প্রেমসুধা সিজন ২ পর্ব ১
সাইয়্যারা খান
“তালুকদারের ছোট ছেলে নিজের ডাইয়িং এ দুটো যুবতী মেয়ে বন্দী করেছে।”
অন্ধকার জড়সড়ভাবে বসে আছে দুটো মেয়ে। পরণের কাপড়ের উপর জড়িয়ে আছে দুটো ওরনা। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে দু’জন। বাইরে এতক্ষণ নিশ্চিত রাত তাই তো এই বিশাল বড় জায়গাটার মধ্যে থাকা ছোট্ট ঐ ফাঁকা দিয়ে কোন আলোক ছটা আসছে না। এতেই যেন বুঝা যাচ্ছে রাত নেমেছে। মেয়ে দুটোর চোখ ফুলে উঠলো। জড়সড় ভাবে বসে ভাঙা গলায় ডাকলো,
“কেউ আছেন? আমাদের ছেড়ে দিন না। আর কখনো এই ভুল হবে না।”
আর্তনাদ শোনার মানুষ নেই এখানে অথচ এই বিশাল ডাইয়িং এর কারখানার উঁচু লোহার গেইটটা ধরে দাঁড়িয়ে আছে এক মধ্যবয়স্ক পুরুষ। সেই দুপুর থেকে নানান মানুষের হাত-পা ধরে বারংবার অনুরোধ করছেন তার মেয়েদের যাতে এখান থেকে ছাড়াতে তাকে সাহায্য করা হয় কিন্তু ভয়েও কেউ তার পুরোটা কথা শুনে নি বরং এক কান দুই কান করে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে গেলো তালুকদারের ছোট ছেলে দুটো মেয়ে বন্দী করেছে নিজের ডাইয়িং এ। সেই দুপুরে তাদের আটক করা হয়েছে এখন এশার ওয়াক্ত ছাড়ালো। কেউ আসে নি। কেউ না। জামিল সাহেব ডায়াবেটিস এর রুগী। হাত-পা এখন কাঁপছে। লোহার খাড়া খাড়া শিক ধরে আস্তে করে বসে পরলেন এই রাস্তায়। বাজারের একদম মাঝখানে ডাইয়িং এর কারখানাটা। সোজা তাকালেই তালুকদার বাড়ী। জামিল সাহেব ঢোক গিললেন। তালুকদার বাড়ীতে সন্ধ্যার বাতি গুলো এমন ভাবে ঝলমল করছে যেন বিয়ে বাড়ী। আচ্ছা, তার মেয়ে দুটোকে কি ছাড়া হবে না? খারাপ কিছু কি করেছে তারা ভেতরে?
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এই প্রশ্ন গুলো যতবার মাথায় আসছে ততবারই শরীরটা ভেঙে আসছে তার। এই পর্যন্ত যে যেখানে যেতে বলেছে তিনি সেখানেই গিয়েছিলেন মেয়েদের খোঁজে অবশেষে জানতে পারলেন নিজের ডাইয়িং এ আটকে রেখেছে তুহিন তালুকদার, যাদের ধরা হয়েছে আজ দুপুরে মাঝ রাস্তায়।
চোখটা জামিলের ঝাপ্সা হয়ে আসতেই হৈচৈ শোনা গেলো। টনি নামক লম্বা দেখতে ছেলেটা ঝরঝরে গলায় বলে উঠলো,
“চাচা, মেঝ ভাই আসছে বাসায়। অফিসে চলেন। ওখানেই বিচার হবে।”
মেঝ ভাই? মানে তৌসিফ তালুকদার। জামিলের শরীরটা ঝাড়া দিয়ে উঠলো। তুহিনের নামে এখন পর্যন্ত ভালো কিছু তিনি শুনেন নি। যতটা সুশ্রী তার চেহারা ঠিক ততটাই কুৎসিত তার আচরণ কিন্তু তৌসিফ কেমন হবে তিনি ঠাওর করতে পারছেন না। এলাকার বিচার গুলোয় তৌসিফ আর তার বড় ভাই তুরাগ যথেষ্ট ভূমিকা রাখে কিন্তু আজ তারা কতটা মানবে বুঝা মুশকিল।
