বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৪১ (২)
shanta moni
‘শুভ্র মাথার আঘাতে সামনের দিকে ঝুঁকে যায়। এক হাত দিয়ে রোদকে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে। অন্য হাত দিয়ে গান বের করে, পিছনে না দেখেই দক্ষ হাতে বন্দুক চালায়। রোদ বন্দুকের শব্দে শুভ্র বলে চিৎকার করে সেন্সলেজ হয়ে যায়। শুভ্রের বন্দুকের শব্দে রবিন ও বর্ডিগার্ড গুলো, আসে পাশ থেকে সবাইকে ঘিরে ফেলে। শুভ্র রোদকে পাজা কোলে করে নিয়ে, জঙ্গল থেকে বেড় হতে নিয়ে রবিনের দিকে পিছন ফিরে তাকিয়ে বলে…
শুভ্র: রবিন একটা যেনো পালাতে না পারে, সব গুলোকে খাতির যত্ন করতে, গোডাউন নিয়ে যাহ,,আমি আসছি…!
রবিন শুভ্রের কথায় সম্মতি জানায়।
শুভ্র রোদকে কোলে নিয়ে জঙ্গল থেকে বেড় হতে হতে প্রায় ফজর হয়ে, আসছে।
রোদের অবস্থা নাজেহাল বাম পায়ের কাচা নক উঠে গেছে। কপাল ফেটে রক্ত
শুকিয়ে আছে’ রোদকে এমন অবস্থায় দেখে শুভ্রের বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে ওঠে,আজ যদি সঠিক সময় সে না, আসতো। তাহলে তার এই ছোট্ট ফুলটাকে ওই জানোয়ার গুলো,,
শুভ্র বাকি কথা গুলো আর বলতে পারে না। রোদকে আরো নিজের সাথে আকরে ধরে। যাই হয়ে যাক, আজকের পর থেকে তার ছোট্ট ফুলের গায়ে কোনো আচঁ লাগতে দিবেনা।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সাতদিন পর…
আজ প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গেছে, রোদ শুভ্রের কাছে আছে, সেদিন রাতে শুভ্র ডক্টর দেখিয়ে রাঙামাটি থেকে ঢাকায় এসে পড়ে, আরাফ চৌধুরী অয়ন শুভ্র রোদকে রাঙামাটি পাইনি। শুভ্র রোদকে নিয়ে একা নিজের ফ্লাটে আছে। হেনা বেগমকে কল করে জানিয়েছে রোদ তার কাছে আছে, আর সুস্থ আছে।কিন্তু হেনা বেগম রোদকে প্রথমে দেখার জন্য কান্নাকাটি করলে, শুভ্রের কথার কাছে ধমে যান। কারন শুভ্র নিজেই বলেছে, রোদ পুড়োপুড়ি সুস্থ হলে, চৌধুরী বাড়ি নিয়ে আসবে। সেদিন সকালে রুহি নীলা হেনা বেগম, রোমান নিলয়, সবাই রাঙামাটি থেকে ঢাকায় আসেন। আরাফ চৌধুরী অয়নও আসেন। রোদ এই সাতদিন অনেকটা ভয় আর আতঙ্কে ছিলো। কোনো ভাবেই নিজের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা ভুলতে পারছিলো না। এমন কি শুভ্র কাছে আসলেও ভয়ে এক যায়গায় গুটিয়ে থাকতো। এখন আগের থেকে অনেটাই স্বাভাবিক রোদ, শুভ্র আজকে রোদকে চৌধুরী বাড়ি নিয়ে যাবে।
রোদ গোলাপি রঙের একটা থ্রিপিস পড়া, মাথায় ওড়না আড়াই পেচের মতো করে দেওয়া। শুভ্র গায়ে কালো, শার্ট কালো প্যান্ট, রোদ এতোক্ষণ বাসার বাহিরে দাড়িয়ে ছিলো। শুভ্রকে গাড়ির দিকে আসতে দেখে, চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে। শুভ্র যে রোদের কাছে এসে গেছে। রোদের তা খেয়াল নেই।
শুভ্র গলা খাকারি দিয়ে, রোদের দিকে তাকিয়ে মুচকে হেঁসে বলে…!
