ভিলেন ক্যান বি লাভার গল্পের লিংক || মিথুবুড়ি

ভিলেন ক্যান বি লাভার পর্ব ১
মিথুবুড়ি

🚩 লাল রঙ আমার খুবই পছন্দ।
🚩 তাই তো এতো রক্তের খেলা।
🚩তাছাড়া তেমন কিছুই না।
🚩তোর রক্ত খুব টানছে আমায়।
‘দৃষ্টিসীমানার শেষাংশ পর্যন্ত ঘন জঙ্গলের আবছায়া। দূর-দূরান্তের গহীন জঙ্গল থেকে ভেসে আসছে বন্য প্রাণীর ভয়ংকর সব হাক-ডাক। ছুটছে লোকটা সরু অন্ধকারে আচ্ছন্ন রাস্তায়। চারিপাশে শুধু লম্বা সারি সারি ঘন গাছ। অন্ধকারে যা দেখতে লাগছে আকাশ ছোঁয়া। শীতল বাতাস বইছে চারিপাশে। অতিবাহিত ঠান্ডা বাতাসেও লোকটার উত্তেজনায় থরথর করে কাঁপতে থাকা ঘর্মাক্ত শরীর থেকে টপটপ করে নিঃসরণ হচ্ছে ঘাম। পায়ের নিয়ে পিষে মিশে যাচ্ছে মৃর্তিকায় ঘামের বিন্দু কণাগুলি। মস্তিষ্ক, নিউরন,শ্রবণ ইন্দ্রিয় ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে সেই ভয়ংকরী বাক্যগুলো।
‘গুমোট পরিবেশেও শোনা যাচ্ছে লোকটার ভারিক্কি ঘন নিশ্বাসের শব্দ। যা বলে দিচ্ছে তার ভিতর কীভাবে গ্রাস হয়ে যাচ্ছে ভয়ে,,, ভয়! মৃত্যুর ভয়। ল্যামপোস্টের নিয়ন রোশনাই আলো ছাড়িয়ে ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ছুটছে বাঁচার জন্য। ঘন গাছপালা ফোকর গলিয়ে এগিয়ে গিয়েছে রাস্তাটি। সুনশান নিস্তব্ধ রাতে আঁকাবাকা রাস্তাটাকে নিজের মৃত্যু চক্রের মতো লাগছে লোকটির কাছে। ভয়াতুর চোখ গুলো আশপাশ আমলে না নিয়েই ছুটে চলছে অবিরাম। জীবন বাঁচানোর এক ক্ষুদ্র প্রয়াস। জঙ্গলের এবড়ো খেবড়ো রাস্তায় অজস্র বার হুঁচট খেলেও থেমে থাকছে না লোকটি । চোখে স্পষ্ট সংকীর্ণতা, উৎকণ্ঠা, উদ্বিগ্নতা। তবুও মনে প্রবল ইচ্ছা বাঁচার।

‘হঠাৎ সামনে একটি গাড়ি দেখতে পেয়ে এক টুকরো আশার আলো জেগে উঠল লোকটির মনে। গাড়ি থেকে কিছু দূর দূরত্বে দাঁড়িয়ে হাঁটুতে ভর দিয়ে হাঁপাতে থাকল। শরীর বেয়ে চুইয়ে চুইয়ে ঘাম ঝড়ছে। বুকের ভিতরের ধুকপুকানি ধীরে ধীরে সহনীয় পর্যায়ে আসতে থাকে। গাড়ির হেডলাইটের কাচের আলোক রশ্মি অনুসুরন করে অবশেষে এক বুক বাঁচার আশা নিয়ে অসাড় হয়ে আসা পা বাড়িয়ে সামনে এগোয়। আকষ্মিক নির্জন জায়গা সোনালী রোশনাই আলোকিত হয়ে যায় চারিপাশ।
‘ঘুটঘুটে আঁধারে আলোর জোছনা তাঁরার মতো দূত্যি ছড়াতে থাকে ।জঙ্গলের ভিতর থেকে সারি সারি কালো মার্সিডিস বেরিয়ে আসে ব্লক করে ফেলে লোকটিকে। মুহুর্তে বদলে যায় জায়গাটির দৃশ্যপট। ইঞ্জিনের কর্কশ শব্দে দু’হাতে কান চেপে ধরে লোকটা। শিরদাঁড়া বেয়ে সরু তরল গড়িয়ে পড়ে লোকটির। অপ্রত্যাশিত ভাবে হাত-পা সজোরে কাঁপতে থাকে। সংকীর্ণ হয়ে থাকা ভয়কাতুরে চোখ গিয়ে ঠেঁকেছে সামনের গাড়ির অদূরে। অনবরত শুকনো ঢোক গিলতে থাকল। শরীর ধীরে ধীরে ছেড়ে দিচ্ছে তার ধারণ ক্ষমতা।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

