প্রিয়তে তুমি প্রাণ পর্ব ২৯

প্রিয়তে তুমি প্রাণ পর্ব ২৯
মিমি মুসকান

প্রান্তিক প্ল্যান করছে হানিমুনের। বিয়ের এতো গুলো দিন পেরিয়ে গেল অথচ এখন অবধি বেচারা হানিমুন করতে পারল না। দুঃখটা যেন বুকে এসে বাঁধে। কিভাবে কোথায় হানিমুন করতে যাবে সব ঠিক করল। এসবের চক্করে দু একবার ভুলবশত প্রিয়তার ডাক ইগনোর করে ফেলেছে। ঝ*ড় সেখান থেকেই শুরু। প্রিয়তা এখন কিছুক্ষণ পরপরই তাকে খোঁচা মারছে। যেমন তেমন খোঁচা না, বুক ঝালাপালা করে দেওয়া খোঁ চা!
রান্নাঘরে প্রিয়তা যখন সকালের নাস্তা তৈরি করছিলো তখনি প্রান্তিক উটকে এসে জুড়ে বসল। প্রিয়তা তাকে এক ধম*কে দূরে সরিয়ে দিল। বউ নিয়ে প্রান্তিক মশাই আছে বড় বিপদে। মেয়েদের আগে এতো ঝামেলার মনে হয়নি। হ্যান্ডেল করা খুব সহজ। এখন এসে বুঝতে পেরেছে সব মেয়ে আর বউ এক চিজ না। দুইটাই ভিন্ন।
নরম আহ্লাদী সুরে বলল, “বউ কি হয়েছে?”
ছুরি*র মতো ধারালো কথাবার্তা, “একদম কাছে আসবেন না বলে দিলাম। কাছে এলেই ঘচাং করে গ*লা কেটে দিবো!”

হাতে ধারালো ছু*রি দেখে দু কদম পিছিয়েই গেল প্রান্তিক। এই কম বয়সে বউয়ের হাতে খু*ন হবার বিন্দুমাত্র শখ তার নেই। প্রিয়তা একাই বিড়বিড় করছে। কি বলছে সব প্রান্তিক শুনতে পারছে,
“কি ভাবেন কি নিজেকে? আমাকে মগের মুল্লুক মনে হয়! প্রিয়তা নাম আমার। বেশি তড়িঘড়ি করে একদম গলা ফাঁ*ক করে দিবো। জিহ্বা কে*টে নিবো। অন্য মেয়েদের সাথে রসের আলাপ করা। চোখ উঠি*য়ে মাছকে খেতে দিবো। দেখুক মেয়ে! আমিও দেখি মেয়ে দেখে কিভাবে?
প্রান্তিক জান হাতে নিয়ে রান্নাঘর থেকে ছুটে পেলো। সাং*ঘাতিক কথাবার্তা। অথচ বিয়ের পর কোনো মেয়ের সাথে রসের আলাপ তো দূর ভালো করে চেয়েও দেখেনি বউয়ের ভ*য়ে। প্রিয়তা কি আর এসব বুঝবে। বুঝবে না! বউরা কিছু বুঝতে চায় না। এরা নিজেরাই বড় বুঝদার!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

খাবার টেবিলে সকালের নাস্তা সাজানো। দাদাজানের মুখের সামনে খবরের কাগজ নিয়ে বসে আছেন। প্রান্তিক অপেক্ষা করছে বউয়ের। নিশ্চিত দাদাজানের সামনে উল্টোপাল্টা কিছু বলবে না। না বলবে না, দাদাজানের সামনে প্রিয়তা লক্ষ্মী মেয়ে। খাবার এসে গেছে। পাউরুটি টোস্ট করা আর ডিম পোজ। সাথে ধোঁয়া উঠা এক কাপ চা। খাবার গুলো দাদাজানের। প্রান্তিকের জন্য তাই এসেছে কিন্তু পাউরুটি গুলো যেন একটু বেশিই শক্ত শক্ত লাগছে। প্রান্তিক এদিক ওদিক উল্টে দেখল। আরে এতো পো*ড়া পাউরুটি!
নিচু স্বরে এই কথা বলতেই প্রিয়তা শাস*নের সুরে বলল, “যা পেয়েছেন তাই খান!”
বলেই চোখ রা*ঙালো। প্রান্তিক মহোদয় মাথা নেড়ে চায়ের সাথে ভিজিয়ে তাই খাওয়া শুরু করল। কি নজর রে বাবা। এই যেন গিলে ফেলে! প্রান্তিক কে বউয়ের ভ*য়ে পোড়া রুটি খেতে দেখে দাদাজান আড়ালে হাসলেন। তবুও হাসির শব্দ প্রান্তিকের কান অবধি এসে পৌঁছাল। সে চোখ মুখ কুঁচকে তাকাল। তার অসহায়ত্বের সুযোগ নিচ্ছে সবাই।