শুভ্র: উফ বউ এই ভাবে তাকিয়েও না,
আমার লজ্জা লাগে গো..!
শুভ্রের এমন কথায় রোদ মুখ ভেঙিয়ে চোখ ফিরিয়ে নেয়, অন্য দিকে,,
শুভ্র রোদকে এমন করতে দেখে, আবার হাঁসে, রোদকে কোনো কিছু বলতে না দিয়ে কোলে করে গাড়িতে উঠে ড্রেরাইবিং সিটে বসে পড়ে। রোদ চোখ বড় বড় করে শুভ্রের দিকে তাকিয়ে বলে,
রোদ: এই কি করছেন, এই ভাবে কোলে নিয়ে গাড়ি চালালে তো, এ্যাক্সিডেন্ট হয়ে যাবে। প্লিজ ছাড়ুন,,,
শুভ্র রোদকে আরো শক্ত করে নিজের সাথে চেঁপে ধরে বলে,,,
শুভ্র: নাহ, চুপচাপ এখনো বসে থাকো!
রোদ ছোটাছুটি করতে থাকে, তাঁরপর বলে,
রোদ: আমাকে কোলে নিয়ে গাড়ি চালাতে সমস্যা হবে আপনার, ছাড়ুন প্লিজ..!
শুভ্র: এই ৪০০ গ্রামকে নিয়ে গাড়ি ড্ররাইভ করতে আমার কোনো সমস্যা হবে না।
রোদ আবার কিছু বলতে নিবে, তখনি শুভ্র বলে উঠে..
শুভ্র: আমার কোলের উপরে বসে, এই ভাবে নড়াচড়া করে, আমাকে উসকানি দিওনা বউ, তা না হলে কিন্তু এইখানে বাসর হবে, রুম পযন্ত কিন্তু আর যাওয়া হবে না।
শুভ্রের এমন কথায় রোদ সাথে সাথে চুপ হয়ে যায়। শুভ্র রোদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে,, গাড়ি স্টার্ড দেয়।
একঘন্টা পর গাড়ি এসে থামে, চৌধুরী বাড়ির সামনে, গাড়ি থামতেই রোদ গাড়ি থেকে নামার জন্য শুভ্রের কোল থেকে নামতে নেয়৷ এমন সময় শুভ্র বলে,,
শুভ্র: স্টপ রোদ,,
রোদ সাথে সাথে থেমে যায়।
শুভ্র রোদকে কোলে নিয়ে, সেই অবস্থায় গাড়ি থেকে বেড় হয়।
রোদ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে শুভ্রের দিকে, সে তো এখন সুস্থ তাহলে এইভাবে কোলে করে, নিয়ে যাওয়ার কি দরকার।
রোদের ভাবনার মাঝেই শুভ্র বাড়ির দরজা সামনে দাঁড়ায়, কলিং বাজায়, কলিং বেলের শব্দে রোদের ভাবনায় ছেদ ঘটে,
বাড়ির কাজের মেয়ে দরজা খুলে, রোদ শুভ্রকে একসাথে দেখে দৌড়ে যায়” হেনা বেগমের কাছে। শুভ্র সিঁড়ি দিয়ে পা বাড়ায় নিজের রুমে, রোদকে শুয়ে দিয়ে, রোদের মাথায় হাত ভুলিয়ে বলে,,
শুভ্র: এইখানে চুপচাপ শুয়ে থাকবে, রুম থেকে একদম বেড় হওয়ার দরকার নেই।
সব কিছু রুমের মধ্যে পেয়ে যাবে।
কথা শেষ করে আর দাঁড়ায় না শুভ্র, রুম থেকে বেড় হতে নিলে দেখে, হেনা বেগম আর রুহি দাঁড়ানো, শুভ্র হেনা বেগম রুহিকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে,,
শুভ্র: দাদি রোদের খেয়াল রেখো, আর রুম থেকে যেনো বেড় না হয়।
কথা গুলো বলেই শুভ্র রুম থেকে বেড়িয়ে যায়৷ নিজের কাজে,
