প্রেমতৃষা পর্ব ৩২
ইশরাত জাহান জেরিন
ভোরে ঘুম ভাঙতেই তৃষা নিজেকে আবিষ্কার করল প্রেমের বুকে। সে নড়াচড়া না করে তাকিয়ে রইল প্রেমের ঘুমন্ত মুখশ্রীর দিকে। এই যে শ্যামবর্ণের আকর্ষণীয় একটা পুরুষ, গলার কণ্ঠমণিটা দেখো তার, দেখলেই আবেশে শরীর শিরশির করে ওঠে। মাথার এলোমেলো ঝাড়কা চুলগুলো কপালের সামনে পড়ে আছে। ওই যে বাদামী রঙা চোখের পাপড়িগুলো আছে না, ওইগুলো কত ঘন। মেয়ে হয়েও তৃষার ওমন ঘন পাপড়ি নেই। লোকটা সিগারেট খায়, তবুও ঠোঁটে কালশিটে দাগ নেই। কিছু মাখে নাকি? শরীর কত চকচকা! মাঝে মাঝে তৃষার মনে হয়, এটা কোনো মানুষ না, বরং আস্ত একটা চকলেট আইসক্রিম। খোদা এই পুরুষ জাতিকে এত আকর্ষণ দিয়ে তৈরি করেছে, অথচ দুনিয়া নারীর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়। আচ্ছা, কবি নারীর সৌন্দর্য নিয়ে লেখার আগে পুরুষজাতিকে দেখেনি?
হয়তো অন্ধ কবি দেখেনি। তৃষা আলতো করে প্রেমের চুলে একবার হাত ছুঁয়ে জলদি করে সরিয়ে নেয়। ঘুম ভাঙার পর যদি দেখে তৃষা এইসব করছে, তাহলে লজ্জায় পড়তে হবে। তবে এই প্রেম নেওয়াজের জানা উচিত—জানা উচিত ঠিক ততটা, যতটা না জানলেই নয়। জানা উচিত, তাকে পাওয়ার লড়াইয়ে তৃষা কেমন করে আরেকটা নিষ্পাপ ফুলের হৃদয় বিক্ষিপ্ত করেছে। তৃষা নিঃশ্বাস ছাড়ল। কোনোমতে স্বামীর বুক ছেড়ে বের হয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ালো। রাতে বোধহয় বৃষ্টি হয়েছে। বান্দরবানের এই পাহাড়ের চূড়ার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা বাড়িটি থেকে প্রকৃতি কি সুন্দর লাগছে! তৃষার ক্ষুধা পেয়েছে। কি খাবে বুঝতে পারছে না। তার থেকেও বড় কথা—বিয়ে তো তার হলো, কিন্তু সে যে রান্না করতে পারে না! এখন নিজে কি রান্না করে খাবে আর ওই হারে বজ্জাত মানুষটিকে কি খাওয়াবে? আচ্ছা, সমস্যা কোথায়? বিয়ে কি তৃষা তাকে করেছে নাকি? করেছে তো সে নিজেই। এখন ঠেলা বুঝো।
তৃষা বারান্দা থেকে উল্টো পাশে ফিরতেই দেখল প্রেম ঠিক তার পেছন বরাবর দাঁড়িয়ে আছে। তৃষা আচমকা তার এমন আগমন আন্দাজ করতে পারেনি। সে কিছু বলার আগেই প্রেম তাকে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
‘ক্ষুধা পেয়েছে না? ফ্রেশ হয়ে আসো। বাই দ্য ওয়ে, পালানোর চেষ্টা ভুলেও মাথায় আনবে না। এখন তুমি প্রেম নেওয়াজের। জানোই তো, প্রেম নিজের জিনিস কখনোই চায় না অন্যের হোক।’ বলেই প্রেম ওয়াশরুমের দিকে পথ ধরলে তৃষার চোখ যায় প্রেমের ঘাড়ের দিকে। ঠিক ঘাড়ে, যেখানে তৃষার বাটারফ্লাই ট্যাটু—সেখানেই প্রেমেরও একই রকম ট্যাটু। আগে তো খেয়াল করেনি! তৃষা নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রেম ওয়াশরুমে ঢুকতেই আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। উল্টো পাশ ফিরে ঘাড়ের কাছের চুল সরিয়ে ট্যাটু দেখল। ওমা! হুবহু একই। তৃষার এখন সত্যি লজ্জা লজ্জা লাগছে, যদিও ওইসব তার ভেতরে আছে কিনা সন্দেহ।
