প্রিয় পূর্ণতা পর্ব ৪১
তানিশা সুলতানা
জমিদার বাড়ির উঠোনে শুয়িয়ে রাখা হয়েছে মিষ্টিকে। ডান পা বাঁকা হয়ে আছে। সোজা করতে পারলো না কেউ। দুই ঠোঁটের মাঝে কিঞ্চিৎ ফাঁকা এবং মেলে দেওয়া। সেটাও বন্ধ করা গেলো না। তবে দেখে মনে হচ্ছে হাসছে।
ডান হাত বুকের বা পাশে রাখা। হাতখানাও টেনে সোজা করা যায় নি। মি যে সুন্দর লাগছে ঘুমন্ত মুখটা। যেনো এক টুকরো চাঁদ জমিনে নেমে এসেছে। হাসিমাখা মুখখানার দিকে তাকালেই যেনো কলিজা ঠান্ডা হয়ে আসছে।
ইতোমধ্যেই চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে জমিদার বাড়ির একমাত্র কন্যার মৃত্যুর সংবাদ। সকলেই ছুটে আসছে শেষ বার দেখতে। বাড়ি ভর্তি মানুষ। অনেকেই ফিসফিস করে বলছে “ভালো মানুষ কখনোই খারাপ মানুষদের সাথে থাকতে পারে না। আল্লাহ ফুলটাকে পাঠিয়েছিলো পাপীদের ঘরে। তাই দ্রুত নিয়ে গেলো। এবার যদি জমিদারদের শিক্ষা হয়। আল্লাহ ওনাদের শিক্ষার জন্য পবিত্র ফুলটাকে তুলে নিলো।”
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
মনোয়ার মেয়ের খাটিয়া ধরে চিৎকার করে কাঁদছেন। পাগলের ন্যায় দেখাচ্ছেন তাকে। ইতোমধ্যেই ফুলে উঠেছে আঁখি জোড়া। ভেঙে গিয়েছে গলা। এক মুহুর্তের জন্যও মুখ বন্ধ করছে না। বিলাপ বকে যাচ্ছে অনবরত
“আল্লাহরে তুমি আমাকে নিয়ে নাও। আমার মেয়েটারে ফিরিয়ে দাও। আল্লাহ আমার ফুলটা কি করে অন্ধকার কবরে থাকবে? ইয়া আল্লাহ আমার পাপের শাস্তি আমার মেয়েকে দিও না।
তার আহাজারি হয়ত আল্লাহ শুনলো না। বা হয়ত শুনেছে এবং বোঝাচ্ছেন
” তুই মা রা গেলে তো প্রিয়জন হারানোর শোক বুঝতে পারতিস না। তাই তোর মেয়ে মা রা গেলো। দেখ কেমন লাগে। সন্তান হারানোর ব্যাথা কতোটা গাড়ো সেটা অনুভব কর”
পূর্ণতার এক হাতে মিষ্টির মুঠোফোন। আরেক হাতে লাল রংয়ের ডাইরি। দুই দিনে অনেক কিছু লিখে রেখেছে মেয়েটা। হয়ত বুঝে গিয়েছিলো তার সময় শেষের পথে। বিদায় জানাতে হবে তাকে। ডাইরির ওপরে বড়বড় অক্ষরে লেখা “আমার চৌধুরী সাহেব” কতোটা গভীর ছিলো মিষ্টির ভালোবাসা। কতোটা আক্ষেপ নিয়ে দুনিয়া ছাড়লো সবটাই নিখুঁত ভাবে লিখে রেখেছে।
সেলফোনের ডায়াল কলে অভির নাম্বার রয়েছে। ৫৭ বার কল করেছে মিষ্টি ৭টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত। বারোটা মেসেজ লিখেছে।
বুক চিঁড়ে দীর্ঘ শ্বাস বেরিয়ে আসে পূর্ণতার। ঘৃণা হয় অভির প্রতি। বোনের এমন হৃদয় কাঁপানো মেসেজ দেখেও তার মনে হয় নি “মিষ্টি ভালো নেই? একটাবার খোঁজ নেই বোনের”
“দাভাই আমার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে
