বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ৩১

বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ৩১
ইশরাত জাহান

মনিটরের ‘বিপ বিপ’ শব্দ ছাড়া আর কোনো শব্দ নেই।শোভা সাদা চাদরের নিচে নিঃসাড় পড়ে আছে। নাকের উপর অক্সিজেন মাস্ক হাতে স্যালাইন চলছে আর পাশে দাঁড়িয়ে আছে দর্শন।অসহায় ও ভীত চাহনি ভেতরে একটা তীব্র যুদ্ধ চলছে।হঠাৎ শোভার চোখের পাতা সামান্য কাঁপে।দর্শন দেখা মাত্রই ঝুঁকে আসে।চোখে ভয় আর আশা একসাথে নিয়ে ডাক দেয়, “শোভা?”

শোভার চোখ খুলতে একটু সময় লাগে।আলোটা চোখে লাগে তাই চোখ সরু করে ফেলে।প্রথমে কিছুই বুঝে উঠতে পারে না।ধীরে ধীরে নিজেকে সামলে প্রশ্ন ছুঁড়ে, “আ আমি আপনি কোথায়?”
“তুমি অসুস্থ তাই হাসপাতালে।আমি এখানে আছি তোমার পাশে।তুমি ঠিক আছো এখন?ভালো লাগছে কি?”
দর্শনের গলা ভারী শোনালো।শোভা তাকায় দর্শনের দিকে।এই মানুষটার মধ্যেকার নরম ভাবটা শোভার চোখে চিনতে না পারার এক অদ্ভুত হালকা ঘোলাটে ভাব।আচমকা অদ্ভুত প্রশ্ন,“আপনি পরিস্থিতি থেকে পালালেন না কেন?”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

কথাটা এমন যেনো শোভার বিপদেই দর্শন পালিয়ে যায়।আসলেই তো এমনটা শোভার মনে গেঁথে রাখার মত।কেন বিয়ের পর চলে গেলো দর্শন?সে তো দায়ী ছিল না শুধু বিয়েটাকে মানতে চায়।তারপরও তো যদি সম্পর্ক নাই রাখতে চায় তাহলে চারটা বছর কেন একা ভুগলো শোভা?দর্শনের দিকে এমন চাহনি দিয়েই রাখে।
দর্শনের চোখ নিচু হয়ে যায়।হাতে চেপে ধরে শোভার হাতটা যেটা বরাবরই একদিন ছাড়িয়ে গিয়েছিল তার হাত থেকে।জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বলে,“চলে গিয়েছিলাম কিন্তু ফেরা ছাড়া উপায় ছিল না।ওই সময়টা যেমন মস্তিষ্ক ঠিক ছিল না এবার কিন্তু এমন আমিটা আর নেই।শোভা নামক নারীটি আমাকে বদলে দিলো।”
শোভা কিছু বলে না।তার চোখে পানি টলটল করে ওঠে কিন্তু গড়িয়ে পড়ে না।মৃদু হেসে বলে,“আপনি আমাকে বাঁচাতে এসেছিলেন?”

একটা সরল প্রশ্ন।শিশুর মতো সোজাসাপ্টা।দর্শন নিজেও মৃদু হেসে বলে,“না।”
অতপর ঝুঁকে দর্শন ফিসফিস করে,“তোমাকে হারানোর ভয়ে এসেছি।”
শোভা চোখ বন্ধ করে।এবার আর পানি আটকে থাকে না।
মনিটরের শব্দ একটুখানি বেড়ে যায়।নার্স তাড়াতাড়ি ভেতরে ঢোকে দর্শনের উদ্দেশে বলে,“দয়া করে বাইরে যান।পেশেন্টের বিশ্রাম দরকার।ডাক্তার পাঁচ মিনিট সময় দিয়েছিল।”
দর্শন উঠে দাঁড়ায় কিন্তু শোভার হাতটা ছাড়ে না।নার্স আবার বললে সে ধীরে ধীরে হাত ছাড়ে।আর একবার তাকিয়ে বেরিয়ে যায় আইসিইউর বাইরে।বাইরে দাঁড়িয়ে কাঁচের দরজা দিয়ে দেখছে।দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা দর্শন দেখে শোভার চোখে আবার সেই পুরনো অভিমান।কিন্তু এবার তার নিচে এক ফোঁটা শান্তি।শোভা জানে এবার সে আর একা নেই।বিভিন্ন পরিস্থিতির সাথে তার জীবনসঙ্গী মোকাবিলা করবে তার হাত ধরে।

