ভিলেন ক্যান বি লাভার পর্ব ২

ভিলেন ক্যান বি লাভার পর্ব ২
মিথুবুড়ি

‘মেঘলা আকাশ ঝাঁপিয়ে রৌদ উঠছে। সোনালী আলোতে চিকচিক করে বৃষ্টির পানিগুলো। রৌদ্রময় বেলা তখন এগারোটা। রোদের তৎপরতায় বুঝার অবস্থা নেই যে কিছু মুহুর্ত আগেও ভুবন কাঁপিয়ে বৃষ্টি পড়েছে। চারিপাশে ঝলমলে আলো দূত্যি ছড়ালে মধ্যরাতের অমাবস্যার ন্যায় আঁধার নেমে এসেছে শান্তিসুধা নিকেতনে। সবিতা বেগম ইবরাতকে বুকের সাথে মিশিয়ে রেখেছে। জবুথবু করে কাঁপছে গড়ন তাদের। মাথার উপর গান পয়েন্ট করে রেখেছে কালো পোশাক পরিধান করা গার্ড। শিহাবকে পিঠমোড়া ভান দিয়ে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়েছে। পিঠের উপর পা দিয়ে মাথায় গান পয়েন্ট করে রেখেছে গার্ড। ইকবাল সাহেব হাঁটু ভাঙা অবস্থায় অসহায়ের মতো নির্জীব চোখে দেখছেন স্ত্রী সন্তানের করুণ হালত। চোখ ঘুরিয়ে রান্না ঘরের দিকে তাকাল।

‘এলিজাবেথ রক্তাভ মুখশ্রীতে ভেজা চোখে আড়াল থেকে দেখছে। চোখের পাতা কাঁপছে এলিজাবেথের। এখুনি বুঝি ছুটে আসবে। ইকবাল সাহেব মৃদু মাথা নাড়িয়ে বোঝায় এদিকে না আসতে। সকল গার্ডরা একসাথে গান লোড করলে সেই শব্দে বুক শুকিয়ে আসে সকলের। মৃত্যুর প্রস্তুতি নিয়ে চোখ বুঝে ফেলল ইকবাল সাহেব দম বন্ধ করে। চিৎকার দিয়ে ছুটে আসে এলিজাবেথ। দু’হাতে জাপ্টে ধরল চাচাকে। এলিজাবেথ বেরিয়ে আসতেই ঠৌঁটে বাঁকা হাসি ফুটে ওঠে রির্চাডের। গার্ড টেনেহিঁচড়ে ইকবাল সাহেবের থেকে সরিয়ে নেয় এলিজাবেথকে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

‘ইকবাল সাহেবের একতলা বিশিষ্ট বাড়ির পাঁচ সদস্যের পরিবার। সকলে ভয়ে তটস্থ । সম্পূর্ণ বসার ঘর দখলে নিয়ে নিয়েছে কালো পোশাক বেশধারী গার্ডরা। সকলের হাতে হাতে কালো বিদেশি অস্ত্র। রির্চাড সোফায় পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে আয়েশী ভঙ্গিমায়। লুকাস আর ন্যাসো দু-পাশে টানটান হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বুক বেঁধে। শক্ত চিবুক তাদের। পরনে কালো ওভার সাইজ কোট যাতে লম্বা দৈহিক লুকাস আর ন্যাসোকে দানবীয় বিধ্বংসী লাগছে।
‘তরুণ বয়সী রক্ত গরম শিহাব চেঁচিয়ে উঠল পরিস্থিতি না বুঝেই। সবিতা বেগম ছেলেকে হাজারবার চোখে ইশারা দিয়ে চুপ করতে বললেও চুপ করে না শিহাব। গুমোট পরিবেশে শুধু শোনা গেল শিহাব উগ্র কণ্ঠস্বর।
“আমাদের এভাবে বন্দী করে রেখেছেন কেন? কি চাই ?ভালোই ভালোই ছেড়ে দেন বলছি নাহয় পুলিশ ডাকব এখুনি।”