দাদাজান বলে উঠলেন, “একদম ঠিক আছে, এটাই তো হওয়া উচিত তোর সাথে!”
প্রান্তিক চিবিয়ে চিবিয়ে শব্দ করে খাচ্ছে যেন জবাব দিচ্ছে। হুঁ আসছে, এমনই হওয়া উচিত। প্রিয়তা আবারো এলো ফলের জুস নিয়ে। এমন শব্দ করে খেতে দেখে ক*ড়া গলায় বলে উঠলো, “শব্দ করে কেন খাচ্ছেন?”
“যা রুটি দিয়েছো এভাবে না খেলে পেটে হজম হবে না!”
“পছন্দ না হলে চলে যান। খেতে কে বলেছে?”
প্রান্তিক আর কথাই বাড়াল না। কি দরকার ভাই! এখন তাও যা পোড়া রুটি কপালে জুটছে পরে তাও জুটবে না। কোন দিন খাতা বালিশ সব বের করে দিয়ে বলবে, বাসা থেকেই চলে যান। দাদাজান যা চিজ, তার পক্ষ জীবনেও নিবে না। এরপর একদিন বলবে দুনিয়া ছেড়ে বি*দায় দিন!
বিদায় নেবার কথা মনে আসতেই বিষম খেয়ে উঠল সে। প্রিয়তা চোখ রাঙি*য়ে বলে উঠলো, “কোন মেয়ের কথা ভাবছেন এতো মনোযোগ দিয়ে? নাকি তারা আপনাকে মনে করেছে!”
বিষম থেমে গেল সাথে সাথে। জীবনে এতো ধা*ক্কা একসাথে কখনো খায়নি সে। হজম করতে কষ্ট হচ্ছে। রে*গে যে উঠে যাবে সেই সুযোগ নেই, দুটো কথা বলবে সেই সাহসও নেই। অতঃপর মাথা নিচু করে পোড়া পাউরুটি গিলতে লাগল। খেতে এখন আর খারাপ লাগছে না আসলে!

আমরিশা কি মান্নাতের প্রেমে পড়েছে? পড়েই গেছে। এক পা অলরেডি কাঁদায় গড়াগড়ি খাচ্ছে। প্রেমের কাঁদা বলে কথা, এতো সহজে ছাড়ে নাকি। মান্নাতের প্রতি সে বিষয়ে ভাবে দুর্বল সেই দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে মান্নাত। মেয়েদের মন মানানো বেশ শক্ত কাজ নয়। এদের একটু কেয়ার করলেই ভালোবাসায় লুতুপুতু খায়। মান্নাত তা খুব ভালো করেই জানে।
রোজ গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ভার্সিটির সামনে। গেটআপ ও নেয় তেমন। জেল দিয়ে চুলগুলোকে আঁটসাঁট করে রাখে। পরনে থাকে ইস্ত্রি করা শার্ট।
আজ পরেছে আকাশী রঙের শার্ট। শার্ট ইন করা জিন্সে। হাতার ফোল্ট গুলো উঠিয়ে রেখেছে কনুই অবধি। হাতে তো ফুলের তোড়া মিস করা যাবে না। সূর্যের তীর্যক কিরণে তার সাথে গাড়িটাও চকচক করে। হিরো হিরো ভাব তবে নায়িকার অভাব নেই।