রুহি হেনা বেগম, রোদ জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে, কতোদিন হয়ে গেছে নাতনিকে দেখে না। শুভ্র কোথায় নিয়ে রেখেছিল। সেটাও হেনা বেগম বা অন্য কেউ জানতো না। হেনা বেগম রোদের সাথে কথা বলে, রুম থেকে চলে যায়, রোদের জন্য খাবার আনতে। হেনা বেগম যেতেই রুহি রোদের দুহাত ধরে কান্না ভেজা কন্ঠে বলে উঠে,,,
রুহি: আমায় মাফ করে দিস রোদ, আমি
তোর খেয়াল রাখতে পারিনি। আমার জন্য তুই এতো বড়ো বিপদে পড়েছিস।
রোদ রুহিকে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে রুহিকে বলে,,
রোদ: আরে নিজের দোষ দেওয়া বাদ দে,
তোর এখানে কোনো ভুল নেই, আর বিপদ তো আর বলে আসে না।
এখন আমি তো সুস্থ আছি, আলহামদুলিল্লাহ এটাই আল্লাহ কাছে হাজার হাজার শুকরিয়া।
রোদের কথায় শান্ত হয়, রুহি চোখ মুছে রোদকে জড়িয়ে ধরে বলে
রুহি: হুম আল্লাহ আমাদের, ভাইয়ার আর্তনাত শুনেছে। আমাদের দোয়া কবুল করছে।
রোদ ভ্রুরে কুচকে তাকায়, রুহি বিষয়টা বুজতে পেরে, বলে উঠে,,
রুহি: ভাইয়া তো, তোর জন্য পা
রুহি বাকি কথা আর বলতে পারে না। হেনা বেগম রুমে এসে বলে উঠে
হেনা বেগম : পড়ে গল্প করিস তোরা। এখন রোদকে খেতে দে, আর নীলাও আসছে রোদের বাড়ি ফেরার কথা শুনে,,
রোদ রুহি দুজনে হাঁসে, হেনা বেগম রোদকে খায়িয়ে দিয়ে, আবার নিচে চলে যায়। এর মধ্যে নীলাও এসে পড়ে, রোদ রুহি নীলা মিলে পুড়ো দুপুর আড্ডা দেয়।
এখন সময় বিকেল ৪:০০ টা
শুভ্র যে সেই সকালে বাড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে বেড় হয়েছে, এখন পযন্ত আসেনি। রাত ছাড়া হয়তো আসবেও না। নীলা দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে চলে গেছে। অহনা টীনা নীরা আর নীরার হাসবেন্ড এসেছিল, রোদকে দেখতে, দেখে আবার চলে গেছে।
অহনা টীনা এখনো বাড়িতে আছে। বাড়িতে আসার পর থেকে রোদ হাঁসি বেগম, আর রিয়া দেখিনি কোথাও, বিষটা তার চোখ এরায়নি, এই সব ভাবছিলো রোদ, ছাদের এক কোনে দাঁড়িয়ে, এমন সময় পিছন থেকে কেউ বলে উঠে,,
”কেমন আছো রোদ….?
রোদ সাথে সাথে পিছন ফিরে তাকায়,
‘অয়নে দেখে প্রথমে গাবড়ে গেলেও, পর মুহূর্তে নিজেকে স্বাভাবিক করে বলে… ”
রোদ: আলহামদুলিল্লাহ ভালো, ভাইয়া,
রোদ মাথা নিচু করে আছে,
অয়ন পুনরায় শান্ত কন্ঠে বলে,,
অয়ন: মাথা নিচু করে আছো কেনো?
রোদ মাথা তুলে অয়নের দিকে তাকায়,
অয়নের চোখ দুটো ছলছল করছে, রোদ আবার সাথে সাথে মাথা নিচু করে, আস্তে করে বলে উঠে,,
রোদ: কিছু বলবেন অয়ন ভাই?