জামিল উঠে দাঁড়ালেন৷ টলমলে পায়ে টনির পিছু হাটা দিলেন৷ এই তো দু’মিনিটের রাস্তা। এই বাজারে অর্ধেকের বেশি জামি তালুকদারদের। ডাইয়িং পেরিয়ে সোজা তালুকদার বাড়ীর গেটে আসতেই দেখা গেলো তা বন্ধ। পকেট গেইটটা খোলা। জনসাধারণ চাইলেই ঢুকতে পারে না এখানে। দুই তিনজন পাহারাদার সহ ড্রাইভার সব নিচে থাকে। তার একপাশে গ্যারেজ এবং একটা অফিস। মূলত বাড়ীতে কোন বিচার কার্য সারতে হলেই তিন ভাই এই অফিস কক্ষ ব্যবহার করে। জামিল এই প্রথম এলেন তালুকদার বাড়ী। নিচে চল্লিশ পঞ্চাশজন পুরুষ উপস্থিত। হবেই তো। বিচার কি আর একা একা হয় নাকি? হঠাৎ পেছন থেকে শোনা গেলো,
“ঐ সর সর ভাই আসছে… ভাই আসছে।”
সকলে জায়গা দিলো। জামিল এখানে এসেছে মিনিট বিশ হলো। রাজকীয় চেয়ারটায় হেঁটে এসে বসলো তৌসিফ তালুকদার। গম্ভীর্যপূর্ণ মুখটায় তার চোয়াল ভর্তি চাপ দাঁড়ি। সাইজ মতো কাটা মোচ। যত্ন চুলগুলো আঁচড়েছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ফর্সা মুখটায় সুন্দর দুটি চোখ। এ যেন এক রাজপুত্র। হ্যাঁ, তৌসিফ এই যুগের রাজারই পুত্র। সাত পুরুষ যাদের চেয়ারম্যান তারা তো রাজপুত্রই বটে।
শোনা গেলো গম্ভীর কণ্ঠস্বর তৌসিফের,
“বড় ভাই কই?”
রনি নিচু স্বরে কিছু জানালো। তৌসিফ ইশারায় বললো শুরু করতে। এসব কথা তার শুরু করতে মন চায় না। বিরক্ত লাগে একপ্রকার। টনি বললো,
“উনি জামিল, ভাই। মাইয়া দুইটার বাপ।”
তৌসিফ যেন বিরক্ত হলো। বললো,
“মেয়ে দুটো কোথায়?”
“তুহিন ভাইয়ের ডাইয়িং এ আছে।”
“কখন থেকে?”
“দুপুর থেকে।”
“অপরাধ?”
এই দফায় টনি ঢোক গিললো। রনি বললো,
“মাইয়া দুইটা রাস্তায় নষ্টা ফষ্টি করতাসিলো ভাই। জামা কাপড়ের হাল নেই। তুহিন ভাই তখন গাড়ী থেকে দেখেছে। প্রথমে আমাকে দিয়ে মেয়ে দুটোকে বলিয়েছিলো যাতে বাসায় যায় আর আমাদের এলাকায় এসব পরে না বের হয় কিন্তু মেয়ে দুটো বেয়াদবী করেছে। পরে দুপুরেই এখানে আটকে রাখতে বলেছিলো ভাই।”
তৌসিফ কিন্তু ঘটনা জানে অথচ সে এমন ভাবে মনোযোগ দিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে শুনলো যেন এইমাত্র শুনছে। মূলত উপস্থিত পঞ্চাশ, ষাটজন মানুষ সহ জামিলকে শোনালো তার মেয়ে দুটো কি করেছে। জামিল মাথা নিচু করে আছেন। তৌসিফ সাবলীলভাবে জিজ্ঞেস করে,
“কি করো তুমি?”
