প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ৪২
জান্নাত নুসরাত
ক্যামেলিয়া খেলা শেষ করে জায়িন আর ইসরাতের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এপার্টমেন্ট থেকে বের হলো। হাজারবার বিদায় নিয়ে তার বিদায় নেওয়া শেষ হলো না। শেষ বারের মতো বিদায় নিয়ে ইসরাতের গালে চুমু খেয়ে চলে গেল। ইসরাত হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো ক্যামেলিয়ার দিকে। ক্যামেলিয়া দৌড়ে এলিভেটরের ভিতরে চলে গেল। ইসরাতের দিকে একবার ফিরে ফ্লায়িং কিস দিল। এলিভেটর বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত ক্যামেলিয়া হাত নাড়িয়ে বিদায় নিল।
ইসরাত এপার্টমেন্টের দরজা লাগিয়ে পিছন ফিরে তাকাতে দেখলো তার ল্যাপটপ নিয়ে এসে দাঁড়িয়ে জায়িন। মৃদু চিৎকার করে গিয়ে জায়িনের হাত থেকে ল্যাপটপ নিতে হাত বাড়ালো। জায়িন ল্যাপটপ দিল না, উপরের দিকে তুলে রাখলো। ইসরাত লাফ মারতে গিয়ে ও লাফ মারলো না। পরে নিজে পায়ে ব্যথা পাবে। এক পায়ের আঙুলে ভর দিয়ে হাত বাড়ালো ল্যাপটপ নেওয়ার জন্য। জায়িন এক হাত উপরের দিকে করে ল্যাপটপ ধরে রাখলো। ইসরাত হাত বাড়িয়ে নিতে চাইলো তার হাত পৌছালো না। বিরক্ত হয়ে গিয়ে সোফাতে বসলো। জায়িন এসে পাশে ঘেষে সোফাতে বসলো।
ল্যাপটপের সাটার খুলতে খুলতে বলল,
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
“পাসওয়ার্ড।
ইসরাত কথা বলল না। জায়িন ইসরাতের দিকে তাকিয়ে মনে মনে কিছু শব্দ গুণে মারল। মারতেই খুলে গেল। ইসরাতে বাঁকা দৃষ্টিতে তাকালো জায়িনের দিকে। জায়িন কী-বোর্ডে হাত চালাতে চালাতে ইসরাতের দিকে একবার তাকিয়ে চোখাচোখি করে নিল। ইসরাত চোখ বুজে সোফায় শুয়ে পড়েছে। জায়িন ধীরে ধীরে কী-বোর্ড চাপতে লাগলো, যাতে শব্দ না হয়। কিছুক্ষণ পর তাকিয়ে দেখলো ইসরাত সোফা থেকে পড়ে যাচ্ছে। হাত বাড়িয়ে মাথা ধরে টেনে নিয়ে তার দিকে আনলো। ইসরাতের মাথা সোফার উপর রেখে বালিশ নিয়ে আসলো। এভাবে বালিশ ছাড়া ঘুমালে পরে ঘাড় ব্যথা হয়ে যাবে। ইসরাতের মাথার নিচে বালিশ দিয়ে পাতলা চাদর গায়ে দিয়ে দিল। হিটার অন করে দিল যাতে ড্রয়িং রুম গরম হয়ে যায়। আলগোছে ইসরাতের চুলে হাত দিতে গিয়ে ও হাত সরিয়ে নিল। ইসরাতের দিকে একবার তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিল ল্যাপটপের দিকে।
নুসরাত আরশের কেবিনের চারিদিকে একবার ঘুরে তাকালো। চারিপাশ গ্লাস দ্বারা আবদ্ধ। কেবিনের কালার কালো আর গ্লোডেনের মিশেলে। নুসরাতের কাছে সুন্দর মনে হলো। মনে মনে একটু প্রশংসা করে নিল, চয়েস ভালো আছে শালার।
সোফার উপর বসে ভাবতে লাগলো আরশকে কীভাবে বাঁশ দেওয়া যায়। ব্যবসার মাল এদিক সেদিক করে দিলে কেমন হয়? না না, এতে আমারি লস। কারণ আমার বাপের ও ব্যবসা এটা। লস করানো যাবে না অন্য কিছু ভাবতে হবে। কিছু ভেবে প্যান্টের পকেট থেকে মোবাইল বের করে কল করলো ইরহামকে। ফোন অপাশ থেকে পিক করার পর নুসরাত ফিসফিস করে ইরহামকে কিছু বলল।
“ভাইয়া দেখলে দু-জনকে ছেড়ে কথা বলবে না।
” কে বলেছে ছেড়ে কথা বলতে আমি তো চাই জড়িয়ে ধরে কথা বলুক।
ইরহাম বিরক্ত হয়ে ফোন রেখে দিল। নুসরাত আরশের দিকে তাকালো। যে কপালে ভাঁজ ফেলে ফাইল ঘাটছে। কেবিনের বাইরে থেকে নক ভেসে আসলো। আরশ ফাইল থেকে চোখ তুলে বলল,”কামিং!
