বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ৩৫
ইশরাত জাহান
গোসল সেরে মাথায় হিজাব দিয়ে নিচে নামে শোভা।দিদার উঠে চলে যায়।তার কল এসেছে।শোভা নিচে নেমে পারুল বেগমের নিকট দাঁড়ায়।পারুল বেগম শোভার মুখে হাত রেখে বলে,“নিজের প্রতি একটু যত্নশীল হ এবার।”
শোভা মাথা দুলিয়ে লক্ষী মেয়ের মত জানায়,“আচ্ছা।”
পারুল বেগম খাবার নিয়ে আসেন।দুজনের জন্য টেবিলের উপর প্লেট রেখে দর্শনের উদ্দেশে বলেন,“আয় বাপ একটু খেয়ে নে।”
দর্শন উঠে দাঁড়াতেই দাদাজান রসিক সুরে বলেন,“বউকে মানি না কিন্তু বউ না খাওয়া অব্দি নিজেও খাবো না।যত্তসব ঢং!”
দর্শন সূক্ষ্ম দৃষ্টি দিয়ে দেখে বলে,“তোমার আসলে চাই টা কি?”
“তুমি শুধু মনোযোগ দিয়ে সংসার করো এটাই চাই।”
“এখন কি অমনোযোগ দিয়ে আছি?”
“মনোযোগ নেই এটাই জানি।”
দর্শন ফোস করে একটা নিশ্বাস নিয়ে চলে যায়।খাবার নিজের প্লেটে নেওয়ার আগে শোভার প্লেটে দেয়।দাদাজান দেখে সোফায় বসা অবস্থায় আয়েশের সাথে গাচ্ছেন,
“গোলেমালে গোলেমালে পীড়িত করো না
গোলেমালে গোলেমালে পীড়িত করো না ।
ও যে পিরিতি কাঁঠালের আঠা,
ও আঠা লাগলে পরে ছাড়বে না ।
ও যে পিরিতি কাঁঠালের আঠা,
ও আঠা লাগলে পরে ছাড়বে না ।
গোলেমালে গোলেমালে পীড়িত করো না
গোলেমালে গোলেমালে পীড়িত করো না ।”
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
দর্শন মাথা ঘুরিয়ে দাদাজানের পানে চেয়ে ক্ষিপ্ত কণ্ঠে বলে,“তোমার কি আর কোনো কাজ নেই?”
দাদাজান মুখ বেকিয়ে বলেন,“আমার কাজ আছে কি নেই তা দিয়ে তোমার কি?”
“এখন আমার পিছনে পড়ে আছো কেন?”
“আগে কি তোমার সামনে লেগে ছিলাম?”
“খোঁচা মেরে গান গাইবে না।”
“খোঁচা কোথায় মারলাম!আমি তো আমার প্রিয় গানটা গাইলাম।”
“আমি বুঝিনা তোমার নাটক!”
“তোমার বুদ্ধি আছে?”
“দাদাজান!”
দাদাজান কিছু বলতে নিবেন পারুল বেগম থামিয়ে বলেন,“ওদেরকে খেতে দিন আব্বাজান।আপনার নাতিকে রাগাতে হবে না আর।মেয়েটাও তো লজ্জা পাচ্ছে।”
দাদাজান এবার শোভার উদ্দেশে জানান,“বেশি লজ্জা পেতে হবে না নাতবৌ।অতিরিক্ত লজ্জা পেলে আমার নাতি আবার তোমাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিবে।আমার যে নাতি আমি তাকে হরে হারে চিনি।”
দর্শন অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে রেখে খাবারে মন দেয়।এদিকে দাদাজান টিভি দেখতে শুরু করেন।
