প্রিয় ডাক্তার সাহেব সিজন ৩ পর্ব ১৫
মারশিয়া জাহান মেঘ
ধ্রুব প্রসঙ্গ এড়াতে ওই জায়গা ত্যাগ করার উদ্দেশ্যে হাঁটা শুরু করলো। দাঁড়ালেই সমস্যা। হাজারটা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। আঁধারীনির চলাফেরা স’হ্য হচ্ছিলো না তার। তাই সুযোগ পেয়ে থা’প্প’ড় বসিয়ে দিলো গা’লে। ধ্রুব নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। আর কতদিন পারবে সে নিজেও জানে না। তখনি ধ্রুবর সামনে এসে দাঁড়ালো শায়ান। ধ্রুব ভ্রু কুঁচকে বললো,
“কি খে’লা খেলছিস ধ্রুব? কি প্ল্যান তোর?”
ধ্রুব রহস্যময় হাসলো। বললো,
“তুই আমার প্ল্যান জেনে কি করবি শায়ান? যেইটা তোর করা দরকার ওইটা তুই কর। আমাকে ফলো করাটা এই মুহুর্তে বোকামি।”
“তোর হাবভাব ভালো লাগছে না ধ্রুব। কথা ছিল মন জিতে নেওয়ার। এরমধ্যে স্মিতা কোত্থেকে আসলো? ওকে বিয়ের প্রপোজালও করে ফেললি? আসলে কি করতে চাচ্ছিস? খেলা কঠিনভাবে খেলে নিজেকে হারানোর পথে নিচ্ছিস। অবশ্য, শাফায়েত খন্দকার শায়ানের কাছে আজ অবধি সবাই হেরেই গেল। জিতলো আর না।”
ধ্রুব শব্দ করে হেসে বললো,
“হারার জন্য তৈরি হ শায়ান, আঁধারের জন্য পৃথিবীর সবকিছু আমি করতে রাজি। আর এইটাতো সামান্যতম বা’জি।”
শায়ান বললো,
“শাফায়েত খন্দকার শায়ান না কখনো হেরেছে, আর না কখনো হারবে। তবে এতটুকু মাথায় রাখ ধ্রুব৷ সবকিছুকে নিজের ভাবা এক প্রকার বোকামি।”
“আমি সবকিছুকেই নিজের ভাবি। ওই জন্যইতো, আমার জিনিস আমারই থেকে যায়।”
কথাগুলো বলেই ধ্রুব শায়ানের পাশ কা’টি’য়ে চলে গেল। ধ্রুব যেতেই শায়ান দেখতে পেলো আঁধারীনি এদিকেই এগিয়ে আসছে। শায়ান গেল আঁধারীনির কাছে। তারপর বললো,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“গা’ল এমন লাল হয়ে আছে কেন আঁধার?”
গা’লে সঙ্গে সঙ্গেই হাত রাখলো আঁধারীনি। তারপর বললো,
“কই? নাতো, কিছু হয়নি।”
“তাহলে এমন লাল হয়ে আছে কেন?”
“কি জানি, হঠাৎ মশার কা’ম’ড়ে’র মতো একটু পেইন পেলাম।”
“দেখি…”
যেই শায়ান আঁধারীনির গা’লে হাত রাখতে যাবে, তখনি আঁধারীনি সরে যায়। বিব্রত হলো শায়ান। আমতা আমতা করে বললো,
“না মানে গা’লটা প্রচুর লাল হয়ে আছে। তাই দেখতে চাচ্ছিলাম কাছে গিয়ে।”
“আমাদের বোধহয় এইবার যাওয়া উচিত। উনারা গাড়িতে উঠে যাচ্ছে।”
“আচ্ছা, আচ্ছা চলো।”
শায়ান আর আঁধারীনি ধ্রুব আর স্মিতার কাছে যায়। আঁধারীনিকে দেখতেই ধ্রুব স্মিতাকে বললো,
“তুমি আমার সাথে বসবে স্মিতা।”
আঁধারীনি তাকালো সেইদিকে। তারপর শায়ানকে বললো,
“শায়ান ভাইয়া, আপনি বাইক চালাতে পারেন?”
“হুম পারি, কেন আঁধার?”
“আমাকে বাইকে করে নিয়ে যাবেন? প্লিজ….”
ধ্রুব চোয়াল শ’ক্ত করে বললো,
“কিসের বাইক? চুপচাপ গাড়িতে গিয়ে বস, এইখানে বাইক তোর জন্য কেউ কিনে রাখেনি।”
শায়ান মধ্য থেকে বললো,
“আঁধার চায়লে, আমি ওর জন্য বাইকও কিনতে পারি।”
ধ্রুব তাকালো না শায়ানের দিকে। ওর দৃষ্টি আঁধারীনির দিকেই। আঁধারীনি নত মাথায় বললো,
“আমি বাইকেই যাব। আমি আর শায়ান ভাইয়া একা যাব। আপনি স্মিতাকে নিয়ে চলে যান গাড়িতে করে।”
ধ্রুবর মেজাজ কিছুটা খারাপ হলো। সে বললো,
“কিসের স্মিতা? কল হিম ভাবী ওকে? ভাইয়ের বউ ভাবী হয়, জানিস না?”