‘হঠাৎই রির্চাডের অট্টহাসিতে কেঁপে উঠল শান্তিসুধা নিকেতন। বিদঘুটে হাসির ঝংকারে কান চেপে ধরে এলিজাবেথ। চোখের সামনে এলোমেলো ঝাপসা স্মৃতিচারণ হতে থাকে। মাথায় প্রচন্ড চাপ অনুভূত হয়। দুধে-আলতা মুখশ্রী নীল বর্ণ ধারণ করতে থাকে ধীরে ধীরে। দু’হাতে কান চেপে ফ্লোরে মাথা গুঁজে হাঁপাতে থাকে অস্বাভাবিকভাবে। এলিজাবেথের অবস্থা দেখে ইকবাল সাহেব এবার মুখ খুললেন।
“আপনারা কে আমি জানি না। কিন্তু আমাদের এভাবে বন্দি করে রেখেছেন কেন? আমাদের অপরাধ কি ?”
‘এবার হাসি থামাল রির্চাড। চোখ থেকে কালো সানগ্লাস খুলে ফেলল। ন্যাসো হাত বাড়িয়ে দিলে ন্যাসোর হাতে রাখল সানগ্লাস। সানগ্লাস হাতে নিয়ে আবারও সটান ভাবে দাঁড়ায় ন্যাসো। এবার উদীয়মান হলো রির্চাডের সুগভীর, নিকষ সমুদ্র নীল চোখ। দৃষ্টি অনুভূতিহীন, শূন্য অভিব্যক্তি। যাতে নেই কোনো ভাবান্তর। রিচার্ড হাত তুলে লুকাসকে ইশারা দিতেই সামনের ছোট টেবিলে একটা ফাইল রাখল লুকাস। উপরে ক্যাসিনোর লোগো দেখামাত্র শুকনো ঢোক গিলে শিহাব। এতোক্ষণের তেজ মুহূর্তেই মিইয়ে যায়। তা দেখে ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসল রির্চাড।

“টাকা চাই টাকা।”
“কিসের টাকা?”
‘ইকবাল সাহেবের কথায় রির্চাড কোনো প্রত্যুত্তর করে না। ভাবহেলিশ ভাবে সোফায় গা হেলিয়ে দেয়। গার্ড শিহাবের পিঠে পা দিয়ে আরো জোরে চেপে ধরলে ব্যাথায় কুকড়িয়ে ওঠে শিহাব। সবিতা বেগম আদরের ছেলের এই অবস্থা দেখে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে।
“আমার ছেলেকে ছেড়ে দিন। কি ক্ষতি করেছি আমরা আপনাদের?”
‘কোনোরূপ উত্তরের বিপরীতে শিহাবের পিঠে শুধু চাপ বাড়তে থাকে। শিহাব এবার খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে ওর মুখ থেকে সত্যিটা বের করতে চাইছে রির্চাড। অগত্যা এবার মুখ খুলল শিহাব। বিস্ময়কর চোখে তাকিয়ে বলল,
“রয়্যাল ক্যাসিনো আপনার?”

‘এবারও শুধু ঠোঁট বাঁকিয়ে মৃদু হাসল রির্চাড। হাসিটা বরাবরের মতোই দেখা দিল না দন্তপাটে ৷ সোজা হয়ে দুই হাঁটুর উপর কনুই ভর দিয়ে বসল রিচার্ড। দৃষ্টি সরাসরি নিক্ষেপ করল শিহাবের ভয়াতুর চোখে। তীক্ষ্ণ চেহারার নীল চোখের সেই চিরাচরিত চাহনি তীরের ফলার মতো বিঁধে শিহাবের বুকে। রিচার্ডের তামুকের মধ্যে টানটান অগ্রভাগের অপভ্রংশে কোনাকোনি কাটা দাগ ধারালো ছুরির মতো চকচক করছে। মাথা নিচু করে ফেলল শিহাব। ইকবাল সাহেব অবিশ্বাস্য নজরে তাকাল ছেলের পানে।
“তোর ক্যাসিনোতেও যাওয়া-আসা ছিল?”
‘ছেলের নিরবতা দেখে আরো গর্জে উঠল ইকবাল সাহেব। স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে শক্ত গলায় চেঁচাল।
“এই মানুষ করেছো ছেলেকে? লাই দিয়ে দিয়ে তো মাথায় তুলে ফেলেছিলে। নিজের হাতে নষ্ট করেছ ছেলেকে। আমার সম্মানের শিক্ষকতার পেশার টাকা নিয়ে জুয়া খেলতো তোমার ছেলে? একে আমার ছেলে ভাবতেও ঘৃণা হচ্ছে।”

“আহহ !! এখানে কোনো ফ্যামিলি ম্যালো ড্রামা দেখতে আসিনি।”
‘রির্চাডের কথায় গার্ডরা এবার সকলের মাথার সাথে চেপে ধরে গা/ন। ইবরাত মাকে জরিয়ে ধরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। ইকবাল সাহেব ঘৃণিত চোখে ছেলের দিক থেকে নজর ফিরিয়ে নেয়। চোখে ফুটে উঠেছে অসহায়ত্বতা এক পিতার। ঘুরে তাকাল মেঝেতে লুটিয়ে থাকা এলিজাবেথের দিকে। এলিজাবেথের লাল ঘন কেশ ফ্লোরে বিছিয়ে আছে। যার ফলে অবয়ব দেখা যাচ্ছে না। গার্ডরা অদ্ভুব ভাবে চেয়ে আছে এলিজাবেথের দিকে।
‘হঠাৎ রির্চাড কোমরে গুঁজে রাখা শট গান বের করে সামনে কেবিনেটের উপর সাজিয়ে রাখা সিরামিকের ফুলদানিতে শুট করল। টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ল মেঝেতে। কেঁপে ওঠে সকলে আতংকে। গার্ডরা দৃষ্টি সরিয়ে নত দৃষ্টি নিবিষ্ট করে তৎক্ষনাৎ। গুমোট পরিবেশ সবিতা বেগব আর ইবরাতের কান্নায় গরম হয়ে উঠল। শিহাবের নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে পিঠে অধিক চাপ প্রয়োগের ফলে।