শোভাকে নিয়ে এক সপ্তাহ পর বাসায় ফিরেছে দর্শন।গাড়ি থেকে নামিয়ে ধীরে ধীরে তাকে ঘরে তুলল।শোভাকে ঘরে নিয়ে গিয়ে বালিশে হেলান দিয়ে বসাল।শোভা কাঁধে একটা চাদর জড়িয়ে চুপচাপ তাকিয়ে আছে জানালার দিকে।দর্শন হালকা গলায় বলল,“কষ্ট করে ওষুধটা খাও।আমি তোমার জন্য খাবার আনছি।”
শোভা মুখ ফিরিয়ে নিল কিছু বলল না।নাক সিটকে আছে।ঔষধ তার সহ্য হয়না।দর্শন পাশে বসে মুখের সামনে চামচটা ধরল।কপাল ভাঁজ হয়ে আছে।শোভা অন্যদিকে ফিরে আছে দেখে আবারও বলে,“কি হলো খাও না কেন?”

“ঔষধ তিতা।মুখে নিলেই গলা অব্দি তেতো হয়ে আসে।”
“কিন্তু খেতে তো হবেই।”
“আমি খাবো না।”
“তোমার শরীরে আঘাত অনেক।ব্যাথা কমাতে হলে খেতেই হবে।”
“ধুর!খাবো না।”
“এমন জেদ করো কেন?তুমি জানো না আমি তোমাকে নিয়ে কতটা ভয় পেয়েছিলাম!এখন শরীরের বিষ ব্যাথা কমাতে ঔষধ না খেলে সুস্থ হবে নাকি?তুমি যদি ভেবে থাকো আমি আদিখ্যেতা করবো তাহলে ভুল।আমার রাগ কিন্তু এখনো আমার সাথেই আছে।”

শোভা ভয় পেলো দর্শনের কর্কশ কন্ঠে।ধীরে মাথা নাড়ল শান্ত কণ্ঠে বলে,“আমার ক্ষুধা নেই।”
“তবুও খেতে হবে তোমাকে।”
শাসনের সুরে বলে দর্শন।বাইরে দাঁড়িয়ে কপাল চাপড়ে দাদাজান বলেন,“কোথায় একটু বউয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে ভালোবাসা দেখিয়ে খাইয়ে দিবে,তা না করে শাসন করে।ওড়ে এটা বউ হয়,তোর অফিসের কর্মচারী না।একবার বউ রেগে যাক দেখবি স্বামীর রাগ কোন জানালা দিয়ে পালায়।”
দিজা মুখ টিপে হেসে বলে,“তাও তো তোমার রাগী নাতি যত্ন নিতে শিখেছে।”
“হ্যাঁ,ওই আর কি কোনমতে।”

শোভা ঔষধ খেলো।দর্শন বলে,“আমি খাবার নিয়ে আসবো।চুপচাপ খেতে হবে।”
বলেই শোভার মাথায় কাপড় দিয়ে ঢেকে দিল।এখন সবাই আসবে তার সাথে দেখা করতে।শোভা মুখে কোনো ভঙ্গি দেখালো না।শরীর ভালো নেই যে।
দাদাজান হালকা কাশি দিয়ে ইঙ্গিত করেন তিনি বাইরে দাঁড়িয়ে।দর্শন জানায়,“ভিতরে আসো।”
দাদাজান ঢুকতেই দিজাও ঢুকলো।দর্শন বাইরে চলে গেলো।শোভা সুযোগ বুঝে বলে,“দাদাজান আমার কিচ্ছু খেতে ইচ্ছা করছে না।আপনার নাতি জোর করছে শুধু।গাল তিতা খাবো কিভাবে?”
“এমন করলে তো হবেনা।আমার নাতির সাথে যুদ্ধ করতে হলেও খেতে হবে।কারণ গায়ে শক্তি না থাকলে যুদ্ধ করবে কিভাবে?”

