মনে রেখ এ আমারে পর্ব ৫
রায়েনা হায়াত
অন্তি সকাল থেকে থম মে’রে বসে আছে। হৃদান সকালেই খেয়ে বেড়িয়ে গেছে। সে সরাসরি এখান থেকে অফিস চলে যাবে। সন্ধ্যায় একেবারে বাড়ি যাবে। অন্তির আজ ক্লাস নেই। অবনী এতক্ষণ রেহেনা বেগমকে সাহায্য করছিলো। সকাল থেকে অন্তিকে না দেখতে পেয়ে সে অন্তির রুমে আসে। রুমের দরজা খোলা-ই ছিলো। অবনী রুমে এসেই বলে,
–‘কিরে! সকাল থেকে রুমে কি করছিস? ক্লাস নেই আজ?’
অন্তি নিজেকে যথেষ্ট স্বাভাবিক রেখে বলার চেষ্টা করে,
–‘না।’
অন্তির কন্ঠের সেই চঞ্চলতা নেই তা টের পায় অবনী। পাশে গিয়ে বসে হাত রাখে অন্তির মাথায়। অন্তি তাকালে সে শুধায়,
–‘কি হইছে, অন্তি? মন খারাপ তোর?’
গতরাতে অন্তি একটুও ঘুমায়নি। চোখ দুটো লাল হয়ে আছে। অবনী তার চোখ দেখে ব্যস্ত হয়। অন্তির গালে হাত রেখে ব্যস্ত কন্ঠে শুধায়,
–‘কি হয়েছে তোর? কেঁদেছিস? রাতে ঘুমাসনি? কেউ কিছু বলেছে?’
অন্তি নিজেকে আটকাতে পারে না। অবনীকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করে। অবনী ব্যস্ত হয়ে বার বার জিজ্ঞাসা করতেই থাকে। কিন্তু অন্তি জবাব না দিয়ে হিচকি তুলে কাঁদছে। অবনী অন্তিকে সময় দেয়। মাথায় হাত বুলাতে থাকে। অন্তির কান্না কমে আসলে অবনী নরম স্বরে শুধায়,
–‘কি হয়েছে? তাইমুর ভাই কিছু বলছে?’
অন্তি দু’দিকে মাথা নাড়িয়ে বোঝায় ‘না’। এরপর অবনীকে শুরু থেকে শেষ সব বলে। অন্তির মুখে সব শুনে সে স্তব্ধ হয়ে যায়। অবাক হয়েই জিজ্ঞাসা করে,
–‘তুই তন্ময়ের সাথে রিলেশনশিপে কবে গেলি? আর কেনো গেলি? তুই তাইমুর ভাই.. ‘
অর্ধেক বলে অবনী থেমে যায়। নিজেদের মধ্যে হঠাৎ তাইমুর কোথা থেকে আসলো তা বুঝে পেলো না অন্তি। অবুঝ কন্ঠেই শুধায়,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
–‘তাইমুর ভাই কি? আমাদের মধ্যে তাইমুর ভাই কোথা থেকে আসলো, আপা?’
অবনী নিজেকে সামলে নেয়। লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে বলে,
–‘কিছু না। তুই কাঁদিস না। তন্ময়ের সাথে কথা বলবো আমি? আর তুই এগুলো আমাকে আগে কেনো বলিসনি? এতোদিন তোর সাথে থেকে এখন সে আরেকজনকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে গেলো?’
অবনী যে টপিক বদলে নিলো তা অন্তি বেশ বুঝলো। তবে সেও আর না ঘাটিয়ে তন্ময়ের বিষয়ে করা প্রশ্নগুলোর জবাব দেয়,
–‘কথা বলে কি হবে, আপা? যে আমারই না তার সাথে কথা বলেও বা কি লাভ?’
