প্রেমঘোর গল্পের লিংক || নার্গিস সুলতানা রিপা

প্রেমঘোর পর্ব ১
নার্গিস সুলতানা রিপা

আজ নৌশিনের বিয়ে সম্পন্ন হলো।
অনেক ধুমধাম করে সব আয়োজন শেষে আজ শশুর বাড়িতে পা রাখল।অনেকটাই নার্ভাস।বাট স্বামী নিয়ে খুব কম কারণ চার বছরে অনেকটা জানা শোনা দুজনের। কিন্তু বাসার সবাই কেমন হবে তা তো জানে না😞😞..তাই মোড ওফ।।
সব নিয়ম কানুন মেনে সাদাদের ভাবী আর বোন রা ওকে রেখে যায় ঘরে।(সাদাদ নৌশিনের husband)
ভাবী:এই যে মেয়ে,দেবর কে পাগল করে বিয়ে করছো,আবার আজ রাতে এত পাগল করো না যেন আমদের ভুলে যায়।

নিপা:আরে ভাবী কি যে বল তুমি..চার বছরে যখন সাদাদকে ভুলতে দেয় নি তোমাদের আর দিবেও না।(নিপা সাদাদের বড় বোন)
নৌশিন চুপচাপ শুধু শুনেই যাচ্ছে।কি বলার ই বা আছে ওর।এমনিই কাউকে চিনে না।
নিপা:শোনো এই যে দুধটা টেবিলে রাখা। এটা তোমার আসলে খাওয়াবে কেমন??আর শোন সালাম করো কিন্তু।প্রেম করছো বলে যে করবে না তা কিন্তু কর না।।স্বামী তো স্বামীই
নৌশিন”…মনে মনে..”ইশ শখ কত ২ বছরে অনেক জ্বালা দিছে এখন আমি জ্বালবো.।।সালাম করতে ঠেকা লাগছে আমার”
নৌশিন:জ্বি আপু।।
ভাবী :এই নিপা চলো চলো ১২ টা বেজে গেজে,,এতো দূরে বিয়ে করল আসতে আসতেই তো ১১ টার বেশি বেজে গেছে।।এখন আমাদের তো কোনো কাজ নেই…যার আসার কথা সে আসুক।
নৌশিন খুব ভূতে বিশ্বাসী।
নৌশিন:আপু তার মানে আমি একা থাকবো এখন😞😞
নিপা:ও মা একা কেনো থাকবা😃😃সাদাদ আসবে
“ও কখন না কখন আসবে তোমরা বস না কত বড় ঘর আমার তো ভয় করছে”
ভাবী:😆😆😆😆।।।হায় আল্লাহ কয় কি মাইয়া…এই তুমি নিপা বস আমি দেবর কে পাঠাই পরে আসো তুমি।
নৌশিন:☺

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

ভাবী বাইরে গিয়ে দেখে সব বন্ধুরা মিলে ঘিরে আছে সাদাদকে।
ভাবী:তোদের কি অবস্থা রে??আর কত জালাস পোলাডারে।।যাইতে দে ১২+ বাজে তো।
বন্ধুদের মাঝে একজন:ও ভাবী ওর গিয়ে কি কাজ আমরা সবাই যাই নাকি।😆😆 “হুম যা..)সাদাদ
“না গুরু আজ তুমি যাও পরে আমরা পরের দিন”
“শালা আমি ডুকলে আর তোরে ডুকতে দিব নাকি”
“বুজা গেলো সব..হিংসা লাগছে দেবরের আমার..তোরা চল সবাই হালকা খাবি কিছু কেউ তো আর বাসায় যাবি না..”
সাদাদ রুমে ডুকলো,নিপাও বেরিয়ে এল।
নৌশিন:😡😡😡😡
সাদাদ:কিহ???এভাবে দেখ কেন?

