোজা। নির্ণয়ের প্রবেশ ঘটতেই তেতে ওঠে সে ,
-এই যে আপনি এনেছেন যখন ,তখন লেহেঙ্গা পাল্টে অন্য কাপড় তো পড়িয়ে আনতে পারতেন -উফফব বাবা কি ভারি।
নির্ণয় ধীর ধীরে একদম বেডের কাছে এসে দাঁড়ায় রোজা আবারো কিছু বলবে তার আগে কোলে তুলে নেয় তাকে।
প্রথমে চমকে গিয়েও চুপচাপ থাকলেও পরবর্তীতে নিজেকে সামলে ছটফট করে শুরু করে সে।
-এই কি করছেন নামান বলছি ?
ভ্রু জোড়া কুঁচকে নেয় নির্ণয় বড় বড় চোখ করে তাকায় রোজার দিকে। বিরক্ত কন্ঠে বলে।
-উফফ নড়ছিস কেন আমার মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে,
নড়িস না জান।
কথা শুনে না রোজা হাত-পা আরো কয়েক গুণ ছোড়াছুড়ি শুরু করে সে। রাগি গলায় বলে ,
– নামান বলছি !
নির্ণয় থুরি শুনে তার কথা হাসপাতাল থেকে বেড়িয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় গাড়ির দিকে
নামান আমাকে ,
আমা ভালো লাগছে না এইসব !
মুসকি হাসে নির্ণয় কন্ঠে আজ তার বেশ নমনীয়তা। ঠান্ডা স্বরে বলে,
-এইসব ভালো না লাগলে তো , এই জিবনে বাচ্চার মুখ দেখতে পারবো না বউ ।। এইসব ইনজয় করতে হবে তোমার … আমাদের জুনিয়র আসবে চৌধুরী বাড়ির ফিউচার আসবে !
থমকে যায় রোজা – আমাদের জুনিয়র কথাটা কানে বাজছে তার।
কয়েক মূহুর্ত স্তব্ধ থেকে ধীরে ধীরে হাত রাখে নিজের পেটে। লজ্জা কেমন চারপাশে ঘিরে নিয়েছে তাকে ।
রোজকে বেশ যত্নে গাড়িতে নিয়ে বসিয়ে দেয় নির্ণয়। ভোরে দিকেই পৌঁছে যায় নীরকুঞ্জে।
ভোরের আলো ফুটেছে চারদিকে। , বসার ঘরে ভীর জমেছে সকলের চিন্তিত মুখ গুঁজে কালো হয়ে রয়েছে ,
এতো সময়ে রোজা অসুস্থতার কথা ছড়িয়ে পড়েছে পুরো বাড়িতে ।সকলে মিলে মিটিং বসিয়েছে বসার ঘরে। নির্ণয় রোজাকে কোলে নিয়ে ঢুকতেই এগিয়ে আসেন রত্না চৌধুরী। নাজমা চৌধুরী ও ব্যতিক্রম নয়।
সকলের কৌতুহলে নির্ণয় নামিয়ে দেয় রোজাকে, তৃধা এগিয়ে এসে দাঁড়ায় নির্ণয়ের সামনে
– রোজের কি হয়েছে এ্যানসি।
-ও তেমন কিছু নয় রে শাকচুন্নী শুধু চৌধুরী বাড়ির জুনিয়র আসবে।
নির্ণয়ের পিছিন হতে ভেসে আসা কথাগুলো যেন বসার গরে সকলের অবস্থান স্থির করে দেয়। সকলেই নিশ্চুপ রিয়ান মিষ্টির কার্টুন হতে মিষ্টি বের করে প্রথম মিষ্টি ঢুকিয়ে দেয় তৃধার মুখে।
আমাদের চৌধুরী বাড়ির ফিউচার আসছে। নাজমা চৌধুরী খুশি খুশি গিয়ে জড়িয়ে নেয় রোজাকে। রত্না চৌধুরী মুখ কালো হয় যায় ..
