প্রিয় প্রণয়িনী ২ পর্ব ২৪
জান্নাত নুসরাত
নাছির মঞ্জিলের পরিবেশ টানটান। আহান নুসরাত আর ইরহামের ভিডিও করছে। সামনে কিচেন কাউন্টারে বসে সেসব লক্ষ করছে ইসরাত আর মমো। গত এক সপ্তাহ যাবত মমো সৈয়দ বাড়িতে ছিল। হয়তো তিন মামা মিলে আটক করেছেন তাই আসতে পারছিল না। আজ রাস্তায় বের হয়ে পা টেনে টেনে হাঁটতে দেখে আহান আর ইরহাম মিলে আক্রমণ বলে মমোর উপর ঝাপিয়ে পড়েছিল। অতঃপর টেনে নিয়ে এসেছে নাছির মঞ্জিলে। ইসরাত আর মমোকে কিচেন কাউন্টারে বসিয়ে রেখেছে নুসরাত। রান্নার পর দু-জনে টেস্ট করে জানাবে কীরকম হয়েছে তাদের রান্না। তাই দুজনেই পা দুলিয়ে দুলিয়ে দেখছে নুসরাত আর ইরহামের কান্ড। হাতে বড়সড় একটা পপকনের বোল। দুজনে টপাস টপাস করে মুখে ঢোকাচ্ছে আর দেখছে। নুসরাত আর ইরহামের কান্ডের থেকে ক্যামেরাম্যানের কান্ড দেখতে ইসরাতের বেশি মজা লাগছে। চোখে কালো চশমা লাগিয়েছে, হাতে মোবাইল, একবার এদিকে মোবাইল ঘোরাচ্ছে তো একবার সেদিকে। ইসরাতের কাছে আহানকে ব্যঙের বাচ্চার মতো মনে হলো। যে জন্ম গ্রহণ করেই খুশিতে গদগদ করে লাফাচ্ছে।
আজ নাজমিন বেগম বাড়িতে নেই। গিয়েছেন বোন নাজু বেগমের বাড়ি। তাই কিচেন দখল করেছে এসে এই তিন বান্দর। নাহলে এদের কিচেনে ঢোকতে দেননা নাজমিন বেগম। যখনই ঢুকে কিছু না কিছুর বিনষ্ট করে বের হয়। আজ ইসরাত বসে আছে দেখার জন্য কী কী বিনষ্ট করে বের হয় এই তিন নমুনা কিচেন থেকে। নুসরাতের কথা কানে যেতেই নড়েচড়ে বসল মমো আর ইসরাত । নুসরাত বলছে,”হ্যাল্লো গাইজ, আমি ছাপড়ি নীল জলহস্তী, আর এ হলো আমার ভাই ছাপড়ি টিকটকার পিন্সেস মইমুনুল। আজ আমরা আমাদের মতো কিছু ছাপড়ি রেসিপি নিয়ে আসছি আপনাদের সামনে। ঘরে থাকা কয়েকটি উপাদান দিয়েই আপনারা বানিয়ে ফেলতে পারবেন এই ছাপড়ি রেসিপি। আপনাদের ঘরে যদি না থাকে তাহলে কোনো সমস্যা নেই, কারণ এসব জিনিস শুধু বড়লোক্সদের বাসায় থাকে, আপনাদের বাসায় থাকবে না। তো চলে যাই আমাদের রেসিপিতে।
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
ইরহাম হাতে ফ্ল্যাইপেন নিয়ে নাম খুঁজে পেল না। নুসরাতের কাছে জানতে চেয়ে শুধায়,”এটার নাম কী?