মাথার ঘোমটা এক টানে সরিয়ে”এত দেরি লাগে আসতে তোমার, কাউকেই তো চিনি না 😞😞।।আগে আগে তো আসবা আর রোম এত বড় কেন কেমন ভয় ভয় করে”
“ও সরি।।সবাই মজা করছিল তো তাই..আর রোম বড় তো কি আমি তো আছি ভয় কিসের।..খাটে বসতে যাবে এমন সময়”দাড়াও….”
কি হলো?
“আপু বলছে সালাম করতে??করা লাগবে???”
“তো করবা না আজ থেকে তোমার বর সম্মান দিবা”
মুখটা ভেঙ্গিয়ে”ওওলুুু ছাই দিব বলেই সালাম টা করল..
সাদাদ:ওরে আমার বউ রে☺☺
“নাও এটা খাও”
কি এটা??

“দুধ..চিনো না নাকি?”ভাবী বলছে পরাটা শেষ করতে..
“হুম…আর কিছু বলে নাই”
“বলছে তোমাকে যেন পাগল না করি”
“ওহ আচ্ছা☺”
“এত্ত গয়না পড়ছো কেন?? ওজন লাগে না”
“হুম আমি কি করব সবাই এত এত গহনা দিলে😞”
“গরম তাই না”
“হুম”কথা বলার মাঝেই সাদাদ নৌশিনকে দেখছে মেয়েটা একটু আগে কতটা জড়তায় ছিল বাট এখন কতটা হালকা,বাসায় ডুকার আগেও গাড়ীতে ভয়ো শক্ত করে সাদাদের হাতটা চেপে বসেছিল,,।
আজ চেনা সেই নৌশিনকে অন্য রকম দেখাচ্ছে
শাড়ী..ভারী ভারী গয়না.. এত সাজ.. সাদাদের ইচ্ছা করছে সব কিছু নষ্ট করে দিতে ওর এত সৌন্দর্য ধরে রাখতে ইচ্ছা করছে না।

“এই সাদাদ কি দেখ এত..ঘরি দেখ ১ টা বাজে তুমি জানো কাল তো বাসায় এত কোলাহল ছিল আমি ঘুমাইতেই পাড়ি নাই…খুব ঘুৃম পাইছে,,একা একা ভয় করে তাই তুমার অপেক্ষায় ছিলাম..ঘুমাবো ঘুমাবো”
“ঐ আজ রাতে মানুষ ঘুমায়,, আমি তো ভাবছি গল্প করব সারা রাত”
প্রথম রাতে নৌশিনের গায়ে হাত দিবে না সাদাদ আগে থেকেই ভেবে রাখছে,, একটা মেয়ে সব ছেড়ে অনেক পেরা নিয়ে এসে আবার ডাবল পেরা নিবে এটা সাদাদেরর ঠিক ভালো লাগে না তাই ও ভাবছে যে গল্প করবে সারা রাত তা আর হবে না,, কারণ নৌশিন তো বলেই দিল ঘুম পাইছে।আর সাদাদের এটা খুব ভালো লাগলো যে”নৌশিন ওর সামনে ঘুমাবে বলে মেয়েটার মনে কোনো দুটানা নাই,,সবটা দিয়ে বিশ্বাস করে ওকে”
সাদাদ:”হুম তাই বেটার সোনা,,অনেক ক্লান্ত তুমি,,ফ্রেস হও নি?”
“না তো একা একা ওয়াশরুমে ভয় লাগে তো”(নৌশিন)

“তোমার বয়স কত রে”
কেন..২২।। জানো না..
কোন ক্লাস
“অর্নাস শেষ করব”
তো এত বড় একটা মেয়ে ভয় পায় নাকি??
“তোমার রুম টাও তো কত বড়,,আর আমি তো প্রথম আসলাম..😞😞”
ইশ মন খারাপ করে আবার”আমও তো রুমেই এখন যাও ফ্রেস হয়ে আসো”
“না না,, তুমি ওয়াস রুমের পাশে দাড়াও..”
কেন???
“বললাম না ভয় লাগে😞😞”
হায় কপাল,, আমি আসচ্ছি আর ওনার ঘুম পাইছে বডি গার্ড বানিয়ে ঘুমাবে ওনি,,,আর এখন ওয়াসরুমের বাইরে পাহারা দিই আর কি,,,