দরজা ঠেলে ভিতরে আসলো রুবা। রুবাকে হঠাৎ এখানে দেখে আরশের চোখ কপালে উঠে গেল। রুবার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করলো, “মিসেস রুবা কি মনে করে এখানে? কোনো প্রয়োজন?
নুসরাত রুবাকে দেখে মোটে ও বিচলিত হলো না। এক পায়ের উপর আরেক পা তুলে বসলো। পা দিয়ে মেঝেতে ঠকঠক শব্দ করলো। ইনোসেন্ট মুখ বানিয়ে দু-জনের দিকে তাকিয়ে তাকলো।
রুবা অবাক হয়ে বলল,
” স্যার আপনি তো আমাকে ডেকে পাঠিয়েছেন।
আরশ মুখ শক্ত করে বলল,
“আমি কখন আপনাকে ডেকে পাঠালাম?
” আপনি তো ডেকে পাঠিয়েছেন। ছোটো স্যার বললেন ম্যাম ফোন করে বলেছেন।
নুসরাতের পা থেমে গেল। আরশ নুসরাতের দিকে একবার শান্ত চোখে তাকিয়ে রুবার দিকে তাকালো। নুসরাত ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বসে রইলো।
“ওহ ভুলে গিয়েছিলাম! এই ফাইলটা দেওয়ার জন্য ডাকিয়ে ছিলাম আমার ম্যাডামকে দিয়ে।
নুসরাত চোখ ছোট ছোট করে নিল।। রুবা বের হয়ে যেতেই আরশ নুসরাতের দিকে এগিয়ে আসলো। নুসরাত বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো। আরশকে তার দিকে শান্ত চোখে তাকাতে দেখে আরশের পায়ের সাথে তাল মিলিয়ে পিছনের দিকে গেল। নুসরাত সোফার পিছন দিকে গিয়ে আরশের বসার টেবিলের দিকে গেল। আরশ নুসরাতের দিকে তাকিয়ে নুসরাত যেদিকে গেল সেদিকে গেল। পিছাতে পিছাতে গিয়ে টেবিলের সাথে নুসরাত আটকা পড়ল। আরশ ও নুসরাতের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। এক হাত দিয়ে নুসরাত কে নিজের হাতের মাঝে বন্ধি করে মাথা হালকা ঝুঁকিয়ে নিল।
” কি?
নুসরাত নিজের মুখ আরশের মুখের সামনে নিয়ে বলল,”কি?
“তোর সাথে কিছু করতে ইচ্ছে করছে।
” কি?
কথার উত্তর না দিয়ে আরশ নিজের বুড়ো আঙুল দিয়ে নুসরাতের গালে ঘর্ষণ করলো। নুসরাতের সামনের দিকে বের করা দু-গোছা চুল কানের পিছন গুজে দিল। কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,”আমাদের তো বাসর করা হয়নি এখনো। দেন লেট’স বিগেন দ্যা ওয়েডিং নাইট নাও। কি বলিস তুই? আমার কিন্তু মুড আছে এখন।
নুসরাত আরশের বুকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরাল। আরশ শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে নুসরাতের দিকে এগিয়ে আসলো। নুসরাত হালকা হাসল।
“আমার কোনো সমস্যা নেই বাসর করতে কিন্তু….
“সমস্যা নেই তাহলে এখনি করে ফে….
