মন্ত্রী বর যখন চাচাতো ভাই পর্ব ৮

মন্ত্রী বর যখন চাচাতো ভাই পর্ব ৮
সৌরভ চৌধুরী

আছিয়া চৌধুরী আয়ান চৌধুরীর দিকে ছল ছল চোখে তাকিয়ে আছে। তার সাহস হচ্ছে না তার বড় ভাইকে গিয়ে জড়িয়ে ধরতে।
উনি যে ভুল করেছে সে ভুলের কি কোন ক্ষমা হয়। সে তার বড় ভাইকে না জানিয়ে এদেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিল।
অথচ তার বড় ভাই এবং ভাবি মা তাদের জন্য কি না করেছে।
বাবার মৃত্যুর পর তারাই তো তাকে আদর যত্ন করে লালন-পালন করেছে।

আছিয়া চৌধুরীকে তাকিয়ে থাকতে দেখে রেহেনা চৌধুরী তার ভাইয়ের কাছে যাওয়ার জন্য ইশারা করল। আছিয়া চৌধুরী তার ভাবি মার ইশারা পেয়ে দৌড়ে চলে গেল তার বড় ভাইয়ের কাছে, গিয়েই তাকে জড়িয়ে ধরল।
এতগুলো বছর পর তার নিজের ছোট বোনকে কাছে পেয়ে আয়ান চৌধুরীও যেন বিস্ময়ে কিংকর্তব্যবিমুখ হয়ে গেল।
এতগুলো বছর পর নিজের ছোট বোনকে কাছে পেয়ে তিনিও আবেগ আপ্লুত হয়ে গেল। নিজের অভিমানকে পাত্তা না দিয়ে নিজেও তার ছোট বোনকে জড়িয়ে ধরল।
হয়তো আদরের ছোট ভাইকে হারিয়ে তিনি আর আদরের ছোট বোনকে দূরে রাখতে পারলেন না।
আয়ান চৌধুরী বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

বাবা _____ কোথায় ছিলি তুই আছিয়া তোকে কত খুজেছি কিন্তু পাইনি। দেখ আজ তুই আমার পাশে কিন্তু আমাদের আদরের আয়মান নেই।
আছিয়া ____ ভাইজান আমাকে মাফ করে দাও। আমার মনে হচ্ছে আয়মানের মৃত্যুর জন্য কোন না কোন ভাবে আমিও দায়ী। আমি যদি আসাদকে ভালো না বাসতাম তাহলে হয়তো আজ আয়মান আমাদের সাথেই থাকতো।
বাবা _____ আচ্ছা এসব কথা এখন রাখ।ওরা বুঝি তোর ছেলে মেয়ে ( আসিফ আর রুশা কে দেখিয়ে বলল)
আছিয়া চৌধুরী ও মাথা নাড়িয়ে সন্মতি দিলো।
আয়ান চৌধুরী ও প্রথমবারের মতো ভাগ্নে ভাগ্নিকে কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে গেল।
বাবা _____ নাম কি তোমাদের?
আছিয়া চৌধুরী বলল,

আছিয়া ____ ও আসিফ মির্জা (ছেলেকে উদ্দেশ্য করে বলল) আর ও রুশা মির্জা (মেয়েকে উদ্দেশ্য করে বলল)
মির্জা নামটা শুনেই রেহেনা চৌধুরী এবং আয়ান চৌধুরী অবাক হয়ে গেল।
রেহেনা চৌধুরী বললো,
মা ______ আমরা শুনেছি তুই শেখ পরিবারের ছোট ছেলে আজাদ শেখ কে বিয়ে করেছিস। তাহলে ওরা মির্জা কিভাবে হলো?
আছিয়া _____ আমরা যখন জাপানে চলে গেলাম। আসাদ ওর পরিবারের সব চিহ্ন মুছে দেওয়ার সাথে সাথে তার পদবীটাও চেঞ্জ করে ফেলেছে।
পদবী চেঞ্জ করলে কি আর চিহ্ন মুছে ফেলা যায় যতদিন শরীরের এক ফোটা রক্ত আছে ততদিন তারা শেখ পরিবারের সদস্য। আর আমরা শেখ পরিবারকে বিশ্বাস করি না। ( বিদ্রুপের হাসি দিয়ে তাচ্ছিল্যের সাথে বলল আবরার)