খাবার শেষে দর্শন বাইরে গেলো।শোভা বসে আছে ছাদে।সাথে আছে দিজা ও পারুল বেগম।তিনজনে মিলে ছাদে বসে গল্প করছে আর শুকনো মরিচের বোটা ছাড়াচ্ছে।এগুলো রোদে শুকাতে দেওয়া ছিল।আলসেমির জন্য বোটা ছাড়ায়নি পারুল বেগম।তিনজনে মিলে হাতে হাতে কাজ দ্রুত শেষ করে নিচ্ছেন এখন।এগুলোই মিলে নিয়ে গুড়ো করে খাবেন।একপাশে হলুদ শুকোতে দেওয়া আছে।এগুলো সব দাদাজানের গ্রামের বাড়ি বরিশাল থেকে আনা।দাদাজানের বড় ভাই সেখানে থাকেন।এই খেত খামারের দিকটা তারাই দেখাশোনা করেন।এমনকি তাদের নিজস্ব ব্যবসা আছে।দাদাজানের ভাই বরিশালে এখনও রাজত্ব করার অধিকার রাখেন।তার কথায় চেয়ারম্যান অব্দি ওঠাবসা করে।
দাদাজান তার বউকে নিয়ে এখানে আসেন শহরে বড় কোম্পানি খোলার উদ্দেশে।এখানেই তাদের মশলার কোম্পানি করা।এই যে শুকনো মরিচ ও হলুদ এসব মশলার গুঁড়া তাদের কোম্পানির নামে তৈরি হবে।তারপর দোকানে দোকানে পাঠানো হবে আবার কয়েকটা সুপার শপে।দেশীয় আভিজাত্য বজায় রেখেই তারা খাঁটি মশলার গুঁড়া বানিয়ে বেশ ভালই নাম করেছেন।পারুল বেগম কয়েকটা প্যাকেট দেখিয়ে শোভাকে বলেন,“তোর ভাই-ভাবীকে কিছু দেবো দেবো করে দেওয়া হচ্ছে না।আব্বাজান বলছে এবার থেকে মাসের মশলাগুলো তোদের বাড়িতে কিছু দিবেন।খাঁটি খাবারের স্বাদ পাবে।”
শোভা প্যাকেট দেখে বলে,“আমরা তো এই মশলাই কিনে খাই।আমাদের ওদিকটায় এগুলোই চলে বেশি।মানুষ দোকানে গেলেই এই কোম্পানির মশলা খোঁজে নাকি।ভাইয়া বলল।”
“আব্বাজান বেশ ভালই উন্নতি করেছে।দর্শন যে কোন দুঃখে নিজের কোম্পানি খুলতে গেলো!এটাকেই বড় করা যেতো।”
“সমস্যা নেই।ছোট ভাই তো আছে দাদাজানের কাজে সাহায্য করার জন্য।”
দিজা মুখ বেকিয়ে বলে,“দিদার ভাইয়া দেখবে কোম্পানি!ও নিজেকে ঠিকভাবে রাখতে পারেনা আবার কোম্পানি সামলাবে।”
“ছেলেটা ইদানিং খুব কাজের হয়েছে।”
পারুল বেগম প্রশংসা করলেন।শোভা মৃদু হাসলো। দিজা নিজেও খুশি হয় কিন্তু ভাব দেখিয়ে বলে,“হলেই ভালো।”
গোডাউনের ভেতরটা অন্ধকার আর স্যাঁতসেঁতে। পুরনো কাঠের গন্ধ,ধুলো আর কোথাও কোথাও ইঁদুরের ডাক দেওয়া শব্দ শোনা যাচ্ছে।মাঝখানে একটা চেয়ারে বাঁধা অবস্থায় বসে আছে জবরুল আহমেদ।চোখে আতঙ্ক, ঠোঁট শুকিয়ে গেছে।
তাকে কালকেই জেল থেকে বের করানো হয়েছে কিন্তু মুক্তির আনন্দ পাওয়ার আগেই অচেনা লোকজন ধরে এনে এখানে আটকে ফেলেছে।কে এনেছে এটাই জানেন না তিনি।
গোডাউনের ভারী লোহার দরজা কড়মড় শব্দ করে খুলে গেল।ভেতরে ঢুকল দর্শন।চোখে তার ঠাণ্ডা অথচ জ্বলন্ত প্রতিশোধের আগুন ফুটে উঠেছে।ভিতরে ঢুকে একে একে অস্ত্রগুলো মেঝেতে সাজিয়ে রাখল।প্রথমে লম্বা ধারালো ছুরি তারপর লোহার রড,ব্লেট আর শেষে রিভলবার।
দর্শন ধীরে ধীরে তাকালো জবরুল আহমেদের দিকে।অতঃপর তার সামনের চেয়ারে এক হাঁটুর উপর আরেক হাঁটু রেখে বসে বলে,“আমাদের আবারও দেখা হলো।”
জবরুল আহমেদ ভয়ে ভয়ে বলেন,“আমাকে জেল থেকে ছাড়িয়েছ তুমি?”
