প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ১৫

প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ১৫
জান্নাত নুসরাত

সবার চোখ পারভিন বেগমের দিকে। পারভিন বেগম এমনভাব করলেন উনি বুঝতে পারছেন নাহ, সবাই কেন উনার দিকে তাকিয়ে আছ? এই পরিবেশ সামাল দেওয়ার জন্য মতিউর রহমান মিথ্যা কাশি দিলেন। গলা খাঁকারি দিয়ে বললেন,” সিয়াম বাবা অন্য গুলো টেস্ট কর! দারুণ হয়েছে খেতে।
সিয়াম মাথা ঝুঁকিয়ে বসে থাকলো। পারভিন বেগমের নেওটা হওয়ায় উনার পারমিশন ছাড়া কোনো খাবারে হাত দিল না।
“এই ইরহাম শালা কি নিব্বি?
ইরহাম বলল,

” মনে হচ্ছে তো সেই রকম। মায়ের কথা ছাড়া খাবারে হাত দিচ্ছে না। এর সাথে তো বড় আপুর বিয়ে দিলে সারাজীবন আপুকে কান্না করতে হবে।
নুসরাত বৃদ্ধ আর তর্জনী আঙ্গুল তুথনিতে রেখে বয়স্ক লোকদের মতো করে বলল, “হুম!
নাস্তা শেষে সবাই ড্রয়িং রুমে বসলো। রুহিনি গিয়ে ইসরাতকে নিয়ে আসলো পাত্র পক্ষের সামনে। পারভিন বেগম ইসরাতকে দু-চোখ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করলেন। পর্যবেক্ষণ শেষে বিড়বিড় করলেন, ” ঠিকই মনে হচ্ছে!
মতিউর সাহেব প্রশংসায় পঞ্চমুখ পাত্রীর। মুখ দেখে বুঝাই যাচ্ছে, পাত্রী উনার অনেক পছন্দ হয়েছে। মতিউর সাহেব উনার ছেলের দিকে তাকালেন। যে মাথা নিচু করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। পারভিন বেগমের সাথে ইশারায় কিছু কথা বলে নিলেন। ইশারা দিয়ে বললেন সামনে কথা আগাবেন নাকি? পারভিন বেগম বললেন তিনি কথা বলছেন।
পারভিন বেগম জিজ্ঞেস করলেন,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

” তো মেয়ে রান্না করতে জানো?
ইসরাত মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল।
পারভিন বেগম বললেন,
” ছেলে বন্ধু আছে?
ইসরাত ধীর অথচ নম্র কন্ঠে বলল,
“জি না।
পারভিন বেগম জরুরি কিছু বলার জন্য সবার দৃষ্টি আকর্শন করলেন। ইসরাতের দিকে তাকিয়ে বললেন,” ছেলে বন্ধু নেই ভালো কথা! রান্না জানো ভালো! বিয়ের পর কোনো চাকরি-বাকরি করতে পারবে না।নিজের সংসার সামলাবে আর পড়াশোনা যতটুকু করেছ ব্যাস! আর লাগবে না।

নুসরাত ও ইরহাম ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো মহিলার দিকে। মহিলা এইসব কি বলে? নিজ ইচ্ছা মতে যা ইচ্ছা তাই বলে চলেছে, তাদের তো আগে জিজ্ঞেস করবে ছেলে কি তাদের পছন্দ হয়েছে কি না?
ইরহাম নুসরাতের কানেকানে বলল,
” ভারী বেয়াদব মহিলা তো! মেয়ে দেখতে এসে কেউ এভাবে কথা বলে। তাও আবার সবার সামনে। এই সম্বন্ধ হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেল।

নুসরাত উত্তর না দিয়ে পারভিন বেগমের দিকে এগিয়ে গেল। মাথা কাথ করে পারভিন বেগমের দিকে তাকালো। ঠোঁট বাঁকিয়ে হালকা ব্যাঙ্গাত্মক হাসি দিল। নুসরাত হাত তুলে দরজা দেখিয়ে বলল,”ওই যে সামনের দরজা সম্মানের সহিত বের হয়ে যান সাথে আপনার এই নিব্বি ছেলেকে নিয়ে। আমাদের পাত্র পছন্দ হয়নি! আপনার ছেলে আর যাদের নিয়ে এসেছেন তাদের নিয়ে যেতে পারেন। ওই যে দরজা! না চিনতে পারলে আমি আপনাকে ওখানে পৌঁছে দিয়ে আসবো।
নুসরাতের দিকে আঙ্গুল তুলে পারভিন বেগম বললেন,

