ভিলেন ক্যান বি লাভার পর্ব ২৫
মিথুবুড়ি
‘কালো রাত পেরিয়ে গেছে দুই দিন। এলিজাবেথের হাতের ক্ষত কিছুটা শুকিয়েছে বটে, তবে ব্যথার টান এখনও মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেয় ঘটনার ভয়াবহতা। নিশি রাত। পুরো শহর নিস্তব্ধ, প্রেমিক যুগল আর নাইট ডিউটিতে কর্মরত ছাড়া সবাই গভীর ঘুমে মগ্ন। একটু অস্বস্তি লাগায় এলিজাবেথ উঠে ওয়াশরুমে গিয়েছিল। কাজ শেষে বেরিয়ে আসতেই চোখ চলে গেল সামনের জানালার দিকে। মুহূর্তেই বুক ধক করে উঠল। পুরো শরীর শীতল হয়ে আসে। জানালার পাশে, অন্ধকারের আবরণে, পিঠ দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক দৈত্যাকৃতি মানব। চোখের পলকে উড়ে গেল সকল ঘুম। সেই ছায়ামূর্তি আস্তে আস্তে মাথা ঘুরিয়ে তাকাল এলিজাবেথের দিকে। ড্রিম লাইটের নিয়ন আলোতে উদীয়মান হলো মানবের চওড়া অবয়ব, ঠৌঁটের কোণে লেপ্টে থাকা শয়তানি হাসি।
” আবার কেন এসেছেন?”
‘ এলিজাবেথলের কণ্ঠস্বরে প্রবল দৃঢ়তার ছাপ। নেই কোনো জড়তা, ভয়। বলিষ্ঠ কায়া নিম্নগামী কদমে সামনে এগোয়। যেন বিন্দু পরিমান তাড়া নেই, আজ সময় শুধুমাত্র এই মুহুর্তের জন্য ধার্য করা। সিগারেটের ধোঁয়ায় পুড়ে যাওয়া কালচে ঠৌঁট এলিয়ে অদ্ভুত হাসি দিল রিচার্ড, যেই হাসিতে নেই কোনো কোমলপ্রাণ। তর্জনী থেকে করে পরপর অনামিকা পর্যন্ত অঙ্গুলি তুলতে তুলতে নাটকীয় ভঙ্গিতে পুরুষালি হাস্কি স্বরে বলল,
” থ্রি রিজন।
~রেড।
~রেড।
~রেড। মাইন ফা*কিং ডার্ক রেড।
‘সেদিন ক্লাবের ঘটনার পর থেকে এলিজাবেথের মনে রিচার্ডের প্রতি ঘৃণা থেকে তিক্ততা আরও গভীর হয়ে উঠে। ওর অবচেতন মন কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না, একজন মানুষ এতটা নিষ্ঠুর আর কুৎসিত কীভাবে হতে পারে। এলিজাবেথ ভালো করেই জানত, সে চাইলেও রিচার্ডকে থামাতে পারবে না। কারণ, রাজার রাজ্যে সর্বোচ্চ ক্ষমতা রাজাই ভোগ করে। তিক্ততায় ভরা কণ্ঠে এলিজাবেথ তিরিক্ষি মেজাজে বলল,
” তো আমার কাছে কেন আসলেন? কি চাই?”
‘ রিচার্ড খুবই দৃঢ় কদমে আরেক পা বাড়ালো। অধরকোণ একপাশে এগিয়ে বলল,”জাস্ট ফর এ টুয়েন্টি-মিনিট ফ্রেঞ্চ কিস”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
‘ চোয়াল শক্ত হয়ে দাঁত চেপে ধরল এলিজাবেথ, গমগমে গলায় বললো,” এখুনি বেরিয়ে যান অসভ্য লোক।”
‘ রিচার্ডের আজ খুব খুশমিযাজ, ঠৌঁট কামড়ে হেসে বলে,
” সভ্য আমি কখনোই ছিলাম মেরি জান। ওকে কিস লাগবে না। আমায় একটু আদর কর।”
‘ চমকপ্রদভাবে এলিজাবেথ রিচার্ডের দিকে তাকাল। চোখে চোখ পড়তেই ধীরে ধীরে রিচার্ডের অবয়বটা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে নিল। না, রির্চাডের চোখে কোনো চিহ্ন নেই নেশার। তবে? এইমাত্র বলল যে_ “জান?” এলিজাবেথ নিজের কানে বিশ্বাস করতে পারছে না কোনোভাবেই। হয়তো তার শ্রবণশক্তিতেই কিছু ভুল হচ্ছে, এমনটা ভাবতে লাগল। কিন্তু ঠিক তখনই রিচার্ডের কথার ঝঙ্কারে এলিজাবেথের ভাবনার সুতো ছিঁড়ল। দ্বিতীয়বারের মতো অবাক হয়ে গেল, কারণ এবারও এলিজাবেথের কাছে কিছুই পরিষ্কার হচ্ছিল না।
” এলি জান।”
‘ এলিজাবেথ অবাক হয়ে হুজুগেই উত্তর দিয়ে দিল,
” হুহ?”
