প্রেম ও অসুখ পর্ব ৭
নবনীতা শেখ
– নবনীতা শেখ
-“ওশশশালা! তুমি বউকেও কোলে বসিয়ে রাখছো?”
হৃদ এখন কী করবে? পড়ল না মাইনকার চিপায়? একহাত উঠে এলো কপালে। ফোনটা মিউট করে আতিকাকে বলল,
-“দিলেন আমার বউটাকে ক্ষেপিয়ে! টেস্টগুলো করিয়ে আসুন।”
আতিকা জিভে কামড় বসাল,
-“দুঃখিত, ডাক্তার সাহেব। আমি বুঝতে পারিনি।”
আতিকা আদিবাকে নিয়ে চলে গেল। হৃদ চেয়ার ছেড়ে উঠে গিয়ে জানালার পাশে দাঁড়াল। ও-ধারে সাঁঝের রাগ ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। সে কল কেটে দেবে দেবে পরিস্থিতি। তবু কেন যেন কাটছে না। হৃদ শ্রান্ত গলায় বলল,
-“ম্যাডাম, আমাকে একটা কথা বলুন তো!”
সাঁঝ হাঁটতে হাঁটতে বারান্দা থেকে রুমে চলে এলো। সেখানে অদিতি অস্থিরভাবে হাঁটাহাঁটি করছে। একটু আগেই অর্ণব কল দিয়ে সাঁঝের খোঁজ নিয়েছিল। কঠিন পুরুষটার আওয়াজ শুনলেই অদিতির কেমন বুক জ্বালাপোড়া করে, গলায় আটকে আসে দমটা। তার একটু সান্নিধ্য পাওয়া অদিতির কাছে পরম সৌভাগ্য। আর এখন তো রোজ নিয়ম করে লোকটা তার সাথে কথা বলছে। মাঝেসাঝে তার খোঁজও নিচ্ছে। খুশিতে অদিতি মরে যাবে না তো কী করবে?
সাঁঝ অন্যমনস্কতায় রুমে এসে সবার আগে অদিতির সাথে ধাক্কা খেলো। কেউ কোনো কথা বলল না। দুইজনই নিজেদের অনুভূতির জ্বালাতনে ব্যস্ত। কাজেই একে-অপরকে বিশেষ পাত্তা দিলো না, পিঠে একটা থাপ্পড়ের সাথে “ধুর শালী” বলে উলটো রাস্তা ধরল দুইজনই। সাঁঝও ফের বারান্দায় চলে এলো। চটচটে মেজাজ নিয়ে বলল,
-“এ মিয়াঁ? আবার কী? কী শুনতে চান?”
হৃদ বড়ো করে শ্বাস ফেলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
-“তুমি কোথা থেকে জানলে, আমি ম্যারিড?”
সেই পুরাতন ঘা! জীবনের একমাত্র ব্যথা! তার স্বামীকে আরও একটি নারী খুব যত্নে ভালোবেসেছে.. এটুকু ভাবাও যেন দুঃসহ!
সাঁঝের পা থেমে গেল। গলার স্বর আটকে এলো। সে সময় নিল। গলার নিচে চলে এলো বা-হাতটা। চাহনি এদিক-ওদিক বিক্ষিপ্ত। ভয়াবহ রকমের চোখ জ্বালাপোড়া করতে লাগল তার। মৃদু স্বরে বলল,
-“সত্য হাওয়ায় ভাসে।”
সাঁঝের বড়ো শীতল জবাব। হৃদ দীর্ঘশ্বাস ফেলল। একজন স্টাফ তখন দরজায় নক করল। ভেতরে আসার অনুমতি পেলে, বয়স চব্বিশের এক তরুণ চেম্বারে প্রবেশ করল। কফির মগটা টেবিলের ওপর রেখে ফের সেখান থেকে চলে গেল। এই সময়টুকু হৃদ চুপ রইল। ছেলেটা যেতেই বলে উঠল,
-“আমার কিছু প্রশ্নের উত্তর দেবে?”
