বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৯

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৯
shanta moni

সিঁড়ি দিয়ে নাম’ছিলো শুভ। হেনা বেগম শুভ্রকে দেখে শুভ্রের কাছে আসে, আর শুভ্রেকে উদ্দেশ্য করে বলে।
হেনা বেগম : শুভ্র দেখ তোর বাবা কি সব বলছে’
রোদকে নাকি বিয়ে দিবে। এই সব কি হচ্ছে শুভ্র তুই কিছু বল শুভ্র?
শুভ্রের মুখে স্পষ্ট বিরক্ত। সেটা রোদের চোখ এরায় না। শুভ্র ভ্রু কুচকে বলে।
শুভ্র: আমি কি করতে পারি দাদি’ তোমরা এই মেয়েকে যেই খানে ইচ্ছে বিয়ে দাও। তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না,,আর এই সব কথা বলে আমার কানের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করবে না।
শুভ্র দাদির মুখ ছোট হয়ে যায়,,কারন সে কখনো ভাবেনি। শুভ্র এই সব বলবে। হেনা বেগম বলে।
হেনা বেগম : শুভ্র কি সব বলছিস। তোর মাথা ঠিক আছে৷ এই সব কোন ধরনের কথা। সব কিছু এই ভাবে ভুলে যাস না।

হেনা বেগম কে শুভ্র বিরক্ত নিয়ে বলে।
শুভ্র: আমি সব কিছু অনেক আগেই ভুলে গেছি দাদি। আর প্লিজ আমার সাথে এই সব কথা নিয়ে কিছু শুনতে চাই না।
কথা গুলো বলেই শুভ্র বাসা থেকে বের হয়ে যায়।হেনা বেগম শুভ্রকে বুঝাতে তার পিছনে যেতে নেয়। এমন সময় আরাফ চৌধুরী রাগে চোয়াল শক্ত করে বলে।
আরাফ চৌধুরী : ব্যাস মা ওই খানে দাড়াও। অনেক হইছে তোমার নাতি যা বলার বলে দিয়েছে। আর আমি আমার সিদ্ধান্ত থেকে এক পা নড়বো না।
রোদের বিয়ে আমি খুব তাড়াতাড়ি দিব।
অয়নের যেনো বুকের ভিতর তোলপার শুরু হয়ে যায়। অয়ন আরাফ চৌধুরী উদ্দেশ্য করে কিছু বলবে।
অয়ন: চাচা জান আমার ক থা
আর কিছু বলতে পারে না অয়ন। আরাফ চৌধুরী গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠে।
আরাফ: অয়ন আমি কোনো সাফাই শুনতে চাইনা তোমার কাছ থেকে। আমি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেইটাই হবে।
বলে ধব ধব পা ফেলে রুমে চলে যায়।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

রোদের যেনো বুক ফেটে যাচ্ছে। শুভ্রের সব কথায় শুনেছে সে। রোদ চোখের পানি মুছে। আর মনে মনে বলে।
রোদ: অনেক হইছে আর না। এবার আর মায়া আর মোহে আটকে থাকবো না। যে আমাকে চায়না। তার জন্য আর আমি কষ্ট পাবো না। আর না।
নিলয় কেমন করে যেনো তাকিয়ে আছে। রোদের দিকে। সে তো সেদিন রোদ আর শুভ্রকে ঘনিষ্ঠ অবস্থা দেখে ছিলো। সে ভেবে ছিলো। তার শুভ্র ভাই এই বিয়ে হতে দিবে না। কিন্তু সে তো কিছুই বল্লো না। আরো বিয়েতে উৎসাহ দিয়ে গেলো।
তাহলে কি সেদিন সে ভুল দেখে ছিলো। হতেও পারে তার যে শুভ্র ভাই জীবনে ওই সব করবে না কারো সাথে। আনরোমান্টিকের ড্ররাম।
অয়নের কেমন যেনো অস্থির লাগছে,,অয়ন বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায়।
রিয়া হাঁসছে। তার প্লান মতোই সব হচ্ছে।

আরাফ চৌধুরী রুমে গিয়ে। আফরিন বেগমের ছবির সামনে দাঁড়ায়। চোখ তার ঝাপসা হয়ে আসে। চোখের পানিতে, চোখ থেকে চশমা খুলে আবার চোখে পড়ে নেয়, তাঁরপর বলে,
আরাফ চৌধুরী : আমি তোমার কথা রাখতে পারিনি আফরিন, পারিনি রাখতে, আমাকে তুমি মাফ করে দিও, রোদ মায়ের সুখের জন্য হলেও এই সব করা দরকার..।
আরাফ চৌধুরী ফোন আসে, ছবির সামনে থেকে সরে, ফোন কথা বলে, কিছুক্ষণ পর রুম থেকে বেরিয়ে আসে, ড্রয়িং রুমে হেনা বেগম মাথায় হাত দিয়ে সোফায় বসে ছিলেন। আরাফ চৌধুরী হেনা বেগমের সামনে আসে তাঁরপর বলে,

আরাফ চৌধুরী : মা হেনা বেগম মাথা তুলে তাকায়, আরাফ চৌধুরী হেনা বেগম কে বলে,,
আরাফ চৌধুরী : মা কালকে রোদকে দেখতে আসার কথা ছিলো, কিন্তু তারা সবাই আজকে বিকালেই রোদকে দেখতে আসছে, তুমি রোদকে সাজিয়ে গুছিয়ে রেডি কইরো,,
হেনা বেগম মুখ কালো বলেন।
হেনা বেগম : আরাফ তুই একটু বেশি তাড়াহুড়ো করছিস না,আরো একটু ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিলে কেমন হয়,,
আরাফ চৌধুরী রাগি কন্ঠ বলে,
আরাফ: আম্মা জান প্লিজ। আমি কোনো কথা শুনতে চাই না,আর ভাবাভাবি সময় শেষ। এখন আমি যা বলবো তাই হবে,
হেনা বেগম আর কিছু বলে না, সে ভালো করেই জানেন এখন আর কিছু বলে কাজ হবে না,ধপ করে সোফায় বসে পড়ে।

