প্রিয় ডাক্তার সাহেব সিজন ২ পর্ব ২৫
মারশিয়া জাহান মেঘ
আভাকে গোলাপি রংয়ের শাড়িতে বসে থাকতে দেখে, তাশরীফ বলল,
“আমার আদেশ অমান্য করার, সাধ্য আছে কার?”
আভা নাক ভেংচি কা’ট’লো বোধহয়। স্পষ্ট শুনতে পেল তাশরীফ। সে টিশার্ট, খু’ল’তে খু’ল’তে বলল,
“তো, শুরু করা যাক?”
আভা অবাক না হয়ে পারে না। ভাই, একটা ছেলে এমন বেহায়াপনা কিভাবে দেখাতে পারে? তাশরীফ বলল,
“বউয়ের সাথে সব পারা যায়।”
চমকায়িত হলো আভা। এই তাশরীফটা বুঝলো কিভাবে তার মনের অগোচরের কথা?
তাশরীফকে নিজের একদম কাছে এগিয়ে আসতে দেখে আভা বলল,
“ইশ, হচ্ছেটা কি? কি করছেন এইসব? সবসময় ভালো লাগে না এইসব।”
“ফাইনাল হানিমুনটাতো তোর সাথে ভালো করে সারিইনি আভা। বাড়ি পুরা ফাঁ/কা। আমাকে আর আটকায় কে?”
“গোলাপে কিন্তু কাঁ’টা থাকে তাশরীফ ভাই।”
“ভালোবাসা গোলাপের মত সুন্দর। একটুতো বিরহ নিতেই হবে। কাঁটাতো থাকবেই। এখন, এত ডিস্টার্ব করিস নাতো, যেইটা করতে চাচ্ছি, করতে দে।”
রজনীর স্নিগ্ধ ঘ্রাণে, ঘুম ভাঙ্গলো তোহার। সারা রাত কে’টে’ছে নিদারুণ সুখে। এরজন্যই বুঝি বলা হয়? জীবনে বাসর রা’ত একবারই আসে। তোহা মুচকি হাসলো রাতের কথা ভেবে। অজান্তে হলেও, ফারাবী তার সাথে ছিল এতদিন। এইটাতো এক ধরনের পূর্ণতাই বটে। ভালোবাসার পূর্ণতা। ফারাবী তার ভাগ্যে ম্যাজিকের মতই ছিল। নয়তো মনে-প্রাণে যাকে ভালোবেসেছে, তাকে কিভাবে পেয়ে গেল সে! ফারাবী উঠে ওয়াশরুমে যায়। হাঁটতে পারছে না সে। ব্য’থা পাচ্ছে পুরো শ’রী’রে। তোহাকে যেতে দেখে ফারাবী তাকালো। বলল,
“উঠে গেছ? ক’ষ্ট হচ্ছে অনেক?”
তোহা পেছনে তাকালো। এই অবস্থায় ফারাবীকে দেখে ল’জ্জা পেল সে। ফারাবী কোনোরকমে লু’ঙ্গি’টা পড়ে তোহাকে ধ’রে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“চলো, আমি নিয়ে যাচ্ছি।”
“আমি যেতে পারবোতো…”
“পারলে আমি আসতাম না। তুমি পারবে না বলেই আমি এসেছি।”
মাথা নিচু করে লাজুক হাসলো তোহা। কি অদ্ভুত অনুভূতি!
ফারাবী তোহাকে ওয়াশরুমে পৌঁছে দিয়ে রুমে এসে মনে মনে বলল,
“এত রোমান্স করার কি দরকার ছিল ফারাবী? বউটা এখন হাঁটতেই পারছে না।”
নতুন একটা দিন। নতুন যেন সব। আভা ঘুম থেকে উঠে দেখলো, তাশরীফ পাশে নেই। মনে প্রশ্ন উদয় হলো,
“ডাক্তার সাহেব কোথায় গেল?”
তাশরীফ তখনি ওয়াশরুম থেকে বেরুলো। আভাকে ফ্যালফ্যাল চোখে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলল,
“এইভাবে তাকিয়ে আছ কেন বিবিজান?”
“আপনি টাওয়াল প্যাঁচিয়ে চলে এলেন? আপনি কি ভুলে গেছেন? ঘরে একটা মেয়ে মানুষ আছে।”
“সবইতো দেখালাম, নতুন আর কি দেখানোর বাকি আছে?”