আবরার কে দেখে রুশার চোখ যেন খুশিতে জ্বলজ্বল করছে।
আবরারের মুখে এমন কথা শুনে আসাদ চৌধুরী একটু ভড়কে গেল।
আসাদ চৌধুরী সামনে তাকিয়ে দেখতে পেল তিনজন যুবক দাঁড়িয়ে আছে সবার মুখেই বিদ্রুপের হাসি কিন্তু তাদের চোখ যেন জ্বলন্ত অগ্নিশিখা।
আছিয়া চৌধুরী দৌড়ে গিয়ে তার তিন ভাতিজাকে একসাথে জড়িয়ে ধরল। আবরাজ,আরহাম,আবরার ও তাদের ফুপিকে জড়িয়ে ধরলো।
অন্যদিকে,
বস আসাদ শেখ আছিয়া চৌধুরীকে নিয়ে চৌধুরী বাড়িতে এসেছে।
অন্ধকার রুমে এক অজানা ব্যক্তি বসে আছে। তার লোকের মুখে এমন কথা শুনে সে নির্বিকার হয়ে বসে থাকলো।
বস লোকটি বলল,

বস _____ দেখ রাশেদ আমাদের এখন সাবধানে সকল কাজ করতে হবে। ওই চৌধুরী বাড়ির তিনটা ছেলেই খুবই চালাক আর বিশেষ করে এই মন্ত্রী আবরাজ অত্যধিক চালাক। একে যেভাবেই হোক এর মন্ত্রী পদ থেকে নামাতে হবে। এদের ক্ষমতার মস্নতকে আগে ভাঙতে হবে। তাহলে এরা কিছুটা দুর্বল হবে
রাশেদ _____ জি বস।
বস ______ তোকে যে বলছিলাম আবরাজের দলের কয়েকজন লোক কে আমাদের দলে নিতে। ঐ কাজ কত দূর এগিয়েছে।
রাশেদ ______ আপনার প্লান অনুযায়ী আমি সকল কিছু রেডি করেছি। ওদের দিয়ে আমরা এদেশে rdx ঢুকাবো। তারপর ওই আর ডিএক্স দিয়ে চলবে আমাদের মাস্টার প্ল্যান। এই প্লানে অবশ্যই আবরাজকে ফাঁসতেই হবে।
রাশেদের মুখ থেকে এমন কথা শুনে বস লোকটি ভয়ংকর হাসি দিল যার অর্থ রেডি থাকো আবরাজ এবার খেলা হবে।
এই বস লোকটি কে? তাহলে কি আবারো চৌধুরী পরিবারের উপর বিপদ আসতে যাচ্ছে? এই বিপদকে কি আবরাজ মোকাবেলা করতে পারবে? এদের প্ল্যান কি? এই প্লানে কি আবরাজের মন্ত্রিত্ব চলে যাবে?
চৌধুরী বাড়িতে,

চৌধুরী বাড়ির সবাই ড্রইং রুমে বসে আড্ডা দিচ্ছে এমন সময় আছিয়া চৌধুরী রেহেনা চৌধুরীর উদ্দেশ্যে বলল,
আছিয়া ___ ভাবি মা তুমি এই চাঁদের টুকরা মেয়েকে বউ হিসেবে কই থেকে এনেছো? আমারও ইচ্ছা এরকম চাঁদের টুকরা একটা বউ আমার আসিফেরও হবে।
আছিয়া চৌধুরীর কথায় রেহেনা চৌধুরীর মিষ্টি হেসে বলল,
মা _____ তুই শুধু জানিস ও আবরাজের বউ। কিন্তু আবরাজের বউ ছাড়াও ওরা আরেকটি পরিচয় আছে।
রেহেনা চৌধুরীর মুখ থেকে এমন কথা শুনে আছিয়া চৌধুরী অবাক হয়ে গেল এবং বলল,
আছিয়া _______ আরেকটি পরিচয় মানে? কি সেই পরিচয়?
মা _______ ও আমাদের আয়মানের মেয়ে।