” আমার আদর কর ।”
‘ এতোক্ষণে গিয়ে স্তম্ভিত ফিরে পায় এলিজাবেথ। নিঃশ্বাস ভারী হয়ে উঠল, কথা বলতে গিয়েও আটকে যাচ্ছিল শব্দগুলো গলায়। শুষ্ক ঢোল গিলে কোনোরকমে বলল,
” আপনি কি আজ কিছু খেয়েছেন?”
‘ রিচার্ড পকেটে হাত ঢুকিয়ে ক্রমে ক্রমে ধীর গতিতে এগিয়ে আসতে লাগল। পিছাতে থাকল এলিজাবেথ। পিঠ গিয়ে ঠেকল দেয়ালের সাথে। নড়াচড়ার আর জায়গা নেই বুঝতে পেরে কেঁপে উঠল এলিজাবেথ। রিচার্ড এলিজাবেথের অতি সান্নিধ্যে এসে দাঁড়াল। কিছুটা ঝুঁকল আড়ষ্ট এলিজাবেথের উপর। যার কারণে লম্বা চুলগুলোও নিচের দিকে ঝুঁকে পরল। এলিজাবেথের চোখজোড়ায় আতংক। বিরতিহীন ভাবে কাঁপছে চোখের পাতা। নাকের ডগায় বারি খাচ্ছে রিচার্ডের পারফিউমের স্মেইল। এলিজাবেথ নিশ্বাস আঁটকে রাখল। এই ঘ্রাণে ওর নিজেকে মাতাল মাতাল লাগে। আকষ্মিক রিচার্ড গ্রীবা বাঁকিয়ে বা গাল এলিজাবেথের দিকে করে দিল।
” কিস মি রাইট দেয়ার।”
‘ রিচার্ডের আচরণ আজ খুবই নরম। যা বার-বার প্রতিবার বিস্মিত করছে এলিজাবেথকে। রিচার্ডের চোখের পাতা একবারও পড়ছে না, কপালের রগগুলো টানটান হয়ে। তবে মুখভঙ্গি অত্যন্ত ঠান্ডা, শান্ত নদীর ন্যায়। এলিজাবেথ কাঁপা কাঁপা স্বরে বলল, ” মা-মানে?”
‘ চকিতে রিচার্ডের মুখগহ্বরের রূপান্তর ঘটল। মুখের রঙ রাগে লাল হয়ে উঠল, নীল চোখদুটোতে দাউদাউ করে জ্বলে উঠল। গলার স্বর এতটাই তীক্ষ্ণ হয়ে উঠল যে, মনে হলো প্রতিটি শব্দ ছুরির মতো কেটে যাচ্ছে বাতাস। অকস্মাৎ, ঝাঁপিয়ে পড়ে এলিজাবেথের কণ্ঠনালি চেপে ধরল, শক্ত হাতে শূন্যে তুলে নিল এলিজাবেথকে। অভ্যন্তর শিউরে এলিজাবেথের, নিশ্বাস আটকে এলো। হাত পা ছটফট করতে লাগল মুক্তির জন্য। রিচার্ড রুক্ষ, কর্কশ স্বরে অযাচিত এক অর্নথক হাসি হেসে চাপা গলায় চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
“এই গালে হাত তোলার সাহস দেখিয়েছিলি, নাহ? তোর কপাল নিতান্তই ভালো, যে এখনো মাটির উপরে হাঁটছিস। অন্য কেউ হলে এতক্ষণে সাড়ে তিন হাত মাটির নিচে জায়গা পেত। না, ভুল বললাম— স্থান হতো কোনো নোংরা নর্দমায়। জলশৌচেরা খুবলে খুবলে খেত হাড়-মাংস। আর তাতেও শান্তি না পেলে, সেই অবশিষ্টটুকুও ছাই করে উড়িয়ে দিতাম।”
‘ রিচার্ডের মুঠোয় এলিজাবেথের গলা আটকা, নিশ্বাস যেন দূর আকাশের কোনো অধরা স্বপ্ন। ফুসফুসে বাতাস নেই, বুকের ভেতর জ্বলন্ত শূন্যতা পুড়ছে। চোখের সামনে সবকিছু ধূসর হয়ে যাচ্ছে, জীবনের স্পন্দন ধীরে ধীরে স্তব্ধ। অথচ, মনের এক কোণে বেঁচে থাকার ক্ষীণ আশা তখনো কাঁপছিল। সেই ক্ষীণ আশাও এলিজাবেথের কাছে বিষাদের ন্যায় ঠেকছে। সহসাই হাঁপাতে হাঁপাতে বলল,
” তবে আমি-ই বা কেন ব্যতিক্রম হলাম। মেরে ফেলুন না আমাকে অন্যদের মতো।”