নুসরাত নিজেও ফ্ল্যাইপেনের দিকে তাকিয়ে থাকে। বোকা হেসে বলে,”জানি না, আম্মা ডিম ভাজি করে এতে।
পরপর দু-জনেই দুজনের দিকে তাকিয়ে নাম বানিয়ে নেয়। চিৎকার করে সমস্বরে বলে ওঠে,”এটার নাম, ডিম ভাজি করার বাসন। জানি, এসব ইউনিক জিনিস আপনাদের বাসায় নেই। আপনারা তো পিউর ছোটলোক। আমরা আবার ধনী মানুষ! তো এই রান্না করতে আপনাকে ফলো করতে হবে চারটা স্টেপ। প্রথম স্টেপ দেখাবে আমার ভাই প্রিন্সেস মইমুনুল।
ইসরাত হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে মমোর উপর। হাত দিয়ে ঠোঁট চেপে ধরে হাসছে মমো। ইরহাম এর মধ্যে বলে ওঠল,”প্রথম স্টেপ, গ্যাসের চুলা সুইচ টিপে জ্বালিয়ে দিবেন। তারপর ডিম ভাজি করার বাসন বসিয়ে দিবেন। ঘরে যা আছে তা দিয়ে দিবেন, না থাকলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তেজপাতা, এলাচ, গোল মরিচ তৈলে রেখে দিবেন কতক্ষণ। যখন পটর পটর করে শব্দ হবে নামিয়ে নিবেন।
নুসরাত ফ্রিজ খুলে বলে ওঠল,
“দ্বিতীয় স্টেপ ফ্রিজ এরকম শব্দ করে খুলবেন। তাহলে নিজেকে বড়লোক্স মনে হবে। ফ্রিজ থেকে টেনে বড় গোস্তের বাটি বের করবেন। ছোট বাটি বের করলে আপনি ছোটলোক মনে রাখবেন। বাটি নিয়ে গিয়ে সিঙ্কে ঢিল মেরে ভিজিয়ে রাখবেন। এতে করে প্লাস্টিকের বাটি ভেঙে গেলেও পরোয়া করবেন না। যদি না ভাঙতে পারেন, আপনি ছোটলোক্স, আর ভাঙতে পারলে আপনি বড়লোক্স।
তৃতীয় স্টেপ, গোস্ত পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিবেন। আপনাদের ইচ্ছে নাহলে ধোয়ার প্রয়োজন নেই। আমরা আবার না ধুয়ে খেতে পারিনা, পরিস্কার মানুষ তো! ধোয়া শেষে তুলে রেখে দেবেন।
ইরহাম বলে ওঠল,
” চতুর্থ স্টেপ! গোস্ত বড় একটা ডেকচি দেখে তার মধ্যে ভরে দিবেন। কাটাকাটির দরকার নেই। আমরা বড়লোক্স মানুষ এসব কাটাকুটি করিনা। আপনারা গরীবস তাই করে নিয়েন। তারপর পেয়াজ দিয়ে দিলাম পরিমাণ মতো, আপনারা চাইলে পরিমাণ মতো না দিলেও পারবেন। তারপর রসুন, আদা গুঁড়ো আধ চামচ, মরিচ দু-চামচ, লবণ একচামচ আরো আধ-চামচ, মাংস মাশালা এক চামচ, পাঁচফোঁড়ন এক চিমটি। বেজে রাখা গরম মশলা গুঁড়ো করে দিয়ে দিবেন গোস্তের মধ্যে। আপনারা যে স্টাইলে আপনাদের স্বামীদের পাজরের হাঢ় গুঁড়ো করছেন সেইভাবে। একটু বেশি তৈল দিয়ে বসিয়ে দিলাম আগুনে ডেকচি।
নুসরাত ভাষণ দেওয়ার ন্যায় ভঙ্গি করে বলে ওঠল, “আপনারা চাইলে আপনাদের দজ্জাল শাশুড়ী পেছনে এই আগুন লাগিয়ে দিতে পারেন। আমরা কিছু মনে করব না। এরকম আরো খারাপ বুদ্ধি নিতে আমাদের সাথে থাকুন, আমাদের ফলো করুন, লাইক করুন, কমেন্ট করুন।
নুসরাতের কথা বলা শেষ হতেই ইসরাত চোখ দিয়ে পেছনে ইশারা করল। নুসরাত বুঝতে না পারে ভ্রু বাঁকাল। ইসরাত ঠোঁট চেপে শুধু পেছনে ইশারা করল। ইসরাতের ইশারা অনুযায়ী নুসরাত বাঁ-দিকে ঘুরতেই অগ্নিবর্ণ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা নাজমিন বেগমকে লক্ষ করল। জিভ কেটে ইরহামকে হাত দিয়ে ধাক্কা দিতে দিতে বলে ওঠল,” ইরহামরে, আজরাইল দরজার সামনে দাঁড়ানো। মনে হয় আজ আমাদের জান কবজ করে তবেই এই বাড়ি থেকে বের হবে আজরাইল। ভাগ..!
ইরহাম নিজেও এতক্ষণে নাজমিন বেগমকে দেখল। মিষ্টি কন্ঠে ডেকে ওঠল,”সুইটহার্ট!
উপরে স্বাভাবিক থাকলেও দু-জনেরই ভয়ে বুক কাঁপছে। আহান তখনো ভিডিও করতে ব্যস্ত। সে তার চশমা খানা নাকের ডগায় নামিয়ে ক্যামেরার লেন্স স্থির করেছে নাজমিন বেগমের লাল মুখের দিকে। এখান থেকে পালানোর কোনো চিন্তা নেই তার৷ খেলে দু-একটা খাবে চড় থাপ্পড় তাতে কী! ভিডিওটা একবার করে নিতে পারলে আপুকে আর ভাইয়াকে ভাইরাল করে দিতে তার ন্যানো সেকেন্ড লাগবে না।। মনে মনে শয়তানি হাসি দিয়ে অত্যন্ত মনোযোগী হলো মোবাইলে ভিডিওতে।
নুসরাত আর ইরহাম কিচেনের দরজা দিয়ে দৌড় দেওয়ার পূর্বে নাজমিন বেগম নিজের পায়ের জারা লগো বিশিষ্ট জুতো খুলে হাতে নিলেন। কোনো কথা ছাড়াই সেটা দিয়ে ঝটপট হাতে নুসরাত আর ইরহামের পিঠে লাগালেন। শক্ত জুতোর বারি পিঠে পড়তেই ব্যথায় দু-জনেই চিৎকার করে ওঠল। অতঃপর এক লাফে হাতের ফাঁক দিয়ে পালালো। আহান তখনো ভিডিও করতে ব্যস্ত। এরপরের টার্গেট যে সে ভুলেই বসেছে। ভিডিও করতে করতে বলে ওঠল,”মেজ মা স্মাইল!