‘রাতের অন্তিম প্রহর চলমান। রাত জাগা পাখিরাও তখন ক্লান্ত ভঙ্গিতে চোখ বুজে নিয়েছে। সুনশান নিস্তব্ধ স্যাঁতসাঁতে জঙ্গলের মধ্যে ভাগে অবস্থানরত রয়েছে অনেকে। তবুও গুমোট পরিবেশ শোকে গেয়ে উঠল। লোকটির ঘন নিশ্বাসের শব্দ ছাড়া একটা পাতা নড়ার শব্দও হচ্ছে না। এখন বাতাসও যেনো মেপে মেপে বইছে। হঠাৎ সামনে থাকা গাড়িটির হেডলাইট জ্বলে উঠল। উদীয়মান হয় গাড়ির সামনে ফল্ডিং লর্ন চেয়ার দখল করে থাকা এক মানব ছায়া।
‘ যার পা থেকে মস্তক পর্যন্ত কালোতে আবৃত। দু’হাত মুষ্টিবদ্ধ করে স্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করে রেখেছে কর্দম আঠালো, অর্ধ তরল মিশ্রিত মাটিতে। ফলস্বরূপ লম্বা চুলগুলো নিচের দিকে ঝুঁকে রয়েছে। ঘাড় থেকে চুল সরে যাওয়ায় স্পষ্ট ফুটে উঠেছে কানের লতির নিচে তীরের ধনুক আকৃতির ট্যাটু। দু’কানে তিনটে, তিনটে মোট ছয়টি ফুটো করা। EAR LOBD, UPPER EAR LOBE, CONCH। শুধুমাত্র এতেই নয় হাতের পিঠেও রয়েছে ড্রাগনের ট্যাটু করা। অপর হাতের আঙ্গুলীশীর্ষ থেকে দেহাংশে পর্যন্ত গুট গুট করে ইটালিয়ান ভাষায় কিছু লিখা লাইন আকারে।

‘স্তব্ধ গুমোট পরিবেশ হঠাৎ কারোর বিচ্ছিরি হাসিতে কেঁপে উঠল। রুক্ষ কর্কশ গলায় অর্নথক অট্টহাসি গুলো সামনে দাঁড়িয়ে কাঁপতে থাকা লোকটার বুকের ভিতর ঝড় তুলে। তিরতির করে কাঁপতে থাকে লোকটির পাতলা গড়ন। রক্ত চলাচলের মাত্রা অসহনীয় হয়ে মাথায় চাপ দিয়ে ধরে৷ সারি সারি করা গাড়ি থেকে কালো পোশাক পরিহিত গার্ডরা বের হয়ে ঘিরে ফেলল লোকটাকে। সকলের হাতে হাতে বিদেশি অস্ত্র। সামনের গাড়ি থেকে দু’জন শক্তপোক্ত দেহের পুরুষ এসে দাঁড়ায় ফল্ডিং লর্ন চেয়ারের দু’পাশে টানটান হয়ে।

‘এদের মধ্যে একজন দেখতে ঘুটঘুটে কালো। কালো কুচকুচে লোকটার টাক হেডলাইটের আলোতে চিকচিক করছে। আকৃতির বর্ণনা অনুসারে লোকটি খুব মোটা। দেখতে তামিল পালোয়ানদের মতো। অপর পাশের লোকটা একেবারেই তার বিপরীত গোছের। ধকধকানো সাদা, সাথে উচ্চতায় কালো লোকটিকে দুই ধাপ ছাড়িয়ে। চেহারার ছাপ বলে দিচ্ছে দেশীয় নয়। চওড়া তমুক চেহারার দু’জনেই শক্ত চিবুকে তাকিয়ে আছে সামনে।
‘ফল্ডিং লর্ন চেয়ারে ঝুঁকে থাকা কালোতে আবৃত মানবটি মাথা তুলে তাকাল। তার সুগভীর, নিকষ নীল চোখ হতে অগ্নিশিখা বিচ্ছুরিত হচ্ছে অযাচিত ক্ষুব্ধতায়। ভয়ে অধিকমাত্রায় কাঁপতে থাকল লোকটি। হাঁটু ভেঙে বসে পড়ল দু’হাত জোর করে। শ্যামলা মুখশ্রী আঁধারে ঢাকা পড়ে গিয়েছে সেই কখনই। আশ্চর্যজনক ভাবে হাঁটু কাঁপাকাপির জন্য লোকটা শরীরের ব্যালেন্স ঠিক রাখতে পারছে না। সব গার্ডরা যখন একসাথে মেশিন গান লোড করল সেই শব্দে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল লোকটা। এবার হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করল মধ্যবয়স্ক লোকটি। চেহারায় বয়সের ছাপ স্পষ্ট। তবে শরীর এখনো বেশ ভালোই ধরে রেখেছে।