‘ আরো রক্তিম হতে থাকে রিচার্ডের চেহারা, রুষ্ট কণ্ঠে দাঁতে দাঁত পিষে বলল,
” কারণ তোর সাথে আমার এখনো অনেক হিসেব বাকি। তুই পাপ করেছিস, আর সেই পাপের শাস্তি তোকে জীবনভর তাড়া করে ফিরবে।”
‘ অস্পষ্টতায় কেঁদে বলল এলিজাবেথ, ” কি পাপ ছিল আমার? ”
‘ গলা ছেড়ে চেঁচাল রিচার্ড,
“আমার সামনে পড়া,_আমার দহনশীল সত্তায় দাবানল জ্বালিয়ে দেওয়া । আমার চোখে ধরা দেওয়া,_আমার বদ্ধ পৃথিবীতে আগুনের মতো বিস্ফোরণ ঘটানো ।”
‘ এলিজাবেথ আর কিছু বলতে পারে না। রিচার্ডের হাতে আটকে থাকা ওর গলা থেকে শ্বাস ফুরিয়ে যাওয়ার অনুভূতি, এক মুহূর্তের জন্য পৃথিবী থেমে যায়। যখন এলিজাবেথের চোখ উল্টে আসে ঠিক তখনই, রিচার্ড ওকে ছেড়ে দিল। এলিজাবেথ আর নিজের শরীরকে সঙ্গত করতে পারে না, ধপ করে ধাতব মেঝেতে বসে পড়ে। বুক চিঁড়ে বেরিয়ে আসে অসহায় শ্বাস, ঠোঁটের মাঝ দিয়ে একটানা নিঃশ্বাসের শব্দ। গালের উপর পানি গড়িয়ে গড়িয়ে জলবিন্দুর পথ ধরে অভ্যন্তরীণ যন্ত্রণার চিহ্ন হয়ে নিচে পড়ে। রিচার্ড এক হাঁটু মুড়ে এলিজাবেথের সামনে বসে। চোখে রাজার মতো তীক্ষ্ণ দৃষ্টি। যেন সে রাজা, আর এলিজাবেথ—এক কৃতদাসী। রিচার্ড এলিজাবেথের ভেজা চিবুক শক্ত হাতে ধরে উপরে তুলে। এলিজাবেথ ভেজা ঘৃণিত চোখে রিচার্ডের দিকে তাকায়।
” কিস মি রাইট দেয়ার।”
‘ শক্ত গলায় শাসিয়ে বলল রিচার্ড। এলিজাবেথ নিঃস্তব্ধ। ক্রোধে আগুন জ্বলে ওঠে রিচার্ডের। আবারও চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
” তোর আঘাতের জায়গা তুই-ই এখন আদরে আদরে ভরিয়ে দিবি।”
“মরে গেলেও না।~ এলিজাবেথের ভেজা গলায় শক্ত জবাব।
‘ ফিচেল হাসল রিচার্ড অদ্ভুত ভাবে মাথা ঘুরাতে ঘুরাতে। মুখে কিছু বলল না। পকেট থেকে ফোন বের ধারণকৃত একটা ভিডিও তুলে ধরে এলিজাবেথের সামনে। স্ক্রিনে চোখ রাখতে শিউরে ওঠে এলিজাবেথ। ভিডিওতে তাকবীরের হাসপাতালের সামনের দৃশ্য—সারি সারি কালো মার্সিডিজ দাঁড়িয়ে আছে। একটি গাড়ির সামনের দরজা খোলা। লুকাস ফ্রন্ট সিটে আধশোয়া ভঙ্গিতে বসে আছে, হাতে একটি মরণশীল অস্ত্র । ক্যামেরা যখন লুকাসের মুখে জুম করল, তখন লুকাস ঠোঁটের কোণে অদ্ভুত এক হাসি টেনে চোখ টিপল। আর ঠিক সেই মুহূর্তে ফোনের পেছন থেকে রিচার্ডও একই ভাবে চোখ টিপল। এই দৃশ্যের প্রত্যেকটি মুহূর্তে কিছুর পূর্বাভাস লুকিয়ে আছে। এলিজাবেথের বুকের ভেতর হিম শীতল এক অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ল।
” দয়াকরে ওনার কোনো ক্ষতি করবেন না।”