তাশরীফের এমন কথা শুনে থতমত খেয়ে যায় আভা। শ’রী’র থেকে কাঁথা সরিয়ে বলল,
“সরুনতো, সরুন। আমার ফ্রেশ হতে হবে।”
আভার একদম কাছে যায় তাশরীফ। বু’ক থেকে ঝড়ছে পা’নির ফোঁটা। আভা তাকিয়ে বলল,
“কি হলো, আবার কাছে আসছেন কেন?”
“মেজাজ এত গ’র’ম কেন বিবিজান? দিব নাকি আরও?”
“ম্ মানে!”
“কিছুতো বললামই না, মনে অন্যকিছু নিয়ে ফেললে বিবিজান? আদরের কথা বলছি। আই মিন ওই আদর না, কি’স। ওই আদরতো…”
কথাটি বলতেই দু’ষ্টু হাসির রেখা ফোটে উঠে তাশরীফের ঠোঁ/টে/র কোণে।
“ওগো শুনছ?”
ফারাবীর এমন ডাক শুনে ফিক করে হেসে ফেলে তোহা। ভেজা চুলে, খয়েরী রংয়ের শাড়িতে নতুন বউয়ের মাঝে যে অসীম সৌন্দর্য ফোটে উঠে, সবটুকু ফোটে উঠেছে তোহার মাঝে। ফারাবী, ড্রেসিংটেবিলের সামনে নিজের ভেজা চুল ঝারতে ঝাড়তে ঠিক করে নিচ্ছিলো, পেছনে তোহাকে হাসতে দেখে বলল,
“হাসছ কেন আমার বউ।”
“হাসব না? ওগো শুনছ বলেছেন যে!”
“ওগো শুনছ বলা বিগ ড্রিম ছিল বিয়ের আগে, বুঝেছ?”
“বুঝলাম। এখন কোথায় যাচ্ছেন শুনি?”
ফারাবী শার্টের হাতা ঠিক করতে করতে বলল,
“একটু বাইরে যাচ্ছি, একটু সেজেগুজে থেকো, আমার ফ্রেন্ডরা আসবে দেখতে।”
“মেয়ে ফ্রেন্ড নাকি ছেলে ফ্রেন্ড?”
“দুটোই।”
মুহুর্তেই তোহার হাসিমুখ মলিন হয়ে এলো। বলল,
“আপনার অনেক মেয়ে ফ্রেন্ড?”
ফারাবী গিয়ে জড়িয়ে ধরলো তোহাকে। শ’ক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল,
“আমার বউয়ের কি জেলাস ফিল হচ্ছে?”
“নাতো, এমনিই বললাম।”
“মুখের ওই সুন্দর হাসিটা কোথায় গেল?”
“সবসময় হাসতে হবে?”
“আমার জীবনে থাকলে সবসময় হাসতেই হবে। তুমি বললে ১ টা কেন? হাজারটা মেয়ে ফ্রেন্ড ছাড়তে রাজি তোহা। কারণ, আমি তোমাকে ভালোবাসি।”
তোহা হেসে ফারাবীকে জ’ড়ি’য়ে ধরে। তারপর বলল,
“আমিওতো আপনাকে ভালোবাসি।”
“তুমি থাকো, নিচে যাও, মায়ের সাথে গল্প করো। আমি আসছি।”
প্রিয় ডাক্তার সাহেব সিজন ২ পর্ব ২৪
ফারাবী রুম থেকে বেরিয়ে যেতেই তোহা হাসলো আপনমনে। ফারাবীকে আজ একটু বেশিই হ্যান্ডসাম লাগছে। অফ গ্রিন শার্ট, এ্যাশ কালার প্যান্ট, হাতে কালো ঘড়ি। সব মিলিয়ে পার্ফেক্ট। তোহার হঠাৎ মনে হলো, আভাকে একটা কল করা উচিৎ। সবটা জানানো উচিত। আর তার ভাইকে? লম্বা একটা ধন্যবাদ জানানো উচিৎ। তোহা ফোন হাতে নিতে যাবে, ঠিক তখনি দৃষ্টি যায় দেয়ালের একটা পিকে।
“একি! ফারাবী কোন মেয়েকে জ’ড়ি’য়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে?”