“ওয়েলকাম টু মাই প্যারাসাইট।”
‘রুক্ষ কর্কশ গলার এই বাক্যগুলো মস্তিষ্ক, নিউরন,শ্রবণ ইন্দ্রিয় ঝাঁঝরা করে দিল লোকটার। থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে মাথা তুলে সামনে তাকাল। নিস্তেজ চোখে দেখল তার যমকে। যে খুবই আয়েশী ভঙ্গিতে পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে। তার শশব্যস্ত বিদুৎ বেগী চাহনি দেখে আবারও ফাঁকা ঢোক গিলল লোকটা। শোকে মুর্ছা যাচ্ছে এমন ভাবে কাদাযুক্ত মাটিতে লুটিয়ে আছে লোকটা। ভয়কাতুরে চোখে আবারো সামনে তাকায়। দেখল ধনুকের তীরের মতো ধারালো আঁখিযুগল। যার প্রতিটি পরতে জেদ,নির্ভয়ে উজ্জ্বল এক ম্রিয়মাণ প্রভা। মানবটি সোজা হওয়াতে ঝুলে থাকা চুলগুলো আবারো কাঁধে ছড়িয়ে পড়ে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে খুবই সুদক্ষ হেয়ার স্টাইলিশের দক্ষ হাতে কাটা হয়েছে চুলগুলো।

‘সামনের থাকা চুলগুলো ট্যাটু খচিত হাতে পিছনে ঠেলে দিলে সিল্কি ঘন কালো চুলগুলো সিঁতি বরাবর দু’ভাগ হয়ে ভ্রুর পাশ্ববর্তীতে ছড়িয়ে পড়ে। গোটা গোটা কয়েকটা চুল আঁচড়ে পড়ল চোখের উপর। ‘জাও’ লাইনের গঠন অনুসারে রুক্ষ পুরুষালি চেহারায় কিছুটা দেশীয় ছাপ থাকলেও লেশাভেসে বহিরাগত লাগছে। গণ্ডদেশের মধ্যে ভাগে শক্ত টানটান অগ্রভাগের অপভ্রংশে ঠিক কোনাকুনি অংশে কাটা দাগ।
‘ক্লিন সেইভ বিধায় অতি ফর্সা চেহারায় নিরেট তীক্ষ্ণ চিবুকে তীরের ফলার মতো ফুটে আছে কাটা দাগটা। ভাসা ভাসা ফোলা নীল রগগুলো যেন হাতের মধ্যে রাজত্ব দখল করে আছে। সিগারেটের বিষাক্ততাই পুড়ে ছারখার হয়ে যাওয়া কালো ওষ্ঠদ্বয়ে বাঁকা হাসি লেপ্টে আছে সেই কখন থেকে। ভ্রু উঁচিয়ে ইশারা করতেই দু’জন গার্ড এসে লুটিয়ে থাকা লোকটাকে টেনেহিঁচড়ে তুলে হাঁটু ভেঙে তার সামনে বসালো। লোকরার কণ্ঠ বুজে এলো কান্নায়। তিরতির করে কাঁপতে কাঁপতে ফ্যাসফ্যাসে আওয়াজে বলল,
“কে আপনি? কি ক্ষতি করেছি আমি?”
থেকে, আবারও হাঁপাতে হাঁপাতে আওড়াল,
”ছেড়ে দিন আমাকে। আমার মেয়ের বিয়ে কাল।”

‘ব্যাথতুর কণ্ঠের গুরুতর কথাটাকেও পৈশাচিক হাসিতে হেসে উড়িয়ে দিল মাববটি। বিধ্বংসী হাসি গুলো বারি খাচ্ছে জঙ্গলের আদি আমলের পুরনো গাছগুলোর সাথে। গার্ডরা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। জবুথবু করে কাঁপছে লোকটার গড়ন এখনও। আকষ্মিক শক্ত হাতে চেপে ধরল লোকটির হাত। নিরবতা ভেঙে হিংস্র প্রাণীর মতো গর্জে উঠল,
“জানতে চাস আমি কে?”
‘লোকটা গলা হতে নির্গত কর্কশ গোঙানির শব্দে দূর্বল গলায় উচ্চারণ করল,”জ্বি। আমি বাঁচতে চাই।”
‘আবারও অট্টহাসিতে ফেটে উঠল বিধ্বংসী মানবটি। মুহুর্তের মধ্যে হিংস্রতার ছাপ ফুটে উঠল তার মুখশ্রীতে। গ্রীবাদেশের নীল রগগুলো ফুলে ফেপে উঠে। তীক্ষ্ণ, গুরুগম্ভীর, অগ্নিস্ফুলিঙ্গের ন্যায় বলল,
”La tua morte”