রেহেনা চৌধুরীর মুখ থেকে এমন কথা শুনে আছিয়া চৌধুরী এবং আসাদ চৌধুরী বিস্ময়ে কিংকর্তব্যবিমুখ হয়ে গেল।
আছিয়া চৌধুরী আবারো মেহেককে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল এবং আবেগ আপ্লুত স্বরে বলল,
আছিয়া ______ মা তুই আমার সেই ছোট্ট আয়মানের মেয়ে। তুই আমাকে আগে কেন বলিস নি। আমি তোর এক অভাগা ফুপি যে জানতামও না যে আমার ছোট্ট ভাইয়ের একটা মেয়েও আছে।
আছিয়া চৌধুরীর মুখ থেকে এমন কথা শুনে মেহেক মৃদু হেসে বলল, ফুপি তুমি আগে জানতে না ঠিক আছে কিন্তু এখন তো জানো, এখন আমাকে কিন্তু অনেক ভালবাসতে হবে।
আছিয়া চৌধুরী ও মৃদু হেসে সম্মতি দিল।
আছিয়া চৌধুরী রেহেনা চৌধুরীর উদ্দেশ্যে কৃতজ্ঞতার সাথে বলল,, ভাবি মা তুমি সবসময় আমাদের জন্য বেস্ট টাই করো।

এই যে মেহেকের জন্য আবরাজকে সিলেক্ট করেছ।
এটি দেখে আমি খুশি হচ্ছি যে আমার ছোট ভাইয়ের আদরের মেয়েটা সুখে থাকবে।
তারা একে অপরের সাথে মজা করতেছে খোশ গল্প করতেছে। কিন্তু সবার থেকে দূরে বসে আছে জারিন। পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে এমন ভাব করতেছে যেন চৌধুরী বাড়ির এসব বিষয়ে তার কোন ভাবান্তর নেই।
আসাদ মির্জা বারবার আর চোখে জারিন এর দিকে তাকাচ্ছিল। এটা লক্ষ্য করে আরহাম আছিয়া চৌধুরীর উদ্দেশ্যে বলল,

আরহাম _____ ফুপি তোমার ভাতিজিকে এবাড়ির বউ করে নিয়ে আসা হয়েছে বলে হয়তো আমাদের ফুপাজান মন খারাপ করতে পারে তাই তার জন্য একটা সারপ্রাইজ রয়েছে
আসাদ মির্জা আরহামের মুখে এমন কথা শুনে অবাক হয়ে গেল তিনি অবাকতার রেস মুখে নিয়েই আরহামের দিকে তাকালো দেখতে পেল আরহামের মুখে তাচ্ছিল্যের হাসি সেই সাথে জলন্ত ক্ষোভ।
আছিয়া চৌধুরী উৎফুল্ল হয়ে ভাতিজার উদ্দেশ্যে বলল,
আছিয়া ____ কি সারপ্রাইজ বাপ? বল আমাদের শুনি।
আছিয়ার মুখ থেকে এমন কথা শুনে আরহাম তাচ্ছিল্যের সাথে বলল,

আরহাম _____ আমরা যেমন চৌধুরী বাড়ির মেয়েকে এবাড়ির বউ করে রেখেছি ঠিক তেমনি শেখ বাড়ির একটা জঞ্জাল কে এই বাড়ির শোকেস হিসেবে সাজিয়ে রাখার জন্য এনেছি।
আরহামের মুখ থেকে এমন কথা শুনে আসাদ মির্জা বুঝতে পারল এ ক্ষোভ শুধু তার প্রতি না এ ক্ষোভ পুরো শেখ পরিবারের ওপর।
আসাদ মির্জা তার অসন্তুষ্টির রেশ চাপা রেখে আরহামের উদ্দেশ্যে বলল,
আসাদ ____ তোমার কথার অর্থ বুঝলাম না। আশা করি বুঝিয়ে বলবা।
আরহাম ঠোঁটের কোনায় মৃদু হাসির রেখা টেনে বলল,
আরহাম _____ বাড়িতে ঢোকার সময় আমাদের বাড়ির বড় বউ পরিচয় দেওয়া মেয়েটির ব্যবহারে যে আপনি বিব্রত হয়েছিলেন এবং অপমানিত বোধ করেছিলেন জানেন তার পরিচয় কি?
আরহামের মুখে এমন কথা শুনে আসাদ মির্জা আরহামের মুখের দিকে অবাক নয়নে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, মৃদু মাথা নাড়িয়ে না বলল অর্থাৎ সে জানে না।
আসাদ মির্জার কাছ থেকে উত্তর পেয়ে আরহামের ঠোঁটের কোনার হাসি যেন আরো বিস্তর হলো।
আরহাম বলল,