রওশনা চৌধুরী মনে মনে আলহামদুলিল্লাহ বলে। তবে এতো কিছুর মাঝেও একটা প্রশ্ন যেন রত্না চৌধুরী মনে খোচ খোচ করে।
-কাল বিয়ে আজ বাচ্চা তার মানে কি ? ছিঃ ছিঃ
নির্ণয় বাঁকা হেসে কিছুটা ঝুকে যায় রত্না চৌধুরী উপর। কনগ্রাচুলেশন শাশুড়ি আম্মা। দাদি হচ্ছেন তবে আপনার মনে ,যা ভাবছেন তাই সত্যি আমি বিয়ে আগেই আপনার মেয়েকে –
– অসভ্য ছেলে ।
কিছুটা বাঁকা হাসে নির্ণয় , এগিয়ে গিয়ে দাঁড়ায় রোজার পাশে। সবার মাঝ হতে আবারো কোলে তুলে নেয় তাকে। যাওয়ার আগে বেশ আদেশ সুরে বলে লোক লাগিয়ে তার রুম দোতলা থেকে নিচে ট্রান্সফার করতে।
সময় কাটতে থাকে- দিনের পর দিন পেড়িয়ে মাস পেরোতে থাকে। রোজার প্রেগন্যান্সির পুরো সময় টা কাটে যত্নে। পুরো বাড়িতে ছোট সদস্যের আগমনে ব্যতিব্যস্ত সকলের। কেউ যেন বিন্দু পরিমাণ অযত্ন করার সুযোগ পায়না । ইতোমধ্যে বেশ কিছু কাজের লোক আনিয়েছে নির্ণয়।
আজ কাল রোজা ভীষণ বাজে স্বভাব হয়েছে ,রাত হলেই কেমন এটা ওটা খেতে ইচ্ছে করে মেয়েটার। নির্ণয় বিরক্ত হয় না মাঝ রাতে উঠে সব এনে হাজির করে। রোজার বেশ ভালো লাগে এইসব।
ডেলিভারি দিন ঘনিয়ে আসছে , বেশ নার্ভাস রোজা। তার থেকেও বেশি নার্ভাস নির্ণয়
সময়টা ৫সেপ্টেম্বর ডেট ঠিক করা হয়েছে রোজার ডেলিভারি। দেখতেই দেখতে সময় টা হাতের কাছে চলে আসে তবে এর আগেই যেন ….
সেদিন শুক্রবার খাবার খাইয়ে মেডিসন খাইয়ে রোজা কে বিছানায় শুইয়ে দেয় নির্ণয় আজ তার একটু বেড়েতো হবে। কাজটা ভীষণ দরকারি – রোজাকে শুইয়ে দিয়ে বিদায় নেয় সে।
কিছু সময় বেশ ভালোই কাটছিল রোজার। ভারি শরীর নিয়ে নড়াচড়া আজকাল ভীষণ কষ্ট হয়ে যায়, তার।
পেইন করছে পেটের একপাশে। রোজা হালকা নড়েচড়ে এক পাশ হয়ে শুয়ে যায়।
ঘড়িতে রাত ১০টা ৪৭ নির্ণয় আসবে বলে ১১টায় বেশ কষ্ট নিয়েই উঠে বসে রোজা ওয়াস রুমে যাওয়ার প্রয়োজন। বেশ কষ্ট নিয়েই ভারি শরীর টা টেনে টুনে তুলে হাটা দেয় ওয়াস রুমে…
প্রায় পাঁচ মিনিট পড় ওয়াস রুমে থেকে বেড়িয়ে দরজার কাছে আসতেই হঠাৎ পেটে ভীষণ পেইন অনুভব করে রোজা এক চুল নড়বার শক্তি পাচ্ছে – বেশ কষ্ট হচ্ছে । ব্যাথা কাতরাতে কাতরাতে এক সময় ওয়াস রুমের দরজার কাছে বসে বসে পড়ে সে।
রাত ১১টা নির্ণয় বাড়ি ফেরে ঘরের লক খুলে রোজার এই অবস্থা দেখে বেহুঁশ সে। রোজা তখনো ফ্লোর রে বসা নির্ণয় ছুটে গিয়ে বসে রোজার পাশে ব্যস্ত গলা ডাকে তার প্রেয়সীকে
রোজ – রোজ ।
রোজার চোখ উপচে পানি পড়ছে , কান্না গলায় কিছু বলবে তার আগেই নির্ণয় তাকে কোলে তুলে ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে যায়। যাবার আগে চেঁচিয়ে সবাইকে ডেকে যায় সে ।
সে রাতেই পুরো চৌধুরী বাড়ি ছোটে হাসপাতালে , রোজাকে ওটিতে নেওয়া হয়েছে , ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করছে সকলে।
টিপটিপ করে জ্বলছে ওটিতে বাহিরের সেই লাল লাইট টা নির্ণয় ঠায় দাঁড়িয়ে। চোখ জোড়া বেশ শান্ত তার এক পাশে আছে তৃধা।
ইতোমধ্যে ঘন্টা খানেক পেরিয়ে গেছে নির্ণয়ের টেনশন যেন আরেক ধাপ এগিয়ে আসছে। তার দুনিয়া যেন থমকে আছে ওই অপারেশন থিয়েটারে।
চারপাশ কেমন নিস্তব্ধ। ঘুপ ধরা এক পরিবেশে – কারো মুখে নেই বিন্দু পরিমাণ হাসি।
নার্সের ডাক পড়ছে ,
রোজা চৌধুরী বাড়ির লোকের ডাক নির্ণয় ছুটে বেরিয়ে যায় ওয়েটিং রুম ছেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় অপারেশন থিয়েটারের সামনে
হাতের গ্লাভস খুলতে খুলতে বেড়িয়ে আসে ডাঃ নাজমীন।
ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে দাঁড়ায় নির্ণয় চৌধুরী সামনে .