সাঁঝ ছোট্ট করে বলল,
-“বলুন।”
হৃদ ধোঁয়া ওঠা কফির মগটা হাতে নিল,
-“আমাকে নিয়ে তোমার মস্তিষ্কের ধারণা কী?”
-“আপনি এক চতুর লোক।”
-“আর মনের?”
-“আপনার চতুরতায় আমার সুরক্ষা ও ভালো থাকা..”
-“মনের চিন্তায় অসন্তুষ্ট তুমি?”
-“হ্যাঁ।”
হৃদ হাসল,
-“কেন?”
সাঁঝ অন্যমনস্ক হয়ে পড়ল,
-“মন মিথ্যে বলে।”
-“আর মস্তিষ্ক?”
-“যুক্তি খোঁজে।”
-“অযৌক্তিক সবকিছুই যে মিথ্যে হবে, এটার কোনো মানে আছে?”
সাঁঝের সবকিছু কেমন এলোমেলো হয়ে যেতে লাগল। সে দু-ধারে মাথা নাড়ল। তবে মুখে কিছু বলল না। হৃদ তা বুঝতে পেরে বলল,
-“আমাকে নিয়ে কিছু ভেবেছো?”
-“ভাবতে পারছি না।”
-“চেষ্টা করেছো?”
-“করেছি।”
-“কী চেষ্টা?”
-“ভুলে যাওয়ার, দূরে সরে যাওয়ার…”
হৃদ কফির মগে চুমুক দিতে গিয়েও থেমে পড়ল। নতমুখী সে, চাহনি আড়ে, কপালে দুটো ভাঁজ, ঠোঁটের কার্ণিশ বেঁকে সামান্য,
-“ভুলতে পারছো না? দূরে যেতে পারছো না? তবে কি ধরে নেব, তুমি ধীরে ধীরে জড়িয়ে..”
হৃদের কথা সম্পূর্ণ করতে দিলো না সাঁঝ, মাঝেতে তার অশান্ত আওয়াজ,
-“নাহ!”
-“কেন?”
-“আপনাকে আমি চাই না।”
যাহ! এসব কথা সরাসরি বলা যায় নাকি? বলতে পারল সাঁঝ? কী অকৃতজ্ঞ মেয়ে সে নিজে! এমন ভাবনা নিয়ে খুব দ্রুত সাঁঝের মন পুরো মস্তিষ্ককে উত্তেজিত করে তুলল। সে এক নিঃশ্বাস সম-পরিমাণ থেমে আবার বলতে লাগল,
-“আপনি বিবাহিত! আমাকে ঠকিয়েছেন।”
শিট শিট শিট! আবারও! আবারও বলে ফেলল! সাঁঝ কপালে হাত চাপড়াল, জিভ কাটল। মন আজ অনিয়ন্ত্রিত, শব্দগুলোও আয়ত্তের বাইরে। সে কোনো মতে নিজের মুখ থেকে বের হওয়া শব্দগুলোর ভারকে একটু কমাতে বলল,
-“আ.. আমি.. আমার আসলে.. সময় লাগবে।”
-“আচ্ছা।”
-“আপনার বউ কই? বউয়ের সামনে আমার সাথে কথা বলছেন? কষ্ট পাচ্ছেন না তিনি?”
-“না।”
-“ওনার কোনো সাড়াশব্দ পাচ্ছি না যে.. সামনে নেই এখন?”
-“নাহ!”
-“আচ্ছা.. আপনার কি সত্যিই বউ আছে?”
শব্দ করে হেসে ফেলল হৃদ,
-“হ্যাঁ, আছে তো। সাথে বাচ্চাও আছে। তোমার থেকেই তো জানলাম।”
-“সত্যিই আছে?”
-“তোমার কী মনে হয়, সাঁঝ?”