” নাছির ভাই আপনি এই মেয়ের মতো বেয়াদবকে কীভাবে বিয়ে দিবেন? একে তো শ্যামলা তার উপর গলার ঝাঁজ দেখুন। কি বেয়াদব মেয়ে? ছোট বোন যেরকম বড় বোন ও তো সে রকম হবে।
মেহেরুন নেছা বললেন,
” আপনার থাইকা তো ভালো আমাগো মাইয়াডা। আপনার মতো মাইয়ার যখন বিয়েডা হইয়া গেছে তাইলে আমাগো মাইয়াডার আপনার থাইকা আরো ভালো জায়গায় বিয়া দিতে পারুম। আশা রাখি!
পারভিন বেগম উনার স্বামীর দিকে তাকালেন। যে নিশ্চুপ হয়ে শুনছে উনাদের কথা। কাঁদো কাঁদো গলায় বললেন,
” তুমি বসে বসে তোমার স্ত্রী অপমান দেখছ। হাঁটুর বয়সী একটা মেয়ে আমাদের এভাবে অপমান করছে। আর তুমি কিছু বলছ না! এতো অপমানের পর এখানে বসে থাকবে। চলো এখান থেকে আমাদের সিয়ামের আরো ভালো জায়গায় বিয়ে দিব।
নুসরাত বলল,

” হ্যাঁ হ্যাঁ যান। রাস্তা ওইদিকে।
নাছির সাহেব নুসরাতকে ধমক দিলেন। চোখ রাঙিয়ে তাকালেন।
” আপাকে স্যরি বলো! আমরা বড়রা এখানে আছি কথা বলার জন্য। তোমাকে কথা বলতে হবে না।
নুসরাত বলল,
“আমি কেন স্যরি বলব? আমি তো কিছু করিনি! এই মহিলা আসছে থেকে যা দেখছে নাক ছিটকাচ্ছে। খাবার পছন্দ হয়নি সোজা খাবার খাওয়া থামিয়ে দিবে তা না করে সে বিচ্ছিরি খেতে খাস না সিয়াম এসব বলছে। উনার কথা শুনে তো আমাদের খারাপ লেগেছে তার বেলা।
বজ্রকন্ঠে ধমক দিলেন নাছির। ধমক খেয়ে মুখ শুকিয়ে গেল নুসরাতের। মেহেরুন নেছা রেগে গেলেন। বাহিরের মানুষের জন্য তার নাতিন কে ধমক দেওয়া।

” নাছির ও তো ঠিক কডা কইছে। ওরে ধমক দেও ক্যা? নিজে তো কডা কিছু কইতে পারো না। আবার ওরে ধমক দেও। আর ওরে ধমক দিলে আমার থাইকা খারাপ আর কেউ হইবো না।
হেলাল সাহেব সবাইকে থামিয়ে দিলেন।মেহেরুন নেছাকে বললেন,” আম্মা আমি কথা বলছি। তুমি রাগ করো না।
মেহেরুন নেছা রেগে সোফা থেকে উঠে দাঁড়ালেন। ইরহামের হাতে ভর দিয়ে নিজের রুমের দিকে চলে গেলেন।
ইসরাত চুপচাপ সবকিছু লক্ষ করছিল। এতোক্ষণ খারাপ পরিস্থিতি দেখে চুপ ছিল। মেহেরুন নেছা চলে যেতেই উঠে দাঁড়াল। সবার দিকে তাকালো। পারভিন বেগমকে উদ্দেশ্য করে বলল,” আপনি মনে হয়, ছেলের জন্য বউ দেখতে আসেন নি। আপনি তো আপনার বাড়ির কাজের জন্য কাজের মহিলা দেখতে এসেছেন” এম আই রাইট”। তাহলে আপনি বস্তিতে যান। ওখানে অনেক কাজের মেয়ে আছে। যারা টাকার জন্য সব ধরনের কাজ করে দেয়।

