প্রিয় ডাক্তার সাহেব সিজন ৩ পর্ব ২১

প্রিয় ডাক্তার সাহেব সিজন ৩ পর্ব ২১
মারশিয়া জাহান মেঘ

আঁধারীনি চোখ মেলতেই ধ্রুবকে পাশে দেখতে পায়। ধ্রুব খবরের কাগজ পড়ছে। আঁধারীনির দু চোখের কোণে পা’নি পড়ছে। হসপিটালের পেশেন্টের ড্রেস পরে আছে সে। ধীর কন্ঠে ডাকলো,
“ধ্রুব ভাই….”
আঁধারীনির কন্ঠ শুনে সঙ্গে সঙ্গে ধ্রুব সেইদিকে তাকায়। এগিয়ে আসে আঁধারীনির কাছে। কোমল কন্ঠে বললো,
“কি হয়েছে আঁধার?”
“আমাকে অনেক মে’রে’ছে স্মিতা। আমি ভীষণ ব্যা’থা পেয়েছি। এই যে দেখুন, আমার হাতে দেখুন, কেমন র’ক্ত জ’মে আছে। বেল্ট দিয়ে মে’রে’ছে আমাকে।”
মুহুর্তেই ধ্রুবর চোখে পানি চলে আসে। আঁধারীনি বললো,
“চোখে পানি কেন ধ্রুব ভাই?”
“আমার চোখে পানি? হুয়াট ননসেন্স আঁধার। ডক্টর ধ্রুব চৌধুরী আমি। সহজে কারো জন্য কাঁদি না।”
“আমিতো আপনার জন্য সহজ কিছু নয় ধ্রুব ভাই। কঠিন। ওই জন্যইতো কাঁদছেন। ধ্রুব ভাই শুনুন…”

“শুনছি বল।”
“ভালোবাসি।”
“কি! আমি কি ভুল কিছু শুনতে পেলাম?”
লাজুক হাসলো আঁধার। ল’জ্জা মাখা কন্ঠে বললো,
“জানি না।”
ধ্রুব আবারও বললো,
“আমি কি সত্যিই সঠিক কিছু শুনতে পাচ্ছি?”
“তাহলে আমি কি মিথ্যে কিছু বলেছি?”
ধ্রুব একদম কাছে যায় আঁধারীনির। চোখে চোখ রেখে কানটা খানিক পেতে বললো,
“আঁধার আবার বল, শুনতে পাইনি আমি।”
“ভালোবাসি ধ্রুব ভাই।”
ধ্রুব সঙ্গে সঙ্গে বু’কে হাত রাখলো। চোখ বন্ধ করে বললো,
“হায়েএএ, ম’রে’ছিরে আঁধার, ম’রে’ছি।”
“কোথায় ধ্রুব ভাই?”
“তোর চোখের মায়ায়।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আঁধার ল’জ্জা’য় মিইয়ে গেল। ধ্রুব আঁধারীনির দুই গা’লে দুই হাত রেখে বললো,
“এই কথাটা বলতে এত দেরি করলি কেন আঁধার? দুদিনের জীবনে এত কিসের ভনিতা? তোকে নিজের করে না পাওয়ার আফসোস বোধহয় আমাকে মৃ’ত্যু’র দিকে নিয়ে যেতো। খুব সম্ভবত, কিছু না পাওয়ার তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে আমি বোধহয় বেশিদিন বাঁচতাম না।”
আঁধারীনি আ’ঙ্গু’ল দিয়ে ধ্রুবর ঠোঁ/ট চে’পে ধরে। ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে বললো,
“এইসব কি বলছেন ধ্রুব ভাই। এইসব বলবে না। আমার ভীষণ কষ্ট হয়।”
ধ্রুব আঁধারীনির কপালে চু’মু দিয়ে বললো,
“আর কোনো ক’ষ্টকে তোর কাছে আসতে দিব না আঁধার।”