প্রথমবার হয়তো হৃদ তাকে নাম ধরে ডাকল। প্রথমবার? নাহ! বিয়ের পর বিদায়ের সময় একবার ডেকেছিল। গাড়িতে পাশাপাশি বসে ছিল তারা তখন। হৃদ নাম ধরে ডেকে বলেছিল, “সাঁঝ? কোনো সমস্যা হচ্ছে?” ওইটুকু মনে পড়ল সাঁঝের। ঠোঁট উলটে এলো। চোখ দুটোয় অসীম মায়া। সে মলিন গলায় বলল,
-“দ্বিধা হয়। কখনো মনে হয় নেই, থাকতে পারে না, আপনার বয়সও অত নয়। আপনার কথা বলার ধরন, খেয়াল রাখা, যত্ন, আমাকে দেওয়া গুরুত্ব.. সবেতে মনে হয় আপনি শুধুই আমার। আপনার অস্তিত্বে অন্য কারো ভাগ তো দূর, স্পর্শ অবধি নেই। আর.. আর তারপরই আমার সবকিছু আটকে যায়, দ্বিধা-দৃঢ়তায়! আপনি আমাকে নিশ্চিত করে দিন না!”
সাঁঝের কণ্ঠে ব্যাকুলতা। হৃদের এই ব্যাকুল সাঁঝকে ভারি পছন্দ হলো। সে তাকে শান্ত করল না। উত্তরও দিলো না। কফির মগে চুমুক দিয়ে টেবিলের ওপর রাখল। নিজে চেয়ারে বসে মাথা এলিয়ে দিলো। চোখ দুটো বন্ধ করে নিয়ে বলল,
-“তোমার কাছে বিয়ে মানে কী?”
সাঁঝ চকিতে বলে উঠল,
-“সমঝোতা।”
-“কীসের?”
-“সুখ-অসুখের।”
-“আর ভালোবাসা?”
-“অনুভূতি।”
-“প্রেম?”
-“অসুখ।”
-“ভালোবাসা আর প্রেমের তফাৎ কী?”
সাঁঝ ধীরে ধীরে শান্ত হতে লাগল। বড়ো অনুভূতিপ্রবণ মেয়ে সে। প্রকৃতিবিলাস ভালোবাসে। তার চেয়েও বেশি ভালোবাসে নিজেকে উপভোগ করতে। দার্শনিক কথাবার্তা নিয়ে সারাদিন পড়ে থাকা মেয়েটার ভাবার প্রয়োজন পড়ল না—ভালোবাসা আর প্রেমের তফাতটা। সে অবিলম্বে বলে উঠল,
-“ভালোবাসা মানে বিশ্বাস, সম্মান, গুরুত্ব, যত্নসহ সকল ইতিবাচক অনুভূতির এক পূর্ণাঙ্গ প্রকাশ। এটা বড়ো কোমল, প্রশান্ত, অনিন্দ্য ও নিঃস্বার্থ। কোনো চাওয়া-পাওয়া রাখা যায় না এখানে। ভীষণ সীমাবদ্ধ।
অন্যদিকে প্রেম মানে মন, প্রাণ, শরীর, চেতনা, আবেগ, আত্মা সব দিয়ে জড়িয়ে পড়া। কাছে পাওয়ার তীব্র অনুভূতি.. অসহ্য জ্বালাতন, হৃৎপিণ্ডের ব্যাকুলতা। সারাজীবন একজনের তরে জীবন উৎসর্গ করে দেওয়ার আমৃত্যু অঙ্গীকার। চাওয়াটা ‘লাগবেই’ এবং পাওয়াটা তখন আবশ্যকীয় হয়ে যায়। হিংস্রতা, প্রচণ্ডতা, উন্মত্ততা.. এগুলো যেন স্বাভাবিক ব্যাপার। না পেলে সামনের মানুষটার বাঁচতে দেবে না, নিজেরও তো মৃত্যু সই। কী পাগলাটে! মন জুড়ে অসুখের বাস। একটা উদাহরণ দেবো?”