“এভাবে বলবা না একটু কষ্ট কর না”
কষ্ট তো একটু না রে পাগলি অনেকটা হইতাছে, তরে বুঝাই কেমনে ভাবছিলাম গায়ে হাতই দিব না বাট এখন তো সহ্য হচ্ছে না।।এত সুন্দর কেন মেয়েরা,,আর আমার ঘরে এই পরী।। ইশ কই রাখবো ওরে আমি(মনে মনে)
“ঔ কি ভাব দাড়াও এখানে”
হুম, রানী,, যান
ফ্রেস হয়ে এসেই কোনো সোজা খাটে শুয়ে পড়লো”লাইট ওফ করবা না কিন্তু”
“আমার তো লাইট থাকলে ঘুম আসবে না”
“ওহ,,তবে এই টা ওফ করে,, টেবিল লাইটা ওন রাখবা ওইটা তো তোমার চোখে লাগবে না”
ওকে মেম..
“হুম, গুড নাইট”

কি হলো এটা প্রেমে বিয়ে নাকি বাসরের সুতাও ঠিক থাকে না আর আমার বাসর,,, পাগলি রে☺☺(মনে মনে) হুম নৌশিন এমনি ছোট মানুষী☺☺☺তবে সাদাদের জন্য পাগল।
সাদাদের ঘুম আসছে না”একটা ডায়রী হাতে নিল, যে দিন থেকে নৌশিন কে ভালো লেগেছে ওর সবটা এই ডায়রী তে আছে,, নৌ শিন তো ঘুম তো ডায়রী টার সাথেই গল্প করোক।
ডায়রী খোলতে যাবে তো ঘুম ঘুম গলাতে নৌশিন বলল”জান,,আমি কিন্তু অনেক নাচা নাচি করি ঘুমে তুমি কিন্তু রাগ করবা না”
☺☺নাচ বাই শুধু ফুটবল খেল,,,রাগ করলেই বা
কথা শেষ করার পর নৌশিনের দিকে ফিরলে দেখে বিশাল ঘুমে সে।তো ডায়রী টা নিয়ে টেবিলে বসবে,, একটা আওয়াজ আসলো,,নৌশিনের গহনার।
“ইশ পাগলি গহনাও খুলে নাই,, ঘুমাতে পারছে না ঠিক মতো” কোনো কিছু না ভেবেই গহনা খুলতে গেল।
….এত্ত কিছু রে ভাই…বলতে বলতে চুরিগুলো খুলে..তারপর নৌশিন ই ঘুম নিয়ে বলে “কানের দুল”
সেটাও খুলে

আবার হাতটা নৌশিন ওর গলার ওপর নিয়ে দেয়”হার গুলো খুলো”
এবার সাদাদের সহ্য হচ্ছে না,,, এত ফর্সা গলা আর হাতটা গলাতে হার খুলারর জন্য ওর ঘারেও হাত দিতে হবে”কি হতো গহনা গুলো নিজে খুললো” কিন্তু ওর কথা শুনবে যে সে তো ঘুম রাজ্যে। হারটা খুলতে যাবে,,২ টা হার খুলা শেষ একটা কিভাবে জানি আটকে গেছে আর সেটা খুলবে তার আগেই ওনার বউ অন্য দিকে ফিরে গেছে।মাথার ওড়নাটা সরালো ঘাড়টা পুরো দেখা যাচ্ছে..৪ বছরে নৌশিনের শরীরটাএতো এভাবে দেখে নি।।বিয়ে ঠিক হয়ে গেলে…কাহিনী করছে.. বাট আাজ তো বউ☺☺☺এমন ভাবে পাগল হচ্ছে কেন নিজেই জানে না,,,,,২ মিনট বসে থেকে সব ভাবনা ভুলে হার টা খুলল। ওর সরতে মন চায়ছে না কি নিষ্পাপ লাগছো নৌশিনকে।

কিছুক্ষণ পর “নাহ কিচ্ছু করা হবে না,, ☺☺☺,,”
তারপর নৌশিনকে ঠিক করে শুইয়ে দিয়ে কপালে একটা চুমু একে দিল☺☺ লাইট টা ওফ করে টেবিল লাইট টা ওন করল,,,,নৌশিন তো ঘুম রাজ্যে……..সাদাদ মনে মনে ভাবলো,”আমার না হয় পুরানো ডায়রীর পাতা গুলোর সাথে রাতটা জাগা যাক”☺☺
!!!!

প্রেমঘোর পর্ব ২