“সুস্থ হলে নাহয় খেয়ে দেয়ে শক্তি বানিয়ে যুদ্ধ করবো কিন্তু এখন খেতে ইচ্ছা করছে না।”
দাদাজান এবার থমকে গেলেন।মনে মনে বলে, “এ দেখছি আমার গিন্নির মত আলগা পিঁড়িতে গলে না।তাইলে আমার নাতির দোষ নেই।আজকালকার মেয়েরা একটু পটু বেশি।আমার নাতিই ঠিক আছে।”
দিজা ভ্রুকুটি করে বলে,“কি হলো দাদু?কি ভাবছো?”
“তোমার ভাবী খেতে চাইছে না তাই।”
“ভাইয়া আছে তো জোর করেই খাওয়াবে।”
শোভা অনুরোধ করে বলে,“কিছু খেতে গেলেই বমি আসে।এই নিয়ে যাই মুখে দিয়েছি সব বমি করে ফেলে দিয়েছি।আর পারছি না।”
দর্শন থালাটা হাতে নিয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে ছিল। শোভার কথা শুনে মুখ গাম্ভীর্যের সাথে খুললো,“এসব নাটক বন্ধ করো!নিজের শরীর নিয়ে এমন ঢং আমার পছন্দ না।”
শোভা শান্ত গলায় মনক্ষুন্ন হয়ে বলল,“আমার খেতে মন চাইছে না।”
দাদাজান নাতবউয়ের কষ্ট বুঝে বলেন, “ওওও দাদুভাই এমন করতে নেই।বউকে একটু ভালোবাসা দিয়ে যত্ন নিতে হয়।”

দর্শন ভ্রু কুঁচকে বলে, “বউ কি তোমার নাকি আমার?”
দাদাজান বিচলিত চোখে তাকালেন।ঢোক গিলে বলেন,“তোমার কি মনে হয় সংসার নিয়ে আমার ধারণা কম?ভুলে যেও না আমারও বউ ছিল তার সহায়তায় তোমার বাবা ফুফুরা পৃথিবীর মুখ দেখেছে।”
দাদাজানের কথা শুনে দিজা জিহ্বায় কামড় দেয়।দর্শন চোখ রাঙিয়ে বলে,“বুড়ো হয়েছে কিন্তু আক্কেল হয়নি।”
দাদাজান কেটে পড়লেন দ্রুত সাথে দিজাও।এখন যা হবে ওটা স্বামী স্ত্রীর ব্যাপার।উনি থাকা মানে লজ্জার ব্যাপার।শোভার কথা শুনে এবার দর্শনের কণ্ঠ কঠিন হয়ে উঠল,“তোমার মন চাইছে না?আমি যদি রেগে যাই তখন?আমি যদি বলি এখনই খাবে তাহলে খাবে, না হলে আমি কিন্তু থাপরে গাল লাল করে খাওয়াবো?”
শোভা চুপচাপ তাকিয়ে রইল।চোখে পানি টলমল করছে।দর্শন এগিয়ে এল।চামচটা তুলে ধরল মুখের সামনে।মনে মনে বলে,“নিজের শরীর নিয়ে এমন অবহেলা করতে দিও না আমাকে,শোভা।আমি যদি রাগ করি সেটা তোমার ভালো চেয়ে করি।তুমি যদি অসুস্থ হও সহ্য করতে পারিনা আমি।”