“হুমমম।”
“কেন?”
“কারণ শাস্তিটা নিজের হাতে দিবো তাই।”
জবরুল আহমেদ শুকনো ঢোক গিলে তাকালেন।কপাল থেকে ঘাম ঝরছে।লোকটার দিকে এক পলক তাকালো দর্শন।বেশ সুদর্শন তিনি।বয়স বাড়লেও মুখের চামড়াটা এখনও সাদা।মাথাভর্তি চুল আছে।জিম করে হয়তো তাই এই বয়সেও কি না মাছাল দেখা যায়।দর্শন সব দেখে বলে,“আমার আব্বাজানের আপনার মত মাথা ভর্তি চুল ছিলো না।আপনার মত পারফেক্ট বডি ছিলো না।গায়ের চামড়াটাও ছিলো কালো।ওই সময়টায় তার ব্যবসায় একটু লস হয়।সুযোগটা কাজে লাগালেন নিখুঁতভাবে।নিজের সুদর্শন রূপ দেখিয়ে একটা সন্তান থেকে তার মাকে লালোসিত করে নিয়ে গেলেন।আমার ছোটবেলাটা মাতৃস্নেহের বাইরে গিয়ে কাটলো।জানেন আমার মাথায় তখন কি ঘুরতো?”
জবরুল আহমেদ নীরব চাহনি দিয়ে আছে।দর্শন তার দিকে ঝুঁকে অগ্নি দৃষ্টি দিয়ে বলে,“এই জানোয়ারটাকে নিজ হাতে টুকরো টুকরো করে খুন করতে ইচ্ছা করতো আমার।”
শুকনো ঢোক গিলে জবরুল আহমেদ চেয়ে আছে।দর্শন হিসহিস করে বলে,“আমার মা যখন পরপুরুষের হাত ধরে আমার সামনে দিয়ে হাসিখুশি মুখে হেঁটে যাচ্ছিল,চোখ বেয়ে তখন আমার মা হারানোর অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল।তোয়াক্কা করেনি কেউ আমার।আমার বাবার তখন আমাকে দেখে এতটাই দয়া হলো যে সে তার বউয়ের পাপকে মাফ করে দিতে চায়।ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চালায় কিন্তু প্রত্যেক মুহূর্তে তার শারীরিক বৈশিষ্ট্য দিয়ে অপমান করা হয়।আমি বুঝে যাই পুরুষ মানুষের শুধু টাকা না দেহের গঠনে আলাদা সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে হয়।লুক!আমি এখন নিজেকে ফিটফাট রাখতে চাই।আমার বাবার মধ্যে যেসব বৈশিষ্ট্য ছিল যেগুলো আমার মধ্যে রাখিনি।কারণ কি জানেন?কারণ আমি আমার ওয়াইফিকে নিজের কাছে আঁকড়ে রাখব তাই।”
জবরুল আহমেদ কপালের ভাঁজ ফেলে চাইলেন।দর্শন ভয়ংকর হাসি দিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে বলে,“এই রে!আমার দুর্বলতা আমি প্রকাশ করে দিলাম।খুব বড় ভুল করে ফেললাম তো।এখন আপনি টার্গেট করবেন কিভাবে আমার থেকে আমার ওয়াইফিকে আলাদা করা যায়।আমার ক্ষতি করার জন্য একেবারে উঠেপড়ে লেগেছিলেন তো।তাই তো বুদ্ধি খাটিয়ে সবার সামনে আমি আমার দুর্বলতা প্রকাশ করিনি।যেহেতু আপনি জেনেই গেছেন আপনি ধরেই নিন আজ আপনার শেষ দিন।”
জবরুল আহমেদ দর্শনের এই চাহনি ও ধুমকিতে থরথর করে কাপছে।দর্শন আবারও বলে,“প্রতিশোধ নেওয়ার মত ভাবনা মাথায় অনেকবার আসলেও নিতে পারিনি কারণ আব্বাজানের কাছে আমি ওয়াদা করেছিলাম।আপনাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখব কিন্তু আপনি আমাকে ওয়াদা ধরে রাখতে দিলেনই না।আমার ওয়াইফির দিকে নজর দিয়ে যে ভুলটা করেছেন আপনি তার মাশুল গুনতে হবে।”
এবার মুখ খুললেন জবরুল আহেমদ,“আমি তো তাকে চিনতাম না।আমি তোমার বোনকে উঠাতে গিয়েছিলাম।তাকে কেউ উদ্ধার করেছিলো বলে আমার লোক তোমার বউকে নিয়ে আসে।আমি তো জানতামই না তোমার বিয়ে হয়েছে।”
দর্শন হাত মুঠ করে ঘুষি মারল জবরুল আহমেদের নাকে।নাকটা ব্যথায় জ্বলে উঠলো।রাগে গজগজ করে বলে,“আমি আমার ওয়াইফিকে প্রকাশ্যে আনিনি তোর মত কুত্তাদের জন্য।এতদিন অভিনয় করে গেছি সবার সামনে বউকে মানি না বিয়েটাই মানি না এসব বলে।কিন্তু তোর মত কুত্তার কাছেই যখন ধরা পড়লো, তখন তো তোকে আর জীবিত রাখা যায় না।”
“অভিনয়?”