নাজমিন বেগমের রাগী চোখ তৎক্ষণাৎ ঘুরে গেল আহানের দিকে। রাগে হিসহিস করতে করতে এসে নুসরাত আর ইরহামের রাগ ঝাড়লেন বেচারার ওপর। জুতোর বারি পিঠে পড়তেই তীক্ষ্ণ ব্যথা হলো। আহানের ভিডিও তখনো বন্ধ হচ্ছে না। একদিকে নাজমিন বেগমের হাতে মার খাচ্ছে সাথে চিৎকার করছে আম্মু,আব্বু, মেজ মা, আপি বলে অন্যদিকে ভিডিও করছে। আহানের মতে যেকোনো মুহুর্তে চলুক, ভিডিও করা বন্ধ করা যাবে না। ইট’স রিয়েলি ইম্পর্ট্যান্ট! নাজমিন বেগমের হাতে ধুলোনি খেয়ে আহান অনেক কষ্টে পালালো। এত ব্যথা পেয়েছে চোখে পানি কিন্তু ঠোঁটে হাসি লেগে আছে। যেতে যেতে নাজমিন বেগমকে ফ্লায়িং কিস ছুঁড়ে দিয়ে বলে ওঠল,”লাভ ইউ মেজ মা। আই লাভ ইউ সো মাচ, মোর দেন মাই মম!
নাজমিন বেগম কিৎকাল সেদিকে তাকিয়ে মমো আর ইসরাতের দিকে চোখ ঘোরালেন। ইসরাত দু-হাত উপরে তুলে স্যারেন্ডার করার ভঙ্গি করে বলে ওঠল,”যা যা অগোছালো করেছে সব আমি পরিস্কার করব।মেঝে থেকে শুরু করে সব। আজকের রান্না আমি করে দিব। তবুও তোমার এই রবোটিক জুতো দিয়ে আমাকে পিটিয়ো না। প্লিজ..!
মমোর পানে চাইতেই, মিনমিন করে আওড়াল,
“বাসনকোসন মুছে একদ্ম ঝকঝকে করে রাখব।
নাজমিন বেগম কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে বোরকা সামলে চলে গেলেন। ইসরাত পেছন থেকে শুধাল,”তুমি তো আন্টির বাসায় গিয়েছিলে, তাহলে ফিরে আসলে কেন?
“গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে বাসার মোড়ে গিয়ে। আজ গাড়ি নষ্ট নাহলে বাসায় ও আসতাম না। আর তোমাদের ভাইবোনের কীর্তি কলাপ ও দেখতাম না। অসভ্যের দল! বাড়ি একা পেতেই আমার কিচেনে এসে হামলা করেছে।
নাজমিন বেগমের হাতে পিটোনি খেয়ে পরিবেশ ঠান্ডা হতেই সোফায় এসে ধুপ করে বসল নুসরাত। রিমোট চেপে টিভি চালাতেই কানে আসলো ব্রেকিং নিউজ! আজকের তাজা খবর! কথাটা শেষ করার আগেই রিমোট চেপে টিভি বন্ধ করে দিল নুসরাত। মিনমিন করে গালি দিল,”সাউয়ার তাজা খবর আমি শুনতে চাই না। আমার নিজের অবস্থা রোগা মানুষের মতো, তাহলে তাজা কথা শুনে আমার লাভ কী! আমি শোনবো রোগা খবর!
বিড়বিড় করে ওঠে দাঁড়াতেই ইরহাম দৌড়ে এসে ড্রয়িং রুমে প্রবেশ করল। হাতের মোবাইল খানা নুসরাতের সামনে তুলে ধরতেই নুসরাতের অক্ষিপটে ভাসল, হেডলাইন। পাথরের আঘাতে এক যুবকের মৃত্যু। উপস্থিত জনতা নিশ্চুপ এমন আচরণে। হত্যাকান্ডের দু-দিন পর ভিডিও সোসাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে। হত্যাকান্ড, ধর্ষণ, খুনাখুনি, ডাকাতি এসব নিয়ে কী একটা সুস্থ স্বাভাবিক দেশ গড়ে তোলা সম্ভব??
এতটুকু পড়ে নুসরাত কিছুক্ষণ চুপ করে থাকল। তারপর একপ্রকার ঠেলে মোবাইল দূরে সরিয়ে দিয়ে সোফায় বসতে বসতে ইরহামকে উদ্দেশ্য করে আওড়ায়,”শোন,আমার মনে হয় দেশের এই অবস্থা ভঙুর শাসনের জন্য, ক্ষমতায় একজন নিষ্ঠাবান ব্যক্তি বসা উচিত,যে দেশের কল্যাণের জন্য ভাববে।
“তো ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস খারাপ নাকি?