আরহাম ____ ওই যে পায়ের উপর পা তুলে বসে থাকা অভদ্র মেয়েটি আর কেউ না আপনারই বড় ভাই আমজাদ শেখের বড় মেয়ে জারিন শেখ।
জারিন এর পরিচয় পেয়ে অবাক হয়ে গেল আসাদ মির্জা। এক দৃষ্টিতে জারিনের দিকে তাকিয়ে আছে। হ্যাঁ সে একটু একটু চিনতে পারতেছে কেননা জারিন দেখতে অনেকটা তার দাদির চেহারা পেয়েছে অর্থাৎ আসাদ মির্জার মায়ের চেহারা পেয়েছে।

শুধু যে আসাদ মির্জা অবাক হয়েছে তা নয় জারিন নিজেও অবাক হয়েছে কারণ আরহামের বলা শেষ কথাটা জারিন ভালোভাবে বুঝতে পেরেছে আসাদ মির্জার বড় ভাই যদি আমজাদ শেখ হয় তাহলে এই আসাদ মির্জায় হলো জারিনের ছোট চাচা যার কথা সে তার মা এবং চাচীর মুখে শুনেছে।
আসাদ মির্জা গুটিগুটি পায়ে জারিন এর সামনে গেল, জারিনও ততক্ষণে দাঁড়িয়ে গেছে, জারিন গিয়ে সোজা আসাদ মির্জাকে জড়িয়ে ধরল।

জারিন এবং আসাদ মির্জা কে এই অবস্থায় দেখে চৌধুরী বাড়ির রহস্যময় তিন যুবকের মুখে রহস্যময় হাসি যার অর্থ মাইন্ড গেমের রাজ্যে আসাদ মির্জা আপনাকেও স্বাগতম।
কি হতে চলেছে সামনে? আরহাম, আবরার,আবরাজরা কেন আসাদ মির্জা কে মাইন্ড গেমের জালে ফাঁসালো? তাহলে কি তারা বড় কিছু করতে যাচ্ছে? এর শেষ পরিণতি কি হবে?
রেহেনা চৌধুরী সবাইকে ফ্রেশ হওয়ার জন্য তাদের জন্য বরাদ্দকৃত রুমে পাঠিয়ে দিয়েছে।
রাতে,

আবরাজ,আবরার,আরহাম বসে আছে তাদের গোপন সিক্রেট রুমে কারো মুখে কোন কথা নেই পিন পতন নীরবতা।
নিরবতা ভেঙে আবরাজ বলল,
আবরাজ ____ আজ রাতে দেশে আরডিএক্স এর চালান ঢুকতেছে।
আবরাজের মুখে এমন কথা শুনে আবরার অবাক হয়ে বলল,
আবরার _____ কি বলছ তুমি এসব ভাইয়া? আমাকে সকল তথ্য দাও আমি এখনই ফোর্স পাঠাচ্ছি।
আবরাজ ____ না এ কাজে পুলিশ পাঠানো যাবে না। এই আরডিএক্স এর চালান ঢুকতেছে আমাকে ফাঁসানোর জন্য। তারা এটা দিয়ে জংলি হামলা করতে চাচ্ছে তবে তারা এসব কাজে নিজেদের লোক ব্যবহার না করে আমার কিছু লোককে টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে ব্যবহার করতেছে।
আবরার _______ বুঝলাম না কেন পুলিশ পাঠানো যাবে না? ওরা তো তোমাকে ফাঁসাতে চাচ্ছে তাহলে তুমি প্রশাসনের সহযোগিতা নাও তাহলে তো আর কোন সমস্যা থাকে না
ঠিক তখনই পাশ থেকে আরহাম গম্ভীর স্বরে বলল,