” দাভাইরে বাবাকে একটু কল করে বল না আমায় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে”
“দাভাই একবার বাড়ি আয় না। তোকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে”
“দাভাই চৌধুরী সাহেবকে বল না আমার সাথে একটু বলতে”
“দাভাই আমি মরে যাচ্ছি
” দাভাই আমার বুকের মধ্যে কিছু একটা চেপে বসে আছে। শ্বাস নিতে কষ্ট হয় আমার।
“দাভাই আমার ঘাড়ের রগ গুলো ফুলে উঠছে।
” দাভাই আমাকে বাঁচা না।
“দাভাই ভালোবাসি তোকে।
” দাভাইরে আমি সয্য করতে পারছি না।
“ও দাভাইরে মাকে একটু নিয়প আয় না।
” আমি বোধহয় শেষ বার তোকে দেখতে পারলাম না দাভাই।
বাঁচার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে গিয়েছে মিষ্টি। কিন্তু ভাগ্যের কাছে হেরে গিয়েছে।
ডাইরিখানা খাটের ওপর ফেলে রাখে পূর্ণতা। উল্টো হয়ে পড়ে এবং শেষ পৃষ্ঠা মেলে যায়। স্পষ্ট লেখা দেখতে পায়
“পৃথিবীর হাজারো মানুষ আপনাকে দেখবে কিন্তু আমি আর কখনোই দেখতে পাবো না”
বিরবির করে আওড়ায় পূর্ণতা
“তুমি ছাড়া আমার কেউ জেনেও একা ফেলে চলে গেলে? আমি বাঁচবো কি করে? আমাকে আগলে রাখবে কে?
তোমার চৌধুরী সাহেব সারাজীবন তোমার থাকবে। কথা দিলাম আমি।
মায়ের আহাজারিতে ঘুম ভাঙে ইফতিয়ারের। উচ্চস্বরে বিলাপ বকে যাচ্ছেন। বিরক্তিতে চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে ইফতিয়ার। কানের ওপর বালিশ চাপা দিয়ে আবারও ঘুমানোর চেষ্টা করে কিন্তু ব্যর্থ হয়৷ মায়ের চিৎকারের স্বর বাড়ছে যেনো।
শব্দ করে দরজা খোলার শব্দ হয়। পিটপিট করে চোখ খুলে ইফতিয়ার।
আমেনা বেগম ইফতিয়ারের কক্ষে প্রবেশ করে বিচলিত স্বরে বলে
“আব্বা মিষ্টি আর নেই।
চমকে ওঠে ইফতিয়ার। এক লাফে উঠে বসে। বুকের ভেতরে কম্পন শুরু হয়ে যায়। কাঁপা-কাঁপি গলায় বলে
” ম…..মা মজা করছো নিশ্চয়?
ও শিখিয়েছে তোমাকে এটা বলতে? আবার মিথ্যে বললো?
আজকে ওকে ইচ্ছে মতো বকা দিবো।
বলতে বলতে কোমরে জড়িয়ে থাকা কম্বল সরিয়ে মার্বেল ফ্লোরে পা রাখে। ডান হাতে চুল ঠিক করে চপ্পল জোড়া খুঁজতে থাকে। খাটের অন্য কোণায় পেয়ে যায়। পরপর কাবাড হতে একখানা শার্ট নিয়ে গায়ে চাপাতে চাপাতে বেড়িয়ে পরে কক্ষ হতে। আমেনা বেগমও ছেলের পেছনে যেতে থাকে।
দূর হতেই জমিদার বাড়িতে মানুষের কোলাহল আন্দাজ করা যাচ্ছে। রাস্তা জুড়ে রয়েছে কিলকিলে মানুষ। সকলের নয়ন জোড়া ভেজা। ইফতিয়ারের শ্বাস আটকে আসতে চায়। হৃদয়ের কাঁপন বাড়তে থাকে। মনের মধ্যে প্রশ্ন জাগে
“এতো মানুষ কেনো? তাহলে কি মা ঠিক বললো?