‘স্মৃতিচারণ করতে থাকে পুরোনো দিনের । স্বভাবগত ভাবেই ছোট থেকে শিহাব খুবই দস্যি আর বদ। সকল রকম নেশার সাথে জরিয়ে গিয়েছিল এই বাইশ বছর বয়সে। সবিতা বেগম একদম ছেলের নেওটা । শত অন্যায় করলেও কখনো কোনো শাসন করেনি বরংচ ইকবাল সাহেব করতে চাইলে ওনার সাথে ঝগড়াবিবাদ করতো। ছেলে ক কে খ বুঝালে সেটাই মেনে চুপ থাকত। নেশার পাশাপাশি একটা সময় জুয়া খেলায় জরিয়ে যায় শিহাব। প্রথম প্রথম লাভ দেখে ধীরে ধীরে লোভে পড়ে টাকার সংখ্যা বাড়াতে থাকে। কিন্তু পরিস্থিতি বা কপাল যায় বলা হোক,সবসময় আমাদের অনুকূলে থাকে না। লোভ থেকে বের হতে পারেনি শিহাব। এমন করতে করতে একসময় অনেক টাকা ঋীণ হয়ে যায় ক্যাসিনো ম্যানেজারের কাছে। তিনমাস যাবত শুধু সময় চেয়ে আসছে পরিশোধ করে দিবে বলে। তখনও জানত না ক্যাসিনোর মালিক কে। কিন্তু এমটা হবে তা কল্পনাও করেনি শিহাব।

‘এদের নিরবতায় এবার বিরক্ত হয় রির্চাড। বেশি কথা বলা এবং সময় ব্যয় করা দু’টো জিনিসে খুবই স্ট্রিক্ট রির্চাড। হিংস্রতার টানাপোড়ানে ধামাচাপা পড়ে যাওয়া অমানবিক মস্তিষ্কে এসব কান্না নেঁকা কান্না ছাড়া কিছুই মনে হয় না। রাগে কপালের পাশের রগ গুলো ফুলে ফেপে উঠেছে। হিংস্র প্রাণীর মতো গর্জে উঠল রিচার্ড,
“আর একটা সাউন্ড হলে এক্ষুনি মাটিচাপা দিয়ে দিব সবগুলোকে।”
‘সবিতা বেগম দু’হাতে মুখ চেপে ধরল মেয়ের। নিজে দাঁতে দাঁত চেপে যথাসম্ভব চেষ্টা করছে কান্না আটকানোর। ইকবাল সাহেব তপ্ত শ্বাস ফেলে কোনো রকম ভণিতাহীন বলল,”কত টাকা ?”
“পঁচিশ লাখ।”

‘রির্চাড নিরুদ্বেগ ভাব নিয়ে বলল। চোখ কপালে ওঠে যাওয়ার উপক্রম ইকবাল সাহেবের। রক্তাভ মুখে তাকায় ছেলের দিকে। লজ্জায় মাথা তুলে না শিহাব। সবিতা বেগম কান্না মিশ্রিত গলায় ছেলেকে বলল,
“বাপ এটা তুই কি করলি? এতো টাকা কোথায় পাবো আমরা?”
“হয় টাকা নয় জীবন। ইউ হ্যাভ জাস্ট টু অপশন।”
‘সবিতা বেগম এবার ছুটে গিয়ে রির্চাডের পায়ে পড়ল। অঝোরে কাঁদতে থাকে। মাথায় রক্ত উঠে যায় রির্চাডের। তীব্র ঘৃণায় চোখের নীল মনির পাশের সাদা অংশ অগ্নিকুণ্ডের লাল লাবার ন্যায় রূপ ধারণ করে। লুকাস আর ন্যাসোর মতো হিংস্র স্বভাবের দু’জনও ঘাবড়ে যায় এটা দেখে। লুকাস চটজলদি টেনে রির্চাডের পা থেকে সরিয়ে আনে সবিতা বেগমকে। মহিলা আকুতি মিনতি করতে থাকে রির্চাডের দিকে তাকিয়ে।
“আমার ছেলেকে ছেড়ে দাও। তোমার পায়ে ধরি বাবা। একটা মাত্র ছেলে আমার। আমার ছেলের কিছু হয়ে গেলে কি নিয়ে বাঁচবো আমরা?ছোট মানুষ ভুল করে ফেলেছে। কিছুদিন সময় দাও আমাদের। আমরা সব টাকা পরিশোধ করে দিব।”