ইসরাত কিছু চিন্তা করার মতো ভাব করল তারপর আবার বলল, ” এক কাজ করতে পারেন আন্টি। আমাদের বাড়ির রহিমা আছে না, ওকে আপনার বাড়ির বউ বানিয়ে নিতে পারেন। বিয়ের পর ঘর মোছা, ঝাড়ু দেওয়া, আপনার কাপড় পরিস্কার করা, ইত্যাদি ইত্যাদি যা কাজ আছে সব করে দিবে। একটা আওয়াজ মুখ দিয়ে বের করবে না। পিন ড্রপ সাইলেন্ট থাকবে। আর পড়াশোনা যতটুকু করেছে আপনাদের মনে হয় হয়ে যাবে। খুব ভালো মেয়ে আপনার কথায় উঠবে আর বসবে।
পারভিন বেগম চোখ লাল করে তাকিয়ে তাকলেন ইসরাতের দিকে। কালিটা তো একে এতো অপমান করল, তারপর এই বাড়ির বুড়িটা এতো অপমান করল,এখন পাত্রী নিজে দাঁড়িয়ে তাদের অপমান করছে।
পারভিন বেগম বললেন,

“নাছির ভাই আপনার বাড়ির মেয়েদের কোনো কমনসেন্স নেই, মেহমানদের সাথে কীভাবে কথা বলতে হয়?
নুসরাত পারভিন বেগমের কথায় ফোঁড়ন কেটে বলল,
” আপনার থেকে বেশি কমনসেন্স আছে আমাদের। আর আমরা জানি আপনার মতো, না না, আপনাদের মতো মেহমানকে কীভাবে ট্রিট করতে হয়?
পারভিন বেগম রাগে সবকিছু অন্ধকার দেখলেন। এবার ইসরাতের দিকে তাকিয়ে বললেন, “আমরা তোমাকে রিজে….
ইসরাত কথা শেষ করতে না দিয়ে বলল,

” এক মিনিট আন্টি এতো তাড়াহুড়োর কি আছে? আগে আমাকে শেষ করতে দিন। আপনি কি আমাকে রিজেক্ট করবেন, আমি আপনার ছেলেকে রিজেক্ট করলাম। এরকম মেরুদণ্ডহীন প্রাণী আমি কখনো বিয়ে করব না।
পারভিন বেগম রাগে ব্যঙ্গের মতো লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালেন। ইচ্ছে করল নুসরাতের গালে একটা থাপ্পড় দিতে। এই মেয়েই ভেজাল করেছে। যেই ভাবা সেই কাজ। পারভিন বেগম নুসরাত কে থাপ্পড় মারার জন্য হাত উঠালেন। নুসরাতের গালে থাপ্পড় মারার পূর্বে কেউ উনার হাত চেপে ধরল। পারভিন বেগম রাগে নুসরাতের পিছনের দিকে তাকালেন। কে উনার হাত এভাবে চেপে ধরেছে দেখার জন্য! উনার কাজে কে বাঁধা দিচ্ছে। এটাকে একটা থাপ্পড় না মারলে উনার শান্তি হবে না। লোকটার হাত থেকে নিজের হাত ছাড়াতে চাইলেন।
গম্ভীর পুরুষালি গলায় লোকটা বলল,

” ডোন্ট ডেয়ার টু টাচ হার?
কথাটি বলে পারভিন ময়মুনার হাত ছুঁড়ে ফেলে দিল।পারভিন বেগম শুনলেন না। নুসরাতকে আবার থাপ্পড় মারার জন্য হাত তুললেন। আরশ কিছু বলার পূর্বে সিয়াম পারভিন বেগমকে টেনে নিয়ে গেল নুসরাতের থেকে দূরে। পারভিন বেগম বললেন,” আর এক মুহুর্ত এখানে না! আজ পর্যন্ত কেউ আমাকে এভাবে অপমান করেনি, যতটুকু এই মেয়ে করেছে। হাঁটুর বয়সি ছেলে মেয়েরা আমার হাত ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছে।
আরশ বলল,