মেয়েরা সবথেকে বেশি প্রভাবিত তাদের বান্ধবীদের কথায়। এ এক অদ্ভুত সত্য! আমরিশার মনে যে মান্নাতের জন্য অনুভূতি আছে তা টের পেয়েছে বান্ধবীদের কল্যাণে। এরা একেকজন মান্নাত কে দেখেই ফিদা। এতো বড়লোক ছেলে কেই বা হাতছাড়া করতে চায়। এরই মধ্যে যখন জেনেছে আমরিশা ছেলেটাকে পাত্তা দিচ্ছে তখন তো উঠে পড়ে লেগেছে। আমরিশার কি মাথায় ঘিলু আছে? থাকলে কি আর এমন ছেলেকে হাতছাড়া করে? ছেলেটা কি হ্যান্ডসাম তার সাথে আমার বড়লোক। আহা সোনায় সোহাগা যে। সোনার ডিম পাড়া হাঁস কেউ ফেলে দেয় বুঝি!
বান্ধবীদের এমন কানাকানি শুনে আমরিশার মাথা পুরোপুরি গেছে। আগে তো এভাবেই অর্ধেক গেছিলো এখন ষোলকলা পূর্ণ হলো। এখন তার মনে হচ্ছে মান্নাত উপযুক্ত। এসব ভেবে প্রেমে আছড়ে পড়েছে। মন্দ নয়! পড়েছে স্বেচ্ছায় কিন্তু স্বেচ্ছায় যে বের হওয়া সম্ভব নয়। একবার মনের আদান প্রদান হয়ে গেলে ফিরিয়ে নেওয়া যায় না।
প্রেম এক জ্বল*ন্ত অগ্নি*কুণ্ড! হয়তো ভালোবেসে সুখের নীড় করবে নয়তো সেই জ্ব*লন্ত অগ্নি*কুণ্ডে জ্ব*লে পু*ড়ে যাবে। কিন্তু মরবেও না আর বের হতেও পারবে না। উঁহু সম্ভব নয়!

একেকদিন একেক বাহারী ফুল নিয়ে হাজির হয় সে। আজ হাতে হলদে সূর্যমুখীর ছড়াছড়ি। মিলিয়ে আবার আমরিশাও পরেছে হলদে। এতোক্ষণে বুঝল, আসার আগে কেন বার বার ফোন করে জিজ্ঞেস করছিলো কি রঙের জামা পরেছো? ইশ, একটাই তো মন। আর কতোবার মনটা নিয়ে নিবে লোকটা।
বান্ধবী গুলো তাকে দেখতে পেয়েই জ্বা*লাচ্ছে। ইশ কি প্রেম! দেখলি দেখলি, আমরা ঠিক বলেছি। ছেলেটা তোর জন্য পারফেক্ট! এতো ভালো ছেলে আজকাল হয় নাকি? একবার সুযোগ দিয়েই দেখ না। তাদের কথাবার্তায় আড়*ষ্ট হয়ে যায় সে। চোখে মুখে রক্তিম আভার ছাপ। সত্যি বলতে, মেয়েদের জীবন প্রথম ধ্বং*স হয় এসব বান্ধবীদের হাতেই!
হ্যাঁ হ্যাঁ, জানি সকলে একমত হবেন না। না হোন গিয়ে, আমার কি? আমি দেখেছি তাই বলেছি কিন্তু সবার আবার নিঃশে*ষ হয়ে যায় না। কেউ কেউ প্রাণ ফিরে পায়, ফিরে পায় প্রাণভোমরা।
কাছে আসতে দেখেই ভদ্রলোকের মতো গাড়ির দরজা খুলে দাঁড়িয়ে আছে। ফুলগুলো হাতে দিয়ে যত্নে গাড়িতে তুলে দিয়েছে। অতঃপর দরজা আটকে নিজের সিটে এসে বসেছে। এতো টুকু কর্মকাণ্ডেই বান্ধবী গুলো মরি মরি। ঢং যতসব!