জামিল ছোট্ট করে উত্তর দেয়,
“অস্ট্রেলিয়া থাকি। প্রফেসর।”
” ভেরী গুড! তো জামিল নাকি?”
“জি।”
” এটা তো বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার সেই সড়ক না বরং বাংলাদেশের কেরানীগঞ্জের মতো এক জায়গার এক এলাকা এটা। এখানে মেয়ে মানুষ মাথায়, মুখে কাপড় ছাড়া বের হয় না সহজে সেখানে তোমার মেয়ে দুটো যা করেছে তা কি ঠিক হয়েছে?”
“না স্যার, ঠিক হয় নি।”
” আহহা স্যার ডেকো না। বয়সে তুমি আমার বড়। এটা আমার দোষ যে আমি কাউকে আপনি ডাকতে পারি না ততটা।”
জামিল সহ সকলে চুপ। তৌসিফ জিজ্ঞেস করে,
“শাস্তিটা কি ওদের প্রাপ্ত?”
জামিল কথা বলে না। তৌসিফ বাকি সকলের দিকে তাকাতেই এক বাক্যে সকলে বললো,
“যোগ্য শাস্তি একদম।”
জামিল মাথা নিচু করেই আছে। তৌসিফ শুধু বললো,
“তুহিনের বিচার তুহিন নিজে করে জামিল। ও নেই আপাতত তাই আমি করে দিলাম। মেয়ে ছাড়া হচ্ছে। সোজা বাড়ী যাও। আর হ্যাঁ, এখানে আমার জায়গায় সম্রাট ভাই থাকলে বিচারটা কি হতো জানোই তো।”
“সম্রাট!” একটা নাম যা গায়ের লোম পর্যন্ত শিরশির করিয়ে দিলো। নামটা শোনা মাত্রই কেউ কেউ হয়তো প্রচুর ভাবুক হলো। জামিলের শরীর নামটা শুনে দুটো ঝাঁকি মা’রলো।
পৃষ্ঠে কোন কথা না শুনে তৌসিফ নিজ বক্তব্য রেখে উঠে গেলো। ডান পাশের সিঁড়ি বেয়ে যাচ্ছে হয়তো। তৃতীয় তলায়ই তার ফ্ল্যাট। রুমে ঢুকে টিশার্টটা খুলে ফোন হাতে তুলে তৌসিফ। ওপাশ থেকে রিসিভ হতেই চরম এক গালি দিয়ে জিজ্ঞেস করে,
“কই তুই?”
“মেঝ ভাই…”
“বাসায় আয়।”
“সকালে দেখা করছি আমি মেঝ ভাই।”
“কোন শালীর সাথে আছিস তুই তুহিন? গলায় পারা দিয়ে জিব বের করে ফেলব আমি। কোন সাহসে তুই মেয়ে আটকাস? আরেকজনের মেয়ের জিম্মাদার তুই?”
তুহিন চুপ করে আছে। তৌসিফ রাগে চিরবির করে বলে,
“সকালে তোকে দেখছি আমি।”
ফোনটা সাইডে রেখে খালি গায়ে বারান্দায় গেলো তৌসিফ। সামনেই পুকুর। নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী পুকুর। তার মা,চাচি গোসল করতো প্রায়সময় এখানে। এখন অবশ্য শুধু মাছ চাষ করা হয়। দূর আকাশে তাকিয়ে রইলো তৌসিফ। ডাইয়িং এর ওদিকে অনেক মানুষ যেন দুটো মেয়ে না বরং চরম বিনোদন দেখতে এসেছে। রাগে নিচে থাকা দারোয়ানকে চিৎকার করে ডেকে বললো,
” রাস্তা খালি করাও। এখনই। ফাস্ট!”