“হ্যাঁ অভিনয়।তোকে যেহেতু শেষ করেই দিবো তাই কিছু সিক্রেট জানাই।আমার শত্রু হলেও তোর কপাল ভালো আমার সিক্রেট শুনে মরবি।”
জবরুল আহমেদ থমথমে চাহনি দিয়ে আছে।দর্শন বলতে শুরু করে,“বিয়েটা আমার কাছে পবিত্র এক সম্পর্ক।যেটা আমি হারাতে চাইনা।কোনোভাবেই না।আমার সংসার আমি আমার বাবার মত করে গড়বো না।এই সংসার হবে ভিন্ন।আমার সংসারের জগৎটা ভিন্ন।যেখানে আমার ওয়াইফি নিজেও আমার দুর্বলতা জানতে পারবে না।জানতে পারবে না তাকে আমি চার বছর আগে থেকেই ভালোবাসি।তার ইনোসেন্ট ব্যবহার তার চলার ধরণ আর আলাদা ব্যক্তিত্ব সবকিছু দিয়ে ভালোবাসি।কিন্তু এই ভালোবাসাকে আমি ধামাচাপা দিয়ে রেখেছি শুধুমাত্র সংসার গড়ার আগে নিজেকে গড়ার জন্য।আমি আমার সংসারে কোনো ত্রুটি রাখবো না।আগে নিজেকে ফিট রাখব তারপর আমার ব্যাংক ব্যালেন্স গোছাবো।সবশেষে সংসারে মন দিবো।বলা তো যায়না অভাব দরজা দিয়ে আসলে কখন আমার সংসার জানালা দিয়ে পালায়।ঠিক তখন তোদের মত হারামী এসে সুযোগটা লুফে নেয়।তাই এতদিন নিজেকে গুটিয়ে রাখি।কিন্তু কিন্তু কিন্তু।তোর মত হারামী আমার সংসার সম্পর্কে না জেনেও সংসারের কাল হিসেবে ফিরে এসেছে।এটা আমার মাথা থেকে সরানো খুব কঠিন।নিজেকে অনেকবার আটকে রেখেছি।রাগ করবো না করবো না করেও রাগ আমার মাথায় আসবেই।আমি নিজেকে দমিয়ে রাখতে পারি না।মাথার মধ্যে কিলবিল করে ওঠে।বুঝাতে পারবো না আমার ঠিক কতটা কষ্ট হয় যখন তোর মত মানুষের কথা আমার মাথায় ঘুরতে থাকে।তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েই নিলাম আজকে তোকে ওপারে পাঠাবো।”
জবরুল আহমেদ আতকে উঠলেন।গর্জন ভয়ানক হাসিটা দিয়ে তার মাথার চুল মুঠো করে ধরে হঠাৎ চ্যাঁচ করে কেটে ফেলল ব্লেট দিয়ে।কয়েক মুহূর্তেই তার মাথা টাক হয়ে গেলো।দর্শনের ঠোঁটে হাসি।তৃপ্তির হাসি।দর্শনের কণ্ঠ গর্জে উঠল,“আমার আব্বাজানের মাথায় টাক ছিল বলে তাকে অপমান করেছিলি।সেই সুযোগে আমার মাকে নিজের করে নিয়েছিলি।”
জবরুল আহমেদ কেঁপে উঠল কিন্তু কিছু বলার আগেই দর্শনের পা তার পেটে সজোরে আঘাত করল। জবরুল কাশতে কাশতে কুঁকড়ে গেল।