, কনগ্রাচুলেশন মিস্টার চৌধুরী। মিসেস চৌধুরীর টুইন বেবি হয়েছে
পুরো হাসপাতালে সময় যেন নিস্তব্ধ হয় ডাক্তারের বলা ছোট কথাটুকুতে। হাসি ফোটে ওঠে নির্ণয় মুখে .. সে কিছুটা এগিয়ে এসে দাঁড়ায় ডাক্তার কাছে , মুখে হাসি রেখেই চিন্তিত স্বরে বলে ..
-আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ , আমার রোজ কেমন আছে ডাক্তার!
রিয়ান এগিয়ে এসে খুশিতে গদগদ হয়ে দারায়.. নির্ণয়ের পাশে। বেশ উসখুশ করছে তার মন। এই যে মামা হয়েছে , এই আনন্দে এখন বাঁদর নৃত্য করতে পারলে মন শান্ত হতো।
ডাক্তার হাসি মুখে জবাব দেয় ..
– ভালো আছেন , সুস্থ আছেন …… তবে !
হাসি মুখে বিষন্নতা এসে ভীর জমায় নির্ণয়ের। অস্থির হয় রিয়ান.. দ্রুত কন্ঠে বলে ওঠে
তবে কি ডাক্তার আমার বোন..
না নাহ মিসেস চৌধুরী ঠিক আছে তবে সরি টু সে আমরা আপনার মেয়ে কে বাঁচাতে পারিনি।
ঠিক তখনি নার্স হাতে এক বাবু কে নিয়ে বেড়িয়ে আসে। এগিয়ে নিয়ে এসে দাঁড়ায় নির্ণয়ের সামনে। নির্ণয় হাত কাঁপছে প্রথম বাবা হওয়া অনুভূতি যেন প্রকাশ করতে ব্যর্থ সে। এদিক এক সন্তানের শখ অপর দিকে তার অস্তিত্ব। কাঁপা কাঁপা হাতে নার্স হাত হতে তুলে নেয় ছেলেকে।
অপর পাশে ঠিক একই সময় ভেসে আসে অরো একটি বাচ্চা মেয়ের কান্না কালো পোশাক পরিহিত এক পুরুষ … বাচ্চার কান্না সামলাতে ব্যস্ত ।
দুই পুরুষের কোলেই দুই নবজাতক …
মিস্টার চৌধুরী মিসেস চৌধুরী কে বেডে দেওয়া হয়েছে আপনার চাইলে দেখা করতে পারেন। আর আপনার মেয়ের !
– আপনি আমার সাথে আসুন ডাক্তার
ডাক্তার নাজমীনের বাকি কথা শেষ করার আগেই মাঝপথে থামিয়ে দেয় রিয়ান। নির্ণয় তার বাচ্চা হাতে এগিয়ে যায় রোজার কেবিনের একে একে সকলেই এগিয়ে যায় সে দিকে।
সকলে কেবিনে ঢুকতেই কালো পোশাক পরিহিত মানুষটি বেড়িয়ে আসে আড়াল হতে ছোট বাচ্চাটির কপালে আঁকে ভালোবাসার পরশ।
কেবিনে শুয়ে আছে রোজা ছোট নবজাতকে দেওয়া হয়েছে তার পাশে। রিধিমা তৃধা তার পাশে বসেই কত কথা বলছে বাচ্চার সাথে রোজা দেখছে তাদের আনন্দ তবে নির্ণয় খুশি নয় – ব্যপারটা যেন এড়িয়ে যায় না রোজার চো
প্রায় অনেক সময় এক দৃষ্টিতে তাকে পর্যবেক্ষণে করে চলেছে রোজা। নির্ণয়ের এক ধ্যানে কিছু ভাবছে , এত হৈচৈ আনন্দের মাঝে কি হয়েছে লোকটার রোজা ভেবে পায় না।
নির্ণয় ভাই !
সকলে নিশ্চুপ হয়ে যখয ঘরে থাকা প্রতিটি মানুষের আর্কষন কারে নির্ণয় চৌধুরী । উত্তর করে না নির্ণয় রোজা আবারো ডাকে
নির্ণয় ভাই শুনছেন।
হ্যাঁ !