অয়ন: ভালোবাসি রোদ,,
রোদ বিরক্ত হয়ে বলে,,,
রোদ: প্লিজ ভাইয়া এই সব বলবেন না,,
অয়ন: তুমি যতোবার না বলবে, আমি ততবার বলবো ভালোবাসি তোমায়, খুব ভালোবাসি,,
রোদ: এ-ই সব পাগলামি বাদ দিন, ভাইয়া। আমি বিবাহিত সেটা আপনার অজানা নয়। দয়া করে আমাকে আল্লাহ কাছে পাপের ভাগিদার বানাবেন না।
অয়নের চোখের কোনে পানি, অয়ন রোদকে বলে,,
অয়ন: আমি তোমাকে এত করে চাওয়ার পর কেনো পেলাম না রোদ,,বলবে আমায়,কেনো আল্লাহ আমাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিলেন।
রোদ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে, অয়নের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,,
রোদ: আল্লাহ কাউকে খালি হাতে ফেরায় না অয়ন ভাই’ আজ আপনি যা চাচ্ছেন, তার থেকে উত্তম কিছু আপনার জন্য অপেক্ষা করছে৷
অয়ন: আমার তোমাকে চাই, তোমাকে চাই শুধু অন্য কাউকে না।
রোদ: আপনার নসিবে যেটা নেই, সেটা আপনি হাজার চাইলেও পাবেন না।
আর যেটা আপনার নসিবে আছে, সেটা আজ হোক বা কাল, একদিন আপনি পাবেন ইনশাআল্লাহ।
রোদ কথা গুলো বলে আর দাঁড়ায় না, দ্রুতে পায়ে ছাদ থেকে নেমে আসে।
অয়ন অশ্রু ভেজা নয়নে তাকিয়ে আছে, রোদের যাওয়ার দিকে, বুকের ভিতর ভালোবাসা না পাওয়া তীব্র থেকে তীব্র যন্ত্রনা।
অয়ন মনে মনে বলে,,
অয়ন: যে মানুষ’টা আমার কখনোই হবে না৷ তাঁর জন্য এতো মায়া ভালোবাসা আমার মনে কেনো দিলে আল্লাহ,,!!
আমি ভুলতে গিয়ে তাকে ভুলতে পারিনা।
রাত ১০:০০ রোদ নিজের রুমে শুয়ে আছে। চোখে ঘুম ঘুম ভাব, সেই যে ছাদ থেকে এসে নিজের রুমে এসেছে। তারপর আর রুম থেকে বেড় হয়নি। হেনা বেগম নিজে এসে খাবার দিয়ে গেছে।
রুহিও কয় একবার এসে দেখে গেছে। রোদের সাথে অনেকক্ষণ ছিলো। তারপর নিজের রুমে চলে গেছে।
রোদ এখন আগের থেকে অনেকটা সুস্থ,
সে হয়তো ভেবেছিলো, আর হয়তো বেঁচে ফিরতে পারবে না। কিন্তু আল্লাহ তার সম্মান রক্ষা করছেন। এই সব ভাবতে ভাবতে রোদ ঘুমিয়ে পড়ে,,
রাত প্রায় ১২:০০
চারদিকে নিস্তব্ধতা, গা জিম জিম করা পরিবেশ,
অন্ধকারে গায়ে রক্ত লেগে আছে। মনে হচ্ছে তাজা রক্ত, পুড়ো মুখ শার্ট লাল হয়ে আছে। যে কেউ এই পুরুষের এমন ভয়ংকর অবস্থা দেখলে। ভয়ে সেইখানে শেষ হয়ে যাবে। চোখে মুখে হিংস্রতা প্রকাশ পাচ্ছে। চারপাশে অন্ধকার আর জঙ্গল গাছ পালা ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। দূড় দূরান্তে দিকে তাকালে সুধু অন্ধকার আর অন্ধকার। গায়ে রক্ত মেখে থাকা লোকটা হটাৎ বলে উঠে,,
‘সব গুলোকে কুচি কুচি করে কেটে, জঙ্গলে জন্তুু জানোয়ারদের খেতে দে।
আর কলিজা গুলো বেড় করে,টুকরো টুকরো করে, পিছনে পুকুরে মাছেদের খেতে দিবি।
পাশে থাকা লোকটি সাথে সাথে মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি দেয়।
লোকটি আর কোনো কিছু না বলে চলে যায়। নিজ গন্তব্যে,
সকাল ৮:০০
সূর্যের আলো রোদের চোখে মুখে পড়তেই, চোখ মুখ কুচকে ফেলে রোদ,
আস্তে আস্তে পিটপিট করে চোখ খুলে তাকায়, ঘুমের রেস এখনো কাটেনি,
রোদ আবার চোখ বন্ধ করে নেয়৷ কিন্তু সূর্যি মামার মনে হয় রোদের এখনো ঘুমিয়ে থাকাটা পছন্দ হয়নি৷ তাই তো বার বার সূর্যের আলো চোখে মুখে পড়ছে। রোদ বিরক্ত হয়ে, ঘুরে অন্য দিকে ফিরতে নেই, এমন সময় কারো বুকের সাথে ধাক্কা খেয়ে, পরে যায়।
এতক্ষণ খেয়াল না করলেও এখন দেখছে তাকে কেউ শক্ত করে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে আছে৷ রোদ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে জোরে চিৎকার দিয়ে বলে,,
রোদ: নানু তুমি কোথায়, আমার রুমে এই বেডা কেডা,,নানু বাঁচাও আমাকে,,?