‘ নিমিষেই এলিজাবেথের ভেতরের তেজ স্তিমিত হতে দেখে রিচার্ডের ঠোঁটের কোণে এক তৃপ্ত হাসি ফোটাল। কোনো কথা না বলে আবারও গাল বাড়িয়ে দিল এলিজাবেথের দিকে। এলিজাবেথ বুঝতে পারল, তার প্রতিটি প্রতিরোধ এখন ভঙ্গুর, সম্পূর্ণভাবে রিচার্ডের ইচ্ছার বন্দি। গলায় জমাট বাঁধা দলা শক্ত ঢোক গিলে ভিতরে ঠেলে দিল এলিজাবেথ । তবু ঠোঁট বারবার ভেঙে আসছে, বুক ধকধক করছে। শ্বাস আটকে প্রকম্পিত শরীর অগ্রসর হলো রিচার্ডের গালের দিকে। তুলতুলে নরম ঠোঁট আলতো করে ছুঁয়ে দিল রিচার্ডের গালের কাটা দাগে। মুহূর্তেই রিচার্ড পিছন থেকে এলিজাবেথের মাথা খপ করে চেপে ধরল । কোনো ভূমিকা ছাড়াই নিজের কালচে ওষ্ঠদ্বয় মিশিয়ে দিল এলিজাবেথের তুলার মতো নরম ওষ্ঠে। এলিজাবেথের চোখের মনি বড় বড় হয়ে যায় ।শরীর ছটফট করতে থাকল মুক্তির জন্য। এলোপাতাড়ি ঘুষি বসাতে শুরু করল রিচার্ডের পাথরের মতো শক্ত বুকে। কিন্তু রিচার্ড ছিল অটল, তার নিটোল অভিপ্রায়ে। রির্চাডের ঠোঁট ক্রমশ গভীর থেকে গভীরতর হতে থাকল এলিজাবেথের ঠোঁটের ভাঁজে। এক অদ্ভুত দক্ষতায় সে তার রাজত্ব বিস্তার করতে থাকল। শ্বাসপ্রশ্বাস মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল দুজনের, যেন দেহের সীমারেখাগুলো মুছে গেছে এক মুহূর্তে।
‘ রিচার্ড শেষমেশ এলিজাবেথকে ছাড়ল, তার ইচ্ছার উগ্র প্রকাশ মিটিয়ে। ঠোঁটের ওপর চালিয়েছিল শুধু চুম্বন নয়, দাঁতের দাগও। এলিজাবেথের ঠোঁট ফুলে ওঠে, দু’হাত দিয়ে ঠোঁট চেপে ধরে হাঁপাতে থাকে। রিচার্ডের জিভ আর ঠোঁটের নির্মম দখলে শ্বাস নিতেও ব্যর্থ হয়েছিল এলিজাবেথ। ঠোঁটে জ্বলন্ত ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে, যেন আগুন ছুঁয়ে গেছে। রিচার্ড একপাশে সরে এসে হাতের পিঠ দিয়ে ঠোঁট মুছতে থাকে । তেরছা দৃষ্টিতে এলিজাবেথের দিকে তাকায় এক পলক। হাতের পিঠ সিক্ত হলো তাজা রক্তে। রিচার্ডের ঠোঁটে রক্তের দাগ দেখে বোঝা গেল, এলিজাবেথও চুপ থাকেনি। নিজের ক্ষোভের প্রতিশোধ নিতে ঠোঁটে গভীর দন্তচিহ্ন বসিয়েছে সে। নিরবে ঠুকরে কেঁদে উঠে এলিজাবেথ।
” আমি এতিম তাই এমন করছেন আমার সাথে নাহ ? আমি দূর্বল এজন্য এতো কষ্ট দিচ্ছেন?”
‘ একদম মিহি গলায় বলল এলিজাবেথ। রিচার্ড ভ্রুজোড়া কুঁচকে ফিরে তাকাল ক্রদনরত এলিজাবেথের দিকে। পরপর কিছুটা বিরক্তিমাখা স্বরে বলল,
” পুরুষের সতীত্বের যদি কোনো দাম থাকত, তাহলে বিশ্বাস কর এলিজাবেথ, তুমি আমাদের ফাস্ট নাইটের পরপরই কোটিপতি হয়ে যেতে। নিজেকে এতিম বা দূর্বল বলে ছোট করতে না। তবে এটাও ঠিক, তুমি মোটেও কোনো অবলা সবলা নারী নও। বরং সাহসী আর বেপরোয়া। ঠিকই আমার এতদিনের গর্ব, আমার একত্রিত ভার্জিনিটি ছিনিয়ে নিলে। কী দিনকাল এলো রে! ছেলেরা যেন এখন খোলা আমানত, আর মেয়েদের লজ্জা রিলসের লাইকের মতো—সময় বুঝে উধাও!”
‘ অটোমেটিক কান্না থেমে গেল এলিজাবেথের। রিচার্ডের দিকে ফিরল ওর বিস্মিত চোখজোড়া। শুকনো গলায় বলল,
” সত্যি করে বলুন তো, কিছু কি খেয়েছেন আজ আপনি?”