মেয়েটার মুখ থেকে উচ্চারিত প্রতিটা শব্দ যেন সঞ্জীবনী সুধা, বাঁচার আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে, বুকেতে প্রস্ফুটিত হতে থাকে আস্ত এক সুখপদ্ম। হৃদ হাসে, তার দু’চোখ হাসে। সাঁঝ অনুমতির অপেক্ষায় চুপ হয়ে আছে। হৃদ বলল,
-“দাও।”
সাঁঝ থামল, বড়ো করে শ্বাস টানল। চাহনি আধডুবো সূর্যে স্থির রেখে বলল,
-“ভালোবাসা একটা নদী হতে পারে, শান্ত ও স্থির।
অন্যদিকে প্রেম যেন মহাসমুদ্র, উথাল-পাতাল গতিবেগ তার! নিজের গভীরতায় গিলে নেয় সবটা…”
হৃদ দু’চোখ খুলে ফেলল। চেয়ার থেকে মাথা তুলে তাকাল জানালার দিকে। সন্ধ্যে নেমেছে ধরনীতে। সম্মুখের বিদ্যুতের খুঁটির তারের ওপর দুটো কালো রঙের পাখি গা ঘেঁষে বসে আছে। সোনারঙা রোদ! হৃদ সেদিকে তাকিয়ে রইল। আনমনে জিজ্ঞেস করে উঠল,
-“কাউকে ভালোবেসেছো কখনো?”
সাঁঝ থমকে পড়ল। চোখ দুটো সামান্য সরু হলো। চাহনি একপেশে। ঠোঁট চাপা এক হাসিতে বলল,
-“নিজেকে।”
-“আর প্রেম?”
-“অপেক্ষা।”
-“কার?”
-“জানি না।”
-“তবে?”
সাঁঝ বারান্দা ঘেঁষে দাঁড়াল। পরনে অলিভ রঙের সুতির জামা। গায়ের ওড়নাটা একপাশে পড়ে আছে। ক্যাম্পাস থেকে ফিরে শাওয়ার নিয়েছে। যার বদৌলতে কোমড় ছাড়ানো ভেজা চুলগুলো থেকে এখনো পানি ঝড়ছে, পিঠের অনেকটাই ভিজে গেছে। দক্ষিণা শীতল দমকা হাওয়া অদ্ভুতভাবে তার গায়ে এসে ছুঁয়ে দিলো। প্রকৃতির নির্লজ্জতায় অন্যসময় হয়তো সাঁঝ লজ্জা পেত। এখন পেল না। শব্দ গুছিয়ে বলে উঠল,
-“অপেক্ষাদের পরিসমাপ্তিতে মৃত্যু থাকে। জানেন তো? হুমায়ুন আহমেদ বলেছেন, অপেক্ষা হচ্ছে মানুষের বেঁচে থাকার টনিক। সে আমি যারই অপেক্ষায় থাকি না কেন…”
হৃদ জিজ্ঞেস করল,
-“তোমার কী মনে হয়, তুমিও কারো প্রেমে পড়বে?”
-“আমি বিবাহিত। আর আপনার মতো বিবাহিত এক বাচ্চার বাপের প্রেমে পড়ার সম্ভাবনা অলমোস্ট শূন্যের কোঠায়, সাহেব। তবে আমার মনে হচ্ছে, আমি কঠিনভাবে প্রেমে পড়ব।”
শান্ত কথাতেও যে তীক্ষ্ণ ঠাট্টার বান থাকে, তা হৃদ ধরতে পারল। নতমুখী হাসির সাথে বিড়বিড় করল,
-“নির্বোধ বউ আমার!”
শোনেনি সাঁঝ, অবুঝ স্বরে শুধাল,
-“হু?”
হৃদ জিজ্ঞেস করল,
-“সত্য কী?”
-“যা ঘটে।”
-“আর মিথ্যা?”
-“বানোয়াট সত্য।”
-“তবে তোমার হাওয়ায় ভাসা সত্যের মধ্যে কি বানোয়াট সত্য মিশে থাকতে পারে না?”
কথা ঘুরিয়ে, সেই পূর্বের কথায় ফিরে আসা। সাঁঝের খটকা লাগল। অদ্ভুতভাবে বসে পড়ল বারান্দার মেঝেতে। হতবিহ্বল আওয়াজ তার,
-“কী বলতে চাইছেন?”