‘সবিতা বেগমের প্রতিটা কথায় রির্চাডের রাগ তিরতির করে বাড়তে থাকে। হিংস্র জানোয়ারের মতো চোখ বুজে অযথা সিলিংয়ে গুলি করতে থাকে অনবরত। আশেপাশে গাছপালায় অবস্থানরত সকল পাখিও উড়ে গেল গুলির বিকট শব্দে। এবার শোনা যায় এলিজাবেথের হুরহুর করে কান্নার আওয়াজ। কান্নার তালে তালে শরীর কাঁপছে। এলিজাবেথের কান্নার শব্দে নিজের চুল টেনে ধরে ফুঁসতে থাকে রির্চাড। গার্ডরা মাথা নত করে দাঁড়িয়ে আছে তখনও। আকষ্মিক চেহারার রঙ পাল্টে গেল রিচার্ডের। হিংস্রতার ছাপ মুছে গিয়ে ঠোঁটের কোণে ফুটে উঠে পৈশাচিক আত্মার শয়তানী হাসি।

“ঠিক আছে জীবন দিতে হবে না। টাকার বিনিময়ে আমার রক্ষিতা হিসেবে নিয়ে চাই আপনার মেয়েকে।”
‘আঁতকে ওঠে ইকবাল সাহেব। গার্ডকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ছুটে গিয়ে জাপ্টে ধরে ইবরাতকে। ইবরাত তখনও ধ্যানের মধ্যে ছিল। আদৌতেও কোনো কথা তার কানের মধ্যে গিয়েছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ। মন্ত্রমুগ্ধকর একগুঁয়ে দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ন্যাসোর শক্ত তামুকে। বোনের প্রসঙ্গ উঠতেই আবারও গর্জে উঠল শিহাব। চেঁচাতে থাকল।
“আমার বোনের গায়ে একটা কেউ হাত দিলে কুত্তা দিয়ে খাওয়াবো আমি।”
‘রির্চাডের ঠৌঁটের কোণে তখনও বাঁকা হাসি। খানিকটা ঝুঁকল শিহাবের দিকে। হেসে সরু গলায় বলল” আর ইউ সিউর?”

‘অতর্কিত আক্রমণে মাটিতে আবারো লুটিয়ে পড়ল শিহাব। পা থেকে গরগর করে রক্ত বের হচ্ছে। সবিতা বেগন জানপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করছে ছুটে ছেলের কাছে যাওয়ার জন্য। এলিজাবেথ এক কোণে বসে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। তাকিয়ে দেখতে পারছে না সামনের অপ্রীতিকর ভয়ংকর দৃশ্য। কুন্ডলী পাকিয়ে আসা দূর্বল গলায় উচ্চারণ করল,
“ওদের কে ছেড়ে দিন না, কি ক্ষতি করেছে আপনার? ভাইয়া সকালেও তো আপনাকে সাহায্য করেছি আমি।”
‘এহেন গুমোট পরিবেশে এলিজাবেথের হিম শীতল ঠান্ডা গলা যেন এক ফালি উষ্ণ হাওয়া বইয়ে দিয়ে গেল। লুকাস এলিজাবেথের করুণ দৃষ্টি উপেক্ষা করে চোখ ফিরিয়ে নেয়। তাদের মন শক্ত ধাতু দিয়ে গড়া। এই প্রফেশনে নমনীয়তা চলে যায়। এখানে ঠাঁই নেই কোনোরূপ ভালোবাসা, ভালোলাগা, কৃতজ্ঞতা। হিংস্রতা আর উগ্রতা ছাড়া বাকি সকল কিছুই নস্যি তাদের জগতে। এলিজাবেথের কথা শুনে কিরমিরাতে থাকে সবিতা বেগম।
“তার মানে তুই এদের এখানে নিয়ে এসেছিস। অকৃতজ্ঞ নেমকহারাম, এতোদিন আমার নুন খেয়ে আমারই পিঠ পিছে ছুড়ি মারিস।”