পরপরই আবার মনকে বোঝায় “এটা কখনোই হতে পারে না। হয়ত অন্য কোনো সদস্য মৃত্যু বরণ করেছে। বা এমপির কাছে কোনো দরকারে এসেছে।”
জমিদার বাড়ির মূল ফটকে পা রাখতেই ইফতিয়ারের নজর পড়ে কাঠের খাটিয়ার পানে। কেউ একজন লম্বা হয়ে শুয়ে আছে। সাদা রংয়ের বিছানা চাদর দ্বারা ঢেকে রাখা হয়েছে মুখ খানা। মনোয়ার খাটিটার পয়া ধরে ঘাপটি মেরে বসে আছে। ইমন ইশান ইফাদ সকলেই রয়েছে। তাদের আহাজারিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে চারিপাশ। মমতা বেগমের আর্তনাদে বুক ফেঁটে আসছে সকলের। শিউলি, রেশমা, রিমা ওনারাও আঁচলে মুখ ঢেকে কাঁদছে। শুধু দেখা যাচ্ছে না পূর্ণতাকে এবং মিষ্টিকে।
ইফতিয়ার খাটিয়ার পাশে বসে পড়ে। কাঁপা-কাঁপি হাতে চাদর সরায় মুখ হতে। চোখের সামনে ভেসে ওঠে মিষ্টির মলিন মুখ খানা। ঘুমিয়ে আছে চোখ বন্ধ করে। এবং হা করে। তার ঠোঁটেট কোণে যেনো মিষ্টি হাসি।
ইফতিয়ার নিজেও মুচকি হাসে। মিষ্টির দুই গালে হাত দিয়ে বলে
“এই মিষ্টি ওঠো। দেখো তোমার চৌধুরী সাহেব এসেছে। চোখ খুলে দেখো
ইফতিয়ারের ডাক উপেক্ষা করে মিষ্টি। খোলে না আঁখি পল্লব। বিচলিত হয় ইফতিয়ার। মিষ্টি কখনোই এমন করে। একবার কল দিলেই কল ধরে। একবার ডাকলেই তাড়াহুড়ো করে ছুটে আসে। সেই মিষ্টি আজকে কেনো সাড়া,দিচ্ছে না?
” মিষ্টি আমি কথা বলছি তো তোমার সাথে। দেখো ধমক দিচ্ছি না। তুমি খুশি হবে না? কিটকিটিয়ে হেসে উঠবে না? আড়চোখে তাকিয়ে থাকবে না? আমায় দেখবে না? চোখে চোখ পড়তেই লজ্জায় নুয়িয়ে পড়বে না?
মিষ্টি
ও মিষ্টি
রাগ করেছো?
মিথ্যে বলার শাস্তি দিচ্ছিলাম তো। আর শাস্তি দিবো না। ওঠো না লক্ষীটি।
আমেনা বেগম ছেলের কাঁধে হাত রাখে।
“আব্বা ও আর কথা বলবে না। চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছে মিষ্টি।
চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলে ইফতিয়ার। ঠোঁট জোড়া কাঁপছে। শক্তপোক্ত পেশিবহুল শরীরখানাও ধরে রাখতে পারছে না। অগত্য মাটিতে বসে পড়ে। মনে হচ্ছে দুনিয়া থমকে গিয়েছে। বুকের ভেতরে কেউ ছুড়ি দিয়ে বারংবার আঘাত করছে। মনে পড়ে যাচ্ছে কিছু স্মৃতি।
গতকালকের বলা কথা গুলো
” আমার সাথে একটু কথা বলবেন চৌধুরী সাহেব”
আহারে কতোটা আকুলতা নিয়ে বলেছিলো মেয়েটা।
“আমার বুকে ব্যাথা হচ্ছে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবেন আমায়”
বাঁচার প্রবল ইচ্ছে শক্তি থেকেই বলেছিলো কথাটা। কিন্তু বেইমান ইফতিয়ার শুনলো না।
ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে ইফতিয়ার। মিষ্টির হাতখানা মুঠোয় পুরে কপালে ঠেকিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। আর বলতে থাকে।
“এটা হতে পারে না। আমার আল্লাহ কখনোই আমার সাথে এমনটা করতে পারে না। আমি কি সব হারাবো? ভালো থাকার অধিকার কি আমার নেই?