রোদের এমন গলা ফাটানো চিৎকারে শুভ্র ধর ফরিয়ে বিছানার উপর উঠে বসে। রোদ এখনো চিৎকার করে যাচ্ছে শুয়ে শুয়ে চোখ বন্ধ করে।
শুভ্র জোরে ধমক দিয়ে বলে,,
শুভ্র: এই বিয়াদব চুপ কর। আমি তোর জামাই অন্য বেডা নাহ,,
শুভ্রের এমন ধমকে রোদ সাথে সাথে চুপ হয়ে যায়। কিছুক্ষণ সেই ভাবে চুপ থেকে,এক চোখ খুলে, দেখে শুভ্র, শুভ্রকে দেখে মনে মনে বলে,,,
রোদ: আরে এটা তো আমার জামাই, অন্য বেডা তো না,,
ঘুমের মধ্যে কাকে না কাকে ভাবছিলাম।
যাই হোক, কিনন্ত আমি তো, দরজা বন্ধ করে শুয়ে ছিলাম। তাহলে এই লোক কি করে এখানে আসলো। আচ্ছা এইটা জ্বীন বা ভুত নয়তো। রোদ এই সব ভাবছিলো মনে মনে,, এমন সময় শুভ্রের দিকে চোখ পড়ে, এতোক্ষণ শুভ্রের দিকে ভালো করে খেয়াল করেনি। কেমন করে যেনো তাকিয়ে আছে রোদের দিকে,,
রোদ মনে মনে দোয়া পড়ে, উঠে বসে,
শুভ্র এখনো তাকিয়ে আছে রোদের দিকে। রোদও তাকিয়ে আছে শুভ্রের দিকে, রোদ ভাবছে এই লোক এতো গভীর দৃষ্টিতে কি এমন দেখছে, রোদের এখনো ঘুমের রেস কাটেনি। রোদ একটা হাত বাড়িয়ে শুভ্র গালে আঙ্গুল দিয়ে গুতো দিয়ে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠে,
রোদ; এই তুই জ্বীন নাকি ভুত হ্যা,বলতো
আমার জামাই রুপ নিয়ে আমাকে বোকা বানাতে এসেছিস।
শুভ্র চুপচাপ রোদের দিকে তাকিয়ে তার কান্ড গুলো দেখছে, রোদ এখনো ঘুমের জন্য টলছে, রোদ আবার শুভ্রের আরেক গালে হাত দিয়ে, গাল টেনে বলে উঠে,,
রোদ: বুঝতে পারছি, তুই খুব ভালো জ্বীন, আমার জামাইয়ের মতো পঁচা নাহ’
আচ্ছা সত্যি কি তুই ভালো জ্বীন,,,
শুভ্র আস্তে করে বলে উঠে,,
শুভ্র: হুম আমি ভালো জ্বীন,,
রোদ খুশিতে গদ গদ হয়ে শুভ্রের গাল টেনে বলে,,,
রোদ: সত্যি….?
শুভ্র:হুম…
রোদ এখনো ঘুমের জন্য টলছে, শুভ্র মজার ছলে রোদ বলে,,,
শুভ্র: তোমার স্বামী পঁচা কেনো…?