অবনী অন্তির চোখ দুটো মুছিয়ে দেয়। এলোমেলো চুলগুলো সুন্দর করে কানের পৃষ্ঠে গুঁজে দেয়। এরপর সুন্দর করে বলে,
–‘ঠিক তো বলেছিস। একটা কথা কী জানিস? যে পুরুষ সত্যিই ভালোবাসে সে পুরুষ কখনোই কোনো অজুহাতে ছেড়ে যায় না। তুই বলেছিস এখন বিয়ে করবি না! তন্ময় চাইলে সরাসরি আমাদের বাড়িতে প্রস্তাব পাঠাতে পারতো, তোকে মানাতে পারতো, অপেক্ষাও করতে পারতো। কিন্তু সে এগুলোর একটাও করেনি। তোর ওপর দোষ চাপিয়ে সে দিব্যি বাবা-মায়ের পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করছে। এখানে দু’টো কারণ হতে পারে। হয় ও তোকে ভালোবাসেনি নয়তো বাসতো এখন আর বাসে না।’
অন্তি নিশ্চুপে সবটুকু শোনে। অবনী টেবিল থেকে পানি এনে অন্তিকে দেয়। অন্তি চুপচাপ পানিটুকু খেয়ে নেয়। অন্তি এখনো নাস্তা করেনি তাই অবনী ডাইনিং থেকে ওর জন্য খাবার নিয়ে আসে। অন্তির পাশে বসে নিজেই খাইয়ে দিতে শুরু করে। অন্তি মানা করে না। অবনী আবার বলতে শুরু করে,
–‘সবথেকে ভালো ব্যাপার কি জানিস? আমাদের জীবনে যা ঘটে সবকিছুর পেছনে একটা ভালো ব্যাপার আছে। আল্লাহ আমাদের থেকে যা কেড়ে নেন তার দ্বিগুণ ফিরিয়ে দেন। এই আমাকে দেখ! ৩ বছরের রিলেশন ছিলো। অথচ আমাকে এমন ভাবে ছেড়ে গেছে আমি ভেঙে গেছিলাম। কারও প্রতি আর বিশ্বাস, ভরসা আসতো না। কিন্তু ও ছেড়ে গেলেও আল্লাহ আমাকে হৃদানকে দিয়েছে। আর হৃদানের মতো ভালো মানুষ, ভালো স্বামী পৃথিবীতে খুব কম হয়। হৃদান আমার জন্য কল্যাণকর ছিলো বলেই আমি ওকে পেয়েছি। তোর ব্যাপারটাও হয়তো সেইম। আল্লাহ যা জানেন আমরা তা জানি না। তাই ভাগ্যে বিশ্বাস রাখ। আল্লাহ যা করবেন ভালোর জন্য করবেন। কে বলতে পারে হয়তো তোর ভাগ্যে এর থেকেও ভালো কিছু আছে।’
অবনীর সবগুলো কথা অন্তি মন দিয়ে শোনে। সে নিজেও ভাগ্যে বিশ্বাস করে। তবে অবনীর সাথে কথা বলার পর তার নিজেকে অনেক হালকা লাগে। সত্যিই তো! তন্ময় তো তাকে ভালোবাসে না। ভালোবাসলে এতো সহজে কিভাবে অন্য কাউকে বিয়ে করতো? দীর্ঘশ্বাস ফেলে সবটুকু খেয়ে নেয়। অবনী প্লেট নিয়ে চলে যেতে গেলে পেছন থেকে অন্তি জড়িয়ে ধরে। অবনী মুচকি হেঁসে বলে,
–‘হিরাকে ছেড়ে দিয়ে কাঁচ কিভাবে পছন্দ করলি তুই? গা’ধী!’
–‘মানে?’
অবনী কিছু না বলে চলে যায়। অন্তি কথার মানে না বুঝে মাথা চুলকায়। কি বললো এটা? কেনোই বা বললো? কে হিরা আর কে কাঁচ? তাইমুর ভাই? তা কিভাবে হয়?