রোজা দিকে তাকতেই নির্ণয় কে ইশারায় ডাকে রোজা। নিজেকে বেশ শান্ত করে এক পা এক পা করে রোজার কাছে গিয়ে বসে নির্ণয় ।
– কি হয়েছে নির্ণয় আপনি খুশি না!
এইসব কি বলছিস তুই আমার চ্যাম্প এসেছে আমি খুশি হবো না কেন ।
-আমার মেয়ে কোথায় নির্ণয় ভাই ?
মেয়ে মানে?
হেয়ালি করছেন ! আমার মেয়েকে একবার দেখার সুযোগ করে দিন। আমি স্পষ্ট তার কান্না শুনেছি।
চমকায় নির্ণয় ‘ রোজা কান্না শুনেছে তবে ডাক্তার যে বললো মেয়ে মারা গিয়েছে হিসেব মিলছে না।
-আমাদের মেয়ে আর দুনিয়াতে নেই রোজ!
চোখের কোণা উপচে পানি পড়ছে রোজার , দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে। ‘ইয়া আল্লাহ দুই সন্তানের জননী বানিয়ে এক সন্তান কে কেড়ে নিয়ে এত কষ্ট কেন দিলে খোদা। আমার মেয়েকে তবে কেনই বা দিলে কেনই বা নিয়ে নিলে !
রাউন্ড শেষে চেম্বারের বসেছেন ডাক্তার নাজমিন এমন সময় ফোনে এক অপরিচিত নাম্বারে কল আসে তার । বছশ উৎফুল্ল হয়ে ফোন রিসিভ করে সে। বেশ খুশি মনে বলে ,
হ্যালো মিস্টার রেহান ! বলুন
অপর পাশের কথা ঠিক বোঝা যায় না ….
– বাচ্চার খেয়াল রাখবেন। আমি এদিকে সব মেনেজ করে নিয়েছি। শিশু ওয়ার্ডে আজ এক মৃত্যু শিশু ছিলো বলেই না কাজ টা এতো সহজ হয়েছে। সাবধানে থেকো।
অপর পাশে ——
ডাক্তার নাজমীন কল কেটে দিয়ে ভাবনায় ডুব দেয়।
অপারেশনের জন্য রেডি মাত্রই চেম্বার ছেড়ে বেড়িয়ে ডাঃ নাজমীন ঠিক তখনি অগমন ঘটে রেহানে।
রোজার শুরু দিক থেকে ডেলিভারি পর্যন্ত পার্সোনাল ডাক্তার ছিলো এই নাজমীন। রোজার টুইন বেবি হবে যা অনেক আগেই নিশ্চিত ছিলেন তিনি অপেক্ষা ছিলো যথা সময়েই। এর
মাঝেই হঠাৎ রেহানের এক বেবি চেয়ে বসা ব্যাপারটা প্রথমে বেশ সন্দেহ লাগছিল তার। তবে অবশেষে এই মানুষটি ভালোবাসা প্রতি এতো অকুতি যা সে নিষেধ করতে পারে নি। অন্যায় করেছেন তিনি তবে একটা মানুষের অস্তিত্ব বাঁচাতে অন্যায় করছেন।
এইযে সকালের এক মা বাচ্চা প্রসব করতে গিয়ে মারা গিয়েছেন। তার ঠিক কিছু সময় পরেই বাচ্চাটা দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে । এই ব্যাপার সামলেই গভীর পরিকল্পনায় মেতেছেন তিনি। হয়তো বিধাতাও তাই চান। তাদের বাঁচার অস্তিত্ব দিয়েছেন , একাকিত্বের অবসান ঘটাতে ওই মানুষটিও এক অস্তিত্বের প্রয়োজন ছিলো।
ভালোবাসা সুন্দর। একাকিত্ব ভালোবাসা আরো বেশি সুন্দর….
তা হয়তো এই মানুষটি প্রমাণ করে দিবে
হাহ্ ।
প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ২৭
নীড় কুঞ্জ ,
রোজা নির্ণয় তার পুচকে মিলে নীড় কুঞ্জে ফিরছে সকলে। হাসপাতাল থেকে এসে বাচ্চার লাশ দাফন করেছে চৌধুরী বাড়ির পারিবারিক করব স্থানে।
শোক সমলে উঠেছে সবাই , ছোট পুচকে নাম রেখেছে রণ। চৌধুরী বাড়ির ভবিষ্যত প্রজন্মকে সবাই কোলে পিঠে গড়ে তুলবে। নতুন প্রজন্মের আগমনী হবে । সকলে মাঝেই ভালোবাসা আগমন হবে…
ভালোবাসা বেঁচে থাকবে চিরকাল।