রোদ আস্তে করে,টলতে টলতে বলে,,,
রোদ: আর বলিস না, জ্বীন ভাই,, শালা আস্ত একটা খচ্চর, খালি মারে, কথায় কথায় থাপ্পড় মারবে। আমার গালটা সে নিজের সরকারি গাল বানিয়েছে, যখন ইচ্ছে খালি মারবে, অন্যের জামাইরা, তাদের বউদের কতো সুন্দর আদর সোহাগ করে৷ আর আমার জামাই খালি মারে,,,এই তুমি আবার বলে দিওনা,,ওই খচ্চর বেডাকে,,বুচ্ছো।
শুভ্র রেগে গিয়ে দাঁতে দাঁত চেঁপে বলে,,
শুভ্র: নাহ, আমি বলবো না,,এখন বলো তোমার জামাই তোমার সাথে আর কি কি করে,,,
রোদ: খুবই খারাপ বুচ্ছো, আমার মনে হয়, বেডার সিস্টেম সমস্যা,.?
শুভ্র রাগি চোখে তাকায় রোদের দিকে তারপর বলে,,
শুভ্র: তোমার কেনো মনে হচ্ছে, সিস্টেম খারাপ,,
রোদ: আরে সব দিক দিয়া মনে হচ্ছে, আমাকে মারে খালি, দূরে দূরে রাখে, যেনো ভয়ে তার সামনে না যাই। আর বুজতে না পারি, তার সিস্টেম খারাপ, তার জন্য খালি মারে,,আর আমার তো অনেক বুদ্ধি তাই বুঝতে পেরেছি।
শুভ্র রাগে চোখ লাল হয়ে আছে,
মনে মনে বলে উঠে,
শুভ্র: ছেহ, এর আগে নিলয় গাঁধাটা বলতো আমার সমস্যা সিস্টেম খারাপ, এখন কিনা ঘরের বউ বলছে, ছেহ, বা*লের জীবন।
শুভ্রের ভাবনার মাঝেই, রোদ শুভ্রের এক হাত ধরে বলে,,
রোদ: জ্বীন ভাই, তোমাকে আমার সাথে আকাশে উড়িয়ে নিয়ে চলো। আমি আকাশে উড়তে চাই,,আর আমি তোমাকে বিয়ে করে সংসার করবো।
শুভ্র রোদের এমন কথা শুনে রোদকে নিজের সামনে এনে, গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিয়ে বলে,,,
শুভ্র: শালি আমার সিস্টেম খারাপ, আমি খচ্ছর আমাকে রেখে জ্বীনের সাথে আকাশে উড়ে যাবি। তাকে বিয়ে করে সংসার করবি। দাঁড়া তোকে করাচ্ছি সংসার,
শুভ্রের এক থাপ্পড়ে রোদের চোখ থেকে ঘুম উড়ে যায়।
গালে হাত দিয়ে শুভ্রের দিকে তাকিয়ে আছে,,
শুভ্র বিছানা থেকে উঠে, যেতে যেতে বলে,
শুভ্র: অফিসে মিটিং আছে, তাই এখন ছেড়ে দিলাম। রেডি থাকিস রাতে, তারপর দেখবো, কার সিস্টেম দুর্বল,,
বলেই শব্দ করে ওয়াশরুমের দরজা লাগায়।
রোদ ভেবলার মতো তাকিয়ে আছে, ওয়াশরুমে দরজা দিকে, ভালো মতোন খেয়াল করতে, দেখে সে শুভ্রের রুমে, তার ভালো মতো মনে আছে। সে নিজের রুমে দরজা জানালা বন্ধ করে ঘুমিয়ে ছিল। তাহলে এই রুমে আসলো কি করে,
বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৪১
আর ঘুমের মধ্যে কি সব বলছে ছিহ ছিহ,
রোদ বিছানা থেকে উঠে, শুভ্রের দরজা খুলে এক দৌড় দেয়, নিজের রুমে এসে দরজা লাগায়, আজকে আর সে এই রুম থেকে বের হবে না। আর এই খাটাস বেডা যে তাকে থাপ্পড় মেরেছে, তার শোধও নিবে।