” আমি সেটা বলছি না, আমি বলছি শক্ত শাসনের কথা। সেদিন দেখলাম আট বছরের একটা মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে। যে ধর্ষণ করল তাকেই শুধু শাস্তি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু যারা জরিত ছিল তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, এখন তারা মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে। যদি সঠিক আইন প্রণয়নই বা না করতে পারে, তাহলে কীসের দেশ শাসন হবে। আইনের উচিত ছিল লোকগুলোকে সাধারণ জনগণের হাতে ছেড়ে দেওয়া, তারপর পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা। আমাদের দেশে আইনই ঠিক নয়, তাহলে দেশে সঠিক বিচার হবে কীভাবে? এজন্য ক্ষমতায় সঠিক কাউকে বসানো উচিত। যার গর্জনে পুরো দেশের দূর্নীতিবাজ ভয় পাবে, কোনো ভুল কাজ করতে গেলে একবারের জায়গায় দশবার ভাববে।
নুসরাতের কথায় সহমত পোষণ করে মাথা দোলাল ইরহাম। জিজ্ঞেস করল,”তোর মতামতে এখন কাকে ক্ষমতায় বসানো উচিত
নুসরাত ইরহামের ভাবসাব নেওয়া দেখে বলে ওঠল, “তুই মনে করিস না তোকে ক্ষমতায় বসাবো বলে আমি ভাবছি, দেখা যাবে জনগণ তোকে ধরে পিটছে আর আমাকে তুই ফোন দিয়ে বলছিস তোকে বাঁচাতে যেতে। ওসব আমার দ্বারা সম্ভব না। তোকে বসানোর চিন্তা নেই আমার। ক্ষমতায় বসে তুই আমাকে লাথি মারবি না তার কী গ্যারান্টি!
নুসরাত ইরহামের মুখের উপর তর্জনী আঙুল তুলে ক্রস কাটতে কাটতে বলে ওঠে,” তুই ক্ষমতা পাচ্ছিস না, ক্রস করে দিলাম তোকে!
ইরহাম মুখ পাংশুটে বানিয়ে শুধাল,
“তাহলে কাকে বসাবি ক্ষমতায়?
নুসরাত ঠোঁট টিপে হেসে বলে ওঠল,
” আরশ ভাইকে বসাবো ক্ষমতায়।
“তোর বেনিফিট কী এখানে? আমি বসলে তুই ও আমার সাথে ক্ষমতা পাবি, এটা নিশ্চিত থাক! কিন্তু ভাই জীবনেও তোকে এসবের ধারের কাছে যেতে দিবে না।
ইরহামের ঝটপট করা প্রশ্নে নুসরাত ও ঝটপট উত্তর দিল। কথা মনে হয় ঠোঁটের ডগায় ছিল তাই।
” শোন আমার প্রিয়ারি সি বেহনা, ইসরাতকে প্রথমে আমি ক্ষমতায় বসাতে চাইছিলাম, কিন্তু বেচারি এত সুন্দর, পুরুষ মানুষ ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে এসে এমন সুন্দরী নেত্রী দেখে ভোট দেওয়ার বদলে ফিট খেয়ে পড়ে থাকবে, তাই ও ক্যান্সেল। তোকে ও বসাবো না, তুই গণ ধুলোনি খেলে আমাকেই তোকে উদ্দার করতে যেতে হবে, আর সেখানে আমি মার খাবো না তার গ্যারান্টি কী! তাই তুই ও ক্যান্সেল! জায়িন ভাইয়া সবার আগে ক্যান্সেল। ডাক্তার মানুষ জনগণের প্রতি বেশি দরদী হবেন ,কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। তাই জামাই বউ দু-জনই ক্যান্সেল। আর কে থাকে?
ইরহাম মিনমিন করে বলে,
“তুই!
” আমি বসতাম, কিন্তু আমার এত কাজ কী বলব! আমার বাপের সৈয়দ চয়েসের ব্রান্ড প্রমোশন করতে হবে। এরপর সৈয়দ চয়েসের মেকআপ আজকাল সেল ডাউন হচ্ছে তাই বাজারে মার্কেট আপ করতে হবে। হাতের ব্রেসলেট গুলোর ও এখনো প্রমোশন করা বাকি, তাই আমি ক্ষমতায় বসতে পারছি না। নিজাম শিকাদার, হেলাল আহমদ, সুফি খাতুন, এদের ও তো টাইট দিতে হবে তাই না? তাহলে আমি ক্ষমতায় বসলে এসব কে করবে! তাই আমি ক্ষমতায় বসব না।
“আসল কথা বলিস না কেন? মানুষ বেশি কথা বললে তুই তাদের মাথা ফাটিয়ে দিবি সেটা বল, তা না করে যুক্তিবিদ্যার আজব লজিক দিচ্ছিস কেন?