শোভা মাথা নিচু করে থাকল।আর কিছু বলল না। দর্শন নিজের হাতে চামচ তুলে দিল।এইবার শোভা আর বিরোধ করল না।মুখে নিলো খাবার।গাল তিতা তাই কষ্ট হলো খেতে। কয়েক গাল খেয়ে গলায় হাত দিয়ে ওয়াক করে ওঠে।দর্শন প্লেট পাশে রেখে শোভার কাধে হাত রাখতেই শোভা গরগর করে বমি করে দেয়।বমি সব মেখে গেলো বিছানায় সাথে দর্শন শোভার দুজনের গায়ে।শোভা আতকে উঠে বলে,“ইচ্ছা করে হয়নি।”
দর্শন শোভার হাত ধরে বলে,“রিল্যাক্স।আমি কিছু বলছি না।”
শোভাকে পাঁজাকোলা করে উঠিয়ে ওয়াশরুমে নিয়ে যায়।শোভা এখনও বমি করে।ওখানেই জ্ঞান হারায়।এটা মাঝে মাঝেই হচ্ছে।শরীর অতিরিক্ত দুর্বল তাই।দর্শন নিজের দিকে একবার তাকিয়ে নাক সিটকালো।শোভাকে ওয়াশরুমে রেখে ঘরে এসে কল দেয় দিজাকে।দিজা উপরে আসতেই দর্শন জানায়,“বিছানা পরিষ্কার করতে হবে।”
দিজা মাথা নেড়ে বলে,“আমি খালাকে পাঠাচ্ছি।ভাবী কোথায়?”

“ওয়াশরুমে।”
দর্শনের গায়ে বমি দেখে দিজা ঘাবড়ে গিয়ে বলে,“আমি পরিষ্কার করে দিচ্ছি ভাবীকে।তুমি দিদার ভাইয়ের ঘরে গিয়ে গোসল করে নেও।”
“লাগবে না।আমি করছি সব।তুই খালাকে পাঠিয়ে দে।দ্রুত করবি।ওকে পরিষ্কার করেই নিয়ে আসব।”
দিজা ছুটে গেলো।দর্শন আলমারি থেকে নিজের ও শোভার জন্য কাপড় নিয়ে চলে গেলো।খালা মানে বাসার কাজের বুয়া এসে বিছানার চাদর পাল্টে চলে যায়।দর্শন ওয়াশরুমে এসে শোভার গায়ে পানি ঢালে।বিপত্তি ঘটে শোভার শরীর থেকে ওড়না সরানোর সময়।দর্শন ওড়নাটা ধরছে কিন্তু শোভার শরীর থেকে সরাতে পারছে না।নিজের হাত শক্ত করে শান্তনা দিয়ে বলে,“নিজের ওয়াইফের ওড়না সরাতে এত সময় নিলে সংসার এগোবে কিভাবে?কাম অন দর্শন!ইউ হ্যাভ টু ডু ইট।”

নিজেকে নিজে বলে প্রায় পাঁচ মিনিট সময় নিয়ে ওড়না সরালো।অবশেষে ওড়না সরাতে পেরে নিজেকে মনে হলো বিশ্বযুদ্ধ জয় করেছে সে।শোভার গালে পানি দিয়ে মুখটা পরিষ্কার করে দেয় নিজ হাতের সাহায্যে।হাত ও গলার কাছে পানি ঢালে যেনো সব পরিষ্কার হয়।অতঃপর গোসল করিয়ে দেয়।নিজের শরীর থেকেও শার্ট খুলে বালতিতে রাখে।তাড়াতাড়ি নিজের গায়ে পানি ঢেলে যেনো শান্তি পায়।এতক্ষণ শরীরের ভিতর গিনগিন করে উঠেছিল।এখন নিজেকে পরিস্কার লাগছে।নিজের শরীরের ভেজা প্যান্ট পরিবর্তন করতে যেই পিছনে তাকালো দেখে শোভা অজ্ঞান হয়েই আছে কিন্তু তাও লজ্জা পায়।এই প্রথম লজ্জা পেলো দর্শন।যার কারণে শোভার ওড়না দিয়ে শোভার ঘুমন্ত চোখ ঢেকে দিলো।অজ্ঞান মেয়েটার চোখ ঢেকে দিয়ে সে নিজের প্যান্ট পাল্টে নিলো!তারপর শোভার দিকে ফিরে ওড়না সরিয়ে নেয়।এবার পালা শোভার পোশাক পাল্টে দেওয়া।যেটা সম্ভব না দর্শনের দ্বারা।এবার ভাবছে,“দিজাকে নিচে পাঠিয়ে দেওয়াটাই ঠিক হয়নি।”