আরাফ চৌধুরী কথা গুলো রোদেও কানে যায়, সে নিরবে চোখের পানি মুছে,কেমন যেনো বুকের ভিতর তোলপার শুরু হয়ে গেছে, নিজেকে কোনো ভাবেই শান্ত করতে পারছে নাহ।
নিলা রোদের বিয়ের কথা হেনা বেগম কাছ থেকেই শোনে শুনেই রোদের কাছে আসে, বাড়ির ভিতরে ডুকে রোদের রুমের দিকে যায়,,হটাৎ কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে গায়ের উপরে পড়ে যায়, সামনে তাকিয়ে খানিকটা লজ্জা পায় নিলা, কেমন করে যেনো তাকিয়ে আছে নিলয় নিলার দিকে, নিলা তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়ায়, কিছুটা রাগ মিশ্রিত কন্ঠে বলে,
নিলা; এই আপনার সমস্যা কি, আপনি আমার কাছে এসেই ধাক্কা খেতে হবে হ্যা।
নিলয় নিলার দিকে কিছুটা ঝুঁকে বলে,
নিলয়: জানি না কি সমস্যা তবে বড় কোনো সমস্যা তো হবেই, তা না হলে শুধু বারবার আপনার সাথেই কেনো,ধাক্কা খাই, বলেন তো
নিলা রাগ নিয়ে বলে,

নিলা: সমস্যা তো অনেক বড়ই,কারন আপনার চোখ তো আপনি পকেটে নিয়ে, হাঁটেন আর বারবার আমার সামনে এসেই পড়েন, আর বড় সমস্যা হলো আপনি একটা হাদারাম,
বলেই রাগে গজ গজ করতে চলে যায়।
নিলয় নিলার কথা শুনে ফিক করে হেঁসে দেয়, আর মনে মনে বলে, মেয়েটা আসলেই সুন্দর, রাগলে তো আরো সুন্দর লাগে,
এখন বিকাল ৩:০০ কি ৩:৩০ টা
রোদ নিজের রুমের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে, নিলা পিছন থেকে রোদকে জড়িয়ে ধরে,
রোদ নিলার দিকে ফিরে নিলাকে জড়িয়ে ধরে, ফুপিয়ে কেঁদে উঠে,
নিলা রোদের মাথায় হাত রাখে তাঁরপর বলে,
নিলা: রোদ শান্ত হ, যে তোর না আর যে তোকে কখনো ভালোই বাসেনি,তার জন্য কষ্ট পাস না, অতীত ভুলে, বর্তমান আর ভবিষ্যৎ সুন্দর করে তোল,
রোদ কাঁদতে কাঁদতে বলে, আচ্ছা অতীত ভুলে যাওয়া, কি এতোটাই সহজ, চাইলেও কি আমরা অতীত ভুলতে পারি,

নিলা কিছু বলে না, রোদ আস্তে আস্তে শান্ত হয়,
নিলা রোদকে একটা সুন্দর লাল রঙে শাড়ি পড়িয়ে, সুন্দর করে সাজিয়ে দেয়, নিলা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে, রোদের দিকে, নিলা রোদকে উদ্দেশ্য করে বলে,
নিলা: জানু তোকে যা লাগছে নাহ, ছেলে পক্ষ আজকে দেখে তোকে আজই না বিয়ে করে নেয়,।
রোদ মলিন হাঁসে, তার বুকের ভিতর যেনো তোল পাড় শুরু হয়ে গেছে, ইচ্ছে করছে চিৎকার করে কাঁদতে কিন্তু সে পারছে না,

পাত্র পক্ষ অনেক আগেই এসে গেছে, ড্রয়িং রুমে বসে আছে, নিলা রোদকে নিয়ে আস্তে আস্তে রুম থেকে বেড় হয়, সিঁড়ি দিয়ে নামছে, রোদ আস্তে সালাম দেয় রোদকে সোফায় বসায়, রোদ মাথা নিচু করে বসে আছে, টুকটাক প্রশ্ন করছে সেই সব উত্তর দিচ্ছে রোদ, ছেলে, ছেলের মা বাবা আর বোনরা দেখতে এসেছে, বাড়ির সবাই আছে এখানে নাই শুধু শুভ্র, ছেলের মা সবার সামনে বসেই বলেন, আমাদের মেয়ে পছন্দ হইছে,ভারি মিষ্টি মেয়ে রোদ,
আরাফ চৌধুরী কে উদ্দেশ্য করে বলেন, আকাশের মা, এখন ছেলে মেয়েকে একটু আলাদা কথা বলতে দিন, আর আমরা বিয়ের দিন ক্ষন নিয়ে কথা বলছি,

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ৮

আরাফ চৌধুরী রোদকে উদ্দেশ্য করে বলেন,
আরাফ চৌধুরী : রোদ মা তুমি আকাশ কে নিয়ে উপরে যাও, রোদ উঠে দাঁড়ায়, আর সিঁড়ি দিয়ে হাঁটা ধরে, আর পিছু পিছু আকাশও যায়,
শুভ্র ছাদে আসছিলো, সিগারেট খেতে খেতে,ছাদে এসে অপ্রকাশিত কিছু চোখে পড়ে রাগে চোয়াল শক্ত করে আছে শুভ্র, রাগে নিজের চুল চেপে ধরে…

বাঁধনহারা প্রেম পর্ব ১০

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here