আমি যে ডালটা ধরি সেই ডালটাই ভেঙে যায়। এতোটাই দুর্ভাগা
ইফতিয়ারকে থামানোর স্পর্ধা কারোরই নেই।
” আমাকে ছেড়ে যেনো না মিষ্টি। তোমাকে হারানোর শোক আমি সইতে পারবো না। তোমার চৌধুরী সাহেব বাঁচবে না মিষ্টি।
মধ্য বয়ষ্ক এক হুজুর বলে
” ওকে এখন গোছল করানো প্রয়োজন৷ জুম্মার আগে কবর দিয়ে সকলেই জুম্মার নামাজ আদায় করবো।
ইফতিয়ারের কর্ণকুহরে প্রবেশ করলো কথাখানা। কান্না থেমে যায়। এক পলক তাকায় হুজুরের মুখপানে। হাতের উল্টো পিঠে চোখের পানি মুছে ফেলে। পরপর মাটি হতে উঠে কাত হয়ে শুয়ে পড়ে মিষ্টির পাশে। মাথা রাখে মিষ্টির বুকে। আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নেয়।
অবাক হয়ে সকলেই তাকায়। আমেনা বেগম চিৎকার করে ওঠে। মনোয়ারও ঘাবড়েছে। লাশের পাশে এভাবে কোনো মানুষ শুয়ে আছে ব্যাপারটা বোধহয় প্রথমবার ঘটলো।
ইফতিয়ার মাথা তুলে মিষ্টির কপালে চুমু খায়। এবং আমেনাকে উদ্দেশ্য করে বলে
“মা আমি ওর সাথেই থাকবো। এখানেই শান্তি খুঁজে পাচ্ছি আমি।
মুহুর্তেই কোলাহল সৃষ্টি হয়। সকলেই ইফতিয়ারকে উঠতে বলে মিষ্টির পাশ হতে। কারো কথাই কানে তুলে না সে। চোখ বন্ধ করে ফেলে। আমেনা বেগমের কান্নার স্বর বাড়তে থাকে। আবারও আহাজারিতে মক্ত হয় জমিদার বাড়ি।
জমিদার সাহেব লাঠিতে ভর করে এগিয়ে আসে ইফতিয়ারের নিকট। নানান কথা বলে ওঠার অনুরোধ করে। ইফতিয়ার কানেই তুলে না। হুজুর সহ উপস্থিত সকলেই অনুরোধ করে। সব শেষে টেনে তুলতে যায়। কিন্তু মিষ্টিকে এতো শক্তি দিয়ে আঁকড়ে ধরেছে যে টেনে তুলতে ব্যর্থ হয়।
ঘন্টা পেরিয়ে যায় কেউ তুলতে পারে না ইফতিয়ারকে। মরা বাড়িতে আরেক ঝড়ের সৃষ্টি হয়।
তখন পূর্ণতা ডাইরি হাতে এগিয়ে আসে। ইফতিয়ারের পাশে দাঁড়ায়। ধীর গলায় বলে
” চৌধুরী সাহেব তাকান আমার পানে।
চটজলদি চোখ খুলে ইফতিয়ার। পূর্ণতাকে দেখে যেনো সে খুশি হলো।
“পূর্ণতা আমি মিষ্টিকে কথা দিয়েছি সারাজীবন ওর পাশে থাকবো। কথা রাখবো না?
মিষ্টি ভীষণ ভয় পায়।
লাইট বন্ধ করে ঘুমতে পারে না। একা কবরে কি করে থাকবে?