দারোয়ান দুজনেই দৌড়ে গেলেন৷ আটকে রেখে তুহিন কোন ক্ষতি না করলেও মেয়ে দুটো নিয়ে এই এলাকায় টিকা বুঝি জামিলের জন্য মুশকিলই বটে। তৌসিফ আকাশ পানে তাকিয়ে হঠাৎ গান গাইলো,
“বেকারার কারকে হামে ইউ না যায়িয়ে
আপকো হামারি কাসাম লট আইয়ে”
গম্ভীর পুরুষ কণ্ঠে এই দুটো লাইন বুঝি নারী মন শীতল করে না? প্রচন্ড আঘাতে বুঝি নরম হৃদয়টা ভেঙে পরে না? আচ্ছা, সেই নারী কি ফিরেও তাকায় না? তৌসিফ একা একাই হাসলো। উল্টো হয়ে বিছানায় ধপ করে শুয়ে বালিশে মুখ গুজে বিরবির করে বলে উঠলো,
“আমার এই প্রতিটি রাত তোমায় উৎসর্গ করলাম৷ বিষাক্ত রাতগুলো নাহয় তোমার হাসিমাখা মুখ দেখেই ভুলে যাব।”
রাতের খাবারে বিরাট গন্ডোগোল বাঁধলো। বাড়ীর বড় মেয়ে পৌষরাত মাছ খেতে না পেরে গলায় কাটা আটকে এখন ব্যাঙের মতো লাফাচ্ছে। এদিকে ওর পিছনে সাদা ভাত নিয়ে ঘুরছে চাচাতো ভাই হেমন্ত। তার পিছনে দুই জোরা জমজ উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। এক জোরা চৈত্র আর জৈষ্ঠ্য নামক দু’জন ষোল বছরের তরুণ অন্য জোড়া ছয় বছরের ইনি, মিনি। মাঝে বেখাপ্পা পড়েছে পিহা নামের মেয়েটি। না বয়স, না জুটি কোনটাই বেচারীর নেই। চৌদ্দ বছরের পিহা কাঁদোকাঁদো মুখে বোনকে দেখছে। ঐ দিকে বড় চাচি সমান তালে চেঁচাচ্ছেন পৌষ’র উপর। হেমন্ত জোর করে মুখে বিরট বড় এক ভাতের লোমকা ঢুকিয়ে দিতেই পৌষ’র চোখে পানি চলে এলো। গলা দিয়ে ভাত নামছে না। না নামছে কাটা। এদিকে হঠাৎ করে জৈষ্ঠ্য গিয়ে বিড়াল ধরে নিয়ে এলো। কালো কুচকুচে দেখতে মোটাসোটা এক বিড়াল। বড় চাচি তখন থেকেই চিৎকার করে বলছিলেন,
“বিড়ালের পা ধরা তাহলেই কাটা নামবে।”
ইনি, মিনি বিড়াল দেখে দুটো লাফ দিলো। চৈত্র জৈষ্ঠ্য’র দিকে কটমট দৃষ্টি ফেলে বললো,
” কিরে তুই বিড়াল আনলি কেন?”
“আপার কাটা যদি নামে।”
“বদল কোথাকার। বিড়ালের পা ধরলে নামবে?”
পৌষ’র অবস্থা এদিকে খারাপ। প্রচন্ড অস্থির প্রকৃতির এক মেয়ে সে। রাতে খায় না সে অথচ আজ জোর করে খাওয়াতে গিয়েই এই দশা হলো। হেমন্ত সহ চৈত্র ওকে ধরলো। না পেরে পৌষ বিড়ালের পা ধরেই কেঁদে ফেললো। কালো বিড়ালটা নিজেই যেন মুশিবতে পরেছে। আতঙ্কে নড়চড় করছে। মুখ ভর্তি ভাত, গলায় কাটা নিয়ে পৌষ ধরেছে কালো বিড়ালের পা। কাটা তো নামলোই না উল্টো ইনি, মিনির চিৎকারে ভয়ে বিড়ালটা দিলো এক খামচি পৌষ’র হাতে৷ মুখের ভাত সব ছিটকে পড়লো সবার মাঝে ফুলের মতো। হতভম্ব সকলে। বিড়ালটা ফাঁক পেয়ে জান গলার ঘন্টায় লটকে পালালো।
ইনি, মিনি তোতলানো কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে,
“আপা কাতা নেমেতে?”