নুসরাত চোখ টিপে বলল,
“ধর..
নুসরাত কথা শেষ করার পূর্বেই ইরহাম তাকে জড়িয়ে ধরল। নুসরাত রাগী মুখে চিৎকার করে বলে ওঠল,” তোকে বলেছি ধরতে, তোকে আমি বলিনি আমাকে জড়িয়ে ধরতে, ছাগলের বাচ্চা।
নুসরাতের চিৎকারে ইরহাম তাকে ছেড়ে দিয়ে নিষ্পাপ মুখে বলে ওঠে,”তুই তো বললি ধর, তাই আমি জড়িয়ে ধরলাম।।
নুসরাতের মুখ দেখার মতো রাগী হলো। চোখ সরু সরু করে, কপালে ভাঁজ ফেলল। বিরক্তের সহিত নাক ফুলিয়ে তাকাল। ইরহাম বুড়ো আর তর্জনী আঙুল দিয়ে নুসরাতের চোখগুলোর উপর আর নিচের চামড়া ধরে বড় করে দিতে দিতে বলল,”আমার আব্বুর মতো চোখ দেখাবি না! একদম আমার বাপের খারাপ আচরণটা তুই টেনে নিয়ে আসছিস। ছাগলের তিন-নাম্বার বাচ্চার মতো তাকাস?
“তাহলে তুই ছাগলের দু-নাম্বার বাচ্চা এটা বলতে চাচ্ছিস?
ইরহাম উপর নিচ মাথা নাড়িয়ে স্বীকারক্তি দিল। সাথে বলল,” আর আপি, ছাগলের এক নাম্বার বাচ্চা।
অতঃপর দু-জনেই দু-জনের পানে তাকিয়ে হেসে দিল।
“আচ্ছা, ধরি, আমি ক্ষমতার আসনে বসলাম, বসার পর কিছু ধান্দাবাজ মহিলারা এসে আমার কাছে বিচার দিল জামাই নারী নির্যাতন করে, আমি নারীবাদী মহিলা উত্তেজিত হয়ে পুরুষদের ধরে কয়েক ঘা লাগিয়ে দিলাম। এর কয়েক মুহুর্ত পর নিউজ। শিরোনাম: এ কি করলেন নেত্রী! নারী নির্যাতন করায় পুরুষ মানুষ নির্যাতন করে দিলেন। নেত্রীর হাতে এক অবলা পুরুষ অত্যাচারিত। দেশে কী কখনো সঠিক আইন প্রণয়ন হবে না? এই পুরুষ বিদ্বেষী নারীকে এক্ষণি কারাগারে নিক্ষেপ করা হোক। এটা আমাদের পুরুষদের জোর আর্জি সরকারের নিকট। পরপরই আমি হাজতে। নিউজ হবে, পুরুষ অত্যাচারে কারাগারের চার দেয়ালের পেছনে আটক নারীবাদী নেত্রী। এই নেত্রীর শাস্তি হওয়া কী প্রয়োজন?
ইসরাত এতক্ষণ পেছনে দাঁড়িয়ে নুসরাত আর ইরহামের কথা মনোযোগ সহকারে শোনছিল। নুসরাতের কথার উত্তর হিসেবে বলে ওঠে,”আগামী দেশকে ন্যায়ায় পরায়ন করতে এই নেত্রীকে এক্ষুণি মৃত্যুদন্ড দেওয়া হোক।
ইরহাম আর ইসরাত হাহা করে হেসে ওঠল। নুসরাত নিজেও ঠোঁট চেপে হাসল। অতঃপর ওঠে দাঁড়িয়ে বলে ওঠল,” আমি আসছি!
ইসরাত শুধাল,
“কোথাও যাওয়া হচ্ছে শুনি?
নুসরাত বলে ওঠল,
” ক্ষমতায় বসানোর জন্য নেতাকে খবর দিতে।
নুসরাত হেলেদুলে বের হয়ে গেল বাড়ি থেকে৷ সোজা হেঁটে গিয়ে সৈয়দ বাড়ির সামনে দাঁড়াল। ফটকে ঝুলানো সিসিক্যামেরার দিকে গোল গোল চোখে কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে হাত ভি কাট করে চোখের কাছে রেখে হাসল। ওড়না মাথায় টেনে চোখের সাদা ফ্রেমের চশমা ঠেলে ঠিক করল। ইন্টারকম বাটন চেপে কানে ধরল। সামান্য ক্ষণ অতিবাহিত হতেই শক্ত কন্ঠ কানে আসলো,”সৈয়দ আরশ হেলাল স্পিকিং!
নুসরাত থতমত খেয়ে গেল। গোল গোল চোখে সিসি ক্যামেরার দিকে চোখ রেখে বলে ওঠল,”সৈয়দা নুসরাত নাছির!
“তোর নাম আমি জানি, পুরো বলে আমাকে মনে করিয়ে দিতে হবে না! বল কী বলবি?
নুসরাত কপালে সামান্য ভাঁজ ফেলে বলে ওঠল,
” সামান্য কথা আছে আপনার সাথে!
