বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ১১

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ১১
shanta moni

সারা রাত ঘুমাতে পারিনা নিলয়। নিজের অপরাধ বোধ যেনো তাকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে। কি করবে বুঝতে পারছে না,
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে রোদ, নামাজ পড়ে রুমে বসে আছে, রোদ আজকে সে কলেজ যাবে, নিলাকে ফোন দেয়, নিলা ফোন তুলে না। তিন বারের বার ফোন তুলে নিলাকে কলেজ যাওয়ার কথা জিজ্ঞেস করতে নিলা না বলে দেয়। সে যাবে না, কিন্তু রোদের রিকুয়েষ্ট রাজি হয়। রোদকে এখন আর বাসার কাজ করতে দেয় না আরাফ চৌধুরী, বাড়ির সবাইকে বলে দিয়েছে। রোদকে দিয়ে যেনো কোনো কাজ না করায়। রোদ রেডি হয়ে বাসা থেকে বেড়িয়ে যায়৷ কলেজের উদ্দেশ্য,

এই দিকে নিলয় যেনো নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। কিছুই বুঝতে পারছে না সে, কি করবে হটাৎ রোদকে বাসা থেকে বের হতে দেখে জিজ্ঞেস করে কই যায়, রোদ আস্তে করে বলে।
রোদ: কলেজে যাচ্ছি ভাইয়া।
নিলয় কিছুটা তাড়াহুড়ো জিজ্ঞেস করে নিলাও কি কলেজ যাবে।
রোদ কিছু ভ্রু কুচকে বলে।
রোদ: জ্বী ভাইয়া যাবে। ফোন দিছিলো।
নিলয় আর কিছু বলে না দৌড়ে বাড়ির ভিতরে যায়।
রোদের মাথায় কিছুই ডুকে না সব যেনো মাথার উপর দিয়ে যায়। রোদ তাঁরপর রিকশা নিয়া, চলে যায়। কলেজে, পথ থেকে নিলাকে নিয়ে যাবে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

ফাস্ট ক্লাস করেই নিলা আর থাকতে চায়না। কলেজে রোদকে বলে
নিলা: রোদ আমার শরীর টা ভালো লাগছে না চল বাসায় চলে যাই।
রোদ কিছুটা উত্তেজিত হয়ে বলে।
রোদ: কি হয়েছে নিলা? শরীর কি বেশি খারাপ লাগছে?
নিলা: একটু একটু চল। বাসায় চলে যাই।
রোদ আর কিছু বলে না, নিলাকে নিয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে।
কলেজ গেট থেকে বের হতেই, নিলার চোখ পড়ে নিলয় দিকে, নিলা রাগে দুঃখে চোখ ফিরিয়ে নেয়।
রোদ পিছন পিছন হাঁটছে নিলা একটু সামনে।
নিলয় নিলাকে দেখে, নিলার সামনে এসে দাঁড়ায়।
নিলা রাগি চোখে তাকিয়ে আছে। কোনো কথা বলছে না। নিলয় নিলার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে, কানে ধরে। তাঁরপর বলে।

নিলয়: সরি খালাম্মা, এই নাহ থুক্কু, সরি নিলা আমার ভুল হয়েছে প্লিজ মাফ করে দাও।
নিলা কিছুটা অবাক হয়। এই ভাবে পাবলিক প্লেসে হাঁটু গেড়ে বসে সরি বলবে। জীবনে ভাবেনি,
নিলা মুখে কিছুটা বিরক্ত ছাঁপ টেনে বলে।
নিলা: এই আপনি কি সব করছেন? মাথা ঠিক আছে। আসে পাশে লোকজন দেখছে। উঠুন বলছি।
নিলয় : দেখলে দেখুক যতক্ষণ না তুমি মাফ করে দিচ্ছো। আমি এখান থেকে উঠবো না। এই ভাবেই বসে থাকবো।
রোদের কিছুক্ষণ সময় লাগে সবটা বুঝতে। সে অবাক হয়ে বলে
রোদ: ভাইয়া কি করছেন, এই ভাবে পাবলিক প্লেসে, সবাই দেখছে, উঠুন আপনি।
নিলয় কপট রাগ দেখিয়ে বলে
নিলয়: যতক্ষণ না নিলা মাফ করছে। ততক্ষণে আমি এখান থেকে উঠবো না।
নিলা বিরক্ত হয়ে বলে

নিলা: আচ্ছা ঠিক আছে। মাফ করে দিয়েছি উঠুন আপনি।
নিলয় উঠে দাঁড়ায়। রোদ এখনো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। দুজনের দিকে চলছে টা কি এদের মধ্যে।
নিলয় বলে, যখন মাফ করে দিয়েছো, সেই উপলক্ষে তোমার ট্রিট দিতে চাই চলো। নিলা কিছু বলছে না, রোদ কিছু একটা বলবে কিন্তু নিলয় বলে
নিলয়: কিচ্ছু হবে না রোদ। সমস্যা নেই চলো, আর নিলাও চলো, তুমি যদি না যাও আমাদের সাথে তাহলে ভাববো এখনো মাফ করোনি আমায়।
নিলা আর কিছু বলে না, সামনের দিকে হাঁটা দেয়, সাথে সাথে রোদ আর নিলয়ও।
সামনে একটা কফিশপে বসে আছে তিনজন,
এইদিকে..