প্রেম ওয়াশরুম থেকে বের হলো একেবারে সাওয়ার নিয়ে। সকালে ঘুম থেকে উঠে আর রাতে ঘুমানোর আগে গোসল করা প্রেমের জন্য ফরজ। দুপুরে সে কখনো গোসল করে না। তৃষা ওয়াশরুম থেকে জামা পড়ে বাইরে আসতে না আসতেই সব ভিজে একাকার। শেষে তাকে এই অবস্থায় দেখে প্রেম ক্লোজেট থেকে একটা স্কার্ট আর শার্ট বের করে দিল। কাল রুমের সঙ্গে জয়েন করা কাপড় রাখার আলাদা এরিয়ায় গিয়েছিল তৃষা। পুরো একপাশ জুড়ে প্রেমের জামাকাপড়, অন্যপাশ জুড়ে তৃষার। কিন্তু তার জনয় রাখা এতসব জামা আবার পারফেক্ট সাইজের কোথায় পেল প্রেম? মাথায় অনেক প্রশ্ন। তবে এখন উত্তর জানতে ইচ্ছে করছে না। সময় হলে পইপই করে সব কিছুর হিসাব নেওয়া হবে।
তৃষা জামা বদলে তৈরি হয়ে প্রেমের পেছন পেছন টইটই করে কথা না বলে নিচে গেল। সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছিল তখন বুঝতে পারলো কি সুন্দর এবং বড় এই বাড়িটি। প্রেম নেওয়াজের মন মতো সাজানো একেবারে। প্রেমের সঙ্গে তৃষা রান্নাঘরে যেতেই প্রেম তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘কি খাবে বলো?’
‘যদি বলি আপনাকে?’
‘আমি প্রস্তুত।’
‘আপনার মাথা খাব।’
‘ওইটা খাওয়ার বাদ কই রেখেছো?’
প্রেম ফ্রিজ থেকে চিকেন সসেজ বের করল। তারপর তৃষার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘তুমি না পরোটা পছন্দ করো?’
‘হুম আপনি বানাতে পারেন?’
প্রেম জবাব না দিয়ে ফ্রিজ থেকে রেডিমেড পরোটা বের করে প্যাকেট খুলে ভাজা শুরু করল। তৃষা হা করে তার রান্না দেখছে। এমা এই প্রেম নেওয়াজ কি মাস্টার সেফ ছিল নাকি? প্রেম কিছুক্ষণের মধ্যেই সসেজ, ডিম অমলেট, কমলার শরবত আর ফল কেটে তৃষার সামনে রাখতেই সে প্রশ্ন না করে খাওয়ায় মন দিলো। খাওয়ার সময় তৃষা কথা বলে না। আগে খাওয়া তারপর দুনিয়া দেখা যাবে। সে মনোযোগ দিয়ে খাচ্ছে আর প্রেম তার দিকে তাকিয়ে নিজের তৃপ্তি মেটাচ্ছে। একটা মানুষকে খেতে দেখলেও এত শান্তি লাগে? প্রেম মুখে একটা স্ট্রোবেরি দিয়ে হঠাৎ বলল, ‘আজকে বাইরে যাব।’
‘তারপর…’
‘তারপর আর কি? তুমিও যাচ্ছো আমার সঙ্গে।’
‘আপনি ভুলে যাচ্ছেন আমি এখনো রেগে আছি। শত হলেও আপনি আমার কিডন্যাপার।’
‘কিডন্যাপার বলো না,বলো তোমার শরীর স্পর্শ করার একমাত্র উত্তরসূরী।’
‘আমার ইয়ে।’
‘কই দেখি কোন ইয়ে।’
তৃষা মুখ ভেংচি কেটে খাওয়ায় মন দিলো। এই লোকের সঙ্গে এখন তর্ক করলে তর্কের ইজ্জত খাওয়া হবে। খাওয়া শেষে তৃষা এদিক সেদিক ঘুরে ফিরে দেখে। হারে বজ্জাত প্রেম ভাইটা ল্যাপটপ নিয়ে দোতলায় চলে যায়। তৃষা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ এদিক-সেদিক ঘুরাঘুরি করে। দরজা খোলাই। যাবে নাকি বাইরে? পাহাড় দেখলেও তো শান্তি লাগে। তৃষা একপা বাইরে দিতেই লুফি ঘেউ ঘেউ করে ওঠে। তৃষার রাগ হয়। একটা ছোটলোক কুকুরের এত সাহস কি করে হয় তৃষাকে দেখে ঘেউ ঘেউ করার? কি ছোটলোক ভাবা যায়। তৃষা পায়ের জুতাটা খুলে লুফির দিকে ধরতেই প্রেম পেছন থেকে এসে জুতোটা কেড়ে নিয়ে বলল, ‘সাহস কি করে হয় আমার বাচ্চার ওপর তোমার জুতা তোলার?’