আরহাম ______ তুই কি ওদের নিজে ধরতে চাচ্ছিস।
আবরাজ _____ হ্যা। ওদের ধরে আমরা আমাদের সিক্রেট রুমে নিয়ে আসবো। ওর থেকে আমরা অনেক তথ্য জানতে পারবো হয়তো আমরা এটাও জানতে পারবো শেখ পরিবারের বস হয়ে থাকা সেই অজানা ব্যক্তিটাকে।
আরহাম ______ তাহলে চল আমরা এখনই বেরিয়ে পড়ি ওদের হাতেনাতে ধরে আমাদের সিক্রেট রুমে নিয়ে আসে।
বলেই আরহাম যেই উঠতে যাবে ঠিক তখনই আবরাজ আরহামকে থামিয়ে দিল বলল,
আমাদের যেতে হবে না আমি অলরেডি ডেভিড এবং অ্যালেক্সকে পাঠিয়ে দিয়েছি ওরা নিজেরাই ধরে নিয়ে আসবে আমাদের শুধু সবাইকে লুকিয়ে ওদের এই সিক্রেট রুমে নিয়ে আসতে হবে।
আবরাজের মুখে ডেভিড এবং আলেক্স এর নাম শুনে আর হাম অবাক হয়ে গেল এবং বলল,

আরহাম ______ তুই লন্ডন থেকে ওদের কবে আনলি?
আবরাজ _____ আমরা যখন হসপিটালে ছিলাম সেদিনে ওরা এসেছে।
এই কথা বলে ওরা তিন ভাই একসাথে বসে ভবিষ্যতে কি করতে হবে? কিভাবে কোন প্লানে কিভাবে কাজ করতে হবে? এসব নিয়ে আলোচনা করতেছিল ঠিক তখনই আবরাজের ফোনে একটা মেসেজ আসলো,
মেসেজটি পড়ে আবরাজের মুখে রহস্যময় হাসি ফুটে উঠলো কারণ মেসেজে লেখা ছিল বস কাজ ওকে সবগুলো আপনার বাসার পেছনে দাঁড়ানো আমাদের গাড়িতে আছে।
আবরার আবরাজ আরহাম একসাথে সিক্রেট রুম থেকে বের হয়ে ড্রয়িং রুমে আসলো এসে দেখল ড্রয়িং রুমে কেউই নেই কারণ বড়রা আয়ন চৌধুরীর রুমে কথা বলতেছে আর ছোটরা আরিশার রুমে আড্ডা দিচ্ছে।
আবরাজ আবরারের উদ্দেশ্যে বলল,

আবরাজ ____ তুই ওপরে যা। ১০ মিনিট তুই কাউকেই নিচে আসতে দিবি না,সবাইকে বিজি রাখবি এই ১০ মিনিটের ভেতরে আমরা সবাইকে সিক্রেট রুমে নিয়ে যাব বুঝতে পেরেছিস।
আবরার মাথা নারিয়ে সম্মতি জানায়।
আবরার সম্মতি জানালে আবরাজ এবং আরহাম বাহিরে চলে যায়।
বাড়ির পেছনে গিয়ে দেখতে পায় ডেভিড এবং এলেক্স গাড়িতে বসে আছে।
আবরাজ এবং আরহামকে আসতে দেখে তারাও গাড়ি থেকে বের হয়। গাড়ি থেকে বের হয়ে আটকে রাখার সাত জন ছেলেকে গাড়ি থেকে বের করে। এরপর একে একে সাত জন ছেলেকে সিক্রেট রুমে নিয়ে যায়।
আরহাম আবরার কে মেসেজ দেয় কাজ ওকে সিক্রেট রুমে চলে আয়।
অপরদিকে,