দুটো কথা বলে একসাথে। একসাথে ছাড়া কোন কিছুই এরা করতে পারে না। হিসুটা সহ এদের একসাথে ধরে। পৌষ ভাবছে ভিন্ন কিছু। কেমন হয় যদি এদের জামাই গুলোও এমন জমজ হয়? হঠাৎ পিহা চিৎকার করে বলে,
“হেমু ভাই, কলা আনি? কলা তো পিচ্ছিল যদি নামে।”
” ওই না না…”
বলতে বলতে খ্যাঁক খ্যাঁক করে উঠে পৌষ। বিরক্ত হেমন্তের ধৈর্য কুলালো না। ইশারায় শুধু চৈত্র আর পিহাকে বললো পৌষ’র পা দুটো ধরতে। ধরা মাত্রই বাকি খামচি খাওয়া হাতটা ধরলো ইনি, মিনি দু’জন মিলে। পৌষ এই দফায় গলা ফাটিয়ে এক চিৎকার দিলো,
“ওরে আল্লাহ রে!!! আমাকে মেরে ফেললো রে… এই এতিমরে কেউ বাঁচা রে। ও মোর আল্লাহ গো!”
যথাসম্ভব চিৎকার আর দেয়া হলো না। গলার মাঝে দুই আঙুল ঢুকিয়ে টেনে কাটা বের করে আনলো হেমন্ত। বিশাল বড় এক কাটা। ভাত দিয়ে নামার মতো ছিলো না অবশ্য। যেই না হেমন্ত কাটাটা বের করলো ওমনিই গল্লত করে বমি করে দিলো পৌষ। নিশানা একদম বরাবর হেমন্তের শরীর। ছিটাফোঁটা লাগলো বাকিদের গায়ে টুকটাক অথচ নাক কুঁচকালো না কেউ বরং সব গুলো ভাই-বোন চিন্তিত হয়ে গেলো, শুধু কেঁদে ফেললো ইনি, মিনি। পৌষ’র গলা দিয়ে বমির সাথে র’ক্ত চলে এসেছে। কাটাট বেশ বড় কি না।
চাচি কাটা নেমেছে শুনে রুমে গেলেন। পৌষ শরীর ছেড়ে দিলো। পিহা এসে বোনের মুখটায় পানি দিলো। সোফায়ই লম্বা হয়ে শুয়ে রইলো পৌষ কিন্তু প্রশ্ন হলো কতক্ষণ? এই তো পাঁচ মিনিট অতঃপর এক লাফে উঠেই জৈষ্ঠ্য’র পিঠে দুটো কিল দিয়ে ভাঙা গলায় বলে উঠলো,
“তুই ঐ কালা ভোটকা বিলাই কেন এনেছিলি?”
জৈষ্ঠ্য দৌড় দিলো। হেমন্ত গেলো গোসলে। বলা হয় পা’গলের নেই মাথা ব্যথা। পৌষ হলো সেই পা’গল। কে বলবে মাত্রই ম’রার ঘর দেখে এলো ও? এই অবস্থায়ও চৈত্র বোনের পিছু নিতে নিতে বললো,
“আপা দুধ খেয়ে নাও আপা। হেমু ভাই বকবে আমাকে তুমি না খেলে।”
“ওরে তোর বকার চৌদ্দ গুষ্টি আমি পৌষ কিলাই। একবার দুইবার তিনবার বারবার কিলাই।”
ফুঁসে উঠে পৌষ বাইরে যেতে যেতে বললো,
” ঐ ভোটকা বিলাই একবার শুধু পাই৷ লেন্জুরি ধরে এমন ধুরান্টি মা’রব একটা যে বুঝে যাবে কাকে খামচি দিয়েছে ও।”
“ঐ বিড়ালই তো কাটা নামালো।”
ঘর থেকে চাচির গা জ্বালানো কথায় পৌষ মুখ ভেঙিয়ে বললো,
“ঝড়ে বক ম’রে, ফকিরের কেরামতি বাড়ে।”