আঁধারীনির ভেতরের জেদটা দ্বিগুণ হলো আরও। সে বললো,
“বিয়ে করুন আগে, তারপর ভাবী ডাকব। কতো শত বয়ফ্রেন্ড- গার্লফ্রেন্ড বাচ্চার নাম রেখেও ব্রেকআপ করে ফেলে। বলাতো যায় না… কোথাকার জল কোথায় গিয়ে পৌঁছায়।”
আঁধারীনি কথাটি বলেই গাড়িতে গিয়ে বসলো। রা’গে মেজাজ হাই হয়ে আছে অনেক। এই মুহুর্তে তার আর কিছু বলতেই ইচ্ছে করছে না।
“শায়ান ভাইয়া, সামনে বসেন কেন? পেছনে বসুন, আমার সাথে।”
ধ্রুবকে শুনিয়ে শুনিয়ে কথাটি বললো আঁধারীনি।
রিসোর্টে এসে পৌঁছায় ওরা। ধ্রুব বললো,
“আঁধার, স্মিতাকে তোর রুমে নিয়ে যাহ। ওহ তোর সাথেই থাকবে।”
“সরি, মাহদিয়া রাজ আঁধারীনি, কারোর সাথে বে’র শেয়ার করে না।”
“এমন ভাব করছিস যেন, বেড না, তোর জামাইকে শেয়ার কথা বলেছি।”
“সেতো অনেক আগেই একজনকে শেয়ার করে ফেলেছি। তাও নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে।”
“কাকে?”
“আপনাকে।”
“কি!”
“কিছু না। এক্সকিউজ মী মিস স্মিতা, আমার সাথে আসুন।”
ধ্রুব বললো,
“যাও, যাও তোমার ননদীনির সাথে যাও। এই আঁধার, আমার হবু বউকে দেখে শুনে রাখিস। তোর ভাবীতো আবার অনেক সুন্দরী৷ কোন পেত্নীর নজর লেগে যায়, তাতো আর বলা যায় না….”
নাক ভেংচি কে’টে আঁধারীনি বললো,
“আমার নজরে আসতেও, যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। আপনার হবু বউয়ের তা আছে? ডক্টর ধ্রুব চৌধুরী।”
স্মিতা নাক-মু’খ ফুলিয়ে বললো,
“কি বললে তুমি?”
“কিছু না, আপনার প্রশংসা করছিলাম, আমার সাথে চলুন ভাবীইইই।”
‘ভাবী’ কথাটা যে খোঁ’চা মে’রে’ই আঁধারীনি বলেছে তা বুঝতে পারলো ধ্রুব৷ আঁধারীনি যেতেই ফিক করে হেসে ফেললো সে।
[৪১]
“এই আঁধার, দরজা খু’ল। কিরে, শুনছিস না?”
ঘুম ঘুম ঘোরে দরজা মেললো আঁধারীনি। ধ্রুবকে দেখে হামি ছাড়তে ছাড়তে বললো,
“হবু বউকে না দেখে একটা রাতও কা’টা’তে পারছেন না?”
ধ্রুব আঁধারীনির হাত ধরে টা’ন দিয়ে আঁধারীনিকে নিজের বক্ষঃস্থলে আনলো। তারপর আঁধারীনির ঠোঁ/টে আঙ্গুল চে’পে বললো,
“এত কথা বলিস কেন তুই? এত বকবক শুনতে ভালো লাগে না।”
“ছাড়ুন, হবু বউ দেখলে আমার চুলের মুঠি ধরে ফেলবে।”
“তার আগেই, ওর হাতের কব্জ কে/টে ফেলব। এখন মাথাটা টি/পে দে।”
“বাইরে দাঁড়িয়ে? আপনি কি ঘুমে আছেন? মানে, ঘুমে ঘুমে কথা বলছেন?”
“আমিতে ভূত, তাই না? যে ঘুমে ঘুমে সব করি।”
“হতেওতো পারেন তাই না?”
“মাথাটা টি’পে দেতো।”
প্রিয় ডাক্তার সাহেব সিজন ৩ পর্ব ১৪
“মাথার বদলে গ’লা টি’পে দিব? দিই?”
“কি!”
“না না কিছু না। আচ্ছা টি’পে দিচ্ছি।”
“আঁধার, সদ্য ঘুম থেকে জেগে উঠা তুই অপ্সরীর মতো সুন্দর।”
“ওইরকম সুন্দর হয়ে কি লাভ হলো ধ্রুব ভাই? আপনাকেতো এই সৌন্দর্যের মাঝে ঘায়েল করতে পারলাম না।”