‘তো কুত্তার বাবা আপনার কুত্তা আমায় এমন ইভটিজিং করছে কেন?’
‘কুত্তার আম্মু, কুত্তার মতো ক্ষুধা পেয়েছে। যাও গিয়ে একটু খাইয়ে আসো।’
‘প্রেম ভাই।’
‘শালীর ঘরের বউ, রুমে নিয়ে কাজ সারলে পেট নিয়ে উঠতে বসতে পারবা না। তুমি এদিকে আমায় ডাকো ভাই? আমার ধৈর্য্যের আর পরীক্ষা নিও না সোনা।’
‘আমিও আপনাকে একেবারে বাবা যদি না বানাই? আমার নামও তৃষা না। রাতে বাচ্চার কান্নার কারণে ঘুমাতে পারবেন না তাহলে শখ মিটবে।’
‘আই নিড সোনা। জলদি বাবা হওয়ার সুযোগ করে দাও।’
তৃষার মুখে আর কিছু বলার ভাষা নেই। সে প্রেমকে ধাক্কা দিয়ে দোতালায় সিঁড়ি বেয়ে ড্যাংড্যাং করে ওঠে যায়। প্রেম চুলে হাত বুলিয়ে তৃষার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে। তারপর লুফির দিকে তাকালো। চেয়ে বলল,’কিরে লুফি? ঘরটা কেমন ফাঁকা ফাঁকা তাই না? ডজন খানেক ছোট্ট প্রেমতৃষা আসা না অবধি কত দায়িত্ব। কত পরিশ্রম করতে হবে আমাকে ভাবা যায়?’ বলেই সে লুফির মাথায় হাত বুলিয়ে গুনগুন করতে করতে ওঠে গেল। বউটাকে একা রেখে কোথাও এখন আর থাকতে মনটা যে চায় না।
তখন সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হবে হবে ভাব। তৃষা তৈরি হয়ে বসে আছে। প্রেম তাকে তৈরি হতে বলেছে। প্রেম নিচে নামার আগে তৃষার জামা-কাপড় খাটের ওপর রেখে গেছে। পোশাক দেখে তৃষা একটু নয় একটু বেশিই অবাক হয়। পার্কিং প্লেসে এসে তৃষার সেই বিস্ময় যেন আরো দ্বিগুণ বেড়ে যায়। দু’টো একই রঙের বাইক সেখানে রাখা। কালো রঙের বাইকটা তো আগেও দেখেছে। ওটা প্রেম নেওয়াজের বাইক। কিন্তু তারই পাশে একই রকম একেবারে নতুন মডেলের কালো রঙের আরেকটি বাইক কেন? প্রেম তৃষাকে একবার ওপর থেকে নিচ অবধি ভালো করে পরখ করল। কালো রঙের একটা লেদারের জ্যাকেট পরেছে সাদা টিশার্টের ওপর। সঙ্গে কালো রঙের একটা জিন্স। প্রেম নিজের দিকেও একবার তাকালো। তার গায়েও একই রকম পোশাক। মনে হচ্ছে প্রেম নিজের ফিমেল ভার্সনকে তার সামনে দেখতে পাচ্ছে। তৃষা প্রেমকে জিজ্ঞেস করল, ‘আমাকে এই পোশাক দিলেন কেন পড়ার জন্য?’
‘বাইকার কি তাহলে শাড়ি, লেহেঙ্গা পড়ে বাইক রাইড করবে নাকি?’
তৃষা অবাক হলো। কি বলবে বুঝতে পারছে না। তবে নিচু গলায় বলল, ‘কি বলতে চাইছেন?’