“আপনি আমাদের বাড়ির মেয়েকে থাপ্পড় মারবেন আর আমরা বসে বসে দেখবো। কিছু না বললে আমরা ভদ্র, আর বললেই অভদ্র! ওয়াট আ জোক।
পারভিন বেগম আরশের কথার উত্তর না দিয়ে রাগ দেখিয়ে বের হয়ে গেলেন। উনার পিছন পিছন উনার ছেলে, স্বামী, যে বা যারা এসেছিল সবাই বের হয়ে গেল। হেলাল সাহেব এগিয়ে দিতে গেলেন ভদ্রতা দেখিয়ে।
সবাই চলে যেতেই নাছির সাহেব নুসরাতের দিকে তাকালেন চোখ রাঙিয়ে। জোরে একটা শ্বাস ফেলে রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করলেন। নুসরাতকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
” আমরা বড়রা তো এখানে ছিলাম। তোমাকে কে বলেছে এতো কথা বলতে। আমরা কি মরে গিয়েছি।?
এবার ইসরাতের দিকে তাকালেন।

“ও তো বেয়াদব! এখন তুমি ওর সাথে থেকে থেকে বেয়াদব হয়ে যাচ্ছো।বড়দের সাথে কীভাবে কথা বলতে হয় ভুলে গেছ?আর নুসরাত তোমাকে থাপড়ে গাল লাল করে ফেলব আরেকদিন বড়দের মাঝখানে বেশি কথা বলতে দেখলে। আর আজ থেকে দু-জন আলাদা রুমে থাকবে। ওর সাথে তুমি আর থাকবে না। মনে থাকে যেন!
নাছির সাহেবের চিৎকার শুনে লিপি বেগম আর নাজমিন বেগম বের হয়ে আসলেন কিচেন থেকে। রুহিনি আর ঝর্ণা কিচেনে দাঁড়িয়ে রইলেন। নাছির সাহেব বড় হওয়ায় বের হলেন না উনার সামনে।
নাজমিন বেগমকে দেখে নাছির সাহেব বললেন,

” ওকে আমার চোখের সামনে থেকে সরাও। নাহলে ওর কি করব আমি নিজেই জানি না? আর পারলে মেয়েরা যেভাবে থাকে ঐসব শিখাও! ঘরের কাজ কিছু শিখাও তোমার মেয়েকে! ছেলেদের মতো ঘুরা বন্ধ করতে বল ওকে।
নাছির সাহেব নিজের কথা শেষ করে রাগে গজগজ করে চলে গেলেন। ইসরাত নাছির সাহেব চলে যেতেই সে ও নিজের রুমে চলে গেল।
ছলছল নয়নে নাজমিন বেগম তাকালেন নুসরাতের দিকে। কান্নায় কথা আটকে আটকে আসলো।
” তোর জন্য সবসময় আমাকে কথা শুনতে হয়? তুই একটু ভালো হতে পারিস না। যা কাপড় গোছা গিয়ে আমি আপাকে ফোন করে বলছি তোকে এসে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আর ওইটাকে ও বল কাপড় গুছানোর জন্য।
বলে ওড়না দিয়ে চোখ মুছে চলে গেলেন নাজমিন বেগম।
বিড়বিড় করে বলল,

” আমি আবার কি করলাম?
এবার আরশের দিকে তাকিয়ে বলল,
“আপনার কিছু ভাষণ দেওয়ার থাকলে আপনি ও দিয়ে দিতে পারেন। দয়া করে, পেশ করুন! আমি শুনতে ইচ্ছুক!
আরশ কিছু বলতে যাবে তার আগেই নুসরাত থামিয়ে দিয়ে বলল,” পরে বলবেন,সময় সাপেক্ষ। এখন কাপড় গুছাতে হবে। মায়ের বোন পরে চলে আসবে।
নুসরাত নিজের রুমে যাওয়ার সময় সোফায় লাথ মেরে গেল। নুসরাতের কান্ড দেখে আরশের মুখ দিয়ে বের হলো, “অদ্ভুত মেয়ে মানুষ! সোফার উপর রাগ দেখাচ্ছে কেন?
সবাই চলে যেতেই লিপি বেগম এগিয়ে আসলেন। আরশের হাত থেকে কোট নিয়ে বললেন, ” আজ এতো তাড়াতাড়ি।
” ভাইয়া কল দিয়ে বলেছিল বাসায় আসার জন্য তাই চলে আসলাম। না আসলে এইসব ড্রামা মিস হয়ে যেত।
হালকা হেসে বলল আরশ। লিপি বেগম হালকা থাপ্পড় মারলেন আরশের পিঠে।
” দূর, কিসব বলিস?