“সামান্য কেন, বেশি নয় কেন?
” আচ্ছা বেশি কথা আছে, আসুন!
আরশ হেয়ালি করে বলে ওঠল,
“কোথায় আসবো?
নুসরাতের মুখ তৎক্ষণাৎ লাল হয়ে গেল। চিবিয়ে চিবিয়ে বলে ওঠল,”আমার কোলে আসুন।
আরশ ঠাট্টা করে প্রতিত্তোরে বলল,
“আমি ছোট মানুষের কোলে উঠি না।
নুসরাত দাঁতে দাঁত চাপল। মুহুর্তের মধ্যে শ্যামলা মুখ ঘেমে গিয়ে কালো হয়ে গেল। হাতের তালু দিয়ে মুখ মুছে নিতেই আরশ নিজস্ব কাঠখোট্টা গলায় বলে ওঠল,” ভেতরে আয়!
কথাটা শেষ হতেই দরজা খুলে গেল গট করে। নুসরাত ওখান থেকে নড়ল না। ঠাঁই দাঁড়িয়ে রইল। আরশ হাতের মোবাইলের দিকে চোখ রেখে শুধাল,”আসছিস না কেন?
“ভেতরে আসব না, আপনি বাহিরে আসুন।
আরশ চোয়াল শক্ত করে বলে ওঠল,
“আমি আসলে কোলে করে নিয়ে যাব ভেতরে।
নুসরাত তাচ্ছিল্য করে বলল,
“আমাকে কোলে করে নিয়ে যাওয়ার সাধ্যি আছে আপনার?
“আপনি কী দেখতে চাচ্ছেন আমার কতটুকু সাধ্যি আছে মিসেস নুসরাত নাছির?
নুসরাত কথা না বলে দেয়ালের মধ্যে টেলিফোন আটকে দিল। ফোন রাখার মধ্যেই বড় বড় পা ফেলে সেখানে এসে উপস্থিত হলো আরশ। পকেটে হাত ঢুকিয়ে টানটান হয়ে দাঁড়াল নুসরাতের সামনে। চোখে নুসরাতের মতোই সাদা ফ্রেমের চশমা। আরশ ভ্রু বাঁকিয়ে নুসরাতের থুতনি দু-আঙুলের সাহায্যে চেপে ধরল। শক্ত চোখ কপাল থেকে শুরু করে চোখ ঘুরে নাকে এসে স্থির হলো। নাকের মধ্যে নউজ রিংটায় কতক্ষণ চোখ বুলিয়ে চোখ সরালো। মৃদু স্বরে বলে ওঠল,” তোর নউজ রিংটা বিশ্রী লাগে!
নুসরাতের ত্যাড়া উত্তর আসলো,
“তাহলে আরো বেশি করে পরব।
আরশ হাসল। সে তো এইটা করতে চেয়েছে। হোক উল্টো পথে, মেনে নিয়েছে এইটা বেশ।
এবার নুসরাত কিছু একটা মনে পড়ার ভঙ্গিতে নড়েচড়ে ওঠল। আরশের গায়ের সাথে গা লাগিয়ে দাঁড়াল সামান্য। ঠোঁটে মেকি হাসি ঝুলিয়ে বলে ওঠল,” আরশ ভাই! ম
আরশ গমগমে স্বরে উত্তর দিল,
“কী?
নুসরাত বলল,
” আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে কেউ ধরে উত্তম মাধ্যম দিয়েছে।
আরশ কথা বলল না।
নুসরাত ঈষৎ হাসি ঝুলিয়ে আরেকটু আরশের পাশ ঘেঁষে দাঁড়াল। চোরের মতো মিনমিন করে আবারো ডাকল,,” আরশ ভাই!
আরশ রাগী কন্ঠে উত্তর দিল,
“কী? ছাগলের মতো ম্যা ম্যা করছিস কেন?
” আরশ ভাই, আমি একটা রাসায়নিক বিক্রিয়া মাত্রই করেছি, করে দেখলাম ওই যে দূরে থাকা ছাগল আর আপনার মধ্যে অনেক মিল।
আরশ ভেতরে ভেতরে ফুস করে ওঠল। কিন্তু উপরে কাম এন্ড কম্পোজড দেখানোর চেষ্টা করে শুধাল,”কীভাবে?
“আমি আপনাকে রাসায়নিক বিক্রিয়াটা বোঝাই ভালো করি। দেখুন আপনার ঘন কালো ভ্রু, ওই ছাগলটার ও ঘন কালো ভ্রু! আপনার মুখটা ওভাল কিন্তু কিছুটা কেমন জানি, ওই ছাগলটার ও মুখ ত্রিকোণ আকৃতির কিন্তু কেমন জানি। আপনি বুঝতে পারছেন আমি কী বোঝাতে চাচ্ছি?