“না চাঁচি,বিশ্বাস করো আমি চিনি না ওনাদের। এদের কাউকে চিনি না আমি।”
“আর একটা কথা বলবি না নষ্ট মেয়ের জাত। রূপ দেখিয়ে এদের উসকিয়ে দিয়েছিস আমাদের বিরুদ্ধে।”
“সবিতা চুপ করো তুমি। নিজের ছেলের দোষ এভাবে ওর উপর চাপিয়ে দিতে পারো না তুমি।”
“আমি কি পারি না পারি এটাই আজ দেখাবো।”
‘সবিতা বেগম ওদের থেকে ছুটে গিয়ে চুলের মুঠি ধরে টেনে তুলল এলিজাবেথকে। ব্যাথায় এলিজাবেথের চোখের কার্নিশ ঝাপিয়ে স্রোতের ধারা বইলো। চাঁচির হাত থেকে ছোটার জন্য ছটফট করতে থাকে এলিজাবেথ। গলা হতে নির্গত কর্কশ গোঙানির শব্দে দূর্বল গলায় উচ্চারণ করল,
“আহ !! চাঁচি লাগছে আমার।”

‘হঠাৎ এলিজাবেথ গিয়ে ছিটকে পড়ল রিচার্ডের বুকে। সবিতা বেগম হাত চেপে ধরে মেঝেতে বসে আহাজারি করতে লাগল। ইবরাত ওড়না দিয়ে মায়ের হাত চেপে ধরে। শিহাব রক্তাক্ত পায়ে ঠেঙ্গিয়ে ঠেঙ্গিয়ে মায়ের কাছে যায়। ইকবাল সাহেব দিশেহারা হয়ে পড়ল । স্ত্রী, সন্তান কাকে রেখে কাকে বাঁচাতে? তাল মাতালে পড়ে যায়। চোখের সামনে সকল কিছু ঝাপসা হয়ে আসছে। নিজেকে এতো অসহায় আর কোনোদিন লাগেনি ইকবাল সাহেবের। সারাজীবন সত্যের পথে চলে, হালাল ভাবে জীবিকা নির্বাহ করে শেষে কিনা এই বয়সে এসে এভাবে প্রতিদান দিতে হচ্ছে?

‘রিচার্ডের কপালের রগগুলো ফুলে ফেপে উঠেছে। দু’চোখে দাউদাউ করছে আগুনের লেলিহান। বলিষ্ঠ হাতে এলিজাবেথকে নিজের বৃক্ষপটে চেপে ধরে রেখেছে, অপর হাতে গান। সবিতা বেগমের রক্ত এসে ছিটকে পড়েছে রিচার্ডের নাকে, মুখে। টপটপ করে রক্তে ফোটা পড়তে থাকে গাল বেয়ে, বেয়ে । উষ্ণ রক্তের ফোটা মাথায় পড়তেই ঘোর থেকে বেরিয়ে এলিজাবেথ। কাঁপা কাঁপা হাতে মাথায় হাত রাখল এলিজাবেথ। হাতে রক্ত দেখতে পেয়ে সর্বাঙ্গ শিউরে উঠল। তাকাল নিজের কাঁধে চেপে ধরা রিচার্ডের হাতে। সঙ্গে সঙ্গে ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেয় এলিজাবেথ। ছোটার জন্য বন্দী পাখির মতো ছটফট করতে থাকে। না পেরে ঠুকরে কেঁদে উঠল। কণ্ঠ বুজে এলো কান্নায়। অস্পষ্ট আওয়াজে আওড়ায়,

“ছেড়ে দিন আমাকে প্লিজ। আমার চাঁচি আর ভাইয়াকে হসপিটালে নিতে হবে। দে নিড ট্রিটমেন্ট রাইট নাউ।”
‘লুকাস আর ন্যাসো দু’জনেই বিস্ময়ে হতভম্ব হয়ে গেল। একে অপরের দিকে তেরছা ভাবে তাকাচ্ছে বারবার। দু’জনের চোখ-ই অধিক মাত্রায় বিস্মিত। ঝুলে গিয়েছে চোয়াল। বার বার উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দেখছে রিচার্ডের হাতের বাঁধনে এলিজাবেথকে!_একটা মেয়ে ! রিচার্ডের সুগভীর, নিকষ নীল চোখ হতে অগ্নিশিখা বিচ্ছুরিত হচ্ছে। যা দিয়ে পারলে এখনই ভস্ম করে দিবে সকলকে। এলিজাবেথ টানছে নিজেকে চাঁচির দিকে যাওয়ার জন্য। তবে এক ইঞ্চিও নড়তে পারছে রিচার্ডের বলিষ্ঠ হাতের শক্ত বাঁধন থেকে। হঠাৎ চাঁচির কথায় থমকে গেল এলিজাবেথ। থেমে গেল হাত-পা ছোড়া, ছাড়া পাওয়ার জন্য।

“আপনার রক্ষিতা চাই তো ?ওকে নিয়ে যান দেখুন আমার মেয়ের থেকে কতো সুন্দরী। আমার মেয়েকে নিয়ে যাবেন না দয়াকরে। এই মেয়েকে নিয়ে গেলে আমাদের কোনো অসুবিধে নেই। তবুও আমাদের ছেড়ে দেন। এই মেয়ে আমাদের আশ্রিতা ছাড়া কিছুই না।”
‘মায়ের কথার সাথে তাল মেলায় ইবরাত,”হ্যাঁ নিয়ে যান ওকে!ও আমার বোন না।”
“এসব কি বলছো তোমরা?এলিজাবেথ আমার দায়িত্ব।”
“দায়িত্বের জন্যে নিজের মেয়েকে ভাসিয়ে দিতে চাচ্ছো? কেমন বাবা তুমি।”