‘ইটালিয়ানো ভাষায় যার অর্থ “তোর মৃত্যু”। লোকটা বুঝতে পারে না সেই কথার মানে।কিছুর বলার আগেই অতিরিক্ত সাদা লোকটা চেয়ারে অবস্থানরত মানবের হাতে একটি কাচের সিসি দেয়। কর্ক খুলতেই ভিতর থেকে গরম ধোঁয়ার মতো গ্যাস বের হতে থাকে। মানবটি ঠৌঁটের কোণে পৈশাচিক হাসি রেখে বোতলটি উল্টো করে ভিতরে থাকা বিষাক্ত এসিড ঢেলে দিল লোকটার হাতে ৷ সকল গার্ডরা কান চেপে ধরে লোকটার আর্তনাদে শব্দে। পুরো জঙ্গল কেঁপে উঠল সেই চিৎকারে। ঘুমন্ত পাখিরাও সেই শব্দে কেঁপে উঠে ডানা ঝাপটিয়ে ছুটতে থাকে দূর-দূরান্তে। শুধু অভিব্যক্তি স্বাভাবিক তিনজন মানুষের। তাদের চোখেমুখে নেই কোনোরূপ বিস্ময়তা। ভঙ্গিমা স্থির,সাবলীল। লোকটা ছোটার জন্য ছটফট করতে থাকে।

‘বিরক্তে চ’ উচ্চারণ করে চেয়ারে বসা মানবটি। তা দেখে কালো পালোয়ানের মতো লোকটি আগ বাড়িয়ে গিয়ে পিছন থেকে মুখ চেপে ধরল ছটফট করতে থাকা লোকটার। বিছিয়ে রাখা পায়ের উপর পা দিয়ে চেপে ধরলে হাড্ডি ভাঙার মটমট শব্দ বেসে আসে। একশো বাইশ কেজি ওজনের মানুষ, একজন মধ্যবয়স্ক লোকের পায়ের উপর উঠে দাঁড়াতেই কাদাযুক্ত মাটির সাথে মিশে যেতে থাকে লোকটির হাঁটুর নিচের অংশ।
‘ফ্লুরোঅ্যান্টিমোনিক অ্যাসিড এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে শক্তিশালী অ্যাসিড। অ্যান্টিমনি, ফ্লোরিন এবং হাইড্রোজেন প্রধান উপাদান। এটি হাইড্রোজেন ফ্লোরাইড এবং অ্যান্টিমনি পেন্টাফ্লোরাইডের মিশ্রণ যাতে বিভিন্ন ক্যাটেশন এবং অ্যানিয়ন রয়েছে। এটির pH শতকরা সালফিউরিক অ্যাসিডের কুইন্টিলিয়ন গুণ বেশি। এডির প্রতিক্রিয়ায় লোকটির হাত থেকে মাংস গলে খুলে পরছে। গলিত মাং°স গুলো কদমা মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে তৎক্ষনাৎ । মাং°স খুলে পড়তে পড়তে এক সময় হাতের হা°ড্ডি ভেসে উঠল । ছটফটানি কমতে থাকে লোকটার। অসাড় হয়ে আসে শরীর। শরীর ছেড়ে দেয় নিস্তেজ ভঙ্গিতে।

‘মানবটি কালো লোকটাকে ইশারা দিলে সঙ্গে সঙ্গে বলিষ্ঠ হাত দিয়ে লোকটার মন্ডু দু’পাশে স্থিতিশীল ভাবে দু’বার গুড়িয়ে আচানক সর্ব শক্তি ব্যয় করে এক টানে ঘাড় থেকে মন্ডু আলাদা করে ফেলল। নিমিষেই দেহ থেকে পরাণ পাখি উড়াল দেয় দূর আকাশে। ছটফটানোর সুযোগও পায়নি লোকটি।গলার ফি/নকি গিয়ে গরগর করে রক্ত বের হতে থাকে। তাজা লাল তরল উষ্ণ রক্ত গিয়ে ছিটকে পড়ল পৈশা/চিক আত্মার মানবটির মুখে।
‘ফর্সা অবয়ব রক্তের অতলে ঢাকা পড়ে গেল। সাদা লম্বাটে লোকটা টিস্যু এগিয়ে দিলে কুটিল হাতে টিস্যু নিয়ে মুখের রক্ত মুছে নিল মানবটি। চোখেমুখে লেপ্টে আছে হিংস্রতার ছাপ। শক্ত চোখে চেয়ে থাকল মাটিতে পড়ে থাকা নিথর দেহের দিকে। অতঃপর উঠে দাঁড়ায় মানবটি চিরায়ত গম্ভীর অবয়ব নিয়ে। দেখা যায় উচ্চতায় অধিক হওয়া সাদা লোকটাও তার মানবের কাঁধ বরাবর। কালচে কালো ঠোঁট নাড়িয়ে চিরায়ত গম্ভীর গলায় বলল মানবটি,
”খুব সুন্দর ভাবে প্যাকেট করে লাশটা পাঠিয়ে দেওয়া হোক।”