আরশ শক্ত ভঙ্গিমায় মাথা নাড়াল। তারপর গ্রীবা সামান্য বাঁকিয়ে নুসরাতের কানের কাছে মুখে এনে হিসহিসিয়ে বলে ওঠল,”হ্যাঁ বুঝতে পারছি। আর কী কী মিল পেলি?
” এই দেখুন আপনি কথা বলেন ফিসফিস করে, আমি শুনি আপনি ম্যা ম্যা করছেন। আপনার খাঁড়া সরু নাক, ছাগলের ও তেমন। আপনার কলার বোন আছে ছাগলের ও আছে। আপনি ঘাস পাতা খান, ছাগল ও খায়। কতটা মিল আপনাদের মধ্যে।
আরশ বলল,
“আমি ছাগল হলে তুই ছাগলের পত্নী। এবার ঠিক আছে?
নুসরাত মাথা নাড়াল। মুখ দিয়ে ধ্বনিত হলো,
” জ্বি ঠিক বলেছেন। আপনি শেষ পর্যন্ত মানলেন তো, আপনি ছাগল! সেটাই অনেক বেশি।
আরশের কথা না ঘাটিয়ে নুসরাত আবারো মনোযোগী হলো নিজের কথায়। আবারো নড়েচড়ে দাঁড়িয়ে চশমা নাকের ডগা থেকে উপরে তুলল। অতঃপর বলল,”যা বলতে এসেছিলাম ভুলেই গেছি।
আরশ ভ্রু সামান্য বাঁকাল। কপাল কুঞ্চিত হয়ে আছে আসার পর থেকে। নুসরাত আরশের কপালের বলিরাখা মিটানোর জন্য পায়ের আঙুলে ভর দিয়ে দাঁড়াল। বিরক্তিতে চ সূচক উচ্চারণ করে বলে ওঠল,”কপাল আগে পলিশ করুন। কী বিচ্ছিরি ভাবে ছাগলের ন্যায় তাকিয়ে আছেন!
আরশ কপাল কুঞ্চিত করেই তাকিয়ে রইল। নুসরাত ব্যর্থ হয়ে প্রস্তাব দিল,”এবারের আসন্ন নির্বাচনে আপনি কেন যোগ দিচ্ছেন না?
আরশ কপালের বলিরেখা গাঢ় হলো। নুসরাত বলে ওঠল,”আপনি চাইলেই নির্বাচন লড়তে পারেন, আমার অনেক বড় বড় মানুষের সাথে পরিচয় আছে।
আরশ কাঠখোট্টা আওয়াজ আসলো নুসরাতের কানে। আরশ বলছে,”তো?
নুসরাত বিরক্ত ভঙ্গিমায় বলল,
“তো মানে কী! আপনি নির্বাচন লড়তে চাইলে বলুন, আমি আপনার ভোটের ব্যবস্থা করে দিব। ইরহাম জাল ভোট দুটো দিবে, ইসরাত দিবে দুটো, আমি ও দিব দুটো।
আরশ ভ্রু সামান্য বাঁকিয়ে আগের মতো বলল,
“তো?
” এক লাখ টাকা দিন। আপনার নির্বাচন নিয়ে একটা পোস্ট দিব আমার পেইজে।
“তো?
” আরে ভাই, তখন থেকে ‘তো’ লাগিয়ে আছেন! মানুষের ভাষায় কথা বলুন, আমি হুমো সেফিয়ানদের ভাষা বুঝিনা।
আরশ গম্ভীর মুখে বলে ওঠল,
“হু কী বলছিলি আবার বল?
নুসরাত নাক ফুলিয়ে ফুস করে শ্বাস ফেলল। মৃদু আওয়াজে উচ্চারণ করল,” নির্বাচন লড়বেন?
আরশ কথা বলল না। নুসরাতকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠল,”একটা গান বল নির্বাচন নিয়ে! দেখি ইচ্ছা জাগে নাকি, নির্বাচনে যোগ দেওয়ার।।
নুসরাত কবিতার মতো দু-লাইনে বলল,
“এসেছে এসেছে আবারো ইলেকশন, জিতবে নৌকা জিতবে জনগণ। জয় বাংলা, জিতবের আমার নৌকা। একশো কোটি মানুষের একটাই যে স্লোগান জিতবে আরশ ভাই, নেই কোনো টেনশন। জয় বাংলা, জিতবে আমার নৌকা।
আরশ না চাইতেও হাসি আয়ত্ত করল ঠোঁটে। তাই হাসি ঢাকতে একহাতে কপাল চেপে ধরে কিৎকাল ঘষল। হাসি কোনোরকম দন্তপাটির আড়ালে ঢেকে গম্ভীর আওয়াজে বলে ওঠল,”নির্বাচন আমি কোন দুঃখে লড়তে যাব?
নুসরাত ঝটপট উত্তর দিল,
“আরশ ভাই শুধু ভাবুন…
” কী ভাববো?
নুসরাত নাক ফুলিয়ে অজগর সাপের মতো ফুলে ওঠে তাকাল। চিবিয়ে চিবিয়ে বলে ওঠল,”আপনি বলতে দিবেন আমায়?