গাড়ি চলছে আনমনে। আমরিশা জানে না কোথায়ও যাচ্ছে তবে যাচ্ছে কোথাও। রোজই তো যায়, ঘুরে ফিরে খাওয়া দাওয়া করে দারুণ সময় কাটায়। এভাবেই চলছে সপ্তাহ খানেক। তবে আজ কোথায় যাচ্ছে?
ফুলগুলো চমৎকার। দু একটা ছবি না তুললেই নয়। ছবিতে ক্যামেরা ভর্তি। পোষালো না তেমন। মান্নাতের দামী ফোনটা এগিয়ে দিল। এতে ছবি ভালো আসে। আচ্ছা মান্নাত কি সত্যিই প্রেমে পড়েছে!
আলবাদ পড়েছে। নাহলে প্রান্তিকের শালীকে নিয়ে ঘোরাঘুরি। বালাই শাট! জ*বাই করে ছেড়ে দিবে প্রান্তিক। যদি জানতে পারে তার শ্যালিকা সাহেব কে নিয়ে ঘোরাঘুরি তাহলেই হয়েছে। যদিও মেয়েটার থেকে এখনো সরাসরি কিছু বোঝা যাচ্ছে না। আমরিশা খোলাখুলি ভাবে কিছু বলছে না। বললে রক্ষা পেত। প্রান্তিক হাতেনাতে ধরে ফেললে বলে দিত, দুজন দুজনকে ভালোবাসে। সে সত্যিই ভালোবাসে! সত্যিই আগলে রাখতে চায় আর সেও থাকতে চায়। তখন অসুবিধে ছিল না। আজ যে করেই হোক মনের খবর জানতে হবে।
গাড়ি থামল একটা ভবনের সামনে। আমরিশা নাক কুচকালো। গ্যারেজের কাছে তারা কেন এসেছে? অতঃপর জানল, নিচতলা গ্যারেজ উপরে ঘর আছে। এখন সেখানেই যাবে। ঘরের কথা শুনেই ব্যাঙের মতো লাফিয়ে উঠল। সে কেন যাবে অন্যের ঘরে!

মান্নাত বুঝিয়ে উঠতে পারল না। ওমন ঘর না, এটা তাদের বন্ধুদের আড্ডা দেবার জায়গা। আমরিশা কে দেখাতে এনেছে। দিনের প্রায় বেশিরভাগ সময়ই এখানেই কাটে তার। নিচের গাড়ির গ্যারেজ ও তাদের নিজস্ব। তাই ভ*য় পাবার কিছু নেই।
আমরিশা ভ*য় পাচ্ছে,সাথে লজ্জাও। দুজন সেয়ানা ছেলেমেয়ে একা একটা রুমে থাকবে। এটা কি ঠিক? ঠিক ভুলের বিচার করার আগেই তারা দুতলায় চলে এলো। বিশাল বড় ঘর। মনে মনে হচ্ছে কোনো স্টুডিও। গানের গিটার পড়ে আছে, সাইডে কতোগুলো আবার বিয়ারের বোতল। ওদিকে আবার গোল বিছানা আবার পাটি পাতা। পুরোই মাছের বাজার। মান্নাত এসব দেখে মাথা চুলকালো। যাবার আগে বার বার বলে দিয়েছে পরিষ্কার করে রাখছে। ওরা কিছু করেনি?
রা*গে শিরা ফুলে উঠল। ইচ্ছে করছে একেকটা কে ধরে না! থাক, এবার রা*গ সংবরণ করল। আমরিশা ফুল হাতে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে মুচকি হেসে তার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। তাকে স্নিগ্ধ লাগছে ফুলের মতোই। মান্নাত দাঁত একপাটি বের করে হেসে বলল,

“ওদের বলেছিলাম পরিষ্কার করে রাখতে। দেখো ওরা কিছু করেনি।”
“ওরা কেন করবে? আপনার আপনি পরিষ্কার করুন।”.
“শুধু কি আমার। আমাদের সকলের। সবার কাছে চাবি থাকে।”..
“সবাই বলতে?”
“এই আমি, প্রান্তিক, আলফি, আশিক, মৌনতা সবার কাছে!”
ঘরের মাঝামাঝি এসে সটাং করে দাঁড়ালো আমরিশা। থেমে থেমে বলল, “ভাইয়া! যদি এসে পড়ে।”
“না না, ও এখন ছুটি ছাড়া আসে না। বাসায় বউ আছে তো। তোমার বোনকে রেখে আমাদের সময় দিবে নাকি?”
আমরিশা লজ্জা পেলো বোধহয়। বলল, “কিন্তু যদি বাকিরা..
“আসলে আসুক। সমস্যা কি? তোমার ভাইয়া না এলেই হলো!”
হাতটা ধরে ঘরের মধ্যে আনলো তাকে। এবার ছেড়ে দিল। গোল সাইজের বিছানার উপর আমরিশা বসে পড়ল। পাশেই রাখল ফুলগুলো। মান্নাত কফির পানি গরম বসাল। বলল, “খাবে!”
আমরিশা মাথা নাড়ল।