শুভ্র আসছিলো কফিশপে একটা মিনিং। মিটিং শেষ হটাৎ কারো হাঁসির শব্দ পায়।সামনে তাকিয়ে দেখে রোদ হাঁসছে। রোদের সামনে একটা ছেলে বসে আছে, পেছন থেকে দেখছে, মুখ দেখেনি। রাগে যেনো শরীর কাঁপছে। কি রকম হেসে যাচ্ছে। ইচ্ছে তো করছে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে।
রোদকে নিলয় এটা ওটা বলে হাঁসিয়ে যাচ্ছে। নিলা গেছে ওয়াশরুমে, হটাৎ শুভ্র এসে কষে থাপ্পড় বসায় রোদে গালে, হটাৎ কারো শক্ত পোক্ত হাতের থাপ্পড় খেয়ে যেনো মনে হচ্ছে গাল অবশ হয়ে আছে। রোদ সামনে শুভ্রকে দেখে ভয় পেয়ে যাই। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
নিলয় বসা থেকে দাঁড়িয়ে যায়। নিলাও আসছিলো ওয়াশরুম থেকে, রোদকে থাপ্পড় মারতে দেখে রাগে তার ইচ্ছে করছে এই লোকটাকে বুড়ি গঙ্গা নদীতে চুবিয়ে মারতে। এই রোদটাও না কবে যে একটু প্রতিবাদি হবে৷ আরে শালি তোকে চর মারছে। তুইও ঠাটিয়ে একটা চর মারতি। তাহলে বুঝতে পারতে চর খাওয়ার মজা টা কি।
নিলয় বলে: কি হচ্ছে Bro তুমি রোদকে মারলে কেনো,

পিছন ফিরে নিলয়কে দেখে শুভ্র কিছু অপ্রস্তুত হয়ে যাই৷ সে ভেবে ছিলো অন্য কারো সাথে বসে বসে হাঁসছে রোদ। কিন্তু না দেখে থাপ্পড় মারলো।
নিলয় আবার জিজ্ঞেস করে
কিন্তু শুভ্র রেগে গিয়ে বলে।
শুভ্র: Shut up নিলয়!আমার কি করতে হবে, না হবে সেটা কি আমি তোকে বলে করবো হ্যা।
নিলয় চুপ হয়ে যায়। শুভ্র রাগে ধব ধব পা ফেলে চলে যায়। কফিশপ থেকে।
নিলার যেনো রাগে শরীর পুড়ে যাচ্ছে। ইচ্ছে করছে ওই লোকটাকে খুন করতে। নিলা রোদের কাছে গিয়ে রোদকে জড়িয়ে ধরে বলে।

নিলা: জানু তুই কাঁদিস না, এই লোকটাকে তো আমি দেখে নিব। একটা অসভ্য লোক কোথাকার ইচ্ছে করছে লাথি মেরে উগান্ডা ফেলে দেই।
নিলয় নিলার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।
নিলা নিলয়ের দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে বলে।
নিলা: এই আপনাদের বাড়ির তিন ছেলের কি মাথার তার ছিড়া নাকি। আমি তো জানতাম একজনের কিন্তু এখন তো দেখছি সাথে তো আর একজনও দেখছি।
নিলয় হতভম্ব হয়ে বলে।
নিলয়: কি সব বলছো নিলা

নিলা: আমি ঠিকই বলছি, এই ওই শালা পেত্নি জামাই এতো সাহস কি করে হলো আমার জানু কে মারার। কথায় কথায় থাপ্পড় মারে। কি পেয়েছে আমার জানুর গাল কি সরকারি যে যখন ইচ্ছে থাপ্পড় মারবে। সালা আসলেই একটা খাটাস।
নিলয় ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে আছে।
নিলা আবার বলে
নিলা: এই সব আপনার জন্য হইছে। আপনার সাথে যদি কফিশপে না আসতাম। তাহলে আর রোদ মার খেতো না। আপনার মতো হাদারামের কথায় এখানে আসাই উচিত হয়নি।
রোদ আস্তে করে বলে
রোদ: নিলা থাম প্লিজ। বাসায় চল আসে পাশে লোকরা কেমন করে যেনো তাকিয়ে আছে।
নিলা রোদের কথায় তেতে উঠে, তাঁরপর বলে

নিলা: তুই চুপ কর শালি পারিস শুধু বসে বসে মার খেতে। তোকে যখন চর মারছে তুইও সাথে সাথে একটা চর দিয়ে দিতি। তা না করে সে মাথা নিচু করে কাঁদছে।
রোদ: প্লিজ নিলা চল এখান থেকে
রোদ নিলার হাত ধরে টানতে টানতে বাহিরে দিকে নিয়ে যায়।
আর নিলা যেতে যেতে নিলয়কে বলে।
নিলা: আপনাকে যদি দেখি না, আমাদের আসে পাশে তাহলে রোদকে থাপ্পড় মারার শোধ আপনার কাছ থেকেই নিব হ্যা।

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ১০

নিলয়ের মাথার উপর দিয়ে গেলো সব সে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রোদ আর নিলার যাওয়ার দিকে।
রাত :১২:৩০
শুভ্র ছাদে দাড়িয়ে আছে।
হটাৎ পিছন থেকে কেউ এসে জড়িয়ে ধরে।
প্রচন্ড রেগে পিছন ফিরে তাকায়, কিছুটা অবাক হয়। শুভ্র

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ১২

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here