নুসরাত আরশের কথা শেষ করতে দিল না।
” আরে ভাই এতো অধৈর্য্য হচ্ছো কেন? আমাকে কথা শেষ করতে দিন।
আরশ শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে বলল,
“কি বল?
” আমার দেনমোহর আগে পরিশোধ করুন তারপর না হয় বাসর করবেন।
আরশ থমথমে গলায় বলল,
” দেনমোহর কতো টাকা?
” আপনি জানেন না দেনমোহর কত টাকা?
“আমি খেয়াল করিনি। এখন বল! টাইম ওয়েস্ট করিস না।
” ওহ আচ্ছা! দেনমোহর বেশি না আপনার এফোর্টের ভিতরে আছেই। আমি আবার ভালো মানুষ আপনার কথা চিন্তা ভাবনা করে দেনমোহর কমই রেখেছি।
“বেশি কথা না বলে এমাউন্ট কত তাড়াতাড়ি বল? আমার বাসর করার টাইম ওয়েস্ট হচ্ছে।
” এই তো মাত্র…….
আরয়াহ অধৈর্য্য গলায় বলল,
“এতো লেট করছিস কেন? তাড়াতাড়ি বল?
নুসরাত একটু সময় নিয়ে থেমে থেমে বলল,
“একশত এক টাকা তিপ্পান্ন পয়সা।
আরশ মুখ বিকৃতি করে বলল,
“এ্যাঁ!
নুসরাত আরশের কথা ঠিক করে দিয়ে বলল,
“এ্যাঁ নয় হ্যাঁ। এখন তাড়াতাড়ি আমার দেনমোহর পরিধোধ করুন তো, আর আপনার বাসর ও করে ফেলুন।
” এতো কম টাকা রাখতে তোকে কে বলেছিল বোন?
“বুঝতে হবে না, কার বোন আমি।
আরশ পকেট হাতরে মানিব্যাগ বের করল। মানিব্যাগ থেকে একশত বিশ টাকা বের করে নুসরাতের দিকে এগিয়ে দিল।
” কি?
“তোর দেনমোহর।
” আমার দেনমোহর একশত এক টাকা তিপ্পান্ন পয়সা আপনি আমাকে একশত বিশ টাকা দিয়েছেন। ঠিকঠাক দেনমোহর দিন।
নুসরাত বিশ টাকা আরশের দিকে ফিরিয়ে দিয়ে বলল,
“একশত টাকা আমি রাখছি আপনি আরো এক টাকা তিপ্পান্ন পয়সা দিবেন তারপর না হয় আপনার বাসর কম্পিলিট হবে। তার আগে এভাবে মিঙ্গেল হয়ে ও সিঙ্গেল হয়ে ঘুরুন।
” আমি দেনমোহর দিয়েছি এখন। তার মানে আমি এক্ষুণি বাসর করবো।
“এখন তো সম্ভব না ভাই দেনমোহর তো পুরো পরিশোধ করেননি। আরো কয়েকদিন আপনি ও ভার্জিন ঘুরুন আমি ও ঘুরি। কিন্তু, নুসরাত কিছুটা ভাবনা চিন্তা করে বলল, আপনি সত্যি কি ভার্জিন তা নিয়ে সন্দেহ আছে আমার।
” তুই চাইলে চেক করতে পারিস। সুযোগ আছে।
নুসরাত শব্দ করে হাসল। আরশ শার্টের বোতাম চারটে এর মধ্যে খুলে ফেলেছে। নুসরাতের দিকে এগিয়ে এসে নুসরাতের শার্টে হাত দিতেই নুসরাত হাত সরিয়ে দিল। হাসি কোনোরকম আটকিয়ে বলল,” আজ মনে হয়, আপনার ভাগ্য আপনার সাথে নেই। আজ আর বাসর হবে না।
আরশ নুসরাতের মুখের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,”কেন?