‘কিছু মুহুর্তের জন্য দম আঁটকে আসে ইকবাল সাহেবের। চোখ তুলে তাকায় এলিজাবেথের অবিস্মরণীয় চোখে। ইকবাল সাহেবের চোখ থেকে দু’ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ল। এলিজাবেথের মস্তিষ্ক, নিউরন,শ্রবণ ইন্দ্রিয় ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে চাঁচি আর বোনের বলা কথাগুলো। এতোটাও কঠোরতা হয়তো আশা করেনি তাদের কাছ থেকে। পায়ের নিচ থেকে যেন মাটি সরে গেল এলিজাবেথের। নিস্তেজ চোখে তাকিয়ে দেখল চাচার অসহায়ত্বতা। অনুভব করতে পারছে চাচার ভিতরে ভেঙে দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া টুকরো কাচের শব্দ।
“স্বার্থপরের মতো আমি পারব এভাবে এলিজাবেথকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে।”
‘রহস্যজনক ভাবে বাবার কথার সাথে তাল মেলালো শিহাব। পায়ের ব্যাথা চেপে রেখে দাঁতে দাঁত চেপে দূর্বল গলায় বলল,”হ্যাঁ, হ্যাঁ বাবা ঠিক বলেছে।”

‘রিচার্ড চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,”তো তোর বোনকে দে।”
‘ইবরাতকে আরো শক্ত করে বুকের সাথে মিশিয়ে নিল সবিতা বেগম। ভয়ে মায়ের বুকের ভিতর মাথা গুঁজে ইবরাত। সবিতা বেগম এলিজাবেথের দিকে তাকিয়ে ক্ষীণ আওয়াজে বলল,
“মারে ও তো তোর ছোট! তোর ছোট বোন। এভাবে আমার ইবরাতের জীবনটা নষ্ট হতে দিস না। এতো বছর তোকে খাইয়ে পড়িয়ে রেখেছি একটু কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর। আমি তোর পায়ে ধরি মা। আমার মেয়েটাকে বাঁচা।”
‘চোখের পানি গালেই শুকিয়ে গিয়েছে এলিজাবেথের। আর কান্না আসছে না ভিতর থেকে। নিজেকে অনুভূতিহীন, শূন্য লাগছে। এলিজাবেথ নির্জীব চোখে একপকল তাকাল চাচার দিকে। ইকবাল সাহেব দু’পাশে মাথা নেড়ে এলিজাবেথকে না করছে। ফিচলে হাসল এলিজাবেথ। পরপর তাকাল চাঁচির দিকে। তাকাল ভয়ে গুটিয়ে যাওয়া ইবরাতের দিকে। দেখল চাচি কীভাবে আশা নিয়ে চেয়ে আছে এলিজাবেথের দিকে। চোখ বলে দিচ্ছে এলিজাবেথ রাজি হয়ে যা, আমার মেয়ের জীবন বাঁচিয়ে দে। তুই তো আরো আট বছর আগেই মে গিয়েছিস, এবার একেবারেই মরে যা।

“আমি রাজি ।”
‘রক্ষিতা মানে কি আদৌও জানে এলিজাবেথ? নাকি শুধু রাজি হয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল চাচির কাছে। এতো বছর খাইয়ে পড়িয়ে রাখার জন্য। যেটা চাচির ভাষায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।
‘রিচার্ডের চওড়া তামুকে ফুটে উঠল বিজয়ের নৃশংস হাসি। একজন গার্ডের দিকে তাকিয়ে ঘাড় বাঁকিয়ে কিছু ইশারা করলে গার্ড একটা ফাইল এনে রাখল টেবিলের উপর। রির্চাড কোট থেকে কলম বের করে এগিয়ে দিল এলিজাবেথের দিকে। এলিজাবেথ তখনও পর্যন্ত দেখেনি তার মালিক কে। যে তাকে পঁচিশ লাখ টাকার বিনিময়ে কিনে নিল রক্ষিতা হিসেবে। আজ থেকে কেনা গোলাম হয়ে গেল এলিজাবেথ। চাকরানী থেকে দাসী। ফাইলে কি লেখা তা না দেখেই এলিজাবেথ কলম হাতে নেয়। ইকবাল সাহেব ছুটে যেতে চাইল ভাগ্নির কাছে। গার্ডরা আঁটকে দিল ইকবাল সাহেবকে। ভদ্রলোক গলা ফাটিয়ে চেঁচাতে থাকে,
“এলিজাবেথ না ! না মা এমন টা করিস না। তোর চাঁচির কথায় এভাবে নিজের জীবনটা ধ্বংস করে দিস না। নিজেকে নিজে ফেস করতে পারব না আমি। আমার ভাইয়ের অস্তিত্ব এভাবে আমি মুছে দিতে পারব না। আমাকে এভাবে হারিয়ে দিস না মা।”