‘সাদা লোকটি মাথা নাড়িয়ে কোটের ভিতর থেকে আইপ্যাড বের করে, তাতে গভীর দৃষ্টি রেখে বলল,
”বস সকাল ছয়টায় ফ্লাইট আছে। বাকি কাজগুলো এখানকার লোকরা সামলিয়ে নিবে।”
‘প্রত্যুত্তর করে না মানব’টি। ইতিমধ্যে গার্ডরা লাশটি নিয়ে অন্য গাড়ির ডিঁকিতে তুলে ফেলেছে। কালো লোকটা এসে ডোর হ্যান্ডেলে টান দিয়ে ডোর ওপেন করে দিলে লোকটি গিয়ে আয়েশী ভঙ্গিতে গাড়িতে বসল। সাদা লোকটি গিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসল,পাশের সিটে কালো লোকটি। টিস্যু দিয়ে হাতের,মুখের রক্ত মুছতে থাকে। ডিরেকশনের জন্য চেয়ে থাকলে প্যাসেঞ্জার সিট থেকে মানবটি জলদগম্ভীর কণ্ঠস্বর ভেসে এলো,
”নিজের হাতে সব-কয়টা শেষ করে যাবো এবার।”
‘আর কিছু বলতে হয়নি। মাথা নাড়িয়ে গাড়ি স্টার্ট দিল সাদা লোকটির। মোড় নিল লোকালয়ের উদ্দেশ্য।

‘ভুবন আলো করে সূর্যের আলো ফুটে উঠলেও সূর্যমুখীর ন্যায় গোল বৃত্তের চারিপাশ পাতার মতো গুট গুট করে সাজানো সূর্য এখনো মেঘের আড়ালেই চাপা পড়ে আছে। মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। আকাশ যেন আজ ভেঙে পড়েছে একদম। একটানা তিনঘন্টা যাবত বৃষ্টি হচ্ছে। এখনও থামার কোনো সম্ভাবনা লক্ষ করা যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে অনেক রাস্তাঘাটে পানি জমে রাস্তা ব্লক হয়ে গিয়েছে। চাইলেও জোরে গাড়ি চালাতে পারছে না ন্যাসো । পাশে বসে বিরক্ত হাঁসফাঁস করছে লুকাস।

‘ন্যাসা একজন ইটালিয়ান নাগরিক। ছয় ফিট এক ইঞ্চির ন্যাসা বর্তমান যুগের মেয়ের ক্রাশ কনফেশনে অলওয়েজ টপে থাকে। বলিষ্ঠ দেহের সাথে দেখতেও খুবই আকর্ষীণ এবং ফিটফাট। তেত্রিশ বছরের ন্যাসো এখনো দেখতে তাগড়া যুবকের মতোই ছিমছাম। দৈহিক গঠন অনুযায়ী রোমান পুলিশের মতো লাগলেও জরিয়ে আছে অন্যায়ের সাথে আষ্টেপৃষ্টে । আগে আন্ডারগ্রাউন্ডে ড্রাগ ড্রিলার ছিল। ন্যাসোর শুটিং স্কিল দুর্দান্ত সেই সাথে খুবই সুক্ষ্ম বুদ্ধিমত্তার অধিকারী। আট বছর কালো ব্যবসার আড়ালে থাকা ন্যাসোর নামে ছিল না কোনো পুলিশ ফাইল। মানুষ মারার হাতও তার খুবই চালু। খুব সুন্দর ভাবেই গড়ে তুলেছিল কালো ব্যবসার সাম্রাজ্য। তবে এখন আর আড়ালে নেই, প্রকাশ্যে স্মাগ্লিং করে। তবে প্রসাশন এর বিরুদ্ধে কোনো স্টেপ নিতে পারে না। কারণ এখন মাথার উপর আছে শক্ত একটা হাত। মালিক থেকে পি.এ হলেও লাভের কমতি নেই বিজনেসে । পি.এ এর পাশাপাশি চার বছর যাবত নিয়োজিত আছে রয়্যাল বডিগার্ড হিসেবে।

‘লুকাস তামিল নাড়ুর নাগরিক। তাই দেখতে এতো কালো আর পালোয়ানদের মধ্যে। জন্মসূত্রেই পাওয়া এই গায়ের রঙ। উপর দিয়ে চেহারা যতোটা ভোলাভালা ভিতর থেকে ঠিক ততটাই নৃশংসতায় ভরা। পালোয়ানের মতো শরীর দিয়ে পিষে ফেলে যেকোনো মানুষকে মুহুর্তের মধ্যে। খুন করতে একবারের জন্যও হাত কাঁপে না। তার খুনের প্রতিটা বর্ণনা সাধারণ মানুষের ঘাম ছুটাতে বাধ্য। অতি নৃশংস ভাবে খুন করে মানুষকে। এককালীন বক্সার ছিল। জাতিয় পুরষ্কারও পেয়েছে তিনবার। তবে এখন পাঁচ বছর যাবত রয়্যাল বডিগার্ড হিসেবে নিযুক্ত তাদের বস ” রির্চাড কায়নাদ ” এর আন্ডারে।