আবরার প্রথমে বাবা মায়ের রুমে যায় গিয়ে দেখতে পায় বড়রা সবাই অতীতের বিষয় নিয়ে কথা বলতেছে আর স্মৃতিচারণ করতেছে। তাদের কথার ধরন দেখে আবরার বুঝতে পারে এই গল্প ঘন্টাখানেক এর আগে শেষ হবার নয়।
এরপর আবরার আরিশা রুমে চলে যায় আরিশা রুমে গিয়ে দেখতে পায় রুমে সবাই আড্ডা দিলেও একজন এই রুমে নেই সে হলো রুশা।
রুশা কে খোঁজার জন্য আবরার তাড়াতাড়ি অন্য রুমগুলো দেখতে থাকে। কারন এই সময় যদি রুশা নিচে যায় তাহলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।
হঠাৎ কেউ আবরারের হাত ধরে হ্যাচকা টান মেরে একটা রুমে নিয়ে যায়।
আবরার ব্যক্তিটিকে দেখার জন্য ঘুরে তাকিয়ে দেখতে পায় সে আর কেউ না সে হলো রুশা।

আবরার ______ কি চাই? এভাবে হাত ধরে টান মেরে এই রুমে আনলে কেন?
রুশা ______ আপনার এত অ্যাটিটিউড কেন? গত এক বছর ধরে আপনাকে এত এত মেসেজ দিলাম, আপনি সিন করেন কিন্তু রিপ্লে দেন না এত এটিটিউট কিন্তু ভালো না স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ।
আবরার ______ তারমানে ওই বেয়াদব মেয়েটা তুমি?
রুশা ______ এই হ্যান্ডসাম হবু বউকে বেয়াদব বলতে নেই পাপ হবে পাপ।
আবরার _______ বউ মাই ফুট। শেখ পরিবারের সদস্যদের শরীরে আমি থুথু ফেলি থু থু ( থুথু ফেলার ভঙ্গিতে বললো)

ঠিক তখনই আবরারের ফোনে মেসেজ আসলো, ফোন যেহেতু হাতেই ছিল তাই সাথে সাথে মেসেজটা দেখে নিল। মেসেজটা দেখেই রুশা কে হালকা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ঐ রুম থেকে প্রস্থান করলো।
আবরার চলে যেতে রুশার চোখটা ছল ছল করে উঠলো। কারণ ও যখন জানতে পেরেছে আবরার ওর মামাতো ভাই তখন থেকেই আবরার কে হারানোর ভয় হচ্ছে কারণ তারা যতই বলুক শেখ পরিবারের সকল অস্তিত্ব তারা মুছে ফেলেছে তারপরও দিনশেষে এটাই সত্য তারা শেখ পরিবারেরই অংশ আর রুশা এ বাড়িতে এসেই দেখতে পেয়েছে চৌধুরী বাড়ির তিন ছেলেরা শেখ পরিবারের নাম শুনতেই পারে না। আরহাম ভাইয়া তো তার বাবাকে ইনডাইরেক্টলি অনেক কথাই শুনিয়েছে।

অন্যদিকে,
সিক্রেট রুমে সাতজন ছেলেকে পরপর চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়েছে, তাদের হাত বাধা আর সামনে দাঁড়িয়ে আছে তিনজন শক্ত পোক্ত যুবক। তাদের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে স্যাডো কিং এর ডান হাত ও বাম হাত ডেভিড এবং এ্যালেক্স।
আবরাজ ____ ডেভিড ওদের মুখে পানি মেরে জ্ঞান ফেরাও।
ডেভিড মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি দিয়ে সাত জনের মুখে পানি মেরে তাদের জ্ঞান ফেরালো। ওদের জ্ঞান ফিরতেই ওরা সামনে তাকিয়ে দেখতে পেল ওদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে স্বয়ং ওদের মৃত্যু মন্ত্রী আবরাজ আয়ান চৌধুরী।
ওরা আবরাজ এর লাল রক্ত চক্ষুদ্বয় দেখেই শুকনো ঢোক গিলল।
ওদের ভেতর থেকে লিডার যে ছিল তার সামনে চেয়ার টেনে বসলো আবরাজ,
আবরাজ _____ ডেভিড অনেকদিন হয়ে গেল এরকম নর পিশাচের রক্ত শোষণ করা হয় না।
যাও আমার টর্চার সামগ্রীগুলা রেডি করে আমার হাতে দাও।
আবরাজের মুখ থেকে কথাটি শোনার সাথে সাথে ডেভিড সম্মতি জানিয়ে চলে গেল
একটু পর হাতে আধুনিক টর্চার সামগ্রী নিয়ে আসলো আমরা সেখান থেকে একটা রেজার বিন ও একটা কাটিং প্লাস নিলো।