নুসরাত ঠোঁট চেপে হেসে বলল,
” পিরিয়ড চলছে।
তারপর হা হা করে হেসে উঠল। আরশের উজ্জ্বল শ্যামলা হাসি হাসি মুখ গম্ভীর হয়ে গেল। নুসরাত হাসতে হাসতে পেট চেপে ধরলো। মুখ এক হাত দিয়ে চেপে আরশের গম্ভীর মুখের দিকে তাকালো। আরশ তার থেকে দূরত্ব কিছুটা বাড়িয়ে নিয়েছে।
“কষ্ট করে আপনার শার্টের বোতাম লাগিয়ে নিন।
নুসরাত আরেকটু আরশের দিকে এগিয়ে আসলো।
আরশের বুকের বাঁ-পাশে আলগোছে মাথা রাখলো। নরম মাংস পিন্ডের স্বাভাবিক ধ্বনি নুসরাতের কানে আসলো। ঠোঁটে ঠোঁট চেপে হাসল নুসরাত। হাত নিয়ে বাঁ-পাশে রাখতেই আরশের হৃৎপিন্ডের স্বাভাবিক গতি কিছুটা অস্বাভাবিক হয়ে গেল। নরম মাংস পিন্ড উচ্চ ধ্বনি নুসরাতের কানে এসে লাগলো। আরশের শোনার মতো করে বলল,” খেলা শুরু করার আগেই তো আপনি দ্যা এন্ড করে দিচ্ছেন মিস্টার হাজবেন্ড। ট্রাস্ট মি জান আমি আপনাকে না, আপনার হৃদয় নিয়ে খেলব। গেট রেডি ফর দেট?
ইসরাত কে নিয়ে হাঁটতে বের হয়েছে জায়িন। চুপচাপ হাঁটছে দু-জন। ইসরাতের পা আগের তুলনায় এখন ভালো। কোনো কাকপক্ষীর নড়চড়ের শব্দ পর্যন্ত শোনা যাচ্ছে না। জায়িন আলগোছে নিজের হাত দিয়ে ইসরাতের হাত ধরে নিল। ইসরাত হাত ছুটানোর চেষ্টা করলো না। হাঁটতে হাঁটতে সমুদ্রের পাড়ে আসলো দু-জন। সমুদ্রের শীতল বাতাসে ইসরাতের শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল। জায়িন হাতে চাদর নিয়ে বের হয়েছিল তা পেঁচিয়ে দিল ইসরাতের গায়ে।
নিশ্চুপ চারপাশ। ব্যস্ত নগরী এখন শান্ত হয়ে আছে। শুকনো বালির উপর জায়িন বসলো। ইসরাতকে নিজের পাশ দেখিয়ে দিল বসার জন্য। ইসরাত বসলো জায়িনের পাশে যতেষ্ট দূরত্ব রেখে। জায়িন দূরত্ব মিটিয়ে ইসরাতের পাশ ঘেঁষে বসলো। ইসরাতের মাথা টেনে এনে নিজের কাঁধে রাখলো। ইসরাত সরানোর জন্য চেষ্টা করলো জায়িন বলল,”এভাবে থাকো,তোমার শরীরের জন্য ভালো।
ইসরাত দেনামোনা করলো। তারপর চুপ হয়ে পড়ে রইলো জায়িনের কাঁধে নড়চড় বিহীন। জায়িন শূন্য দৃষ্টিতে তাকালো আকাশের পানে। শীতল পরিবেশ ভঙ্গ করে ভেসে আসলো জায়িনের অত্যাধিক ঠান্ডা স্বর।
“নুসরাতের সাথে আমার ভালো সময় কাটতো ছোটবেলা। আমি কম কথা বলতাম নুসরাত ও কম কথা বলতো, চুপচাপ শুনতে থাকতো মেয়েটা তাই ওর সাথে আমার বন্ডিং টা ভালো ছিল জায়ান, আরশের চেয়ে। তুমি আর আরশ তো ছিলে এক একটা জিন। শুধু লাফালাফি ঝাপাঝাপি করতে। আরশ তবু্ও আমার কথা শুনতো কিন্তু তুমি তো কারোর কথা শুনার পাত্রী ছিলে না। একবার রেলিং ধরে লটকাতে তো আরেকবার গ্রিলে উঠে ঝুলে পড়তে।
ইসরাত নীরবতা ভেঙে বলল,
” এসব এখন কেন বলছেন?