‘বৃষ্টির পানির কারণে অনেক গাড়ি আঁটকে গিয়েছে সড়কে। তাই মেইন রোড ব্যবহার না করে গাড়িতে থাকা গুগল ম্যাপের সাহায্যে বাইপাস রোডে টার্ন নেয় ন্যাসো। এখনও আকাশ গলিয়ে অঝোরে বৃষ্টি পড়ছে। সরু গলি ধরে আবাসিক এলাকায় গাড়ি ঢুকতেই অকস্মাৎ টায়ার পাংচার হয়ে যায়। হঠাৎ গাড়ি থেমে যাওয়াতে থমকে যাওয়াতে রিচার্ডের মস্তিষ্ক টা ফিরে গেলো তার পৈশাচিক আত্মায়। যাকে সংক্ষিপ্ত করে অনেকেই ‘রিদ’ বলে। ফ্রন্ট মিররে রির্চাডের ক্ষিপ্ত চেহারা দেখে ফাঁকা ঢোক গিলল লুকাস। ন্যাসো উদ্বিগ্ন হয়ে দ্রুত বলল,
“বস এক্ষুনি গাড়ি এসে পড়বে। কল দিচ্ছি আমি।”

‘তপ্ত শ্বাস ফেলে হাত ঘড়িতে সময় দেখে নিল রির্চাড। কপালের মধ্যভাগে বিরক্তিকর ভাঁজের রেখা। ট্যাব নিয়ে কিছু ঘাটতে থাকে। কিছু মুহুর্ত পার হলো এভাবেই। পরদেশীয় হওয়ার এই আবহাওয়ায় লুকাস মানিয়ে নিতে পারলেও ন্যাসো পারছে না। গলা বসে গিয়েছে। খুশখুশে কাঁশিতে গলা শুকিয়ে আসে। সারা গাড়িতে খুঁজেও কোথায় পানি পাওয়া গেল না। বৃষ্টির কারণে আশেপাশেও কাউকে দেখা যাচ্ছে। সময় তখন ছয়টার কাটায়। কেউ তখনও বাসার গেইট খুলেনি। রির্চাড নিক্ষিপ্ত ভঙ্গিতে ট্যাবে কিছু দেখছিল। দৃষ্টি গভীর। লুকাস এদিকসেদিক তাকিয়ে দেখতে থাকে। হঠাৎ চোখ আটকায় দূরে দাঁড়িয়ে ভিজতে থাকা এক রমনীর উপর। চোখ বড় বড় হয়ে যায় লুকাসের। অবিশ্বাস্য স্বরে আওড়াল,

“লাল চুল।”
‘বুঝতে পারল না ন্যাসো। ভ্রু কুঁচকে বলল,”কিহ?”
“ভূত _’ বলে চেঁচিয়ে উঠল লুকাস। ন্যাসো লুকাসের কথায় কোনো প্রত্যুত্তর না করে ঠোঁট কামড়ে ভ্রু গুছিয়ে বাইরে তাকিয়ে ওর দৃষ্টি অনুসরণ করল। রির্চাড নিজেও ট্যাব থেকে মাথা তুলে ওদের দৃষ্টি অনুসরণ করে বাইরে তাকাল।
“বাংলাদেশী মেয়েদেরও লাল চুল হয়?”

‘লুকাস ন্যাসো একে-অপরের দিকে চাওয়াচাওয়ি করে। ন্যাসোর চোখেও কিছুটা বিস্ময়। রির্চাডের সাথে অনেকবারই বাংলাদেশে আসা হয়েছে তার। তবে এমনটা আগে কখনও দেখেনি। পরপরই ভাবল হয়তো কালার করা। রির্চাড ওদের কথায় একপলক সেদিকে তাকিয়ে আবার চোখ নামিয়ে নিল। লুকাস ডাকল মেয়েটিকে। কলাপাতা রঙের কামিজ পরিহিত উনিশের এক নারী প্রথম সকালে চির চিত্তে নির্বিঘ্নে বৃষ্টি বিলাস করছিল। হঠাৎ কারোর ভারিক্কি কণ্ঠস্বরে কেঁপে উঠল তার পাতলা গড়ন। ওড়না দিয়ে ভালোভাবে ঢেকে নিল সমস্ত শরীর। পিছন ঘুরে তাকালে আরেক বার ধাক্কা খেল লুকাস, ন্যাসো দুজনেই।
‘লুকাস নিজেকে কিছুটা ধাতস্থ করে আবারও ডাকল মেয়েটিকে। মেয়েটি পিছন ঘুরে দেখল একটা দামি কালো গাড়ি। উইন্ডো মিরর নামানো। একটা কালো লোক বারবার হাত নাড়িয়ে ডাকছে। আশেপাশে তাকায় মেয়েটা। অজানা ভয়ে ভিতরে চেপে ধরল। পরবর্তীতে আবার বৃষ্টির দিনে হয়তো বিপদে পড়েছে ভেবে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গেল। মেয়েটা যতো আগাচ্ছে লুকাস ন্যাসোর বিস্ময় ততো বাড়ছে। আড়ষ্ট মেয়েটা দৃঢ় পায়ে এসে দাঁড়াল গাড়ির সামনে। চোখের পাতাগুলো কাঁপছে। লুকাস কিছু বলার জন্য ঠৌঁট ফাঁক করে তার আগেই শোনা যায় মেয়েটির হিম শীতল ঠান্ডা গলা।