রেজার বিন দিয়ে ওর পায়ের কানি নখ বরাবর একটা টান দিল সঙ্গে সঙ্গে রেজার বিন থেকে আলোকরশ্মী বের হয়ে ওর কানি লোক দ্বিখণ্ডিত করে ফেলল এই ভয়ংকর অবস্থা দেখে বাকিগুলো শুকনো ঢোক গিলল।
আবরার ____ তো এবার বল তোদের আরডিএক্স এর চালান ঢুকাতে কে বলেছে? তার নাম কি? আর সে কিভাবে তোদের সাথে যোগাযোগ করলো?
লিডার লোকটি চুপ করে আছে তার নিশ্চুপতা দেখে আবরাজের মুখে ভয়ংকর হাসির রেখা দেখা দিল।
আবরাজের মুখে ভয়ংকর হাসি দেখে আবরার ভোড়কে গেল তবে আরহাম ডেভিড অ্যালেক্স ডোন্ট কেয়ার লোক এ দাঁড়িয়ে রয়েছে যেন তাদের কাছে এ বিষয়টি নতুন না তারা আগে থেকেই জানতো আবরাজ তাদের সাথে এমন কাজই করবে।

আবরাজ কাটিং প্লাস নিয়ে লিডার লোকটির পায়ের সবগুলো চারা তুলে ফেলল যে হাতের চারা তুলতে নেবে তখনই লিডার লোকটি বলল,,
লিডার _____ বলছি বলছি বলছি আমাকে আর কিছু কইরো না ( অনুনয় সুরে কথাটি বলল)
আবরাজ ____ ঠিক আছে এখন বল আর শোন একটা কথা মিথ্যা বললে একটা একটা করে অঙ্গ কেটে নিয়ে আমার হিংস্র সিংহ দিয়ে খাওয়াবো।
লিডার লোকটি ভয়ে ভীতু হয়ে শুকনো ঢোক গিলে বলল,
লিডার _____ আমাকে এই কাজ টি করতে বলেছে এনএসআইয়ের সাবেক এডিজি শাকিল এছাড়াও তার ওপরে আরো অনেকেই আছে তাদের নাম আমি জানিনা।

এডিজি শাকিল এর নাম শুনে আবরাজের কপাল কুজকে গেল।
এই লোকটা চাচ্চুর সাথে ও বেইমানি করেছে ওর পৃথিবীতে আয়ু শেষের দিকে।
আবরাজ ডেভিড এবং এলেক্সের উদ্দেশ্যে বলল,
কালকের ভেতর আমি ADG শাকিলকে চাই।
আবরাজের কথা শুনে ডেভিড ও এ্যালেক্স মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি দিল।

মন্ত্রী বর যখন চাচাতো ভাই পর্ব ৭

ডেভিড আর এ্যালেক্স কি পারবে ADG শাকিল করে ধরতে? শাকিল কে ধরলে শাকিল কি বলে দেবে মুলহোতার নাম? নাকি এখনো অনেক মানুষ গোপনেই রেয়ে গেছে? শত্রুরা কি গুপ্ত হামলা চালাবে? আবরাজ কীভাবে জানলো RDX গর চালান ঢোকার কথা? এটা তাদের কে জানালো?

মন্ত্রী বর যখন চাচাতো ভাই পর্ব ৯

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here