জায়িন মুচকি হাসল। কপালে হাত দিয়ে কপাল ঘষল।
“ইচ্ছে হলো বলতে। সত্যি বলতে আজকাল তোমার সাথে টাইম স্পেন্ড করতে ভালো লাগছে। তুমি তো আর কথা বলবে না। আমি বলি। ছোট বেলার কথা একটু স্মৃতিচারণ করি। তুমি ও করো স্মৃতিচারণ আমার সাথে।
ইসরাত চুপ হয়ে গেল। জায়িন কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার বলল,” নুসরাত বন্ধু হিসেবে পার্ফেক্ট ছিল। আমার সাথী বলতে পারো ওকে। আগে তো গুলু গুলু ছিল, কম কথা বলতো, কিন্তু এখন চিকন হয়েছে সাথে এতো কথা বলে বাপরে। আগের আর এখনকার নুসরাত কে দেখলে মনে হয় আকাশ পাতাল তফাৎ। কোনোভাবে বদলে গিয়েছে নাকি অন্য বাচ্চার সাথে? তোমার আগের ক্যারেক্টার এখনকার ক্যারেক্টারের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ।
নুসরাত আমাদের পছন্দ করে না কোনো একটা কারণে। আগে তো নেওটা হয়ে আমার সাথে লেগে থাকতো। আর এখন আমাদের দেখলেই ওর উঁচু নাক আরেকটু বেশি উঁচু হয়ে যায়।
এবার ইসরাত শব্দ করে হাসল। চাদর শরীরে ভালোভাবে পেঁচিয়ে শ্বাস নিল। জায়িন ও নিল। জায়িন এবার ধীরে ধীরে আসল কথায় আসলো।
“কারোর জন্য কারোর জীবন আটকে থাকে, এটা সম্পূর্ণ ভুল বলাই চলে৷ আমি মনে করে ছিলাম ডেলাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না। দেখো, ডেলাকে ছাড়া আমি বেঁচে আছি। দিন-কাল ও ভালোই যাচ্ছে। ডেলা ও ওর লাইফ ইনজয় করছে। আমি ও করছি। কিন্তু দিন শেষে একটা শূন্যতা মনের ভিতর থেকেই যায়। কেন ও আমার হলো না? আমার মনে হয়, পরে আবার মনে হয় যা হয় ভালোর জন্য হয় আল্লাহ উত্তম পরিকল্পনা কারী।
জায়িন আরো কিছুক্ষণ সময় নিল। ইসরাতের দিকে একবার তাকালো। যে নীরব স্রোতা হয়ে তার কথা শুনছে। কথার মধ্যে টু শব্দ অব্দি করেনি। জায়িন টেনে শ্বাস ফেলল।
” আমাদের বিয়ের এখন ছয় মাস প্রায়। আমি বলব না আমি ডেলাকে ভুলে গিয়েছি। ডেলা থাক না আমার মনের গহীনে এক কোণে। আমার আচরণের জন্য আমি স্যরি। আমি ভুল করেছি তার জন্য আমি মাফ চাচ্ছি। সব কিছু ভুলে আমরা কি নতুন ভাবে আবার সবকিছু শুরু করতে পারি? আমি আমার সব ভুল শুধরে নিব। এতোদিন শুধু আমি মরিচিকার পিছনে ছুটে মরিচিকা ছাড়া কিছু পায়নি। কিন্তু এখন আমি মরিচিকার পিছন আর ছুটতে চাই না। আমি আমার ভুল শুধরে যতদিন বেঁচে থাকি তোমার সাথে বেঁচে থাকতে চাই। তোমার সাথে আমি আমার বৃদ্ধ কাল কাটাতে চাই। ❝আর যদি বলো, ভালোবাসার কথা সেটা নাহয় তোলা থাক, তুমি আমার ভালোলাগা, মায়া, মোহ, আবেগ হয়ে সারাজীবন আমার হৃদ গহীনে থাকবে। তুমি কি আমাকে একটা সুযোগ দিতে পারবে ইসরাত?
ইসরাত কথা বলল না। জায়িন বলল,
প্রিয় প্রণয়িনী পর্ব ৪১
“কিছু তো বলো।
” আমার সময় চাই।
“তোমার যত ইচ্ছে সময় নেও, আমি অপেক্ষায় থাকবো।