‘নাটক করো না সোনা। প্রেম কাঁচা খেলোয়াড় না। চট্টগ্রামে যেই অবৈধ বাইক রাইডার হয় তাতে হয় বার জয়ী হয়েছো তাও কিন্তু জানি।’
তৃষা এবার চুপসে গেল। তা দেখে প্রেম হেসে বলল, ‘ভয়ের কিছু নেই। আমার বউয়ের এতটুকু যোগ্যতা তো থাকার দরকারই ছিল। বউ বাইক চালাতে না পারলেও শিখিয়েই দিতাম। এখন যেহেতু পারেই তো ওই শিখানোর সময় টুকু অপচয় হওয়া থেকে বেঁচে গেল। ও-ই সময় বউকে নিয়ে বাচ্চা নেওয়ার পরিকল্পনা করা যাবে। যাই হোক কাম। এটা তোমার ড্রিম বাইক ছিল না? এটা এখন থেকে তোমার। লেটস ইনজয় সোনা।’
তৃষা কথা না বলে স্বপ্নের বাইকটিকে ছুঁয়ে দেখল। কি যে শান্তি লাগছে। বিয়ের আসর থেকে পালানোর একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল কি জগন্নাথে পড়া? উঁহু কখনোই না। তৃষার বাবা-মা ইচ্ছে করেই মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার একমাত্র কারণ ছিল বাইক রাইড। একে তো মেয়ে মানুষ তার ওপর ওইসব রাইডিং করা। তাও রাত বিরেতে অবৈধ রাইডিং। তৃষার বাইকটাও তার বাবা বিক্রি করে ফেলেন কেবল এই কারণেই। মেয়ের পড়ালেখা নিয়ে তার সমস্যা ছিল, ছিল ওই বাইক রাইডিং নিয়ে। ওইসবে যারা জড়িত ছিল সবাই নেশা করে, ওপেনলি গুলি ধরে, যারা জুনিয়র তাদেরকে ব্যবহার করে সিনিয়র রাইডাররা অবৈধ কাজ গুলো করিয়ে নেয়। তৃষা তখন সবে ওইসবে যোগদান করেছে। শুরুতেই পর পর কয়েক বার ম্যাচ বাজিতে সে জিতে সবার মাঝে অনেক জনপ্রিয় হয়ে যায়। তবে ওপরে উঠলে মানুষকে নিচে নামানোর মতো লোকের অভাব নেই।
তৃষার হাতে যেদিন প্রথম অস্ত্র ধরিয়ে দেওয়া হয় সেদিনই তরিকুল কাজীর কাছে বিষয়টি হাতেনাতে ধরা খায়। তারপরই বিয়ে পাকা করেন যুবরাজের সঙ্গে। এমনিতে অনেক দিন ধরেই যুবরাজ তৃষার জন্য প্রস্তাব পাঠাচ্ছিল। তরিকুল রাজি হয় নি। শেষে মেয়ের কান্ড দেখে আর চুপ থাকতে পারেননি। পুরান ঢাকায় সবচেয়ে বড় অবৈধ রেইস হয়। তৃষা অনেক দিন ধরেই যেতে চেয়েছিল। শেষে তার ওই রেইসের জন্যই বিয়ের আসর ছেড়ে এখানে পালিয়ে আসা। তবে এইসব বিষয় তৃষা কাউকে বলেনি। যেহেতু তৈমুরকে ব্যবহার করে তৃষাকে বিয়ে করেছে প্রেম তার মানে বাবা-মায়ের সঙ্গে কোনো না কোনো কথা হয়েছে। সব কিছু মনে হয় তারাই বলেছে। তৃষা দ্বিধা নিয়ে প্রেমের দিকে তাকাল। তখন প্রেম সরাসরি বলল, “চলো, হয়ে যাক সোনা একটা বাইক রেইস?”
তৃষা চোখ কুঁচকে, ঠোঁট বাঁকিয়ে বলল, “চ্যালেঞ্জ করছেন? ভয় নেই?”
প্রেমের ভয় হবে? প্রেম তৃষার কথা শুনে হো হো করে হেসে উঠল। কারণ চট্টগ্রামের বাইক রেইস তো ছোটখাটো বিষয়। প্রেম বিদেশের মাটিতেও ওই রেইস করে জিতে এসেছে।
প্রেম গম্ভীর ভঙ্গিতে বলল, “চ্যালেঞ্জ মনে হয়েছে? তাহলে তাই ধরে নাও। তবে হারলে কি হবে?”
তৃষা দ্বিধাহীন কণ্ঠে জবাব দিলো, “আপনি যা বলবেন তাই।”
প্রেম চোখ টিপে বলল, “ওকে ফাইন। আমার বাচ্চার মা হওয়ার জন্য প্রস্তুত হও, সোনা।”
তৃষা রেগে গিয়ে, হাত ঝাঁকিয়ে বলল, “জেগে জেগে স্বপ্ন দেখা বন্ধ করুন।”
প্রেমতৃষা পর্ব ৩১
প্রেম আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে জবাব দিলো, “হার তোমার নিশ্চিত। মনমানসিকতা আজকের জন্য তৈরি রাখো। আর হ্যাঁ, ওই কালো রঙের নাইটিটা পড়বে কিন্তু। একেবারে কড়া লাগবে বলে দিচ্ছি।”
তৃষা হেলমেটটা পড়তেই প্রেম তার দিকে চাবি নিক্ষেপ করল। সে চাবিটা ধরে বাইকে উঠে বসে স্টার্ট করে প্রেমকে উদ্দেশ্য করে বলল, “হারার জন্য তৈরি হয়ে যান, প্রেম নেওয়াজ।”