আবার বাইরে গিয়ে কল দেয় দিজাকে।উপড়ে এসে দিজা বলে,“কিছু লাগবে ভাইয়া?”
“ওকে একটু চেঞ্জ করে দে।”
দিজা ভিতরে ঢুকে শোভার জামা পাল্টে দেয়।বাইরে এসে মিটমিট হেসে ওঠে।যেই দর্শন তাকালো দিজা হাসি থামায়।দর্শন বলে,“বালতিতে কিছু জামাকাপড় আছে ওগুলো ওয়াশিং মেশিনে রাখ।আমি পরিষ্কার করে নিবো।”
দিজা বালতি এনে বলে,“তোমার ধুতে হবেনা আমি খালাকে দিয়ে ধুয়ে নিবো।”
দর্শন কিছু বলতে নিলে দিজা বলে,“খালা অনেক পরিষ্কার করে কাজ করে।আমি দেখেছি।”
দর্শন আর কিছু বলল না। দিজা চলে যেতেই দর্শন ওয়াশরুমে এসে শোভাকে কোলে করে নিয়ে আসে।দরজাটা লাগিয়ে সেও শোভার পাশে শুয়ে পড়ে।এই সাতদিন চোখের পাতা ঠিকমত এক করতে পারেনি দর্শন।ঘরে ঢুকে কল দিলো তুহিনকে।তুহিন ধরতেই দর্শন জানায়,“তোর ভাবীকে আজ নিয়ে এসেছি বাসায়।”

“ভাবীর যত্ন নিস।”
“হুমমম,কিন্তু তুই আমাকে না জানিয়ে চলে গেলি কেন?”
“শিক্ষক মানুষ আমি।বুঝতেই পারছিস ছুটি বেশি পাইনা।”
“আচ্ছা ঢাকায় গিয়ে কথা হবে।”
কল কেটে দর্শন গা থেকে শার্ট সরিয়ে এসির পাওয়ার বাড়িয়ে দিলো।গরম বেড়েছে খুব।অন্যান্য জায়গার থেকে যশরেই বেশি গরম থাকে।এসির কারণে ঘরটা ঠান্ডা হয়ে আসে।ঘুম আসছে দর্শনের।পাশ ফিরে শোভার দিকে চাইতেই শোভার মুখটা দেখে।গায়ের ওড়না ঠিক নেই।একপাশ হয়ে আছে।দর্শনের দৃষ্টি শোভার উপর।আচমকা কিছু একটা ইঙ্গিত দেয় দর্শনের মস্তিষ্কে।ধীর কণ্ঠে শোভার কানের কাছে বলে,“অজ্ঞান অবস্থায় একটা চুমু দিলে কি অপরাধ হবে?”

বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ৩০

কিছুক্ষন নিরব থেকে আবার বলে,“কিই আর হবে? বউ তো আমারই।”
কথাটা নিজেকে সাহস জোগাতে বললেও শোভার ধারে আসার মত মনোবল পাচ্ছে না।অবশেষে দ্রুত দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে শোভার নিকটে ঠোঁট এগিয়ে আনে কিন্তু শোভার মুখের কাছ থেকে সরে যায়।আবারও আনতে নেয় ঠোঁট কিন্তু এগোতে পারেনা।এভাবেই কিছুক্ষণ চলতে থাকে কিন্তু দর্শন পারল না তার বউকে সামান্য একটা চুমু দিতে।সময়ের হিসাব করলে এভাবে করতে করতে প্রায় ত্রিশ মিনিট চলে গেলো।দর্শন ব্যর্থ তার বউকে প্রথম চুমু দিতে।অবশেষে নিজের হার মেনে শোভার শরীরের উপর কাঁথা দিয়ে নিজেও সেই কাঁথার মধ্যে ঢুকে ঘুম দেয়।

বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ৩২

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here