আরশ চুপ করে দাঁড়াল। নুসরাত আরশের চোখে চোখ রেখে বলে ওঠল,”দুই হাজার চব্বিশে একটা ভিডিও ভাইরাল হলো না, রেহানা আপা বলছে জয় বাংলা..!
আরশ কথা কেটে, ভ্রু সামান্য উচিয়ে জিজ্ঞেস করল,
“হু ইজ রেহানা?
নুসরাতের ইচ্ছে করল মাটিতে ফেলে আরশকে কয়েকটা ধুমধাম করে লাগিয়ে দিতে। ফুস করে শ্বাস ফেলে নিজের রাগ সামলালো। শক্ত কন্ঠে বলে ওঠল,” তোর বউ শালা।
আরশ হাত বুকে বাঁধতে বাঁধতে ইশারা করল। তারপর বলল,”কন্টিনিউ কর!
নুসরাত আরশের দিকে দৃষ্টি নিবষ্ট করল। দূর হতে রবীন্দ্র সঙ্গীত ভেসে আসছে। নুসরাত আজ আর রবীন্দ্র সঙ্গীতে কান দিল না। আরশকে ভেঙচিয়ে ভেঙচিয়ে বলে ওঠল,”কন্তিনিউ কল!
আরশ হাসল না। মুখ গম্ভীর করে দাঁড়িয়ে রইল। নুসরাত বলল,”ওই যে রেহানা আপা বলল, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয় চেক হাচিনা। আর চেক হাচিনা বলছিল না না না! আপনি শুধু ভাবুন আপনি হাচিনা আপার জায়গায় দাঁড়িয়ে, আমি রেহানা আপার জায়গায় দাঁড়িয়ে, আমি বলছি জয় বাংলা, জয় হেলাল ভাই, জয় আরশ ভাই, আর আপনি বলছেন উপরে উপরে হাচিনা আপার মতো না না না, কিন্তু ভেতরে ভেতরে ঠিকই খুশিতে গদগদ হচ্ছেন।
নুসরাত আরশের চোখ পাকানো দেখল না। সে নিজের শশুরকে একমনে ভাই ডাকছে। নুসরাত যখন ফিরে তাকাল তখন আরশ রাগে ফুসফুস করছে। নুসরাত আরশকে কুল করার জন্য বলে ওঠল,”কুল আরশ ভাই, কুল..!
আরশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে নিজস্ব গলায় বলল,
“আচ্চা নির্বাচন করব, একটা স্লোগান শোনা তো নুসরাত।
নুসরাত তুমুল উৎসাহে স্লোগান দিতে লাগল,
“এক বড় না দুই বড়,
আরশ ভাইয়ের মন বড়।
আরশ ভাইকে দিলে ভোট,ইনশাআল্লাহ হবে সুখ।
আরশ ভাইয়ের মার্কা কী!
লুঙ্গি ছাড়া আর কী!
প্যান্ট পরে কয়জন আসে?
লুঙ্গি পরে আরশ ভাই—সরাসরি কাজে!
নেতা যদি হয় আরশ ভাই,
ট্যাঙ্ক আর ড্রেনের কাজ—
সব সমস্যার হবে সোজা সমাধান আজ!
আরশ নুসরাতকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ অবলোকন করে পকেট থেকে ফোন বের করল। ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে দ্রুত হাতে মুখস্থ নাম্বার কিউপেডে ডায়াল করল। চোখ একমুহূর্তের জন্য সরে গেলে তা আবার ও এসে দখল করল নুসরাতের মুখ। মুখের দিকে নির্মিশেষ দৃষ্টি স্থির রেখে আরশ ফোন কানে লাগাতেই অপাশ থেকে ইরহামের কন্ঠ ভেসে আসলো,” আসসালামু আলাইকুম ভাই!
প্রিয় প্রণয়িনী ২ পর্ব ২৩
আরশ ঠোঁট নাড়িয়ে সালামের উত্তর দিল। অতঃপর আদেশের স্বরে বলে ওঠল,”এক্ষুণি বাজার থেকে, একটা ট্যাঙ্ক, ক্লিনজার, আর লুঙ্গি এনে মেজ বাবার বাড়িতে পৌঁছে দেয়। বিশেষ করে ওই বাড়ির ছোট কন্যার হাতে এগুলো তুলে দিবি। বুঝেছিস? এবারের নির্বাচনটা লড়ছি! তাই আমার মিসেসের কথা অনুযায়ী মার্কা হবে আমার লুঙ্গি। সবাইকে একটা করে ক্লিনজার, একটা লুঙ্গি, আর একটা ট্যাঙ্ক বিলি করে দেয়। আর আমার শশুর বাড়িতে জন প্রতি একটা করে লুঙ্গি পাঠিয়ে দিস। আর শাশুড়ী আম্মাকে একটা ছাই রঙে শাড়ী পাঠিয়ে দিস। উনাকে এই,রঙে দারুণ মানায়।
ইরহাম কোনো কথা ছাড়াই উত্তর করল,
“জি ভাই!