” খেয়েছি তো, দুষ্টু পানি।”
‘ রিচার্ডের অজানা কণ্ঠস্বর। স্বরে রাগ নেই তবুও গম্ভীর। এলিজাবেথ বুঝতে পারল না। বলল,
” ওটা আবার কি?”
” ঐ-যে তোমার মুখের ভিতর থাকে যে । মাত্র-ই টেস্ট নিলাম যেটার। এতোটাও স্বাধ না। মুভিতে যতটা বাড়িয়ে বাড়িয়ে দেখায়।”
‘ ভেবাচেকা খেয়ে গেল এলিজাবেথ। কষ্ট, লজ্জা সবকিছু মিলিয়ে আবারো কান্না করতে থাকে। শক্ত গলায় ধমক দিল রিচার্ড,
” এই মেয়ে এভাবে মরা কান্না করছ কেন? বিধবা হয়ে গিয়েছ? কানা হয়ে গিয়েছ নাকি, জলজ্যান্ত মানুষকে মৃত্যু বানিয়ে ফেলছো।”
‘ এলিজাবেথ এবার ধরেই ন্যায় রিচার্ড পাগল হয়ে গিয়েছে।আকুতিভরা টলটলে চোখে চেয়ে বলল,
” আপনি পাগল হয়ে গিয়েছেন। দয়াকরে পাবনা যোগাযোগ করুন। ওরা ওদের রুগীকে এসে নিয়ে যাক। আমাকে একটু মুক্তি দেক।”
‘ আবারও ধমক দিল রিচার্ড।
” চুপ।~ পরপরই খুবই হতাশাগ্রস্ত স্বরে আওড়ায়,
” বোকা রেড।”
‘ এলিজাবেথের মাথায় বার-বার শুধু তাকবীরের কথায় ঘুরছে। ভাবতেই বুকের ভিতর শক্তিশালী চাপ অনুভূত হচ্ছে। চোখজোড়ায় অসহায়ত্বতা ভরা। নিস্তেজ স্বর,
” দয়াকরে ওনাকে কিছু করবেন না। আপনার শত্রুতা তো আমার সাথে নাহ? আমাকে মেরে ফেলুন। মানুষটা অসুস্থ, ওনাকে সুষ্ঠুভাবে বাঁচতে দিন দয়াকরে।”
‘ এবার বিরক্তে চ’উচ্চারণ করে রিচার্ড। চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
” তোমাকে একদিন আমার পুরানো জুতোর কালেকশন দেখাবো, যেটা পছন্দ হবে, ঐটা দিয়েই গালে বসাব।”
‘ অপমানে নাক-মুখ কুঁচকে ফেলল এলিজাবেথ। হঠাৎ করেই মাথায় এল, রিচার্ড নিশ্চয়ই তাকে ভয় দেখাতে চেয়েছে। নাহয় লুকাস হসপিটালের বাইরে কেন থাকবে? তাদের রাজ্যে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে কোনো সময়ের প্রয়োজন পড়ে না, তাদের সাম্রাজ্য এতটাই শক্তিশালী। ভাবনার টান পড়ল রিচার্ডের গমগম স্বরে।
” এই মেয়ে চুলের এই অবস্থা কেন? আঁচড়াও না?”
‘ মেয়েদের নিজের প্রতি যত্ন, সাজগোছ সবকিছুই তাদের মানসিক শান্তির প্রতিফলন। এলিজাবেথ, এই কয়েদিনের টানাপোড়ানে, নিজের প্রতি কোনো যত্ন নিতে পারছে না। সমস্ত অনুভূতি যেন এক জটিল দোলাচলে আটকে গেছে। তপ্ত শ্বাস ফেলল এলিজাবেথ। নাকমুখ কুঁচকে গদগদবচন শব্দে বলল,
” একটু মানসিক শান্তি দিন দয়াকরে। শুধু মাথার কেন সব চুল আঁচড়াবো।”
‘ রিচার্ড ঠৌঁট কামড়ে ভ্রু গুছিয়ে দেখল এলিজাবেথকে কয়েক সেকেন্ড। পরপর ঠৌঁট কামড়ে হেসে উঠে দাঁড়ায়। টান পরলো এলিজাবেথের হাতে। চমকে রিচার্ডের হাতের দিকে তাকায় এলিজাবেথ। রিচার্ডের গম্ভীর গাল,
” চল হেল্প করছি।”
‘ ওকে টেনে বাথরুমের দিকে নিয়ে যেতে থাকল রিচার্ড। চোয়াল ফাঁক হয়ে গেল এলিজাবেথের। পা শক্ত করে রাখে ধাতব মেঝেতে।