শায়ানের চোখ রক্তিম হয়ে আছে। হাত মুঠোবন্দি করে সে। ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে তীব্র রা’গ নিয়ে বললো,
“ডক্টর ধ্রুব চৌধুরীও যে কথার খে’লা’প করতে পারে তা তবে প্রুভ হলো বল?…”
ধ্রুব কফি খেতে খেতে বললো,
“কথার খে’লা’পি কে করলো শায়ান? তুই একা চাইলেতো হবে না। আঁধারও তোকে চাইতে হবে।”
“না চায়লেও, আমার হতে হবে ওকে। ইটস ক্লিয়ার?”
“শায়ান, জো’র করে কি ভালোবাসাকে আদায় করে নেওয়া যায় বল?”
“আমি চাইলেই নিতে পারব। একদা একটা মেয়ে বিয়েতে রাজি ছিল না। ফোর্সলি একটা মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে। বিয়ের পর? বিয়ের পর সব মানিয়ে নিয়েছে মেয়েটা।”
“আমি থাকতে আঁধারকে কেউ ফো’র্সলি কিছু করাতে পারবে না।”
শায়ান কোনো কথা না বলে, আঁধারীনির কাছে গেল। ধ্রুব পেছন থেকে কেবল সেদিকে চেয়ে থাকলো।
শায়ানকে আসতে দেখে আঁধারীনি উঠে বসার চেষ্টা করলো। শায়ান অন্য দিকে তাকিয়ে বললো,
“থাক, উঠতে হবে না। সুস্থ হও জলদি আঁধার। আমরা বিয়ে করব শীঘ্রই।”
আঁধারীনি গলাটা ঝেরে নিলো। কাঁ’পা কাঁ’পা ঠোঁ/টে বললো,

“শায়ান ভাইয়া, আমি ধ্রুব ভাইকে ভালোবাসি। এখন না, অনেক আগে থেকেই৷ ধ্রুব ভাই আমাকে জেলাস ফিল করার জন্য যা যা করেছে, আমিও তাই-ই চেষ্টা করেছিলাম। তাই আপনার সাথে এতোটা ক্লোজ হতে হয়েছে।”
চি’ৎ’কা’র দিয়ে উঠল শায়ান। তির্যক রা’গ নিয়ে বললো,
“কেন? জাস্ট জেলাস ফিল করার জন্য আমার অনুভূতির সাথে কে খেলতে বলেছে তোমাকে আঁধারীনি? আমার সময়ের কি কোনো মূল্য নেই? নাকি আমার অনুভূতির কোনো মূল্য নেই? এত বড় অন্যায় করার সা হ স কিভাবে হয় তোমার?”
আঁধারীনি আঁ’ত’কে উঠে কিছুটা। তুতলিয়ে বললো,
“স্ সরি ভা্ ভাইয়া।”
“হুয়াট সরি? আমার টাইম, অনুভূতি ফিরিয়ে দিতে পারবে তুমি? আনসারর মি….”
তখনি সেইখানে উপস্থিত হয় ধ্রুব। বললো,
“এইভাবে তুই আঁধারের সাথে নেক্সট টাইম একদম কথা বলবি না শায়ান। এইটা তোর ফ্যামিলি পাসনি। যে তোর এমন আচরণ স’হ্য করবে।”
সঙ্গে সঙ্গে মুখটা মলিন হয়ে যায় শায়ানের। এক ধ্যানে তাকিয়ে থাকে ধ্রুবর দিকে। ধীর কন্ঠে বলে উঠল,
“মানুষ দূ’র্ব’ল জায়গায় আঘাত করতে খুব পছন্দ করে ধ্রুব। নাউ আই রিয়েলাইজ দিজ।”

“শায়ান ভাইয়ার ফ্যামিলিতে কি কোনো প্রবলেম আছে ধ্রুব ভাই? শায়ান ভাইয়া ফ্যামিলির কথা শুনতেই এমন চুপসে গেল কেন? উনার চোখে আমি চকচক কিছু দেখতে পেয়েছি।”
ধ্রুব ক্ষীণ শ্বা’স ফেলল। বললো,
“পরে একদিন সব তোকে বলব। এখন ওসব তুলতে চাই না। আমিও কি যে করলাম, মাথা গ’র’মে ওই কথাটা তখন ভুলবশত তুলে ফেললাম।”
ধ্রুবর মন খারাপ বুঝে আঁধারীনি ধ্রুবর হাতটা শ’ক্ত করে ধরলো। তারপর বললো,
“আমরা বিয়ে কখন করব ধ্রুব ভাই?”
“খুব শীঘ্রই আঁধার। তার আগে শায়ানকে বুঝতে হবে এইটা যে, একা ভালোবাসলেই হয় না। অপরপক্ষকেও ভালোবাসতে হয়।”

প্রিয় ডাক্তার সাহেব সিজন ৩ পর্ব ২০

“শায়ান ভাইয়া এইটা কখনো মানবে?”
“মানতে হবে।”
হঠাৎ পেছনে কারো পায়ের শব্দে পেছনে তাকায় ওরা দুজন। শায়ানকে দেখতে পেলো। শায়ান এক চিলতে হাসি ঠোঁ/টের কোণে ঝু’লি’য়ে বললো,

প্রিয় ডাক্তার সাহেব সিজন ৩ শেষ পর্ব