মা-ছেলের কথোপকথন দূরে দাঁড়িয়ে হেলাল শুনছিলেন। এগিয়ে এসে বললেন,” চল রুমে চল! অনেক দিন আড্ডা দেই না তোর সাথে। আর তুমি কিছু খাবার নিয়ে আসো আমাদের জন্য আজ গল্প হবে আমাদের।
এরমধ্যে জায়ান আসলো বাড়িতে। হেলাল সাহেব উনার দুই ছেলেকে নিয়ে উনাদের রুমে গেলেন আর লিপি বেগম কিচেন গেলেন। নিজের রুমের দরজার সামনে থেকে দাঁড়িয়ে ইসরাত এসব দেখছিল। হালকা নিশ্বাস ফেলল। মনে মনে ভাবলো,”সবার বাবা যদি উনার মতো হতো তাহলে তো ভালোই হতো। পরে আবার নিজেকে বুঝ দিল,” সবার সবকিছু তো আর একরকম হয় না।

ইসরাতের চিন্তার ব্যাঘাত ঘটলো নুসরাতের চিৎকারে । নুসরাত চিৎকার চেচামেচি করে রুম মাথায় তুলে ফেলছে। নিচ তলা থেকে এসেছে যখন থেকে তখন থেকে চিৎকার করছে। কিছুক্ষণ চুপ থাকে আবার চিৎকার করে। সাথে পারভিন বেগমকে উদ্দেশ্য করে মুখে যা আসছে তাই বলছে। ইসরাত নুসরাতকে সাবধান করে বলল,” নুসরাত চেচামেচি করিস না। এবার কিন্তু মার খাবি আব্বুর হাতে। কাপড় গোছা গিয়ে! আন্টি বের হয়ে গিয়েছে! এক ঘন্টা পর এসে যাবে আমাদের বাসায়। তাড়াতাড়ি রেডি হ! আর চেচামেচি বন্ধ কর।
” এই নাছির মিয়া কি করবে? আমি কি ভয় পাই নাছির মিয়াকে? যা করার করুক নাছির মিয়া। উনি আমার বাবা হতেই পারে না। আমি ডি-এন-এ টেস্ট করাব আব্বার সাথে।
ইসরাত কিছুটা আস্তে করে বলল,

” নুসরাত আব্বু এইদিকে আসছে।
নুসরাত এক লাফে বারান্দায় চলে গেল। ধীর স্বরে বলল,
” আব্বা কিছু শুনেছে আমার কথা। আসলে বলবি আমি গোসল করতে। আমার কথা বলার কোনো ইচ্ছে নেই নাছির সাহেবের সাথে। আবার মনে করিস না আমি উনাকে ভয় পাই। আমি মোটে ও ভয় পাই না।
ইসরাত হাসি শুরু করল দরজা ধরে। হাসির চোটে কথা বলতে পারলো না। কিছুটা হাসি থামার পর বলল,” আব্বু এদিকে আসছে না তোর সাথে মজা করেছি। ভয় পাস আর বেশি বেশি কথা বলিস।
নুসরাত বলল,

“আমি আব্বাকে ভয় পাই না।
ইসরাত বলল,
” হ্যাঁ, হ্যাঁ বুঝতে পেরেছি!
নুসরাত ইসরাতকে লাথ মারল।
” তুই আজকাল বেশি কথা বলছিস। তোর বিয়ে দিয়ে দিতে হবে।
ইসরাত তারপর ও নুসরাতকে নিয়ে হাসল। নুসরাত রাগে চিৎকার করে বলল, ” আম্মা তোমার মেয়েকে নিয়ে যাও। নাহলে আমি একে মেরে ফেলব। আর এটার বিয়ে দিচ্ছ না কেন? বুড়ো হয়ে যাচ্ছে না! বিয়ে দাও পরে কেউ বিয়ে করবে না! দিন দিন বেয়াদব হয়ে যাচ্ছে।

প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ১৪

ইসরাতকে হাসি থামাতে না দেখে ইসরাতের গালে থাপ্পড় মেরে দৌড় দিল নুসরাত। ইসরাত কিছুক্ষণ গালে হাত দিয়ে তাজ্জব বনে রইলো যখন মগজ কেচ করলো নুসরাত থাপ্পড় মেরে চলে গিয়েছে তখন আম্মু বলে চিৎকার করে উঠলো।

প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ১৬

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here