” আরে আরে কি করছেন আপনি কি পাগল হয়ে গিয়েছেন। ছাড়ুন, হাত ছাড়ুন। আচ্ছা আচ্ছা আঁচড়াব আমি চুল।
‘ ছেড়ে দিল রিচার্ড। স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়ে এলিজাবেথ। রিচার্ড এবার গিয়ে খুব আয়েশি ভাবে বসল বেডে। বিছানায় গাঁ এলিয়ে দিয়ে হাস্কি ভয়েসে বলল,
” শুনলাম তোমার স্বামী বাড়িতে নেই। তাই ভাবলাম একটু এসে সঙ্গ দিই।”
‘ এলিজাবেথ দূরে দাঁড়িয়ে শান্ত দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে রিচার্ড কে। কাত হয়ে শোয়ার জন্য ঘাড়ের চুলগুলো এক সাইডে সড়ে যায়। এলিজাবেথের পূর্ণ দৃষ্টি রিচার্ড ঘাড়ের ধনুকের তীরের সেই ট্যাটুতে। আবারো ভিজে এলো চোখ।
” অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। যেমন দুঃখের নির্দিষ্ট মেয়াদ নেই, তেমনি তা সবার কাছেই অপছন্দের, এমনকি ঘৃণিতও।”
‘ এলিজাবেথের ব্যাথতুর কণ্ঠে গুরুতর কথাটাকেও হেসে উড়িয়ে দিল রিচার্ড। শূন্যে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ভাবহেলিস ভাবে বলল,
” দুঃখ পাইলে মানুষ পাথর হইয়া যায়,
আর আমি হইছি নষ্ট।”
” ভাগ্যিস, আপনি কষ্ট দিয়েছিলেন। না হলে কখনো আমি বুঝতেই পারতাম না, যে কষ্টের পর একদিন এতটা গভীর, শান্তিপূর্ণ সুখ আসে, যা আমৃত্যু আমাকে শিখিয়ে দিয়েছে জীবনের আসল মর্ম।”
‘ এলিজাবেথ এই কথাটা রিচার্ড কে জ্বালানোর জন্যে বললেও আদৌতেও গায়ে মাখল না রিচার্ড। সাবলীলভাবে উঠে দাঁড়ায়। গুট গুট পায়ে এসে দাঁড়ায় এলিজাবেথের সামনে। নিজের কুটিল হাতে তুলে নিল এলিজাবেথের হাত। এলিজাবেথের দৃষ্টি স্থির, তেমনিও শূন্য অভিব্যক্তি। কোটের পকেট থেকে রুমালে পেচানো একটা বস্তু এলিজাবেথের হাতের মুঠোর দিল রিচার্ড । অতঃপর অদ্ভুত এক দৃঢ় স্বরে বলল,
” মানুষের যত্ন পাওয়াও এক ধরনের রিজিক। তোমার কপালে যতটা লেখা আছে, ঠিক ততটাই পাবে—না কম, না বেশি।
থেমে_
“আই অ্যাম ভেরি কোল্ড, ইমোশনলেস অ্যান্ড সাইকো টাইপ অফ পারসন। ইউ আর লাকি ইফ ইট টার্নস সফট ফর ইউ।
‘ সঙ্গে সঙ্গে রিচার্ড জানালা দিয়ে লাফ দিল। এলিজাবেথ ছুটে গিয়ে বিছানার উপর উপুড় হয়ে পড়ল। রুমালে কী ছিল, তা দেখারও প্রয়োজন বোধ করল না। বালিশের নিচে রেখে নিজের ভাঙা পৃথিবীর ভারে অঝোরে কাঁদতে শুরু করল। জীবনটা যেন মাঝসমুদ্রে আটকে গেছে। চারপাশে শুধু পানির বিশালতা, কিন্তু বাঁচার কোনো উপায় নেই। সাঁতার জানে না এলিজাবেথ, অথচ এখানেও থাকতে পারছে না। দমবন্ধ হয়ে আসছে। কিন্তু ঝাঁপ দিলে নিশ্চিত মৃত্যু। জীবন কি সত্যিই এমন, যেখানে বাঁচাও যন্ত্রণা আর মরাও মুক্তি নয়?