বিকালে অবনী আর অন্তি বের হয়। অবনী নিজেই তাকে বলেছে আজ বের হওয়ার কথা। অন্তির মনও ভালো হবে আর অবনীর নিজেরও মনটা ফুরফুরে হবে। দু বোন রিক্সা নিয়ে প্রথমেই যায় পদ্মার পাড়। তাদের এখান থেকে শুধু ২০ মিনিটের রাস্তা। দু-বোন ঘুরে ফিরে, ফুচকা খেয়ে ঘুরে যায় অন্যদিকে। তাদের পরিচিত এক লেকের পাড় আছে। তার পাশেই ফুটপাতে ফুলের দোকান। দু-বোন ফুলের দোকানে গিয়ে দাঁড়ালে অবনী জারবেরা, রজনীগন্ধা আর গোলাপ নিয়ে অন্তির হাতে দেয়। মুচকি হেঁসে বলে,
–‘কিছু মনে পরে তোর?’
অন্তি তিনটে ফুলের দিকে তাকিয়ে হেঁসে ফেলে। মাথা নাড়িয়ে বলে,
–‘হ্যাঁ। ত্যাড়া লোক আর তার দেয়া ফুল!’
দু বোন রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটতে শুরু করে। অবনী ফের শুধায়,
–‘তোর সব মনে আছে?’
–‘হ্যাঁ, আছে।’
দু বোন অতীত নিয়ে কথা বলা শুরু করে। সেই ৫ বছর আগের দিনে ফিরে যায় তারা। তখন তাইমুর তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া শুরু করেছে। এক বিকালে দু বোন ঘুরতে বের হওয়ার সময় তাইমুর হাজির। অন্তি তাকে দেখেই ভ্রু কুঁচকে নেয়। তাইমুর মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বলে,
–‘অবনী, কোথায় যাচ্ছো?’
–‘ঘুরতে যাচ্ছি, তাইমুর ভাই।’
–‘একা একা যাচ্ছো? আরে একা একা যাওয়া সেইফ না। চলো চলো, আমিও যাই।’
অবনী ফিক করে হেঁসে ফেলে। তাইমুর যে অন্তির সাথে ফ্লার্টিং করে এটা সে জানে। অন্তিই তাকে বলেছিলো আর নিজেও তাইমুরকে ফ্লার্টিং করতে দেখেছে। অবনী জবাব দেওয়ার আগেই অন্তি বলে,
–‘উড়ে এসে জুড়ে বসা পাখি! কতদিন আপনি আমাদের হাত ধরে ধরে ঘুরতে নিয়ে যাবেন?’
তাইমুর লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে বলে,
–‘তুমি চাইলে সারাজীবন।’
অন্তি কটমট করে তাকায়। অবনীর দিকে তাকালে অবনী বলে,
–‘তাইমুর ভাই! এটা কি হচ্ছে? আপনি আমার সামনেই আমার ছোট বোনের সাথে ফ্লার্টিং করছেন!’
–‘উপ্স সরি!’
অবনী, অন্তি, তাইমুর আর সায়মন একসাথে ঘুরতে যায়। ৪ জনে একসাথে লেকের পাড় গিয়ে ফুচকা স্টলে বসে। তাইমুর সব খাওয়া পছন্দ করলেও ফুচকা খাওয়াটা বড্ড অপছন্দ করে। আশে পাশে ঘাড় ঘুরিয়ে নাক সিটকে বলে,
–‘তোমরা ভালো কিছু পাওনি? ফুচকা মানুষ খায় নাকি?’
জবাবটা অন্তিই দেয়,
–‘আমাদের দেখে কি মনে হয়?’
–‘ছাগল।’
অন্তি তেড়ে যায়। অবনী আর সায়মন তাকে থামায়। তাইমুর বুকে হাত দিয়ে বলে,
–‘মা’রতে আসছিলে নাকি?’
–‘না, আপনার সাথে নাচ করতে গেছিলাম।’
–‘আরে আগে বলবা না! আসো আসো!’