‘ইকবাল সাহেবের অজস্র আকুতি মিনতি উপেক্ষা করে পেপারে সাইন করে দিল এলিজাবেথ। সাইন করার সাথে সাথে এলিজাবেথের হাত থেকে কলমটা পড়ে গেল। এতোক্ষণ আটঁকে রাখা দম একসাথে ছাড়ল। ঠোঁট কামড়ে কেঁদে ফেলল। সবিতা বেগমের ঠৌঁটে ফুটে উঠে প্রশান্তিময় হাসির অস্পষ্ট ঝলকানি। শিহাব তপ্ত শ্বাস ফেলে মাথা নুইয়ে। ইকবাল সাহেব এলিজাবেথকে বার বার ডাকতে থাকে। কিন্ত সাড়া দেয় না এলিজাবেথ। হাঁটু গেঁড়ে মেঝেতে বসে, টেবিলে মাথা ঠেকিয়ে অঝোরে কাঁদতে থাকে।
‘রির্চাড একটানে পেপার টা নিয়ে ফোল্ড করে ওভার কোটের ভিতরের ওয়েস্ট কোটের পকেটে রেখে দেয় । লুকাস ন্যাসো ছোট ছোট চোখ করে তাকিয়ে আছে। তারা কেউই জানত না এই পেপারের ব্যাপরে। পরবর্তীতে রিচার্ডের কথা শুনে তাদের কপালের ভাঁজ বিলীন হয়ে স্বাভাবিক হলো দু’জনেরই।
“পঁচিশ লাখ টাকার বিনিময়ে কিনে নিলায় এই মেয়েকে আমার সারাজীবনের রক্ষিতা হিসেবে। ডিল ডান, হিসাব ক্লিয়ার৷”

‘বলে এক টানে এলিজাবেথকে পুরুষালি রুক্ষ টানটান কাঁধে তুলে নিল। আর এক মুহূর্তও দেরি না করে গমগমে পায়ে বেরিয়ে গেল তৎক্ষনাৎ। লুকাসের চোখ কোঠর থেকে বেরিয়ে আসবে, আসবে এবার। ন্যাসো খুবই গম্ভীর লোক। খুব সহজেই কোনো কিছু তাকে বিচলিত করে না। রিচার্ডের পিছুপিছু গেল তারা। ইকবাল সাহেব গলা ফাটিয়ে চেঁচাতে থাকে পিছন থেকে। গার্ডের কাছ থেকে ছোটার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে লাগল। এলিজাবেথ দৃষ্টি সীমানার বাইরে চলে যেতেই ব্যর্থ পিতার ন্যায় নিচে বসে ঠুকরে কেঁদে উঠল ইকবাল সাহেব।

‘গাড়ি চলছে হাইওয়ে ধরে। উদ্দেশ্য রিচার্ডের বাগান বাড়ি। প্রতি বছর একবারই দেশে আসে রিচার্ড, আর তখন এই বাগান বাড়িতে উঠে। এলিজাবেথ কাঠের পুতুলের মতো জড়সড় হয়ে বসে আছে। একদৃষ্টিতে বাইরে তাকিয়ে আছে। সেকেন্ডের ব্যবধানে ওদের গাড়ি এগিয়ে চলেছে একের পর এক গাড়ি গুলোকে ছাড়িয়ে। বাইরে তাকিয়ে থাকলেও কিছুই দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না এলিজাবেথের। জীবনের কঠিন হিসাব মেলাতে ব্যস্ত সে। আজ থেকে কারোর রক্ষিতা সে। নতুন জীবন, নতুন সূচনা। যেই জীবনের জন্য এক কাপড়ে বেরিয়ে এসেছে সে। আচ্ছা কেমন ভাবে গ্রহণ করবে এলিজাবেথ সেই জীবনটাকে? বা সেই জীবন কীভাবে ওয়েলকাম জানাবে তাকে নতুন জীবনের সূচনায়?এলিজাবেথ কি আদৌও বুঝতে পারছে রক্ষিতা শব্দের মানে কি?না এখনও ঘোরের মধ্যে পড়ে আছে।