‘বারবার কলিং বেল চাপার পরও কোনো সাড়া নেই। দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে তাকবীরের মনে অজানা শঙ্কা বাসা বাঁধে। উপায় না দেখে নিজের কাছে থাকা অতিরিক্ত চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকল। কাল সারারাত তাকবীর হসপিটালে ছিল, এলিজাবেথ একাই ছিল হোটেলে। কয়দিন যাবতই তাকবীর কে রাতে হসপিটালে থাকতে হচ্ছে। এলিজাবেথ থাকতে জোরও করলেও রাজি হয়নি তাকবীর। সন্ধ্যা সন্ধ্যা রেয়ান কে দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছিল তাকবীর। ভেতরে ঢুকতেই শূন্য ঘরের নিস্তব্ধতা তাকবীরকে আরো অস্বস্তিতে ফেলে দিল । এলিজাবেথের কোনো সাড়াশব্দ নেই। তাকবীর কয়েকবার ডাকল, “এলোকেশী ? তুমি কোথায়?” কিন্তু কোনো উত্তর এলো না। তাকবীর সরাসরি এলিজাবেথের রুমের দিকে এগোল। রুমে ঢুকেই পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেল । দু’কদম পিছিয়ে গা ঠেকল দরজার ফ্রেমে। মেঝেতে শুকিয়ে যাওয়া গাঢ় রক্তের দাগ। রক্তমাখা এক ছদ্মবেশী ব্যক্তি মেঝেতে পড়ে আছে, নিথর। মুখটা আংশিক ঢাকা, তবে শরীরের অবস্থা দেখে ভয় চেপে বসল তাকবীরের বুকের মধ্যে।
‘পাশে তাকাতেই রক্ত হিম হয়ে গেল। খাটের পাশে হাঁটু ভেঙে বসে আছে এলিজাবেথ। চুপচাপ, নিথর। এলিজাবেথের জামা রক্তে মাখামাখি। পায়ের কাছে পড়ে আছে একটি ছুরি, ফলকটাও রক্তে ভেজা। তাকবীর ছুটে এলিজাবেথের কাছে গেল। “এলোকেশী ?” কোনো সাড়া নেই। তাকবীর আরও কাছে গিয়ে এলিজাবেথের কাঁধ ধরে ঝাঁকাতে থাকল।
“এলোকেশী এগুলো কি? ঠিক আছো তো তুমি ?”
‘এলিজাবেথ কোনো উত্তর দেয় না। ওর চোখ দুটি একদৃষ্টিতে লাশের দিকে স্থির হয়ে আছে। পৃথিবীর সব শব্দ থেকে দূরে সরে গিয়েছে এলিজাবেথ। তাকবীর এবার ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে লাশটির দিকে এগোল। নাকের কাছে আঙুল রাখল। নিথর শরীরটি একদম ঠান্ডা। মৃত্যু নিশ্চিত। ঘরে যেন মুহূর্তেই শীতল অন্ধকার নেমে এলো। তাকবীর আবার ছুটে গিয়ে এলিজাবেথের সামনে হাঁটু গেড়ে বসল।
“এলোকেশী ! প্লিজ, কথা বলো! এটা কিভাবে হলো?
‘কিন্তু এলিজাবেথের চোখের সেই শূন্য দৃষ্টি আর কাঠের মূর্তির মতো বসে থাকা। ঘাবড়ে যায় তাকবীর। যেই কোনো সময় হোটেল স্টাফ আসতে পারে। হঠাৎ তাকবীর কিছু না বুঝেই ছুড়িটি হাতে তুলে নিল। ভালোভাবে ছুড়িতে এপোরওপোর দিক দিয়ে নিজের আঙুলের ছাপ বসাতে থাকে। এলিজাবেথ নিস্তেজ স্বরে বলল,
” এবার কি আমার জন্য খুনের দায়টা নিজের ঘাড়ে নিবেন?”
‘ তাকবীর আঙুলের ছাপ দৃঢ় ভাবে বসাতে বসাতে বলল,
” তোমার সুরক্ষার জন্য সব করতে পারি।”
‘ হঠাৎ করে পাগলামি করতে থাকে এলিজাবেথ। নিজের শরীরে আঘাত করতে থাকে আর বলতে থাকে,
” আমি খুনি, খুন করেছি আমি।”
‘ তাকবীর এলিজাবেথকে শান্ত করার চেষ্টা করল। শান্ত হতে চাইনা এলিজাবেথ। চিৎকার করে করে কাঁদতে থাকে আর নিজেকে খুনি বলতে থাকে। তাকবীর বহু কসরতে এলিজাবেথ কে শান্ত করে। তাও এলিজাবেথ প্রলাপ আলাপের মতো বিরবির করে বলতে থাকে।
” আমি খুনি। সবাই আমাকে খুনি বলবে। পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে আমাকে।”
” তুমি খুনি নও। থামতে বলেছি আমি।”
‘ শক্ত গলার ধমকে থাকল এবার। তাকবীর আবার নরম হয়ে জানতে চাইলো এলিজাবেথের কাছে,