অন্তি কটমট করে তাকায়। বিপরীতে তাইমুর বিশাল এক হাসি দেখিয়ে দেয়। দুজনের ঝগড়া আর মুখ দেখে অবনী আর সায়মন হাসতে শুরু করে। ফুচকা দিয়ে গেলে সায়মন, অবনী আর অন্তি খায়। তাইমুর উঠে গিয়ে আইসক্রিম এনে খেতে বসে যায়। সবার খাওয়া শেষ হলে ফুলের দোকানে যায়। অবনী আর অন্তি যখনই এদিকে আসে তারা বরাবরই ফুল কিনে তারপরই বাসায় যায়। এবারও একই ঘটনা। ফুলের দোকানে গেলে তাইমুর একটা একটা করে ফুল নেড়ে নেড়ে দেখছিলো। ফুলের দোকানে জীবনে সে ক’বার গেছে নিজেও জানে না। গার্লফ্রেন্ড না থাকার সাইড এফেক্ট এটা। ছোট বোনও নেই তার। মায়ের সাথে একবার শুধু গিয়েছিলো আর তাও তার মা-ই ফুল কিনেছিলো। জারবেরা ফুলের সামনে দাঁড়িয়ে অন্তি আর অবনীর দিকে তাকিয়ে বলে,
–‘এটা সূর্যমুখী ফুলের মতো দেখতে না! এটা সূর্যমুখী ফুল?’
অবনী আর অন্তি একে অপরের দিকে তাকায়। দুজনে সায়মনের দিকে তাকালে দেখে সেও বোকার মতো তাকিয়ে হাসছে। তার মানে সেও ফুল চেনে না। অন্তি বলে,
–‘ফুল চেনেন না! কি চেনেন?’
তাইমুর বেশ আক্ষেপ করে বলে,
–‘তোমরা তো মেয়ে। তোমাদেরকে তো ফুল দেয়, আমাদের তো কেউ দেয় না।’
–‘আহারে!’
অন্তির আহারে বলাতে অবনী হেঁসে ওঠে। অবনী নিজেই একে একে ফুলের নাম বলে। গোলাপ আর গাঁদা ফুল সে চেনে। বাকিগুলোও দেখেছে তবে নাম জানে না। সবগুলোর মধ্যে তাইমুরের ভালো লাগে জারবেরা, রজনীগন্ধা আর গোলাপ। এবং পরপর ৩ টা ফুল তুলে অন্তির হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে,
–‘বিয়ে কবে করবে?’
অন্তি হা হয়ে যায়। অবনী আর সায়মনের অবস্থাও একই। সে অবস্থাতেই অবনী বলে,
–‘চলেন, এখনই বিয়ে করাই দেই!’
তাইমুর সাথে সাথেই বলে ওঠে,
–‘চলো। কাজী অফিস আমি খুঁজে বের করছি।’
অন্তি রাগে ফুল দিয়েই তাইমুরকে মা’রে। তাইমুর ব্যস্ত ভাবে বলে,
–‘আরে নষ্ট হয়ে যাবে তো! যত্ন করে রাখো।’
অন্তি মুখ ভেংচে তার ফুল তার হাতেই ধরিয়ে দিয়ে উল্টো পথে হাঁটা লাগায়। পেছন পেছন তাইমুরও ছুট লাগায়। সায়মন আর অবনী একে অপরের দিকে অসহায় চোখে তাকায়।
অতীতের স্মৃতি মনে পরতেই দু বোন হেঁসে ওঠে। আজও তাদের হাতে জারবেরা, রজনীগন্ধা আর গোলাপ। অবনী সে ফুলের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। এ ফুল নিয়ে কত কাহিনি! অবনী জানতোই না অন্তি অন্য কারোর সাথে জড়িয়ে গেছে। যদি জানতো তবে বোধহয় থামিয়ে দিতো। অন্তির তাইমুরের কথার মাঝে মজা খুঁজে পেলেও সে ঠিকই বুঝতো এগুলো মজা ছিলো না। তাইমুরের চোখে স্পষ্ট দেখা যেতো মুগ্ধতা। মেয়েটা বোকা বলেই হয়তো বুঝতে পারেনি। তার ভাবনার মাঝেই সামনে দিয়ে তাইমুরকে আসতে দেখে। তাইমুর নিজেও এ সময় অবনী আর অন্তিকে এখানে দেখে একটু অবাক হয়। ফুলের দোকানে আসাটা তার অভ্যাস হয়ে গেছে। সময় পেলেই ফুলের দোকানে আসে। আর সেদিনের মতোই প্রত্যেকবার একই ৩ ফুল কেনে। তাইমুরকে দেখে অবনী হাসি মুখে এগিয়ে গিয়ে বলে,
–‘কি অবস্থা, তাইমুর ভাই? কোথা থেকে বের হলেন?’