সময় যাচ্ছে, দুজনের কেউই কথা বলার জন্য কিছু খুঁজে পাচ্ছে না। কেমন অদ্ভুত লাগছে। পাশাপাশি এতোক্ষণ কতোক্ষণ বসে থাকা যায়। কফিটাও শেষ এখন। এবার তবে! আমরিশা একটু নড়েচড়ে উঠল। ইতস্তত করে বলল, “এখন যাওয়া দরকার!”
বলেই উঠতে লাগল। মান্নাত তার হাত চেপে ধরল। আবারো বসে পড়ল সে। তার বুকের ধুকপুকানি বেড়ে যাচ্ছে। মান্নাত তার দিকে ফিরে বসল। হার্ট অ্যাটাক না করে ফেলে এবার। দু হাতে হাতখানি জড়িয়ে ধরে বলল,
“বলো ভালোবাসো আমায়?”
আমরিশা চমকে উঠল। হ্যাঁ বলবে নাকি না বলবে নাকি কিছুই না। মাথায় কিছু খেলছে না। মান্নাত পুরো ৫ মিনিট অপেক্ষা করল। জবাব এলো না। নিশ্চুপতা অনেকেই হ্যাঁ বলে ধরে নেয়। তাই সে তার থিতুনিতে হাত রেখে বলল, “আমি কি হ্যাঁ ধরব?”
লজ্জায় আমরিশা মুখ তুলে তাকাতে পারছে না। হাত সরিয়ে আনতে পারছে না। মান্নাত শক্ত করে ধরে আছে। মুখ সরিয়ে নিতেই মান্নাত এদিকে ফিরাল। গালে হাতটা আলতো করে রেখে সে কাছে আসছে। অনেক কাছে! এই চুমু টুমু খাবে নাকি আবার? আমরিশার আ*ত্মাশুদ্ধ কেঁপে উঠল। শেষ মূহুর্তে এসে মুখ সরিয়ে নিলো সে। মান্নাত এটা ভাবতে পারিনি।

যখন বুঝতে পারল লজ্জায় আর অপ*মানে আঁতকে উঠল। দ্রুত তার পায়ের কাছে হাঁটু গেড়ে বসে বলল, “সরি সরি! আমার কন্ট্রোল করা উচিত ছিল। আমরিশা প্লিজ ভুল বুঝো না। কথা দিচ্ছি আর কখনো হবে না। প্লিজ আমরিশা, লক্ষ্মীটি কথা শোনো!”
আমরিশা লজ্জায় মুখ তুলে তাকালো না। কেবল মাথা নিচু করে মাথা নাড়ল। মান্নাত আহত হলো। করুণ স্বরে বলল, “প্লিজ ফিরে তাকাও। এমন করো না। সত্যিই ভুল হয়ে গেছে। আমরিশা!
আমরিশা তাকাল। দু সেকেন্ডের চোখাচোখিতে আরো লজ্জা পেয়ে গেল। সে চোখ সরিয়ে নিল মূহুর্তে। হেসে উঠল আনমনে। স্বস্তি ফিরে এলো মান্নাতের। মেঝের উপর আসন পেতে বসে বলল, যাক বাবা! কথা দিচ্ছি তোমার পারমিশন না এক ধাপ ও আগাবো না। এই তো তোমার কসম!”

প্রিয়তে তুমি প্রাণ পর্ব ২৮

আমরিশা না হেসে পারল না। মান্নাত ও হাসছে। তবে বেশিক্ষণ টিকলো না। দরজায় এরই মধ্যে ঠকঠক শব্দ করছে। এখন কে এলো? কেইবা আসবে। মান্নাত উঠে দাড়াতেই প্রান্তিকের গলা ভেসে এলো। চেঁচিয়ে বলছে, ভেতরে কে আছিস? এই দরজা খুল!
মান্নাত ভর্য়া*ত দৃষ্টিতে ফিরে তাকাল। আমরিশা অবস্থা আরো বেহাল। রক্ত’শূন্য মুখ নিয়ে উঠে দাঁড়াল। ছটফট করছে কইমাছের মতো। হায় হায় ভাইয়া এসেছে! এখন কি হবে? দু’জনে মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে। ওদিকে প্রান্তিক দরজা নক করেই যাচ্ছে। এই না ভে*ঙে ফেলে! এখন কি হবে?

প্রিয়তে তুমি প্রাণ পর্ব ৩০