‘ন্যাসো একটু পরপর ফ্রন্ট মিরর দিয়ে দেখছে রিচার্ড কে। যে ট্যাবে খুবই মনোযোগ দিয়ে কিছু দেখছে। ন্যাসো পরপর দেখল পাশে বসে থাকা একটা প্রাণহীন দেহকে, যা নিস্তব্ধতায় ছেয়ে গেছে। এখানে থেকেও যেন এখানে নেই। কোনো এক গহিনে জঙ্গলে হারিয়ে গিয়েছে সেই ছটফটে সত্তাটি, যা সকালেও ছিল। তারা দেখেছে। তবে কারোর-ই সাহস নেই রিচার্ডের কাছে প্রশ্ন করার। হঠাৎ কি এতো জরুরি তোলব ছিল যে পঁচিশ মিনিটের মধ্যে মেয়েটির সব ডিটেইলস বের করে একদম রক্ষিতা বানিয়ে নিয়ে আসতে হলো । যেই মানুষটা নিজের বাসায় একজন ফিমেল মেডও রাখে না।

‘গাড়ি গিয়ে থামল বাগান বাড়ির সামনে। চটজলদি দারোয়ান দৌঁড়ে এসে গেইট খুলে দিল। রিচার্ডের আগমন দেখতে পাওয়া মাত্র সকল গার্ডদের চেহারার রঙ বদলে যায়। ভয়ে তটস্থ হয়ে গেল সকলে। এটা বাগান বাড়ি হলেও আদৌতেও এটা কোনো দিক দিয়ে বাগান বাড়ির ক্যাটাগরিতে পড়ে না। অদ্ভুত ভাবে ডিজাইন করা এই আবাসস্থলটি । নেই কোনো উজ্জ্বল রঙের ছোয়া বা কোনো গাছগাছালি। বাংলো বাড়ির মতো ডুপ্লেক্স বাড়ির সামনে শুধু একটা সুইমিং পুল, তাছাড়া আর কিছুই নেই। প্রধান ফটকের সামনে সারি সারি করে কালো চারটে গাড়ি রাখা।
‘অস্ত্র হাতে গার্ডরা চারিদিকে ঘুরঘুর করছে মাছির মতো। সকলের পা থেকে মাথা পর্যন্ত কালো পোশাক, একই সাথে চোখে কালো সানগ্লাস। দেয়ালের উপর দিয়েও কাঁটাতার দেওয়া চার ফুট উঁচু করে। দৃষ্টি সীমানার ভিতর আর কোনো বাড়ি নেই। লম্বা লম্বা ঘন ঝাড় জঙ্গল ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছে না আশেপাশে । লোকালয় থেকে অনেকটা দূরে এই বাগানবাড়ি। ঘন জঙ্গল পেরিয়ে আসতে হয় এখানে। জঙ্গল থেকে ভয়ানক প্রাণীদের অদ্ভুতুরে আওয়াজ ভেসে আসছে। কেমন গা ছমছমে একটা পরিবেশ।

‘গাড়ি সরাসরি গিয়ে থামল মেইন এন্ট্রেন্সের সামনে। দ্রুত লুকাস নেমে ডোর খুলে দিল। এলিজাবেথ তখনও ধ্যানমগ্ন ছিল। হঠাৎ শক্ত হাতের টান অনুভব করলে হতচেতন হয়ে ফিরল। রিচার্ড হেঁচকা টানে এলিজাবেথে আবারও কাঁধে তুলে নিল। সুবিস্তৃত,শক্তপোক্ত সুঠোম, বলিষ্ঠ দেহের অধিকারী রির্চাডের একহাতই যথেষ্ট এলিজাবেথের নরম তুলতুলে তনু বহন করার জন্য। রিচার্ড এক হাতে এলিজাবেথের কোমর পেঁচিয়ে ধরে পা বাড়িয়ে অগ্রসর হয় ভিতরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে । প্রতিটা লম্বা কদমে কদমে পরনের ওভার সাইজ কোটের মধ্যে ঘর্ষণ সৃষ্টি হয়ে শব্দ তৈরি করছে।

ভিলেন ক্যান বি লাভার পর্ব ১

‘রিচার্ডের শরীর থেকে আসা পারফিউমের ডার্ক স্মেইল এলিজাবেথের কাছে এই মুহুর্তে পৃথিবীর সবথেকে জঘন্য ঘ্রাণ লাগছে। ধীরে ধীরে বুকের ভিতর শুকিয়ে আসছে, অজানা ভয় চেপে ধরে ভিতর। রিচার্ডের প্রতিটা কদমে কদমে বাড়ছে এলিজাবেথের ভয়। খামচে ধরে রিচার্ডের কোট। ভিতরে কামড়ে ধরেছে সংকীর্ণতা। হাত-পা অসাড় হয়ে হতে থাকে। হ্যাঁ এলিজাবেথ ভয় পাচ্ছে এবার। কি হতে চলেছে এলিজাবেথের সাথে__?

ভিলেন ক্যান বি লাভার পর্ব ৩