তাইমুর একবার অন্তির দিকে তাকিয়ে স্বাভাবিক মুখে জবাব দেয়,
–‘গর্ত থেকে বের হলাম।’
এ কথা শুনে অবনী হেঁসে ওঠে। অন্তি মুখ বাঁকিয়ে বিড়বিড় করে বলে,
–‘ত্যাড়া কোথাকার!’
অবনী হাসি থামিয়ে নিচু স্বরে বলে,
–‘কেউ আপনার নামে অনেকগুলো অভিযোগ করলো। আর নাকি হাসেন না! সত্যি নাকি?’
–‘সবার কথা কানে নিতে হয় না। এখানে কি করছিলে?’
–‘ঘুরতে বের হইছিলাম।’
তাইমুর শিনা টান টান করে দাঁড়িয়ে দু হাত পকেটে গুঁজে নেয়। জোড় গলায়-ই বলে,
–‘আমি তো ভেবেছিলাম প্রেমিকের শোকে তোমার বোন কোথাও পরে পরে কাঁদছে। এখন দেখছি সব শোক ভুলে ঘুরতেও বের হয়েছে!’
অন্তি কপাল কুঁচকে এগিয়ে আসে। নিজেও খোঁচা দিয়ে বলে,
–‘আমাকে নিয়ে অতো না ভেবে নিজের মাথায় পানি ঢালেন। কাজে দিবে।’
–‘আপনি না বললেও আমি ঢালবো।’
অন্তি বোঝে না এর মাথায় আছে টা কি! আগে কত সুন্দর করে কথা বলতো আর এখন সব খোঁচা দেওয়া কথা আর ত্যাড়ামো। অবনী আর তাইমুর নিজেদের মতো কথা বলতে থাকে। তাইমুর তাকিয়ে থাকে অন্তির হাতের ফুলগুলোর দিকে। তার অজান্তেই তার হার্টবিট যে বাড়ছে! তাইমুর চোখ সরিয়ে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে জোরে শ্বাস নেয়। অবনী বুঝতে পেরে বলে,
–‘পানি খাবেন?’
তাইমুর মাথা নাড়ায়। অবনী পাশের দোকানে যায় পানি আনতে। ইচ্ছে করেই সরে গেছে। তার ব্যাগে পানির বোতল আছে৷ ফুচকা খাওয়ার আগেই সে দোকান থেকে কিনে নিয়েছিলো। তাইমুরের এমন হাসফাস করা দেখে অন্তিও নরম সুরে শুধায়,
মনে রেখ এ আমারে পর্ব ৪
–‘ঠিক আছেন আপনি? এভাবে শ্বাস নিচ্ছেন কেনো? সমস্যা কোনো?’
তাইমুর দু দিকে মাথা নাড়ায়। নিজেকে শান্ত করে বড় বড় শ্বাস নেয়। নিজেকে সামলে গম্ভীর গলায় অন্তিকে প্রশ্ন করে,
–‘এই ফুল রোজ কেনেন? নাকি আজ-ই শুধু!’
অন্তি ফুলের দিকে তাকিয়েই বলে,
–‘যখনই নেই, এই তিনটাই নেই। কেনো?’
তাইমুর ফুলগুলোর দিকে অপলক তাকিয়েই থাকে। অন্তি যদি তাকে মনেই না রাখে তবে তার দেওয়া ফুলগুলোই কেনো সে বার বার কেনে? কাকতালীয় ঘটনা নাকি অন্যকিছু?