“জ্বি ভাইয়া, কিছু বলবেন?”
‘মেয়েটির মুখে স্পষ্ট বাংলা শুনে ভিতরের প্রশ্ন ভিতরেই চেপে দেয় লুকাস। এহেন ধিমি কন্ঠে উৎসুকভাবে মাথা তুলল রির্চাড। তাকাল গুটিয়ে থাকা মেয়েটির দিকে। আর সাধারণ মেয়েদের মতো দেখতে না এই মেয়েটি। মাথার চুলগুলো লাল। বৃষ্টিতে ভিজে জুবথুবু। দুধে-আলতা গড়নের সাথে কলা পাতা রঙের জামাটা একদম আষ্টেপৃষ্টে লেপ্টে আছে। ঠান্ডায় রক্তজবার অঞ্জলির ন্যায় ঠৌঁট জোড়া কাঁপছে। রিচার্ড
এক অদ্ভুত দৃষ্টিতে দেখতে থাকল মেয়েটির পা থেকে মাথা পর্যন্ত। তার কপালের ভাঁজ দু’টো ক্ষনিকের জন্য বিলীন হয়ে গেল। তবুও অতিব্যক্তি অত্যন্ত স্বাভাবিক, গম্ভীর।
“এতো সকালে বৃষ্টিতে ভিজছ কেন? সর্দি লেগে যাবে তো।”
‘লুকাসের কথার মেয়েটা চোখ তুলে তাকায়। একটু দরদ মাখা কথায় ভিতর থেকে ভয় গুলো যেন কিছুটা হলেও কমে গেল। নিচু গলায় বলল
“আমার চাঁচি এখনও ঘুমে,সেই সুযোগেই পালিয়ে এসেছি।”

‘কথাগুলো বলার সময় মেয়েটার চোখগুলো হেসে উঠল। এহেন কথা শুনে কিঞ্চিৎ আশ্চর্য হলো ন্যাসো। ঠৌঁট কামড়ে গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করল,
“পালিয়ে এসেছো মানে?”
“আমাকে বের হতে দেয় না তো,তাই। কিন্তু বৃষ্টি আমার খুব পছন্দের তাই লুকিয়ে আসতে হলো”। ‘এইটুকু বলে সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটা জিভ কামড়ে ধরল। মেয়েটার বাচ্চাসুলভ আচরণ দেখে হেসে ফেলল লুকাস। ন্যাসো সন্দেহবাচন দৃষ্টিতে চেয়ে চিরায়ত গম্ভীর গলায় বলল,
“বের হতে দেয় না মানে ?এই মেয়ে তুমি কি হ্যারেসমেন্টের স্বীকার?”
‘আকষ্মিক মেয়েটার চোখে-মুখে আঁধার নেমে এলো। ঘন ঘন দু’পাশে মাথা নাড়িয়ে বলল,” না না তেমন কিছুই না ভাইয়া৷”
“নাম কি তোমার?”
‘ ন্যাসোর সন্দেহবাদিক চোখ দেখে কিছুটা ঘাবড়ে যায় মেয়েটি। মিইয়ে গিয়ে নিচু গলায় বলল,
“এলিজাবেথ ইমরা এরিন।”
“এতো বড় নাম?”
‘লুকাসের কথায় প্রত্যুত্তর করল না মেয়েটা। আবারও কাঁশি শুরু হয় ন্যাসোর। এলিজাবেথ নামের মেয়েটা উদ্বিগ্ন কণ্ঠে বলে,

“ওনাকে পানি দেন?”
‘লুকাস বিরক্তে চ’ উচ্চারণ করে বলল,”আরে পানি-ই তো নেই গাড়িতে।”
“আমি নিয়ে আসছি”। ‘বলে দৌঁড়ে গেল এলিজাবেথ। রির্চাড অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল মেয়েটির ছুটে যাওয়া। মেয়েটাকে দেয়াল টপকাতে দেখে চোখ কপালে উঠে যায় লুকাসের। এতো বড় একটা মেয়ে মেইন গেইট রেখে দেয়াল টপকে যাচ্ছে কেন? কিছু মুহুর্তের মধ্যেই মেয়েটিকে নিয়ে নানান কৌতুহল জেগে উঠল গাড়িতে অবস্থানরত তিন মানবের মনে। কয়েক মিনিটের মাথায় এলিজাবেথ আবারও দেয়াল টপকে ফিরে আসে। হাতে পানি বোতল। গাড়ির সামনে এসে হাঁপাতে থাকল। ন্যাসো পানি খেয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করল। সাহায্যের বিনিময় হিসেবে ন্যাসো ম্যানিব্যাগ থেকে হাজার টাকার নোট বের করে দিলে মেয়েটার চেহারার রঙ বদলে যায় সঙ্গে সঙ্গে। পানির বোতল না নিয়েই দ্রুত চলে যায়। চোয়াল ফাঁক হয়ে যায় লুকাসের এইটুকু মেয়ের এতো আত্মসম্মান দেখে। অথচ একটু আগেও কীভাবে বাচ্চাদের মতো আচরণ করছিল।
‘কিছু মুহুর্ত পরই একজন গার্ড গাড়ি নিয়ে হাজির। তারা গিয়ে নতুন গাড়িতে গিয়ে বসল। ন্যাসো গাড়ি চালাতে চালাতে বলল,