-“যা সত্য।”
-“স্পষ্ট করে বলুন।”
-“নিজে খোঁজ লাগাও। সত্য মন মতো না হলে কেউ বিশ্বাস করতে চায় না।”
তিনসপ্তাহ পরের ঘটনা। তিনদিনের ছুটি। কাউকে না জানিয়ে আচমকা সাঁঝ নিজের শ্বশুরবাড়িতে চলে এলো। ব্যাপারটা হুট করে ঘটল। সিদ্ধান্ত কবে নিয়েছে, সেটাও জানা যায়নি। আজ সে ভার্সিটি থেকে ক্লাস না করেই বাসায় চলে আসে, এরপর ব্যাগ গুছিয়ে সোজা বাসে.. অর্ধেকপথ যেয়ে অদিতিকে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকা ছেড়ে টাঙ্গাইলে ঢুকে পড়েছে। অদিতি যেন শত্রুপক্ষের সিক্রেট এজেন্ট। তার জানতে দেরি, অর্ণবকে জানাতে দেরি হয়নি। অর্ণবও সবার আগে হৃদকে জানাল। ব্যাপারগুলো এমনভাবে ঘটল, অকস্মিকতায় কিংকর্তব্যবিমুঢ় সবাই।
বাড়ির নাম শকুনতলা। একটা হলদেটে রঙের দেয়ালে কালচে বাদামি রঙের কাঠের নামফলক। সেখানে বাংলা অক্ষরে কী সুন্দর করে নামটা লেখা! সাঁঝ একহাতে সেটা ছুঁয়ে নিল। এ বাড়িটা সাঁঝের বাড়ি থেকে রিকশায় পনেরো মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত। আশেপাশে অন্য কোনো বাড়ি নেই। চারপাশে কাঠগাছ, ও বাড়ির পেছন দিকে শাণ বাঁধানো পুকুর।
সাঁঝ তার মায়ের সাথে এর আগেও এ বাড়িতে দু’বার এসেছিল। বিয়েরদিন ব্যাপারটা খেয়াল করেনি সেভাবে। এখন বুঝতে পারছে। সে কলিং বেল চাপল।
মিনিট দুয়েকের মধ্যে এক আধবয়সী মহিলা এসে দরজা খুলে দিলেন। ইনি হৃদের বড়ো ফুপি, মর্জিনা। সাঁঝকে দেখে প্রথমে কপাল কুঁচকে ফেললেন। বিয়েতে তিনি ছিলেন না। সকালে এসে তো বউকে দেখতেও পাননি। কাজেই তিনি সাঁঝকে চেনেন না। মুখাবয়বে চরম বিরক্তি তার। কণ্ঠ উঁচুতে তুলে বললেন,
প্রেম ও অসুখ পর্ব ৬
-“কে তুমি?”
-“আপনি কে?”
-“আমি কে মানে? এটা আমার ভাইয়ের বাড়ি। আমি এই বাড়ির বড়ো মেয়ে।”
পেছন থেকে এক মেয়েলি আওয়াজও শুনতে পেল সাঁঝ,
-“আম্মু, কী হয়েছে?”
মর্জিনার পিছে তার মেয়ে ঊর্মিও এসে হাজির। সাঁঝ ঊর্মিকে দেখে মিহি হাসল। আবার তাকাল মর্জিনার দিকে। দু’জনের চেহারার মিল লক্ষ করল। সাঁঝ সালাম দিলো মিষ্টিস্বরে,
-“আসসালামু আলাইকুম, ফুপি শাশুড়ি।”
অবাক হলেন মর্জিনা। মুহূর্তে মস্তিষ্কে খেলে গেল তিনমাসের পুরোনো কেচ্ছা। চমকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
-“ফুপিশাশুড়ি মানে?”
সাঁঝ নিজের ব্যাগটা ঊর্মির হাতে ধরিয়ে দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ল। শান্তস্বরে ঊর্মিকে বলল,
-“তোমার আম্মুকে বলে দাও, এ বাড়ির বড়ো ছেলের বৌ আমি।”