” কিভাবে হয়েছে সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বল আমাকে।”
‘ এলিজাবেথ শুরু থেকে সম্পূর্ণ কথা বলতে লাগল,
‘ এলিজাবেথের ঘুম বরাবরই পাতলা। সবেমাত্র ঘুমিয়ে ছিল এলিজাবেথ । হঠাৎ ঘরের ভেতর একটা অদ্ভুত শব্দ হলো। মস্তিষ্ক কিছুটা সজাগ হলেও শরীর ঘুমের ভারে তলিয়ে গেল আবারও । একসময় মুখে উষ্ণতার ঝাপটা অনুভব করল। কারোর গরম নিশ্বাস আঁচড়ে পড়ছে। সঙ্গে সঙ্গে ঘুমটা ভেঙে এলিজাবেথের। কিছু বোঝার আগেই শক্ত হাতে কেউ ওর মুখ চেপে ধরল। নিশ্বাস আটকে আসতে শুরু করল এলিজাবেথের। আততায়ীর মুখ কালো কাপড়ে বাঁধা, ফলে তার পরিচয় বোঝা অসম্ভব। আতঙ্কে বিছানার উপর হাত-পা ছুঁড়ে ছটফট করতে থাকে এলিজাবেথ। আকস্মিকভাবে ওর হাত বালিশের নিচে চলে যায়। হাতের তলায় কিছু শক্ত জিনিস অনুভব করল—রিচার্ডের দেওয়া রুমালের ভিতরে লুকানো একটা ছু°ড়ি। সেই রুমালের কথা এলিজাবেথ একেবারেই ভুলে গিয়েছিল।
‘সহসাই বাঁচার তাগিদে এলিজাবেথ ছুড়ি°টা তুলে নিয়ে এলোপাতাড়ি চালাতে থাকে। আততায়ীর শরীরে আঘাত লেগে তার কণ্ঠ থেকে বিচ্ছিন্ন আর্তনাদ বেরিয়ে এলো। একসময় ছু°ড়িটা সরাসরি তার গলা°য় গিয়ে ঢুকে গেল। লোকটি মাটিতে পড়ে ছটফট করতে করতে নিথর হয়ে গেল। সাহস সঞ্চয় করে সাহসা এলিজাবেথ লাইট জ্বালায়। দৃশ্যটা ভয়াবহ। আততায়ীর গলা থেকে গাঢ় লাল র°ক্ত গড়িয়ে মেঝে ভিজিয়ে দিচ্ছে। নিথর দেহটা মেঝেতে পড়ে আছে।
‘ রিচার্ডের কথা শুনতেই পায়ের রক্ত তিরতির করে মাথায় উঠে যায় তাকবীরের। তবে এখন পরিস্থিতি অনুকূলে নেই। তাকবীর এলিজাবেথ কে টেনে তুলে দাঁড় করাল। ব্যস্ত হাতে কেবিনেট থেকে এলিজাবেথের জামা এনে হাতে ধরিয়ে দিল ওর। এলিজাবেথ বিস্মিত চোখে তাকিয়ে দেখছে তাকবীরের কান্ড। তাকবীর এলিজাবেথ কে রুমে থেকে বের করে ওর রুমের দিলে ঠেলে পাঠাতে পাঠাতে বলল,
” গো, গো এখুনি শাওয়ার নিয়ে আসো।”
” কিন্ত,,,
” কোনো কিন্তু না। তুমি কিছু করোনি। এটা শুধুমাত্র একটা দুঃস্বপ্ন ছিল। আন্ডারস্ট্যান্ড?”
‘ তাকবীরের স্বর আগের চেয়ে খানিকটা তীব্র হলো। শক্ত গলায় কথাগুলো বলে এলিজাবেথকে ঠেলে দরজার দিকে পাঠিয়ে দিল একরকম জোর করেই। আবার গেল রুমে, নিথর দেহের পাশে গিয়ে দাঁড়াল । কোনো আবেগের লেশমাত্র দেখা গেল না মুখে। বরংচ লাশের বুকের উপর পা রেখে দু’বার আঘাত করল যেন রাগের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ। পরপর মোবাইল বের করে দ্রুত রেয়ানকে ফোন দিল। কথা শেষ করে ফোন পকেটে রেখে দিল। হঠাৎ চোখ পড়ল এলিজাবেথের বিছানার দিকে। কিছু একটা সন্দেহ বুকে চেপে এগিয়ে গেল। বালিশটা সরাতেই নজরে পড়ল এলোমেলো পড়ে থাকা সেই রুমালটা। তাকবীর রুমালটা হাতে তুলে নিতেই ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো একটি কাগজ। কাগজটার ভাঁজ খুলতেই তাকবীরের কপালের পাশের রগগুলো তীব্রভাবে স্পন্দিত হতে লাগল। মুখে ক্রমশ জমাট বাঁধতে থাকা রাগ যেন বিস্ফোরণের অপেক্ষায়।
ভিলেন ক্যান বি লাভার পর্ব ২৪
” আমার জিনিস অমূল্য, যেখানে স্পর্শ করলেই জ্বলসে যাবে। আজ পর্যন্ত কেউ তা ছুঁতে পারেনি, আর কখনো পারবে না। তোর নামমাত্র স্বামী কি কখনো তা ছুঁতে পেরেছে? সে তো ছলনায় বাঁধা। গেট রেডি_উইন্টার ইজ কমিং। আই ওয়ান্ট ইউ ইন মাই ব্ল্যাঙ্কেট।”