“মেয়েটার নামের মতোই অদ্ভুত চালচলন।”
“ঠিক !! কতো কঠিন নাম। বাঙালি মেয়ে,একটা সহজ নাম দিলে হতো না?”
“তুমি দিয়ে আসলেই পারতে।”
“আজব! আমি কি নাম দিব?”
“রেড।”
‘দু’জনেরই তেরছা নজরে একে-অপরের দিকে চাওয়াচাওয়ি করল কৌতুহলবশত। তবে কোনো শব্দ করল না। রির্চাড এক দৃষ্টিতে জানালার বাইরে তাকিয়ে আছে। দু’জনের কেউ-ই বুঝতে পারল না হঠাৎ রির্চাডের ‘রেড’ নাম বলার পিছনের কারণ কি।

“আমাদের ঘুমের সুযোগ নিয়ে নষ্টামি করতে গিয়েছিলি সকাল সকাল নাহ?”
‘বলে আর একটা থাপ্পড় বসালো সবিতা বেগম। এবার ছিটকে গিয়ে ফ্লোরে পড়ল এলিজাবেথ। ভেজা চোখে চাঁচির দিকে তাকায় এলিজাবেথ। ইবরাত এলিজাবেথের চাচাতো বোন সোফায় বসে মিটিমিটি হাসতে হাসতে দেখতে থাকে এলিজাবেথের করুণ হালত। চাচাতো ভাই শিহাব হামি দিতে দিতে রুম থেকে বেরিয়ে এলো। নিচে পড়ার কারণে এলিজাবেথের বুক থেকে ওড়না সরে গিয়েছে। শিহাবের কুৎসিত চাহনি দেখে তড়িঘড়ি করে নিজেকে ঢেকে নেয় এলিজাবেথ। সবিতা বেগর এলিজাবেথের চুলের মুঠি ধরে টেনে তুলল ওকে। ইকবাল সাহেব এসে ছাড়িয়ে নেয় এলিজাবেথকে। চোখ গরম করে তাকালেন স্ত্রীর দিকে।
“মারছো কেন ? সকাল সকালই অশান্তি না করলে দিন শুরু হয় না তোমার,নাহ ?”
‘চেঁচিয়ে উঠল সবিতা বেগম,”একদম চোখ রাঙিয়ে কথা বলবে না। নিজের আদরের ভাগ্নি যে কি করে সেই খরব রাখো?”

“কি করেছে এলিজাবেথ?”
“নষ্টমি করতে গিয়েছে সকাল সকাল।”
“মুখ সামলে কথা বল সবিতা।”
“নিজের ভাগ্নিকে জিজ্ঞেস করো সকাল সকাল কেন গোসল করেছে? কোন নাগরের কাছে গিয়েছিল আমার ফ্লিজ থেকে পানির বোতল নিয়ে?”
‘হতভম্ব হয়ে গেল ইকবাল সাহেব। লজ্জায় ঠুকরে কেঁদে উঠল এলিজাবেথ। গালে আঙুলের ছাপ স্পষ্ট।
ইকবাল সাহেব কিছু বলতে যাবে তখনই শোনা যায় বাইরে অনেক গুলো গাড়ির হর্নের শব্দ। সবিতা বেগম এলিজাবেথের দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে মাথা নাড়াতেই দৌঁড়ে ভিতরে চলে যায় এলিজাবেথ। শিহাব দেখতে গেল কে এসেছে। সদর দরজার কাছে গিয়ে দেখতে পেল গেইটের সামনে সারি সারি করে পাঁচটা মার্সিডিস দাঁড় করানো। গাড়ির ভিতর থেকে কালো পোশাক পরিহিত দলে দলে লোক বেরিয়ে আসছে। সকলের হাতে অস্ত্র। হতবাক হয়ে সে।

‘গার্ডরা বের হয়ে দু’পাশে সারি হয়ে দাঁড়িয়ে মাঝখানে রাস্তা তৈরি করে দিল। লুকাস ডোর খুলে দিলে ভিতর থেকে রির্চাড বেরিয়ে আসে। পা থেকে মাথা পর্যন্ত পুরো কালোতে আবৃত। বুকের সামনে কালো শার্টের দু’টি বোতাম খোলা। ফলস্বরূপ সুবিস্তৃত,শক্তপোক্ত সুঠোম বুক উদীয়মান। গার্ডদের সারি হয়ে তৈরি করা রাস্তার মধ্যে দিয়ে হেঁটে সরাসরি এসে দাঁড়ায় ইকবাল সাহেবের সামনে। শুকনো ঢোক গিলল ইকবাল সাহেব। জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে অকপটে প্রশ্ন করল,
“কে আপনি?”
“I am a gangster….

ভিলেন ক্যান বি লাভার পর্ব ২