ঠোঁট কামড়ে কান্না আটকায় পূর্ণতা। ইফতিয়ার মাথার ওপরে অবস্থিত আসমানের পানে তাকিয়ে বলে
“অসম্ভব ভালোবাসার বিনিময়ে আমি শুধু অবহেলা উপহার দিয়েছি। শেষ সময়ে আমি ওর সাথে গিয়ে ওকে বোঝাতে চাই আমি বেইমান না।
ওকে ভীষণ পছন্দ করি আমি। আমার হৃদয় জুড়ে পূর্ণতা থাকলেও মস্তিষ্ক জুড়ে মিষ্টি রয়েছে।
“চৌধুরী সাহেব মিষ্টি তো চায় আপনি বেঁচে থাকুন। ওর ইচ্ছে গুলো পূরণ। আপনি মিষ্টির সাথে কবরে যেতে চাচ্ছেন?
তবে জানেন কি মিষ্টি আপনাকে খুঁজতে আসবে দুনিয়াতে। দেখবে আপনি ওর ইচ্ছে পূরণ করছেন কি না।
উঠে আসুন।
পূর্ণতা হাত এগিয়ে দেয়। ইফতিয়ার এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে পূর্ণতার হাতের পানে। এবং পরমুহূর্তেই ভাবতে থাকে পূর্ণতার বলা কথা ” মিষ্টি দেখবে আপনি ওর ইচ্ছে পূরণ করছেন কি না”
“আমার কথা রাখবেন না চৌধুরী সাহেব? শুনবেন না?
ইফতিয়ার পূর্ণতার হাত ধরে না। একা একাই উঠে বসে। এই হাতখানা ধরার জন্য কতো কাল অপেক্ষা করছে ইফতিয়ার। কতোরাত নির্ঘুম কাটিয়েছে। অথচ আজকে সেই হাত নিজ থেকেই এগিয়ে আছে ইফতিয়ারের পানে কিন্তু ইফতিয়ার ধরতে চায় না।
পূর্ণতা ইফতিয়ারের দিকে এগিয়ে দেয় লাল রংয়ের ডাইরি খানা। এবং বলে
“আপনি খুব ভাগ্যবান চৌধুরী সাহেব। এক নারীর অসম্ভব ভালোবাসার অধিকারিণী আপনি। তার ভালোবাসার দাম দিতে হবে তো?
ইফতিয়ার ডাইরি খানা হাতে নেয়। ইতোমধ্যেই বেলা এগারোটা বেজে গিয়েছে। পূর্ণতা নিজ থেকে ইফতিয়ারের হাত ধরে তাকে ওঠায় খাটিয়া হতে। খানিকটা দূরে রাখা চেয়ারে বসায়। এবং মহিলাদের বলা মিষ্টির গোসলের ব্যবস্থা করতে।
ইফতিয়ার ডাইরির প্রথম পৃষ্ঠা উল্টায়।
“আপনাকে পাওয়ার দাবি আমি মরার পরেও ছাড়বো না।
পরকালেও আমি আপনার পিছু নিবো। আপনাকে ভালোবাসবো।
যদি বাঁচার জন্য আরও একটা জীবন পাই সেই জীবনেও আমি শুধু আপনাকেই চাইবো।
নাই বা আমার হলেন। ভালোবাসা নাই বা পেলাম।
তবে আপনাকে আমি ভালোবেসেই যাবো।
ইফতিয়ারের চোখে পানি নেই। সে মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে আছে মিষ্টির পানে। বিরবির করে বলে
“পুরো পৃথিবীর সবাই দেখবে আমাকে। কিন্তু যে সারাক্ষণ দেখতে চাইতো সেই দেখতে পাবে না।
কেউ মুগ্ধ নয়নে তাকাবে না।
পূর্ণতার অভাব তো তুমি পূরণ করেছিলে। দুঃখ ভুলিয়ে সুখের মুখ দেখিয়েছিলে।
এবার তোমার অভাব কি করে মেটাবো আমি?
প্রবল বেগে বাতাস বইতে থাকে মুহুর্তেই। বাতাসের শুধু শব্দ হচ্ছে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে না কিছুই।
সেই বাতাস কানে কানে বলে ওঠে
প্রিয় পূর্ণতা পর্ব ৪০
” ভালোবেসে আগলে রাখুন
হৃদয় মাঝে দিয়েন ঠায়
এই জনমে পেলাম না আপনাকে
পরজনমে যেনো পাই।