দর্শন আরও ঝুঁকে বলল,“আমার আব্বাজানের ভুঁড়ি বেশি ছিল বলে তাকে ঘৃণা করত আমার মা।তাই তোর মতো লোকের সাথে জড়িয়ে আমাদের ছেড়ে চলে গেল।আমি সবসময় ভেবেছি বদলা নেবো কিন্তু নেইনি আব্বাজানের কারণে।আমার শৈশবের বদলা আমি নিতে পারিনি।তোরা সুখে ছিলি আর আমরা ছিলাম দুঃখে।প্রতিটা দিন আমার অপমানে কেটেছিল।কেউ মিশতো না আমার সাথে।আমার মা ছেড়ে চলে যাওয়ায় আমাকে বন্ধুরা ক্ষেপাত। রাগে দুঃখে ওদেরকে মারতাম বলে টিচাররাও আমাকে মারতেন। লাঠি দিয়ে আমার হাতের তালুতে জোরে মেরেছিল কারণ আমি আমার বন্ধুকে মারি।ওই বন্ধুর হয়ে ওর মা যায় কিন্তু আমি অনাথের মত মার খাই।জাস্টিফাই একজন পেলো আমি মার পেলাম।আমার আব্বাজান পঙ্গু বলেই আমার হো যেতে পারলো না স্কুলে।দাদাজান ছিল না। ব্যবসার কাজে বাইরে যায়।সময়টা ছিল আমার জন্য একটা ট্রমা।যেটা শুধুমাত্র তোর কারণে ঘটে।এখন আবার আমার ওয়াইফির দিকে তোর নোংরা নজর!সবকিছুর বদলা আজ এখানেই শেষ হবে।”
মেঝে থেকে রড নিয়ে তার মাথায় দিলো আঘাত। জবরুল আহমেদের চিৎকারে ঘর যেনো ঘুরছে।শব্দগুলো দেয়ালে বারি খাচ্ছে।ফিরে আসছে তারই কানের কাছে।দর্শন দাঁতে দাঁত চেপে হাসে।রড দিয়ে এখনো মারতে থাকে।শোভার মাথায় যেমন আঘাত করা হয় ঠিক তেমন রড দিয়ে দুই আঘাতেই তার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়।মগজের স্থান হতে রক্ত গড়িয়ে পড়ে।এই অবস্থায় যে কেউ ভয়ে অজ্ঞান হবে কিন্তু তৃপ্তি পাচ্ছে দর্শন।এতটাই হিংস্র তার মস্তিষ্ক যে কাউকে খুন করতে হাত কাপছে না।ধারালো ছুরি নিয়ে তার চোখের দিকে এগিয়ে এনে বলে,“এই ছুরি দিয়েই একটু পর ওদের চোখ খুঁচে নিবো যারা আমার ওয়াইফির দিকে লোভাতুর দৃষ্টি দিয়েছিল।”
বাবুই পাখির সুখী নীড় পর্ব ৩৪
বলেই ছুরিটি পাশে রেখে রিভলবার হাতে নেয়।পরপর পাঁচটা শুট তার পেট বরাবর করে।জবরুল আহমেদ এবার ছটফট করছেন।নিজেকে বাঁচানোর উপায় নেই।পাপগুলো সরণ করছেন।চেয়ে আছেন সেই যুবকের দিকে যে ছোটবেলায় ছিল তার বাবার মত সাদাসিধে।এখন কতটা ভয়ানক হয়েছে।তাদের তিক্ত আচরণে এই যুবকের জীবনটা বদলে গেছে।এখন সে হিংস্র মানব।তবে তাকে দেখলে বোঝা যায়না।সবাই ধরে নেয় এই যুবক শুধু রাগী ও গম্ভীর।এতটা হিংস্র হতে পারে এটা আড়ালেই আছে।